Ajker Patrika

স্বাস্থ্য খাতে বিশেষ নজর জেলা প্রশাসকদের

উবায়দুল্লাহ বাদল, ঢাকা
আপডেট : ০১ মার্চ ২০২৪, ১৪: ৩৬
স্বাস্থ্য খাতে বিশেষ নজর জেলা প্রশাসকদের

দ্বীপ জেলা ভোলার জনসংখ্যা সরকারি হিসাবে ১৯ লাখ ৩৪ হাজার ৫১৪। বিপুলসংখ্যক এই মানুষের স্বাস্থ্যসেবার জন্য আছে জেলার একমাত্র জেনারেল হাসপাতাল। এ ছাড়া আছে ছয়টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র, পাঁচটি সরকারি শিশুসদন, একটি ডায়াবেটিক হাসপাতাল ও ২৫০টি স্যাটেলাইট ক্লিনিক। ভোলার সঙ্গে অন্যান্য জেলার সড়কযোগাযোগ না থাকায় সেখানকার মানুষের চিকিৎসাসেবা একেবারেই অপ্রতুল।

জরুরি মুহূর্তেও এই জেলার বাসিন্দারা উন্নত চিকিৎসার সুযোগ পায় না। ভোলাবাসীর চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে সেখানে একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছেন জেলা প্রশাসক বা ডিসি আরিফুজ্জামান। ডিসি সম্মেলন সামনে রেখে লিখিত প্রস্তাবে তিনি বলেছেন, ভোলা থেকে বরিশাল ও ঢাকায় দ্রুত যোগাযোগের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের মাধ্যমে চিকিৎসাব্যবস্থার উন্নয়ন ও চিকিৎসা শিক্ষায় গুরুত্ব বাড়বে।

ভোলার ডিসির মতো বান্দরবান, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাঁও, মৌলভীবাজার, মুন্সিগঞ্জ, রাজবাড়ীসহ অন্তত ১২ জেলার ডিসি অভিন্ন প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। বরিশালের ডিসি শহিদুল ইসলাম আরও এক ধাপ এগিয়ে বরিশাল শহরে একটি পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশ পাঠিয়েছেন।

ডিসিদের প্রস্তাবের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডিসিদের প্রস্তাবের বিষয়টি এখনো দেখিনি। তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্য খাতের সব ধরনের অসংগতি দূর করার চেষ্টা করছি। শুধু মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা নয়, জেলা-উপজেলা হাসপাতালে যাতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পদায়ন নিশ্চিত হয়, সে জন্য একটি পদায়ন নীতিমালাও করা হচ্ছে। আশা করছি, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবা আরও উন্নত হবে।’

দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের অধিকাংশ বাড়িতে মানসম্পন্ন শৌচাগার না থাকা, বিশুদ্ধ খাওয়ার পানির সংকট এবং প্লাস্টিক বর্জ্য ও পয়োবর্জ্যের কারণে পরিবেশদূষণের চিত্র তুলে ধরেছেন কক্সবাজারের ডিসি শাহীন ইমরান। তিনি জানান, দ্বীপের পানিতে অসহনীয় মাত্রায় ই. কোলাই জীবাণু থাকায় অধিকাংশ মানুষ পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য একটি প্রকল্প নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।

এ ছাড়া বান্দরবানের ডিসি শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন সেখানে দেশের সর্বোচ্চ তিনটি পর্বতশৃঙ্গ সাকা হাফং, তাজিংডং ও কেওক্রাডংয়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপন করতে সুপারিশ করেছেন। তাঁর মতে, এতে পাহাড়ি অধিবাসী ও পর্যটকেরা এসব স্থানে গিয়ে জাতির পিতার জীবন ও মুক্তিযুদ্ধের ধারণা লাভ করবে। এমন অন্তত তিন শতাধিক প্রস্তাব বা সুপারিশ নিয়ে আগামী রোববার শুরু হচ্ছে ডিসি সম্মেলন-২০২৪।

এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (জেলা ও মাঠ প্রশাসন) আমিন উল আহসান জানান, ৩ মার্চ সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর কার্যালয়ের শাপলা হলে চার দিনের এই সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। দেশের আট বিভাগীয় কমিশনার ও ৬৪ জেলার ডিসিদের অংশগ্রহণে মাঠ প্রশাসনের সবচেয়ে বড় এই আয়োজন চলবে ৬ মার্চ পর্যন্ত।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের বক্তব্যের পাশাপাশি মাঠ প্রশাসনের উদ্ভাবন, সেবা ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের ভিডিও চিত্র প্রদর্শন, ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনারদের বক্তব্য থাকবে। সম্মেলনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্ব হলো প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ‘মুক্ত আলোচনা’। এই পর্বে ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনাররা প্রধানমন্ত্রীর সামনে সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করতে নানা ধরনের রাজনৈতিক চাপসহ বিভিন্ন বাধাবিপত্তির কথা তুলে ধরে থাকেন।

এসব শুনে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেবেন সরকারপ্রধান। সন্ধ্যায় যথারীতি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নৈশভোজ হবে। উদ্বোধনের পর রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সম্পর্কিত কার্য অধিবেশনগুলো অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রপতি, জাতীয় সংসদের স্পিকার এবং প্রধান বিচারপতির সঙ্গেও কার্য অধিবেশনে অংশ নেবেন ডিসিরা। কার্য অধিবেশনগুলোয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী ও সচিবেরা উপস্থিত থাকবেন।

জনস্বার্থ ও স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট আরও প্রস্তাব 
এবারের সম্মেলনে জনস্বার্থ ও স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট অনেক প্রস্তাব থাকছে ডিসিদের। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—হ্রদবেষ্টিত লংগদু, বরকল, জুরাছড়ি ও বিলাইছড়ি উপজেলায় নৌ অ্যাম্বুলেন্স চালুর প্রস্তাব। এ প্রসঙ্গে খাগড়াছড়ির ডিসি মো. সহিদুজ্জামান বলেছেন, হ্রদবেষ্টিত এসব উপজেলায় যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম নৌপথ। নৌ অ্যাম্বুলেন্স হলে মুমূর্ষু বা জটিল রোগীদের দ্রুত জেলা সদরের হাসপাতালে নেওয়া যাবে। ভাসানচরের জন্যও নৌ অ্যাম্বুলেন্স চেয়েছেন নোয়াখালীর ডিসি দেওয়ান মাহবুবুর রহমান। কুমিল্লার ডিসি খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে ৫০০ থেকে ১০০০ শয্যায় উন্নীত করা, হৃদ্‌রোগীদের জন্য ক্যাথল্যাব স্থাপন এবং কুমিল্লার সব সরকারি হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের ব্যবস্থা নিশ্চিতের সুপারিশ করেছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডিসি মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান সেখানে নার্সিং ইনস্টিটিউটের সক্ষমতা বাড়ানো এবং বিএসসি-ইন-নার্সিং ডিগ্রি চালুর প্রস্তাব করেছেন।

ময়মনসিংহের ডিসি দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী জরুরি ভিত্তিতে ময়মনসিংহ সদর হাসপাতাল নির্মাণ করার প্রস্তাব করেন। ঠাকুরগাঁওয়ের ডিসি মাহবুবুর রহমান সেখানে একটি আধুনিক মর্গ নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছেন। দেশের সব উপজেলায় ডায়াবেটিক হাসপাতাল নির্মাণের প্রস্তাব করেছেন মেহেরপুরের ডিসি শামীম হাসান। বরগুনার ডিসি রফিকুল ইসলাম সেখানকার জেনারেল হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পদায়নের সুপারিশ করেছেন। মৌলভীবাজারে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে হাসপাতাল ও ট্রমা সেন্টার নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছেন ডিসি ড. উর্মি বিনতে সালাম। গাজীপুরের ডিসি আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম দেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে টেলিমেডিসিন কার্যক্রম চালুর প্রস্তাব দিয়েছেন। ফরিদপুরের ডিসি কামরুল আহসান সরকারি হাসপাতালগুলোতে ২৪ ঘণ্টা প্যাথলজি ও আধুনিক মানের ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালু রাখতে সুপারিশ করেছেন। কিশোরগঞ্জের ডিসি আবুল কালাম আজাদ সেখানে শিশু হাসপাতাল ও অটিজম সেন্টার চেয়েছেন।

যথাযথ তদারকি দরকার
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সাবেক সচিব আব্দুল মান্নান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে সরকারি মানসম্মত হাসপাতাল ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাব আছে। নতুন নতুন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল হলে অবশ্যই সেটা ভালো উদ্যোগ। তার পরও বলব, গত ১০ বছরে সরকার এই খাতে যে পরিমাণ বরাদ্দ দিয়েছে বা যে পরিমাণ চিকিৎসা যন্ত্রপাতি কিনেছে, সেগুলোর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে এ নিয়ে কারও প্রশ্ন থাকার কথা নয়। কারণ, ৩২ হাজার ডাক্তার ও ৩৮ হাজার নার্স এই সেক্টরে ঠিকমতো কাজ করলে প্রতিবছর দেশ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার বিদেশ যেত না।’ তিনি বলেন, শুধু অবকাঠামো খাতে হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেই হবে না। দেশে যেসব মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল রয়েছে, তা যেন সঠিকভাবে সেবা দেয়, তা মনিটর করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। স্বাস্থ্য খাতের লুটপাট বন্ধ করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পাকিস্তানের স্পিকার ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৩৮
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বাংলাদেশে পা রেখেছেন।

আজ বুধবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে পাকিস্তান সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকায় পা রাখেন দেশটির জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক। ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রেস কাউন্সিলর ফাসিহ উল্লাহ খান জানান, বিমানবন্দরে স্পিকারকে স্বাগত জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিমানবন্দরের মুখপাত্র ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাসুদ নিশ্চিত করেছেন যে, স্পিকারকে বহনকারী ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়েই অবতরণ করে।

এর কিছুক্ষণ আগে, বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। তাঁকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। ভারতের পক্ষ থেকে এই উচ্চপর্যায়ের জানাজায় অংশগ্রহণকে দক্ষিণ এশিয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

ভুটান সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছান দেশটির পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক এস এম সামাদ জানান, বিমানবন্দরে ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা স্বাগত জানান।

আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার সাধারণ মানুষের সমাগম শুরু হয়েছে। বিদেশি প্রতিনিধিরা জানাজায় উপস্থিত থেকে কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের এই রাষ্ট্রীয় জানাজাকে কেন্দ্র করে মানিক মিয়া এভিনিউ ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘খালেদা জিয়াকে এভাবে বিদায় দিতে হবে ভাবিনি’

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৪
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রিত্বের ভার বহন করেছিলেন তিনবার। গণতন্ত্রের আন্দোলনে ছিলেন আপোসহীন নেত্রী। তাঁর শেষ বিদায়ে আজ দেশ শোকাহত। আর শোক ধারণ করে হাজারো মানুষের ভিড় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে। যেখানে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে অনুষ্ঠিত হবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা।

সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

জানাজায় অংশ নিতে সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। এছাড়াও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদেরও। কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না, কেউ নীরবে বসে আছেন মন ভার করে। পুরো এলাকা জুড়ে শোক আর নীরবতার আবহ।

লালবাগ থেকে আসা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা আজ একজন রাজনৈতিক অভিভাবককে হারালাম। এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। দোয়া করি, তারেক রহমান যেন দেশের হাল ধরতে পারেন।’

সংসদ-এলাকা

সাভার থেকে আসা দুই বন্ধু স্বপন শেখ ও মো. রিয়াজ বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে এই মুহূর্তে এভাবে বিদায় দিতে হবে, ভাবিনি। তিনি জীবনে এত ত্যাগ করেছেন, অথচ কিছুই সঙ্গে নিয়ে যেতে পারলেন না। তাঁর একমাত্র প্রাপ্তি—বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা।’

বগুড়া থেকে জানাজায় অংশ নিতে আসা মনোয়ার হোসেন মামুন বলেন, ‘এ দেশ যাঁরা শাসন করেছেন, তাঁদের সবার গায়েই কোনো না কোনো কলঙ্ক আছে। কেবল বেগম খালেদা জিয়ার কোনো কলঙ্ক নেই। তিনি ক্ষমতার লোভ করেননি। জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত সাধারণ মানুষের পাশেই ছিলেন। ”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘শেখ হাসিনা তিলে তিলে এমন একজন মানুষকে মেরে ফেলেছে। এর বিচার জনসম্মুখে হতে হবে—যে সরকারই আসুক।’

জানাজা শেষে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শহিদ রাষ্ট্রপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের পাশে বেগম খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে। এ সময় পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা, বিদেশি কূটনীতিক এবং বিএনপি মনোনীত নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।

দাফনকাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নির্ধারিত ব্যক্তিবর্গ ছাড়া অন্য কারও প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। দাফনকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যান এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল সীমিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ জুড়েই জানাজার আয়োজন করা হয়েছে। জানাজাকে ঘিরে নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সব রাষ্ট্রীয় দপ্তর যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। জনসাধারণের অংশগ্রহণ নির্বিঘ্ন করতে আশপাশের সড়কগুলোতেও অবস্থানের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সায়েদুর রহমানের পদত্যাগ

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ২৪
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান পদত্যাগ করেছেন।

তাঁর পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত হয়েছে জানিয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

তিনি কী কারণে পদত্যাগ করেছেন সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে কিছু জানানো হয়নি।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় নির্বাহী ক্ষমতা অনুশীলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন।

গত বছরের ১০ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী পদে নিয়োগ পান সায়েদুর রহমান। একই সঙ্গে তাঁকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতা অর্পণ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জানাজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু, সংসদ ভবন এলাকা লোকারণ্য

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ২৪
খালেদা জিয়ার জানাজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু, সংসদ ভবন এলাকা লোকারণ্য
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত