Ajker Patrika

‘ওরে বাপরে ভূমি অফিস! ওহানে তো ঘুষ ছাড়া কোনো কামই অয়না’

রুদ্র রুহান, বরগুনা
‘ওরে বাপরে ভূমি অফিস! ওহানে তো ঘুষ ছাড়া কোনো কামই অয়না’

ভূমি অফিসের কথা শুনতেই বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের আজাদুল ইসলাম বলে ওঠেন, ‘ওরে বাপরে ভূমি অফিস! ওহানে তো ঘুষ ছাড়া কোনো কামই অয়না।’ গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়েছিলেন জমির দাখিলার জন্য। কিন্তু সেখানের এক কর্মচারীর ঘুষের শিকার হতে হয়েছে তাঁকে। 

আজাদুল ইসলাম বলেন, ‘মুই একটা দাহিলা (দাখিলা) আনতে ভূমি অফিসে গেছালাম। তহশিলদারের সহকারী পঙ্কজ চন্দ্র মোরে কয় জমি নদী সিকস্তিতে গ্যাছে। জরিপ কইরা হেইয়ার পর দাহিলা দেওন যাইবে। হেরপর মোরো আড়ালে ডাইক্কা কয় ৫ হাজার টাহা দেলে দাহিলা দেতে পারমু। পরে টাহা গুছাইয়া লইয়া গেছি পর মোরে দাহিলা কাইট্টা দেছে। দাহিলায় ল্যাকছে ৫০০ টাহা।’ 

জেলা রাজস্ব বিভাগের তথ্য মতে, বরগুনা জেলায় মোট ২৪টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস, পাঁচটি উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার অফিস, ও জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয় রয়েছে। 

সরেজমিন অনুসন্ধান ও ভুক্তভোগীদের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে শুরু করে উপজেলা ও জেলা সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয় পর্যন্ত কোনো কাজে গেলে ঘুষ ছাড়া সে কাজ হয় না। বরং পর্যায়ক্রমে টাকার অঙ্ক বাড়তে থাকে। তৃণমূল পর্যায়ে ভূমি সংক্রান্ত সেবা পেতে প্রথমেই ইউনিয়ন ভূমি অফিসে দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন তহশিলদারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের বাসিন্দাদের বেশির ভাগই সাধারণত জমির খাজনা দিয়ে দাখিলা নিতে আসেন। এ ছাড়া জমি জমা সংক্রান্ত সাধারণ তথ্য খোঁজ করতে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যোগাযোগ করেন। আর এখানে এসেই প্রথম বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়, ঘুষ না দিয়ে কেউই কোনো সেবা পান না এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। 

বরগুনা সদর ইউনিয়নে হেউলীবুনিয়া এলাকার আবদুস সত্তার গত সোমবার সকালে দাখিলার জন্য গিয়েছিলেন। নিয়মানুযায়ী জমির খাজনা দিতে চাইলেও তার কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। অগত্যা বাধ্য হয়ে আট হাজার টাকায় তিনি দাখিলা কাটেন আর দাখিলায় খাজনা জমা দেখানো হয় মাত্র ২২০ টাকা। এ বিষয়ে সাত্তার বলেন, ‘এখানে অতিরিক্ত টাকা বা ঘুষ না দিয়ে কাজ আদায় করতে পেরেছে এমন ভাগ্যবান ব্যক্তির কথা আমার জানা নেই। প্রত্যেক এলাকায় ভূমি অফিসের নির্দিষ্ট দালাল আছে। এই দালালদের মাধ্যমে সব কাজ করতে হয়। নয়তো আপনাকে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হবে।’ 

একই অবস্থার কথা জানিয়েছেন বরগুনার ২৪টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভুক্তভোগী সেবা গ্রহীতারা। ইউনিয়ন ভূমি অফিসে দাখিলা, দাগ-খতিয়ান ও মিউটেশনের তথ্য সরবরাহে ঘুষ না দিলে ঘুরতে হয় দিনের পর দিন। অবশেষে ধার্যকৃত টাকা দিয়ে কাজ সম্পন্ন করতে হয়। রোববার সরেজমিনে বরগুনা সদরের ফুলঝুড়ি ভূমি অফিসে গেলে দেখা যায়, ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ রশিদে শাহজাহান বিশ্বাসের দাখিলায় ৮৮ টাকা লেখা। কিন্তু রাখা হয়েছে ১০০ টাকা। এর আগে সোমবার তারাবানু, রুনু, মাজেদা ও ফারুক প্রত্যেকের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে মোট ৮০০ টাকা রাখা হয়েছে। অথচ, দাখিলা রশিদে ২০ টাকা। 

দাখিলা কাটতে আসা ফুলঝুড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. রফিক হাওলাদার বলেন, অনেক আগে থেকেই এখানে ঘুষ বাণিজ্য চলে। আমরা যদি প্রতিবাদ করি তাহলে কোনো কাজ হয় না। তাই ঘুষ দিয়েই কাজ করি। 

এ তো গেল ইউনিয়ন ভূমি অফিসের গল্প। উপজেলা থেকে জেলা যেখানে যাবেন ঘুষ দিতেই হবে। আর ধাপে ধাপে বাড়বে ঘুষের টাকার পরিমাণ। গত রোববার দুপুরে বরগুনা সদর উপজেলার ভূমি অফিসের সামনে অপেক্ষমাণ কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ে কোনো কাজের জন্য আসলে অগ্রিম ঘুষ দিতে হয়। আর ঘুষ দিলেই কেবল বালামে হাত দেন সংশ্লিষ্টরা। আর না দিলে নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। 

এমন বিড়ম্বনার শিকার হওয়া কয়েকজনের সঙ্গে রোববার দুপুরে সদর উপজেলা সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের সামনে কথা হয়। সদরের এম বালিয়াতলীর তালতলী এলাকার কৃষক সেন্টু মিয়া বরগুনা সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ে এসেছেন নষ্ট হয়ে যাওয়া জমির দলিল ওঠানোর জন্য। তার কাছ থেকে দুই হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন অফিসের একজন সহকারী রেকর্ড কিপার। সদর উপজেলার রায়ভোগ এলাকার ইউনুস মিয়াও এসেছেন দলিল খুঁজতে। তাঁর কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছেন এই অফিসের একজন কর্মচারী। ইউনুস বলেন, ‘এখানে পিয়ন–ঝাড়ুদার থেকে শুরু করে সবাই সুযোগ পেলে ঘুষ নেন। আমরা এখানে এসে টাকা ছাড়া কোনো কাজই করতে পারি না। টাকা দিলেই কেবল বালামে হাত দেয়, না দিলে কোনো কাজ হয় না।’ 

পাথরঘাটা উপজেলা সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের সামনে কথা হয় রেজাউল কবির নামের কালমেঘা ইউনিয়নের এক বাসিন্দার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এখানে কিছু দলিল লেখকদের সঙ্গে যোগসাজশে অফিসের কর্মকর্তারা ঘুষ নিয়ে থাকেন। দলিলের সরকারি সব খরচার বাইরেও অফিস খরচার নামে ৫ থেকে ২০ হাজার পর্যন্ত ঘুষ নেওয়া হয়। জেলার ছয়টি উপজেলার মধ্যে আমতলীতে কৃষিজমির পরিমাণ বেশি।’ 

ভূমিখাতে সবচেয়ে বেশি ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ বরগুনার আমতলী উপজেলায়। আমতলীর আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা আফজাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানে ঘুষ দিয়ে জাল দলিল থেকে শুরু করে সব কাজ করানো সম্ভব। আর ঘুষ না দিয়ে কেউ কোনো কাজ করতেই পারবে না। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, এখানে এসে কেউ ঘুষ না দিয়ে কাজ করাতে পেরেছে বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে এমন কেউ নেই। একইরকম চিত্র জেলার বাকি তিনটি সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়েরও।’ 

এ ছাড়া জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের চিত্র ঠিক এমনই। শুধুমাত্র পার্থক্য ঘুষের অঙ্কের। সরকারি ফির ধার ধারার সময় নেই কারওই। দলিল রেকর্ড করতে আসলে মোক্তাররা আগেই চুক্তি করে অফিস খরচা বাবদ টাকা রেখে দেয়। দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা সংক্রান্ত সিভিল মামলা পরিচালনা করে আসছেন এমন কয়েকজন আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দলিল করার ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে সরকারি খরচার বাইরে মোক্তারদের মাধ্যমে অফিস খরচা বাবদ দুই থেকে ২৫ হাজার পর্যন্ত ঘুষ নেওয়া হয়। সম্প্রতি দলিল করেছেন এমন কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে আইনজীবীর দাবির মিল রয়েছে। 

জাকির হোসেন নামের বেতাগী উপজেলার একজন বাসিন্দা বলেন, ‘আমি একজন মোক্তারের মাধ্যমে দলিলের কাজ করিয়েছি। আমার তিনটি দলিলে অতিরিক্ত ১৫ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।’ 

বরগুনার জেলা প্রশাসক (ভূমি) পীযূষ কান্তির সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘আমরা তৃণমূল থেকে শুরু করে উপজেলা ও জেলায় সেবা নিতে আসা নাগরিকেরা যাতে ভোগান্তি ও বিড়ম্বনার শিকার না হয় সে জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। ভূমি অফিসের কোনো কর্মকর্তা কর্মচারী বিরুদ্ধে ঘুষ বাবদ অর্থ নেওয়ার কোনো অভিযোগ থাকলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

চট্টগ্রামের ১৬ আসনের ৭টিতে বিএনপির চ্যালেঞ্জ বিএনপিই

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: উত্তেজনা বাড়ছে দ্রুত

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

নেছারাবাদে ছিনতাইকারী সন্দেহে যুবক আটক, দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শ্রীপুরে গভীর রাতে ইটভাটায় ডেকে নিয়ে জাসাস নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
শ্রীপুরের গোসিঙ্গা ইউনিয়নের লতিফপুর গ্রামের শীতলক্ষ্যার তীরের কেবিএম ব্রিকস ইটভাটায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা
শ্রীপুরের গোসিঙ্গা ইউনিয়নের লতিফপুর গ্রামের শীতলক্ষ্যার তীরের কেবিএম ব্রিকস ইটভাটায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে ইটভাটায় ডেকে নিয়ে এক জাসাস নেতাকে গভীর রাতে রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়নের লতিফপুর গ্রামের শীতলক্ষ্যার তীরের কেবিএম ব্রিকস নামক ইটভাটায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। স্বজনদের অভিযোগ, স্থানীয় কয়েকজন মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে সুপরিকল্পিতভাবে তাঁকে খুন করেছে।

নিহত মো. ফরিদ সরকার (৩৫) উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের মো. জামাল উদ্দিন সরকারের ছেলে। তিনি গোসিঙ্গা ইউনিয়ন জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

নিহত ব্যক্তির বাবা জামাল উদ্দিন সরকার বলেন, ‘গতকাল রাতে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি আমার ছেলেকে মোবাইল ফোনে আবুল কাশেমের মালিকানাধীন কেবিএম ইটভাটায় ডেকে নেয়। রাত ১০টার দিকে সে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। রাত ৩টার দিকে স্থানীয় লোকজন বাসায় এসে খবর দেয় আমার ছেলেকে কয়েকজন মিলে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে গেছে। এরপর দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি, ছেলের রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে। তাকে উদ্ধার করে দ্রুত গাজীপুর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।’ তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে ইটভাটায় মাটি সরবরাহ করত। এ নিয়ে কয়েক দিন ধরে সমস্যা চলছে। কয়েকজন মাটি সরবরাহ করতে বাধা দিয়ে আসছিল ছেলেকে।’

নিহত ব্যক্তির মা ফরিদা বেগম বলেন, ‘রাত ১০টার দিকে আমার ছেলে আর আমি একই সঙ্গে রাতের খাবার খাই। খাবার শেষে ইটভাটার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়। রাত ৩টার দিকে ছেলেকে মেরে ফেলছে, এমন খবর পেয়ে মাথায় আসমান ভেঙে পড়ে। আমার কলিজাটা শেষ করে দিল ওরা। আমি ছেলেকে ফেরত চাই। আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে ওরা মেরে ফেলেছে। আমাদের শত্রুরা আমার ছেলেকে বাঁচতে দিল না। সবার নাম বলব পরে।’

কেবিএম ইটভাটার কর্মচারী মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘রাত সাড়ে ১০টার দিকে ইটভাটায় এসে আগুন পোহাতে থাকে ফরিদ ভাই। এরপর রাত ৩টার দিকে কয়েকজন অচেনা ব্যক্তি রামদা হাতে এসে ফরিদ ভাইকে ধাওয়া করে। আমরা ভয়ে দৌড়ে পাশের ঘরে গিয়ে আশ্রয় নিই। এরপর কুপিয়ে-পিটিয়ে মেরে ফেলে যায়।’

গাজীপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কালিয়াকৈর (সার্কেল) মিরাজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আপাতত হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি দুর্বৃত্তের হাতে খুন বলতে হবে। পুলিশের কাছে নির্দিষ্ট কিছু তথ্য রয়েছে। কারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, এমন তথ্য রয়েছে। আপাতত তদন্তের জন্য বলা যাচ্ছে না। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

চট্টগ্রামের ১৬ আসনের ৭টিতে বিএনপির চ্যালেঞ্জ বিএনপিই

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: উত্তেজনা বাড়ছে দ্রুত

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

নেছারাবাদে ছিনতাইকারী সন্দেহে যুবক আটক, দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যুবদল নেতা আরিফ সিকদার হত্যা: সুব্রত বাইনের মেয়ে ফের রিমান্ডে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫০
কুমিল্লা জেলা কারাগারের সামনে থেকে ১৫ ডিসেম্বর খাদিজা ইয়াসমিন বিথীকে আটক করা হয়। ফাইল ছবি
কুমিল্লা জেলা কারাগারের সামনে থেকে ১৫ ডিসেম্বর খাদিজা ইয়াসমিন বিথীকে আটক করা হয়। ফাইল ছবি

যুবদল নেতা আরিফ সিকদার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের মেয়ে খাদিজা ইয়াসমিন বিথীকে ফের চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক আজ বুধবার এই নির্দেশ দেন বলে নিশ্চিত করেছেন আদালতের হাতিরঝিল থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) এসআই আরিফ রেজা।

হত্যা মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে আজ খাদিজাকে আদালতে হাজির করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশ পরিদর্শক মো. মাজহারুল ইসলাম তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরও পাঁচ দিন রিমান্ডের আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, খাদিজাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তবে অনেক তথ্যই তিনি গোপন রেখেছেন। আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে ফের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

শুনানি শেষে খাদিজার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

এর আগে ১৮ ডিসেম্বর আরিফ সিকদার হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য খাদিজাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। এর তিন দিন আগে ১৫ ডিসেম্বর কুমিল্লা জেলা কারাগারের সামনে থেকে তাঁকে আটক করা হয়।

সেদিন রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছিল, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলী ও তাঁর মেয়ে খাদিজা মগবাজার ও হাতিরঝিল এলাকায় আধিপত্য বিস্তার শুরু করেন। যুবদল নেতা আরিফকে তাঁরা প্রতিপক্ষ মনে করতেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের পরিকল্পনায় আরিফকে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় আসামি খাদিজা জড়িত ছিলেন বলে তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যাচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, গত ১৯ এপ্রিল রাতে হাতিরঝিল থানার নয়াটোলা মোড়ল গলির দ্য ঝিল ক্যাফের সামনে আরিফ সিকদারকে গুলি করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ এপ্রিল মারা যান ঢাকা মহানগর উত্তরের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সহক্রীড়া সম্পাদক।

এই ঘটনায় নিহত ব্যক্তির বোন রিমা আক্তার সুব্রত বাইনের সহযোগী মাহফুজুর রহমান বিপুসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

চট্টগ্রামের ১৬ আসনের ৭টিতে বিএনপির চ্যালেঞ্জ বিএনপিই

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: উত্তেজনা বাড়ছে দ্রুত

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

নেছারাবাদে ছিনতাইকারী সন্দেহে যুবক আটক, দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পিরোজপুরে সাবেক স্ত্রীকে হত্যাচেষ্টা, হাসপাতালে গিয়েও হামলা: অভিযুক্ত আটক

পিরোজপুর প্রতিনিধি
আটক অমিত হাসান। ছবি: আজকের পত্রিকা
আটক অমিত হাসান। ছবি: আজকের পত্রিকা

পিরোজপুর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে সাবেক স্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানেও ফের হামলার চেষ্টা চালান অভিযুক্ত সাবেক স্বামী। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় তাঁকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

আহত নারীর নাম সুমনা (১৮)। তিনি পিরোজপুর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের ঝাটকাঠি গ্রামের বাসিন্দা ও ফারুক সিকদারের মেয়ে। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম অমিত হাসান (২৫)। তিনি শহরের শিক্ষা অফিস রোড এলাকার লুৎফর শেখের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রায় আট বছর আগে প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে সুমনা ও অমিতের বিয়ে হয়। তাঁদের সংসারে পাঁচ বছর বয়সী একটি ছেলেসন্তান রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, অমিত দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত ছিলেন এবং যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতন করতেন। এসব কারণে প্রায় দুই মাস আগে সুমনা তাঁকে তালাক দেন।

গতকাল সন্ধ্যা থেকে অমিত হত্যার উদ্দেশ্যে সুমনার ঘরের ভেতরে লুকিয়ে ছিলেন। রাতের দিকে সুমনাকে একা পেয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে পালিয়ে যান তিনি। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় সুমনাকে উদ্ধার করে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানেও আবার হামলার চেষ্টা করেন অমিত। এ সময় স্বজন ও স্থানীয় লোকজন তাঁকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক আসিফ জানান, রাত ১০টার দিকে গুরুতর জখম অবস্থায় সুমনাকে হাসপাতালে আনা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর অবস্থার অবনতি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। এই ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

চট্টগ্রামের ১৬ আসনের ৭টিতে বিএনপির চ্যালেঞ্জ বিএনপিই

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: উত্তেজনা বাড়ছে দ্রুত

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

নেছারাবাদে ছিনতাইকারী সন্দেহে যুবক আটক, দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুলাউড়ায় পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের দুই আরোহী নিহত

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের দুই আরোহী নিহত হয়েছেন। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ৭টার দিকে কুলাউড়া-জুড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের আছুরীঘাট এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত দুই মোটরসাইকেল আরোহী হলেন জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ জাঙ্গীরাই গ্রামের মো. দুলু মিয়ার ছেলে জাবেদ আহমেদ (১৯) ও ভবানীপুর গ্রামের মো. নুরু মিয়ার ছেলে রিয়াদুল ইসলাম (১৯)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকালে ঘন কুয়াশার মধ্যে একটি মোটরসাইকেল কুলাউড়ার দিকে যাচ্ছিল। এ সময় উল্টো দিক থেকে আসা একটি পিকআপ ভ্যান মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই তাঁরা মারা যান। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।

কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান মোল্লা বলেন, লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

চট্টগ্রামের ১৬ আসনের ৭টিতে বিএনপির চ্যালেঞ্জ বিএনপিই

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: উত্তেজনা বাড়ছে দ্রুত

আজকের রাশিফল: ফেসবুকে জ্ঞান ঝাড়বেন না— বন্ধুরা জানে আপনি কপি মাস্টার, স্ত্রীর কথা শুনুন

নেছারাবাদে ছিনতাইকারী সন্দেহে যুবক আটক, দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত