হাসান আলী

জীবন চলার পথে অনেকগুলো সম্পর্ক আমাদের সামনে হাজির হয়। ছেলেমেয়ের সম্পর্ক, মা-বাবার সম্পর্ক, ভাই-বোনের সম্পর্ক, বন্ধু-বান্ধবের সম্পর্ক, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক, সামাজিক সম্পর্ক, পাড়া-প্রতিবেশীর সম্পর্ক, আত্মীয়স্বজনের সম্পর্ক, প্রেমিক-প্রেমিকার সম্পর্ক, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক ইত্যাদি। আজ শুধু বৃদ্ধ বয়সে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক নিয়ে কথা বলব।
আমরা যখন প্রবীণ হই, তখন ধরে নিই আমরা অকর্মণ্য। সমাজ প্রবীণ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করে বিধায় প্রবীণ নিজেও বিশ্বাস করতে শুরু করে, প্রবীণ মানে অকর্মণ্য। প্রবীণ বয়সে আয়-রোজগার কমতে থাকে। অসুখ-বিসুখ, রোগবালাই বাড়তে থাকে। পাল্লা দিয়ে খরচ বাড়ে। খোঁজখবর নেওয়ার লোক কমে যায়। ডাক্তারের চেম্বার অথবা হাসপাতালে কে নিয়ে যাবে, কার সময় হবে, এ নিয়ে ভাবনা শুরু হয়। সন্তানদের কাছে থাকার সৌভাগ্য অনেকেই পান না। কারও সন্তান বিদেশে কিংবা অন্য শহরে কাজ করেন, সে জন্য থাকা হয় না।
কেউ সন্তানের সঙ্গে থাকেন আবার কেউ থাকেন না। প্রবীণ স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক উপরিউক্ত পরিস্থিতিতে ভিন্নমাত্রা পায়। যাঁরা যৌবনে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ককে মর্যাদা দিয়েছেন, যত্ন করেছেন, শ্রদ্ধা করেছেন, তাঁরা বৃদ্ধ বয়সে এসে তুলনামূলক কম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। তাঁদের বার্ধক্য শান্তিপূর্ণ এবং স্বস্তিদায়ক হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। যাঁরা যৌবনে ঝগড়া-বিবাদ, মারামারি, সন্দেহ, অবিশ্বাস, অশ্রদ্ধা, অসম্মান করে কাটিয়েছেন, তাঁরা কমবেশি সবাই বৃদ্ধ বয়সে নানা রকম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা খুবই কঠিন।
আমি মনে করি, বৃদ্ধ বয়সটা একজন মানুষের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। জীবিকা অর্জনের জন্য কাজ খুঁজতে হয় না। কাজ হারানোর ভয় থাকে না। কর্মক্ষেত্রে কাউকে সমীহ করে চলতে হয় না। কারও মন রক্ষার জন্য নাটক করতে হয় না। পদোন্নতির জন্য হাহাকার নেই। যাঁরা পদোন্নতি পেলেন, তাঁদের প্রতি ঘৃণা-বিদ্বেষ নেই। বদলির আতঙ্ক নেই। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে তেল মারার, গুণগান করার দরকার হয় না। সত্যিকার অর্থে একজন মুক্ত মানুষ। ফলে বার্ধক্যকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করতে পারা আনন্দের। সেই আনন্দ মাটি হয়ে যাবে যদি স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক তিক্ত হয়। আমরা যৌবনে এমন ভান করি, যেন সংসারের যাবতীয় কাজ মাথায় বয়ে বেড়াচ্ছি। আর সবাই বসে বসে খাচ্ছে। অন্যরা গুরুত্বহীন, শুধু আপনি নিজে গুরুত্বপূর্ণ—এমন ভাবটা কমবেশি সবার মধ্যেই লক্ষ করা যায়। অনেকেই আক্ষেপ করেন পরিবার-পরিজনের জন্য অনেক করেছেন; কিন্তু নাম পাননি। আপনাকে এসব করতে কে বলেছে? আসলে আপনি সংসারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে চেয়েছিলেন। দণ্ড-মুণ্ডের মালিক হতে চেয়েছিলেন। পারেননি, তাই আক্ষেপ, বিলাপ, অভিশাপ।
বৃদ্ধ বয়সে আরেকটি অসুস্থ প্রতিযোগিতা হলো, সন্তানদের নিয়ন্ত্রণে রাখার। সন্তানদের দখলে নেওয়ার প্রতিযোগিতায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মা-ই সফল হন। কারণ, যৌবনে তিনি সন্তান লালনপালনে বেশি সময় দিয়েছেন। কমবেশি স্বামী কর্তৃক নিগৃহীত হয়েছেন। মা শোষিত শ্রেণির বলেই সন্তানদের আনুকূল্য বেশি পান। সন্তানদের সমর্থনে তিনি কিছুটা ক্ষমতাবান হয়ে ওঠেন। তারপর স্বামী বেচারা নানাভাবে নাজেহাল হতে থাকেন। যৌবনে তিনি কী ধরনের আচরণ করেছেন, কী কী ভুল করেছেন, সেসব বারবার মনে করিয়ে দেওয়া হয়। তার সব অক্ষমতাকে উপহাস করা হয়। একসময় বৃদ্ধ স্বামীটি নির্বাক হয়ে যান। তিনি বুঝতে পারেন, একা এ পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন। বেশির ভাগ প্রবীণ ধর্মীয় কাজে বেশি বেশি নিয়োজিত হন। মৃত্যু ভাবনা, অসুখ-বিসুখ হয়ে ওঠে কাঙ্ক্ষিত। চলে যাওয়ার জন্য মনটা ব্যাকুল হয়ে ওঠে। বৃদ্ধ স্বামী জীবনযুদ্ধে হার মেনে পরিবারের দয়ায় জীবনযাপন শুরু করেন।
একসময় বৃদ্ধ স্ত্রী ক্ষমতা প্রয়োগে ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। মনের অজান্তে ছেলে, ছেলে-বউয়ের ওপর কর্তৃত্ব বজায় রাখার চেষ্টা চালান। শুরু হয় সংঘাত। ছেলে-বউরা শুরুতেই শ্বশুরের প্রতি পক্ষপাত দেখাতে শুরু করেন শাশুড়িকে নাজেহাল করতে। যেমন শ্বশুরকে পছন্দমতো খাবার দেওয়া, জামাকাপড় পরিষ্কার করে দেওয়া, বিছানার চাদর বদলে দেওয়া, হাতখরচের জন্য টাকা দেওয়া ইত্যাদি। এ রকম টানাপোড়েনের মধ্যেই বয়সের কারণে বৃদ্ধ স্বামীটি আগে মারা যান। বৃদ্ধ স্ত্রী ছেলেদের কিংবা মেয়েদের আশ্রয়ে কষ্টকর অবহেলার জীবন শুরু করেন।
আর যেসব স্বামী-স্ত্রী সন্তানদের কাছে থাকেন না, তাঁদের জীবন কিছুটা ভিন্ন রকমের। এসব দম্পতির ঝগড়া-বিবাদ, মনোমালিন্য তুলনামূলক কম। কারণ, তাঁরা একে অন্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয় সন্তানদের কাছ থেকে গুরুত্ব পাওয়া না-পাওয়া থেকে। যেমন ছেলে যদি বাবার হাতে টাকা দেয়, তবে মা মন খারাপ করেন। এসব ক্ষেত্রে বৃদ্ধ স্বামী নিজের ইচ্ছামতো খরচ করেন। বৃদ্ধ স্ত্রীর হাতে নিজ থেকে টাকা দিতে চান না। যদি দেন, তবে মাঝে মাঝেই হিসাব নেন। বৃদ্ধ স্বামীটি স্বভাবগতভাবে বৃদ্ধা স্ত্রীর সেবাযত্ন পেতে ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। স্ত্রী কোথাও বেড়াতে যেতে চাইলে নানা অসিলা দেখিয়ে যাত্রাবিরতি করান। ছেলেমেয়েদের আবদারে গেলেও অব্যাহত তাগিদ দিয়ে বৃদ্ধ স্ত্রীকে নিজের কাছে এনে রাখেন।
অনেকেই মনে করেন, বৃদ্ধ বয়সে স্বামী-স্ত্রীর প্রেম-মহব্বত অনেক বৃদ্ধি পায়। কথাটা কতখানি সত্য, আমি বুঝতে পারি না। এটা প্রেম নাকি নির্ভরশীলতা—এ দ্বন্দ্ব আমার কাটেনি। সন্তান থেকে আলাদা বসবাসকারী বৃদ্ধ বাবা-মাকে সন্তানেরা টাকাপয়সা দেন। কেউ কেউ মাকে আলাদা টাকা দেন। মেয়েরা বাবার একটু বেশি যত্ন নেন। যেসব বাবা সন্তান লালনপালনে বেশি ভূমিকা রেখেছেন এবং স্ত্রীর বকাঝকা বেশি খেয়েছেন, তাঁরা কন্যাসন্তানের কাছ থেকে বেশি মনোযোগ পান। দুর্বল বৃদ্ধ বাবার প্রতি কন্যাসন্তানের অধিক মনোযোগে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হয়। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যদি কেউ একজন বেশির ভাগ সময় অসুস্থ থাকেন, একপর্যায়ে তিনি অবহেলার শিকার হন। সেবাদানকারী কর্মীর অভাবে কিংবা অবহেলায় স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক তিক্ত অবস্থায় চলে যায়। যেসব দম্পতির একাধিক সন্তান থাকে এবং যে সন্তানটি আর্থিক ও শারীরিকভাবে দুর্বল হয়, তার জন্য ঝগড়া-বিবাদ দেখা দেয়। মাদকাসক্ত সন্তানের দাবি মেটাতে গিয়ে চরম পারিবারিক সংকট দেখা দেয়। শারীরিক-মানসিক প্রতিবন্ধী সন্তান লালনপালনের প্রশ্নে বৃদ্ধ স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা যায়। নিকটাত্মীয়স্বজনকে আর্থিক সহযোগিতাকে কেন্দ্র করে সংকট তৈরি হয়।
যেসব বৃদ্ধ দম্পতির সন্তান নেই, তাঁদের সংকট ভিন্ন ধরনের। সেখানে স্ত্রীকুলের লোকজন প্রাধান্য পায়, ফলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঠান্ডাযুদ্ধ লেগেই থাকে। সেই যুদ্ধ মেটানো খুবই দুরূহ ব্যাপার।
বৃদ্ধ বয়সে শান্তিপূর্ণ, অর্থবহ, স্বস্তিদায়ক জীবন কাটানো অতি জরুরি বিষয়। যাঁরা এমন জীবন আশা করেন, তাঁদের অবশ্যই স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক সহনীয় রাখতে হবে। সে জন্য যৌবনই হলো মোক্ষম সময়। আর্থিক নিরাপত্তার জন্য আয়ের দশ ভাগের এক ভাগ সঞ্চয় করা, সুস্থ জীবনের জন্য কায়িক পরিশ্রম করা, মাদক ও যৌন অনাচার থেকে দূরে থাকা, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অর্থবহ সময় কাটানো, পরিবারের সদস্যদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া, সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিজের অংশগ্রহণ বাড়ানো, ইতিবাচক চিন্তা করা, নতুন জ্ঞান, চিন্তা, প্রযুক্তিকে গ্রহণ করার মানসিকতা তৈরি করা। এসবের মধ্য দিয়ে একজন মানুষ গড়ে উঠলে তার দাম্পত্যজীবন সুখের হবে।
হাসান আলী: সভাপতি, এজিং সাপোর্ট ফোরাম

জীবন চলার পথে অনেকগুলো সম্পর্ক আমাদের সামনে হাজির হয়। ছেলেমেয়ের সম্পর্ক, মা-বাবার সম্পর্ক, ভাই-বোনের সম্পর্ক, বন্ধু-বান্ধবের সম্পর্ক, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক, সামাজিক সম্পর্ক, পাড়া-প্রতিবেশীর সম্পর্ক, আত্মীয়স্বজনের সম্পর্ক, প্রেমিক-প্রেমিকার সম্পর্ক, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক ইত্যাদি। আজ শুধু বৃদ্ধ বয়সে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক নিয়ে কথা বলব।
আমরা যখন প্রবীণ হই, তখন ধরে নিই আমরা অকর্মণ্য। সমাজ প্রবীণ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করে বিধায় প্রবীণ নিজেও বিশ্বাস করতে শুরু করে, প্রবীণ মানে অকর্মণ্য। প্রবীণ বয়সে আয়-রোজগার কমতে থাকে। অসুখ-বিসুখ, রোগবালাই বাড়তে থাকে। পাল্লা দিয়ে খরচ বাড়ে। খোঁজখবর নেওয়ার লোক কমে যায়। ডাক্তারের চেম্বার অথবা হাসপাতালে কে নিয়ে যাবে, কার সময় হবে, এ নিয়ে ভাবনা শুরু হয়। সন্তানদের কাছে থাকার সৌভাগ্য অনেকেই পান না। কারও সন্তান বিদেশে কিংবা অন্য শহরে কাজ করেন, সে জন্য থাকা হয় না।
কেউ সন্তানের সঙ্গে থাকেন আবার কেউ থাকেন না। প্রবীণ স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক উপরিউক্ত পরিস্থিতিতে ভিন্নমাত্রা পায়। যাঁরা যৌবনে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ককে মর্যাদা দিয়েছেন, যত্ন করেছেন, শ্রদ্ধা করেছেন, তাঁরা বৃদ্ধ বয়সে এসে তুলনামূলক কম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। তাঁদের বার্ধক্য শান্তিপূর্ণ এবং স্বস্তিদায়ক হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। যাঁরা যৌবনে ঝগড়া-বিবাদ, মারামারি, সন্দেহ, অবিশ্বাস, অশ্রদ্ধা, অসম্মান করে কাটিয়েছেন, তাঁরা কমবেশি সবাই বৃদ্ধ বয়সে নানা রকম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা খুবই কঠিন।
আমি মনে করি, বৃদ্ধ বয়সটা একজন মানুষের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। জীবিকা অর্জনের জন্য কাজ খুঁজতে হয় না। কাজ হারানোর ভয় থাকে না। কর্মক্ষেত্রে কাউকে সমীহ করে চলতে হয় না। কারও মন রক্ষার জন্য নাটক করতে হয় না। পদোন্নতির জন্য হাহাকার নেই। যাঁরা পদোন্নতি পেলেন, তাঁদের প্রতি ঘৃণা-বিদ্বেষ নেই। বদলির আতঙ্ক নেই। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে তেল মারার, গুণগান করার দরকার হয় না। সত্যিকার অর্থে একজন মুক্ত মানুষ। ফলে বার্ধক্যকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করতে পারা আনন্দের। সেই আনন্দ মাটি হয়ে যাবে যদি স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক তিক্ত হয়। আমরা যৌবনে এমন ভান করি, যেন সংসারের যাবতীয় কাজ মাথায় বয়ে বেড়াচ্ছি। আর সবাই বসে বসে খাচ্ছে। অন্যরা গুরুত্বহীন, শুধু আপনি নিজে গুরুত্বপূর্ণ—এমন ভাবটা কমবেশি সবার মধ্যেই লক্ষ করা যায়। অনেকেই আক্ষেপ করেন পরিবার-পরিজনের জন্য অনেক করেছেন; কিন্তু নাম পাননি। আপনাকে এসব করতে কে বলেছে? আসলে আপনি সংসারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে চেয়েছিলেন। দণ্ড-মুণ্ডের মালিক হতে চেয়েছিলেন। পারেননি, তাই আক্ষেপ, বিলাপ, অভিশাপ।
বৃদ্ধ বয়সে আরেকটি অসুস্থ প্রতিযোগিতা হলো, সন্তানদের নিয়ন্ত্রণে রাখার। সন্তানদের দখলে নেওয়ার প্রতিযোগিতায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মা-ই সফল হন। কারণ, যৌবনে তিনি সন্তান লালনপালনে বেশি সময় দিয়েছেন। কমবেশি স্বামী কর্তৃক নিগৃহীত হয়েছেন। মা শোষিত শ্রেণির বলেই সন্তানদের আনুকূল্য বেশি পান। সন্তানদের সমর্থনে তিনি কিছুটা ক্ষমতাবান হয়ে ওঠেন। তারপর স্বামী বেচারা নানাভাবে নাজেহাল হতে থাকেন। যৌবনে তিনি কী ধরনের আচরণ করেছেন, কী কী ভুল করেছেন, সেসব বারবার মনে করিয়ে দেওয়া হয়। তার সব অক্ষমতাকে উপহাস করা হয়। একসময় বৃদ্ধ স্বামীটি নির্বাক হয়ে যান। তিনি বুঝতে পারেন, একা এ পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন। বেশির ভাগ প্রবীণ ধর্মীয় কাজে বেশি বেশি নিয়োজিত হন। মৃত্যু ভাবনা, অসুখ-বিসুখ হয়ে ওঠে কাঙ্ক্ষিত। চলে যাওয়ার জন্য মনটা ব্যাকুল হয়ে ওঠে। বৃদ্ধ স্বামী জীবনযুদ্ধে হার মেনে পরিবারের দয়ায় জীবনযাপন শুরু করেন।
একসময় বৃদ্ধ স্ত্রী ক্ষমতা প্রয়োগে ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। মনের অজান্তে ছেলে, ছেলে-বউয়ের ওপর কর্তৃত্ব বজায় রাখার চেষ্টা চালান। শুরু হয় সংঘাত। ছেলে-বউরা শুরুতেই শ্বশুরের প্রতি পক্ষপাত দেখাতে শুরু করেন শাশুড়িকে নাজেহাল করতে। যেমন শ্বশুরকে পছন্দমতো খাবার দেওয়া, জামাকাপড় পরিষ্কার করে দেওয়া, বিছানার চাদর বদলে দেওয়া, হাতখরচের জন্য টাকা দেওয়া ইত্যাদি। এ রকম টানাপোড়েনের মধ্যেই বয়সের কারণে বৃদ্ধ স্বামীটি আগে মারা যান। বৃদ্ধ স্ত্রী ছেলেদের কিংবা মেয়েদের আশ্রয়ে কষ্টকর অবহেলার জীবন শুরু করেন।
আর যেসব স্বামী-স্ত্রী সন্তানদের কাছে থাকেন না, তাঁদের জীবন কিছুটা ভিন্ন রকমের। এসব দম্পতির ঝগড়া-বিবাদ, মনোমালিন্য তুলনামূলক কম। কারণ, তাঁরা একে অন্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয় সন্তানদের কাছ থেকে গুরুত্ব পাওয়া না-পাওয়া থেকে। যেমন ছেলে যদি বাবার হাতে টাকা দেয়, তবে মা মন খারাপ করেন। এসব ক্ষেত্রে বৃদ্ধ স্বামী নিজের ইচ্ছামতো খরচ করেন। বৃদ্ধ স্ত্রীর হাতে নিজ থেকে টাকা দিতে চান না। যদি দেন, তবে মাঝে মাঝেই হিসাব নেন। বৃদ্ধ স্বামীটি স্বভাবগতভাবে বৃদ্ধা স্ত্রীর সেবাযত্ন পেতে ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। স্ত্রী কোথাও বেড়াতে যেতে চাইলে নানা অসিলা দেখিয়ে যাত্রাবিরতি করান। ছেলেমেয়েদের আবদারে গেলেও অব্যাহত তাগিদ দিয়ে বৃদ্ধ স্ত্রীকে নিজের কাছে এনে রাখেন।
অনেকেই মনে করেন, বৃদ্ধ বয়সে স্বামী-স্ত্রীর প্রেম-মহব্বত অনেক বৃদ্ধি পায়। কথাটা কতখানি সত্য, আমি বুঝতে পারি না। এটা প্রেম নাকি নির্ভরশীলতা—এ দ্বন্দ্ব আমার কাটেনি। সন্তান থেকে আলাদা বসবাসকারী বৃদ্ধ বাবা-মাকে সন্তানেরা টাকাপয়সা দেন। কেউ কেউ মাকে আলাদা টাকা দেন। মেয়েরা বাবার একটু বেশি যত্ন নেন। যেসব বাবা সন্তান লালনপালনে বেশি ভূমিকা রেখেছেন এবং স্ত্রীর বকাঝকা বেশি খেয়েছেন, তাঁরা কন্যাসন্তানের কাছ থেকে বেশি মনোযোগ পান। দুর্বল বৃদ্ধ বাবার প্রতি কন্যাসন্তানের অধিক মনোযোগে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হয়। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যদি কেউ একজন বেশির ভাগ সময় অসুস্থ থাকেন, একপর্যায়ে তিনি অবহেলার শিকার হন। সেবাদানকারী কর্মীর অভাবে কিংবা অবহেলায় স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক তিক্ত অবস্থায় চলে যায়। যেসব দম্পতির একাধিক সন্তান থাকে এবং যে সন্তানটি আর্থিক ও শারীরিকভাবে দুর্বল হয়, তার জন্য ঝগড়া-বিবাদ দেখা দেয়। মাদকাসক্ত সন্তানের দাবি মেটাতে গিয়ে চরম পারিবারিক সংকট দেখা দেয়। শারীরিক-মানসিক প্রতিবন্ধী সন্তান লালনপালনের প্রশ্নে বৃদ্ধ স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা যায়। নিকটাত্মীয়স্বজনকে আর্থিক সহযোগিতাকে কেন্দ্র করে সংকট তৈরি হয়।
যেসব বৃদ্ধ দম্পতির সন্তান নেই, তাঁদের সংকট ভিন্ন ধরনের। সেখানে স্ত্রীকুলের লোকজন প্রাধান্য পায়, ফলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঠান্ডাযুদ্ধ লেগেই থাকে। সেই যুদ্ধ মেটানো খুবই দুরূহ ব্যাপার।
বৃদ্ধ বয়সে শান্তিপূর্ণ, অর্থবহ, স্বস্তিদায়ক জীবন কাটানো অতি জরুরি বিষয়। যাঁরা এমন জীবন আশা করেন, তাঁদের অবশ্যই স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক সহনীয় রাখতে হবে। সে জন্য যৌবনই হলো মোক্ষম সময়। আর্থিক নিরাপত্তার জন্য আয়ের দশ ভাগের এক ভাগ সঞ্চয় করা, সুস্থ জীবনের জন্য কায়িক পরিশ্রম করা, মাদক ও যৌন অনাচার থেকে দূরে থাকা, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অর্থবহ সময় কাটানো, পরিবারের সদস্যদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া, সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিজের অংশগ্রহণ বাড়ানো, ইতিবাচক চিন্তা করা, নতুন জ্ঞান, চিন্তা, প্রযুক্তিকে গ্রহণ করার মানসিকতা তৈরি করা। এসবের মধ্য দিয়ে একজন মানুষ গড়ে উঠলে তার দাম্পত্যজীবন সুখের হবে।
হাসান আলী: সভাপতি, এজিং সাপোর্ট ফোরাম
হাসান আলী

জীবন চলার পথে অনেকগুলো সম্পর্ক আমাদের সামনে হাজির হয়। ছেলেমেয়ের সম্পর্ক, মা-বাবার সম্পর্ক, ভাই-বোনের সম্পর্ক, বন্ধু-বান্ধবের সম্পর্ক, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক, সামাজিক সম্পর্ক, পাড়া-প্রতিবেশীর সম্পর্ক, আত্মীয়স্বজনের সম্পর্ক, প্রেমিক-প্রেমিকার সম্পর্ক, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক ইত্যাদি। আজ শুধু বৃদ্ধ বয়সে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক নিয়ে কথা বলব।
আমরা যখন প্রবীণ হই, তখন ধরে নিই আমরা অকর্মণ্য। সমাজ প্রবীণ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করে বিধায় প্রবীণ নিজেও বিশ্বাস করতে শুরু করে, প্রবীণ মানে অকর্মণ্য। প্রবীণ বয়সে আয়-রোজগার কমতে থাকে। অসুখ-বিসুখ, রোগবালাই বাড়তে থাকে। পাল্লা দিয়ে খরচ বাড়ে। খোঁজখবর নেওয়ার লোক কমে যায়। ডাক্তারের চেম্বার অথবা হাসপাতালে কে নিয়ে যাবে, কার সময় হবে, এ নিয়ে ভাবনা শুরু হয়। সন্তানদের কাছে থাকার সৌভাগ্য অনেকেই পান না। কারও সন্তান বিদেশে কিংবা অন্য শহরে কাজ করেন, সে জন্য থাকা হয় না।
কেউ সন্তানের সঙ্গে থাকেন আবার কেউ থাকেন না। প্রবীণ স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক উপরিউক্ত পরিস্থিতিতে ভিন্নমাত্রা পায়। যাঁরা যৌবনে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ককে মর্যাদা দিয়েছেন, যত্ন করেছেন, শ্রদ্ধা করেছেন, তাঁরা বৃদ্ধ বয়সে এসে তুলনামূলক কম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। তাঁদের বার্ধক্য শান্তিপূর্ণ এবং স্বস্তিদায়ক হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। যাঁরা যৌবনে ঝগড়া-বিবাদ, মারামারি, সন্দেহ, অবিশ্বাস, অশ্রদ্ধা, অসম্মান করে কাটিয়েছেন, তাঁরা কমবেশি সবাই বৃদ্ধ বয়সে নানা রকম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা খুবই কঠিন।
আমি মনে করি, বৃদ্ধ বয়সটা একজন মানুষের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। জীবিকা অর্জনের জন্য কাজ খুঁজতে হয় না। কাজ হারানোর ভয় থাকে না। কর্মক্ষেত্রে কাউকে সমীহ করে চলতে হয় না। কারও মন রক্ষার জন্য নাটক করতে হয় না। পদোন্নতির জন্য হাহাকার নেই। যাঁরা পদোন্নতি পেলেন, তাঁদের প্রতি ঘৃণা-বিদ্বেষ নেই। বদলির আতঙ্ক নেই। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে তেল মারার, গুণগান করার দরকার হয় না। সত্যিকার অর্থে একজন মুক্ত মানুষ। ফলে বার্ধক্যকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করতে পারা আনন্দের। সেই আনন্দ মাটি হয়ে যাবে যদি স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক তিক্ত হয়। আমরা যৌবনে এমন ভান করি, যেন সংসারের যাবতীয় কাজ মাথায় বয়ে বেড়াচ্ছি। আর সবাই বসে বসে খাচ্ছে। অন্যরা গুরুত্বহীন, শুধু আপনি নিজে গুরুত্বপূর্ণ—এমন ভাবটা কমবেশি সবার মধ্যেই লক্ষ করা যায়। অনেকেই আক্ষেপ করেন পরিবার-পরিজনের জন্য অনেক করেছেন; কিন্তু নাম পাননি। আপনাকে এসব করতে কে বলেছে? আসলে আপনি সংসারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে চেয়েছিলেন। দণ্ড-মুণ্ডের মালিক হতে চেয়েছিলেন। পারেননি, তাই আক্ষেপ, বিলাপ, অভিশাপ।
বৃদ্ধ বয়সে আরেকটি অসুস্থ প্রতিযোগিতা হলো, সন্তানদের নিয়ন্ত্রণে রাখার। সন্তানদের দখলে নেওয়ার প্রতিযোগিতায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মা-ই সফল হন। কারণ, যৌবনে তিনি সন্তান লালনপালনে বেশি সময় দিয়েছেন। কমবেশি স্বামী কর্তৃক নিগৃহীত হয়েছেন। মা শোষিত শ্রেণির বলেই সন্তানদের আনুকূল্য বেশি পান। সন্তানদের সমর্থনে তিনি কিছুটা ক্ষমতাবান হয়ে ওঠেন। তারপর স্বামী বেচারা নানাভাবে নাজেহাল হতে থাকেন। যৌবনে তিনি কী ধরনের আচরণ করেছেন, কী কী ভুল করেছেন, সেসব বারবার মনে করিয়ে দেওয়া হয়। তার সব অক্ষমতাকে উপহাস করা হয়। একসময় বৃদ্ধ স্বামীটি নির্বাক হয়ে যান। তিনি বুঝতে পারেন, একা এ পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন। বেশির ভাগ প্রবীণ ধর্মীয় কাজে বেশি বেশি নিয়োজিত হন। মৃত্যু ভাবনা, অসুখ-বিসুখ হয়ে ওঠে কাঙ্ক্ষিত। চলে যাওয়ার জন্য মনটা ব্যাকুল হয়ে ওঠে। বৃদ্ধ স্বামী জীবনযুদ্ধে হার মেনে পরিবারের দয়ায় জীবনযাপন শুরু করেন।
একসময় বৃদ্ধ স্ত্রী ক্ষমতা প্রয়োগে ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। মনের অজান্তে ছেলে, ছেলে-বউয়ের ওপর কর্তৃত্ব বজায় রাখার চেষ্টা চালান। শুরু হয় সংঘাত। ছেলে-বউরা শুরুতেই শ্বশুরের প্রতি পক্ষপাত দেখাতে শুরু করেন শাশুড়িকে নাজেহাল করতে। যেমন শ্বশুরকে পছন্দমতো খাবার দেওয়া, জামাকাপড় পরিষ্কার করে দেওয়া, বিছানার চাদর বদলে দেওয়া, হাতখরচের জন্য টাকা দেওয়া ইত্যাদি। এ রকম টানাপোড়েনের মধ্যেই বয়সের কারণে বৃদ্ধ স্বামীটি আগে মারা যান। বৃদ্ধ স্ত্রী ছেলেদের কিংবা মেয়েদের আশ্রয়ে কষ্টকর অবহেলার জীবন শুরু করেন।
আর যেসব স্বামী-স্ত্রী সন্তানদের কাছে থাকেন না, তাঁদের জীবন কিছুটা ভিন্ন রকমের। এসব দম্পতির ঝগড়া-বিবাদ, মনোমালিন্য তুলনামূলক কম। কারণ, তাঁরা একে অন্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয় সন্তানদের কাছ থেকে গুরুত্ব পাওয়া না-পাওয়া থেকে। যেমন ছেলে যদি বাবার হাতে টাকা দেয়, তবে মা মন খারাপ করেন। এসব ক্ষেত্রে বৃদ্ধ স্বামী নিজের ইচ্ছামতো খরচ করেন। বৃদ্ধ স্ত্রীর হাতে নিজ থেকে টাকা দিতে চান না। যদি দেন, তবে মাঝে মাঝেই হিসাব নেন। বৃদ্ধ স্বামীটি স্বভাবগতভাবে বৃদ্ধা স্ত্রীর সেবাযত্ন পেতে ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। স্ত্রী কোথাও বেড়াতে যেতে চাইলে নানা অসিলা দেখিয়ে যাত্রাবিরতি করান। ছেলেমেয়েদের আবদারে গেলেও অব্যাহত তাগিদ দিয়ে বৃদ্ধ স্ত্রীকে নিজের কাছে এনে রাখেন।
অনেকেই মনে করেন, বৃদ্ধ বয়সে স্বামী-স্ত্রীর প্রেম-মহব্বত অনেক বৃদ্ধি পায়। কথাটা কতখানি সত্য, আমি বুঝতে পারি না। এটা প্রেম নাকি নির্ভরশীলতা—এ দ্বন্দ্ব আমার কাটেনি। সন্তান থেকে আলাদা বসবাসকারী বৃদ্ধ বাবা-মাকে সন্তানেরা টাকাপয়সা দেন। কেউ কেউ মাকে আলাদা টাকা দেন। মেয়েরা বাবার একটু বেশি যত্ন নেন। যেসব বাবা সন্তান লালনপালনে বেশি ভূমিকা রেখেছেন এবং স্ত্রীর বকাঝকা বেশি খেয়েছেন, তাঁরা কন্যাসন্তানের কাছ থেকে বেশি মনোযোগ পান। দুর্বল বৃদ্ধ বাবার প্রতি কন্যাসন্তানের অধিক মনোযোগে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হয়। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যদি কেউ একজন বেশির ভাগ সময় অসুস্থ থাকেন, একপর্যায়ে তিনি অবহেলার শিকার হন। সেবাদানকারী কর্মীর অভাবে কিংবা অবহেলায় স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক তিক্ত অবস্থায় চলে যায়। যেসব দম্পতির একাধিক সন্তান থাকে এবং যে সন্তানটি আর্থিক ও শারীরিকভাবে দুর্বল হয়, তার জন্য ঝগড়া-বিবাদ দেখা দেয়। মাদকাসক্ত সন্তানের দাবি মেটাতে গিয়ে চরম পারিবারিক সংকট দেখা দেয়। শারীরিক-মানসিক প্রতিবন্ধী সন্তান লালনপালনের প্রশ্নে বৃদ্ধ স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা যায়। নিকটাত্মীয়স্বজনকে আর্থিক সহযোগিতাকে কেন্দ্র করে সংকট তৈরি হয়।
যেসব বৃদ্ধ দম্পতির সন্তান নেই, তাঁদের সংকট ভিন্ন ধরনের। সেখানে স্ত্রীকুলের লোকজন প্রাধান্য পায়, ফলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঠান্ডাযুদ্ধ লেগেই থাকে। সেই যুদ্ধ মেটানো খুবই দুরূহ ব্যাপার।
বৃদ্ধ বয়সে শান্তিপূর্ণ, অর্থবহ, স্বস্তিদায়ক জীবন কাটানো অতি জরুরি বিষয়। যাঁরা এমন জীবন আশা করেন, তাঁদের অবশ্যই স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক সহনীয় রাখতে হবে। সে জন্য যৌবনই হলো মোক্ষম সময়। আর্থিক নিরাপত্তার জন্য আয়ের দশ ভাগের এক ভাগ সঞ্চয় করা, সুস্থ জীবনের জন্য কায়িক পরিশ্রম করা, মাদক ও যৌন অনাচার থেকে দূরে থাকা, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অর্থবহ সময় কাটানো, পরিবারের সদস্যদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া, সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিজের অংশগ্রহণ বাড়ানো, ইতিবাচক চিন্তা করা, নতুন জ্ঞান, চিন্তা, প্রযুক্তিকে গ্রহণ করার মানসিকতা তৈরি করা। এসবের মধ্য দিয়ে একজন মানুষ গড়ে উঠলে তার দাম্পত্যজীবন সুখের হবে।
হাসান আলী: সভাপতি, এজিং সাপোর্ট ফোরাম

জীবন চলার পথে অনেকগুলো সম্পর্ক আমাদের সামনে হাজির হয়। ছেলেমেয়ের সম্পর্ক, মা-বাবার সম্পর্ক, ভাই-বোনের সম্পর্ক, বন্ধু-বান্ধবের সম্পর্ক, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক, সামাজিক সম্পর্ক, পাড়া-প্রতিবেশীর সম্পর্ক, আত্মীয়স্বজনের সম্পর্ক, প্রেমিক-প্রেমিকার সম্পর্ক, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক ইত্যাদি। আজ শুধু বৃদ্ধ বয়সে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক নিয়ে কথা বলব।
আমরা যখন প্রবীণ হই, তখন ধরে নিই আমরা অকর্মণ্য। সমাজ প্রবীণ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করে বিধায় প্রবীণ নিজেও বিশ্বাস করতে শুরু করে, প্রবীণ মানে অকর্মণ্য। প্রবীণ বয়সে আয়-রোজগার কমতে থাকে। অসুখ-বিসুখ, রোগবালাই বাড়তে থাকে। পাল্লা দিয়ে খরচ বাড়ে। খোঁজখবর নেওয়ার লোক কমে যায়। ডাক্তারের চেম্বার অথবা হাসপাতালে কে নিয়ে যাবে, কার সময় হবে, এ নিয়ে ভাবনা শুরু হয়। সন্তানদের কাছে থাকার সৌভাগ্য অনেকেই পান না। কারও সন্তান বিদেশে কিংবা অন্য শহরে কাজ করেন, সে জন্য থাকা হয় না।
কেউ সন্তানের সঙ্গে থাকেন আবার কেউ থাকেন না। প্রবীণ স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক উপরিউক্ত পরিস্থিতিতে ভিন্নমাত্রা পায়। যাঁরা যৌবনে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ককে মর্যাদা দিয়েছেন, যত্ন করেছেন, শ্রদ্ধা করেছেন, তাঁরা বৃদ্ধ বয়সে এসে তুলনামূলক কম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। তাঁদের বার্ধক্য শান্তিপূর্ণ এবং স্বস্তিদায়ক হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। যাঁরা যৌবনে ঝগড়া-বিবাদ, মারামারি, সন্দেহ, অবিশ্বাস, অশ্রদ্ধা, অসম্মান করে কাটিয়েছেন, তাঁরা কমবেশি সবাই বৃদ্ধ বয়সে নানা রকম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা খুবই কঠিন।
আমি মনে করি, বৃদ্ধ বয়সটা একজন মানুষের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। জীবিকা অর্জনের জন্য কাজ খুঁজতে হয় না। কাজ হারানোর ভয় থাকে না। কর্মক্ষেত্রে কাউকে সমীহ করে চলতে হয় না। কারও মন রক্ষার জন্য নাটক করতে হয় না। পদোন্নতির জন্য হাহাকার নেই। যাঁরা পদোন্নতি পেলেন, তাঁদের প্রতি ঘৃণা-বিদ্বেষ নেই। বদলির আতঙ্ক নেই। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে তেল মারার, গুণগান করার দরকার হয় না। সত্যিকার অর্থে একজন মুক্ত মানুষ। ফলে বার্ধক্যকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করতে পারা আনন্দের। সেই আনন্দ মাটি হয়ে যাবে যদি স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক তিক্ত হয়। আমরা যৌবনে এমন ভান করি, যেন সংসারের যাবতীয় কাজ মাথায় বয়ে বেড়াচ্ছি। আর সবাই বসে বসে খাচ্ছে। অন্যরা গুরুত্বহীন, শুধু আপনি নিজে গুরুত্বপূর্ণ—এমন ভাবটা কমবেশি সবার মধ্যেই লক্ষ করা যায়। অনেকেই আক্ষেপ করেন পরিবার-পরিজনের জন্য অনেক করেছেন; কিন্তু নাম পাননি। আপনাকে এসব করতে কে বলেছে? আসলে আপনি সংসারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে চেয়েছিলেন। দণ্ড-মুণ্ডের মালিক হতে চেয়েছিলেন। পারেননি, তাই আক্ষেপ, বিলাপ, অভিশাপ।
বৃদ্ধ বয়সে আরেকটি অসুস্থ প্রতিযোগিতা হলো, সন্তানদের নিয়ন্ত্রণে রাখার। সন্তানদের দখলে নেওয়ার প্রতিযোগিতায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মা-ই সফল হন। কারণ, যৌবনে তিনি সন্তান লালনপালনে বেশি সময় দিয়েছেন। কমবেশি স্বামী কর্তৃক নিগৃহীত হয়েছেন। মা শোষিত শ্রেণির বলেই সন্তানদের আনুকূল্য বেশি পান। সন্তানদের সমর্থনে তিনি কিছুটা ক্ষমতাবান হয়ে ওঠেন। তারপর স্বামী বেচারা নানাভাবে নাজেহাল হতে থাকেন। যৌবনে তিনি কী ধরনের আচরণ করেছেন, কী কী ভুল করেছেন, সেসব বারবার মনে করিয়ে দেওয়া হয়। তার সব অক্ষমতাকে উপহাস করা হয়। একসময় বৃদ্ধ স্বামীটি নির্বাক হয়ে যান। তিনি বুঝতে পারেন, একা এ পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন। বেশির ভাগ প্রবীণ ধর্মীয় কাজে বেশি বেশি নিয়োজিত হন। মৃত্যু ভাবনা, অসুখ-বিসুখ হয়ে ওঠে কাঙ্ক্ষিত। চলে যাওয়ার জন্য মনটা ব্যাকুল হয়ে ওঠে। বৃদ্ধ স্বামী জীবনযুদ্ধে হার মেনে পরিবারের দয়ায় জীবনযাপন শুরু করেন।
একসময় বৃদ্ধ স্ত্রী ক্ষমতা প্রয়োগে ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। মনের অজান্তে ছেলে, ছেলে-বউয়ের ওপর কর্তৃত্ব বজায় রাখার চেষ্টা চালান। শুরু হয় সংঘাত। ছেলে-বউরা শুরুতেই শ্বশুরের প্রতি পক্ষপাত দেখাতে শুরু করেন শাশুড়িকে নাজেহাল করতে। যেমন শ্বশুরকে পছন্দমতো খাবার দেওয়া, জামাকাপড় পরিষ্কার করে দেওয়া, বিছানার চাদর বদলে দেওয়া, হাতখরচের জন্য টাকা দেওয়া ইত্যাদি। এ রকম টানাপোড়েনের মধ্যেই বয়সের কারণে বৃদ্ধ স্বামীটি আগে মারা যান। বৃদ্ধ স্ত্রী ছেলেদের কিংবা মেয়েদের আশ্রয়ে কষ্টকর অবহেলার জীবন শুরু করেন।
আর যেসব স্বামী-স্ত্রী সন্তানদের কাছে থাকেন না, তাঁদের জীবন কিছুটা ভিন্ন রকমের। এসব দম্পতির ঝগড়া-বিবাদ, মনোমালিন্য তুলনামূলক কম। কারণ, তাঁরা একে অন্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয় সন্তানদের কাছ থেকে গুরুত্ব পাওয়া না-পাওয়া থেকে। যেমন ছেলে যদি বাবার হাতে টাকা দেয়, তবে মা মন খারাপ করেন। এসব ক্ষেত্রে বৃদ্ধ স্বামী নিজের ইচ্ছামতো খরচ করেন। বৃদ্ধ স্ত্রীর হাতে নিজ থেকে টাকা দিতে চান না। যদি দেন, তবে মাঝে মাঝেই হিসাব নেন। বৃদ্ধ স্বামীটি স্বভাবগতভাবে বৃদ্ধা স্ত্রীর সেবাযত্ন পেতে ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। স্ত্রী কোথাও বেড়াতে যেতে চাইলে নানা অসিলা দেখিয়ে যাত্রাবিরতি করান। ছেলেমেয়েদের আবদারে গেলেও অব্যাহত তাগিদ দিয়ে বৃদ্ধ স্ত্রীকে নিজের কাছে এনে রাখেন।
অনেকেই মনে করেন, বৃদ্ধ বয়সে স্বামী-স্ত্রীর প্রেম-মহব্বত অনেক বৃদ্ধি পায়। কথাটা কতখানি সত্য, আমি বুঝতে পারি না। এটা প্রেম নাকি নির্ভরশীলতা—এ দ্বন্দ্ব আমার কাটেনি। সন্তান থেকে আলাদা বসবাসকারী বৃদ্ধ বাবা-মাকে সন্তানেরা টাকাপয়সা দেন। কেউ কেউ মাকে আলাদা টাকা দেন। মেয়েরা বাবার একটু বেশি যত্ন নেন। যেসব বাবা সন্তান লালনপালনে বেশি ভূমিকা রেখেছেন এবং স্ত্রীর বকাঝকা বেশি খেয়েছেন, তাঁরা কন্যাসন্তানের কাছ থেকে বেশি মনোযোগ পান। দুর্বল বৃদ্ধ বাবার প্রতি কন্যাসন্তানের অধিক মনোযোগে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হয়। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যদি কেউ একজন বেশির ভাগ সময় অসুস্থ থাকেন, একপর্যায়ে তিনি অবহেলার শিকার হন। সেবাদানকারী কর্মীর অভাবে কিংবা অবহেলায় স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক তিক্ত অবস্থায় চলে যায়। যেসব দম্পতির একাধিক সন্তান থাকে এবং যে সন্তানটি আর্থিক ও শারীরিকভাবে দুর্বল হয়, তার জন্য ঝগড়া-বিবাদ দেখা দেয়। মাদকাসক্ত সন্তানের দাবি মেটাতে গিয়ে চরম পারিবারিক সংকট দেখা দেয়। শারীরিক-মানসিক প্রতিবন্ধী সন্তান লালনপালনের প্রশ্নে বৃদ্ধ স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা যায়। নিকটাত্মীয়স্বজনকে আর্থিক সহযোগিতাকে কেন্দ্র করে সংকট তৈরি হয়।
যেসব বৃদ্ধ দম্পতির সন্তান নেই, তাঁদের সংকট ভিন্ন ধরনের। সেখানে স্ত্রীকুলের লোকজন প্রাধান্য পায়, ফলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঠান্ডাযুদ্ধ লেগেই থাকে। সেই যুদ্ধ মেটানো খুবই দুরূহ ব্যাপার।
বৃদ্ধ বয়সে শান্তিপূর্ণ, অর্থবহ, স্বস্তিদায়ক জীবন কাটানো অতি জরুরি বিষয়। যাঁরা এমন জীবন আশা করেন, তাঁদের অবশ্যই স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক সহনীয় রাখতে হবে। সে জন্য যৌবনই হলো মোক্ষম সময়। আর্থিক নিরাপত্তার জন্য আয়ের দশ ভাগের এক ভাগ সঞ্চয় করা, সুস্থ জীবনের জন্য কায়িক পরিশ্রম করা, মাদক ও যৌন অনাচার থেকে দূরে থাকা, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অর্থবহ সময় কাটানো, পরিবারের সদস্যদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া, সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিজের অংশগ্রহণ বাড়ানো, ইতিবাচক চিন্তা করা, নতুন জ্ঞান, চিন্তা, প্রযুক্তিকে গ্রহণ করার মানসিকতা তৈরি করা। এসবের মধ্য দিয়ে একজন মানুষ গড়ে উঠলে তার দাম্পত্যজীবন সুখের হবে।
হাসান আলী: সভাপতি, এজিং সাপোর্ট ফোরাম

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

জীবন চলার পথে অনেকগুলো সম্পর্ক আমাদের সামনে হাজির হয়। ছেলেমেয়ের সম্পর্ক, মা-বাবার সম্পর্ক, ভাই-বোনের সম্পর্ক, বন্ধু-বান্ধবের সম্পর্ক, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক, সামাজিক সম্পর্ক, পাড়া-প্রতিবেশীর সম্পর্ক, আত্মীয়স্বজনের সম্পর্ক, প্রেমিক-প্রেমিকার সম্পর্ক, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক ইত্যাদি। আজ শুধু বৃদ্ধ বয়সে স
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

জীবন চলার পথে অনেকগুলো সম্পর্ক আমাদের সামনে হাজির হয়। ছেলেমেয়ের সম্পর্ক, মা-বাবার সম্পর্ক, ভাই-বোনের সম্পর্ক, বন্ধু-বান্ধবের সম্পর্ক, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক, সামাজিক সম্পর্ক, পাড়া-প্রতিবেশীর সম্পর্ক, আত্মীয়স্বজনের সম্পর্ক, প্রেমিক-প্রেমিকার সম্পর্ক, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক ইত্যাদি। আজ শুধু বৃদ্ধ বয়সে স
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

জীবন চলার পথে অনেকগুলো সম্পর্ক আমাদের সামনে হাজির হয়। ছেলেমেয়ের সম্পর্ক, মা-বাবার সম্পর্ক, ভাই-বোনের সম্পর্ক, বন্ধু-বান্ধবের সম্পর্ক, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক, সামাজিক সম্পর্ক, পাড়া-প্রতিবেশীর সম্পর্ক, আত্মীয়স্বজনের সম্পর্ক, প্রেমিক-প্রেমিকার সম্পর্ক, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক ইত্যাদি। আজ শুধু বৃদ্ধ বয়সে স
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

জীবন চলার পথে অনেকগুলো সম্পর্ক আমাদের সামনে হাজির হয়। ছেলেমেয়ের সম্পর্ক, মা-বাবার সম্পর্ক, ভাই-বোনের সম্পর্ক, বন্ধু-বান্ধবের সম্পর্ক, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক, সামাজিক সম্পর্ক, পাড়া-প্রতিবেশীর সম্পর্ক, আত্মীয়স্বজনের সম্পর্ক, প্রেমিক-প্রেমিকার সম্পর্ক, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক ইত্যাদি। আজ শুধু বৃদ্ধ বয়সে স
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫