আজকের পত্রিকা ডেস্ক

বাংলা ভাষাকে বৈমাত্রেয় ভ্রাতা বা সতিনের পুত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয় বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক সলিমুল্লাহ খান। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের যত বিশ্ববিদ্যালয় আছে, সবগুলোতে আগে ইংরেজি ও পরে বাংলাটা ছোট করে নিচে লেখা হয়, বাংলা যেন বৈমাত্রেয় ভ্রাতা বা সতিনের পুত্র।’
আজ বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নগর ভবনে আয়োজিত ‘শহরের ভাষা’ শীর্ষক নগর আড্ডা অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
ড. সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রান্ত দিয়ে চলাচল করার সময় আমার মাঝে এক ধরনের হতাশা কাজ করে। আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে ইংরেজির গুরুত্ব অনস্বীকার্য, তবে আমাদের নিজস্ব ভাষার প্রতি যে অবহেলা ও হীনমন্যতা আমরা প্রকাশ করি, তা সত্যিই দুঃখজনক। পৃথিবীর আর কোনো জাতি নিজেদের ভাষার প্রতি এতটা অবজ্ঞাপূর্ণ আচরণ করে কি না, তা নিয়ে আমি সন্দিহান।’
এই গণবুদ্ধিজীবী আরও বলেন, ‘শহর বলতে আমরা কী বুঝি? শহরের নিজস্ব ভাষা কী? পৃথিবীতে নারী ও পুরুষ—এই দুটি শ্রেণির মানুষ রয়েছে। কীভাবে শতকরা পঞ্চাশ ভাগ নারী এবং পঞ্চাশ ভাগ পুরুষ জন্মায়, তা এক রহস্য। প্রকৃতি নিজেই এক ভারসাম্য সৃষ্টি করে। শহরের দালানগুলো পুরুষ এবং মাঠ, জলাশয় এগুলোকে যদি নারীর প্রতীক হিসেবে ধরা হয়, শহরেরও একটি নিজস্ব কাঠামো ও ভারসাম্য থাকা উচিত। ইউরোপ-আমেরিকার টাউন হাউসগুলো একটার পর একটা সারিবদ্ধভাবে থাকে, তবে রাস্তার জন্য যথেষ্ট জায়গা বরাদ্দ থাকে। এমনকি লন্ডনের মতো অপরিচ্ছন্ন শহরেও রাস্তা থেকে একটি বাড়ির অন্তত চল্লিশ কদম দূরত্ব বজায় রাখতে হয়। অথচ ঢাকায় নগর-পরিকল্পনার কোনো সুনির্দিষ্ট নীতি মানা হয় না।’
ঢাকা শহরের বিভিন্ন ভবন ও প্রতিষ্ঠানের নামে বাংলা ভাষার ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি সেদিন আর্মিতে বক্তৃতা দিতে গিয়েছিলাম এনডিসিতে। তো সেখানে দেখি শুধু ইংরেজিতেই বক্তৃতা হয়। আমাকে তাঁরা দয়া করে বলল, আপনি বাংলা বলতে পারেন। আমাদের কলেজের ভাষা যদিও ইংরেজি। বড় করে ‘ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ’— এই কথাটা বাংলা হরফে লিখেছে। ইংরেজিতেও লিখেছে। তাতে একটা প্রোটোকল আছে। বাংলাটা আগে লিখেছি, ইংরেজিটা পরে লিখেছি। তবে আমাদের যত বিশ্ববিদ্যালয় আছে, সবগুলোতে আগে ইংরেজি ও পরে বাংলাটা ছোট করে নিচে লেখা হয়। বাঙলা যেন বৈমাত্রেয় ভ্রাতা বা সতীনের পুত্র।’
ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, বাংলাদেশ শর্টফিল্ম ফোরামের সভাপতি জহিরুল ইসলাম কচি ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর সালমান মুক্তাদির প্রমুখ।
পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘একটা নগর তখনই সত্যিকারের নগর হয়, যখন সেখানে বহু ধরনের মানুষ একসঙ্গে থাকতে পারে, যেখানে অপরিচিতদের চলাচল বাধাগ্রস্ত হয় না। কিন্তু ঢাকায় এখন চলতে গেলে আপনাকে আপনার পরিচয় বহন করতে হয়—গাড়িতে সাংবাদিক, আইনজীবী কিংবা অন্য কোনো পরিচয় লিপিবদ্ধ রাখতে হয়, যেন আপনি শহরের জন্য বিপদ নন। এটা শহর নয়, এটা এক অবরুদ্ধ বন্দিশালা। কারণ এখানে মানুষের ব্যক্তিগত স্বাধীনতার জায়গা নেই।’
ফারুক ওয়াসিফ আরও বলেন, ‘নদীর দিকে মুখ করে আমাদের বসবাস করার কথা ছিল, অথচ আমরা নদীর দিকে পিঠ ফিরিয়ে তাঁকে ভাগাড়ে পরিণত করেছি। আমাদের শহরগুলো নদীকেন্দ্রিক ছিল—বুড়িগঙ্গার পাশে ঢাকা, কর্ণফুলীর পাশে চট্টগ্রাম, সুরমার পাড়ে সিলেট। কিন্তু আজ এসব নদীই আমাদের বর্জ্য ফেলার জায়গা হয়ে গেছে। শহর থেকে প্রকৃতি দূরে সরে গেছে, মানুষের সম্পর্কগুলোর মধ্যেও সেই শূন্যতা ভর করেছে।’
পিআইবি মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘এই শহরে মানুষের জীবন এখন পশুর জীবনের মতো। বাসে উঠে একটু দাঁড়ানোর জায়গা পর্যন্ত পাওয়া যায় না, ট্রাফিকের ধাক্কায় জানালা দিয়ে হাত বের করলেই দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। ঢাকা শহর আমাদের পিষে দিচ্ছে। ২০১৮ সালের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় কিশোর-কিশোরীরা এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল। আমরা যদি তখনই তাদের পাশে দাঁড়াতাম, তাহলে হয়তো ২০২৪ সালে এতগুলো জীবন দিতে হতো না।’

বাংলা ভাষাকে বৈমাত্রেয় ভ্রাতা বা সতিনের পুত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয় বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক সলিমুল্লাহ খান। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের যত বিশ্ববিদ্যালয় আছে, সবগুলোতে আগে ইংরেজি ও পরে বাংলাটা ছোট করে নিচে লেখা হয়, বাংলা যেন বৈমাত্রেয় ভ্রাতা বা সতিনের পুত্র।’
আজ বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নগর ভবনে আয়োজিত ‘শহরের ভাষা’ শীর্ষক নগর আড্ডা অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
ড. সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রান্ত দিয়ে চলাচল করার সময় আমার মাঝে এক ধরনের হতাশা কাজ করে। আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে ইংরেজির গুরুত্ব অনস্বীকার্য, তবে আমাদের নিজস্ব ভাষার প্রতি যে অবহেলা ও হীনমন্যতা আমরা প্রকাশ করি, তা সত্যিই দুঃখজনক। পৃথিবীর আর কোনো জাতি নিজেদের ভাষার প্রতি এতটা অবজ্ঞাপূর্ণ আচরণ করে কি না, তা নিয়ে আমি সন্দিহান।’
এই গণবুদ্ধিজীবী আরও বলেন, ‘শহর বলতে আমরা কী বুঝি? শহরের নিজস্ব ভাষা কী? পৃথিবীতে নারী ও পুরুষ—এই দুটি শ্রেণির মানুষ রয়েছে। কীভাবে শতকরা পঞ্চাশ ভাগ নারী এবং পঞ্চাশ ভাগ পুরুষ জন্মায়, তা এক রহস্য। প্রকৃতি নিজেই এক ভারসাম্য সৃষ্টি করে। শহরের দালানগুলো পুরুষ এবং মাঠ, জলাশয় এগুলোকে যদি নারীর প্রতীক হিসেবে ধরা হয়, শহরেরও একটি নিজস্ব কাঠামো ও ভারসাম্য থাকা উচিত। ইউরোপ-আমেরিকার টাউন হাউসগুলো একটার পর একটা সারিবদ্ধভাবে থাকে, তবে রাস্তার জন্য যথেষ্ট জায়গা বরাদ্দ থাকে। এমনকি লন্ডনের মতো অপরিচ্ছন্ন শহরেও রাস্তা থেকে একটি বাড়ির অন্তত চল্লিশ কদম দূরত্ব বজায় রাখতে হয়। অথচ ঢাকায় নগর-পরিকল্পনার কোনো সুনির্দিষ্ট নীতি মানা হয় না।’
ঢাকা শহরের বিভিন্ন ভবন ও প্রতিষ্ঠানের নামে বাংলা ভাষার ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি সেদিন আর্মিতে বক্তৃতা দিতে গিয়েছিলাম এনডিসিতে। তো সেখানে দেখি শুধু ইংরেজিতেই বক্তৃতা হয়। আমাকে তাঁরা দয়া করে বলল, আপনি বাংলা বলতে পারেন। আমাদের কলেজের ভাষা যদিও ইংরেজি। বড় করে ‘ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ’— এই কথাটা বাংলা হরফে লিখেছে। ইংরেজিতেও লিখেছে। তাতে একটা প্রোটোকল আছে। বাংলাটা আগে লিখেছি, ইংরেজিটা পরে লিখেছি। তবে আমাদের যত বিশ্ববিদ্যালয় আছে, সবগুলোতে আগে ইংরেজি ও পরে বাংলাটা ছোট করে নিচে লেখা হয়। বাঙলা যেন বৈমাত্রেয় ভ্রাতা বা সতীনের পুত্র।’
ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, বাংলাদেশ শর্টফিল্ম ফোরামের সভাপতি জহিরুল ইসলাম কচি ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর সালমান মুক্তাদির প্রমুখ।
পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘একটা নগর তখনই সত্যিকারের নগর হয়, যখন সেখানে বহু ধরনের মানুষ একসঙ্গে থাকতে পারে, যেখানে অপরিচিতদের চলাচল বাধাগ্রস্ত হয় না। কিন্তু ঢাকায় এখন চলতে গেলে আপনাকে আপনার পরিচয় বহন করতে হয়—গাড়িতে সাংবাদিক, আইনজীবী কিংবা অন্য কোনো পরিচয় লিপিবদ্ধ রাখতে হয়, যেন আপনি শহরের জন্য বিপদ নন। এটা শহর নয়, এটা এক অবরুদ্ধ বন্দিশালা। কারণ এখানে মানুষের ব্যক্তিগত স্বাধীনতার জায়গা নেই।’
ফারুক ওয়াসিফ আরও বলেন, ‘নদীর দিকে মুখ করে আমাদের বসবাস করার কথা ছিল, অথচ আমরা নদীর দিকে পিঠ ফিরিয়ে তাঁকে ভাগাড়ে পরিণত করেছি। আমাদের শহরগুলো নদীকেন্দ্রিক ছিল—বুড়িগঙ্গার পাশে ঢাকা, কর্ণফুলীর পাশে চট্টগ্রাম, সুরমার পাড়ে সিলেট। কিন্তু আজ এসব নদীই আমাদের বর্জ্য ফেলার জায়গা হয়ে গেছে। শহর থেকে প্রকৃতি দূরে সরে গেছে, মানুষের সম্পর্কগুলোর মধ্যেও সেই শূন্যতা ভর করেছে।’
পিআইবি মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘এই শহরে মানুষের জীবন এখন পশুর জীবনের মতো। বাসে উঠে একটু দাঁড়ানোর জায়গা পর্যন্ত পাওয়া যায় না, ট্রাফিকের ধাক্কায় জানালা দিয়ে হাত বের করলেই দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। ঢাকা শহর আমাদের পিষে দিচ্ছে। ২০১৮ সালের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় কিশোর-কিশোরীরা এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল। আমরা যদি তখনই তাদের পাশে দাঁড়াতাম, তাহলে হয়তো ২০২৪ সালে এতগুলো জীবন দিতে হতো না।’

তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
৩ ঘণ্টা আগে
পোস্টে প্রেস সচিব লিখেছেন, ‘শহীদ বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর পর থেকে আমার মনে হচ্ছে তিনি (মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) ভীষণ একা হয়ে পড়েছেন। একত্রে এই দুই নেতা আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসের অন্যতম এক সম্মানিত ও নির্ভরযোগ্য অংশীদারিত্বের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। সহমর্মিতা এবং নীরবে ধৈর্য ধরার ক্ষমতার...
৫ ঘণ্টা আগে
জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু জানান, রাজধানীতে নিজ বাসায় বর্ষীয়ান এ রাজনীতিকের মৃত্যু হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাদ জোহর টাঙ্গাইল শহরের বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
৬ ঘণ্টা আগে
সদ্য সমাপ্ত ২০২৫ সালে সারা দেশে অন্তত ৪২৮টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে, যা ২০২৪ সালের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। ২০২৪ সালে গণপিটুনির ১৬৯টি ঘটনায় নিহত হয়েছিল ১৪৬ জন এবং আহত ছিল ১২৬ জন। আর ২০২৫ সালে গণপিটুনিতে ১৬৬ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে ৪৬০ জন। ২২০ জনকে আহতাবস্থায় পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। গণপিটুনির ঘটনায় আহত
৭ ঘণ্টা আগে