Ajker Patrika

ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির তালিকায় বঞ্চনা নিরসন কমিটির সদস্যসচিবও

  • সচিব হওয়া ১১৯ জনের মধ্যে ৫০ জনই ’৮২ ব্যাচের।
  • বঞ্চনা নিরসন কমিটি প্রশ্নবিদ্ধ: টিআইবি
  • বঞ্চিত অর্ধেক আবেদনকারী, অনেকের ক্ষোভ।
শহীদুল ইসলাম, ঢাকা
আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪: ৫৬
ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির তালিকায় বঞ্চনা নিরসন কমিটির সদস্যসচিবও

সরকারের শীর্ষ তিন পদসহ চুক্তিতে সিনিয়র সচিব পদে থাকা ১৫ জনের মধ্যে ১১ জনকে সচিব পদে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। সচিব পদে পদোন্নতি পাওয়া ১১৯ জনের মধ্যে ৫০ জনই ১৯৮২ সালের ব্যাচের। ১৯৮২ ব্যাচের কর্মকর্তা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান ‘বঞ্চনা নিরসন কমিটি’র সদস্যসচিবের দায়িত্বে ছিলেন।

নিজের কমিটির সুপারিশের আলোকে মোখলেস উর রহমান সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। প্রশ্ন উঠেছে তাঁরই ব্যাচ থেকে ৫০ জনের পদোন্নতি পাওয়া নিয়েও। বঞ্চনার প্রতিকারবিষয়ক কমিটিতে থেকে নিজের নাম সুপারিশ করাকে স্বার্থের দ্বন্দ্ব হিসেবেই দেখছেন কোনো কোনো কর্মকর্তা।

আওয়ামী লীগ আমলে অবসরে যাওয়া বঞ্চিত গণ্য ১১৯ কর্মকর্তাকে সচিব, ৪১ জনকে গ্রেড-১, ৫২৮ জনকে অতিরিক্ত সচিব, ৭২ জনকে যুগ্ম সচিব এবং চারজনকে উপসচিব পদে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দিয়ে গতকাল রোববার পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। নিজেকে বঞ্চিত দাবি করে ১ হাজার ৫৪৩ জন আবেদন করেছিলেন। সেখান থেকে ৭৬৪ জনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। বাদ পড়েছেন ৭৭৯ জন।

প্রজ্ঞাপন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সচিব পদে যাঁরা পদোন্নতি পেয়েছেন, তাঁদের আটজন সিনিয়র সহকারী সচিব পদ থেকে অবসরে গিয়েছিলেন। এ ছাড়া অতিরিক্ত সচিব থেকে ৫২ জন, যুগ্ম সচিব থেকে ৩৪ জন এবং উপসচিব থেকে অবসরে যাওয়া ২৫ জন সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন।

১৫ সচিবের ১১ জনকে পদোন্নতি

সিনিয়র সহকারী সচিব, যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিব পদ থেকে এর আগে অবসরে যাওয়া ১৫ কর্মকর্তাকে সিনিয়র সচিব পদে চুক্তিতে নিয়োগ দিয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকার। এই ১৫ জনের মধ্য থেকে ১১ জন পদোন্নতি পেয়েছেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘তাঁরা গাছেরও খাচ্ছেন, তলারও কুড়াচ্ছেন। আমরা নিয়মিত কর্মকর্তারা ঠিকমতো পদোন্নতি পাচ্ছি না। তাঁরা পদে বসেই নিজেদের সুবিধা সবার আগে আদায় করে নিলেন। এটা বড় বৈষম্য।’

অতিরিক্ত সচিব থেকে অবসরে যাওয়া মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশিদকে ২০০৯ সালের ৪ আগস্ট থেকে সচিব পদে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়াকে ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি থেকে অতিরিক্ত সচিব এবং ২০১৩ সালের ৩১ অক্টোবর থেকে সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। তিনি যুগ্ম সচিব হিসেবে অবসরে গিয়েছিলেন। অতিরিক্ত সচিব থেকে অবসরে যাওয়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে ২০১১ সালের ১০ অক্টোবর থেকে সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।

অতিরিক্ত সচিব থেকে অবসরে যাওয়া সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের এবং পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সিনিয়র সচিব) আকমল হোসেন আজাদ সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন।

যুগ্ম সচিব থেকে অবসরে যাওয়া ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমদ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ বেগমকে সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।

উপসচিব থেকে অবসরে যাওয়া পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. মো. নেয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়াকে ২০০৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর থেকে যুগ্ম সচিব, ২০১২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে অতিরিক্ত সচিব এবং ২০১৬ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।

সিনিয়র সচিব পদমর্যাদায় ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান এ জে এম সালাহউদ্দিন নাগরীকে ২০০৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর উপসচিব, ২০১৫ সালের ৬ এপ্রিল যুগ্ম সচিব, ২০১৮ সালের ২৯ আগস্ট অতিরিক্ত সচিব এবং ২০২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর থেকে সচিব পদে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। সিনিয়র সহকারী সচিবের পদ থেকে অবসরে গিয়েছিলেন তিনি।

অতিরিক্ত সচিব থেকে অবসরে যাওয়া দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মোমেনকে সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।

কোটি টাকার ওপর আর্থিক সুবিধা

ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের কেউ কেউ কোটি টাকার ওপর ক্ষতিপূরণ পাবেন। ৫০ লাখ পাবেন এমন কর্মকর্তার সংখ্যা অনেক।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, যাকে যেদিন থেকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে সেদিন থেকেই তিনি আর্থিক সুবিধা পাবেন। শুধু চাকরিকালীন সুবিধা নয়, শেষ স্কেল অনুযায়ীই পেনশন সুবিধা পাবেন তাঁরা।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে বকেয়ার ৫০ শতাংশ এবং পরের অর্থবছরে বাকি ৫০ শতাংশ অর্থ পাবেন বঞ্চিত কর্মকর্তারা।

‘বঞ্চনা নিরসন কমিটি প্রশ্নবিদ্ধ’

গত সরকারের সময় বঞ্চিত থেকে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের বঞ্চনা নিরসনে অন্তর্বর্তী সরকার যে কমিটি করেছিল, তা প্রশ্নবিদ্ধ বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি-অনিয়মে নজরদারি করা প্রতিষ্ঠান টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘সদস্যসচিব নিজেও একজন প্রার্থী। সে কারণে এই কমিটি গঠনই প্রশ্নবিদ্ধ। এ ক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি। জনপ্রশাসন সচিব নিজেও একজন প্রার্থী ছিলেন বলে নিজেকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত না করলেই তাঁর জন্য শ্রেয় হতো। তিনি কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার বিষয়টাকে গ্রহণ না করলেই পারতেন, সেটিই যৌক্তিক হতো।’

কমিটিতে থেকে নিজের নাম সুপারিশ করাকে ‘স্বার্থের দ্বন্দ্ব’ আখ্যা দিয়ে ইফতেখারুজ্জামান অবশ্য এটাও বলেন, ‘নিজের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে তিনি অংশগ্রহণে বিরত ছিলেন কি না, সেটি দেখতে হবে।’

‘অর্ধেক আবেদনকারীকে কী কারণে পদোন্নতি দেওয়া হয়নি এবং কোন কোন মানদণ্ডের ভিত্তিতে অন্যদের পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, স্বচ্ছতার স্বার্থে তা প্রকাশ করা উচিত। জনপ্রশাসনে এখনো একধরনের অস্থিতিশীলতা থাকায় এটি প্রকাশ করা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ, যাতে ভুল বোঝাবুঝি না হয় এবং অসন্তোষের মাত্রা বেড়ে না যায়’, বলেন ইফতেখারুজ্জামান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন ২৫৮২ জন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৫৭
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ২ হাজার ৫৮২ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ৩ হাজার ৪০৭ জন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন এ তথ্য জানান।

ইসির জনসংযোগ পরিচালক জানান, রংপুর অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৩টি আসন থেকে ৩৩৮টি মনোনয়ন বিতরণ করা হয়েছিল। জমা পড়েছে ২৭৮টি। রাজশাহী অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৯ আসন থেকে ৩২৯টি মনোনয়ন বিতরণ করা হয়েছিল। জমা পড়েছে ২৬০টি। বরিশাল অঞ্চলের ৬ জেলার ২১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ২১২টি, জমা পড়েছে ১৬৬টি। ফরিদপুর অঞ্চলের ৫ জেলার ১৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ১৬৫টি, জমা পড়েছে ১৪২টি।

খুলনা অঞ্চলের ১০ জেলার ৩৬ আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৩৫৮টি, জমা পড়েছে ২৭৬টি। ঢাকা অঞ্চলের ৬ জেলার ৪১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ৬৩৮টি, জমা পড়েছে ৪৪৪টি।

ময়মনসিংহের ৬টি জেলার ৩৮টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪০২টি, জমা পড়েছে ৩১১টি। সিলেটের ৪ জেলার ১৯টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ১৭৬টি, জমা পড়েছে ১৪৬টি। কুমিল্লার ৬ জেলার ৩৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪৯৬টি, জমা পড়েছে ৩৬৫টি। চট্টগ্রামের ৫ জেলার ২৩টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ২৯৩টি, জমা পড়েছে ১৯৪টি।

ইসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র বাছাই ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত, রিটার্নিং কর্মকর্তার আদেশের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল করার সময় ৫ থেকে ৯ জানুয়ারি, আপিল নিষ্পত্তি ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও প্রতীক বরাদ্দ ২১ জানুয়ারি, নির্বাচনী প্রচারণা চলবে ২২ জানুয়ারি থেকে ভোট শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগপর্যন্ত, অর্থাৎ ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত।

আর ভোট গ্রহণ করা হবে ১২ ফেব্রুয়ারি। সেদিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৪৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ: পি কে হালদারসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
পি কে হালদার। ফাইল ছবি
পি কে হালদার। ফাইল ছবি

দেশের আর্থিক খাতের পাচারের অন্যতম হোতা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) ১৮ জনের নামে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দিয়া শিপিং লিমিটেড নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ৪৪ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় এই চার্জশিট অনুমোদন করে কমিশন।

আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক তানজির আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ২০২২ সালের ১৯ মে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ সংস্থাটির সহকারী পরিচালক রাকিবুল হায়াত বাদী হয়ে মামলাটি করেছিলেন।

মামলার আসামিরা হলেন এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি ও পলাতক আসামি প্রশান্ত কুমার হালদার, দিয়া শিপিং লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিবপ্রসাদ ব্যানার্জী, পরিচালক পাপিয়া ব্যানার্জী, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান এম এ হাফিজ, সাবেক চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক অরুণ কুমার কুণ্ডু, অঞ্জন কুমার রায়, মো. মোস্তাইন বিল্লাহ, উজ্জল কুমার নন্দী, সত্য গোপাল পোদ্দার এবং এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহরিয়ার।

তদন্তে আরও ছয়জনের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায় দুদক। তাঁরা হলেন ইটা অ্যান্ড টাইলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম নওশেরুল ইসলাম, দিয়া অয়েল লিমিটেডের এমডি বাসুদেব ব্যানার্জী, পরিচালক পূজা ব্যানার্জী, এমএসটি মেরিন সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেডার্স লিমিটেডের পরিচালক অমল চন্দ্র দাস, মমতাজ বেগম এবং বিডিএস অ্যাডজাস্টার্সের চিফ এক্সিকিউটিভ ইবনে মোফাজ্জল বারকি।

আসামিদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণা ও জালজালিয়াতির মাধ্যমে এফএএস (ফাস) ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে অবৈধ উপায়ে ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠান দিয়া শিপিং লিমিটেডের নামে ঋণ হিসেবে ৪৪ কোটি টাকা গ্রহণ করে আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বর্তমান মামলার অন্যতম আসামি এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক এম ডি রাসেল শাহরিয়ারকে ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে একটি টিম মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে এই মামলায় তাঁকে কারাগারে পাঠায়।

কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার অশোকনগরে গা ঢাকা দিয়েছিলেন বাংলাদেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা পি কে হালদার। তিনি শিবশংকর হালদার নামে নিজেকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতেন।

২০২২ সালের ১৪ মে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হাতে ধরা পড়েন তিনি। তাঁর সঙ্গে গ্রেপ্তার হন আরও পাঁচজন। পরে প্রশান্ত কুমার ওরফে পি কে হালদারসহ ছয়জনকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। বর্তমানে পি কে হালদার ভারতের কারাগারে রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদি হত্যা মামলার তদন্ত-বিচারকাজে আইনি পরামর্শক হলেন সমাজী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এহসানুল হক সমাজী। ফাইল ছবি
এহসানুল হক সমাজী। ফাইল ছবি

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যা মামলার তদন্ত ও বিচারের সময় প্রসিকিউশন টিমকে আইনি পরামর্শ দিতে এহসানুল হক সমাজীকে স্পেশাল প্রসিকিউটর অ্যাডভাইজরের দায়িত্ব দিয়েছে সরকার।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর সমাজীকে অ্যাটর্নি জেনারেলের পদমর্যাদার সুবিধায় ওই দায়িত্ব দিয়ে আজ সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইন-১ শাখা।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ১২ ডিসেম্বর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনী প্রচারণাকালে ইনকিলাব মঞ্চের নেতা ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদি আততায়ীর গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হন। পরে ১৮ ডিসেম্বর তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। তাঁর গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে ঢাকা মহানগরীর পল্টন থানায় ১৪ ডিসেম্বর মামলা হয়েছে। ডিএমপির অধীনে এ মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় মামলাটি দ্রুত তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

হাদি হত্যাকাণ্ডের মামলা তদন্তকালে তদন্ত কর্মকর্তা বা তদন্তসংশ্লিষ্টদের এবং পরে আদালতে বিচারকালে বিচারসংশ্লিষ্ট প্রসিকিউশন টিমকে প্রয়োজনীয় আইনি পরামর্শ দেওয়ার জন্য এহসানুল হক সমাজীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এখন র‍্যাপিড পাস রিচার্জ করা যাবে মোবাইল অ্যাপে

তৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা 
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৪৬
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মেট্রোর র‍্যাপিড পাস ও এমআরটি পাস কার্ড গত মাস থেকে অনলাইনে রিচার্জের সুবিধা চালু হয়েছে। ফলে যাত্রীরা ঘরে বসেই মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার ব্যবহার করে র‍্যাপিড পাসের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে অনলাইনে রিচার্জ করতে পারছেন। এবার সেই সেবাকে আরও সহজ ও ব্যবহারবান্ধব করতে র‍্যাপিড পাসের জন্য একটি অ্যাপ প্রস্তুত করেছে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে র‍্যাপিড পাস ও এমআরটি পাস কার্ড ব্যবহারকারীদের জন্য র‍্যাপিড পাস অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইন রিচার্জ সুবিধা চালু করা হচ্ছে।

ডিটিসিএ সূত্র জানিয়েছে, এক মাস ধরে র‍্যাপিড পাস অ্যাপটি নিয়ে কাজ করছে সংস্থাটি। অ্যাপটি তৈরি করে ইতিমধ্যে গুগলের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে গুগল বিভিন্ন ধাপে অ্যাপটির পরীক্ষা–নিরীক্ষা চালাচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার আজ সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, র‍্যাপিড পাস অ্যাপটি মোটামুটি প্রস্তুত। আগামী দুই–এক দিনের মধ্যে এটি জনগণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এতে যাত্রীদের আরও বেশি সুবিধা হবে।

অ্যাপটি ব্যবহারের নিয়ম

ডিটিসিএ সূত্র জানায়, র‍্যাপিড পাস অ্যাপ ব্যবহার করতে হলে যেসব গ্রাহক ইতিমধ্যে rapidpass.com.bd ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করেছেন, তাঁরা একই ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে অ্যাপে লগইন করতে পারবেন। লগইনের পর ব্যবহারকারী ১০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নির্ধারিত অ্যামাউন্ট সেট করে রিচার্জের জন্য প্রসেস দিতে পারবেন। এ সময় ব্যাংকের কার্ডের পাশাপাশি বিকাশ ও নগদের মাধ্যমেও সহজে রিচার্জ করা যাবে।

অনলাইনে রিচার্জ সম্পন্ন হওয়ার পর র‍্যাপিড পাস বা এমআরটি পাস কার্ডটি মেট্রো স্টেশনে থাকা এভিএমে (অ্যাড ভ্যালু মেশিন) ট্যাগ করলেই রিচার্জ করা অর্থ কার্ডে অ্যাকটিভ হয়ে যাবে। পাশাপাশি অ্যাপের মাধ্যমে কার্ডে থাকা বর্তমান ব্যালেন্স, কোথায় কোথায় ভ্রমণ করা হয়েছে—এসব বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে। একই সঙ্গে যদি ব্যবহারকারীর মোবাইলে নিয়ার–ফিল্ড কমিউনিকেশন (এনএফসি) সুবিধা থাকে, তাহলে মোবাইলের নিচে র‍্যাপিড পাস কার্ড ধরলেই অ্যাপের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্ডে থাকা টাকার পরিমাণ মোবাইলের স্ক্রিনে দেখা যাবে।

ডিটিসিএ জানিয়েছে, র‍্যাপিড পাসের ওয়েবসাইট ও অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইন রিচার্জের সুবিধা নিশ্চিত করতে মেট্রোর ১৬টি স্টেশনে দুটি করে মোট ৩২টি এভিএম বসানো হয়েছে। যাত্রীরা অনলাইনে রিচার্জ করার পর স্টেশনে থাকা এভিএম মেশিনে কার্ড স্পর্শ করলেই রিচার্জ সক্রিয় হয়ে যাবে।

ডিটিসিএ সূত্র অনুযায়ী, বর্তমানে প্রায় ১৭ লাখ গ্রাহক র‍্যাপিড পাস ও এমআরটি পাস ব্যবহার করছেন। এর মধ্যে ইতিমধ্যে ২ লাখ ৩০ হাজার গ্রাহক rapidpass.com.bd ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করেছেন, অর্থাৎ তাঁরা অনলাইনে রিচার্জ সুবিধা ব্যবহার করছেন।

ডিটিসিএ কর্মকর্তারা জানান, যাত্রীদের সময় ও ঝামেলা কমাতেই অ্যাপের মাধ্যমে রিচার্জ সুবিধা চালু করা হচ্ছে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে সহজেই অর্থ যোগ করা যাবে, ফলে যাতায়াত আরও নিরবচ্ছিন্ন হবে। মেট্রোরেল চালুর পর থেকে যাত্রীরা স্বল্প সময়ে র‍্যাপিড পাস ব্যবহার করে যাতায়াতের সুবিধা পাচ্ছেন। অ্যাপ ব্যবহার করে অনলাইন রিচার্জ যুক্ত হওয়ায় ডিজিটাল সেবার পরিধি আরও বাড়বে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৫ নভেম্বর মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার থেকে র‍্যাপিড পাসের ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইন রিচার্জ সেবা চালু করা হয়েছিল। সেই সময় প্রধান উপদেষ্টার সড়ক, সেতু ও রেলযোগাযোগবিষয়ক বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত