Ajker Patrika

সাবেক রাষ্ট্রপতি হামিদের শ্যালক জামায়াতের প্রার্থী

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
ডা. জিহাদ খান
ডা. জিহাদ খান

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে কর্নেল (অব.) অধ্যাপক ডা. জিহাদ খানের নাম ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী। তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের শ্যালক।

জিহাদ খান জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটির মজলিশে শুরা সদস্য এবং রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে কার্ডিওলজিস্ট হিসেবে কর্মরত। এর আগে তিনি ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) হৃদ্‌রোগ বিভাগের প্রধান হিসেবে দীর্ঘদিন কর্মরত ছিলেন। তিনি কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার জাফরাবাদ এলাকার বাসিন্দা।

কর্নেল (অব.) অধ্যাপক ডা. জিহাদ খানের প্রার্থিতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জামায়াতে ইসলামীর মজলিশে শুরা সদস্য ও কিশোরগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক মো. রমজান আলী।

এদিকে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও আওয়ামী লীগের প্রবীণ রাজনীতিক আবদুল হামিদের শ্যালক জামায়াতের প্রার্থী মনোনীত হওয়ার পর থেকেই জেলাজুড়ে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। অনেকেই বলছেন, অতীতে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে যোগাযোগ বাড়ানো, স্বল্প পরিসরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন, বিভিন্ন কমিটি গঠন ও দলকে শক্তিশালী করতে নিয়মিত সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে গেছে কিশোরগঞ্জে। আর তা সম্ভব হয়েছে জিহাদ খানের মাধ্যমে। গ্রেপ্তার আতঙ্কে বিএনপির অনেকে বাড়িছাড়া হলেও কিশোরগঞ্জে জামায়াত-শিবিরের বেশির ভাগ নেতা-কর্মী নিজ বাড়িতেই নিরাপদে ছিলেন।

জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল বলেন, জামায়াত যে আচরণ করছে জাতির সঙ্গে, তা প্রতারণার শামিল। শহীদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল। অবিলম্বে জামায়াত থেকে আওয়ামী লীগের আত্মীয়স্বজন ও লোকজনের বিতাড়িত করা উচিত।

জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক মো. রমজান আলী বলেন, ‘আবদুল হামিদের শ্যালক কেন? উনি নিজে কর্নেল ও অধ্যাপক। উনি একজন বড় চিকিৎসক। উনার পরিচয় কি কম আছে নাকি? উনার আত্মীয়স্বজন তো সবাই জামায়াতে ইসলামী করে, ওইটা বলে না কেন কেউ? হামিদ সাহেব উনার ভগ্নিপতি হইছে তো কী হইছে? উনি তো একবারও ভগ্নিপতির সাথে বঙ্গভবনে গিয়ে দেখা করেননি। হামিদ সাহেবের শালা হওয়া কি অপরাধ নাকি?’

জেলা জামায়াতের আমির আরও বলেন, ‘তাঁর এক আত্মীয় পাইছেন, যিনি আওয়ামী লীগ করেন। আর তাঁর ১০০ জন আত্মীয়স্বজন আছে, যাঁরা জামায়াতে ইসলামী করেন। মতিউর রহমান নিজামী সাহেব তাঁর তালই হন, অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেব আপন খালাতো ভাইয়ের শ্বশুর। উনার আপন খালু আব্দুল গাফফার জামায়াতে ইসলামীর নেতা ছিলেন। জিহাদ খানের আপন খালা আবেদা আসমা খাতুন জামায়াতে ইসলামীর সংসদ সদস্য এবং জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগের সেক্রেটারি ছিলেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ভোটে নতুন সমীকরণ

  • জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বাধীন জোটে এনসিপি ও এলডিপি।
  • আসন সমঝোতা প্রায় চূড়ান্ত। এনসিপি পেতে পারে ৩০টি।
  • এনসিপিতে ক্ষোভ। কয়েকজন নেতার পদত্যাগ।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জোট চূড়ান্ত করার পর সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন শরিক দলগুলোর নেতারা। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে।	ছবি: সংগৃহীত
জোট চূড়ান্ত করার পর সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন শরিক দলগুলোর নেতারা। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে। ছবি: সংগৃহীত

নানা জল্পনাকল্পনা ও নাটকীয়তার পর অবশেষে চূড়ান্ত হয়েছে জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নির্বাচনী জোট। এনসিপির পাশাপাশি এই জোটে নতুন করে আরও যুক্ত হয়েছে কর্নেল (অব.) অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)।

জোটের শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, দলগুলোর মধ্যে আসন সমঝোতার আলোচনাও প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গেছে। কোন দল কত আসনে লড়বে, সে ঘোষণা আসতে পারে আজ-কালের মধ্যেই।

তবে জামায়াতের নেতৃত্বাধীন জোটে দল যোগ দেওয়ায় এনসিপি থেকে পদত্যাগ করেছেন দলটির কয়েকজন নেতা। দলের শীর্ষ নেতারা অবশ্য জোটের পক্ষে তাঁদের অনড় অবস্থান ব্যক্ত করেছেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবে গতকাল রোববার সংবাদ সম্মেলনে জোটের বিষয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা দেন জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমরা ৮ দল অনেক দিন ধরে একসঙ্গে আন্দোলন করে আসছি। এখন আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন এলডিপি।’

জামায়াতের আমির আরও বলেন, ‘আমাদের আসন সমঝোতা প্রায় চূড়ান্ত, কিছু আলোচনা বাকি আছে। সেগুলো আশা করি শিগগির শেষ হবে। এরপর আমরা ঘোষণা করব।’

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বাধীন জোটে আগে থেকেই ছিল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি। দলগুলো একসঙ্গে মাঠে কর্মসূচিও পালন করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জামায়াত আমিরের বাঁ পাশে বসেছিলেন এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ। ডান পাশে বসেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক। উপস্থিত ছিলেন শরিক অন্য দলগুলোর নেতারা। তবে এনসিপির কোনো নেতা সেখানে ছিলেন না।

সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের আমির জানান, দুপুরে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ দলটির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন আট দলের শীর্ষ নেতারা। সেই বৈঠকে আট দলের জোটে এনসিপির অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে বলেও জানান তিনি। এ বিষয়ে শফিকুর রহমান বলেন, ‘এনসিপির সঙ্গে আমাদের আলোচনা আজকে সমাপ্ত হয়েছে। তারা আমাদের এই জোটে থাকছে।’

আসন সমঝোতার বিষয়ে জামায়াত আমির বলেন, ‘আমাদের আসন সমঝোতা প্রায় চূড়ান্ত। সামান্য যা বাকি আছে, তা আলোচনার ভিত্তিতে সুন্দরভাবে শেষ করতে পারব আশা করি।’

১০ দলের মধ্যে আসন বণ্টন কীভাবে হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা সবার হাতে আসন তুলে দিব। যার যে যোগ্যতা, তার ভিত্তিতেই আসনগুলো তুলে দেব। শিগগির আসন ঘোষণাও হবে।’

এরই মধ্যে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন প্রায় ৩০০ আসনে এবং খেলাফত মজলিস ২৭৬ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করেছে। জাতীয় নাগরিক পার্টিও ইতিমধ্যে ১২৫ আসনে প্রাথমিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। জোটের অন্য দলগুলো সর্বোচ্চ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলগুলোর নেতারা।

দলগুলোর নেতারা জানিয়েছেন, এখন দলগুলো নিজেদের সামর্থ্যের সর্বোচ্চ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করবে। কিন্তু প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে আসন সমঝোতা চূড়ান্ত হবে। তবে দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের আসনে একধরনের সমঝোতা চূড়ান্ত হয়েছে।

একাধিক সূত্র বলছে, আসন সমঝোতার ক্ষেত্রে বড় অংশ থাকবে জামায়াতের হাতে। বাকি আসনগুলো ৯ দলের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে। জোটে আসনের দিক থেকে বড় ভাগ পাবে এসসিপি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

সূত্রগুলো আরও জানিয়েছে, নতুন এই জোটের আসন সমঝোতার ক্ষেত্রে একটি প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। সেই অনুযায়ী জামায়াতে ইসলামী ১৯০টি, এনসিপি ৩০টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ৩০-৩৫টি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি ৪-৫টি, খেলাফত মজলিস ৮টি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ১৫টি আসনে প্রার্থী ছাড়ের আলোচনা চলছে। তবে জামায়াত বাদে অন্য দলগুলো আরও বেশি আসনে ছাড় পেতে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দলগুলোর নেতারা।

এনসিপিতে গৃহদাহ

জামায়াত ও সমমনা ৮ দলের সঙ্গে জোটে অন্তর্ভুক্তির আলোচনা শুরুর পর থেকেই গৃহদাহ শুরু হয়েছে এনসিপিতে। জামায়াতের সঙ্গে এনসিপির জোটকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে এনসিপি থেকে পদত্যাগ করেছেন দলের দুই যুগ্ম আহ্বায়ক তানসিম জারা ও তাজনূভা জাবীন। এ ছাড়া ‘একক নির্বাচনের সিদ্ধান্ত’ পরিবর্তন হওয়ায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন।

এদিকে গতকাল রাতে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে ‘প্রাথমিকভাবে’ এনসিপির নির্বাচনকালীন সব কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম।

ফেসবুক পোস্টে নুসরাত দল থেকে অতি সম্প্রতি সরে দাঁড়ানো অন্যদের মতোই ঘোষিত আদর্শবিচ্যুত হওয়ার অভিযোগ করেছেন। পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘...জামায়াতে ইসলামীসহ ১০ দলীয় জোটে বিভিন্ন শর্ত সাপেক্ষে অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমি মনে করি এনসিপির সর্বোচ্চ নেতৃবৃন্দ এবং নীতিনির্ধারকেরা নিজেরাই এনসিপির মূল বক্তব্য থেকে চ্যুত হয়েছেন।’

এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির ৩০ জন সদস্য জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচন না করার দাবি জানিয়ে আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছেন। এতে অভিযোগ করা হয়েছে, দলের নির্বাহী কমিটি ও তৃণমূল পর্যায়ে যথেষ্ট আলোচনা ছাড়াই সমঝোতার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা দলীয় গণতন্ত্রের পরিপন্থী।

তবে এর বিপরীতে নাহিদের প্রতি পূর্ণ আস্থা জানিয়ে আহ্বায়ক বরাবর চিঠি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ১১৪ নেতা। তাঁরা চিঠিতে জানান, দলীয় ও জাতীয় স্বার্থের পাশাপাশি গণতান্ত্রিক রূপান্তরের বৃহত্তর লক্ষ্যকে সামনে রেখে এনসিপি যদি কোনো রাজনৈতিক দল বা জোটের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতায় পৌঁছায় কিংবা নতুন কোনো জোট গঠন করে, তবে তাতে তাঁদের পূর্ণ সমর্থন ও সম্মতি থাকবে।

এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রাতে জামায়াতের সঙ্গে জোটের বিষয়টি সংবাদ সম্মেলন করে নিশ্চিত করেছে এনসিপিও। দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এনসিপি নির্বাচনের প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা বলেছিলাম, এককভাবে নির্বাচন করব। পরে মনোনয়নপত্র বিতরণ করেছি। এরপর আমরা তিন দলীয় জোট করি।’

নাহিদ বলেন, ‘শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় আমরা বুঝতে পারি, নতুন বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করা এবং জুলাই প্রজন্মকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা চলছে।’

এই পরিপ্রেক্ষিতে এনসিপি জামায়াতের জোটে যাচ্ছে জানিয়ে দলের আহ্বায়ক বলেন, ‘নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করার জন্য আমরা জামায়াতে ইসলামী ও সমমনা দলের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতায় পৌঁছেছি। আমরা একসঙ্গে নির্বাচনে অংশ নেব।’

আজ সোমবার প্রার্থীদের বিষয়ে এনসিপি চূড়ান্তভাবে ঘোষণা দেবে জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, যেখানে এনসিপির প্রার্থী থাকবে, সেখানে জোটের অন্য দলগুলো তাদের সহায়তা করবে। আর যেখানে এনসিপির প্রার্থী থাকবে না, সেখানে জোটের অন্য দলগুলোর প্রার্থীদের সহযোগিতা করা হবে।

জামায়াতের সঙ্গে জোট নিয়ে এনসিপিতে বিভাজন প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যেকোনো বিষয়ে মতামত নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেকের ভেটো (আপত্তি) থাকতে পারে, বিরোধিতা থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে তিনি নির্বাচন করবেন কি না, দলে থাকবেন কি না, এটা একান্তই তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এনসিপির নির্বাচনকালীন কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ালেন নুসরাত তাবাসসুম

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ৫০
নুসরাত তাবাসসুম। ফাইল ছবি
নুসরাত তাবাসসুম। ফাইল ছবি

জামায়াতে ইসলামীসহ ১০-দলীয় জোটে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অংশগ্রহণের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দলের সব নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম। আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তিনি তাঁর এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।

নুসরাত তাবাসসুম অভিযোগ করেছেন, ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এখন জোটবদ্ধ হওয়া তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে একধরনের ‘প্রবঞ্চনা’।

নুসরাত তাবাসসুম তাঁর পোস্টে এনসিপির মূল লক্ষ্য ও বর্তমান পরিস্থিতির পার্থক্য তুলে ধরে বলেন, ‘এনসিপি তার জন্মলগ্নে আমাদের স্বপ্ন দেখিয়েছে গণতন্ত্রের সুষম চর্চা, নয়া বন্দোবস্ত, মধ্যপন্থা অন্তর্ভুক্তীমূলক সমাজব্যবস্থা, সভ্যতাকেন্দ্রিক সাম্রাজ্য সম্প্রসারণ এবং সর্বোপরি বাংলাদেশপন্থা নিয়ে। এই প্রতিটা শব্দ আমি আমার মননে, মগজে এবং যাপনে ধারণ করি, এই শব্দগুলো আমার রাজনৈতিক স্বপ্ন। এনসিপির ঘোষণাপত্র থেকে শুরু করে এর সবগুলো লিটারেচার এই বক্তব্যে ধারণ করে৷ এনসিপি গঠনের সময় এটি ঠিক তাই ছিল যা আমি চেয়েছিলাম। আজ ২৮/১২/২০২৫, ঠিক ১০ মাস পর জামায়াতে ইসলামী সহ ১০ দলীয় জোটে বিভিন্ন শর্তসাপেক্ষে অংশগ্রহণের মাধ্যমে, আমি মনে করি এনসিপির সর্বোচ্চ নেতৃবৃন্দ এবং নীতিনির্ধারকেরা নিজেরাই এনসিপির মূল বক্তব্য থেকে চ্যূত হয়েছেন।’

তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এনসিপির প্রবঞ্চনা প্রসঙ্গে তাবাসসুম বলেন, ‘বিশেষ করে, বিভিন্ন সময়ে জনাব আহ্বায়ক মহোদয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বশীলদের আমরা ৩০০ আসনে প্রার্থী প্রদান করার ঘোষণা দিতে শুনেছি। এমতাবস্থায় তৃণমূল পর্যন্ত বিশেষ করে মনোনয়ন নেয়া ব্যক্তিগণের সাথে এই জোট ঘোষণার মাধ্যমে প্রবঞ্চনা করা হয়েছে বলে মনে করি।’

সবশেষে তাবাসসুম বলেন, ‘এ সমস্ত ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে আমি নুসরাত তাবাসসুম, (যুগ্ম আহ্বায়ক, জাতীয় নাগরিক পার্টি) নিজেকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচনকালীন সময়ে পার্টির সকল কার্যক্রম থেকে নিষ্ক্রিয় করছি। এবং অবস্থা পুনর্বিবেচনাক্রমে যে কোন চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার ঘোষণা করছি।’

নুসরাত তাবাসসুমের এই ঘোষণার মাধ্যমে এনসিপির ভেতরে চলমান সংকট আরও ঘনীভূত হলো। এর আগে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিনও জোটের বিরোধিতা করেছেন, তবে তিনি দল না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের নেপথ্যের কারিগর মাহফুজ আলমও আজ রাতে জানিয়েছেন যে, তিনি জামায়াত-এনসিপি জোটের হয়ে নির্বাচনে লড়বেন না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আত্মসমর্পণ করে দুই মামলায় জামিন পেলেন এনসিপির আখতার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৪
আখতার হোসেন। ফাইল ছবি
আখতার হোসেন। ফাইল ছবি

হত্যাচেষ্টা, বেআইনি সমাবেশ, সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে রাজধানীর শাহবাগ থানার পৃথক দুই মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। আজ রোববার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মোহাম্মদ জুনায়েদ ও জশিতা ইসলাম তাঁকে জামিন দেন।

আখতার হোসেনের আইনজীবী মো. মুজাহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেছেন, ‘২০২১ সালে পৃথক দুই থানার মামলায় এনসিপির নেতা আখতার হোসেন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে পৃথক দুই আদালত দুই মামলায় তাঁকে জামিন দেন।’

এ বিষয়ে আখতার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে আমার বিরুদ্ধে মোট ছয়টি মামলা করা হয়েছিল। এর মধ্যে চারটিতে অব্যাহতি পেয়েছি। অন্য দুটিতে আজকে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছি।’

মামলা দুটির অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে শাহবাগ থানায় তাঁর বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করা হয়। অন্যান্য থানায় আরও তিনটি মামলা করা হয়। এর মধ্যে চারটি মামলায় তিনি আগেই অব্যাহতি পেয়েছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জামায়াত-এনসিপির প্রার্থী হওয়ার চেয়ে লং স্ট্যান্ডিং পজিশন ধরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ: মাহফুজ আলম

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৪০
অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। ছবি: ফেসবুক
অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। ছবি: ফেসবুক

জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মধ্যকার নতুন রাজনৈতিক জোট ও আসন সমঝোতা নিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি জানান, জামায়াত-এনসিপি জোটের প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব থাকলেও তিনি তা গ্রহণ করছেন না।

তাঁর মতে, কোনো নির্দিষ্ট আসন থেকে প্রার্থী হওয়ার চেয়ে দীর্ঘমেয়াদি নীতি ও আদর্শ (লং স্ট্যান্ডিং পজিশন) ধরে রাখা অধিক গুরুত্বপূর্ণ।

মাহফুজ আলম তাঁর পোস্টে উল্লেখ করেন, নাগরিক কমিটি ও এনসিপি মূলত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির নেতাদের মাধ্যমে সংগঠিত হয়েছিল। এই সহযোদ্ধাদের তিনি বিভিন্ন সময় পলিসিগত সহযোগিতা দিলেও বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তিনি এনসিপির অংশ হচ্ছেন না।

‘আমার রাজনৈতিক অবস্থান’ শীর্ষক মাহফুজ আলমের ফেসবুক পোস্টটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে দেওয়া হলো

আমার রাজনৈতিক অবস্থান

১. নাগরিক কমিটি ও এনসিপি জুলাইয়ের সম্মুখসারির নেতৃত্বে সংগঠিত হয়েছিল। এ দুটি সংগঠনে আমার জুলাই সহযোদ্ধারা থাকায় গত দেড় বছর আমি চাহিবামাত্র তাদেরকে পরামর্শ, নির্দেশনা এবং পলিসিগত জায়গায় সহযোগিতা করেছি।

২. আমার অবস্থান স্পষ্ট। নূতন রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক বন্দোবস্ত, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক লড়াই, সামাজিক ফ্যাসিবাদ মোকাবেলা, রিকন্সিলিয়েশন, দায়-দরদের সমাজ সহ- অনেক কথাই আমি বলেছি। যেগুলো আমার জুলাই সহযোদ্ধারা উক্ত দুটি সংগঠন থেকে বারবার বলেছেন। কিন্তু, তারা এগুলো ধারণ করতেন? এনসিপিকে একটা বিগ জুলাই আম্ব্রেলা আকারে স্বতন্ত্র উপায়ে দাঁড় করানোর জন্য আমি সকল চেষ্টাই করেছি। কিন্তু, অনেক কারণেই সেটা সম্ভব হয়নি।

. বিদ্যমান বাস্তবতায় আমার জুলাই সহযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান, স্নেহ এবং বন্ধুত্ব মুছে যাবে না। কিন্তু, আমি এ এনসিপির অংশ হচ্ছি না। আমাকে জামায়াত-এনসিপি জোট থেকে প্রস্তাব দেয়া হয়নি, এটা সত্য নয়। কিন্তু ঢাকার কোন একটা আসনে জামায়াত-এনসিপি জোটের প্রার্থী হওয়ার চাইতে আমার লং স্টান্ডিং পজিশন ধরে রাখা অধিক গুরুত্বপূর্ণ।

৪. ইতিহাসের এ চলতি পর্বে বাংলাদেশ একটা শীতল যুদ্ধে আছে। এ পর্বে কোন পক্ষ না নিয়ে নিজেদের বক্তব্য ও নীতিতে অটল থাকাই শ্রেয়। বিকল্প তরুণ/ জুলাই শক্তির সম্ভাবনা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। বরং, আমি গত দেড় বছরে যা বলেছি, যে নীতিতে বিশ্বাস রেখেছি, তা অব্যাহত রাখব। রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সকল উপায়ে। If you care to join me, you are most welcome.

নূতন রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক বন্দোবস্ত সম্ভব ও বাস্তব। বিকল্প ও মধ্যপন্থী তরুণ/ জুলাই শক্তির উত্থান অত্যাসন্ন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত