কামরুল হাসান

ফোন বাজছে তো বাজছেই। ভোরের ঘুমে নিমগ্ন। চোখ মেলে স্ক্রিনে দেখি র্যাবের কমান্ডার মাসুক হাসান। হ্যালো বলতেই বললেন, দৌড় দেন মধ্যবাড্ডার আনন্দনগরে। বিগ শট। নিমেষে ঘুম উবে গেল। পড়িমরি করে উঠে বাইকটা নিয়েই দিলাম ছুট। সোজা বাড্ডায়। ফজরের নামাজ পড়ে লোকজন সবে বের হচ্ছেন। মধ্যবাড্ডার মোড়ে এসে এক মুসল্লির কাছে জানতে চাইলাম, আনন্দনগরে কোন পথে যাব। তিনি ডান দিকে একটি রাস্তা দেখিয়ে বললেন, র্যাবের অনেক গাড়ি গেছে এদিকে।
আনন্দনগরে ঢুকে দেখি, র্যাবের অনেক গাড়ি রাস্তায় দাঁড় করানো। আমাকে দেখে র্যাবের এক সদস্য একটি গলি দেখিয়ে সেদিকে যেতে বললেন। একটু এগোতেই মনে হলো, সামনে একটি ঝিল। বাড়িঘরও কম। ঝিলের ঠিক মাঝখানে একটি দোতলা বাড়ি, সেখান থেকে একজনকে ধরে আনছেন র্যাবের কয়েকজন সদস্য। কাছে আসতেই দেখি, হ্যান্ডকাফ পরা লোকটা। ছোটখাটো চেহারা। মুখে দাড়ি নেই। পরনে লুঙ্গি আর স্যান্ডো গেঞ্জি। সারা শরীর ভেজা। গা থেকে পানি পড়ছে। তাঁর পেছনেই র্যাবের মেজর আতিক।
সাতসকালে আমাকে দেখে একটু অবাক হয়ে তিনি বললেন, চিনছেন? উনি আবদুল হান্নান মুনশি। আমি বললাম, মানে—মুফতি হান্নান? এবার তিনি গলায় বেশ জোর দিয়ে একটু টেনে বললেন, ইয়েস। তো ভেজা কেন? তিনি বললেন, এত বড় জঙ্গি জীবন বাঁচাতে ঝিলের পচা পানিতে লাফ দিয়েছিল। সেখান থেকে তুলে আনলাম। এটা ২০০৫ সালের ১ অক্টোবরের সকাল।
১৯৯৯ সালে যশোরে উদীচীর অনুষ্ঠানে বোমা হামলার পর থেকেই একের পর এক জঙ্গিনেতার নাম শোনা যাচ্ছিল। বিভিন্ন সূত্র থেকে তখন আমরা জানতে পারছিলাম, আফগানিস্তান থেকে যুদ্ধফেরত একদল জঙ্গি দেশে ‘ইসলামি রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখছে। তারাই এসব হামলা করছে। এগুলোর মধ্যে ২০০০ সালের ২০ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনার জনসভায় বোমা পুঁতে রাখার ঘটনা ঘটে। তখনই আলোচনায় আসে মুফতি হান্নানের নাম।
মুফতি হান্নানের জন্ম ও বেড়ে ওঠা মূলত গোপালগঞ্জে। তিনি যশোরের গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতেন। সেখানে পড়ার সময় ১৯৮৭ সালে ‘উচ্চশিক্ষা’র জন্য পাকিস্তানের করাচিতে নিউ টাউন মাদ্রাসায় ভর্তি হন। সেখানেই জঙ্গিবাদে জড়ান। আফগানিস্তানে তখন সোভিয়েত বাহিনী যুদ্ধ করছিল। ১৯৮৮ সালে তিনি পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সীমান্তে সোভিয়েত বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিয়ে আহত হন। বাংলাদেশে ফিরে ১৯৯৪ সালে হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশে যোগ দেন। শুরুতে কোটালীপাড়া থানার প্রচার সম্পাদক ছিলেন। কিন্তু দ্রুতই নিজের সাংগঠনিক দক্ষতা আর দুর্ধর্ষ কর্মকাণ্ডের সুবাদে কেন্দ্রীয় নেতা হয়ে ওঠেন। মুফতি হান্নান আফগান স্টাইলে বাংলাদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠার তৎপরতা চালাচ্ছিলেন। প্রথমে দেশি বোমা ব্যবহার করলেও পরে পাকিস্তান থেকে গ্রেনেড সংগ্রহ করেন। এ ছাড়া বোমা বানানো এবং হামলার বিষয়েও তাঁর সামরিক প্রশিক্ষণ ছিল। তিনি নিজেও প্রশিক্ষণ দিতেন।
এটা আজ প্রতিষ্ঠিত সত্য যে, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের শুরুটাই হয়েছিল হরকাতুল জিহাদের হামলার মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশে বড় জঙ্গি হামলার বেশির ভাগ হয়েছে মুফতি আবদুল হান্নানের নেতৃত্বে ও পরিকল্পনায়। যশোরে উদীচীর অনুষ্ঠানে বোমা হামলা ছিল তাদের টেস্ট কেস। সেই ঘটনার পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে মুফতি হান্নান নিজে ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে ও পরিকল্পনায় সাত বছরে ১৩টি জঙ্গি হামলা হয়। এসব হামলায় ১০১ জন নিহত এবং ৬০০ জন আহত হন। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে প্রাণঘাতী জঙ্গি হামলার সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটে হান্নানের নেতৃত্বে।
সেই ভয়ংকর জঙ্গিকে গ্রেপ্তার নিয়ে চোর-পুলিশ খেলা চলছিল। এর কারণও ছিল। ধরা পড়ার পর হান্নান নিজেই সবার সামনে তা ফাঁস করে দেন। গ্রেপ্তার করা হান্নানকে সেদিন বিকেলে র্যাব-১-এর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে আনা হয়। তখন সাংবাদিকেরা তাঁকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। জবাবে হান্নান বলেন, গোপালগঞ্জের ঘটনার পর তিনি কিছুদিন চুপ করে ছিলেন। এরপর চারদলীয় জোট সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করেন। মাসিক মদিনা পত্রিকার সম্পাদক মাওলানা মুহিউদ্দিনের মাধ্যমে তিনি তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর কাছে মামলা প্রত্যাহারের আবেদনও করেন। চারদলীয় জোট সরকারের পক্ষ থেকে তাঁকে বলা হয়, পরিস্থিতি ঠিক হয়ে গেলেই তাঁকে স্বাভাবিক জীবনযাপনের অনুমতি দেওয়া হবে। তিনি দাড়ি কেটে ফেলে একের পর এক বাসা বদল করে ঢাকাতেই থাকতে শুরু করেন। পরদিন এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর বিএনপি সরকারকে খুবই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়।
মুফতি হান্নানকে গ্রেপ্তারের পর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁকে বিভিন্ন মামলায় ৪০০ দিন রিমান্ডে রাখা হয়। দেশে আর কোনো আসামিকে এত দিন রিমান্ডে রাখার নজির নেই। তিনি সব ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকারও করেন। তাঁর বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা হয়। এগুলোর মধ্যে দুটি মামলায় ফাঁসি হয়। ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল ফাঁসি কার্যকর হয় কাশিমপুরে হাই সিকিউরিটি কারাগারে।
মুফতি হান্নানকে গ্রেপ্তারের এক দিন পর আমি তাঁর স্ত্রী জাকিয়া পারভিন রুমার সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তিনি যা বললেন, তা শুনে বিস্মিত না হয়ে পারিনি। র্যাব-১-এর অধিনায়ক (প্রয়াত) গুলজার উদ্দিন আমাকে প্রায়ই বলতেন, জঙ্গিরা সুন্দরী মেয়ে দেখে বিয়ে করে। হান্নানের স্ত্রী রুমাকে দেখে সেটা আরেকবার প্রমাণিত হলো। রুমা আমাকে বললেন, মাত্র ২১ দিন আগে তাঁরা এ বাসায় আসেন। চার হাজার টাকায় বাসাটি ভাড়া করেন হান্নান। ছেলে শাহাবুদ্দিন (৯) ও নূরুল্লাহ (৫) এবং মেয়ে নিশি (৫) ও নাজনীনকে (২) নিয়ে তাঁদের সংসার। তাঁদের সব ছেলেমেয়ে মাদ্রাসায় পড়ে। এ বাড়িতে বাইরের কারও প্রবেশাধিকার নেই। তাঁর স্বামী কারও সঙ্গে মেলামেশা করেন না। তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনও আসেন না। তাঁরা কোথায় থাকেন, সেটাও কাউকে জানানো হয় না। গ্রেপ্তারের আগপর্যন্ত স্বামীর এসব অপকর্মের কথা তিনি জানতেন না। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় হান্নানের জড়িত থাকার খবর তিনি শুনেছেন। মুফতি হান্নান তাঁর কাছে এসব কথা কখনো স্বীকার করেননি। তিনি বলেছেন, এসব ষড়যন্ত্র।
রুমা আমাকে বললেন, মুফতি হান্নান আফগানিস্তানে যুদ্ধ করেছেন বলে তিনি শুনেছেন। তবে কখনো তিনি এসব নিয়ে স্বামীকে কিছু জিজ্ঞাসা করেননি। তাঁর গ্রামের বাড়ি মাগুরায়। আগে থেকেই চেনাজানা ছিল। সেই সুবাদে ১৯৯৫ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। ২০০০ সালে কোটালীপাড়ার ঘটনার পর থেকে হান্নান বাড়ির বাইরে থাকতেন। তিনি সন্তানদের নিয়ে গ্রামের বাড়িতে বাস করতেন। তবে কোটালীপাড়ার ঘটনার পর (শেখ হাসিনার জনসভাস্থলে বোমা পুঁতে রাখা) হান্নান তাঁদের নিয়ে কিছুদিন মাগুরায় এবং কিছুদিন খুলনায় ছিলেন। আড়াই বছর আগে ঢাকায় চলে আসেন। প্রথমে তাঁরা গাজীপুরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন। সেখানে পোলট্রি খামার গড়ে তোলেন। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতে সেই ব্যবসায় লোকসান হয়। এরপর রামপুরা ডিআইটি রোড এলাকায় চলে আসেন। সেখানে একটি ইলেকট্রনিক সামগ্রীর দোকান নিয়ে হান্নান ব্যবসা শুরু করেন। এক বছর সেখানে থেকে চলে আসেন মধ্যবাড্ডার আনন্দনগরে।
রুমা বলছিলেন, হান্নান দিনের বেলা বাসা থেকে তেমন বের হন না। এলাকার লোকজনের সঙ্গে কোনো মেলামেশাও ছিল না। সব সময় তিনি নিজের নাম ‘জামান’ বলে জানাতেন। তাঁর ছেলেমেয়েরাও বাবার নাম জামান বলেই জানে।
আফগান যুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হাতের ক্ষতচিহ্ন দেখিয়ে মুফতি হান্নান নিজের ছেলেমেয়েদের বলতেন, সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি আহত হয়েছেন। তাঁর ফেরার জীবনের কোনো কথা স্ত্রী-সন্তানদের জানাতেন না। ছদ্মবেশ ধরতে নিজের নামটি পর্যন্ত বদলে ফেলেছিলেন। কিন্তু এত কিছু লুকানোর পরও শেষরক্ষা হলো? ভুল রাজনীতি এবং ভুল পৃষ্ঠপোষকতা কীভাবে সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে, মুফতি হান্নান তার জ্বলন্ত উদাহরণ।
আরও পড়ুন

ফোন বাজছে তো বাজছেই। ভোরের ঘুমে নিমগ্ন। চোখ মেলে স্ক্রিনে দেখি র্যাবের কমান্ডার মাসুক হাসান। হ্যালো বলতেই বললেন, দৌড় দেন মধ্যবাড্ডার আনন্দনগরে। বিগ শট। নিমেষে ঘুম উবে গেল। পড়িমরি করে উঠে বাইকটা নিয়েই দিলাম ছুট। সোজা বাড্ডায়। ফজরের নামাজ পড়ে লোকজন সবে বের হচ্ছেন। মধ্যবাড্ডার মোড়ে এসে এক মুসল্লির কাছে জানতে চাইলাম, আনন্দনগরে কোন পথে যাব। তিনি ডান দিকে একটি রাস্তা দেখিয়ে বললেন, র্যাবের অনেক গাড়ি গেছে এদিকে।
আনন্দনগরে ঢুকে দেখি, র্যাবের অনেক গাড়ি রাস্তায় দাঁড় করানো। আমাকে দেখে র্যাবের এক সদস্য একটি গলি দেখিয়ে সেদিকে যেতে বললেন। একটু এগোতেই মনে হলো, সামনে একটি ঝিল। বাড়িঘরও কম। ঝিলের ঠিক মাঝখানে একটি দোতলা বাড়ি, সেখান থেকে একজনকে ধরে আনছেন র্যাবের কয়েকজন সদস্য। কাছে আসতেই দেখি, হ্যান্ডকাফ পরা লোকটা। ছোটখাটো চেহারা। মুখে দাড়ি নেই। পরনে লুঙ্গি আর স্যান্ডো গেঞ্জি। সারা শরীর ভেজা। গা থেকে পানি পড়ছে। তাঁর পেছনেই র্যাবের মেজর আতিক।
সাতসকালে আমাকে দেখে একটু অবাক হয়ে তিনি বললেন, চিনছেন? উনি আবদুল হান্নান মুনশি। আমি বললাম, মানে—মুফতি হান্নান? এবার তিনি গলায় বেশ জোর দিয়ে একটু টেনে বললেন, ইয়েস। তো ভেজা কেন? তিনি বললেন, এত বড় জঙ্গি জীবন বাঁচাতে ঝিলের পচা পানিতে লাফ দিয়েছিল। সেখান থেকে তুলে আনলাম। এটা ২০০৫ সালের ১ অক্টোবরের সকাল।
১৯৯৯ সালে যশোরে উদীচীর অনুষ্ঠানে বোমা হামলার পর থেকেই একের পর এক জঙ্গিনেতার নাম শোনা যাচ্ছিল। বিভিন্ন সূত্র থেকে তখন আমরা জানতে পারছিলাম, আফগানিস্তান থেকে যুদ্ধফেরত একদল জঙ্গি দেশে ‘ইসলামি রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখছে। তারাই এসব হামলা করছে। এগুলোর মধ্যে ২০০০ সালের ২০ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনার জনসভায় বোমা পুঁতে রাখার ঘটনা ঘটে। তখনই আলোচনায় আসে মুফতি হান্নানের নাম।
মুফতি হান্নানের জন্ম ও বেড়ে ওঠা মূলত গোপালগঞ্জে। তিনি যশোরের গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতেন। সেখানে পড়ার সময় ১৯৮৭ সালে ‘উচ্চশিক্ষা’র জন্য পাকিস্তানের করাচিতে নিউ টাউন মাদ্রাসায় ভর্তি হন। সেখানেই জঙ্গিবাদে জড়ান। আফগানিস্তানে তখন সোভিয়েত বাহিনী যুদ্ধ করছিল। ১৯৮৮ সালে তিনি পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সীমান্তে সোভিয়েত বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিয়ে আহত হন। বাংলাদেশে ফিরে ১৯৯৪ সালে হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশে যোগ দেন। শুরুতে কোটালীপাড়া থানার প্রচার সম্পাদক ছিলেন। কিন্তু দ্রুতই নিজের সাংগঠনিক দক্ষতা আর দুর্ধর্ষ কর্মকাণ্ডের সুবাদে কেন্দ্রীয় নেতা হয়ে ওঠেন। মুফতি হান্নান আফগান স্টাইলে বাংলাদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠার তৎপরতা চালাচ্ছিলেন। প্রথমে দেশি বোমা ব্যবহার করলেও পরে পাকিস্তান থেকে গ্রেনেড সংগ্রহ করেন। এ ছাড়া বোমা বানানো এবং হামলার বিষয়েও তাঁর সামরিক প্রশিক্ষণ ছিল। তিনি নিজেও প্রশিক্ষণ দিতেন।
এটা আজ প্রতিষ্ঠিত সত্য যে, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের শুরুটাই হয়েছিল হরকাতুল জিহাদের হামলার মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশে বড় জঙ্গি হামলার বেশির ভাগ হয়েছে মুফতি আবদুল হান্নানের নেতৃত্বে ও পরিকল্পনায়। যশোরে উদীচীর অনুষ্ঠানে বোমা হামলা ছিল তাদের টেস্ট কেস। সেই ঘটনার পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে মুফতি হান্নান নিজে ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে ও পরিকল্পনায় সাত বছরে ১৩টি জঙ্গি হামলা হয়। এসব হামলায় ১০১ জন নিহত এবং ৬০০ জন আহত হন। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে প্রাণঘাতী জঙ্গি হামলার সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটে হান্নানের নেতৃত্বে।
সেই ভয়ংকর জঙ্গিকে গ্রেপ্তার নিয়ে চোর-পুলিশ খেলা চলছিল। এর কারণও ছিল। ধরা পড়ার পর হান্নান নিজেই সবার সামনে তা ফাঁস করে দেন। গ্রেপ্তার করা হান্নানকে সেদিন বিকেলে র্যাব-১-এর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে আনা হয়। তখন সাংবাদিকেরা তাঁকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। জবাবে হান্নান বলেন, গোপালগঞ্জের ঘটনার পর তিনি কিছুদিন চুপ করে ছিলেন। এরপর চারদলীয় জোট সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করেন। মাসিক মদিনা পত্রিকার সম্পাদক মাওলানা মুহিউদ্দিনের মাধ্যমে তিনি তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর কাছে মামলা প্রত্যাহারের আবেদনও করেন। চারদলীয় জোট সরকারের পক্ষ থেকে তাঁকে বলা হয়, পরিস্থিতি ঠিক হয়ে গেলেই তাঁকে স্বাভাবিক জীবনযাপনের অনুমতি দেওয়া হবে। তিনি দাড়ি কেটে ফেলে একের পর এক বাসা বদল করে ঢাকাতেই থাকতে শুরু করেন। পরদিন এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর বিএনপি সরকারকে খুবই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়।
মুফতি হান্নানকে গ্রেপ্তারের পর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁকে বিভিন্ন মামলায় ৪০০ দিন রিমান্ডে রাখা হয়। দেশে আর কোনো আসামিকে এত দিন রিমান্ডে রাখার নজির নেই। তিনি সব ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকারও করেন। তাঁর বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা হয়। এগুলোর মধ্যে দুটি মামলায় ফাঁসি হয়। ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল ফাঁসি কার্যকর হয় কাশিমপুরে হাই সিকিউরিটি কারাগারে।
মুফতি হান্নানকে গ্রেপ্তারের এক দিন পর আমি তাঁর স্ত্রী জাকিয়া পারভিন রুমার সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তিনি যা বললেন, তা শুনে বিস্মিত না হয়ে পারিনি। র্যাব-১-এর অধিনায়ক (প্রয়াত) গুলজার উদ্দিন আমাকে প্রায়ই বলতেন, জঙ্গিরা সুন্দরী মেয়ে দেখে বিয়ে করে। হান্নানের স্ত্রী রুমাকে দেখে সেটা আরেকবার প্রমাণিত হলো। রুমা আমাকে বললেন, মাত্র ২১ দিন আগে তাঁরা এ বাসায় আসেন। চার হাজার টাকায় বাসাটি ভাড়া করেন হান্নান। ছেলে শাহাবুদ্দিন (৯) ও নূরুল্লাহ (৫) এবং মেয়ে নিশি (৫) ও নাজনীনকে (২) নিয়ে তাঁদের সংসার। তাঁদের সব ছেলেমেয়ে মাদ্রাসায় পড়ে। এ বাড়িতে বাইরের কারও প্রবেশাধিকার নেই। তাঁর স্বামী কারও সঙ্গে মেলামেশা করেন না। তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনও আসেন না। তাঁরা কোথায় থাকেন, সেটাও কাউকে জানানো হয় না। গ্রেপ্তারের আগপর্যন্ত স্বামীর এসব অপকর্মের কথা তিনি জানতেন না। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় হান্নানের জড়িত থাকার খবর তিনি শুনেছেন। মুফতি হান্নান তাঁর কাছে এসব কথা কখনো স্বীকার করেননি। তিনি বলেছেন, এসব ষড়যন্ত্র।
রুমা আমাকে বললেন, মুফতি হান্নান আফগানিস্তানে যুদ্ধ করেছেন বলে তিনি শুনেছেন। তবে কখনো তিনি এসব নিয়ে স্বামীকে কিছু জিজ্ঞাসা করেননি। তাঁর গ্রামের বাড়ি মাগুরায়। আগে থেকেই চেনাজানা ছিল। সেই সুবাদে ১৯৯৫ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। ২০০০ সালে কোটালীপাড়ার ঘটনার পর থেকে হান্নান বাড়ির বাইরে থাকতেন। তিনি সন্তানদের নিয়ে গ্রামের বাড়িতে বাস করতেন। তবে কোটালীপাড়ার ঘটনার পর (শেখ হাসিনার জনসভাস্থলে বোমা পুঁতে রাখা) হান্নান তাঁদের নিয়ে কিছুদিন মাগুরায় এবং কিছুদিন খুলনায় ছিলেন। আড়াই বছর আগে ঢাকায় চলে আসেন। প্রথমে তাঁরা গাজীপুরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন। সেখানে পোলট্রি খামার গড়ে তোলেন। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতে সেই ব্যবসায় লোকসান হয়। এরপর রামপুরা ডিআইটি রোড এলাকায় চলে আসেন। সেখানে একটি ইলেকট্রনিক সামগ্রীর দোকান নিয়ে হান্নান ব্যবসা শুরু করেন। এক বছর সেখানে থেকে চলে আসেন মধ্যবাড্ডার আনন্দনগরে।
রুমা বলছিলেন, হান্নান দিনের বেলা বাসা থেকে তেমন বের হন না। এলাকার লোকজনের সঙ্গে কোনো মেলামেশাও ছিল না। সব সময় তিনি নিজের নাম ‘জামান’ বলে জানাতেন। তাঁর ছেলেমেয়েরাও বাবার নাম জামান বলেই জানে।
আফগান যুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হাতের ক্ষতচিহ্ন দেখিয়ে মুফতি হান্নান নিজের ছেলেমেয়েদের বলতেন, সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি আহত হয়েছেন। তাঁর ফেরার জীবনের কোনো কথা স্ত্রী-সন্তানদের জানাতেন না। ছদ্মবেশ ধরতে নিজের নামটি পর্যন্ত বদলে ফেলেছিলেন। কিন্তু এত কিছু লুকানোর পরও শেষরক্ষা হলো? ভুল রাজনীতি এবং ভুল পৃষ্ঠপোষকতা কীভাবে সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে, মুফতি হান্নান তার জ্বলন্ত উদাহরণ।
আরও পড়ুন
কামরুল হাসান

ফোন বাজছে তো বাজছেই। ভোরের ঘুমে নিমগ্ন। চোখ মেলে স্ক্রিনে দেখি র্যাবের কমান্ডার মাসুক হাসান। হ্যালো বলতেই বললেন, দৌড় দেন মধ্যবাড্ডার আনন্দনগরে। বিগ শট। নিমেষে ঘুম উবে গেল। পড়িমরি করে উঠে বাইকটা নিয়েই দিলাম ছুট। সোজা বাড্ডায়। ফজরের নামাজ পড়ে লোকজন সবে বের হচ্ছেন। মধ্যবাড্ডার মোড়ে এসে এক মুসল্লির কাছে জানতে চাইলাম, আনন্দনগরে কোন পথে যাব। তিনি ডান দিকে একটি রাস্তা দেখিয়ে বললেন, র্যাবের অনেক গাড়ি গেছে এদিকে।
আনন্দনগরে ঢুকে দেখি, র্যাবের অনেক গাড়ি রাস্তায় দাঁড় করানো। আমাকে দেখে র্যাবের এক সদস্য একটি গলি দেখিয়ে সেদিকে যেতে বললেন। একটু এগোতেই মনে হলো, সামনে একটি ঝিল। বাড়িঘরও কম। ঝিলের ঠিক মাঝখানে একটি দোতলা বাড়ি, সেখান থেকে একজনকে ধরে আনছেন র্যাবের কয়েকজন সদস্য। কাছে আসতেই দেখি, হ্যান্ডকাফ পরা লোকটা। ছোটখাটো চেহারা। মুখে দাড়ি নেই। পরনে লুঙ্গি আর স্যান্ডো গেঞ্জি। সারা শরীর ভেজা। গা থেকে পানি পড়ছে। তাঁর পেছনেই র্যাবের মেজর আতিক।
সাতসকালে আমাকে দেখে একটু অবাক হয়ে তিনি বললেন, চিনছেন? উনি আবদুল হান্নান মুনশি। আমি বললাম, মানে—মুফতি হান্নান? এবার তিনি গলায় বেশ জোর দিয়ে একটু টেনে বললেন, ইয়েস। তো ভেজা কেন? তিনি বললেন, এত বড় জঙ্গি জীবন বাঁচাতে ঝিলের পচা পানিতে লাফ দিয়েছিল। সেখান থেকে তুলে আনলাম। এটা ২০০৫ সালের ১ অক্টোবরের সকাল।
১৯৯৯ সালে যশোরে উদীচীর অনুষ্ঠানে বোমা হামলার পর থেকেই একের পর এক জঙ্গিনেতার নাম শোনা যাচ্ছিল। বিভিন্ন সূত্র থেকে তখন আমরা জানতে পারছিলাম, আফগানিস্তান থেকে যুদ্ধফেরত একদল জঙ্গি দেশে ‘ইসলামি রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখছে। তারাই এসব হামলা করছে। এগুলোর মধ্যে ২০০০ সালের ২০ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনার জনসভায় বোমা পুঁতে রাখার ঘটনা ঘটে। তখনই আলোচনায় আসে মুফতি হান্নানের নাম।
মুফতি হান্নানের জন্ম ও বেড়ে ওঠা মূলত গোপালগঞ্জে। তিনি যশোরের গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতেন। সেখানে পড়ার সময় ১৯৮৭ সালে ‘উচ্চশিক্ষা’র জন্য পাকিস্তানের করাচিতে নিউ টাউন মাদ্রাসায় ভর্তি হন। সেখানেই জঙ্গিবাদে জড়ান। আফগানিস্তানে তখন সোভিয়েত বাহিনী যুদ্ধ করছিল। ১৯৮৮ সালে তিনি পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সীমান্তে সোভিয়েত বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিয়ে আহত হন। বাংলাদেশে ফিরে ১৯৯৪ সালে হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশে যোগ দেন। শুরুতে কোটালীপাড়া থানার প্রচার সম্পাদক ছিলেন। কিন্তু দ্রুতই নিজের সাংগঠনিক দক্ষতা আর দুর্ধর্ষ কর্মকাণ্ডের সুবাদে কেন্দ্রীয় নেতা হয়ে ওঠেন। মুফতি হান্নান আফগান স্টাইলে বাংলাদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠার তৎপরতা চালাচ্ছিলেন। প্রথমে দেশি বোমা ব্যবহার করলেও পরে পাকিস্তান থেকে গ্রেনেড সংগ্রহ করেন। এ ছাড়া বোমা বানানো এবং হামলার বিষয়েও তাঁর সামরিক প্রশিক্ষণ ছিল। তিনি নিজেও প্রশিক্ষণ দিতেন।
এটা আজ প্রতিষ্ঠিত সত্য যে, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের শুরুটাই হয়েছিল হরকাতুল জিহাদের হামলার মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশে বড় জঙ্গি হামলার বেশির ভাগ হয়েছে মুফতি আবদুল হান্নানের নেতৃত্বে ও পরিকল্পনায়। যশোরে উদীচীর অনুষ্ঠানে বোমা হামলা ছিল তাদের টেস্ট কেস। সেই ঘটনার পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে মুফতি হান্নান নিজে ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে ও পরিকল্পনায় সাত বছরে ১৩টি জঙ্গি হামলা হয়। এসব হামলায় ১০১ জন নিহত এবং ৬০০ জন আহত হন। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে প্রাণঘাতী জঙ্গি হামলার সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটে হান্নানের নেতৃত্বে।
সেই ভয়ংকর জঙ্গিকে গ্রেপ্তার নিয়ে চোর-পুলিশ খেলা চলছিল। এর কারণও ছিল। ধরা পড়ার পর হান্নান নিজেই সবার সামনে তা ফাঁস করে দেন। গ্রেপ্তার করা হান্নানকে সেদিন বিকেলে র্যাব-১-এর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে আনা হয়। তখন সাংবাদিকেরা তাঁকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। জবাবে হান্নান বলেন, গোপালগঞ্জের ঘটনার পর তিনি কিছুদিন চুপ করে ছিলেন। এরপর চারদলীয় জোট সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করেন। মাসিক মদিনা পত্রিকার সম্পাদক মাওলানা মুহিউদ্দিনের মাধ্যমে তিনি তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর কাছে মামলা প্রত্যাহারের আবেদনও করেন। চারদলীয় জোট সরকারের পক্ষ থেকে তাঁকে বলা হয়, পরিস্থিতি ঠিক হয়ে গেলেই তাঁকে স্বাভাবিক জীবনযাপনের অনুমতি দেওয়া হবে। তিনি দাড়ি কেটে ফেলে একের পর এক বাসা বদল করে ঢাকাতেই থাকতে শুরু করেন। পরদিন এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর বিএনপি সরকারকে খুবই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়।
মুফতি হান্নানকে গ্রেপ্তারের পর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁকে বিভিন্ন মামলায় ৪০০ দিন রিমান্ডে রাখা হয়। দেশে আর কোনো আসামিকে এত দিন রিমান্ডে রাখার নজির নেই। তিনি সব ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকারও করেন। তাঁর বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা হয়। এগুলোর মধ্যে দুটি মামলায় ফাঁসি হয়। ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল ফাঁসি কার্যকর হয় কাশিমপুরে হাই সিকিউরিটি কারাগারে।
মুফতি হান্নানকে গ্রেপ্তারের এক দিন পর আমি তাঁর স্ত্রী জাকিয়া পারভিন রুমার সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তিনি যা বললেন, তা শুনে বিস্মিত না হয়ে পারিনি। র্যাব-১-এর অধিনায়ক (প্রয়াত) গুলজার উদ্দিন আমাকে প্রায়ই বলতেন, জঙ্গিরা সুন্দরী মেয়ে দেখে বিয়ে করে। হান্নানের স্ত্রী রুমাকে দেখে সেটা আরেকবার প্রমাণিত হলো। রুমা আমাকে বললেন, মাত্র ২১ দিন আগে তাঁরা এ বাসায় আসেন। চার হাজার টাকায় বাসাটি ভাড়া করেন হান্নান। ছেলে শাহাবুদ্দিন (৯) ও নূরুল্লাহ (৫) এবং মেয়ে নিশি (৫) ও নাজনীনকে (২) নিয়ে তাঁদের সংসার। তাঁদের সব ছেলেমেয়ে মাদ্রাসায় পড়ে। এ বাড়িতে বাইরের কারও প্রবেশাধিকার নেই। তাঁর স্বামী কারও সঙ্গে মেলামেশা করেন না। তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনও আসেন না। তাঁরা কোথায় থাকেন, সেটাও কাউকে জানানো হয় না। গ্রেপ্তারের আগপর্যন্ত স্বামীর এসব অপকর্মের কথা তিনি জানতেন না। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় হান্নানের জড়িত থাকার খবর তিনি শুনেছেন। মুফতি হান্নান তাঁর কাছে এসব কথা কখনো স্বীকার করেননি। তিনি বলেছেন, এসব ষড়যন্ত্র।
রুমা আমাকে বললেন, মুফতি হান্নান আফগানিস্তানে যুদ্ধ করেছেন বলে তিনি শুনেছেন। তবে কখনো তিনি এসব নিয়ে স্বামীকে কিছু জিজ্ঞাসা করেননি। তাঁর গ্রামের বাড়ি মাগুরায়। আগে থেকেই চেনাজানা ছিল। সেই সুবাদে ১৯৯৫ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। ২০০০ সালে কোটালীপাড়ার ঘটনার পর থেকে হান্নান বাড়ির বাইরে থাকতেন। তিনি সন্তানদের নিয়ে গ্রামের বাড়িতে বাস করতেন। তবে কোটালীপাড়ার ঘটনার পর (শেখ হাসিনার জনসভাস্থলে বোমা পুঁতে রাখা) হান্নান তাঁদের নিয়ে কিছুদিন মাগুরায় এবং কিছুদিন খুলনায় ছিলেন। আড়াই বছর আগে ঢাকায় চলে আসেন। প্রথমে তাঁরা গাজীপুরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন। সেখানে পোলট্রি খামার গড়ে তোলেন। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতে সেই ব্যবসায় লোকসান হয়। এরপর রামপুরা ডিআইটি রোড এলাকায় চলে আসেন। সেখানে একটি ইলেকট্রনিক সামগ্রীর দোকান নিয়ে হান্নান ব্যবসা শুরু করেন। এক বছর সেখানে থেকে চলে আসেন মধ্যবাড্ডার আনন্দনগরে।
রুমা বলছিলেন, হান্নান দিনের বেলা বাসা থেকে তেমন বের হন না। এলাকার লোকজনের সঙ্গে কোনো মেলামেশাও ছিল না। সব সময় তিনি নিজের নাম ‘জামান’ বলে জানাতেন। তাঁর ছেলেমেয়েরাও বাবার নাম জামান বলেই জানে।
আফগান যুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হাতের ক্ষতচিহ্ন দেখিয়ে মুফতি হান্নান নিজের ছেলেমেয়েদের বলতেন, সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি আহত হয়েছেন। তাঁর ফেরার জীবনের কোনো কথা স্ত্রী-সন্তানদের জানাতেন না। ছদ্মবেশ ধরতে নিজের নামটি পর্যন্ত বদলে ফেলেছিলেন। কিন্তু এত কিছু লুকানোর পরও শেষরক্ষা হলো? ভুল রাজনীতি এবং ভুল পৃষ্ঠপোষকতা কীভাবে সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে, মুফতি হান্নান তার জ্বলন্ত উদাহরণ।
আরও পড়ুন

ফোন বাজছে তো বাজছেই। ভোরের ঘুমে নিমগ্ন। চোখ মেলে স্ক্রিনে দেখি র্যাবের কমান্ডার মাসুক হাসান। হ্যালো বলতেই বললেন, দৌড় দেন মধ্যবাড্ডার আনন্দনগরে। বিগ শট। নিমেষে ঘুম উবে গেল। পড়িমরি করে উঠে বাইকটা নিয়েই দিলাম ছুট। সোজা বাড্ডায়। ফজরের নামাজ পড়ে লোকজন সবে বের হচ্ছেন। মধ্যবাড্ডার মোড়ে এসে এক মুসল্লির কাছে জানতে চাইলাম, আনন্দনগরে কোন পথে যাব। তিনি ডান দিকে একটি রাস্তা দেখিয়ে বললেন, র্যাবের অনেক গাড়ি গেছে এদিকে।
আনন্দনগরে ঢুকে দেখি, র্যাবের অনেক গাড়ি রাস্তায় দাঁড় করানো। আমাকে দেখে র্যাবের এক সদস্য একটি গলি দেখিয়ে সেদিকে যেতে বললেন। একটু এগোতেই মনে হলো, সামনে একটি ঝিল। বাড়িঘরও কম। ঝিলের ঠিক মাঝখানে একটি দোতলা বাড়ি, সেখান থেকে একজনকে ধরে আনছেন র্যাবের কয়েকজন সদস্য। কাছে আসতেই দেখি, হ্যান্ডকাফ পরা লোকটা। ছোটখাটো চেহারা। মুখে দাড়ি নেই। পরনে লুঙ্গি আর স্যান্ডো গেঞ্জি। সারা শরীর ভেজা। গা থেকে পানি পড়ছে। তাঁর পেছনেই র্যাবের মেজর আতিক।
সাতসকালে আমাকে দেখে একটু অবাক হয়ে তিনি বললেন, চিনছেন? উনি আবদুল হান্নান মুনশি। আমি বললাম, মানে—মুফতি হান্নান? এবার তিনি গলায় বেশ জোর দিয়ে একটু টেনে বললেন, ইয়েস। তো ভেজা কেন? তিনি বললেন, এত বড় জঙ্গি জীবন বাঁচাতে ঝিলের পচা পানিতে লাফ দিয়েছিল। সেখান থেকে তুলে আনলাম। এটা ২০০৫ সালের ১ অক্টোবরের সকাল।
১৯৯৯ সালে যশোরে উদীচীর অনুষ্ঠানে বোমা হামলার পর থেকেই একের পর এক জঙ্গিনেতার নাম শোনা যাচ্ছিল। বিভিন্ন সূত্র থেকে তখন আমরা জানতে পারছিলাম, আফগানিস্তান থেকে যুদ্ধফেরত একদল জঙ্গি দেশে ‘ইসলামি রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখছে। তারাই এসব হামলা করছে। এগুলোর মধ্যে ২০০০ সালের ২০ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনার জনসভায় বোমা পুঁতে রাখার ঘটনা ঘটে। তখনই আলোচনায় আসে মুফতি হান্নানের নাম।
মুফতি হান্নানের জন্ম ও বেড়ে ওঠা মূলত গোপালগঞ্জে। তিনি যশোরের গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতেন। সেখানে পড়ার সময় ১৯৮৭ সালে ‘উচ্চশিক্ষা’র জন্য পাকিস্তানের করাচিতে নিউ টাউন মাদ্রাসায় ভর্তি হন। সেখানেই জঙ্গিবাদে জড়ান। আফগানিস্তানে তখন সোভিয়েত বাহিনী যুদ্ধ করছিল। ১৯৮৮ সালে তিনি পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সীমান্তে সোভিয়েত বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিয়ে আহত হন। বাংলাদেশে ফিরে ১৯৯৪ সালে হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশে যোগ দেন। শুরুতে কোটালীপাড়া থানার প্রচার সম্পাদক ছিলেন। কিন্তু দ্রুতই নিজের সাংগঠনিক দক্ষতা আর দুর্ধর্ষ কর্মকাণ্ডের সুবাদে কেন্দ্রীয় নেতা হয়ে ওঠেন। মুফতি হান্নান আফগান স্টাইলে বাংলাদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠার তৎপরতা চালাচ্ছিলেন। প্রথমে দেশি বোমা ব্যবহার করলেও পরে পাকিস্তান থেকে গ্রেনেড সংগ্রহ করেন। এ ছাড়া বোমা বানানো এবং হামলার বিষয়েও তাঁর সামরিক প্রশিক্ষণ ছিল। তিনি নিজেও প্রশিক্ষণ দিতেন।
এটা আজ প্রতিষ্ঠিত সত্য যে, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের শুরুটাই হয়েছিল হরকাতুল জিহাদের হামলার মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশে বড় জঙ্গি হামলার বেশির ভাগ হয়েছে মুফতি আবদুল হান্নানের নেতৃত্বে ও পরিকল্পনায়। যশোরে উদীচীর অনুষ্ঠানে বোমা হামলা ছিল তাদের টেস্ট কেস। সেই ঘটনার পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে মুফতি হান্নান নিজে ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে ও পরিকল্পনায় সাত বছরে ১৩টি জঙ্গি হামলা হয়। এসব হামলায় ১০১ জন নিহত এবং ৬০০ জন আহত হন। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে প্রাণঘাতী জঙ্গি হামলার সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটে হান্নানের নেতৃত্বে।
সেই ভয়ংকর জঙ্গিকে গ্রেপ্তার নিয়ে চোর-পুলিশ খেলা চলছিল। এর কারণও ছিল। ধরা পড়ার পর হান্নান নিজেই সবার সামনে তা ফাঁস করে দেন। গ্রেপ্তার করা হান্নানকে সেদিন বিকেলে র্যাব-১-এর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে আনা হয়। তখন সাংবাদিকেরা তাঁকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। জবাবে হান্নান বলেন, গোপালগঞ্জের ঘটনার পর তিনি কিছুদিন চুপ করে ছিলেন। এরপর চারদলীয় জোট সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করেন। মাসিক মদিনা পত্রিকার সম্পাদক মাওলানা মুহিউদ্দিনের মাধ্যমে তিনি তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর কাছে মামলা প্রত্যাহারের আবেদনও করেন। চারদলীয় জোট সরকারের পক্ষ থেকে তাঁকে বলা হয়, পরিস্থিতি ঠিক হয়ে গেলেই তাঁকে স্বাভাবিক জীবনযাপনের অনুমতি দেওয়া হবে। তিনি দাড়ি কেটে ফেলে একের পর এক বাসা বদল করে ঢাকাতেই থাকতে শুরু করেন। পরদিন এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর বিএনপি সরকারকে খুবই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়।
মুফতি হান্নানকে গ্রেপ্তারের পর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁকে বিভিন্ন মামলায় ৪০০ দিন রিমান্ডে রাখা হয়। দেশে আর কোনো আসামিকে এত দিন রিমান্ডে রাখার নজির নেই। তিনি সব ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকারও করেন। তাঁর বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা হয়। এগুলোর মধ্যে দুটি মামলায় ফাঁসি হয়। ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল ফাঁসি কার্যকর হয় কাশিমপুরে হাই সিকিউরিটি কারাগারে।
মুফতি হান্নানকে গ্রেপ্তারের এক দিন পর আমি তাঁর স্ত্রী জাকিয়া পারভিন রুমার সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তিনি যা বললেন, তা শুনে বিস্মিত না হয়ে পারিনি। র্যাব-১-এর অধিনায়ক (প্রয়াত) গুলজার উদ্দিন আমাকে প্রায়ই বলতেন, জঙ্গিরা সুন্দরী মেয়ে দেখে বিয়ে করে। হান্নানের স্ত্রী রুমাকে দেখে সেটা আরেকবার প্রমাণিত হলো। রুমা আমাকে বললেন, মাত্র ২১ দিন আগে তাঁরা এ বাসায় আসেন। চার হাজার টাকায় বাসাটি ভাড়া করেন হান্নান। ছেলে শাহাবুদ্দিন (৯) ও নূরুল্লাহ (৫) এবং মেয়ে নিশি (৫) ও নাজনীনকে (২) নিয়ে তাঁদের সংসার। তাঁদের সব ছেলেমেয়ে মাদ্রাসায় পড়ে। এ বাড়িতে বাইরের কারও প্রবেশাধিকার নেই। তাঁর স্বামী কারও সঙ্গে মেলামেশা করেন না। তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনও আসেন না। তাঁরা কোথায় থাকেন, সেটাও কাউকে জানানো হয় না। গ্রেপ্তারের আগপর্যন্ত স্বামীর এসব অপকর্মের কথা তিনি জানতেন না। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় হান্নানের জড়িত থাকার খবর তিনি শুনেছেন। মুফতি হান্নান তাঁর কাছে এসব কথা কখনো স্বীকার করেননি। তিনি বলেছেন, এসব ষড়যন্ত্র।
রুমা আমাকে বললেন, মুফতি হান্নান আফগানিস্তানে যুদ্ধ করেছেন বলে তিনি শুনেছেন। তবে কখনো তিনি এসব নিয়ে স্বামীকে কিছু জিজ্ঞাসা করেননি। তাঁর গ্রামের বাড়ি মাগুরায়। আগে থেকেই চেনাজানা ছিল। সেই সুবাদে ১৯৯৫ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। ২০০০ সালে কোটালীপাড়ার ঘটনার পর থেকে হান্নান বাড়ির বাইরে থাকতেন। তিনি সন্তানদের নিয়ে গ্রামের বাড়িতে বাস করতেন। তবে কোটালীপাড়ার ঘটনার পর (শেখ হাসিনার জনসভাস্থলে বোমা পুঁতে রাখা) হান্নান তাঁদের নিয়ে কিছুদিন মাগুরায় এবং কিছুদিন খুলনায় ছিলেন। আড়াই বছর আগে ঢাকায় চলে আসেন। প্রথমে তাঁরা গাজীপুরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন। সেখানে পোলট্রি খামার গড়ে তোলেন। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতে সেই ব্যবসায় লোকসান হয়। এরপর রামপুরা ডিআইটি রোড এলাকায় চলে আসেন। সেখানে একটি ইলেকট্রনিক সামগ্রীর দোকান নিয়ে হান্নান ব্যবসা শুরু করেন। এক বছর সেখানে থেকে চলে আসেন মধ্যবাড্ডার আনন্দনগরে।
রুমা বলছিলেন, হান্নান দিনের বেলা বাসা থেকে তেমন বের হন না। এলাকার লোকজনের সঙ্গে কোনো মেলামেশাও ছিল না। সব সময় তিনি নিজের নাম ‘জামান’ বলে জানাতেন। তাঁর ছেলেমেয়েরাও বাবার নাম জামান বলেই জানে।
আফগান যুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হাতের ক্ষতচিহ্ন দেখিয়ে মুফতি হান্নান নিজের ছেলেমেয়েদের বলতেন, সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি আহত হয়েছেন। তাঁর ফেরার জীবনের কোনো কথা স্ত্রী-সন্তানদের জানাতেন না। ছদ্মবেশ ধরতে নিজের নামটি পর্যন্ত বদলে ফেলেছিলেন। কিন্তু এত কিছু লুকানোর পরও শেষরক্ষা হলো? ভুল রাজনীতি এবং ভুল পৃষ্ঠপোষকতা কীভাবে সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে, মুফতি হান্নান তার জ্বলন্ত উদাহরণ।
আরও পড়ুন

গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
১৫ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
১৫ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
১৫ দিন আগে
রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

ফোন বাজছে তো বাজছেই। ভোরের ঘুমে নিমগ্ন। চোখ মেলে স্ক্রিনে দেখি র্যাবের কমান্ডার মাসুক হাসান। হ্যালো বলতেই বললেন, দৌড় দেন মধ্যবাড্ডার আনন্দনগরে। বিগ শট। নিমেষে ঘুম উবে গেল। পড়িমরি করে উঠে বাইকটা নিয়েই দিলাম ছুট। সোজা বাড্ডায়। ফজরের নামাজ পড়ে লোকজন সবে বের হচ্ছেন। মধ্যবাড্ডার মোড়ে এসে এক মুসল্লির কাছ
১৬ এপ্রিল ২০২২
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
১৫ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
১৫ দিন আগে
রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

ফোন বাজছে তো বাজছেই। ভোরের ঘুমে নিমগ্ন। চোখ মেলে স্ক্রিনে দেখি র্যাবের কমান্ডার মাসুক হাসান। হ্যালো বলতেই বললেন, দৌড় দেন মধ্যবাড্ডার আনন্দনগরে। বিগ শট। নিমেষে ঘুম উবে গেল। পড়িমরি করে উঠে বাইকটা নিয়েই দিলাম ছুট। সোজা বাড্ডায়। ফজরের নামাজ পড়ে লোকজন সবে বের হচ্ছেন। মধ্যবাড্ডার মোড়ে এসে এক মুসল্লির কাছ
১৬ এপ্রিল ২০২২
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
১৫ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
১৫ দিন আগে
রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ফোন বাজছে তো বাজছেই। ভোরের ঘুমে নিমগ্ন। চোখ মেলে স্ক্রিনে দেখি র্যাবের কমান্ডার মাসুক হাসান। হ্যালো বলতেই বললেন, দৌড় দেন মধ্যবাড্ডার আনন্দনগরে। বিগ শট। নিমেষে ঘুম উবে গেল। পড়িমরি করে উঠে বাইকটা নিয়েই দিলাম ছুট। সোজা বাড্ডায়। ফজরের নামাজ পড়ে লোকজন সবে বের হচ্ছেন। মধ্যবাড্ডার মোড়ে এসে এক মুসল্লির কাছ
১৬ এপ্রিল ২০২২
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
১৫ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
১৫ দিন আগে
রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী। এখন ঢাকার অপরাধজগতের নতুন নিয়ন্ত্রক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, রনি মূলত মুদিদোকানি ছিলেন। শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন কারাগারে থাকাকালে রনির সঙ্গে পরিচয় হয়। ইমন তাঁর মাধ্যমে অপরাধ চক্রের একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করতেন। শুরুতে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার ডিশ ব্যবসা দখল, চাঁদাবাজি ও হুমকি দেওয়ার মাধ্যমে অর্থ আদায় করে কারাগারে থাকা ইমনকে পাঠাতেন। পরে সন্ত্রাসী ইমনের শিষ্যদের ব্যবহার করে বড় বড় কাজ করতে থাকেন। মিরপুর এলাকায়ও ব্যবসা বড় করতে থাকেন। এভাবে রনি ধীরে ধীরে ঢাকার অপরাধজগতের পরিচিত মুখে পরিণত হন।
ডিবির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে হত্যা করার পরিকল্পনা ছিল ইমনের। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রনির নির্দেশে ফারুক হোসেন ফয়সাল ও রবিন আহম্মেদ পিয়াস গুলি করেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে দিকনির্দেশনা দিচ্ছিলেন তিনি। পুলিশ বলছে, এখন পর্যন্ত ফারুক রবিন, রুবেল, শামীম আহম্মেদ ও ইউসুফ ওরফে জীবনকে গ্রেপ্তার করতে পারলেও রনির খোঁজ মিলছে না।
ডিবির তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার রাতে নরসিংদীর ভেলানগর থেকে ফারুক, রবিন, শামীম ও রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যার পর তাঁরা প্রথমে ঢাকা থেকে সিলেট হয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ফারুক ও রবিন ব্যবহৃত অস্ত্র ও অব্যবহৃত গুলি রনির নির্দেশে রুবেলের কাছে রেখে আসেন। পরে রুবেল পেশায় দরজি ইউসুফের কাছে অস্ত্রগুলো হস্তান্তর করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ইউসুফ মোহাম্মদপুরে তাঁর বাসায় অস্ত্র ও গুলি লুকিয়ে রেখেছিলেন। মোটরসাইকেল, অস্ত্র ও নগদ ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। রনি পারিশ্রমিক হিসেবে এই টাকা দুই ভাগে ভাগ করে দুই শুটারকে দেন।
ডিবি পুলিশ জানিয়েছে, জামিনে মুক্তির পর মামুন আবার অপরাধজগতে প্রভাব বিস্তার শুরু করেন। রনিকে পাত্তা না দিয়ে তাঁর এলাকা দখল করতে চান। তখনই শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের সঙ্গে পরার্মশ করে মামুনকে পথ থেকে সরানোর পরিকল্পনা করেন রনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী দুই লাখ টাকায় ভাড়াটে খুনি ব্যবহার করেন।
পুলিশ ও ডিবি কর্মকর্তারা বলেন, এই হত্যাকাণ্ড আন্ডারওয়ার্ল্ডের পুরোনো দ্বন্দ্বের ধারাবাহিকতা। মামুন ও ইমন দুজনই ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী, যাঁরা প্রভাব বিস্তার ও এলাকা দখল নিয়ে লড়াই করছিলেন। ইমনের সহযোগী হিসেবে রনি দ্রুত অপরাধজগতে পরিচিত হয়ে ওঠেন। সর্বশেষ মামুন হত্যার পর তিনি এখন ঢাকার অপরাধজগতে নতুন চরিত্র। ডিবি অভিযান চালিয়ে মূল পরিকল্পনাকারী রনি ও তাঁর সহযোগীদের ধরার চেষ্টা করছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
পাঁচজন রিমান্ডে
মামুন হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচজনকে গতকাল মোহাম্মদপুর থানার অস্ত্র আইনের মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে ডিবি পুলিশ। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র প্রত্যেকের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী। এখন ঢাকার অপরাধজগতের নতুন নিয়ন্ত্রক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, রনি মূলত মুদিদোকানি ছিলেন। শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন কারাগারে থাকাকালে রনির সঙ্গে পরিচয় হয়। ইমন তাঁর মাধ্যমে অপরাধ চক্রের একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করতেন। শুরুতে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার ডিশ ব্যবসা দখল, চাঁদাবাজি ও হুমকি দেওয়ার মাধ্যমে অর্থ আদায় করে কারাগারে থাকা ইমনকে পাঠাতেন। পরে সন্ত্রাসী ইমনের শিষ্যদের ব্যবহার করে বড় বড় কাজ করতে থাকেন। মিরপুর এলাকায়ও ব্যবসা বড় করতে থাকেন। এভাবে রনি ধীরে ধীরে ঢাকার অপরাধজগতের পরিচিত মুখে পরিণত হন।
ডিবির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে হত্যা করার পরিকল্পনা ছিল ইমনের। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রনির নির্দেশে ফারুক হোসেন ফয়সাল ও রবিন আহম্মেদ পিয়াস গুলি করেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে দিকনির্দেশনা দিচ্ছিলেন তিনি। পুলিশ বলছে, এখন পর্যন্ত ফারুক রবিন, রুবেল, শামীম আহম্মেদ ও ইউসুফ ওরফে জীবনকে গ্রেপ্তার করতে পারলেও রনির খোঁজ মিলছে না।
ডিবির তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার রাতে নরসিংদীর ভেলানগর থেকে ফারুক, রবিন, শামীম ও রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যার পর তাঁরা প্রথমে ঢাকা থেকে সিলেট হয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ফারুক ও রবিন ব্যবহৃত অস্ত্র ও অব্যবহৃত গুলি রনির নির্দেশে রুবেলের কাছে রেখে আসেন। পরে রুবেল পেশায় দরজি ইউসুফের কাছে অস্ত্রগুলো হস্তান্তর করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ইউসুফ মোহাম্মদপুরে তাঁর বাসায় অস্ত্র ও গুলি লুকিয়ে রেখেছিলেন। মোটরসাইকেল, অস্ত্র ও নগদ ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। রনি পারিশ্রমিক হিসেবে এই টাকা দুই ভাগে ভাগ করে দুই শুটারকে দেন।
ডিবি পুলিশ জানিয়েছে, জামিনে মুক্তির পর মামুন আবার অপরাধজগতে প্রভাব বিস্তার শুরু করেন। রনিকে পাত্তা না দিয়ে তাঁর এলাকা দখল করতে চান। তখনই শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের সঙ্গে পরার্মশ করে মামুনকে পথ থেকে সরানোর পরিকল্পনা করেন রনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী দুই লাখ টাকায় ভাড়াটে খুনি ব্যবহার করেন।
পুলিশ ও ডিবি কর্মকর্তারা বলেন, এই হত্যাকাণ্ড আন্ডারওয়ার্ল্ডের পুরোনো দ্বন্দ্বের ধারাবাহিকতা। মামুন ও ইমন দুজনই ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী, যাঁরা প্রভাব বিস্তার ও এলাকা দখল নিয়ে লড়াই করছিলেন। ইমনের সহযোগী হিসেবে রনি দ্রুত অপরাধজগতে পরিচিত হয়ে ওঠেন। সর্বশেষ মামুন হত্যার পর তিনি এখন ঢাকার অপরাধজগতে নতুন চরিত্র। ডিবি অভিযান চালিয়ে মূল পরিকল্পনাকারী রনি ও তাঁর সহযোগীদের ধরার চেষ্টা করছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
পাঁচজন রিমান্ডে
মামুন হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচজনকে গতকাল মোহাম্মদপুর থানার অস্ত্র আইনের মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে ডিবি পুলিশ। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র প্রত্যেকের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ফোন বাজছে তো বাজছেই। ভোরের ঘুমে নিমগ্ন। চোখ মেলে স্ক্রিনে দেখি র্যাবের কমান্ডার মাসুক হাসান। হ্যালো বলতেই বললেন, দৌড় দেন মধ্যবাড্ডার আনন্দনগরে। বিগ শট। নিমেষে ঘুম উবে গেল। পড়িমরি করে উঠে বাইকটা নিয়েই দিলাম ছুট। সোজা বাড্ডায়। ফজরের নামাজ পড়ে লোকজন সবে বের হচ্ছেন। মধ্যবাড্ডার মোড়ে এসে এক মুসল্লির কাছ
১৬ এপ্রিল ২০২২
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
১৫ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
১৫ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
১৫ দিন আগে