Ajker Patrika

পারভেজ হত্যা: সেই দুই তরুণী ‘স্পটে ছিল’, তাঁদের খুঁজে বের করতে বললেন আদালত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০০: ১৩
১৯ এপ্রিল বিকেলে বনানীর প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
১৯ এপ্রিল বিকেলে বনানীর প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বনানীতে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজকে হত্যার ঘটনায় নাম আসা দুই তরুণীকে খুঁজে বের করতে বলেছেন আদালত। আজ বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী থানার যুগ্ম সদস্যসচিব হৃদয় মিয়াজির রিমান্ড শুনানির সময় এই আদেশ দেন ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. ছানাউল্যাহ।

ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আজ জাহিদুল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হৃদয় মিয়াজির রিমান্ড শুনানির সময় আসামিপক্ষ থেকে আদালতকে বলা হচ্ছিল, হত্যাকাণ্ডের সময় উপস্থিত দুই নারীর সঙ্গে হৃদয় মিয়াজির কোনো সম্পর্ক নেই।

বিচারক তখন তদন্ত কর্মকর্তার কাছে জানতে চান, ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা মেয়েদের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না। জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা জানান, তাঁরা মেয়েদের বিরুদ্ধে কোনো যৌক্তিক সন্দেহের প্রমাণ পাননি, সিসিটিভি ফুটেজেও তাঁদের উপস্থিতি ধরা পড়েনি। তদন্ত কর্মকর্তা আরও উল্লেখ করেন, আবু জর পিয়াস নামের একজন যুবক পুরো ঘটনাটি সংগঠিত করেছেন এবং তাঁকেই খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

বিচারক বলেন, মামলার সঙ্গে মেয়েদের সংশ্লিষ্টতা আছে। তাঁরা স্পটে ছিল, মেয়েগুলোর ভূমিকা ছিল। তাঁদের খুঁজে বের করুন।

শেষে জাহিদুল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী থানা কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব হৃদয় মিয়াজিকে (২৩) সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন আদালত।

আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, হৃদয় মিয়াজিকে আদালতে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। তাতে বলা হয়েছে, জাহিদুল হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সময় হৃদয় মিয়াজি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটনের জন্য তাঁকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি। আসামিপক্ষ থেকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন নাকচ চাওয়া হয়। উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত হৃদয় মিয়াজিকে সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।

গ্রেপ্তার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী থানার যুগ্ম সদস্যসচিব হৃদয় মিয়াজি। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী থানার যুগ্ম সদস্যসচিব হৃদয় মিয়াজি। ছবি: সংগৃহীত

এর আগে ২১ এপ্রিল জাহিদুল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার তিনজনকে সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন আদালত। ওই তিন আসামি হলেন মো. আল কামাল শেখ ওরফে কামাল (১৯), আলভী হোসেন জুনায়েদ (১৯) ও আল আমিন সানি (১৯)।

পুলিশ বলছে, ১৯ এপ্রিল বিকেলে বনানীর প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম ও তাঁর বন্ধু মো. তরিকুল ইসলামের ওপর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রাস্তার ওপর কয়েকজন দেশি অস্ত্র নিয়ে হামলা চালান। পরে হামলায় গুরুতর আহত জাহিদুলকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় জাহিদুল ইসলামের ফুফাতো ভাই হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২৫-৩০ জনের বিরুদ্ধে বনানী থানায় একটি মামলা করেন।

নিহত জাহিদুল ইসলাম পারভেজ। ছবি: সংগৃহীত
নিহত জাহিদুল ইসলাম পারভেজ। ছবি: সংগৃহীত

জাহিদুলের বন্ধু মাজহারুল ইসলাম বলেছিলেন, ক্যাম্পাসের সামনে জাহিদুল তাঁর দুই বন্ধুকে নিয়ে শিঙাড়া খাচ্ছিলেন। সেখানে আরও দুই নারী শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে ছিলেন। একপর্যায়ে ওই দুই নারী শিক্ষার্থীর মনে হয়, জাহিদুল ও তাঁর বন্ধুরা তাঁদের নিয়ে হাসাহাসি করছেন। তাঁরা এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাহিদুল ও তাঁর বন্ধুরা অস্বীকার করেন। পরে ওই দুই নারী শিক্ষার্থী গিয়ে বহিরাগত তিনজনকে ডেকে আনেন। ওই তিনজন এসে জাহিদুলদের কাছে হাসাহাসির কারণ জানতে চাইলে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের নজরে আসে। তাঁরা বিষয়টি মিটমাট করে দেন। একপর্যায়ে বহিরাগত ওই তিন যুবক আরও কয়েকজনকে নিয়ে এসে ফটকের বাইরে অবস্থায় নেন। জাহিদুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক থেকে বের হতেই তাঁরা তাঁকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রথম আলো বা ডেইলি স্টারে হামলার পক্ষে না: আবরার ফাইয়াজ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আবরার ফাইয়াজ। ফাইল ছবি
আবরার ফাইয়াজ। ফাইল ছবি

প্রথম আলো বা ডেইলি স্টারে হামলার পক্ষে না— এমন মন্তব্য করে পোস্ট করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাইয়াজ। তিনি ছাত্রলীগ নেতা–কর্মীদের হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার আবরার ফাহাদের ছোট ভাই।

আজ রাত পৌনে একটার দিকে নিজের ফেসবুকে এ পোস্ট করেছেন তিনি।

আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ লেখেন, ওসমান হাদি ভাই চেয়েছিলেন কালচারাল ফ্যাসিজমের মূলোৎপাটন করতে। ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে এত এত বই রাখার বা এক্টিভিটির কারণ ছিলো প্রথম আলো গং দের ন্যারেটিভের বাইরে মানুষকে চিন্তা করতে, কথা বলতে শেখানো।

তিনি তাঁর ফেসবুকে আরও লেখেন, ওসমান ভাইয়ের শাহাদাতকে স্যাবোটেজ দিয়ে চাপা দেওয়া এই চক্রান্তে পা না দিয়ে সঠিক লক্ষ্যে অটুট থাকুন। এজেন্সি গত এক সপ্তাহে স্যাবোটেজের অনেক পরিকল্পনা করেছে এটা মাথায় রাইখেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডেইলি স্টার ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে ডেইলি স্টার ভবনে দেওয়া আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১টা ৪০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে নেয় ফায়ার সার্ভিস।

ফায়ার সার্ভিস সদরদপ্তর আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

এর আগে, ডেইলি স্টার ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে তেজগাঁও ফায়ার স্টেশন ২টি ইউনিট কাজ করে।

বর্তমানে ডেইলি স্টার ভবনের সামনে এনসিপি নেতারা। সেখানে রয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সারওয়ার নিভা, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আরিফুর রহমান তুহিন ও মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন।

মুশফিক উস সালেহীন বলেন, ‘ডেইলি স্টার ভবনের সাংবাদিক অবরুদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে আমরা এখানে এসেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদির মৃত্যুর খবরে নওফেলের বাসায় অগ্নিসংযোগ, ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১: ২৩
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। ফাইল ছবি
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। ফাইল ছবি

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। বিক্ষোভকারীরা সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাসায় ভাঙচুর ও বাড়ির সামনে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় ইন্ডিয়ান হাইকমিশন কার্যালয় ভাঙচুরের চেষ্টা করে তারা।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ১১ থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে এসব ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, রাত ১১টার দিকে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা চট্টগ্রাম নগরীর ২ নম্বর গেট চশমা হিলে নওফেলের বাসার সামনে অবস্থান করে। একপর্যায়ে তারা বাসার ভেতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে। বাসার পার্কিংয়ে থাকা একটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়।

একই সময়ে আরেকটি দল নগরীর খুলশী এলাকায় ভারতীয় হাইকমিশন কার্যালয় ভাঙচুরের চেষ্টা করে।

পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলাইমান বলেন, ঘটনাস্থলে টিম রয়েছে। পুলিশ বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতাকে থামানোর চেষ্টা করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খুলনায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে সাংবাদিক নিহত, প্রাণিচিকিৎসক আশঙ্কাজনক

খুলনা প্রতিনিধি
নিহত সাংবাদিক এমদাদুল হক মিলন। ছবি: সংগৃহীত
নিহত সাংবাদিক এমদাদুল হক মিলন। ছবি: সংগৃহীত

খুলনা মহানগরীর আড়ংঘাটা থানাধীন সলুয়া বাজারে দুর্বৃত্তদের গুলিতে আড়ংঘাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সলুয়া বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক মিলন (৪৫) নিহত হয়েছেন। এ সময় দেবাশীষ নামের এক প্রাণিচিকিৎসক গুলিবিদ্ধ হন।

আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে সলুয়া বাজারের একটি চায়ের দোকানে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। এ সময় ওই দুজন চায়ের দোকানে বসে ছিলেন। সন্ত্রাসীরা খুব কাছ থেকে দুজনকে গুলি করে।

নিহত ইমদাদুল হক মিলন ওই এলাকার মো. বজলুর ছেলে। কয়েক মাস আগে তিনি একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। এ ছাড়া মিলন খুলনার স্থানীয় একটি দৈনিকে আড়ংঘাটা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন। পরে নিজেই ‘বর্তমান সময়’ নামের একটি অনলাইন পোর্টাল বের করেন। জমি নিয়ে তাঁর সঙ্গে একটি পক্ষের বিরোধ ছিল বলে জানা গেছে।

আহত দেবাশীষকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

জানতে চাইলে আড়ংঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজাহান আহমেদ বলেন, ‘ইমদাদুল হক মিলন গুলিতে নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া প্রাণিচিকিৎসক দেবাশীষ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁর মাথায় গুলি লেগেছে বলে জানতে পেরেছি।’

ওসি আরও বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

এদিকে স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, চরমপন্থী হুমায়ূন কবির হুমা গ্রুপ এই হামলা চালাতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে পুলিশ এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি।

একটি সূত্র জানায়, প্রাণিচিকিৎসক দেবাশীষ ওরফে দীবা বিশ্বাসের বুকে ও মাথায় আগে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। পরেরটা সাংবাদিক মিলনের মাথায়। সেখানে পাঁচ রাউন্ড গুলি হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত