Ajker Patrika

দেশের অস্থিতিশীলতা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বসবে বিএনপি, পরামর্শও দেবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ছয় মাস বয়সী অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনামলে জনভোগান্তির পাশাপাশি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনায় উদ্বিগ্ন বিএনপি। এরই মধ্যে এই উদ্বেগের কথা জানিয়ে সরকারকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানিয়েছে দলটি। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে দলের পক্ষ থেকে।

আজ শুক্রবার অনুষ্ঠিত দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। এদিন বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত চলে দলটির বৈঠক। এতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বৈঠক সূত্র বলছে, বৈঠকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরসহ সারা দেশে ভাঙচুরের ঘটনা, সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ও সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে মব কালচার নিয়ে উদ্বেগের কথা জানান স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, কোনো একসময় বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করবে। সেখানে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের উদ্বেগ ও অবস্থান তুলে ধরার পাশাপাশি এ বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ দেবে বিএনপি। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের দিনক্ষণ ঠিক হয়নি এখনো। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশের বাইরে আছেন। তিনি ফিরে আসার পর এই বৈঠক হবে।

আজ বৈঠকের আলোচনার বিষয়ে খোলাসা করে কিছু না বললেও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান গণমাধ্যমকে বলেছেন, দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের স্থায়ী কমিটির এক সদস্য আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ‘বিএনপি আইনের শাসনে বিশ্বাস করে এবং কোনো অন্যায়কে সমর্থন করে না। সরকারের পাশে আছে এবং পাশে থেকেই সরকারকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সরকারকে সেই বার্তাই দিতে চায় বিএনপি।’

এর আগে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের কথা তুলে ধরে বিএনপি। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা ওই বিবৃতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে বলা হয়, ‘আমরা (বিএনপি) গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, হাজারো শহীদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে বিতাড়িত পতিত পরাজিত পলাতক স্বৈরাচার এবং তার দোসরদের উসকানিমূলক আচরণ, জুলাই-আগস্টের রক্তক্ষয়ী ছাত্র গণ-অভ্যুত্থান সম্পর্কে অশালীন এবং আপত্তিকর বক্তব্য মন্তব্য দেশের জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ এবং ক্রোধের জন্ম দিয়েছে। এরই ফলশ্রুতিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পতিত স্বৈরাচারের স্মৃতি, মূর্তি, স্থাপনা ও নামফলকসমূহ ভেঙে ফেলার মতো জনস্পৃহা দৃশ্যমান হয়েছে।’

বিএনপির মতে, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত ছয় মাসেও পলাতক স্বৈরাচার এবং তাদের দোসরদের আইনের আওতায় আনতে যথেষ্ট কার্যকর পদক্ষেপ জনসম্মুখে দৃশ্যমান করতে সফল হয়নি বলে জনমনে প্রতিভাত হয়েছে, ফলে জনগণ আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার মতো বেআইনি কর্মকাণ্ডে উৎসাহিত হচ্ছে। একটি সরকার বহাল থাকা অবস্থায় জনগণ এভাবে নিজের হাতে আইন তুলে নিলে দেশে-বিদেশে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে পারে। অথচ জুলাই ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী জনগণের প্রত্যাশা ছিল দেশে আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে, যা বর্তমান সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হওয়া বাঞ্ছনীয় ছিল। বর্তমানে দেশে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ নানান ধরনের দাবিদাওয়া নিয়ে যখন-তখন সড়কে ‘মব কালচারের’ মাধ্যমে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি করছে; যা সরকার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে মুনশিয়ানা দেখাতে ব্যর্থ হচ্ছে।

বিএনপির উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, সরকার উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্ষমতা প্রকাশ করতে না পারলে রাষ্ট্র ও সরকারের স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়বে। এই পরিস্থিতিতে উগ্র নৈরাজ্যবাদী গণতন্ত্রবিরোধী দেশি-বিদেশি অপশক্তির পাশাপাশি পরাজিত ফ্যাসিস্টদের পুনরুত্থানের সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে, যার উপসর্গ এরই মধ্যে দৃশ্যমান। এ পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিরাজমান পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।

সেখানে সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়, ‘পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করুন। অন্যথায় দেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির প্রসার ঘটবে। সুতরাং, কঠোরভাবে আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করে রাষ্ট্র ও সরকারের ভূমিকা দৃশ্যমান করা এখন সময়ের দাবি।’

এদিকে আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে সাম্যবাদী দলের এক আলোচনা সভায় দেশের বিরাজমান পরিস্থিতি, বিশেষ করে ধানমন্ডি-৩২ নম্বরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর নিয়ে কথা বলেছেন বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের নেতারা। এ ঘটনাকে ‘দেশের জন্য অশনিসংকেত’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু।

সংকট নিরসনে দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে সরকারের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট বলতে চাই, ন্যূনতম সংস্কার করে জাতির যদি কোনো মতামত থাকে, আমরা সেটা মেনে নিতে চাই। কিন্তু সংস্কারের নামে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার পাঁয়তারা জাতি বরদাশত করবে না। মানুষের দাবি হচ্ছে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন। আপনারা সেই রাস্তা তৈরি করে দিন। আর সময়ক্ষেপণ না করে শিগগিরই নির্বাচনের রোডম্যাপ দিন।’

সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সভায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘সারা দেশে হামলা-আক্রমণ-ভাঙচুর হয়েছে, দেশে একধরনের নৈরাজ্য পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এর দায় অবশ্যই অন্তর্বর্তী সরকারকে নিতে হবে।’

সাইফুল হক আরও বলেন, ‘জনগণের মধ্যে এই ধারণা তৈরি হয়েছে যে তবে কি সরকার দেশ চালাতে পারছে না? আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কি সরকারের নিয়ন্ত্রণে নাই; আমাদের এলিট ফোর্স কি সরকারের নিয়ন্ত্রণে নাই; তাহলে এখানে কি যা-কিছু করা যায়?’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শরিকদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই বিএনপির প্রার্থী ঘোষণায় ক্ষুব্ধ ১২ দলীয় জোট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
শরিকদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই বিএনপির প্রার্থী ঘোষণায় ক্ষুব্ধ ১২ দলীয় জোট

শরিক দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা না করে বিএনপির দুই ধাপে সংসদীয় আসনের প্রার্থী ঘোষণায় বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ হয়েছেন ১২ দলীয় জোটের নেতারা। তাঁরা বলেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শরিকদের সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচন ও সরকার গঠনের যে দৃঢ় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ২৭২টি আসনে মনোনয়ন ঘোষণার মাধ্যমে তার বরখেলাপ করা হয়েছে।

১২ দলীয় জোটপ্রধান জাতীয় পার্টির (একাংশের) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের খিলগাঁও কার্যালয়ে আজ শুক্রবার আয়োজিত এক সভায় জোটভুক্ত নেতারা এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

তাঁরা জানিয়েছেন, এ বিষয়ে ভবিষ্যৎ রাজনীতি ও করণীয় সম্পর্কে আগামী সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে জোটের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট বক্তব্য তুলে ধরা হবে। সংবাদ সম্মেলনের স্থান ও সময় আগামীকাল শনিবার জানানো হবে।

সভা শেষে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তির কামনায় মোনাজাত করা হয়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির (একাংশের) চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটপ্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার, জোটের সমন্বয়ক বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, ন্যাশনাল লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জন্য জার্মানি থেকে নয়, কাল কাতার থেকেই আসছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ২২
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নিতে কাতার থেকেই অন্য একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হচ্ছে। জার্মান কোম্পানির এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আগামীকাল শনিবার বিকেলে ঢাকায় অবতরণ করবে বলে দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শায়রুল কবির খান বলেছেন, কাতার রাজপরিবারের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটিতে কারিগরি ত্রুটি থাকায় কাতারের আমির তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অন্য একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠাচ্ছেন, যা আগামীকাল বিকেল ৫টায় ঢাকায় অবতরণ করবে।

শায়রুল কবির খান আরও বলেন, এখন যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আসছে, সেটিও কাতারের, কিন্তু জার্মান কোম্পানির তৈরি। কাতার জার্মানি থেকে কোনো এয়ার অ্যাম্বুলেন্স বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে না।

এদিকে, নতুন করে পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের বিষয়ে বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, সেটি জার্মানি থেকে আসছে।

দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্‌রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া। গত ২৩ নভেম্বর রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ায় তখনই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে নেওয়া হয় করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ)। সেদিন থেকে হাসপাতালেই রয়েছেন তিনি।

অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে এভারকেয়ার হাসপাতালের ১২ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসার তদারকি করছেন। চীন ও যুক্তরাজ্য থেকেও কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গত কয়েক দিনে বাংলাদেশে এসে মেডিকেল বোর্ডের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। এই মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তেই খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার সুস্থতায় সারা দেশে বিশেষ দোয়া

বাসস, ঢাকা  
বায়তুল মোকাররম মসজিদে জুমার নামাজের পর খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও রোগ মুক্তি কামনা করে দোয়া করা হয়। ছবি: জাহিদুল ইসলাম
বায়তুল মোকাররম মসজিদে জুমার নামাজের পর খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও রোগ মুক্তি কামনা করে দোয়া করা হয়। ছবি: জাহিদুল ইসলাম

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় সারা দেশে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর দেশের মসজিদগুলোতে বিএনপির পক্ষ থেকে এই দোয়ার আয়োজন করা হয়।

একই সঙ্গে রাজধানীর নয়াপল্টনে মসজিদে আয়োজিত দোয়া মাহফিলের অংশ নেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতারা।

এ সময় তিনি বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বেগম জিয়া গণতন্ত্রের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। কারাগার থেকেই তাঁর রোগের সূচনা। চিকিৎসার অভাবে গুরুতর অসুস্থ হন তিনি।’

বায়তুল মোকাররম মসজিদে জুমার নামাজের পর খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও রোগ মুক্তি কামনা করে দোয়া করা হয়। ছবি: জাহিদুল ইসলাম
বায়তুল মোকাররম মসজিদে জুমার নামাজের পর খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও রোগ মুক্তি কামনা করে দোয়া করা হয়। ছবি: জাহিদুল ইসলাম

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের সব মানুষে দলমত-নির্বিশেষে এই মহান নেত্রীর জন্য দোয়া করছেন। তিনি যেন সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসেন এবং দেশের এই সংকটময় মুহূর্তে তাঁর অভিভাবকত্বে আমরা উত্তরণ হয়ে যেতে পারি, সে জন্য দেশের জনগণে আল্লাহ তাআলার কাছে আকুতি করেছেন।’

সবার কাছে দলীয় চেয়ারপারসনের সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আসুন আমরা সবাই মিলে পরম করুণাময়ের কাছে দোয়া করি, যিনি আজীবন গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে গেছেন, সেই নেত্রী যেন সুস্থ হয়ে আমাদের কাছে ফিরে আসেন।’

রাজধানীসহ দেশব্যাপী বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ জনগণও দোয়ায় অংশ নেন। একই সঙ্গে দেশনেত্রীর সুস্থতা কামনায় মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ অন্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রার্থনা করার জন্যও অনুরোধ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুই কারণে পিছিয়ে গেল খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৪৬
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান। ফাইল ছবি
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান। ফাইল ছবি

কাতারের আমিরের দেওয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে যান্ত্রিক ত্রুটিই শুধু নয়, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লন্ডনে যাওয়ায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁর শারীরিক অবস্থাও।

আজ শুক্রবার সকালে গণমাধ্যমে এমনটি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেছেন, ‘গতকাল (বৃহস্পতিবার) থেকে ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা ভালো না। এয়ারক্র্যাফটের সমস্যা আছে, একই সঙ্গে শারীরিক অবস্থাও ভালো না। এই অবস্থায় যাত্রার তারিখ বদল করা হয়েছে। এখন মেডিকেল বোর্ড বললে, ফ্লাই করার মতো থাকলে রোববার তাঁকে লন্ডনে নেওয়া হবে।’

এর আগে বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে জানানো হয়, কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স না আসায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাত্রার সময় পিছিয়ে গেছে। তাঁকে বহন করার জন্য কাতারের আমিরের পক্ষ থেকে বিশেষ যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আজ শুক্রবার ঢাকায় আসার কথা ছিল, সেটি নির্ধারিত সময়ে আসছে না। এর ফলে খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার বিষয়টি পিছিয়ে রোববার ৭ ডিসেম্বর হতে পারে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স শুক্রবার আসছে না। সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে এটি শনিবার পৌঁছাতে পারে। ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা যদি যাত্রার জন্য উপযুক্ত থাকে এবং মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত দিলে, ইনশা আল্লাহ ৭ তারিখ (রোববার) তিনি লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেবেন।’

এদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান ইতিমধ্যে লন্ডন থেকে ঢাকায় পৌঁছেছেন। বিমানবন্দরে নেমে সরাসরি তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গেছেন।

বিএনপির শীর্ষস্থানীয় এক নেতা আজকের পত্রিকাকে জানান, জোবাইদা রহমান এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকেই খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডন ফিরবেন।

এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মধ্যে ডা. জাহিদ হোসেন, ডা. এনামুল হক চৌধুরী (চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা), ডা. ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ সিদ্দিকী, ডা. সাহাবুদ্দিন তালুকদার, ডা. নুরুদ্দিন আহমেদ, ডা. মো. জাফর ইকবাল, ডা. মোহাম্মদ আল মামুন থাকবেন।

চিকিৎসক দলের বাইরে খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ সৈয়দা শামিলা রহমান, তারেক রহমানের সহকারী মো. আব্দুল হাই মল্লিক, খালেদা জিয়ার সহকারী একান্ত সচিব মো. মাসুদুর রহমান এবং গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম ও রুপা শিকদার ছাড়াও এসএসএফের দুজন সদস্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়ার সঙ্গে যাবেন।

দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্‌রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া। গত ২৩ নভেম্বর রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।

তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ায় তখনই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে নেওয়া হয় করোনারি কেয়ার ইউনিটে। সেদিন থেকে হাসপাতালেই রয়েছেন তিনি।

অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে এভারকেয়ার হাসপাতালের ১২ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসার তদারক করছে। চীন ও যুক্তরাজ্য থেকেও কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গত কয়েক দিনে বাংলাদেশে এসে মেডিকেল বোর্ডের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। এই মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তেই খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত