কামরুল হাসান

ভারতীয় সিনেমার চিরসবুজ নায়ক দেব আনন্দের ব্যাপারে বোম্বের (মুম্বাই) আদালতের একটি অদ্ভুত নির্দেশনা ছিল, তিনি কালো পোশাক পরে পথে বেরোতে পারবেন না। কারণ, কালো পোশাক পরলে তাঁকে দুর্দান্ত দেখাত। এমনিতেই স্মার্ট, সুপুরুষ তিনি। তার ওপর গায়ের উজ্জ্বল রং আরও ফুটত কালো রঙের বৈপরীত্যে। চোখের সামনে এ রকম ঝকঝকে চেহারা দেখে নারীকুল আকসার দুর্ঘটনা ঘটাত। নিজেকে সামলাতে না পেরে বাড়ির ছাদ অথবা বারান্দা থেকে ঝাঁপ দিয়েছেন, এমন নজিরও ছিল। সেই জনপ্রিয়তার লহর ঠেকাতে শেষ পর্যন্ত আদালতকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল।
এ তো গেল ওপারে দেব আনন্দের গল্প। এপারে, বাংলাদেশে, এক নায়িকাকেও কম নাকাল হতে হয়নি। এক পাগল ভক্তের উপদ্রব থেকে নিজেকে রক্ষা করতে কিছুদিন তিনি আড়ালে চলে যান, এরপর গোপনে চলাফেরা শুরু করেন। এতেও কাজ না হওয়ায় নিজের বাড়ি ছেড়ে দিয়ে ওঠেন ভাড়া বাড়িতে। তারপরও নিস্তার নেই, শেষ পর্যন্ত সেই ভক্তের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে তাঁকে জেলে পাঠান।
আসলে তারকাখ্যাতির বিড়ম্বনাও অনেক। তাঁরা কোথায় যাচ্ছেন, কী করছেন, সেসব নিয়ে কোনো কোনো ভক্তের আগ্রহ সীমা ছাড়িয়ে যায়। তারকাদের ব্যক্তিগত জীবনের ছোট-বড় বহু ঘটনাও তখন চলে আসে সবার সামনে। যাঁকে নিয়ে এতক্ষণের এই অবতারণা, তিনি আর কেউ নন, এপারের কিংবদন্তি নায়িকা, সত্যজিৎ রায়ের অনঙ্গ বউ ববিতা।
আজকের গল্পটা শুরুর আগে ববিতার ঠিকুজিটা একটু ঝালাই করে নিই। তাঁর পুরো নাম ফরিদা আক্তার পপি। জন্ম ১৯৫৩ সালের ৩০ জুলাই, যশোরে। কিন্তু বড় হয়েছেন পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ায়। বাবা নিজামুদ্দীন আতাউর ছিলেন সরকারি চাকুরে, মা বেগম জাহানারা চিকিৎসক। ১৯৬৮ সালে পপির অভিনয়জীবনের শুরু। বড় বোন সুচন্দার স্বামী চলচ্চিত্র নির্মাতা জহির রায়হানের উৎসাহে ‘সংসার’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিনয় জগতে নাম লেখানো। সেই ছবিতে নায়করাজ রাজ্জাক ছিলেন তাঁর বাবা আর বোন সুচন্দা অভিনয় করেন মায়ের ভূমিকায়। ‘সংসার’ ছবির পর জহির রায়হান ‘শেষ পর্যন্ত’ সিনেমায় নায়িকা করেন পপিকে। ১৯৬৯ সালের ১৪ আগস্ট সিনেমাটি মুক্তি পায়। ওই দিনই পপির মা মারা যান। তখনো তিনি ববিতা হয়ে ওঠেননি, পরিচিতি পপি নামেই। ‘সংসার’-এর বছর দুয়েক পর জহির রায়হানের পরের সিনেমা ‘জ্বলতে সুরজ কি নিচে’-এর প্রযোজক আফজাল চৌধুরী আর তাঁর স্ত্রী মিলে সিনেমার নায়িকার নাম দেন ববিতা। এরপর দিনে দিনে তিনি হয়ে ওঠেন হার্টথ্রব নায়িকা, বাংলা সিনেমার প্রাণশক্তি।
জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকার সময় ববিতা চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী ইফতেখার আলমকে বিয়ে করেন। তাঁদের ঘর আলো করে আসে একমাত্র ছেলে অনিক। ১৯৯৩ সালে অনিকের বয়স যখন ৩, তখনই স্বামী ইফতেখার আলম মারা যান। সেই থেকে ছেলে অনিককে ঘিরে পাক খায় ববিতার জীবন। অনিক এখন কানাডায় ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা শেষ করে একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। ববিতা বছরের বেশির ভাগ সময় কানাডায় কাটান, ছেলের সঙ্গে।
সেই ববিতা ২০০১ সালের ২৮ অক্টোবর রাতে গুলশান থানায় এলেন এক ভক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে। গুলশান থানার ওসি ছিলেন শরিফুল হক সিদ্দিকী। রাতের বেলা ববিতাকে থানায় দেখে তিনি ভূত দেখার মতো চমকে উঠলেন। ববিতা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়ে তাঁকে বললেন, এস এম জহিরুল আলম নামের এক ভক্ত তাঁর জীবন বিষিয়ে তুলেছেন। দিনে-রাতে লোকটি তাঁকে ফলো করছেন। বাড়ির আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকছেন, সময়-অসময়ে ফোন করে উল্টোপাল্টা কথা বলছেন। গৃহকর্মীদের ডেকে দামি উপহার পাঠাচ্ছেন। তাঁর অত্যাচারে বাসায় কোনো গৃহকর্মীও থাকতে পারছে না।
ববিতার সেই অভিযোগের একটি কপি পরদিন আমার হাতেও আসে। তাতে ববিতা বলেন, দুই বছর ধরে লোকটার সঙ্গে তাঁর পরিচয়। প্রথমে ভক্ত পরিচয় দিয়ে বাসায় ফোন করেন। শুরুতে ববিতা মনে করেছিলেন আর দশজন ভক্তের মতোই। কিন্তু ধীরে ধীরে লোকটি বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। একদিন ফোন করে ববিতাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। ববিতা তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর লোকটি ববিতার ছোট বোন চম্পার স্বামী সহিদুল ইসলাম জিন্নার সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর কাছে গিয়েও বিয়ের প্রস্তাব দেন। এতেও কাজ হয়নি। একপর্যায়ে ববিতার ভাই পাইলট ইকবালের সঙ্গে দেখা করেন। পুরো পরিবারে এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর লোকটি একটি দৈনিকে সাক্ষাৎকার দিয়ে বলেন, ববিতার সঙ্গে তাঁর বিয়ে পাকাপাকি হয়ে গেছে। তিনি ববিতার সঙ্গে কলকাতা বেড়াতে যাচ্ছেন। বিদেশে ঘোরাঘুরির খরচের জন্য ববিতাকে ১০ লাখ টাকাও দিয়েছেন তিনি।
ববিতা তাঁর অভিযোগে আরও বলেন, লোকটা এখন তাঁর বাসার পাশের রাস্তায় দিনরাত লোকজন নিয়ে বসে থাকছেন। বাড়ি থেকে বের হলেই তাঁকে ফলো করছেন। লোকটার অত্যাচারে তিনি নিজের বাসা ছেড়ে অন্য একটি ভাড়া বাসায় উঠেছেন। এরপর ববিতার নিজস্ব খালি বাসাটি ভাড়া নেওয়ার জন্য লোকটি নানা ফন্দি আঁটতে থাকেন। পরে ববিতা অনেক কৌশলে বাসাটি ইউএনডিপিকে ভাড়া দেন। তারপরও লোকটি পিছু ছাড়েননি। এমনকি আজ তিনি থানায় আসার সময় দেখেন, লোকটাও থানার একটু দূরে দাঁড়িয়ে। ববিতার সেই অভিযোগের ভিত্তিতে নারী নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয় গুলশান থানায়।
মামলাটির তদন্ত করছিলেন গুলশান থানার সেকেন্ড অফিসার মকফুবার রহমান সুইট। তিনি এখন এসপিবিএনে গণভবনে কর্মরত। সুইট একদিন আমাকে বললেন, ববিতার ভক্ত এবং এই মামলার আসামি এস এম জহিরুল আলম সাধারণ কেউ নন, তিনি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের পরিচালক। এর আগে তিনি শিল্প ঋণ সংস্থায় বড় পদে ছিলেন। লোকটি তিন সন্তানের জনক, তাঁর অনেক সহায়সম্পদও আছে। আমার মনে খটকা লাগল, এ রকম একজন মানুষ কেন এই কাণ্ড করতে যাবেন!
সুইটের কাছ থেকে আসামির হদিস জানার পর গেলাম সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে। সেখানকার কর্মকর্তারা বললেন, জহিরুল তিন দিন ধরে অফিসে আসছেন না। তাঁর পিয়নের কাছ থেকে নম্বর নিয়ে গেলাম লালমাটিয়ায়, জহিরুল আলমের বাসায়। তিনি বাসাতেই ছিলেন। পরিচয় পেয়ে কথাও বললেন। নিজের পড়াশোনা, পেশা, পরিবার নিয়ে কথা বললেন। জহিরুল আলমের বাড়ি শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে। ঢাকায় বেশ কয়েকটি বাড়ির মালিক। তিন মেয়ে আর স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন লালমাটিয়ায় নিজের বাড়িতে। তিনি এমনভাবে কথা বলছেন, যেন কোনো কিছুই হয়নি। আমাকে বারবার বললেন, ববিতাকে বিয়ে করার ব্যাপারে তাঁর প্রথম স্ত্রী অনুমতি দিয়েছেন। সেটা কাগজে লেখাও আছে। আমি বললাম, এটা নিয়ে ববিতার সঙ্গে আপনার আদৌ কোনো কথা হয়েছে? তিনি বললেন, ‘স্বামী মারা যাওয়ার পর ববিতা একাই থাকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমার ভালোবাসার কাছে হেরে গিয়ে বিয়ে করতে রাজি হয়েছেন।’ চার বছর ধরে তাঁদের পরিচয়, কমপক্ষে ২০ বার দেখাও করেছেন। এর মধ্যে এক সপ্তাহ আগে লোক পাঠিয়ে ১০ লাখ টাকাও নিয়েছেন ববিতা। জহিরুল আলম এমনভাবে বলছেন যে সত্য-মিথ্যার ফারাক বোঝা কঠিন।
যাহোক, ৩ নভেম্বর (২০০১) জহিরুল আলমকে গুলশান থানা-পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তাঁকে রিমান্ডেও নেওয়া হয়। আমাকে তিনি যা বলেছিলেন, রিমান্ডে এসে সেই একই কথা বলেন। রিমান্ডে থাকার সময় একবার আমি তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলাম। দেখলাম, তিনি খুব স্বাভাবিক, তাঁর কথায় কোনো নড়চড় নেই।
জহিরুলকে কারাগারে পাঠানো হলো। কিছুদিন পর তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রও দেওয়া হয়। সেই মামলার তদন্তকারী সুইটের সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার কথা হলো, সুইট বললেন, জহিরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাদী ববিতা কোনো দিন আদালতে যাননি। বাদীর অনুপস্থিতিতে মামলা থেকে অব্যাহতি পান জহিরুল। এরপর জহিরুলের আর কোনো খোঁজ জানেন না সুইট। লোকটা কত দিন জেলে ছিলেন, তা-ও আর বলতে পারলেন না।
সেই ঘটনার রিপোর্ট করতে গিয়ে আমি দুবার ববিতার সঙ্গে কথা বলেছিলাম। বৃহস্পতিবার আবার যোগাযোগের চেষ্টা করে শুনলাম, তিনি কানাডায় ছেলের কাছে আছেন।
অনেক দিন পর সেই ঘটনা নিয়ে লিখতে গিয়ে একটা মজার অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ে গেল। সেদিন লোকটার সঙ্গে কথা বলে লালমাটিয়ার বাসা থেকে বেরিয়ে আসার সময় তিনি আমার হাত ধরে খুব কাকুতি-মিনতি করে বললেন, ‘ভাই, আমি সত্যিই ববিতাকে খুব ভালোবাসি। এর জন্য জেল হলেও সেটা মেনে নেব।’
জহিরুল আলমকে আমার খুব অদ্ভুত মনে হয়েছিল, কিছুটা বেয়াড়াও। আজ এত বছর পর মনে হলো, মানুষের মন বড় বিচিত্র, বড়ই নিয়ন্ত্রণহীন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা ভাঙে আবার জোড়া লাগে। সেই মন কখন, কোন দিকে বাঁক নেয়, তা বোধ হয় সৃষ্টিকর্তা ছাড়া আর কেউই জানেন না।
আরও পড়ুন:

ভারতীয় সিনেমার চিরসবুজ নায়ক দেব আনন্দের ব্যাপারে বোম্বের (মুম্বাই) আদালতের একটি অদ্ভুত নির্দেশনা ছিল, তিনি কালো পোশাক পরে পথে বেরোতে পারবেন না। কারণ, কালো পোশাক পরলে তাঁকে দুর্দান্ত দেখাত। এমনিতেই স্মার্ট, সুপুরুষ তিনি। তার ওপর গায়ের উজ্জ্বল রং আরও ফুটত কালো রঙের বৈপরীত্যে। চোখের সামনে এ রকম ঝকঝকে চেহারা দেখে নারীকুল আকসার দুর্ঘটনা ঘটাত। নিজেকে সামলাতে না পেরে বাড়ির ছাদ অথবা বারান্দা থেকে ঝাঁপ দিয়েছেন, এমন নজিরও ছিল। সেই জনপ্রিয়তার লহর ঠেকাতে শেষ পর্যন্ত আদালতকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল।
এ তো গেল ওপারে দেব আনন্দের গল্প। এপারে, বাংলাদেশে, এক নায়িকাকেও কম নাকাল হতে হয়নি। এক পাগল ভক্তের উপদ্রব থেকে নিজেকে রক্ষা করতে কিছুদিন তিনি আড়ালে চলে যান, এরপর গোপনে চলাফেরা শুরু করেন। এতেও কাজ না হওয়ায় নিজের বাড়ি ছেড়ে দিয়ে ওঠেন ভাড়া বাড়িতে। তারপরও নিস্তার নেই, শেষ পর্যন্ত সেই ভক্তের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে তাঁকে জেলে পাঠান।
আসলে তারকাখ্যাতির বিড়ম্বনাও অনেক। তাঁরা কোথায় যাচ্ছেন, কী করছেন, সেসব নিয়ে কোনো কোনো ভক্তের আগ্রহ সীমা ছাড়িয়ে যায়। তারকাদের ব্যক্তিগত জীবনের ছোট-বড় বহু ঘটনাও তখন চলে আসে সবার সামনে। যাঁকে নিয়ে এতক্ষণের এই অবতারণা, তিনি আর কেউ নন, এপারের কিংবদন্তি নায়িকা, সত্যজিৎ রায়ের অনঙ্গ বউ ববিতা।
আজকের গল্পটা শুরুর আগে ববিতার ঠিকুজিটা একটু ঝালাই করে নিই। তাঁর পুরো নাম ফরিদা আক্তার পপি। জন্ম ১৯৫৩ সালের ৩০ জুলাই, যশোরে। কিন্তু বড় হয়েছেন পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ায়। বাবা নিজামুদ্দীন আতাউর ছিলেন সরকারি চাকুরে, মা বেগম জাহানারা চিকিৎসক। ১৯৬৮ সালে পপির অভিনয়জীবনের শুরু। বড় বোন সুচন্দার স্বামী চলচ্চিত্র নির্মাতা জহির রায়হানের উৎসাহে ‘সংসার’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিনয় জগতে নাম লেখানো। সেই ছবিতে নায়করাজ রাজ্জাক ছিলেন তাঁর বাবা আর বোন সুচন্দা অভিনয় করেন মায়ের ভূমিকায়। ‘সংসার’ ছবির পর জহির রায়হান ‘শেষ পর্যন্ত’ সিনেমায় নায়িকা করেন পপিকে। ১৯৬৯ সালের ১৪ আগস্ট সিনেমাটি মুক্তি পায়। ওই দিনই পপির মা মারা যান। তখনো তিনি ববিতা হয়ে ওঠেননি, পরিচিতি পপি নামেই। ‘সংসার’-এর বছর দুয়েক পর জহির রায়হানের পরের সিনেমা ‘জ্বলতে সুরজ কি নিচে’-এর প্রযোজক আফজাল চৌধুরী আর তাঁর স্ত্রী মিলে সিনেমার নায়িকার নাম দেন ববিতা। এরপর দিনে দিনে তিনি হয়ে ওঠেন হার্টথ্রব নায়িকা, বাংলা সিনেমার প্রাণশক্তি।
জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকার সময় ববিতা চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী ইফতেখার আলমকে বিয়ে করেন। তাঁদের ঘর আলো করে আসে একমাত্র ছেলে অনিক। ১৯৯৩ সালে অনিকের বয়স যখন ৩, তখনই স্বামী ইফতেখার আলম মারা যান। সেই থেকে ছেলে অনিককে ঘিরে পাক খায় ববিতার জীবন। অনিক এখন কানাডায় ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা শেষ করে একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। ববিতা বছরের বেশির ভাগ সময় কানাডায় কাটান, ছেলের সঙ্গে।
সেই ববিতা ২০০১ সালের ২৮ অক্টোবর রাতে গুলশান থানায় এলেন এক ভক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে। গুলশান থানার ওসি ছিলেন শরিফুল হক সিদ্দিকী। রাতের বেলা ববিতাকে থানায় দেখে তিনি ভূত দেখার মতো চমকে উঠলেন। ববিতা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়ে তাঁকে বললেন, এস এম জহিরুল আলম নামের এক ভক্ত তাঁর জীবন বিষিয়ে তুলেছেন। দিনে-রাতে লোকটি তাঁকে ফলো করছেন। বাড়ির আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকছেন, সময়-অসময়ে ফোন করে উল্টোপাল্টা কথা বলছেন। গৃহকর্মীদের ডেকে দামি উপহার পাঠাচ্ছেন। তাঁর অত্যাচারে বাসায় কোনো গৃহকর্মীও থাকতে পারছে না।
ববিতার সেই অভিযোগের একটি কপি পরদিন আমার হাতেও আসে। তাতে ববিতা বলেন, দুই বছর ধরে লোকটার সঙ্গে তাঁর পরিচয়। প্রথমে ভক্ত পরিচয় দিয়ে বাসায় ফোন করেন। শুরুতে ববিতা মনে করেছিলেন আর দশজন ভক্তের মতোই। কিন্তু ধীরে ধীরে লোকটি বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। একদিন ফোন করে ববিতাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। ববিতা তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর লোকটি ববিতার ছোট বোন চম্পার স্বামী সহিদুল ইসলাম জিন্নার সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর কাছে গিয়েও বিয়ের প্রস্তাব দেন। এতেও কাজ হয়নি। একপর্যায়ে ববিতার ভাই পাইলট ইকবালের সঙ্গে দেখা করেন। পুরো পরিবারে এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর লোকটি একটি দৈনিকে সাক্ষাৎকার দিয়ে বলেন, ববিতার সঙ্গে তাঁর বিয়ে পাকাপাকি হয়ে গেছে। তিনি ববিতার সঙ্গে কলকাতা বেড়াতে যাচ্ছেন। বিদেশে ঘোরাঘুরির খরচের জন্য ববিতাকে ১০ লাখ টাকাও দিয়েছেন তিনি।
ববিতা তাঁর অভিযোগে আরও বলেন, লোকটা এখন তাঁর বাসার পাশের রাস্তায় দিনরাত লোকজন নিয়ে বসে থাকছেন। বাড়ি থেকে বের হলেই তাঁকে ফলো করছেন। লোকটার অত্যাচারে তিনি নিজের বাসা ছেড়ে অন্য একটি ভাড়া বাসায় উঠেছেন। এরপর ববিতার নিজস্ব খালি বাসাটি ভাড়া নেওয়ার জন্য লোকটি নানা ফন্দি আঁটতে থাকেন। পরে ববিতা অনেক কৌশলে বাসাটি ইউএনডিপিকে ভাড়া দেন। তারপরও লোকটি পিছু ছাড়েননি। এমনকি আজ তিনি থানায় আসার সময় দেখেন, লোকটাও থানার একটু দূরে দাঁড়িয়ে। ববিতার সেই অভিযোগের ভিত্তিতে নারী নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয় গুলশান থানায়।
মামলাটির তদন্ত করছিলেন গুলশান থানার সেকেন্ড অফিসার মকফুবার রহমান সুইট। তিনি এখন এসপিবিএনে গণভবনে কর্মরত। সুইট একদিন আমাকে বললেন, ববিতার ভক্ত এবং এই মামলার আসামি এস এম জহিরুল আলম সাধারণ কেউ নন, তিনি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের পরিচালক। এর আগে তিনি শিল্প ঋণ সংস্থায় বড় পদে ছিলেন। লোকটি তিন সন্তানের জনক, তাঁর অনেক সহায়সম্পদও আছে। আমার মনে খটকা লাগল, এ রকম একজন মানুষ কেন এই কাণ্ড করতে যাবেন!
সুইটের কাছ থেকে আসামির হদিস জানার পর গেলাম সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে। সেখানকার কর্মকর্তারা বললেন, জহিরুল তিন দিন ধরে অফিসে আসছেন না। তাঁর পিয়নের কাছ থেকে নম্বর নিয়ে গেলাম লালমাটিয়ায়, জহিরুল আলমের বাসায়। তিনি বাসাতেই ছিলেন। পরিচয় পেয়ে কথাও বললেন। নিজের পড়াশোনা, পেশা, পরিবার নিয়ে কথা বললেন। জহিরুল আলমের বাড়ি শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে। ঢাকায় বেশ কয়েকটি বাড়ির মালিক। তিন মেয়ে আর স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন লালমাটিয়ায় নিজের বাড়িতে। তিনি এমনভাবে কথা বলছেন, যেন কোনো কিছুই হয়নি। আমাকে বারবার বললেন, ববিতাকে বিয়ে করার ব্যাপারে তাঁর প্রথম স্ত্রী অনুমতি দিয়েছেন। সেটা কাগজে লেখাও আছে। আমি বললাম, এটা নিয়ে ববিতার সঙ্গে আপনার আদৌ কোনো কথা হয়েছে? তিনি বললেন, ‘স্বামী মারা যাওয়ার পর ববিতা একাই থাকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমার ভালোবাসার কাছে হেরে গিয়ে বিয়ে করতে রাজি হয়েছেন।’ চার বছর ধরে তাঁদের পরিচয়, কমপক্ষে ২০ বার দেখাও করেছেন। এর মধ্যে এক সপ্তাহ আগে লোক পাঠিয়ে ১০ লাখ টাকাও নিয়েছেন ববিতা। জহিরুল আলম এমনভাবে বলছেন যে সত্য-মিথ্যার ফারাক বোঝা কঠিন।
যাহোক, ৩ নভেম্বর (২০০১) জহিরুল আলমকে গুলশান থানা-পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তাঁকে রিমান্ডেও নেওয়া হয়। আমাকে তিনি যা বলেছিলেন, রিমান্ডে এসে সেই একই কথা বলেন। রিমান্ডে থাকার সময় একবার আমি তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলাম। দেখলাম, তিনি খুব স্বাভাবিক, তাঁর কথায় কোনো নড়চড় নেই।
জহিরুলকে কারাগারে পাঠানো হলো। কিছুদিন পর তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রও দেওয়া হয়। সেই মামলার তদন্তকারী সুইটের সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার কথা হলো, সুইট বললেন, জহিরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাদী ববিতা কোনো দিন আদালতে যাননি। বাদীর অনুপস্থিতিতে মামলা থেকে অব্যাহতি পান জহিরুল। এরপর জহিরুলের আর কোনো খোঁজ জানেন না সুইট। লোকটা কত দিন জেলে ছিলেন, তা-ও আর বলতে পারলেন না।
সেই ঘটনার রিপোর্ট করতে গিয়ে আমি দুবার ববিতার সঙ্গে কথা বলেছিলাম। বৃহস্পতিবার আবার যোগাযোগের চেষ্টা করে শুনলাম, তিনি কানাডায় ছেলের কাছে আছেন।
অনেক দিন পর সেই ঘটনা নিয়ে লিখতে গিয়ে একটা মজার অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ে গেল। সেদিন লোকটার সঙ্গে কথা বলে লালমাটিয়ার বাসা থেকে বেরিয়ে আসার সময় তিনি আমার হাত ধরে খুব কাকুতি-মিনতি করে বললেন, ‘ভাই, আমি সত্যিই ববিতাকে খুব ভালোবাসি। এর জন্য জেল হলেও সেটা মেনে নেব।’
জহিরুল আলমকে আমার খুব অদ্ভুত মনে হয়েছিল, কিছুটা বেয়াড়াও। আজ এত বছর পর মনে হলো, মানুষের মন বড় বিচিত্র, বড়ই নিয়ন্ত্রণহীন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা ভাঙে আবার জোড়া লাগে। সেই মন কখন, কোন দিকে বাঁক নেয়, তা বোধ হয় সৃষ্টিকর্তা ছাড়া আর কেউই জানেন না।
আরও পড়ুন:

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
২ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১১ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

ভারতীয় সিনেমার চিরসবুজ নায়ক দেব আনন্দের ব্যাপারে বোম্বের (মুম্বাই) আদালতের একটি অদ্ভুত নির্দেশনা ছিল, তিনি কালো পোশাক পরে পথে বেরোতে পারবেন না। কারণ, কালো পোশাক পরলে তাঁকে দুর্দান্ত দেখাত। এমনিতেই স্মার্ট, সুপুরুষ তিনি। তার ওপর গায়ের উজ্জ্বল রং আরও ফুটত
১৭ ডিসেম্বর ২০২২
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
২ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১১ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

ভারতীয় সিনেমার চিরসবুজ নায়ক দেব আনন্দের ব্যাপারে বোম্বের (মুম্বাই) আদালতের একটি অদ্ভুত নির্দেশনা ছিল, তিনি কালো পোশাক পরে পথে বেরোতে পারবেন না। কারণ, কালো পোশাক পরলে তাঁকে দুর্দান্ত দেখাত। এমনিতেই স্মার্ট, সুপুরুষ তিনি। তার ওপর গায়ের উজ্জ্বল রং আরও ফুটত
১৭ ডিসেম্বর ২০২২
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১১ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

ভারতীয় সিনেমার চিরসবুজ নায়ক দেব আনন্দের ব্যাপারে বোম্বের (মুম্বাই) আদালতের একটি অদ্ভুত নির্দেশনা ছিল, তিনি কালো পোশাক পরে পথে বেরোতে পারবেন না। কারণ, কালো পোশাক পরলে তাঁকে দুর্দান্ত দেখাত। এমনিতেই স্মার্ট, সুপুরুষ তিনি। তার ওপর গায়ের উজ্জ্বল রং আরও ফুটত
১৭ ডিসেম্বর ২০২২
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
২ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

ভারতীয় সিনেমার চিরসবুজ নায়ক দেব আনন্দের ব্যাপারে বোম্বের (মুম্বাই) আদালতের একটি অদ্ভুত নির্দেশনা ছিল, তিনি কালো পোশাক পরে পথে বেরোতে পারবেন না। কারণ, কালো পোশাক পরলে তাঁকে দুর্দান্ত দেখাত। এমনিতেই স্মার্ট, সুপুরুষ তিনি। তার ওপর গায়ের উজ্জ্বল রং আরও ফুটত
১৭ ডিসেম্বর ২০২২
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
২ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১১ দিন আগে