Ajker Patrika

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা

সাবেক আইজির রাজসাক্ষী হওয়া নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পুলিশে

  • পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টিকে স্বাভাবিক আইনি প্রক্রিয়া হিসেবে দেখছেন।
  • মাঠপর্যায়ের সদস্যরা এটিকে দেখছেন ‘নির্দেশদাতার দায় এড়ানোর কৌশল’ হিসেবে।
 শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা
আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২৫, ১০: ৪১
সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। ফাইল ছবি
সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। ফাইল ছবি

গত বছরের জুলাই-আগস্টের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের রাজসাক্ষী হওয়া নিয়ে পুলিশ বাহিনীতে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টিকে স্বাভাবিক আইনি প্রক্রিয়া হিসেবে দেখলেও মাঠপর্যায়ের সদস্যরা এটিকে দেখছেন ‘নির্দেশদাতার দায় এড়ানোর কৌশল’ হিসেবে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১০ জুলাই এই মামলায় অভিযোগ গঠন করেন। এর মধ্য দিয়ে মামলাটির আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে। সেদিনই এই মামলার আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রুভার) হওয়ার আবেদন জানালে ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করেন। মামলার অপর আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

রাজসাক্ষী হওয়ায় সাবেক এই আইজিপি আর অভিযুক্ত থাকলেন না, তিনি এখন মামলার সাক্ষী। আইনজীবীরা বলেছেন, রাজসাক্ষী হওয়ায় চৌধুরী মামুন জুলাই হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেতে পারেন। রাজসাক্ষী হওয়ার শর্ত অনুযায়ী একজন আসামি যখন তাঁর স্বার্থে পূর্ণাঙ্গ সত্য প্রকাশ করবেন, অর্থাৎ তাঁর অঙ্গীকার অনুযায়ী সাক্ষ্য দেবেন, তারপরই তিনি মুক্তি পাবেন বা আদালত তাঁকে মুক্তি দেবেন। সে ক্ষেত্রে চৌধুরী মামুনকে মামলা নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত মুক্তির জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

সাধারণভাবে যে অপরাধী, প্ররোচক বা জড়িত হিসেবে অপরাধের বিষয়ে বা প্রত্যেক সহ-অপরাধীর বিষয়ে তাঁর জ্ঞানের মধ্যে থাকা সব ঘটনার সম্পূর্ণ ও সত্য বিবরণ প্রকাশ করবেন, এই শর্তে তাঁকে (রাজসাক্ষী) ক্ষমার প্রস্তাব দিতে পারেন বিচারক।

জুলাই অভ্যুত্থান, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসনকালে সংঘটিত গুম, খুন ও নির্যাতনের ঘটনায় বিভিন্ন মামলা হয়েছে। প্রসিকিউশনের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৫ জুন পর্যন্ত ২৭টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২০৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৭৩ জনকে। ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। অপর মামলায় আসামি ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ পুলিশের আট সদস্য। এ দুই মামলার আসামিদের মধ্যে এখন পর্যন্ত শুধু চৌধুরী মামুন রাজসাক্ষী হয়েছেন।

জানতে চাইলে আইজিপি বাহারুল আলম আজকের পত্রিকা'কে বলেন, এটি একটি আইনি প্রক্রিয়া। এটি ঠিক না বেঠিক, সেটা বলা তাঁর ঠিক হবে না। তবে এতে পুলিশের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না।

জুলাই অভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে হতাহতের ঘটনায় সারা দেশে এখন পর্যন্ত ৭৬১টি মামলা হয়েছে।

এসব মামলায় পুলিশের ১ হাজার ১৬৮ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে। গুলির নির্দেশ দেওয়ার ও গুলি চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে সাবেক আইজিপি থেকে শুরু করে কনস্টেবল পদের সদস্যদের বিরুদ্ধে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে পুলিশের ৬১ সদস্যকে।

এ অবস্থায় সাবেক আইজিপি মামুনের রাজসাক্ষী হওয়ার বিষয়টি পুলিশ সদস্যদের মধ্যে দুই রকম প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। অতিরিক্ত আইজি, ডিআইজি, পুলিশ সুপার, ওসি ও উপপরিদর্শক পদের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এমন ধারণা পাওয়া গেছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, নিজেকে রক্ষার জন্য চৌধুরী মামুন রাজসাক্ষী হয়েছেন। এটি আইনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। বাহিনীতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।

একই রকম মত সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদারও। তিনি বলেন, এটি আইনসম্মত পদক্ষেপ। তিনি ভুল স্বীকার করে বিস্তারিত বলতে চাচ্ছেন। এতে বাহিনীর ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কথা নয়। তবে তিনি কী বলেন, সেটা বিচার্য।

অবশ্য মাঠপর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের প্রতিক্রিয়া বিপরীত। তাঁরা বিষয়টি ভালোভাবে নেননি। পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সাবেক আইজি নিজেকে রক্ষা করতে রাজসাক্ষী হয়েছেন। তবে বিভিন্ন মামলায় আসামি করা পুলিশের এক হাজারের বেশি সদস্য তো ঊর্ধ্বতনের আদেশ পালন করেছেন।

চট্টগ্রাম রেঞ্জের এক পুলিশ সুপার বলেন, যিনি আদেশ দিয়েছেন, তিনি দায় এড়িয়ে গেলে তা ভবিষ্যতে নেতৃত্বে বিশ্বাস করে আদেশ মানার প্রবণতায় প্রভাব ফেলতে পারে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) একটি থানার ওসি বলেন, ওই ঘটনায় পুলিশ সদস্যরা এখন নির্দেশ পালনের আগে নিশ্চিত হতে চাইবেন, নির্দেশদাতা ভবিষ্যতে কোনো বিপদ হলে পাশে থাকবেন কি না।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ কে এম শামশাদ বলেন, রাজসাক্ষী নিজেও অপরাধে জড়িত। কিন্তু রাষ্ট্রের পক্ষে সাক্ষ্য দিয়ে সুবিধা পান। তাঁর বক্তব্যে অপরাধের পরিকল্পনা, গোপন ভূমিকার তথ্য থাকে। তবে মিথ্যা সাক্ষ্য দিলে তিনি শাস্তির মুখেও পড়তে পারেন। তাই তাঁর সাক্ষ্য সতর্কভাবে মূল্যায়ন করতে হয়। বিশেষ করে বড় মামলায় তাঁকে নিরাপত্তা দেওয়াও জরুরি হয়ে পড়ে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বোরো ধানের মৌসুম: সেচ মৌসুমে জ্বালানিতে টান

  • যেকোনো পরিস্থিতিতে তিন মাসের জ্বালানি মজুত থাকার কথা
  • বিপিসির নথি বলছে, আর ১৩ থেকে ২০ দিনের জ্বালানি আছে
 আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩১
বোরো ধানের মৌসুম: সেচ মৌসুমে জ্বালানিতে টান

বোরো ধানের মৌসুমে দেশে জ্বালানি মজুতে টান পড়েছে। বর্তমান ডিজেলের মজুত একেবারেই তলানিতে রয়েছে। সরকারি তেল বিপণনকারী তিনটি কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলে মজুত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে তিন মাসের জ্বালানি মজুত থাকার কথা থাকলেও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) নথি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বর্তমানে আর ১৩ থেকে ২০ দিনের জ্বালানি তেলের মজুত রয়েছে। যদিও বিপিসির দাবি, দেশে জ্বালানি-সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা নেই।

বিপিসির মজুত প্রতিবেদনে জানা যায়, ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট ডিজেল ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৭ টন মজুত রয়েছে। এর মধ্যে দেশের ২৪টি ডিপোর ট্যাংকে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮২৯ টন মজুত রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন লাইটার জাহাজসহ ট্রানজিটে রয়েছে ৪৯ হাজার ৬৬৮ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১৬ হাজার ৬০১ টন ডিজেল সারা দেশে বিক্রি করা হয়েছে। সে হিসাবে দেখা যায়, বর্তমানে বিপিসির কাছে ২০ দিনের ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে বিপিসি বিভিন্ন ডিপোতে পেট্রল মজুত আছে ২২ হাজার ১১৪ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৬১৮ টন পেট্রল বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে পেট্রল ১৩ দিনের মজুত আছে।

বিপিসির ২৩ ডিসেম্বরের স্টক প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে মোট ২৮ হাজার ২৭০ টন অকটেন মজুত রয়েছে। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৮৮৫ টন অকটেন বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে ১৫ দিনের অকটেন মজুত আছে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিপিসির পরিচালক এ কে এম আজাদুর রহমান জানান, সারা দেশে ২৫ দিনের অকটেন ও পেট্রল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ডিজেল ৩৫ দিনের মজুত রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। দেশে ডিজেলের মজুত কম কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন শুষ্ক মৌসুমে সব জায়গায় বিদ্যুতের ব্যবহার হচ্ছে। তাই ডিজেলের চাহিদা কম।

এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান মেঘনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৫ হাজার ৬৯৫ টন অকটেন মজুত রয়েছে। আর পেট্রল মজুত রয়েছে ৪ হাজার ২৯৫ টন। সারা দেশের ১৭টি ডিপোতে ৯২ হাজার ৮৯৫ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে সরকারি তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৮০ হাজার ২১৩ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ২ হাজার ৯১৪ টন পেট্রল এবং ৪ হাজার ১৮৭ টন অকটেন মজুত রয়েছে। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফতুল্লা, রাজশাহী, হরিয়ান, চিলমারী ডিপোতে কোনো জ্বালানি তেল নাই। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের নাটোর ডিপোতে ৩০ টন, রংপুর ডিপোতে ৫৭ টন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডিপোতে ২ টন ডিজেল রয়েছে।

নাম না প্রকাশে সরকারি তেল বিপণনকারী এক কর্মকর্তা জানান, বিপিসির আমদানি করা জ্বালানি তেলের মজুত আশঙ্কাজনকভাবে কম রয়েছে। ডিজেলের মজুত একবারেই কম। তাঁর মতে ১৩ থেকে ১৫ দিনের জ্বালানি মজুত রয়েছে বর্তমানে।

পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক আসিফ মালিক বলেন, দেশে পর্যাপ্ত জ্বালানি মজুত রয়েছে। সংকটের কোনো আশঙ্কা নেই। নিয়মিতভাবে জ্বালানি তেলের জাহাজ আসা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান।

তবে গাজীপুর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবদুল মোমিন বলেন, দেশে ধান উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে বড় মৌসুম হচ্ছে বর্তমান বোরো মৌসুম। এ সময় প্রায় ৫২ লাখ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়। এই মৌসুমে জ্বালানি-সংকট হলে সেটা দেশের খাদ্য উৎপাদনে ছেদ পড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজবাড়ীতে গণপিটুনিতে অমৃত মন্ডল নিহতের ঘটনা সাম্প্রদায়িক হামলা নয়: প্রেস উইং

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজবাড়ীতে গণপিটুনিতে অমৃত মন্ডল নিহতের ঘটনা সাম্প্রদায়িক হামলা নয়: প্রেস উইং

রাজবাড়ীর পাংশা থানাধীন এলাকায় গত বুধবার রাতে সংঘটিত একটি দুঃখজনক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।

পুলিশের তথ্য ও প্রাথমিক তদন্ত থেকে প্রতীয়মান হচ্ছে, ঘটনাটি মোটেই সাম্প্রদায়িক হামলা নয়। এটি চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত সহিংস পরিস্থিতির থেকে সৃষ্ট ঘটনা। নিহত ব্যক্তি শীর্ষ সন্ত্রাসী অমৃত মন্ডল ওরফে সম্রাট চাঁদা দাবির উদ্দেশ্যে এলাকায় উপস্থিত হন এবং বিক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতার সঙ্গে সংঘর্ষের একপর্যায়ে প্রাণ হারান। তিনি ইতিপূর্বে ২০২৩ সালে রুজুকৃত হত্যা, চাঁদাবাজির মামলাসহ একাধিক গুরুতর মামলার আসামি ছিলেন। এসব মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সম্রাটের সহযোগী সেলিমকে একটি বিদেশি পিস্তল, ১টি পাইপগানসহ আটক করে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরকার কঠোর নিন্দা জানায়। সরকার সুস্পষ্টভাবে জানাতে চায়, যেকোনো ধরনের আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড, গণপিটুনি বা সহিংসতা সরকার কোনোভাবেই সমর্থন করে না। এ ঘটনায় যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

একই সঙ্গে সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে, একটি মহল নিহত ব্যক্তির ধর্মীয় পরিচয়কে সামনে এনে ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক হামলা হিসেবে উপস্থাপনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসদুদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ ধরনের অপপ্রচার সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে।

সরকারসংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানাচ্ছে এবং বিভ্রান্তিকর, উসকানিমূলক ও সাম্প্রদায়িক বক্তব্য প্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছে।

আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, এ দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার যেকোনো অপচেষ্টা সরকার কঠোরহস্তে দমন করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের আগমনে রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে: প্রেস সচিব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা তাঁকে (তারেক রহমান) স্বাগত জানাই। উনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দলের নেতা এবং আমি বলব তাঁর বাংলাদেশে আসা খুবই একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশে তো সত্যিকার অর্থে কিছু রাজনৈতিক শূন্যতা আছে। উনি আসলে সেটা পূরণ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সামনে আমাদের একটা বড় ইলেকশন, আমরা একটা ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনে (গণতান্ত্রিক উত্তরণে) আছি। আমরা আশা করছি, আমাদের এই ট্রানজিশনটা আরও স্মুথ হবে।’

তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘তাঁর নিরাপত্তা তো তাঁর পার্টি দেখছেন, তবে তাঁরা আমাদের কাছে যেই ধরনের সহযোগিতা চাচ্ছেন, আমরা সব সহযোগিতাই করছি।’

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে সিলেটে আসে। সিলেটে যাত্রাবিরতি শেষে ফ্লাইটটি বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে তাঁর বাসটি সংবর্ধনাস্থলে আসে। কিছুক্ষণ আগে তিনি মঞ্চে অবস্থান নিয়ে তিনি বক্তব্য শুরু করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বড়দিনে বঙ্গভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন রাষ্ট্রপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎস বড়দিনে খ্রিষ্টান ধর্মের বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে তিনি এই শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বলে বঙ্গভবনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সেখানে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি দেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ বিশ্ববাসীর প্রতি বড় দিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানান। জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে এ দেশের মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চিরকাল অটুট ও অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত