৫২-এর ভাষা আন্দোলনে যাঁরা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, তাঁদেরই একজন আজিজার রহমান। ভাষা আন্দোলনে যাঁর ছিল সক্রিয় অংশগ্রহণ। সে সময় তিনি একাধিকবার জেল খেটেছেন।
ভাষাসৈনিক আজিজার রহমানের বয়স ৯৪ বছর। তাঁর খোঁজ-খবর না নেওয়ায় রাগ ও ক্ষোভে বয়স্ক ভাতাও নেননি তিনি। রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতির পাশাপাশি সরকারি সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁর পরিবার ও এলাকাবাসী।
জানা গেছে, ২০১৬ সালে ক্ষেতলাল সঙ্গীতালয় নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আজিজার রহমানকে সম্মাননা পদক দেয়। এরপর থেকে স্থানীয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন সময় সম্মাননা স্মারকও দিয়েছেন, তবে রাষ্ট্রীয়ভাবে মেলেনি কোনো স্বীকৃতি। মেলেনি কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তাঁর জন্মস্থান আক্কেলপুর উপজেলার চাকতাইল গ্রামে। তবে বিয়ের পর থাকেন ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রামে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই বলেন, আজিজার রহমান ’৫২-এর ভাষাসৈনিক এবং ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের একজন অন্যতম সংগঠক ছিলেন। আজিজার বগুড়ার প্রয়াত ভাষাসৈনিক গাজীউল হক ও প্রয়াত মীর শহিদ মণ্ডলের সঙ্গে ভাষা আন্দোলন করেন।
আজিজার রহমানের স্ত্রী দিলরুবা বেগম আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমার স্বামী এখন ঠিকমতো কথা বলতে পারেন না। তাঁকে এখন পর্যন্ত জাতীয়ভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি।সে দেশের জন্য যা করেছেন, তার তুলনায় কিছুই পাইনি। আমার স্বামী শারীরিকভাবে অসুস্থ। সামর্থ্য না থাকায় তাঁর উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছি না। এখন পর্যন্ত তাঁর একটা বয়স্ক ভাতাও হয়নি। আমি তেমন কিছু চাই না, আমি চাই সরকার যেন তাঁকে জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি দিয়ে ভাষাসৈনিক ও ভাষা আন্দোলনের কথা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরে, যেভাবে সম্মানিত করেছেন মুক্তিযোদ্ধাদের।
আজিজার রহমানের মেয়ে রিতা আক্তার বলেন, ‘বর্তমান সরকার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমার বাবা ভাষাসৈনিক আজিজার রহমানকে জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি দেবে বলে আশাবাদী।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট মামুদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান শামীম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ভাষাসৈনিক আজিজার রহমান এর আগে রাগে ক্ষোভে বয়স্ক ভাতা নিতে চাননি। বর্তমানে তাঁর বয়স্ক ভাতার কাজ প্রক্রিয়াধীন। অল্পদিনের মধ্যে পেয়ে যাবেন।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে