Ajker Patrika

পিটুনির শিকার অধ্যক্ষকে নিয়ে যা বললেন এমপি ফারুক

রাজশাহী প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২২, ১৫: ১৭
পিটুনির শিকার অধ্যক্ষকে নিয়ে যা বললেন এমপি ফারুক

জেসিকা খুন হয়েছিল। কিন্তু রাজনৈতিক চাপের কারণে সাক্ষীর অভাবে প্রথমে খুনের কোনো বিচার হয়নি। ভারতীয় থ্রিলার ‘নো ওয়ান কিলড জেসিকা’ সিনেমায় এ রকম কাহিনিই দেখানো হয়েছিল। রাজশাহীতে পিটুনির শিকার কলেজের অধ্যক্ষ মো. সেলীম রেজার কথা শুনে প্রথমে মনে হলো, জেসিকার মতো তাঁকেও কেউ মারেননি অথচ তিনি আহত হয়েছেন। চিকিৎসকের কাছে গিয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। চোখের নিচে এখনো দগদগে কালশিরা দাগ। 

অভিযোগ ওঠে, গত ৭ জুলাই রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী অধ্যক্ষ সেলীম রেজাকে চড়-থাপ্পড়, কিল-ঘুষি মেরেছেন এবং হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়েছেন। সেলীম রেজা গোদাগাড়ীর রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ। তাঁকে মারধরের ঘটনায় সারা দেশে নিন্দা আর প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। বুধবার একটি তদন্ত কমিটি করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। তবে পরদিন আজ বৃহস্পতিবার দুপুরেই নিজের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সেলীম রেজাকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এলেন সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী। 

সংবাদ সম্মেলনে সংসদ সদস্যের পাশে বসে অধ্যক্ষ সেলীম রেজা বলেন, ‘গণমাধ্যমে যেভাবে বলা হচ্ছে যে সংসদ সদস্য তাঁকে মারধর করেছেন তা ঠিক নয়।’ লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে আমরা কয়েকজন অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ ঈদ উপলক্ষে এমপি সাহেবের অফিসে দেখা করতে গিয়েছিলাম। এ সময় আমাদের অধ্যক্ষ ফোরামের কমিটি গঠন এবং অভ্যন্তরীণ অন্যান্য বিষয় নিয়ে নিজেদের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়। একপর্যায়ে এমপি মহোদয় আমাদের নিবৃত্ত করেন। এ ছাড়া আর কোনো ঘটনা ঘটেনি।’ 

তর্কবিতর্ক ছাড়া অন্য কোনো ঘটনা যদি না-ই ঘটে, তাহলে চোখের নিচে কালশিরা কিসের, ঘটনার রাতে চিকিৎসকের কাছেই বা কেন গেলেন—অধ্যক্ষ সেলীম রেজাকে সাংবাদিকেরা এমন প্রশ্ন করলে তিনি বললেন, ‘নিজেদের মধ্যে একটু ধাক্কাধাক্কি হয়েছিল।’ সাংবাদিকেরা বারবার অধ্যক্ষের কাছে জানতে চান, কী এমন ঘটনা নিয়ে সংসদ সদস্যের সামনে অধ্যক্ষরা নিজেরা মারামারিতে লিপ্ত হলেন? কিন্তু সেলীম রেজা কোনো সদুত্তর দিতে পারছিলেন না। সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী তখন পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছিলেন। 

পরে মাটিকাটা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল আউয়াল রাজু বললেন, ‘ঈদ উপলক্ষে অধ্যক্ষ ফোরামের পক্ষ থেকে সংসদ সদস্যের সঙ্গে দেখা করার জন্য তিনিই সব অধ্যক্ষকে ফোন করে ডাকেন। সেখানে ফোরামের কমিটি গঠন এবং আয়-ব্যয়ের হিসাব নিয়ে তর্কবিতর্ক হয়। একপর্যায়ে তিনিই অধ্যক্ষ সেলীম রেজাকে ধাক্কা দেন। এ সময় সেখানে থাকা আলমারি ও চেয়ারে ধাক্কা খেয়ে সেলীম রেজা আহত হন।’ 

সংবাদ সম্মেলনে সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী দাবি করেন, ‘তাঁকে ঘিরে বারবার চক্রান্ত হয়। আর এর পেছনে থাকেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ।’ ওমর ফারুক চৌধুরী যখন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন, তখন সম্পাদক ছিলেন আসাদ। ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, ‘আসাদ আমাকে রাজাকারের ছেলে বলেছে। আমি তিনবারের এমপি হয়েও নাকি নৌকায় ভোট দেই না। এসব বলে।’ 

বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে অধ্যক্ষ সেলীম রেজাকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী।আসাদই অধ্যক্ষকে মারধরের অপপ্রচার করেছেন বলে অভিযোগ করেন ওমর ফারুক চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এই অপপ্রচারের কারণে তিনি সামাজিক, রাজনৈতিক এবং পারিবারিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছেন। তাঁর মানহানি ঘটেছে। তিনি এর বিচার দেন সাংবাদিকদের কাছেই।’ 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘সাংবাদিকেরা তো শুধু অধ্যক্ষের চোখের নিচের কাল দাগ দেখেছেন। হাত আর কোমর তো দেখেননি। অধ্যক্ষ আমাকে দেখিয়েছেন। আমাকে ১০ তারিখ রাত সাড়ে ১০টায় ফোন করেছেন। কল রেকর্ড দেখলেই সেটা পাওয়া যাবে। ফোন করে বলেন, এমপি তাঁকে মারধর করেছেন। আমি বাদশা স্যারকে (বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি শফিকুর রহমান বাদশা) জানালাম। তিনি বললেন, দেখি কী করতে পারি। পরে আমি কয়েকজন মিলে অধ্যক্ষের বাসায় গেলাম। বউ-বাচ্চার সামনে তাঁর চোখে পানি এল। তখন অধ্যক্ষ আমার সহযোগিতা চান। আমি বলি, আমিও তো আওয়ামী লীগ করি। তবে আপনি আইনগত সহায়তা চাইলে থানায় কথা বলব।’ 

আসাদ বলেন, ‘আমি চলে আসার পরে ফোন করে অধ্যক্ষ আবার বলেন, সোহেল চেয়ারম্যান (গোদাগাড়ীর দেওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন সোহেল) এসেছিলেন। হোয়াটসঅ্যাপে এমপিকে ফোন দিয়ে ধরিয়ে দিয়েছেন। এমপি তাঁকে বলেন যে, রাগের মাথায় একটা ঘটনা ঘটে গেছে। কোনো এক সময় এসো, ক্ষমা চেয়ে নেই। তখন আমি সেলীম রেজাকে বলি, তাহলে ঠিক আছে। এটা আপনার বিষয়।’ 

আসাদ বলেন, ‘এমপি সংবাদ সম্মেলন করলেন। আমি নিউজগুলো আগে দেখি। তারপর শনিবার আমিও সংবাদ সম্মেলন করব। সে কোন কোন দল করেছে, সে তিনবার নৌকায় ভোট দেয়নি, তার ডকুমেন্ট দিয়ে দিব। সে তো শহরের ভোটার। কোনো সাংবাদিক তো তাকে ভোট দিতে দেখেনি। তাহলে ভোট কোথায় দিল? আমি তার মিথ্যাচারের জবাব দিব।’ 

উল্লেখ্য, সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী অধ্যক্ষ সেলীম রেজাকে মারধর করেছেন বলে গত বুধবার খবর ছড়িয়ে পড়ে। এতে বলা হচ্ছে, গোদাগাড়ীর একটি কলেজের অধ্যক্ষের স্ত্রীকে নিয়ে রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজের কয়েকজন শিক্ষক আপত্তিকর মন্তব্য করেন। এর বিচার করেননি অধ্যক্ষ সেলীম রেজা। ওমর ফারুক চৌধুরী ওই আপত্তিকর কথাবার্তার অডিও শুনিয়েই অধ্যক্ষকে পেটাতে থাকেন। তবে ওমর ফারুক চৌধুরী, অধ্যক্ষ সেলীম রেজা এবং সেদিন উপস্থিত থাকা অন্য অধ্যক্ষরা সংবাদ সম্মেলনে তা অস্বীকার করলেন। অডিও রেকর্ডটি ওমর ফারুক চৌধুরী শোনেননি বলেও সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দুই ধান ব্যবসায়ীর ১০ লাখ টাকা ও কৃষকের তিনটি গরু চুরি

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
দুই ধান ব্যবসায়ীর ১০ লাখ টাকা ও কৃষকের তিনটি গরু চুরি

নওগাঁর রাণীনগরে পৃথক তিনটি চুরির ঘটনায় দুই ধান ব্যবসায়ীর ১০ লাখের বেশি টাকা এবং এক কৃষকের গোয়ালঘর থেকে তিনটি গরু চুরি হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত থেকে আজ রোববার সকাল পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে।

উপজেলার একডালা গ্রামের মসলিম উদ্দীনের ছেলে এবং আবাদপুকুর হাট এলাকার হক ট্রেডার্সের মালিক মোজাম্মেল হকের ছোট ভাই খাইরুল ইসলাম জানান, সপ্তাহের প্রতি রবি ও বুধবার আবাদপুকুর হাট বসে। রোববার সকাল আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে হাটসংলগ্ন রাস্তায় দাঁড়িয়ে ধান কেনাবেচা করছিলেন তাঁরা। এ সময় ধান বিক্রেতাদের ভিড়ের সুযোগ নিয়ে চোরেরা অফিসের ক্যাশ ড্রয়ার ভেঙে নগদ ৫ লাখ ৩৪ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

অন্যদিকে উপজেলার বড়িয়াপাড়া গ্রামের ভোলা সরদারের ছেলে এবং বড়িয়াপাড়া ট্রেডার্সের মালিক ধান ব্যবসায়ী ফরিদ সরদার জানান, রোববার ভোরে মোটরসাইকেলে করে আবাদপুকুর বাজারে নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে যান তিনি। ধান কেনার টাকাভর্তি একটি ব্যাগ মোটরসাইকেলে রেখে ঘরের তালা খুলতে যান। তবে তালার ভেতরে কে বা কারা কিছু ঢুকিয়ে রাখায় তালা খুলছিল না। পরে হাতুড়ি দিয়ে তালা ভেঙে মোটরসাইকেলের কাছে ফিরে দেখেন, ব্যাগসহ ৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকা চুরি হয়ে গেছে। তিনি দাবি করেন, ঘটনাটি পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে।

এ ছাড়া গতকাল রাতে উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রামের কৃষক মারুফ হোসেনের গোয়ালঘরের তালা কেটে তিনটি গরু চুরি করা হয়েছে। মারুফ হোসেন ওই গ্রামের আজিজার রহমান ফুলবরের ছেলে। তিনি জানান, গতকাল রাতে গোয়ালঘরে চারটি গরু রেখে ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে উঠে দেখেন, চারটির মধ্যে তিনটি গরু নেই। চুরি হওয়া গরুগুলোর আনুমানিক মূল্য প্রায় দুই লাখ টাকা।

এ বিষয়ে রাণীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ বলেন, চুরির ঘটনাগুলোর খবর পাওয়া গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাবিতে ৬ ডিনের চেম্বারে তালা, দায়িত্ব ছাড়তে রাজি হয়েছেন বলে জানালেন জিএস আম্মার

রাবি প্রতিনিধি  
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ০৫
রাবিতে আওয়ামীপন্থী ডিনদের চেম্বারে তালা মেরে দেয় শিক্ষার্থীদের একাংশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাবিতে আওয়ামীপন্থী ডিনদের চেম্বারে তালা মেরে দেয় শিক্ষার্থীদের একাংশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগের দাবিতে তাঁদের চেম্বারে তালা ঝুলিয়েছে শিক্ষার্থীদের একাংশ। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ভবনে এই ডিনদের চেম্বারে তালা দেন তাঁরা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সময়সীমা অনুযায়ী ১৭ ডিসেম্বর ডিনদের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে নির্বাচন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার ড. ইফতেখারুল আলম মাসুদ ও উপাচার্য ড. সালেহ হাসান নকীবের সিদ্ধান্তে তাঁদের মেয়ার বাড়ানো হয়। তবে তাঁদের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) জিএস সালাউদ্দিন আম্মার।

আম্মার বলেন, ‘জুলাইয়ের সময় শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে দাঁড়ানো শিক্ষকদের ডকুমেন্টসসহ আমরা তালিকা করেছি। আওয়ামীপন্থী যে ডিনরা আছেন, সেই ডিনদের পদত্যাগ প্রসঙ্গে তাঁদের সবাইকে কল দেওয়া হয়, তবে তাঁদের কেউই ক্যাম্পাসে নাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘ছুটি ও ক্লাস ব্যবস্থাপনায় শিক্ষকদের স্বেচ্ছাচারিতা এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। বিতর্কিত শিক্ষক নিয়োগ এবং হত্যা মামলার আসামি হয়েও শিক্ষক হিসেবে বহাল থাকা আমরা মেনে নিতে পারি না। রাজনৈতিক পরিচয় নয়, ন্যায়বিচারই আমাদের দাবি। আমরা অন্যদের সাথে মিলিয়ে চূড়ান্ত এই তালিকা প্রকাশ করব এবং সেই অনুযায়ী তাদের পদত্যাগে বাধ্য করাব।’

পরে আম্মার ফেসবুক পোস্টে বলেন, আওয়ামীপন্থী ৬ জন ডিনের সঙ্গে তাঁর ফোনে কথা হয়েছে। তাঁরা দায়িত্বে থাকবেন না বলে ভিসিকে জানিয়েছেন। সাবেক ভিসি, প্রো-ভিসি ক্লাস নেওয়ার খবর পেয়ে তিনি গিয়েছিলেন, তাঁরাও একপ্রকার পলাতক। জুলাইয়ে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান করা শিক্ষকদের তালিকা করছেন বলেও জানান আম্মার।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি আকিল বিন তালেব বলেন, ‘আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে শহীদ হাদি ভাই আমাদের যে পথ দেখিয়েছেন, আমাদের সেই পথ অনুসরণ করতে হবে। বিপ্লবের এক বছর পেরিয়ে গেলেও আওয়ামী ফ্যাসিস্টের দোসরেরা আজও ক্যাম্পাসে নিরাপদ, অথচ আমাদের বিপ্লবের নেতৃত্ব দেওয়া মানুষেরা রাস্তায় গুলি খেয়ে জীবন দিচ্ছে। তাই আমরা চাই, কোনো ফ্যাসিবাদের দোসর যেন বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিতে না পারে। রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে রাবি প্রশাসন আসলেও বিপ্লবের স্পিরিট তারা ধারণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।’

আকিল বিন তালেব আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার জন্য ব্যানার ধরা ফ্যাসিস্টের দোসরদের তারা এখনো বিচার করতে পারেনি। আমরা প্রশাসনকে সময় দিয়েছিলাম, কিন্তু তারা এই ফ্যাসিস্টদের পদত্যাগ করাইতে পারেনি, তাই আমরা অভ্যুত্থানের শক্তিরা আজ এই ফ্যাসিস্টদের পদত্যাগ করাইতে বাধ্য হচ্ছি।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডিনদের মেয়াদ শেষ হলেও সমাবর্তন, সামনে ভর্তি পরীক্ষাসহ নানা কারণে তাঁদের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। সামনে পরীক্ষা রেখে একজন তাঁদের অব্যাহতি দেওয়াটা অনেক জটিলতা তৈরি করবে। তবে উপাচার্য স্যার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে পারবেন।’

এর আগে গতকাল শনিবার রাতে জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে আওয়ামীপন্থী ডিনদের পদত্যাগ ও ফ্যাসিজমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের অপসারণের দাবিতে ‘অপারেশন জিরো টলারেন্স ফর ফ্যাসিজম’ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতার ঘরে আগুন: মামলা হয়নি, নাশকতার ‘বিশ্বাসযোগ্য’ প্রমাণ মেলেনি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আগুনে জ্বলছে ঘর। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগুনে জ্বলছে ঘর। ছবি: আজকের পত্রিকা

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নে বিএনপি নেতা বেলাল হোসেনের ঘরে আগুন লাগার ঘটনায় নাশকতার কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পায়নি পুলিশ। আজ রোববার দুপুর পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলাও হয়নি।

আগুনে পুড়ে সাত বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু এবং পরিবারের তিন সদস্য দগ্ধ হলেও ঘটনাটি নাশকতা কিনা সে ব্যাপারে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি।

গতকাল শনিবার রাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) হোসাইন মোহাম্মদ রায়হান কাজেমীর সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মিডিয়ায় দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে ঘর পোড়ার যে তথ্য ছড়িয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে তার কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কোনো ‘মব’ বা সংগঠিত দুর্বৃত্তের সংযোগের আলামতও পুলিশ পায়নি।

লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রণজিৎ কুমার দাস সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল থেকে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছি। তবে বাইরে থেকে দরজায় তালা লাগিয়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়ার কোনো আলামত আমরা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি।’

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেলাল হোসেন দাবি করেছেন, ‘ঘরের দুই দরজাই বাইরে থেকে তালাবদ্ধ ছিল। আগুনের তীব্রতায় আমি টিনের বেড়া ফাঁকা করে স্ত্রী ও বড় দুই মেয়েকে নিয়ে বের হতে পারলেও ছোট মেয়ে আয়েশাকে বাঁচাতে পারিনি। ধোঁয়ায় কিছুই দেখা যাচ্ছিল না।’

গত শুক্রবার গভীর রাতে চরমনসা গ্রামের সূতারগোপ্তা এলাকায় এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে সাত বছরের আয়েশা আক্তার পুড়ে মারা যায়। দগ্ধ বেলাল হোসেন সদর হাসপাতালে এবং তাঁর দুই মেয়ে বীথি আক্তার (১৭) ও স্মৃতি আক্তার (১৪) জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওয়াহিদ পারভেজ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। বাইরে থেকে দরজায় তালা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হতে পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং সাধারণ মানুষের কাছে কোনো তথ্য বা প্রমাণ থাকলে তা সরবরাহের অনুরোধ জানিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অনুপ্রবেশের অভিযোগে বিএসএফ সদস্যকে আটক করল বিজিবি

পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) এক সদস্যকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। রোববার (২১ ডিসেম্বর) ভোর ৫টার দিকে সীমানা বেড়ার ১০০ গজ বাংলাদেশের ভেতর থেকে তাঁকে আটক করা হয়। পরে ওই বিএসএফ সদস্যকে দহগ্রাম আঙ্গোরপোতা বিজিবি ক্যাম্পে হেফাজতে রাখা হয়। এ ঘটনায় বিজিবি পতাকা বৈঠকের জন্য বিএসএফকে আহ্বান জানিয়েছে।

বিজিবি ও স্থানীয়রা জানান, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ডিএএমপি প্রধান পিলার ১ নম্বরের উপপিলার ৭ নম্বর-সংলগ্ন দহগ্রাম ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া এলাকা। অপর পাশে রয়েছে ভারতের কোচবিহার রাজ্যের কচুলিবাড়ী থানার কারেঙ্গাতলি এলাকা। রোববার ভোরে ভারতের ১৭৪ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের অর্জুন ক্যাম্পের টহল দলের সদস্য বেদ প্রকাশ ভারতীয় শূন্যরেখা অতিক্রম করে বাংলাদেশের প্রায় ১০০ গজ ভেতরে ডাঙ্গাপাড়া এলাকায় প্রবেশ করেন। এ সময় ৫১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের দহগ্রাম আঙ্গোরপোতা ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যরা তাঁকে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যান। এ সময় বিএসএফ সদস্যের ব্যবহৃত একটি অস্ত্র (শটগান), দুটি গুলি, একটি ওয়্যারলেস সেট ও একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

আঙ্গোরপোতা বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার নায়েব সুবেদার রফিকুজ্জামানের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

এ ব্যাপারে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) রংপুর ৫১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল সেলিম আল দীন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে বিএসএফ সদস্য কনস্টেবল বেদ প্রকাশ বলেছে কুয়াশায় গরু পাচারকারীদের পিছু ধাওয়া করতে গিয়ে ভুল করে বাংলাদেশে ঢুকেছে। আটককৃত বিএসএফ সদস্যের অস্ত্র-গোলাবারুদ ও অন্য সরঞ্জামাদিসহ আঙ্গোরপোতা ক্যাম্পে বিজিবির হেফাজতে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় বিজিবি-বিএসএফ ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠক করার কথা রয়েছে। বিএসএফ দুঃখ প্রকাশ করে ওই বিএসএফ সদস্যের পরিচয় নিশ্চিত করেছে এবং তাঁকে ফেরতের অনুরোধ করেছে। বাংলাদেশ-ভারত যৌথ সীমান্ত চুক্তি ১৯৭৫ এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ওই বিএসএফ সদস্যের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত