Ajker Patrika

১৪ কিমি উড়ালসড়ক: ১৫৩ কোটি টাকা ছাড়ের পর বাতিল হচ্ছে প্রকল্প

  • প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ছাড় হয়েছে ১৫০ কোটি টাকা
  • অফিস, আউটসোর্সিং, বেতন ও যানবাহনে খরচ ৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা
  • সাবেক রাষ্ট্রপতির অনুরোধে প্রকল্প গ্রহণ। পরিবেশগত ঝুঁকি বিবেচনায় হচ্ছে বাতিল
তৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা 
আপডেট : ১১ জুন ২০২৫, ১৫: ৩৯
১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই উড়ালসড়ক নির্মাণের উচ্চাভিলাষী প্রকল্প বাতিল করেছে সরকার। ছবি: সেতু বিভাগ
১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই উড়ালসড়ক নির্মাণের উচ্চাভিলাষী প্রকল্প বাতিল করেছে সরকার। ছবি: সেতু বিভাগ

কিশোরগঞ্জে হাওরের নাকভাঙা থেকে মরিচখালী হয়ে মিঠামইন পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি দৃষ্টিনন্দন উড়ালসড়ক নির্মাণের উচ্চাভিলাষী প্রকল্প বাতিল করেছে সরকার। কিন্তু তার আগেই প্রকল্পটির ১৫৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ছাড় হয়ে গেছে। এই প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারিত হয়েছিল ৫ হাজার ৬৫১ কোটি টাকা।

সেতু বিভাগের অধীনে চলমান, প্রক্রিয়াধীন এবং পরিকল্পনাধীন বৃহৎ প্রকল্পসংক্রান্ত একটি পর্যালোচনা সভা হয়েছে গত ২৭ এপ্রিল। সেই সভায় কিশোরগঞ্জ জেলার এই উড়ালসড়ক নির্মাণ প্রকল্প বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। ওই সভায় সভাপতির বক্তব্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ওই উড়ালসড়ক নির্মাণ প্রকল্প সম্পর্কে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এ প্রকল্প গ্রহণের ফলে হাওর অঞ্চলের জলাভূমিতে বিরূপ প্রভাবের আশঙ্কা রয়েছে মর্মে পরিবেশবাদীরা সোচ্চার হয়েছেন বলে জানান তিনি।

প্রকল্প সূত্র বলছে, ২০২৩ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পে গত এপ্রিল মাস পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৩ শতাংশ। এটি বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছিল ২০২৩ সালের জুন থেকে ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত।

সেতু বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত প্রকল্পের অর্থছাড় হয়েছে মোট ১৫৩ কোটি ৪৪ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। এর মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য বরাদ্দ ছিল প্রায় ১৫০ কোটি টাকা। বাকি প্রায় ৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে যানবাহন খরচ, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, প্রকল্পের সাইট অফিস ভাড়া, আউটসোর্সিং জনবলের বেতন, আসবাব ও অন্যান্য অফিস সরঞ্জাম বাবদ।

কাজ না হলেও এত অর্থ খরচের বিষয়ে জানতে চাইলে সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রকল্পের ১৫৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এর মধ্যে জমি অধিগ্রহণের টাকা আছে। যেহেতু জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়নি, সে জন্য টাকা রয়ে গেছে। ডিসি অফিস থেকে সেই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হবে, তার জন্য ডিসি অফিসকে আমরা চিঠি দিয়েছি।’

কেন প্রকল্প বাতিল হচ্ছে? এই বিষয়ে সেতুসচিব বলেন, পরিবেশগত ক্ষতির কারণে প্রকল্প বাতিল হচ্ছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলে হাওরের জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হবে। এ ছাড়া প্রকল্পটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ এ অঞ্চলের জন্য, তা বিবেচনায় নিয়ে জনস্বার্থে সরকার তা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রকল্পটি পুরোপুরি বাতিল করতে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত লেগে যেতে পারে।

সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আবদারে লাভজনক দেখিয়ে কিশোরগঞ্জের হাওরে ৫ হাজার ৬৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে উড়ালসড়ক প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছিল। যা পুরোপুরি সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়নের জন্য ২০২৩ সালের ১৭ জানুয়ারি একনেক সভায় অনুমোদিত হয়।

প্রকল্প গ্রহণের আগে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) দিয়ে ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি সমীক্ষাও করা হয়েছিল। সমীক্ষায় বলা হয়, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন সেতু কর্তৃপক্ষের জন্য লাভজনক হবে। ২০৩০ সালে প্রতিদিন ২৫ হাজার ৭০৮ যানবাহন চলাচল করবে। বাস চলবে ১ হাজার ৩৮২টি। মোট ২৬ হাজার যানবাহন চলবে। তবে উদ্বোধনের চার বছর পর অল্প কিছু মোটরসাইকেল, অটোরিকশা চলবে।

বাস্তবতা হলো, লাভ তো দূরে থাক, হাওরের বুক চিরে নির্মিত সড়কটি বন্যা এবং পরিবেশগত সংকট সৃষ্টির কারণ হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে প্রকল্পটি অন্তর্বর্তী সরকার বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

প্রকল্পটি বাতিলে সরকারের যুক্তির সঙ্গে পুরোপুরি একমত নন উড়ালসড়কের নকশার পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত থাকা বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান। তিনি আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের সঙ্গে ইটনা ও অষ্টগ্রামকে যুক্ত করতে এলজিইডি সড়ক নির্মাণের কাজ করছে। এতে ওই অঞ্চলে যানবাহনের সংখ্যা বাড়বে, তাই কিশোরগঞ্জের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ দরকার হবে। এই কারণে উড়ালসড়কটি গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকর হবে। হাওরের স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, তা মাথায় রেখেই পিলারের স্থান নির্ধারণসহ পুরো নকশা করা হয়েছে। আমরা পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছি সম্পূর্ণ টেকনিক্যাল ও নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে। সরকারের প্রকল্প বাতিলের সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমরা পুরোপুরি একমত নই, কারণ এটি কোনো এমবেটমেন্ট সড়ক নয়, বরং খুঁটির ওপর নির্মিত একটি উড়ালসড়ক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানের হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ৩৯
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার। ছবি: প্রেস উইং
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার। ছবি: প্রেস উইং

বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার জানান, গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। দুই দেশের ব্যবসায়ী সমাজ নতুন নতুন খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকেই ঢাকা-করাচি সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হতে পারে।

পাকিস্তানি হাইকমিশনার জানান, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাকিস্তানে উচ্চশিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। বিশেষ করে চিকিৎসাবিজ্ঞান, ন্যানো টেকনোলজি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে পড়ার বিষয়ে অনেক শিক্ষার্থী আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

লিভার ও কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য বাংলাদেশি রোগীদের পাকিস্তানে যাওয়ার হার বাড়ছে উল্লেখ করে ইমরান হায়দার বলেন, পাকিস্তান এ-সংক্রান্ত বিশেষায়িত চিকিৎসাক্ষেত্রে বাংলাদেশের চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা প্রদানের সুযোগ দিতে প্রস্তুত।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান যোগাযোগকে স্বাগত জানান। তিনি সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সাংস্কৃতিক, শিক্ষামূলক এবং সরাসরি জনযোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও সম্প্রসারণের জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্র খুঁজে বের করার পরামর্শ দেন প্রধান উপদেষ্টা।

হাইকমিশনার ইমরান হায়দারের দায়িত্ব পালনকালে দুই দেশের মধ্যে যৌথ বিনিয়োগের নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-বিষয়ক (এসডিজি) সমন্বয়কারী ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজ রাতে চাঁদপুর ও দক্ষিণাঞ্চলে নৌযান চলাচল বন্ধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এমভি কীর্তনখোলা ১০ লঞ্চ। ছবি: সংগৃহীত
এমভি কীর্তনখোলা ১০ লঞ্চ। ছবি: সংগৃহীত

ঘন কুয়াশার কারণে আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে চাঁদপুর ও দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সব ধরনের নৌযান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

আজ বিআইডব্লিউটিএর জারি করা এক বিশেষ নৌ চলাচল বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে যেসব লঞ্চ নির্দিষ্ট গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রাপথে রয়েছে, সেসবসহ অন্য সব নৌযানকে অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল বিধিমালা, ১৯৭৬ অনুসরণ করে চলাচল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, চাঁদপুরের হাইমচরে মেঘনা নদীতে গত বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে ঘন কুয়াশার কারণে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি জাকির সম্রাট-৩ ও বরিশালগামী অ্যাডভেঞ্চার-৯ নামে দুই লঞ্চের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় চার যাত্রী নিহত হন এবং আহত হন বেশ কয়েকজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৬ শিক্ষানবিশ এএসপিকে চাকরি থেকে অপসারণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
৬ শিক্ষানবিশ এএসপিকে চাকরি থেকে অপসারণ

৪১তম বিসিএস ব্যাচে নিয়োগ পাওয়া ছয় শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারকে (এএসপি) চাকরি থেকে অপসারণ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। অপসারণ করা এএসপিরা হলেন মো. দেলোয়ার হোসেন, মাহমুদুল হক, মো. ইসহাক হোসেন, মো. মশিউর রহমান, মুহাম্মদ রাকিব আনোয়ার ও সাঈদ করিম মুগ্ধ।

আজ রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ-১ শাখার জারি করা প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালার ৬এর ২(এ) বিধি অনুযায়ী ওই ছয় শিক্ষানবিশ এএসপিকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে।

বিধিতে বলা আছে, শিক্ষানবিশ মেয়াদ চলাকালে কেউ সংশ্লিষ্ট চাকরিতে বহাল থাকার অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হলে সরকারি কর্ম কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ না করেই সরাসরি নিয়োগ অবসান করতে পারবে সরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের ‘অতিরঞ্জিত’ মন্তব্য প্রত্যাখ্যান বাংলাদেশের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ২৬
সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের ‘অতিরঞ্জিত’ মন্তব্য প্রত্যাখ্যান বাংলাদেশের

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পরিস্থিতি সম্পর্কে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে অতিরঞ্জিত বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে বর্ণনা করে তা প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন মহলকে সংখ্যালঘু বিষয়ে বিভ্রান্তিকর বর্ণনা ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা।

আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এস এম মাহবুবুল আলম এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন। তিনি বিকেলে সাংবাদিকদের এই বিবৃতির কথা জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পরিস্থিতি সম্পর্কে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের সাম্প্রতিক মন্তব্য আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তাঁর মন্তব্য বাস্তব পরিস্থিতির প্রতিফলন নয়। বাংলাদেশ সরকারের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে এমন কোনো বিভ্রান্তিকর, অতিরঞ্জিত বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বর্ণনা বাংলাদেশ সরকার স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করে।’

বিচ্ছিন্ন কিছু অপরাধমূলক ঘটনাকে পরিকল্পিতভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর প্রাতিষ্ঠানিক নিপীড়ন হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। এতে আরও বলা হয়, ভারতের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশবিরোধী মনোভাব ছড়িয়ে দিতে সেটার অপব্যবহার করা হচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, কিছু মহলে বাছাই করা ও পক্ষপাতদুষ্ট দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলোকে অতিরঞ্জিত ও বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে সাধারণ ভারতীয় জনগণকে বাংলাদেশ, ভারতের বাংলাদেশি কূটনৈতিক মিশন এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উসকে দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র যে ব্যক্তির উদাহরণ দিয়েছেন, তিনি ছিলেন তালিকাভুক্ত অপরাধী। চাঁদাবাজির সময় তাঁর মুসলিম সহযোগীর সঙ্গে থাকা অবস্থায় তাঁর দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু ঘটে, যাঁকে পরে গ্রেপ্তার করা হয়। এই অপরাধমূলক ঘটনাকে সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণের প্রেক্ষাপটে উপস্থাপন করা বাস্তবসম্মত নয়, বরং বিভ্রান্তিকর।

বাংলাদেশ সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর বর্ণনা ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ভারতের বিভিন্ন মহলকে বিভ্রান্তিকর বর্ণনা ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছে, যা সুপ্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক ও পারস্পরিক আস্থার চেতনাকে ক্ষুণ্ন করে।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত