Ajker Patrika

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা

সাবেক আইজির রাজসাক্ষী হওয়া নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পুলিশে

  • পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টিকে স্বাভাবিক আইনি প্রক্রিয়া হিসেবে দেখছেন।
  • মাঠপর্যায়ের সদস্যরা এটিকে দেখছেন ‘নির্দেশদাতার দায় এড়ানোর কৌশল’ হিসেবে।
 শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা
আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২৫, ১০: ৪১
সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। ফাইল ছবি
সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। ফাইল ছবি

গত বছরের জুলাই-আগস্টের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের রাজসাক্ষী হওয়া নিয়ে পুলিশ বাহিনীতে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টিকে স্বাভাবিক আইনি প্রক্রিয়া হিসেবে দেখলেও মাঠপর্যায়ের সদস্যরা এটিকে দেখছেন ‘নির্দেশদাতার দায় এড়ানোর কৌশল’ হিসেবে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১০ জুলাই এই মামলায় অভিযোগ গঠন করেন। এর মধ্য দিয়ে মামলাটির আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে। সেদিনই এই মামলার আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রুভার) হওয়ার আবেদন জানালে ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করেন। মামলার অপর আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

রাজসাক্ষী হওয়ায় সাবেক এই আইজিপি আর অভিযুক্ত থাকলেন না, তিনি এখন মামলার সাক্ষী। আইনজীবীরা বলেছেন, রাজসাক্ষী হওয়ায় চৌধুরী মামুন জুলাই হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেতে পারেন। রাজসাক্ষী হওয়ার শর্ত অনুযায়ী একজন আসামি যখন তাঁর স্বার্থে পূর্ণাঙ্গ সত্য প্রকাশ করবেন, অর্থাৎ তাঁর অঙ্গীকার অনুযায়ী সাক্ষ্য দেবেন, তারপরই তিনি মুক্তি পাবেন বা আদালত তাঁকে মুক্তি দেবেন। সে ক্ষেত্রে চৌধুরী মামুনকে মামলা নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত মুক্তির জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

সাধারণভাবে যে অপরাধী, প্ররোচক বা জড়িত হিসেবে অপরাধের বিষয়ে বা প্রত্যেক সহ-অপরাধীর বিষয়ে তাঁর জ্ঞানের মধ্যে থাকা সব ঘটনার সম্পূর্ণ ও সত্য বিবরণ প্রকাশ করবেন, এই শর্তে তাঁকে (রাজসাক্ষী) ক্ষমার প্রস্তাব দিতে পারেন বিচারক।

জুলাই অভ্যুত্থান, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসনকালে সংঘটিত গুম, খুন ও নির্যাতনের ঘটনায় বিভিন্ন মামলা হয়েছে। প্রসিকিউশনের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৫ জুন পর্যন্ত ২৭টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২০৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৭৩ জনকে। ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। অপর মামলায় আসামি ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ পুলিশের আট সদস্য। এ দুই মামলার আসামিদের মধ্যে এখন পর্যন্ত শুধু চৌধুরী মামুন রাজসাক্ষী হয়েছেন।

জানতে চাইলে আইজিপি বাহারুল আলম আজকের পত্রিকা'কে বলেন, এটি একটি আইনি প্রক্রিয়া। এটি ঠিক না বেঠিক, সেটা বলা তাঁর ঠিক হবে না। তবে এতে পুলিশের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না।

জুলাই অভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে হতাহতের ঘটনায় সারা দেশে এখন পর্যন্ত ৭৬১টি মামলা হয়েছে।

এসব মামলায় পুলিশের ১ হাজার ১৬৮ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে। গুলির নির্দেশ দেওয়ার ও গুলি চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে সাবেক আইজিপি থেকে শুরু করে কনস্টেবল পদের সদস্যদের বিরুদ্ধে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে পুলিশের ৬১ সদস্যকে।

এ অবস্থায় সাবেক আইজিপি মামুনের রাজসাক্ষী হওয়ার বিষয়টি পুলিশ সদস্যদের মধ্যে দুই রকম প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। অতিরিক্ত আইজি, ডিআইজি, পুলিশ সুপার, ওসি ও উপপরিদর্শক পদের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এমন ধারণা পাওয়া গেছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, নিজেকে রক্ষার জন্য চৌধুরী মামুন রাজসাক্ষী হয়েছেন। এটি আইনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। বাহিনীতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।

একই রকম মত সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদারও। তিনি বলেন, এটি আইনসম্মত পদক্ষেপ। তিনি ভুল স্বীকার করে বিস্তারিত বলতে চাচ্ছেন। এতে বাহিনীর ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কথা নয়। তবে তিনি কী বলেন, সেটা বিচার্য।

অবশ্য মাঠপর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের প্রতিক্রিয়া বিপরীত। তাঁরা বিষয়টি ভালোভাবে নেননি। পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সাবেক আইজি নিজেকে রক্ষা করতে রাজসাক্ষী হয়েছেন। তবে বিভিন্ন মামলায় আসামি করা পুলিশের এক হাজারের বেশি সদস্য তো ঊর্ধ্বতনের আদেশ পালন করেছেন।

চট্টগ্রাম রেঞ্জের এক পুলিশ সুপার বলেন, যিনি আদেশ দিয়েছেন, তিনি দায় এড়িয়ে গেলে তা ভবিষ্যতে নেতৃত্বে বিশ্বাস করে আদেশ মানার প্রবণতায় প্রভাব ফেলতে পারে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) একটি থানার ওসি বলেন, ওই ঘটনায় পুলিশ সদস্যরা এখন নির্দেশ পালনের আগে নিশ্চিত হতে চাইবেন, নির্দেশদাতা ভবিষ্যতে কোনো বিপদ হলে পাশে থাকবেন কি না।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ কে এম শামশাদ বলেন, রাজসাক্ষী নিজেও অপরাধে জড়িত। কিন্তু রাষ্ট্রের পক্ষে সাক্ষ্য দিয়ে সুবিধা পান। তাঁর বক্তব্যে অপরাধের পরিকল্পনা, গোপন ভূমিকার তথ্য থাকে। তবে মিথ্যা সাক্ষ্য দিলে তিনি শাস্তির মুখেও পড়তে পারেন। তাই তাঁর সাক্ষ্য সতর্কভাবে মূল্যায়ন করতে হয়। বিশেষ করে বড় মামলায় তাঁকে নিরাপত্তা দেওয়াও জরুরি হয়ে পড়ে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মনোনয়নপত্র নিলেন ৩১৪৪ জন, আগামীকালই দাখিলের শেষ সময়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৫
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হচ্ছে। আগামীকাল সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে। আজ রোববার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৩০০ আসন থেকে ৩ হাজার ১৪৪ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আর জমা দিয়েছেন ১৬৬ জন।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন মল্লিক এ তথ্য জানিয়েছেন।

এদিকে নির্বাচনী কার্যক্রমের এই গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ভোটের কাজে কর্মকর্তা নিয়োগসহ বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে ইসি।

এর আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের তাগিদ দিয়ে গতকাল শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত পৃথক চিঠি দেওয়া হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবকে পাঠানো চিঠিতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটের লক্ষ্যে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিধান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা ও এ জন্য বাজেট প্রণয়ন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রস্তুত করা, ভুল তথ্য ও অপতথ্যের বিস্তার রোধ এবং বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের অনুমোদন ও নিরাপত্তা দেওয়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়নের তাগিদ দেওয়া হয়।

এদিকে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচন-সংক্রান্ত কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত অফিস, প্রতিষ্ঠান এবং প্রয়োজনে বেসরকারি অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচন উপলক্ষে আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং গণমাধ্যমের বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিক আসবেন। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকের বাংলাদেশে আগমন উপলক্ষে ভিসা প্রসেসিংসহ সব বিষয়ে সচিবের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করা হয়।

স্থানীয় সরকার বিভাগকে দেওয়া চিঠিতে বিগত সংসদ নির্বাচনে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দিষ্ট নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য যেভাবে নির্বাহী আদেশ জারি করা হয়েছিল, এবারও তা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবদের কাছে সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের জন্য ব্যাপকভাবে প্রচার ও প্রচারণা চালানো ও জনসচেতনতা সৃষ্টি করার জন্য সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিবকে পাঠানো চিঠিতে পোস্টাল ভোটের বিষয়ে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, ডাক বিভাগকে সমন্বয় ও গোপনীয়তা বজায় রেখে পোস্টাল ব্যালট দ্রুত ও নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া এবং ফেরত আনার কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে হবে।

এ ছাড়া আজ স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীকে দেওয়া চিঠিতে ইসি জানায়, ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে এমন প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার, কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, সংস্কার এবং কেন্দ্রে যাতায়াতের ভাঙা ও সংকীর্ণ রাস্তা মেরামতের প্রয়োজন হলে এ বিষয়ে ইসির সম্মতির প্রয়োজন হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আগামী মঙ্গলবার অভিভাষণ দেবেন প্রধান বিচারপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

সারা দেশে কর্মরত জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশে অভিভাষণ দেবেন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী।

আগামী মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে এই অভিভাষণ দেবেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোছাইন আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে আজ রোববার আইন মন্ত্রণালয়ের এক স্মারকে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শে ৩০ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে আয়োজিত প্রধান বিচারপতির অভিভাষণ দেওয়া অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য দেশের সব জেলার জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

এর আগে আজ সকালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী দেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। বঙ্গভবনের দরবার হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাঁকে শপথবাক্য পড়ান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানের হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ২৩
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার। ছবি: প্রেস উইং
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার। ছবি: প্রেস উইং

বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার জানান, গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। দুই দেশের ব্যবসায়ী সমাজ নতুন নতুন খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকেই ঢাকা-করাচি সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হতে পারে।

পাকিস্তানি হাইকমিশনার জানান, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাকিস্তানে উচ্চশিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। বিশেষ করে চিকিৎসাবিজ্ঞান, ন্যানো টেকনোলজি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে পড়ার বিষয়ে অনেক শিক্ষার্থী আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

লিভার ও কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য বাংলাদেশি রোগীদের পাকিস্তানে যাওয়ার হার বাড়ছে উল্লেখ করে ইমরান হায়দার বলেন, পাকিস্তান এ-সংক্রান্ত বিশেষায়িত চিকিৎসাক্ষেত্রে বাংলাদেশের চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা প্রদানের সুযোগ দিতে প্রস্তুত।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান যোগাযোগকে স্বাগত জানান। তিনি সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সাংস্কৃতিক, শিক্ষামূলক এবং সরাসরি জনযোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও সম্প্রসারণের জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্র খুঁজে বের করার পরামর্শ দেন প্রধান উপদেষ্টা।

হাইকমিশনার ইমরান হায়দারের দায়িত্ব পালনকালে দুই দেশের মধ্যে যৌথ বিনিয়োগের নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-বিষয়ক (এসডিজি) সমন্বয়কারী ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজ রাতে চাঁদপুর ও দক্ষিণাঞ্চলে নৌযান চলাচল বন্ধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এমভি কীর্তনখোলা ১০ লঞ্চ। ছবি: সংগৃহীত
এমভি কীর্তনখোলা ১০ লঞ্চ। ছবি: সংগৃহীত

ঘন কুয়াশার কারণে আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে চাঁদপুর ও দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সব ধরনের নৌযান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

আজ বিআইডব্লিউটিএর জারি করা এক বিশেষ নৌ চলাচল বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে যেসব লঞ্চ নির্দিষ্ট গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রাপথে রয়েছে, সেসবসহ অন্য সব নৌযানকে অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল বিধিমালা, ১৯৭৬ অনুসরণ করে চলাচল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, চাঁদপুরের হাইমচরে মেঘনা নদীতে গত বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে ঘন কুয়াশার কারণে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি জাকির সম্রাট-৩ ও বরিশালগামী অ্যাডভেঞ্চার-৯ নামে দুই লঞ্চের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় চার যাত্রী নিহত হন এবং আহত হন বেশ কয়েকজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত