Ajker Patrika

ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ: উচ্চকক্ষে অনাগ্রহী বিএনপি

  • উচ্চকক্ষের আলোচনা বাদ দেওয়ার প্রস্তাব বিএনপির।
  • সংখ্যানুপাতিকে উচ্চকক্ষের প্রস্তাবে অনড় জামায়াত-এনসিপিসহ ২০টির বেশি দল।
  • আগামী সপ্তাহের সংলাপে সিদ্ধান্ত জানাবে কমিশন।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৬ জুলাই ২০২৫, ১৫: ৩৭
যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের বৈঠক। ছবি: প্রেস উইং
যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের বৈঠক। ছবি: প্রেস উইং

বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা- সম্পন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সমন্বয়ে আইন সভায় উচ্চকক্ষের প্রবর্তনের কথা বলা আছে বিএনপির ৩১ দফায়। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে অংশ নেওয়া অন্য দলগুলোও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের পক্ষে। কিন্তু জট লেগেছে উচ্চকক্ষের নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে। এ নিয়ে কমিশনে চার দিন আলোচনা করেও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য সমাধানে আসা যায়নি। এ অবস্থায় উচ্চকক্ষ নিয়ে আলোচনা পরিত্যক্ত ঘোষণার প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি।

একটি সূত্র জানিয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার সংলাপ চলাকালে দুপুর ১২টার পর বিএনপির পক্ষ থেকে অনানুষ্ঠানিকভাবে উচ্চকক্ষের আলোচনা পরিত্যক্ত ঘোষণার প্রস্তাব দেওয়া হয়। জবাবে কমিশন তাদের ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিতে বলেছে।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপে গতকাল ১৪তম দিনের আলোচনা হয়। আলোচনার অন্যতম বিষয় ছিল দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ। সংলাপে অংশ নেওয়া অধিকাংশ দলই উচ্চকক্ষ প্রবর্তন একমত হলেও সেটির নির্বাচনপ্রক্রিয়া নিয়ে দেখা দেয় মতভিন্নতা।

উচ্চকক্ষ ছাড়াও দুটি বিষয় নিয়ে বিএনপির সঙ্গে মতের বড় অনৈক্য থেকে গেছে অন্য দলগুলোর। এর একটি হলো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় নিয়োগ প্রক্রিয়া, অন্যটি প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা। জামায়াত, এনসিপিসহ অধিকাংশ দল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় নিয়োগ কীভাবে হবে তা সংবিধানে নির্ধারণ করে দেওয়ার পক্ষে। কিন্তু বিএনপি এটি চাইছে না। অন্য দলগুলো প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে চাইলেও বিএনপির এতে সাড়া নেই। এ অবস্থায় বেশির ভাগ দলের মতৈক্যের ভিত্তিতে কমিশন একটি মতামত দিতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

বিএনপিসহ সমমনা পাঁচটি দল নিম্নকক্ষের আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষের প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ ২০টির বেশি দল সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি উচ্চকক্ষ নির্বাচনের প্রস্তাবে অনড়। এমন পরিস্থিতিতে বিএনপি উচ্চকক্ষসংক্রান্ত আলোচনা থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অনানুষ্ঠানিকভাবে কমিশনকে উচ্চকক্ষের আলোচনা ‘পরিত্যক্ত’ ঘোষণার প্রস্তাব করেছে দলটি। তবে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী সপ্তাহের সংলাপে উচ্চকক্ষ নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

জানা গেছে, বিএনপি নিম্নকক্ষের আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষ নির্বাচনের প্রস্তাবে অনড় থাকবে। যেহেতু উচ্চকক্ষ প্রবর্তনের প্রস্তাবটি বিএনপির ৩১ দফায় ছিল, তাই দলটি প্রকাশ্য এ নিয়ে বিরোধিতা করবে না। কিন্তু প্রস্তাবটি নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে তারা আর অংশও নেবে না।

উচ্চকক্ষ নিয়ে বিএনপির অবস্থানের দিকে ইঙ্গিত করে গতকাল জামায়াতে ইসলামের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সাংবাদিকদের বলেন, কোনো একটি দল বা তিনটি দল না চাইলে আটকে (উচ্চকক্ষের প্রস্তাব) যাওয়াটা অবিচার (ইনজাস্টিস) হবে, বৈষম্য হবে। কারণ অধিকাংশ তো পক্ষেই আছে। কোনো এক জায়গাতে একটা সমাধান (সলিউশন) দিতে হবে।

এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন অভিযোগ করেন, বিএনপি ও তার মিত্ররা পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠনের বিরোধিতা করছে এবং এই প্রশ্নটিকে আলোচনা থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু মৌলিক সংস্কারের প্রশ্নে আমরা কোনো ছাড় দেব না।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দলগুলোর কাছে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের প্রস্তাব দিয়েছিল, যার নিম্নকক্ষ নির্বাচিত হবে আসনভিত্তিক তথা বিদ্যমান নিয়মে এবং উচ্চকক্ষ হবে ভোটের সংখ্যানুপাতিক (পিআর) হারে। ঐকমত্য কমিশনের এই প্রস্তাব নিয়ে গতকাল মঙ্গলবারসহ মোট চার দিন আলোচনা করা হয়। সিপিবি ও বাসদ ছাড়া সংলাপে অংশ নেওয়া বাকি ২৮টি দল ও জোটের পক্ষ থেকে উচ্চকক্ষের পক্ষে একমত প্রকাশ করা হয়। তবে নির্বাচনপ্রক্রিয়া নিয়ে দলগুলোর মতভিন্নতা দেখা যায়।

বিএনপি ও তাদের সমমনা এনডিএম, লেবার পার্টি, ১২ দলীয় জোট এবং জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের পক্ষ থেকে নিম্নকক্ষের আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষের আসন বণ্টনের কথা বলা হয়। চার দিনের আলোচনায় দলগুলোর অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ বাকি ২১ দল সংখ্যানুপাতিকে উচ্চকক্ষের প্রস্তাব করে। যার মধ্যে কয়েকটি দলের পক্ষ থেকে বলা হয় সংখ্যানুপাতিকে না হলে উচ্চকক্ষের প্রয়োজন নেই, যেটা নিম্নকক্ষের রেপ্লিকা হবে। এলডিপি ৫০ আসন নিম্নকক্ষের আসনের অনুপাতে, ৫০ আসন ভোটের সংখ্যানুপাতে করার প্রস্তাব করে। এখনই উচ্চকক্ষ চান না বলে গতকালের আলোচনায় জানায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম।

বিষয়টি নিয়ে গতকাল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিএনপি তার পুরোনো অবস্থানেই আছে (নিম্নকক্ষের আসন অনুপাতে)।

গতকাল ঐকমত্য কমিশনের সংলাপের আলোচ্য সূচি ছিল দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ, সংবিধান সংশোধন ও সংসদের নারী আসন। তবে শেষেরটি নিয়ে আলোচনা হয়নি। আলোচনায় জামায়াতের পক্ষ থেকে পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের কথা জানান সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ। তিনি বলেন, উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে। সংবিধান সংশোধনে উচ্চকক্ষেরও দুই-তৃতীয়াংশের মতের পক্ষে কথা বলেন তিনি।

হামিদুর রহমান আজাদের বক্তব্যের পরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ ফ্লোর নেবেন কি না জিজ্ঞেস করেন সঞ্চালক মনির হায়দার। এ সময় সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, ‘সালাহউদ্দিন ভাই আগেও এ নিয়ে কথা বলেছেন। এ নিয়ে আমার সঙ্গে আলাদা করে তাঁর কথা হয়েছে।’ উচ্চকক্ষ নিয়ে গত তিন আলোচনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আলোচনার সারাংশ নিয়ে কমিশনকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ নিয়ে কমিশনকে বুধ ও বৃহস্পতিবার আলোচনা করে রোববার উত্তর দিতে হবে।’

গতকালের সংলাপে দুপুরের বিরতির আগেই সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। কমিশনের প্রস্তাবে বলা হয়, নিম্নকক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ, উচ্চকক্ষে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা, সুনির্দিষ্ট বিষয়ে গণভোট। নিম্নকক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ, উচ্চকক্ষে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা, গণভোটের ব্যবস্থা না থাকা এবং উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে পর্যন্ত নিম্নকক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ এবং সুনির্দিষ্ট বিষয়ে গণভোট।

আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, উচ্চকক্ষ গঠিত না হওয়া পর্যন্ত সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে মনে হয় কারও কোনো দ্বিমত নেই। কিছু বিষয়ে গণভোট লাগবে। গণভোটের বিধান আদালতের মাধ্যমে ফেরত এসেছে। এর বাইরে কিছু সংযোজন বিয়োজন করা হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। জামায়াত তাঁর বক্তব্যের সঙ্গে একমত জানায়।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, বিদ্যমান সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার অন্তর্ভুক্তির পর ভবিষ্যতে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে গণভোটের প্রয়োজন হবে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচনী সমঝোতা: এখনো হিসাব মেলাচ্ছে জামায়াত ও এনসিপি

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

নীলফামারীর ৪টি আসন: চমকে দিতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

তীব্র শীতে কাঁপছে মানুষ গুদামে তালাবদ্ধ কম্বল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজার-হাতিয়ায় সমুদ্রে মিসাইল ফায়ারিং পরিচালনা, নৌযান চলাচলে সতর্কতা আইএসপিআরের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৫৭
কক্সবাজার-হাতিয়ায় সমুদ্রে মিসাইল ফায়ারিং পরিচালনা, নৌযান চলাচলে সতর্কতা আইএসপিআরের

২৯ ও ৩০ ডিসেম্বর কক্সবাজার ও হাতিয়ার মধ্যবর্তী সমুদ্র এলাকায় মাছ ধরার নৌকা, ট্রলারসহ সব ধরনের নৌযানকে অবস্থান ও চলাচল এড়িয়ে যেতে বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

আজ শনিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে আইএসপিআর।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আগামী ২৯ ও ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ বাংলাদেশ নৌবাহিনী কর্তৃক কক্সবাজার ও হাতিয়ার মধ্যবর্তী সমুদ্র এলাকায় মিসাইল ফায়ারিং পরিচালিত হবে। এ সময় জানমালের নিরাপত্তায় সকল নৌযান, মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে উক্ত এলাকায় অবস্থান ও চলাচল পরিহার করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচনী সমঝোতা: এখনো হিসাব মেলাচ্ছে জামায়াত ও এনসিপি

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

নীলফামারীর ৪টি আসন: চমকে দিতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

তীব্র শীতে কাঁপছে মানুষ গুদামে তালাবদ্ধ কম্বল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তফসিলের পর চার আসনের সীমানা পরিবর্তন করে ইসির গেজেট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ২৯
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পাবনা ও ফরিদপুর জেলার চারটি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই চার সংসদীয় আসন হলো পাবনা-১, পাবনা-২, ফরিদপুর-২ ও ফরিদপুর-৪। হাইকোর্ট কোর্টের আদেশ অনুযায়ী সীমানায় এই পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিলো ইসি।

আজ শুক্রবার ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন মল্লিক স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

তফসিল ঘোষণার আগে ইসি গাজীপুরের একটি আসন কমিয়ে এবং বাগেরহাটের একটি আসন ফেরত দিয়ে সীমানা পুনর্নির্ধারণ করেছিল কমিশন। এবার তফসিল ঘোষণার পর আরও চারটি আসনের সীমানায় পরিবর্তন আনল। সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলোতে এমন নজির দেখা যায়নি।

সীমানা পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত ইসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার প্রকাশিত গেজেটের তথ্যানুযায়ী, পাবনা-১ আসনের সীমানায় সাঁথিয়া উপজেলা এবং বেড়া উপজেলার বেড়া পৌরসভা, হাটুরিয়া নাকালিয়া ইউনিয়ন, নতুন ভারেঙ্গা ইউনিয়ন, চাকলা ইউনিয়ন ও কৈটোলা ইউনিয়ন অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

পাবনা-২ আসনের সীমানায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সুজানগর উপজেলা এবং উল্লিখিত একটি পৌরসভা ও চারটি ইউনিয়ন (বেড়া পৌরসভা, হাটুরিয়া নাকালিয়া ইউনিয়ন, নতুন ভারেঙ্গা ইউনিয়ন, চাকলা ইউনিয়ন ও কৈটোলা ইউনিয়ন) ব্যতীত বেড়া উপজেলা।

আর ফরিদপুর-২ আসনের সীমানায় নগরকান্দা উপজেলা ও সালথা উপজেলা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ফরিদপুর-৪ আসনের সীমানায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে-ভাঙ্গা উপজেলা, চরভদ্রাসন উপজেলা এবং সদরপুর উপজেলা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচনী সমঝোতা: এখনো হিসাব মেলাচ্ছে জামায়াত ও এনসিপি

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

নীলফামারীর ৪টি আসন: চমকে দিতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

তীব্র শীতে কাঁপছে মানুষ গুদামে তালাবদ্ধ কম্বল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বোরো ধানের মৌসুম: সেচ মৌসুমে জ্বালানিতে টান

  • যেকোনো পরিস্থিতিতে তিন মাসের জ্বালানি মজুত থাকার কথা
  • বিপিসির নথি বলছে, আর ১৩ থেকে ২০ দিনের জ্বালানি আছে
 আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩১
বোরো ধানের মৌসুম: সেচ মৌসুমে জ্বালানিতে টান

বোরো ধানের মৌসুমে দেশে জ্বালানি মজুতে টান পড়েছে। বর্তমান ডিজেলের মজুত একেবারেই তলানিতে রয়েছে। সরকারি তেল বিপণনকারী তিনটি কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলে মজুত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে তিন মাসের জ্বালানি মজুত থাকার কথা থাকলেও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) নথি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বর্তমানে আর ১৩ থেকে ২০ দিনের জ্বালানি তেলের মজুত রয়েছে। যদিও বিপিসির দাবি, দেশে জ্বালানি-সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা নেই।

বিপিসির মজুত প্রতিবেদনে জানা যায়, ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট ডিজেল ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৭ টন মজুত রয়েছে। এর মধ্যে দেশের ২৪টি ডিপোর ট্যাংকে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮২৯ টন মজুত রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন লাইটার জাহাজসহ ট্রানজিটে রয়েছে ৪৯ হাজার ৬৬৮ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১৬ হাজার ৬০১ টন ডিজেল সারা দেশে বিক্রি করা হয়েছে। সে হিসাবে দেখা যায়, বর্তমানে বিপিসির কাছে ২০ দিনের ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে বিপিসি বিভিন্ন ডিপোতে পেট্রল মজুত আছে ২২ হাজার ১১৪ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৬১৮ টন পেট্রল বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে পেট্রল ১৩ দিনের মজুত আছে।

বিপিসির ২৩ ডিসেম্বরের স্টক প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে মোট ২৮ হাজার ২৭০ টন অকটেন মজুত রয়েছে। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৮৮৫ টন অকটেন বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে ১৫ দিনের অকটেন মজুত আছে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিপিসির পরিচালক এ কে এম আজাদুর রহমান জানান, সারা দেশে ২৫ দিনের অকটেন ও পেট্রল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ডিজেল ৩৫ দিনের মজুত রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। দেশে ডিজেলের মজুত কম কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন শুষ্ক মৌসুমে সব জায়গায় বিদ্যুতের ব্যবহার হচ্ছে। তাই ডিজেলের চাহিদা কম।

এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান মেঘনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৫ হাজার ৬৯৫ টন অকটেন মজুত রয়েছে। আর পেট্রল মজুত রয়েছে ৪ হাজার ২৯৫ টন। সারা দেশের ১৭টি ডিপোতে ৯২ হাজার ৮৯৫ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে সরকারি তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৮০ হাজার ২১৩ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ২ হাজার ৯১৪ টন পেট্রল এবং ৪ হাজার ১৮৭ টন অকটেন মজুত রয়েছে। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফতুল্লা, রাজশাহী, হরিয়ান, চিলমারী ডিপোতে কোনো জ্বালানি তেল নাই। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের নাটোর ডিপোতে ৩০ টন, রংপুর ডিপোতে ৫৭ টন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডিপোতে ২ টন ডিজেল রয়েছে।

নাম না প্রকাশে সরকারি তেল বিপণনকারী এক কর্মকর্তা জানান, বিপিসির আমদানি করা জ্বালানি তেলের মজুত আশঙ্কাজনকভাবে কম রয়েছে। ডিজেলের মজুত একবারেই কম। তাঁর মতে ১৩ থেকে ১৫ দিনের জ্বালানি মজুত রয়েছে বর্তমানে।

পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক আসিফ মালিক বলেন, দেশে পর্যাপ্ত জ্বালানি মজুত রয়েছে। সংকটের কোনো আশঙ্কা নেই। নিয়মিতভাবে জ্বালানি তেলের জাহাজ আসা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান।

তবে গাজীপুর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবদুল মোমিন বলেন, দেশে ধান উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে বড় মৌসুম হচ্ছে বর্তমান বোরো মৌসুম। এ সময় প্রায় ৫২ লাখ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়। এই মৌসুমে জ্বালানি-সংকট হলে সেটা দেশের খাদ্য উৎপাদনে ছেদ পড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচনী সমঝোতা: এখনো হিসাব মেলাচ্ছে জামায়াত ও এনসিপি

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

নীলফামারীর ৪টি আসন: চমকে দিতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

তীব্র শীতে কাঁপছে মানুষ গুদামে তালাবদ্ধ কম্বল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজবাড়ীতে গণপিটুনিতে অমৃত মন্ডল নিহতের ঘটনা সাম্প্রদায়িক হামলা নয়: প্রেস উইং

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজবাড়ীতে গণপিটুনিতে অমৃত মন্ডল নিহতের ঘটনা সাম্প্রদায়িক হামলা নয়: প্রেস উইং

রাজবাড়ীর পাংশা থানাধীন এলাকায় গত বুধবার রাতে সংঘটিত একটি দুঃখজনক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।

পুলিশের তথ্য ও প্রাথমিক তদন্ত থেকে প্রতীয়মান হচ্ছে, ঘটনাটি মোটেই সাম্প্রদায়িক হামলা নয়। এটি চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত সহিংস পরিস্থিতির থেকে সৃষ্ট ঘটনা। নিহত ব্যক্তি শীর্ষ সন্ত্রাসী অমৃত মন্ডল ওরফে সম্রাট চাঁদা দাবির উদ্দেশ্যে এলাকায় উপস্থিত হন এবং বিক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতার সঙ্গে সংঘর্ষের একপর্যায়ে প্রাণ হারান। তিনি ইতিপূর্বে ২০২৩ সালে রুজুকৃত হত্যা, চাঁদাবাজির মামলাসহ একাধিক গুরুতর মামলার আসামি ছিলেন। এসব মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সম্রাটের সহযোগী সেলিমকে একটি বিদেশি পিস্তল, ১টি পাইপগানসহ আটক করে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরকার কঠোর নিন্দা জানায়। সরকার সুস্পষ্টভাবে জানাতে চায়, যেকোনো ধরনের আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড, গণপিটুনি বা সহিংসতা সরকার কোনোভাবেই সমর্থন করে না। এ ঘটনায় যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

একই সঙ্গে সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে, একটি মহল নিহত ব্যক্তির ধর্মীয় পরিচয়কে সামনে এনে ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক হামলা হিসেবে উপস্থাপনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসদুদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ ধরনের অপপ্রচার সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে।

সরকারসংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানাচ্ছে এবং বিভ্রান্তিকর, উসকানিমূলক ও সাম্প্রদায়িক বক্তব্য প্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছে।

আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, এ দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার যেকোনো অপচেষ্টা সরকার কঠোরহস্তে দমন করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচনী সমঝোতা: এখনো হিসাব মেলাচ্ছে জামায়াত ও এনসিপি

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

নীলফামারীর ৪টি আসন: চমকে দিতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

তীব্র শীতে কাঁপছে মানুষ গুদামে তালাবদ্ধ কম্বল

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত