জিনাতুন নুর

পঞ্চদশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত ১ হাজার বছর সময়কে মধ্যযুগ ধরা হয়। সেটা ছিল সাংস্কৃতিক বিবর্তন ও ধর্মীয় ক্ষমতা চর্চার সুবর্ণ সময়। বিশ্বজুড়ে তখন জনসংখ্যা বেড়ে চলছে, গড়ে উঠছে নতুন নতুন শহর। ক্রমবর্ধমান এই জনসংখ্যাই সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে শাসকশ্রেণির জন্য উপকারী ক্ষমতার প্রতীক হয়ে ওঠে। সেই সময়ে আটটি উল্লেখযোগ্য শহরের গোড়াপত্তন হয়। আয়তন বা জনসংখ্যার দিক থেকে নেহাত বিশাল না হলেও যুগের হিসাবে শহরগুলো গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই আট শহর নিয়েই আমাদের আজকের গল্প।
১। আঙ্খোর
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ এখনকার কম্বোডিয়ায় মধ্যযুগে খেমার সাম্রাজ্য ছিল প্রভাবশালী। ১১০০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে সেই সাম্রাজ্যে আঙ্খোর নামে শহর ছিল। আয়তন ও জনসংখ্যা উভয় দিক থেকেই শহরটি ছিল বিশাল। এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম শহর হিসেবে বিবেচনা করা হতো। ১ হাজার বর্গ কিলোমিটারজুড়ে (৩৯০ বর্গমাইল) বিস্তৃত সেই নগরে তখন প্রায় ১০ লাখ মানুষের বসবাস করত। ‘মন্দিরের শহর’ হিসেবে পরিচিত প্রাচীন এই নগরী ১৪০০ খ্রিষ্টাব্দের কাছাকাছি সময় পর্যন্ত পরিত্যক্ত ছিল। কিন্তু এখন বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা এবং একই সঙ্গে প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশনস্থলও। তবে দেশটিতে কয়েক শ বছর ধরে চলমাণ সংঘাতের কারণে প্রত্নতাত্ত্বিক উন্নয়নকাজ বাধাগ্রস্ত হয়। এর ফলে এখনো উন্নয়নকাজ চলছে।
বিশাল ওই শহরের অনেক কিছুই কালের আবর্তে হারিয়ে গেছে, কিন্তু আঙ্খোর ওয়াত নামে একটি স্থাপনা টিকে আছে। এটি ছিল খেমার সাম্রাজ্যের রাজধানী। জাতিসংঘ ঘোষিত ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’ বা বিশ্বের অন্যতম ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় এটি সুসংরক্ষিত আছে।
আঙ্খোর শহর ছিল দেবরাজদের শহর। তাদের হিন্দু দেবতা শিবের পার্থিব অবতার বলে মনে করা হতো। শহরটির জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যালয়, সরকারি হাসপাতালের সংখ্যাও বাড়ে। প্রাচীন এই রাজধানী শহরে ছিল বিমানবন্দরের রানওয়ের মতো প্রশস্ত রাস্তা, খাল ও ধানের খেত; ছিল হাতে কাটা বিশ্বের বৃহত্তম কৃত্রিম জলাশয়; আর ফসলের বাম্পার উৎপাদনের জন্য বর্ষা মৌসুমকে কেন্দ্র করে জটিল সেচব্যবস্থা।
২। বাগদাদ
মধ্যযুগের শুরুতে আব্বাসীয় খিলাফত বা সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল আধুনিক ইরাকের বাগদাদ। ৭৬২ খ্রিষ্টাব্দে শহরটির নির্মাণকাজ শুরু হয় এবং অষ্টম শতকের মধ্যে শেষ হয়। সেখানে প্রায় ৫ লাখ মানুষের বাস ছিল। সে সময় শহরটি মধ্যপ্রাচ্যের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছিল। ৭০০ খ্রিষ্টাব্দ ও ৯০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে প্রায় বাগদাদ বা এর শহরতলিতে ১০ লাখ মানুষ বসবাস করত। ট্রাইগ্রিস নদীর উভয় পাশে দুটি অর্ধবৃত্ত নকশায় বাগদাদের গোড়াপত্তন হয়। আধুনিক অবকাঠমোর সঙ্গে শহরটিতে ছিল কৃত্রিম খাল, পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা, বেশ কিছু নাগরিক চত্বর ও প্রশস্ত রাস্তা।
শহরটির সোনালি যুগের কয়েক শতাব্দী পর ইয়াকুত নামে এক আরব গবেষক সেখানে বাস করতেন। তাঁর মতে, বাগদাদের রাস্তাগুলো ৪০ হাত বা ৬০ ফুট প্রশস্ত করে তৈরি করা হয়েছিল এবং শহরে প্রাচীরের মধ্যে আবর্জনা ফেলা নিষিদ্ধ ছিল। দশম শতকের পরে আব্বাসীয় শাসনের পতন হয়। কারণ, মধ্যযুগে বাগদাদ শহরে দুটি বড় হামলা হয়। এর মধ্যে ১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দে মোঙ্গলরা এবং ১৪০১ খ্রিষ্টাব্দে তাদেরই উত্তরসূরি তাইমুরের আক্রমণের শিকার হয়। আব্বাসীয়দের পতন হলেও বাগদাদ শহর গুরুত্ব হারায়নি। এটি এখনো আধুনিক ইরাকের রাজধানী এবং আরব বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর।
৩। কনস্টান্টিনোপল
বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের বৃহৎ কেন্দ্রভূমি ছিল কনস্টান্টিনোপল। রোমান সম্রাট কনস্টান্টিনের আমলে ৩৩০ খ্রিষ্টাব্দে, অর্থাৎ প্রাচীন যুগে এই শহরের গোড়াপত্তন হয়। কিন্তু মধ্যযুগও কনস্টান্টিনোপল শহরের জন্য স্বর্ণযুগ ছিল বলা যায়। পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর বিশ্বের মনোযোগের কেন্দ্রে চলে আসে পূর্ব রোমান সাম্রাজ্য। তখনো কনস্টান্টিনোপল থেকেই রোম শাসন করতেন সম্রাট জাস্টিনিয়ান।
রোমান থেকে বাইজেন্টাইন, বাইজেন্টাইন থেকে অটোমান সাম্রাজ্য এবং রোমান সাম্রাজ্যে প্রত্যাবর্তনের এই বড় সময়ের পালাবদলের জোয়ারের মধ্যেও নিজ অবয়বে বহাল ছিল কনস্টান্টিনোপল। ইতিহাসের নানা সময়ে এই শহরে প্রায় কোটি মানুষের বাস ছিল এবং এটিই ছিল প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র। ইউরোপ ও এশিয়া—দুই মহাদেশজুড়ে থাকা শহর হিসেবে অনন্য অবস্থানের কারণে আন্তর্জাতিক বিষয় ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কনস্টান্টিনোপল মুখ্য ভূমিকা রাখে।
ভেনিস, মধ্যপ্রাচ্য ও দূরপ্রাচ্যের ব্যবসায়ী ও বণিকেরা এই শহরে আসত। এর ফলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে শহরটি ব্যাপক পরিচিত পায়। কনস্টান্টিনোপল অবিরত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে এবং যুদ্ধ ও অবরোধের কারণে নিশ্চিহ্ন হওয়ার ঝুঁকিতে ছিল। তার পরও মধ্যযুগীয় বড় শহর হিসেবে শহরটি টিকে ছিল। শুধু তাই নয়, ১৪৫৩ খ্রিষ্টাব্দে এটি অটোমান সাম্রাজ্যের রাজধানী হয়ে ওঠে। পুরো মধ্যযুগে এবং আধুনিক যুগেও কনস্টান্টিনোপলের প্রভাবশালী ভূমিকা অব্যাহত ছিল। কনস্টান্টিনোপলের নাম পাল্টেছে, এটির নাম এখন ইস্তানবুল। তুরস্কের বড় শহর হিসেবে এটি ইউরোপ ও এশিয়া—দুই মহাদেশের আন্তর্জাতিক বিষয়েই জোরালো প্রভাব রাখে।
৪। কায়রো
বাগদাদের বিপরীতে ইসলামি বিশ্বের বৃহত্তম শহর হিসেবে ৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে মিসরে কায়রো শহর নির্মাণ করে ফাতেমীয় রাজবংশ। এই শহর যেমন ফাতেমীয় সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল, তেমনি গোটা মধ্যযুগে ইসলামী শিক্ষা ও ক্ষমতার উৎসও ছিল এটি। কায়রো ‘হাজার মিনারের শহর’ হিসেবে পরিচিত। এটি বাস্তবিকই ইসলামি শহর। শহরজুড়ে হাজারের বেশি মসজিদ আছে বলে কেউ কেউ দাবি করেন এবং সংখ্যাটি অতিরঞ্জিত নয়। মধ্যযুগের কায়রোতে এসব মসজিদ ইবাদতের জায়গার পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও প্রশাসনকেন্দ্র হিসেবেও কাজ করত। আল-হাসান মসজিদ ছিল এই শহরের প্রথম শিক্ষাকেন্দ্র। সেখানে ধনী কিংবা গরিব হাজার হাজার মিসরীয় ও বিদেশি তরুণ শিক্ষা নিত।
মামলূক রাজবংশ শহরটি দখলে নিলে মসজিদগুলো হাসপাতাল ও কমিউনিটি সেন্টার হিসেবেও ব্যবহৃত হতো। দাসত্ব থেকে লড়াই করে ক্ষমতা অর্জন করায় মামলুক শাসকেরা শহরের প্রান্তিক মানুষের প্রতি যত্নশীল ছিল। তাঁরা শহরটিকে ক্রুসেডের বিরুদ্ধে শক্তিশালী ইসলামি দুর্গ হিসেবে গড়ে তোলে। ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়ার বাণিজ্যপথের সঙ্গমস্থলে থাকায় শহরটি মধ্যযুগের অন্যতম প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র ছিল। অবস্থানগত কারণে কায়রো বিশ্বের অন্যতম ধনী মধ্যযুগীয় শহরে পরিণত হয়।
কায়রো এখনো মিসরের রাজধানী এবং একই সঙ্গে আরব বিশ্বের বৃহত্তম শহর। আধুনিককালের কিছু দ্বন্দ্ব-সংঘাতের ঘটনার মধ্যেও এটি উত্তর আফ্রিকার ইসলামি শক্তির বড় কেন্দ্র।
৫। হ্যাংঝু
চীনের সাতটি প্রাচীন রাজধানীর মধ্যে হ্যাংঝু উল্লেখযোগ্য। সম্ভবত দ্বাদশ শতাব্দীতে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম শহরও এটি। গ্র্যান্ড ক্যানালের শেষ প্রান্তে অবস্থিত ১০ লাখ মানুষের শহরটি একাধিক চীনা রাজবংশের রাজধানী ছিল।
অবস্থানগত কারণে হ্যাংঝু সমৃদ্ধি পায়। কারণ সিল্করোড নামে চীনের সঙ্গে বিশ্ব বাণিজ্য পথের সঙ্গে এর সরাসরি সংযোগ ছিল। এটি বাণিজ্য নগরী হিসেবে বিকাশ লাভ করেছিল। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনে সুদূর ইরানেও মধ্যযুগে চীনা পণ্যের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এটি ইউয়ে রাজ্য এবং দক্ষিণ সং রাজবংশের রাজধানী ছিল। এমনকি যখন এটি রাজধানী শহর ছিল না, তখনো কৌশলগত অবস্থানের কারণে হ্যাংঝু শক্তিশালী শহর ছিল।
ধনসম্পদের জন্য হ্যাংঝু সুপরিচিত ছিল। চীনা সংস্কৃতির মহান কেন্দ্রও ছিল এটি। প্রাচীন সাহিত্য ও বৌদ্ধধর্মের সঙ্গে সম্পর্কিত এই শহর। এর সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব মার্কো পলো ও ইবনে বতুতার মতো পর্যটকককে আকৃষ্ট করেছিল। তাদের লেখায় শহরটির চমৎকার বর্ণনা উঠে এসেছে। মার্কো পলোর মতে, এটি নিঃসন্দেহে ‘বিশ্বের সেরা ও সবচেয়ে জমকালো শহর’। এই শহরের পাকা রাস্তা ও বিপুলসংখ্যক সেতু দেখে তিনি বিস্মিত হন। মার্কো পলোর লেখাগুলো ত্রয়োদশ শতাব্দীর হ্যাংঝুর জাঁকজমক অবস্থা তুলে ধরে। তখনো এটি বিশ্বের বৃহত্তম শহর ছিল। হ্যাংঝু এখনো গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র। সেখানে প্রচুর পরিমাণে ধান ও রেশম উৎপাদন হয়। এখন রাজধানী না হলেও এটি অন্তত ১ কোটি মানুষের আধুনিক নগর।
৬। প্যারিস
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। মধ্যযুগের শুরুতে বিশাল বহুজাতিক শহরে বিকশিত হয় এটি। এর আগে এই শহরের তেমন গুরুত্ব ছিল না। দশম শতকের প্যারিসে একটি ক্যাথেড্র্যাল ছাড়া আর কিছু ছিল না। তবু প্রাদেশিক শহরের চেয়ে একটু বেশিই মর্যাদা পেত এই শহর। কিন্তু ক্যাপেশীয় রাজারা ইল দু লা সিতে থেকে ফ্রান্স শাসনের সিদ্ধান্ত নিলে অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। এটাকে যে তারা শুধু রাজপ্রাসাদে পরিণত করেছে, তাই নয়। এখানে নতুন নটর ডেম ক্যাথেড্রালকেও জায়গা দেওয়া হয়। ক্যাপেশীয়দের অধীনে প্যারিস একাধারে ধর্মীয়, শিক্ষা ও বাণিজ্য—তিন দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। শিন নদীর বাম তীর ছিল ফরাসি গির্জা মঠের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ছিল বেশ কিছু কলেজ, যেগুলো ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। ডান তীরে বন্দর, বণিকশ্রেণি ও বাজার প্যারিসকে বাণিজ্যকেন্দ্রে পরিণত করে। ধর্ম ও শিক্ষার সঙ্গে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি প্যারিসকে স্বর্ণ ও রৌপ্যখচিত পান্ডুলিপির গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলে। পাশাপাশি এই শহরে প্রথম গথিক নির্মাণশৈলীর প্রচলন হয়।
১৩২৮ খ্রিষ্টাব্দের আগে প্যারিসের বাসিন্দা কত ছিল, তা নির্দিষ্ট ছিল না। কিন্তু সে বছরের আদমশুমারিতে শুধু শহরের ভেতরে ৬১ হাজার পরিবার পাওয়া যায়। তা থেকে সে সময় পুরো প্যারিসের জনসংখ্যা ২ লাখ ১০ হাজার থেকে ২ লাখ ৭০ হাজারের মধ্যে ছিল বলে অনুমান করা যায়। শহরটি মহামারি ও বহিঃশক্তির অবরোধের কবলে পড়ে কিছুটা বিপর্যস্ত হলে নিজেকে সামলে নিয়ে মধ্যযুগে পশ্চিমা বিশ্বের অনত্যম জনবহুল শহরে পরিণত হয়।
৭। তেনোচতিতলান
এখনকার মেক্সিকোতে অবস্থিত তেনোচতিতলান প্রাক-কলম্বিয়ান আমেরিকায়, অর্থাৎ ক্রিস্টোফার কলম্বাসের অভিযানের মাধ্যমে ইউরোপের উপনিবেশ হওয়ার আগে পর্যন্ত আমেরিকার বৃহত্তম শহর ছিল। পঞ্চদশ শতক পর্যন্ত এক শতাব্দীজুড়ে এটি ছিল বিস্তৃত আজটেক সাম্রাজ্যের রাজধানী। টেক্সকোকো দ্বীপের মাঝখানে তেনোচতিতলান শহর গড়ে তোলা হয়। সেখানে ছিল রাজকীয় প্রাসাদ, মন্দির, বাজার ও অন্যান্য সরকারি ভবন। এ সবই আজটেক জনগোষ্ঠীর কল্যাণের পাশাপাশি শহর ও সাম্রাজ্যের সমৃদ্ধিতে অবদান রাখে।
অ্যাজটেক সম্রাজ্যের বিশাল বাণিজ্য নেটওয়ার্ক ছিল, যা তেনোচতিতলান থেকে ম্যাক্সিকো উপসাগর এবং সম্ভবত ইনকা সাম্রাজ্য পযন্ত বিস্তৃত ছিল। এই শহরের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ২ লাখের কাছাকাছি। সেই জনগোষ্ঠী এমন সামাজিক শ্রেণিতে বিভক্ত ছিল, যা মেসোআমেরিকান বিশ্বে সবচেয়ে জটিল।
স্পেনীয় বিজেতারা এই রাজধানী শহরে পৌঁছে একে সমৃদ্ধশালী হিসেবেই খুঁজে পায়। জনসংখ্যার দিক থেকে ইউরোপের ভেনিস কিংবা প্যারিসের সমকক্ষ ছিল। সম্রাট দ্বিতীয় মক্তেজুমার রাজপ্রাসাদ ছিল বিস্তৃত ভবন, যেখানে চিড়িয়াখানা, বোটানক্যিল গার্ডেন ও অ্যাকুরিয়াম ছিল। হেরনান কর্তেসের নেতৃত্বে স্পেনীয়রা শহরটিকে দখল করে নয়া স্পেনের রাজপ্রতিনিধির পৌরসভায় পরিণত করে। কয়েক শতাব্দী ধরে শহরটি স্পেনীয় শাসনের অধীনে থাকলেও মেক্সিকোর রাজধানী স্থানান্তরিত হয়নি; মধ্যযুগীয় রাজধানীটির আশপাশেই তা গড়ে ওঠে। আধুনিক ম্যাক্সিকো শহরের ঐতিহাসিক কেন্দ্রে তেনোচতিতলানের অবস্থান। প্রায় ১ কোটি মানুষের শহরটি আমেরিকার মধ্যে অন্যতম জনবহুল।
৮। ভেনিস
মধ্যযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ নৌশক্তিধর হিসেবে বিবেচিত ভেনিস। পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর পালিয়ে আসা শরণার্থীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে এই শহরের যাত্রা শুরু হয়। চারপাশ ঘিরে থাকা লেগুন বা উপহ্রদ কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি ভেনিসকে প্রজাতন্ত্রে পরিণত করতে সহায়তা করেছে। এই লেগুন ভূমধ্যসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ায় ইউরোপের বাকি অংশের সঙ্গে রোমানদের বৃহত্তর বাণিজ্য সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়।
রোমান সাম্রাজ্য ও অপর ইতালীয় শক্তি থেকে উচ্চমাত্রার স্বাধীনতা পেয়েছিল ভেনিস—সেটা ধর্ম ও শাসনব্যবস্থা উভয় দিক থেকেই ছিল। এমন প্রেক্ষাপটে পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল দখল করা শুরু করে এই নগররাষ্ট্র। ভেনিসের শাসক ছিলেন একজন ডিউক। তিনি ভেনিসের গ্রেট কাউন্সিল দ্বারা নির্বাচিত হতেন এবং আজীবন দায়িত্ব পালন করতেন। ভেনিস নামে প্রজাতন্ত্র হলেও এটি শাসন করত বড় ব্যবসায়ীদের গোষ্ঠী।
ক্রমাগত সমৃদ্ধ হতে হতে মধ্যযুগে শিল্প, স্থাপত্য ও প্রকাশনার বড় কেন্দ্রে পরিণত হয় ভেনিস। ইতালি রেনেসাঁ বা পুনর্জাগরণের আগে ভেনিসে রেনেসাঁ শুরু হয়। অর্থনৈতিক দক্ষতা এবং নৌ প্রজাতন্ত্রের সেবায় শিল্পের উন্নয়নের প্রত্যক্ষ পরণতি ছিল এই রেনেসাঁ। ষোড়শ শতকের আগপর্যন্ত ভেনিস ছিল কিছুটা অপ্রতিদ্বন্দ্বী। এরপর আমেরিকা ও ইস্ট ইন্ডিজে বাণিজ্যপথ চালু হলে তার প্রভাব কমে। কারণ, তখন অন্যান্য ইউরোপীয় শক্তিও বাণিজ্য বাড়িয়ে ভেনিসের সমকক্ষ প্রভাব অর্জন করে।
উনিশ শতকের শেষের দিকে একক ইতালি রাষ্ট্রে অন্তর্ভুক্ত হয় ভেনিস। এটি এখন ইতালির বড় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। তবে আগের মতো প্রভাব আর নেই। চারপাশের খালের কারণে ভেনিস ছিল অনন্য এবং সম্পূর্ণরূপে নৌশক্তিনির্ভর। বিশাল নৌবহরের পরিবর্তে সেই খালগুলোতে এখন পর্যটকদের পছন্দের গন্ডোলা রাইড ও ওয়াটার ট্যাক্সি চলে।
(দ্য কালেক্টর থেকে অনূদিত)
লেখক: ইতিহাসে স্নাতকোত্তর, ইডেন কলেজ

পঞ্চদশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত ১ হাজার বছর সময়কে মধ্যযুগ ধরা হয়। সেটা ছিল সাংস্কৃতিক বিবর্তন ও ধর্মীয় ক্ষমতা চর্চার সুবর্ণ সময়। বিশ্বজুড়ে তখন জনসংখ্যা বেড়ে চলছে, গড়ে উঠছে নতুন নতুন শহর। ক্রমবর্ধমান এই জনসংখ্যাই সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে শাসকশ্রেণির জন্য উপকারী ক্ষমতার প্রতীক হয়ে ওঠে। সেই সময়ে আটটি উল্লেখযোগ্য শহরের গোড়াপত্তন হয়। আয়তন বা জনসংখ্যার দিক থেকে নেহাত বিশাল না হলেও যুগের হিসাবে শহরগুলো গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই আট শহর নিয়েই আমাদের আজকের গল্প।
১। আঙ্খোর
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ এখনকার কম্বোডিয়ায় মধ্যযুগে খেমার সাম্রাজ্য ছিল প্রভাবশালী। ১১০০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে সেই সাম্রাজ্যে আঙ্খোর নামে শহর ছিল। আয়তন ও জনসংখ্যা উভয় দিক থেকেই শহরটি ছিল বিশাল। এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম শহর হিসেবে বিবেচনা করা হতো। ১ হাজার বর্গ কিলোমিটারজুড়ে (৩৯০ বর্গমাইল) বিস্তৃত সেই নগরে তখন প্রায় ১০ লাখ মানুষের বসবাস করত। ‘মন্দিরের শহর’ হিসেবে পরিচিত প্রাচীন এই নগরী ১৪০০ খ্রিষ্টাব্দের কাছাকাছি সময় পর্যন্ত পরিত্যক্ত ছিল। কিন্তু এখন বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা এবং একই সঙ্গে প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশনস্থলও। তবে দেশটিতে কয়েক শ বছর ধরে চলমাণ সংঘাতের কারণে প্রত্নতাত্ত্বিক উন্নয়নকাজ বাধাগ্রস্ত হয়। এর ফলে এখনো উন্নয়নকাজ চলছে।
বিশাল ওই শহরের অনেক কিছুই কালের আবর্তে হারিয়ে গেছে, কিন্তু আঙ্খোর ওয়াত নামে একটি স্থাপনা টিকে আছে। এটি ছিল খেমার সাম্রাজ্যের রাজধানী। জাতিসংঘ ঘোষিত ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’ বা বিশ্বের অন্যতম ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় এটি সুসংরক্ষিত আছে।
আঙ্খোর শহর ছিল দেবরাজদের শহর। তাদের হিন্দু দেবতা শিবের পার্থিব অবতার বলে মনে করা হতো। শহরটির জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যালয়, সরকারি হাসপাতালের সংখ্যাও বাড়ে। প্রাচীন এই রাজধানী শহরে ছিল বিমানবন্দরের রানওয়ের মতো প্রশস্ত রাস্তা, খাল ও ধানের খেত; ছিল হাতে কাটা বিশ্বের বৃহত্তম কৃত্রিম জলাশয়; আর ফসলের বাম্পার উৎপাদনের জন্য বর্ষা মৌসুমকে কেন্দ্র করে জটিল সেচব্যবস্থা।
২। বাগদাদ
মধ্যযুগের শুরুতে আব্বাসীয় খিলাফত বা সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল আধুনিক ইরাকের বাগদাদ। ৭৬২ খ্রিষ্টাব্দে শহরটির নির্মাণকাজ শুরু হয় এবং অষ্টম শতকের মধ্যে শেষ হয়। সেখানে প্রায় ৫ লাখ মানুষের বাস ছিল। সে সময় শহরটি মধ্যপ্রাচ্যের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছিল। ৭০০ খ্রিষ্টাব্দ ও ৯০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে প্রায় বাগদাদ বা এর শহরতলিতে ১০ লাখ মানুষ বসবাস করত। ট্রাইগ্রিস নদীর উভয় পাশে দুটি অর্ধবৃত্ত নকশায় বাগদাদের গোড়াপত্তন হয়। আধুনিক অবকাঠমোর সঙ্গে শহরটিতে ছিল কৃত্রিম খাল, পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা, বেশ কিছু নাগরিক চত্বর ও প্রশস্ত রাস্তা।
শহরটির সোনালি যুগের কয়েক শতাব্দী পর ইয়াকুত নামে এক আরব গবেষক সেখানে বাস করতেন। তাঁর মতে, বাগদাদের রাস্তাগুলো ৪০ হাত বা ৬০ ফুট প্রশস্ত করে তৈরি করা হয়েছিল এবং শহরে প্রাচীরের মধ্যে আবর্জনা ফেলা নিষিদ্ধ ছিল। দশম শতকের পরে আব্বাসীয় শাসনের পতন হয়। কারণ, মধ্যযুগে বাগদাদ শহরে দুটি বড় হামলা হয়। এর মধ্যে ১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দে মোঙ্গলরা এবং ১৪০১ খ্রিষ্টাব্দে তাদেরই উত্তরসূরি তাইমুরের আক্রমণের শিকার হয়। আব্বাসীয়দের পতন হলেও বাগদাদ শহর গুরুত্ব হারায়নি। এটি এখনো আধুনিক ইরাকের রাজধানী এবং আরব বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর।
৩। কনস্টান্টিনোপল
বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের বৃহৎ কেন্দ্রভূমি ছিল কনস্টান্টিনোপল। রোমান সম্রাট কনস্টান্টিনের আমলে ৩৩০ খ্রিষ্টাব্দে, অর্থাৎ প্রাচীন যুগে এই শহরের গোড়াপত্তন হয়। কিন্তু মধ্যযুগও কনস্টান্টিনোপল শহরের জন্য স্বর্ণযুগ ছিল বলা যায়। পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর বিশ্বের মনোযোগের কেন্দ্রে চলে আসে পূর্ব রোমান সাম্রাজ্য। তখনো কনস্টান্টিনোপল থেকেই রোম শাসন করতেন সম্রাট জাস্টিনিয়ান।
রোমান থেকে বাইজেন্টাইন, বাইজেন্টাইন থেকে অটোমান সাম্রাজ্য এবং রোমান সাম্রাজ্যে প্রত্যাবর্তনের এই বড় সময়ের পালাবদলের জোয়ারের মধ্যেও নিজ অবয়বে বহাল ছিল কনস্টান্টিনোপল। ইতিহাসের নানা সময়ে এই শহরে প্রায় কোটি মানুষের বাস ছিল এবং এটিই ছিল প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র। ইউরোপ ও এশিয়া—দুই মহাদেশজুড়ে থাকা শহর হিসেবে অনন্য অবস্থানের কারণে আন্তর্জাতিক বিষয় ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কনস্টান্টিনোপল মুখ্য ভূমিকা রাখে।
ভেনিস, মধ্যপ্রাচ্য ও দূরপ্রাচ্যের ব্যবসায়ী ও বণিকেরা এই শহরে আসত। এর ফলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে শহরটি ব্যাপক পরিচিত পায়। কনস্টান্টিনোপল অবিরত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে এবং যুদ্ধ ও অবরোধের কারণে নিশ্চিহ্ন হওয়ার ঝুঁকিতে ছিল। তার পরও মধ্যযুগীয় বড় শহর হিসেবে শহরটি টিকে ছিল। শুধু তাই নয়, ১৪৫৩ খ্রিষ্টাব্দে এটি অটোমান সাম্রাজ্যের রাজধানী হয়ে ওঠে। পুরো মধ্যযুগে এবং আধুনিক যুগেও কনস্টান্টিনোপলের প্রভাবশালী ভূমিকা অব্যাহত ছিল। কনস্টান্টিনোপলের নাম পাল্টেছে, এটির নাম এখন ইস্তানবুল। তুরস্কের বড় শহর হিসেবে এটি ইউরোপ ও এশিয়া—দুই মহাদেশের আন্তর্জাতিক বিষয়েই জোরালো প্রভাব রাখে।
৪। কায়রো
বাগদাদের বিপরীতে ইসলামি বিশ্বের বৃহত্তম শহর হিসেবে ৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে মিসরে কায়রো শহর নির্মাণ করে ফাতেমীয় রাজবংশ। এই শহর যেমন ফাতেমীয় সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল, তেমনি গোটা মধ্যযুগে ইসলামী শিক্ষা ও ক্ষমতার উৎসও ছিল এটি। কায়রো ‘হাজার মিনারের শহর’ হিসেবে পরিচিত। এটি বাস্তবিকই ইসলামি শহর। শহরজুড়ে হাজারের বেশি মসজিদ আছে বলে কেউ কেউ দাবি করেন এবং সংখ্যাটি অতিরঞ্জিত নয়। মধ্যযুগের কায়রোতে এসব মসজিদ ইবাদতের জায়গার পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও প্রশাসনকেন্দ্র হিসেবেও কাজ করত। আল-হাসান মসজিদ ছিল এই শহরের প্রথম শিক্ষাকেন্দ্র। সেখানে ধনী কিংবা গরিব হাজার হাজার মিসরীয় ও বিদেশি তরুণ শিক্ষা নিত।
মামলূক রাজবংশ শহরটি দখলে নিলে মসজিদগুলো হাসপাতাল ও কমিউনিটি সেন্টার হিসেবেও ব্যবহৃত হতো। দাসত্ব থেকে লড়াই করে ক্ষমতা অর্জন করায় মামলুক শাসকেরা শহরের প্রান্তিক মানুষের প্রতি যত্নশীল ছিল। তাঁরা শহরটিকে ক্রুসেডের বিরুদ্ধে শক্তিশালী ইসলামি দুর্গ হিসেবে গড়ে তোলে। ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়ার বাণিজ্যপথের সঙ্গমস্থলে থাকায় শহরটি মধ্যযুগের অন্যতম প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র ছিল। অবস্থানগত কারণে কায়রো বিশ্বের অন্যতম ধনী মধ্যযুগীয় শহরে পরিণত হয়।
কায়রো এখনো মিসরের রাজধানী এবং একই সঙ্গে আরব বিশ্বের বৃহত্তম শহর। আধুনিককালের কিছু দ্বন্দ্ব-সংঘাতের ঘটনার মধ্যেও এটি উত্তর আফ্রিকার ইসলামি শক্তির বড় কেন্দ্র।
৫। হ্যাংঝু
চীনের সাতটি প্রাচীন রাজধানীর মধ্যে হ্যাংঝু উল্লেখযোগ্য। সম্ভবত দ্বাদশ শতাব্দীতে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম শহরও এটি। গ্র্যান্ড ক্যানালের শেষ প্রান্তে অবস্থিত ১০ লাখ মানুষের শহরটি একাধিক চীনা রাজবংশের রাজধানী ছিল।
অবস্থানগত কারণে হ্যাংঝু সমৃদ্ধি পায়। কারণ সিল্করোড নামে চীনের সঙ্গে বিশ্ব বাণিজ্য পথের সঙ্গে এর সরাসরি সংযোগ ছিল। এটি বাণিজ্য নগরী হিসেবে বিকাশ লাভ করেছিল। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনে সুদূর ইরানেও মধ্যযুগে চীনা পণ্যের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এটি ইউয়ে রাজ্য এবং দক্ষিণ সং রাজবংশের রাজধানী ছিল। এমনকি যখন এটি রাজধানী শহর ছিল না, তখনো কৌশলগত অবস্থানের কারণে হ্যাংঝু শক্তিশালী শহর ছিল।
ধনসম্পদের জন্য হ্যাংঝু সুপরিচিত ছিল। চীনা সংস্কৃতির মহান কেন্দ্রও ছিল এটি। প্রাচীন সাহিত্য ও বৌদ্ধধর্মের সঙ্গে সম্পর্কিত এই শহর। এর সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব মার্কো পলো ও ইবনে বতুতার মতো পর্যটকককে আকৃষ্ট করেছিল। তাদের লেখায় শহরটির চমৎকার বর্ণনা উঠে এসেছে। মার্কো পলোর মতে, এটি নিঃসন্দেহে ‘বিশ্বের সেরা ও সবচেয়ে জমকালো শহর’। এই শহরের পাকা রাস্তা ও বিপুলসংখ্যক সেতু দেখে তিনি বিস্মিত হন। মার্কো পলোর লেখাগুলো ত্রয়োদশ শতাব্দীর হ্যাংঝুর জাঁকজমক অবস্থা তুলে ধরে। তখনো এটি বিশ্বের বৃহত্তম শহর ছিল। হ্যাংঝু এখনো গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র। সেখানে প্রচুর পরিমাণে ধান ও রেশম উৎপাদন হয়। এখন রাজধানী না হলেও এটি অন্তত ১ কোটি মানুষের আধুনিক নগর।
৬। প্যারিস
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। মধ্যযুগের শুরুতে বিশাল বহুজাতিক শহরে বিকশিত হয় এটি। এর আগে এই শহরের তেমন গুরুত্ব ছিল না। দশম শতকের প্যারিসে একটি ক্যাথেড্র্যাল ছাড়া আর কিছু ছিল না। তবু প্রাদেশিক শহরের চেয়ে একটু বেশিই মর্যাদা পেত এই শহর। কিন্তু ক্যাপেশীয় রাজারা ইল দু লা সিতে থেকে ফ্রান্স শাসনের সিদ্ধান্ত নিলে অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। এটাকে যে তারা শুধু রাজপ্রাসাদে পরিণত করেছে, তাই নয়। এখানে নতুন নটর ডেম ক্যাথেড্রালকেও জায়গা দেওয়া হয়। ক্যাপেশীয়দের অধীনে প্যারিস একাধারে ধর্মীয়, শিক্ষা ও বাণিজ্য—তিন দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। শিন নদীর বাম তীর ছিল ফরাসি গির্জা মঠের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ছিল বেশ কিছু কলেজ, যেগুলো ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। ডান তীরে বন্দর, বণিকশ্রেণি ও বাজার প্যারিসকে বাণিজ্যকেন্দ্রে পরিণত করে। ধর্ম ও শিক্ষার সঙ্গে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি প্যারিসকে স্বর্ণ ও রৌপ্যখচিত পান্ডুলিপির গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলে। পাশাপাশি এই শহরে প্রথম গথিক নির্মাণশৈলীর প্রচলন হয়।
১৩২৮ খ্রিষ্টাব্দের আগে প্যারিসের বাসিন্দা কত ছিল, তা নির্দিষ্ট ছিল না। কিন্তু সে বছরের আদমশুমারিতে শুধু শহরের ভেতরে ৬১ হাজার পরিবার পাওয়া যায়। তা থেকে সে সময় পুরো প্যারিসের জনসংখ্যা ২ লাখ ১০ হাজার থেকে ২ লাখ ৭০ হাজারের মধ্যে ছিল বলে অনুমান করা যায়। শহরটি মহামারি ও বহিঃশক্তির অবরোধের কবলে পড়ে কিছুটা বিপর্যস্ত হলে নিজেকে সামলে নিয়ে মধ্যযুগে পশ্চিমা বিশ্বের অনত্যম জনবহুল শহরে পরিণত হয়।
৭। তেনোচতিতলান
এখনকার মেক্সিকোতে অবস্থিত তেনোচতিতলান প্রাক-কলম্বিয়ান আমেরিকায়, অর্থাৎ ক্রিস্টোফার কলম্বাসের অভিযানের মাধ্যমে ইউরোপের উপনিবেশ হওয়ার আগে পর্যন্ত আমেরিকার বৃহত্তম শহর ছিল। পঞ্চদশ শতক পর্যন্ত এক শতাব্দীজুড়ে এটি ছিল বিস্তৃত আজটেক সাম্রাজ্যের রাজধানী। টেক্সকোকো দ্বীপের মাঝখানে তেনোচতিতলান শহর গড়ে তোলা হয়। সেখানে ছিল রাজকীয় প্রাসাদ, মন্দির, বাজার ও অন্যান্য সরকারি ভবন। এ সবই আজটেক জনগোষ্ঠীর কল্যাণের পাশাপাশি শহর ও সাম্রাজ্যের সমৃদ্ধিতে অবদান রাখে।
অ্যাজটেক সম্রাজ্যের বিশাল বাণিজ্য নেটওয়ার্ক ছিল, যা তেনোচতিতলান থেকে ম্যাক্সিকো উপসাগর এবং সম্ভবত ইনকা সাম্রাজ্য পযন্ত বিস্তৃত ছিল। এই শহরের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ২ লাখের কাছাকাছি। সেই জনগোষ্ঠী এমন সামাজিক শ্রেণিতে বিভক্ত ছিল, যা মেসোআমেরিকান বিশ্বে সবচেয়ে জটিল।
স্পেনীয় বিজেতারা এই রাজধানী শহরে পৌঁছে একে সমৃদ্ধশালী হিসেবেই খুঁজে পায়। জনসংখ্যার দিক থেকে ইউরোপের ভেনিস কিংবা প্যারিসের সমকক্ষ ছিল। সম্রাট দ্বিতীয় মক্তেজুমার রাজপ্রাসাদ ছিল বিস্তৃত ভবন, যেখানে চিড়িয়াখানা, বোটানক্যিল গার্ডেন ও অ্যাকুরিয়াম ছিল। হেরনান কর্তেসের নেতৃত্বে স্পেনীয়রা শহরটিকে দখল করে নয়া স্পেনের রাজপ্রতিনিধির পৌরসভায় পরিণত করে। কয়েক শতাব্দী ধরে শহরটি স্পেনীয় শাসনের অধীনে থাকলেও মেক্সিকোর রাজধানী স্থানান্তরিত হয়নি; মধ্যযুগীয় রাজধানীটির আশপাশেই তা গড়ে ওঠে। আধুনিক ম্যাক্সিকো শহরের ঐতিহাসিক কেন্দ্রে তেনোচতিতলানের অবস্থান। প্রায় ১ কোটি মানুষের শহরটি আমেরিকার মধ্যে অন্যতম জনবহুল।
৮। ভেনিস
মধ্যযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ নৌশক্তিধর হিসেবে বিবেচিত ভেনিস। পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর পালিয়ে আসা শরণার্থীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে এই শহরের যাত্রা শুরু হয়। চারপাশ ঘিরে থাকা লেগুন বা উপহ্রদ কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি ভেনিসকে প্রজাতন্ত্রে পরিণত করতে সহায়তা করেছে। এই লেগুন ভূমধ্যসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ায় ইউরোপের বাকি অংশের সঙ্গে রোমানদের বৃহত্তর বাণিজ্য সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়।
রোমান সাম্রাজ্য ও অপর ইতালীয় শক্তি থেকে উচ্চমাত্রার স্বাধীনতা পেয়েছিল ভেনিস—সেটা ধর্ম ও শাসনব্যবস্থা উভয় দিক থেকেই ছিল। এমন প্রেক্ষাপটে পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল দখল করা শুরু করে এই নগররাষ্ট্র। ভেনিসের শাসক ছিলেন একজন ডিউক। তিনি ভেনিসের গ্রেট কাউন্সিল দ্বারা নির্বাচিত হতেন এবং আজীবন দায়িত্ব পালন করতেন। ভেনিস নামে প্রজাতন্ত্র হলেও এটি শাসন করত বড় ব্যবসায়ীদের গোষ্ঠী।
ক্রমাগত সমৃদ্ধ হতে হতে মধ্যযুগে শিল্প, স্থাপত্য ও প্রকাশনার বড় কেন্দ্রে পরিণত হয় ভেনিস। ইতালি রেনেসাঁ বা পুনর্জাগরণের আগে ভেনিসে রেনেসাঁ শুরু হয়। অর্থনৈতিক দক্ষতা এবং নৌ প্রজাতন্ত্রের সেবায় শিল্পের উন্নয়নের প্রত্যক্ষ পরণতি ছিল এই রেনেসাঁ। ষোড়শ শতকের আগপর্যন্ত ভেনিস ছিল কিছুটা অপ্রতিদ্বন্দ্বী। এরপর আমেরিকা ও ইস্ট ইন্ডিজে বাণিজ্যপথ চালু হলে তার প্রভাব কমে। কারণ, তখন অন্যান্য ইউরোপীয় শক্তিও বাণিজ্য বাড়িয়ে ভেনিসের সমকক্ষ প্রভাব অর্জন করে।
উনিশ শতকের শেষের দিকে একক ইতালি রাষ্ট্রে অন্তর্ভুক্ত হয় ভেনিস। এটি এখন ইতালির বড় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। তবে আগের মতো প্রভাব আর নেই। চারপাশের খালের কারণে ভেনিস ছিল অনন্য এবং সম্পূর্ণরূপে নৌশক্তিনির্ভর। বিশাল নৌবহরের পরিবর্তে সেই খালগুলোতে এখন পর্যটকদের পছন্দের গন্ডোলা রাইড ও ওয়াটার ট্যাক্সি চলে।
(দ্য কালেক্টর থেকে অনূদিত)
লেখক: ইতিহাসে স্নাতকোত্তর, ইডেন কলেজ

সব ঠিক চলছিল। কিন্তু যেই অনুষ্ঠানের তারিখ পড়ে গেল, উঠল মুখে ব্রণ কিংবা লাল হয়ে উঠল র্যাশ! মেজাজ হয়ে উঠল তিরিক্ষি। কিন্তু অনুষ্ঠানে তো যেতে হবে। এমন অবস্থায় যে সব সময় পারলারেই যেতে হয়, তা নয়। ঘরে বসেও এর বিরুদ্ধ ব্যবস্থা নিতে পারেন। ত্বকের ধরন অনুযায়ী যত্ন নিলে নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানের দিন ত্বক...
২ ঘণ্টা আগে
নাইজেরিয়ার বড় শহর লাগোস সারা বছর ব্যস্ত থাকে। তবে বছরের শেষ দিকে এই বিশাল শহর যেন রূপ বদলে আরও বেশি সরগরম হয়ে ওঠে। এর কারণ ডেটি ডিসেম্বর। এটি শহরের বার্ষিক উৎসব। একে ঘিরে পুরো শহর সেজে ওঠে ঝলমলে আলোয়। রাত হয়ে ওঠে সংগীতময়, রাস্তাজুড়ে থাকে উৎসবমুখর মানুষের ঢল। সংগীত, খাদ্য, পানীয় ডিসেম্বরে সব যেন...
৪ ঘণ্টা আগে
একুশ শতকের প্রথম দশক, অর্থাৎ ২০০০ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সময়টা ছিল এক অদ্ভুত ফ্যাশনের সময়। তখন আভিজাত্যের চেয়ে আস্ফালন ছিল বেশি! সূক্ষ্মতা তখন প্রায় মৃত। চারদিকে শুধু পাপারাজ্জির ক্যামেরার ফ্ল্যাশ। মাই স্পেসের জন্য আয়নায় তোলা অগোছালো ছবি। আর ছিল আত্মবিশ্বাসের জয়গান। বলা যেতেই পারে, ২০০০ সালের দিকে...
৬ ঘণ্টা আগে
আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে, কিন্তু পকেট তলানিতে। আজ আপনার সাহস দেখে পাড়ার কুকুরও কুর্নিশ করবে। ইন্টারভিউতে ডাক আসতে পারে; তবে যাওয়ার সময় পকেটে একটা চকলেট রাখবেন, যদি মাথা ঘুরে যায়! প্রেমে আজ ‘বিয়ে’ শব্দটা উচ্চারণ করবেন না, উল্টো দিক থেকে ব্লক খাওয়ার সম্ভাবনা ৯০ পারসেন্ট।
৭ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

সব ঠিক চলছিল। কিন্তু যেই অনুষ্ঠানের তারিখ পড়ে গেল, উঠল মুখে ব্রণ কিংবা লাল হয়ে উঠল র্যাশ! মেজাজ হয়ে উঠল তিরিক্ষি। কিন্তু অনুষ্ঠানে তো যেতে হবে। এমন অবস্থায় যে সব সময় পারলারেই যেতে হয়, তা নয়। ঘরে বসেও এর বিরুদ্ধ ব্যবস্থা নিতে পারেন। ত্বকের ধরন অনুযায়ী যত্ন নিলে নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানের দিন ত্বক অনেকটাই স্বাস্থ্য়োজ্জ্বল দেখাবে। অনুষ্ঠানের এক সপ্তাহ আগে থেকে যেভাবে ত্বকের যত্ন নিতে পারেন–
ত্বকের ধরন বুঝে ক্লিনজিং করুন

প্রতিদিন বাইরে থেকে ফিরে প্রথমে ভালো করে মুখ পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর ত্বকের ধরন অনুযায়ী যত্ন নিন। যত্ন নেওয়ার আগে অবশ্যই নিজের ত্বকের ধরন কেমন, সেটি জানা জরুরি। যাঁদের ত্বক স্বাভাবিক, তাঁরা শীতে ত্বকের হারানো উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে এক চা-চামচ চালের গুঁড়া, এক চা-চামচ ময়দা, এক চা-চামচ অ্যালোভেরা জেল ভালো করে মিশিয়ে পুরো মুখে দু-তিন মিনিট ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলতে পারেন। এরপর প্যাক ব্যবহার করতে হবে।
প্যাক তৈরিতে আপেল পেস্ট এক চা-চামচ, মসুরের ডালের বেসন এক চা-চামচ, অর্ধেক ডিমের কুসুম ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে।
শীতকালে শুষ্ক ত্বকের বেশি যত্নের প্রয়োজন। এ ধরনের ত্বকের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক ক্লিনজার হিসেবে মসুর ডাল বাটার সঙ্গে এক টেবিল চামচ গরম দুধ মিশিয়ে কুসুম গরম অবস্থায় পুরো মুখে লাগাতে হবে। এতে ত্বকের মরা কোষ উঠে আসবে ও রোমকূপগুলো পরিষ্কার হয়ে যাবে। এটা ফেসওয়াশের মতো ব্যবহার করতে হবে। পরে পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধোয়ার পর প্যাক লাগাতে হবে। ত্বক তৈলাক্ত হলে এক চা-চামচ গ্রিন টি গুঁড়া নিয়ে এর সঙ্গে এক চা-চামচ টক দই মিশিয়ে পুরো মুখে দু-তিন মিনিট ম্যাসাজ করে ধুয়ে নিতে হবে। এ ছাড়া দারুচিনি গুঁড়া এক চা-চামচ, এক চা-চামচ মুলতানি মাটি, ডিমের সাদা অংশ এগুলো ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে ত্বকে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে পারেন। এ প্যাক ব্যবহারের ফলে ময়শ্চারাইজারের ভারসাম্য ঠিক থাকবে।
ডিপ ক্লিনজিং
প্রথমে ক্লিনজার ব্যবহার করে ত্বক পরিষ্কার করে নিতে হবে। ত্বকের ধরন অনুযায়ী জেল, ফোম বা ক্রিম টাইপ ক্লিনজার বেছে নিতে পারেন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য জেল বা ফোম ক্লিনজার বেছে নিন। শুষ্ক বা সংবেদনশীল ত্বকের জন্য হাইড্রেটিং ক্লিনজার উপযুক্ত। ত্বক ভেজানোর জন্য হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন। এতে বন্ধ রোমকূপ খুলে যাবে। এক মিনিটের জন্য বৃত্তাকার গতিতে ক্লিনজার ঘষুন। হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ভালো করে ঘষুন এবং পরিষ্কার তোয়ালে ব্যবহার করে শুকিয়ে নিন।
ব্যবহার করুন এক্সফোলিয়েটর। ঘষে ঘষে ত্বকে ব্যবহার করে ধুয়ে ফেলুন। এরপর স্টিম করুন। পরের ধাপে ত্বকের উপযোগী ফেস মাস্ক দিয়ে ডিপ ক্লিন করুন। এ ক্ষেত্রে ক্লে ব্ল্যাক মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। মুখ ধুয়ে সব শেষে টোনার ও ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
স্কিন হোয়াইটনিং ট্রিটমেন্ট
মুখের ত্বকের সঙ্গে গলা, ঘাড়, হাত ও পুরো শরীরের রঙের সামঞ্জস্য বজায় রাখতে যত্ন নিতে হবে পুরো শরীরের ত্বকের। মসুর ডাল বাটা পরিমাণমতো নিয়ে এর সঙ্গে লেবুর খোসাবাটা, পরিমাণমতো টক দই ও নারকেল তেল মিশিয়ে পুরো শরীরে মেখে নিয়মিত ম্যাসাজ করে গোসল করে নিতে হবে। সপ্তাহে দুই দিন করতে হবে এটি। এতে করে ত্বকের মরা কোষ উঠে গিয়ে উজ্জ্বলতা বাড়বে। এ ছাড়া ত্বকের কোমলতা বজায় থাকবে।
হাত ও পায়ের যত্ন
সপ্তাহে অন্তত দুদিন বাড়িতে পেডিকিউর ও মেনিকিউর করতে হবে। অনুষ্ঠানের দিন পারলার থেকে একবার পেডিকিউর ও মেনিকিউর করিয়ে নিলে ভালো। কারণ, পারলারে ম্যাসাজ খুব ভালো হয়। ডিপ ক্লিনও করা সম্ভব।
সূত্র: স্টাইলক্রেজ ও স্কিনক্র্যাফট

সব ঠিক চলছিল। কিন্তু যেই অনুষ্ঠানের তারিখ পড়ে গেল, উঠল মুখে ব্রণ কিংবা লাল হয়ে উঠল র্যাশ! মেজাজ হয়ে উঠল তিরিক্ষি। কিন্তু অনুষ্ঠানে তো যেতে হবে। এমন অবস্থায় যে সব সময় পারলারেই যেতে হয়, তা নয়। ঘরে বসেও এর বিরুদ্ধ ব্যবস্থা নিতে পারেন। ত্বকের ধরন অনুযায়ী যত্ন নিলে নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানের দিন ত্বক অনেকটাই স্বাস্থ্য়োজ্জ্বল দেখাবে। অনুষ্ঠানের এক সপ্তাহ আগে থেকে যেভাবে ত্বকের যত্ন নিতে পারেন–
ত্বকের ধরন বুঝে ক্লিনজিং করুন

প্রতিদিন বাইরে থেকে ফিরে প্রথমে ভালো করে মুখ পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর ত্বকের ধরন অনুযায়ী যত্ন নিন। যত্ন নেওয়ার আগে অবশ্যই নিজের ত্বকের ধরন কেমন, সেটি জানা জরুরি। যাঁদের ত্বক স্বাভাবিক, তাঁরা শীতে ত্বকের হারানো উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে এক চা-চামচ চালের গুঁড়া, এক চা-চামচ ময়দা, এক চা-চামচ অ্যালোভেরা জেল ভালো করে মিশিয়ে পুরো মুখে দু-তিন মিনিট ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলতে পারেন। এরপর প্যাক ব্যবহার করতে হবে।
প্যাক তৈরিতে আপেল পেস্ট এক চা-চামচ, মসুরের ডালের বেসন এক চা-চামচ, অর্ধেক ডিমের কুসুম ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে।
শীতকালে শুষ্ক ত্বকের বেশি যত্নের প্রয়োজন। এ ধরনের ত্বকের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক ক্লিনজার হিসেবে মসুর ডাল বাটার সঙ্গে এক টেবিল চামচ গরম দুধ মিশিয়ে কুসুম গরম অবস্থায় পুরো মুখে লাগাতে হবে। এতে ত্বকের মরা কোষ উঠে আসবে ও রোমকূপগুলো পরিষ্কার হয়ে যাবে। এটা ফেসওয়াশের মতো ব্যবহার করতে হবে। পরে পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধোয়ার পর প্যাক লাগাতে হবে। ত্বক তৈলাক্ত হলে এক চা-চামচ গ্রিন টি গুঁড়া নিয়ে এর সঙ্গে এক চা-চামচ টক দই মিশিয়ে পুরো মুখে দু-তিন মিনিট ম্যাসাজ করে ধুয়ে নিতে হবে। এ ছাড়া দারুচিনি গুঁড়া এক চা-চামচ, এক চা-চামচ মুলতানি মাটি, ডিমের সাদা অংশ এগুলো ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে ত্বকে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে পারেন। এ প্যাক ব্যবহারের ফলে ময়শ্চারাইজারের ভারসাম্য ঠিক থাকবে।
ডিপ ক্লিনজিং
প্রথমে ক্লিনজার ব্যবহার করে ত্বক পরিষ্কার করে নিতে হবে। ত্বকের ধরন অনুযায়ী জেল, ফোম বা ক্রিম টাইপ ক্লিনজার বেছে নিতে পারেন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য জেল বা ফোম ক্লিনজার বেছে নিন। শুষ্ক বা সংবেদনশীল ত্বকের জন্য হাইড্রেটিং ক্লিনজার উপযুক্ত। ত্বক ভেজানোর জন্য হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন। এতে বন্ধ রোমকূপ খুলে যাবে। এক মিনিটের জন্য বৃত্তাকার গতিতে ক্লিনজার ঘষুন। হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ভালো করে ঘষুন এবং পরিষ্কার তোয়ালে ব্যবহার করে শুকিয়ে নিন।
ব্যবহার করুন এক্সফোলিয়েটর। ঘষে ঘষে ত্বকে ব্যবহার করে ধুয়ে ফেলুন। এরপর স্টিম করুন। পরের ধাপে ত্বকের উপযোগী ফেস মাস্ক দিয়ে ডিপ ক্লিন করুন। এ ক্ষেত্রে ক্লে ব্ল্যাক মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। মুখ ধুয়ে সব শেষে টোনার ও ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
স্কিন হোয়াইটনিং ট্রিটমেন্ট
মুখের ত্বকের সঙ্গে গলা, ঘাড়, হাত ও পুরো শরীরের রঙের সামঞ্জস্য বজায় রাখতে যত্ন নিতে হবে পুরো শরীরের ত্বকের। মসুর ডাল বাটা পরিমাণমতো নিয়ে এর সঙ্গে লেবুর খোসাবাটা, পরিমাণমতো টক দই ও নারকেল তেল মিশিয়ে পুরো শরীরে মেখে নিয়মিত ম্যাসাজ করে গোসল করে নিতে হবে। সপ্তাহে দুই দিন করতে হবে এটি। এতে করে ত্বকের মরা কোষ উঠে গিয়ে উজ্জ্বলতা বাড়বে। এ ছাড়া ত্বকের কোমলতা বজায় থাকবে।
হাত ও পায়ের যত্ন
সপ্তাহে অন্তত দুদিন বাড়িতে পেডিকিউর ও মেনিকিউর করতে হবে। অনুষ্ঠানের দিন পারলার থেকে একবার পেডিকিউর ও মেনিকিউর করিয়ে নিলে ভালো। কারণ, পারলারে ম্যাসাজ খুব ভালো হয়। ডিপ ক্লিনও করা সম্ভব।
সূত্র: স্টাইলক্রেজ ও স্কিনক্র্যাফট

পঞ্চদশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত ১ হাজার বছর সময়কে মধ্যযুগ ধরা হয়। সেটা ছিল সাংস্কৃতিক বিবর্তন ও ধর্মীয় ক্ষমতা চর্চার সুবর্ণ সময়। বিশ্বজুড়ে তখন জনসংখ্যা বেড়ে চলছে, গড়ে উঠছে নতুন নতুন শহর। ক্রমবর্ধমান এই জনসংখ্যাই সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে শাসক শ্রেণির জন্য উপকারী ক্ষমতার প্রতীক হয়ে ওঠে।
২৫ মে ২০২৪
নাইজেরিয়ার বড় শহর লাগোস সারা বছর ব্যস্ত থাকে। তবে বছরের শেষ দিকে এই বিশাল শহর যেন রূপ বদলে আরও বেশি সরগরম হয়ে ওঠে। এর কারণ ডেটি ডিসেম্বর। এটি শহরের বার্ষিক উৎসব। একে ঘিরে পুরো শহর সেজে ওঠে ঝলমলে আলোয়। রাত হয়ে ওঠে সংগীতময়, রাস্তাজুড়ে থাকে উৎসবমুখর মানুষের ঢল। সংগীত, খাদ্য, পানীয় ডিসেম্বরে সব যেন...
৪ ঘণ্টা আগে
একুশ শতকের প্রথম দশক, অর্থাৎ ২০০০ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সময়টা ছিল এক অদ্ভুত ফ্যাশনের সময়। তখন আভিজাত্যের চেয়ে আস্ফালন ছিল বেশি! সূক্ষ্মতা তখন প্রায় মৃত। চারদিকে শুধু পাপারাজ্জির ক্যামেরার ফ্ল্যাশ। মাই স্পেসের জন্য আয়নায় তোলা অগোছালো ছবি। আর ছিল আত্মবিশ্বাসের জয়গান। বলা যেতেই পারে, ২০০০ সালের দিকে...
৬ ঘণ্টা আগে
আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে, কিন্তু পকেট তলানিতে। আজ আপনার সাহস দেখে পাড়ার কুকুরও কুর্নিশ করবে। ইন্টারভিউতে ডাক আসতে পারে; তবে যাওয়ার সময় পকেটে একটা চকলেট রাখবেন, যদি মাথা ঘুরে যায়! প্রেমে আজ ‘বিয়ে’ শব্দটা উচ্চারণ করবেন না, উল্টো দিক থেকে ব্লক খাওয়ার সম্ভাবনা ৯০ পারসেন্ট।
৭ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

নাইজেরিয়ার বড় শহর লাগোস সারা বছর ব্যস্ত থাকে। তবে বছরের শেষ দিকে এই বিশাল শহর যেন রূপ বদলে আরও বেশি সরগরম হয়ে ওঠে। এর কারণ ডেটি ডিসেম্বর। এটি শহরের বার্ষিক উৎসব। একে ঘিরে পুরো শহর সেজে ওঠে ঝলমলে আলোয়। রাত হয়ে ওঠে সংগীতময়, রাস্তাজুড়ে থাকে উৎসবমুখর মানুষের ঢল। সংগীত, খাদ্য, পানীয় ডিসেম্বরে সব যেন ফোয়ারা ছোটায় লাগোসে। হবে নাই-বা কেন। এটি যে পৃথিবীর অন্যতম বড় উৎসব!
তবে এ বছরের উৎসবের আবহে আনন্দের পাশাপাশি রয়েছে একধরনের অস্বস্তিকর সুর। অর্থনৈতিক চাপ, নিরাপত্তাহীনতা—সব মিলিয়ে উৎসবের উচ্ছ্বাসে খানিক ছেদই পড়ছে।

সাধারণত ৬ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলা ডেটি ডিসেম্বর কখনো কখনো গড়িয়ে যায় জানুয়ারি মাসেও। একটার পর একটা অনুষ্ঠান হয় দেশজুড়ে, যেখানে স্থানীয়রা তো বটেই, বিদেশি পর্যটকেরাও হাত খুলে খরচ করে।
এই সময় বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে দেশে ফেরেন নাইজেরিয়ার প্রবাসীরা। তাঁরা সঙ্গে নিয়ে আসেন মোটা অঙ্কের অর্থ। ফলে লাগোস পরিণত হয় এক বিশাল কার্নিভ্যালের নগরীতে। যেখানে রাস্তা থাকে যানজটে ঠাসা আর চলে রাতজুড়ে উচ্চ শব্দের গান।
‘ডেটি’ শব্দটির অর্থ ‘নোংরা’—অর্থাৎ সব নিয়ম ভেঙে মুক্তভাবে আনন্দ করা। আর ঠিক সেটাই ঘটে লাগোসে। উৎসব, কনসার্ট, পপ-আপ মার্কেট, সৈকত পার্টি আর বিয়ের অনুষ্ঠান সব একের পর এক চলতে থাকে। প্রতিটিই বড় ও জাঁকজমকপূর্ণ হওয়ার প্রতিযোগিতা।
২০২৪ সালে একের পর এক বড় আয়োজন ছিল। ছিল গ্র্যামি মনোনীত শিল্পী ডেভিডো ও ওলামিদেকে নিয়ে ফ্লাইটাইম ফেস্ট, সমুদ্রতীরে উইজকিডের ভাইবস অন দ্য বিচ এবং শহরজুড়ে ১৫টি আফ্রোবিটস পার্টি নিয়ে মাই আফ্রোবিটস ডেটি ডিসেম্বর উদ্যাপিত হয়।
এ বছরের আয়োজনও কম কিছু নয়। এবার আয়োজিত হচ্ছে পামওয়াইন মিউজিক ফেস্টিভ্যাল, পিক ডেটি ভাইবস, দ্য বনফায়ার এক্সপেরিয়েন্স, জুমা জুক্স লাইভ ইন লাগোস এবং ফুডি ইন লাগোস ফেস্টিভ্যাল।
সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণ

২০১৭ সালে পামওয়াইন মিউজিক ফেস্টিভ্যাল প্রতিষ্ঠা করেন ওয়ালে ডেভিস। তিনি বলেন, ‘ডেটি ডিসেম্বর নামটা আসার আগেও ডিসেম্বর আমাদের কাছে সব সময়ই ডেটি ছিল। এখন সেটা শুধু আরও বড় হয়েছে।’ দেশের ভেতর ও প্রবাস থেকে আসা দর্শনার্থীদের কারণে গত দুই বছর এই উৎসব আরও বড় হয়েছে। অনেক লাগোসবাসী সারা বছর পরিকল্পনা করেন এই সময়কে ঘিরে। ৩৫ বছর বয়সী উদ্যোক্তা ওমোটয়োসি আকিনকুয়াদে চীনে ব্যবসায়িক কাজে মাসের পর মাস ঘুরেছেন। তিনি বলেন, ‘ডেটি ডিসেম্বর মানেই কষ্টকর পরিশ্রম থেকে পুরোপুরি মুক্ত হওয়া।’
নিউইয়র্ক থেকে তৃতীয়বারের মতো আসা জনসংযোগ বিশেষজ্ঞ মিমি এগেসিওনু একে বলেন, ‘একটি অসাধারণ উৎসব এটি। প্রতিদিন যেন নতুন কোনো আন্তর্জাতিক তারকাকে দেখা যায়। এই অনুভূতি পৃথিবীর আর কোথাও নেই।’
বাড়ে মাছ আর পানীয়র দাম
ডেটি ডিসেম্বর নতুন কিছু নয়। দুই দশক ধরে নাইজেরিয়ার পূর্বাঞ্চলে কার্নিভ্যাল ক্যালাবার হয়ে আসছে। তবে বিশ্বজুড়ে আফ্রোবিটস সংগীতের জনপ্রিয়তার প্রভাব এই উৎসবে পড়েছে। পর্যটন বিশেষজ্ঞ ইকেচি উকোর মতে, প্রবাসীরা এই উৎসবে যোগ দিতে বড় অঙ্কের অর্থ খরচ করেন। ফলে এটি দিন দিন বিলাসবহুল হয়ে উঠছে।
এর প্রভাব পড়েছে দামে। আগস্ট থেকেই বিমানভাড়া বেড়ে যায়। নাইজেরিয়ার এয়ারলাইনসে ইকোনমি টিকিটের দাম দ্বিগুণ হয়ে ৩ লাখ ৫০ হাজার নাইরায় পৌঁছায়। পানীয়র দামও প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। চাহিদা শুধু নাইট লাইফেই সীমাবদ্ধ নয়। সেলুন, দরজির দোকান—সবখানেই চাপ। কুকুর হেয়ার সেলুন আগস্ট থেকেই বুকিং নেয় এবং ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুরোপুরি পূর্ণ।
উৎসবের ছায়ায় অন্ধকার বাস্তবতা
২০২৪ সালের ডেটি ডিসেম্বর থেকে লাগোস রাজ্য সরকার পর্যটন ও বিনোদন খাত থেকে আয় করেছে ৭ কোটি ১৬ লাখ ডলারের বেশি। এদিকে প্রবাসীদের ওপর ৫০০ ডলারের ‘ট্যুরিজম ট্যাক্স’ আরোপের প্রস্তাব ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে বাতিল করা হয়। সরকারকে এখানে হস্তক্ষেপ না করে নিরাপত্তা এবং ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা উচিত বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
তবে উৎসবের মধ্যেও অনেক অন্ধকার দিক রয়েছে। নাইজেরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে সহিংসতা, অপহরণ ও নিরাপত্তাহীনতা নিত্যসঙ্গী। তবু জীবন থেমে থাকে না। পর্যটন বিশেষজ্ঞ উকো বলেন, ‘কয়েক দিনের জন্য হলেও যদি এই উৎসব আমাদের দুঃখ ভুলতে সাহায্য করে, তাহলে সেটাই যথেষ্ট। ডেটি ডিসেম্বর বন্ধ করলে সমস্যাগুলো এমনিতেই মিটে যাবে, এমন নয়।’

নাইজেরিয়ার বড় শহর লাগোস সারা বছর ব্যস্ত থাকে। তবে বছরের শেষ দিকে এই বিশাল শহর যেন রূপ বদলে আরও বেশি সরগরম হয়ে ওঠে। এর কারণ ডেটি ডিসেম্বর। এটি শহরের বার্ষিক উৎসব। একে ঘিরে পুরো শহর সেজে ওঠে ঝলমলে আলোয়। রাত হয়ে ওঠে সংগীতময়, রাস্তাজুড়ে থাকে উৎসবমুখর মানুষের ঢল। সংগীত, খাদ্য, পানীয় ডিসেম্বরে সব যেন ফোয়ারা ছোটায় লাগোসে। হবে নাই-বা কেন। এটি যে পৃথিবীর অন্যতম বড় উৎসব!
তবে এ বছরের উৎসবের আবহে আনন্দের পাশাপাশি রয়েছে একধরনের অস্বস্তিকর সুর। অর্থনৈতিক চাপ, নিরাপত্তাহীনতা—সব মিলিয়ে উৎসবের উচ্ছ্বাসে খানিক ছেদই পড়ছে।

সাধারণত ৬ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলা ডেটি ডিসেম্বর কখনো কখনো গড়িয়ে যায় জানুয়ারি মাসেও। একটার পর একটা অনুষ্ঠান হয় দেশজুড়ে, যেখানে স্থানীয়রা তো বটেই, বিদেশি পর্যটকেরাও হাত খুলে খরচ করে।
এই সময় বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে দেশে ফেরেন নাইজেরিয়ার প্রবাসীরা। তাঁরা সঙ্গে নিয়ে আসেন মোটা অঙ্কের অর্থ। ফলে লাগোস পরিণত হয় এক বিশাল কার্নিভ্যালের নগরীতে। যেখানে রাস্তা থাকে যানজটে ঠাসা আর চলে রাতজুড়ে উচ্চ শব্দের গান।
‘ডেটি’ শব্দটির অর্থ ‘নোংরা’—অর্থাৎ সব নিয়ম ভেঙে মুক্তভাবে আনন্দ করা। আর ঠিক সেটাই ঘটে লাগোসে। উৎসব, কনসার্ট, পপ-আপ মার্কেট, সৈকত পার্টি আর বিয়ের অনুষ্ঠান সব একের পর এক চলতে থাকে। প্রতিটিই বড় ও জাঁকজমকপূর্ণ হওয়ার প্রতিযোগিতা।
২০২৪ সালে একের পর এক বড় আয়োজন ছিল। ছিল গ্র্যামি মনোনীত শিল্পী ডেভিডো ও ওলামিদেকে নিয়ে ফ্লাইটাইম ফেস্ট, সমুদ্রতীরে উইজকিডের ভাইবস অন দ্য বিচ এবং শহরজুড়ে ১৫টি আফ্রোবিটস পার্টি নিয়ে মাই আফ্রোবিটস ডেটি ডিসেম্বর উদ্যাপিত হয়।
এ বছরের আয়োজনও কম কিছু নয়। এবার আয়োজিত হচ্ছে পামওয়াইন মিউজিক ফেস্টিভ্যাল, পিক ডেটি ভাইবস, দ্য বনফায়ার এক্সপেরিয়েন্স, জুমা জুক্স লাইভ ইন লাগোস এবং ফুডি ইন লাগোস ফেস্টিভ্যাল।
সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণ

২০১৭ সালে পামওয়াইন মিউজিক ফেস্টিভ্যাল প্রতিষ্ঠা করেন ওয়ালে ডেভিস। তিনি বলেন, ‘ডেটি ডিসেম্বর নামটা আসার আগেও ডিসেম্বর আমাদের কাছে সব সময়ই ডেটি ছিল। এখন সেটা শুধু আরও বড় হয়েছে।’ দেশের ভেতর ও প্রবাস থেকে আসা দর্শনার্থীদের কারণে গত দুই বছর এই উৎসব আরও বড় হয়েছে। অনেক লাগোসবাসী সারা বছর পরিকল্পনা করেন এই সময়কে ঘিরে। ৩৫ বছর বয়সী উদ্যোক্তা ওমোটয়োসি আকিনকুয়াদে চীনে ব্যবসায়িক কাজে মাসের পর মাস ঘুরেছেন। তিনি বলেন, ‘ডেটি ডিসেম্বর মানেই কষ্টকর পরিশ্রম থেকে পুরোপুরি মুক্ত হওয়া।’
নিউইয়র্ক থেকে তৃতীয়বারের মতো আসা জনসংযোগ বিশেষজ্ঞ মিমি এগেসিওনু একে বলেন, ‘একটি অসাধারণ উৎসব এটি। প্রতিদিন যেন নতুন কোনো আন্তর্জাতিক তারকাকে দেখা যায়। এই অনুভূতি পৃথিবীর আর কোথাও নেই।’
বাড়ে মাছ আর পানীয়র দাম
ডেটি ডিসেম্বর নতুন কিছু নয়। দুই দশক ধরে নাইজেরিয়ার পূর্বাঞ্চলে কার্নিভ্যাল ক্যালাবার হয়ে আসছে। তবে বিশ্বজুড়ে আফ্রোবিটস সংগীতের জনপ্রিয়তার প্রভাব এই উৎসবে পড়েছে। পর্যটন বিশেষজ্ঞ ইকেচি উকোর মতে, প্রবাসীরা এই উৎসবে যোগ দিতে বড় অঙ্কের অর্থ খরচ করেন। ফলে এটি দিন দিন বিলাসবহুল হয়ে উঠছে।
এর প্রভাব পড়েছে দামে। আগস্ট থেকেই বিমানভাড়া বেড়ে যায়। নাইজেরিয়ার এয়ারলাইনসে ইকোনমি টিকিটের দাম দ্বিগুণ হয়ে ৩ লাখ ৫০ হাজার নাইরায় পৌঁছায়। পানীয়র দামও প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। চাহিদা শুধু নাইট লাইফেই সীমাবদ্ধ নয়। সেলুন, দরজির দোকান—সবখানেই চাপ। কুকুর হেয়ার সেলুন আগস্ট থেকেই বুকিং নেয় এবং ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুরোপুরি পূর্ণ।
উৎসবের ছায়ায় অন্ধকার বাস্তবতা
২০২৪ সালের ডেটি ডিসেম্বর থেকে লাগোস রাজ্য সরকার পর্যটন ও বিনোদন খাত থেকে আয় করেছে ৭ কোটি ১৬ লাখ ডলারের বেশি। এদিকে প্রবাসীদের ওপর ৫০০ ডলারের ‘ট্যুরিজম ট্যাক্স’ আরোপের প্রস্তাব ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে বাতিল করা হয়। সরকারকে এখানে হস্তক্ষেপ না করে নিরাপত্তা এবং ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা উচিত বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
তবে উৎসবের মধ্যেও অনেক অন্ধকার দিক রয়েছে। নাইজেরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে সহিংসতা, অপহরণ ও নিরাপত্তাহীনতা নিত্যসঙ্গী। তবু জীবন থেমে থাকে না। পর্যটন বিশেষজ্ঞ উকো বলেন, ‘কয়েক দিনের জন্য হলেও যদি এই উৎসব আমাদের দুঃখ ভুলতে সাহায্য করে, তাহলে সেটাই যথেষ্ট। ডেটি ডিসেম্বর বন্ধ করলে সমস্যাগুলো এমনিতেই মিটে যাবে, এমন নয়।’

পঞ্চদশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত ১ হাজার বছর সময়কে মধ্যযুগ ধরা হয়। সেটা ছিল সাংস্কৃতিক বিবর্তন ও ধর্মীয় ক্ষমতা চর্চার সুবর্ণ সময়। বিশ্বজুড়ে তখন জনসংখ্যা বেড়ে চলছে, গড়ে উঠছে নতুন নতুন শহর। ক্রমবর্ধমান এই জনসংখ্যাই সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে শাসক শ্রেণির জন্য উপকারী ক্ষমতার প্রতীক হয়ে ওঠে।
২৫ মে ২০২৪
সব ঠিক চলছিল। কিন্তু যেই অনুষ্ঠানের তারিখ পড়ে গেল, উঠল মুখে ব্রণ কিংবা লাল হয়ে উঠল র্যাশ! মেজাজ হয়ে উঠল তিরিক্ষি। কিন্তু অনুষ্ঠানে তো যেতে হবে। এমন অবস্থায় যে সব সময় পারলারেই যেতে হয়, তা নয়। ঘরে বসেও এর বিরুদ্ধ ব্যবস্থা নিতে পারেন। ত্বকের ধরন অনুযায়ী যত্ন নিলে নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানের দিন ত্বক...
২ ঘণ্টা আগে
একুশ শতকের প্রথম দশক, অর্থাৎ ২০০০ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সময়টা ছিল এক অদ্ভুত ফ্যাশনের সময়। তখন আভিজাত্যের চেয়ে আস্ফালন ছিল বেশি! সূক্ষ্মতা তখন প্রায় মৃত। চারদিকে শুধু পাপারাজ্জির ক্যামেরার ফ্ল্যাশ। মাই স্পেসের জন্য আয়নায় তোলা অগোছালো ছবি। আর ছিল আত্মবিশ্বাসের জয়গান। বলা যেতেই পারে, ২০০০ সালের দিকে...
৬ ঘণ্টা আগে
আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে, কিন্তু পকেট তলানিতে। আজ আপনার সাহস দেখে পাড়ার কুকুরও কুর্নিশ করবে। ইন্টারভিউতে ডাক আসতে পারে; তবে যাওয়ার সময় পকেটে একটা চকলেট রাখবেন, যদি মাথা ঘুরে যায়! প্রেমে আজ ‘বিয়ে’ শব্দটা উচ্চারণ করবেন না, উল্টো দিক থেকে ব্লক খাওয়ার সম্ভাবনা ৯০ পারসেন্ট।
৭ ঘণ্টা আগেকাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা

একুশ শতকের প্রথম দশক, অর্থাৎ ২০০০ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সময়টা ছিল এক অদ্ভুত ফ্যাশনের সময়। তখন আভিজাত্যের চেয়ে আস্ফালন ছিল বেশি! সূক্ষ্মতা তখন প্রায় মৃত। চারদিকে শুধু পাপারাজ্জির ক্যামেরার ফ্ল্যাশ। মাই স্পেসের জন্য আয়নায় তোলা অগোছালো ছবি। আর ছিল আত্মবিশ্বাসের জয়গান। বলা যেতেই পারে, ২০০০ সালের দিকে আত্মবিশ্বাসই ছিল আসল স্টাইল। এখনকার পরিমিত ফ্যাশনের যুগে সেই বিশৃঙ্খলা আবার ফিরে আসছে। না, ঠিক বিশৃঙ্খলা নয়, একে বলা যেতে পারে শৃঙ্খলাবদ্ধ বিশৃঙ্খলা। ২০২৫ এর নতুন প্রজন্ম খুঁজছে সেই রঙিন উন্মাদনা। তারা চাইছে সেই কেয়ারফ্রি স্টাইল। সামাজিক মাধ্যমেও বিভিন্ন সময় অনেকে মজা করে ভিডিও বানান এমন ছবি তোলার স্টাইলে। কিংবা বড় বড় ব্র্যান্ডের বিলবোর্ডে এমনকি ফ্যাশন ম্যাগাজিনগুলোতেও আমরা এমন এলোমেলো স্টাইলে দাঁড়ানো ছবি দেখি এখন। তার মানে, দেড়-দুই দশকের পুরোনো ফ্যাশন ও স্টাইল ফিরছে আবার প্রবলভাবেই?
আনুষঙ্গিক যখন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু

সেই সময় চশমা মানেই ছিল বিশাল কিছু। নীল, গোলাপি বা বেগুনি লেন্স। চোখের ওপর যেন একটা রঙিন পর্দা। প্যারিস হিল্টনের সেই চশমাগুলো ছিল রাজকীয়। পুরো পৃথিবীটাই যেন সেই চশমার রঙে সুন্দর দেখাত। এখন আবারও ফিরে এসেছে সেই স্টাইল। সেই সময় ঠোঁটে ছিল গ্লসের ছটা। এত উজ্জ্বল যে একটু হলেই যেন আয়নার কাজ চলে যাবে। মার্কিন সংগীতশিল্পী, গীতিকার, অভিনেত্রী, নৃত্যশিল্পী, ব্যবসায়ী জেনিফার লোপেজ বা জে লো সেই গ্লসি ঠোঁটকে আইকনিক করেছিলেন। এমনকি তৎকালীন কিছু ফ্যাশন ম্যাগাজিনে এগুলো বোনাস হিসেবেও দেওয়া হতো। ‘গ্ল্যামার’ ম্যাগাজিনে বলা হয়েছে, ২০২৫ এ জে লো এই আঠালো টিউবগুলো আবারও জনপ্রিয় করে সবার হ্যান্ডব্যাগে পৌঁছে দেওয়ার পেছনে ভূমিকা রেখেছেন।
সেই সময়ের বেশ কিছু মোটিফও আবার ফিরে এসেছে। যেমন প্রজাপতি। এটি ছিল মেয়েলি ঢঙের এক চমৎকার প্রকাশ। ২০০০ সালের দিকে ফ্যাশন ট্রেন্ডের একটি বড় অংশজুড়ে চুলে ছিল প্রজাপতি ক্লিপ। মারিয়া ক্যারির সেই মায়াবী ট্রেন্ড। চোকার থেকে শুরু করে টপ পর্যন্ত ছিল প্রজাপতির উড়ে বেড়ানো। আবারও চুলের কাঁকড়া ব্যান্ড থেকে শুরু করে ছোট ক্লিপ পর্যন্ত প্রজাপতির সেই ওড়াউড়ি চোখে পড়ছে মার্কেটে ঘুরলে।
আবারও মিলেছে আরাম আর সাহস

অসম্ভব ছোট এই পার্সগুলো শূন্য দশকের শুরুর দিকে আইকন হয়ে উঠেছিল। সেগুলো এখন আবারও আমরা দেখছি। এখনকার একটা স্মার্টফোন সেখানে ঢোকানো সম্ভব নয়। তারপরেও আউটফিটের সঙ্গে মিলিয়ে ছোট ব্যাগ নেওয়াই এখন ফ্যাশন হয়ে উঠেছে। অনেকে মনে করেন, এটা নতুন ফ্যাশন ধারা। তাদের জন্য বলে রাখি, এটাও ফ্যাশন জগতে নতুন কিছু নয়, শূন্য দশকের ফ্যাশন। তখন ব্যাগগুলোতে একটি ফ্লিপ ফোন এবং লিপ গ্লসের বেশি কিছু আঁটত না। ২০০২ সালের প্রায় প্রতিটি পাপারাজ্জি শটে এগুলো অমর হয়ে আছে। এগুলো ছিল চপল, মেয়েলি এবং ব্যবহারিক উপযোগিতার প্রতি তোয়াক্কাহীন। গত বছরেই কাজলসহ বেশ কিছু বলিউড অভিনেত্রী শাড়ির সঙ্গে মোটা বেল্ট পরে একটি ফ্যাশন ট্রেন্ড তৈরি করেছিলেন। বলে রাখি, এটাও নতুন কিছু নয়। সেই প্রথম দশকে কোমরে ঝোলানো থাকত বিশাল সব বেল্ট। কখনো জিনসের নিচে, কখনো পোশাকের ওপর। বেল্টগুলো যেন ছিল একেকটা রহস্য।
ডেনিম আর মেটালিকের জাদু

একটা সময় জিনস ছিল বিস্ময়। তখন লো-রাইজ বা লো-কাট জিনস ছিল সবার প্রিয়। মার্কিন গায়িকা ব্রিটনি স্পিয়ার্সের হাত ধরে এটি ঘরে ঘরে পৌঁছে যায়। এর পাশাপাশি ছিল বুট কাট আর ফ্লেয়ার্ড জিনস। ফ্যাশন জগৎ জুড়ে তখন ডেনিমের রাজত্ব। সেই ঢিলেঢালা জিনস আবারও তরুণ-তরুণীদের আলমারিতে জায়গা করে নিয়েছে। কিশোর-কিশোরী থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আজ আবারও সেই ডেনিম জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। জিনসের পাশাপাশি শীতে ডেনিমের জ্যাকেট—সবই তাদের পছন্দের তালিকায় প্রথম সারিতে চলে এসেছে।
সেই সময় মানুষ ভবিষ্যতের নেশায় বুঁদ ছিল। চারদিকে শুধু রুপালি আর মেটালিকের ছোঁয়া। সিলভার জ্যাকেট বা হলোগ্রাফিক স্কার্ট। এমনকি চুলের রংও হয়ে গিয়েছিল রুপালি। যেন সবাই মহাকাশ ভ্রমণের জন্য তৈরি। এটি ছিল এক রঙিন আশাবাদ। আর জেন-জিদের হাত ধরে বর্তমানে সারা বিশ্ব বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন দেখছে। তাদের চোখেও রঙিন স্বপ্ন, বদলের একটা বিশেষ রং। তাই তাদের ফ্যাশনে আবারও মেটালিকের ছোঁয়া উঠে এসেছে।
লোগোম্যানিয়া আর লাক্সারি
সে সময়, অর্থাৎ সেই শূন্য দশকে ফ্যাশন যেন ফিসফিস করত না, চিৎকার করত। ব্র্যান্ডের নাম গায়ে জড়িয়ে রাখাই ছিল দস্তুর। ডিওরের স্যাডেল ব্যাগ কিংবা ফেন্ডির লোগো। লোকে যেন আধা মাইল দূর থেকেও ব্র্যান্ড চিনতে পারে। সেটাই ছিল আসল উদ্দেশ্য। সেই প্রবণতা আবারও ফিরে এসেছে। দাম বেশি হলেও ব্র্যান্ডেই মানুষের আরাম পৌঁছে গেছে। বিষয়টা অনেকটা সমাজে মুখ দেখানোর মতো বাড়াবাড়ির পর্যায়েও চলে যায় অনেক সময়।
সেই সময় টিনএজ ফ্যাশনে ছিল লেয়ার্ড ট্যাংকের ছড়াছড়ি। একটার ওপর একটা রঙিন কামিজ বা টপ। সঙ্গে ছোট ছোট গ্রাফিক টি-শার্ট। তাতে গ্লিটার দিয়ে লেখা থাকত অদ্ভুত সব কথা। প্রতিটি পোশাক ছিল ব্যক্তিত্বের এক-একটা ছোট সংস্করণ; যা আজও জনপ্রিয়। অবশ্য সব সময় ফ্যাশন ছিল প্রতিবাদের ভাষা।
অনুভূতির এক অগোছালো স্ক্র্যাপবুক
শূন্য দশক কোনো নিয়ম মানেনি। এটি ছিল স্বতঃস্ফূর্ত এক ফ্যাশন ধারা। কোনো ক্ষমা না চাওয়া পপসংস্কৃতির ফসল। সে সময় ফ্যাশন কালজয়ী হতে চায়নি। বড় বড় সিলুয়েট আর বড় বড় অনুভূতির গল্প ছিল সেটি। সেই অদম্য উৎসাহের কারণেই আজ ২০২৫-এ এসেও আমরা বারবার সেই দিনগুলোর দিকে ফিরে তাকাই।
সূত্র: শোবিজ ডেইলি

একুশ শতকের প্রথম দশক, অর্থাৎ ২০০০ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সময়টা ছিল এক অদ্ভুত ফ্যাশনের সময়। তখন আভিজাত্যের চেয়ে আস্ফালন ছিল বেশি! সূক্ষ্মতা তখন প্রায় মৃত। চারদিকে শুধু পাপারাজ্জির ক্যামেরার ফ্ল্যাশ। মাই স্পেসের জন্য আয়নায় তোলা অগোছালো ছবি। আর ছিল আত্মবিশ্বাসের জয়গান। বলা যেতেই পারে, ২০০০ সালের দিকে আত্মবিশ্বাসই ছিল আসল স্টাইল। এখনকার পরিমিত ফ্যাশনের যুগে সেই বিশৃঙ্খলা আবার ফিরে আসছে। না, ঠিক বিশৃঙ্খলা নয়, একে বলা যেতে পারে শৃঙ্খলাবদ্ধ বিশৃঙ্খলা। ২০২৫ এর নতুন প্রজন্ম খুঁজছে সেই রঙিন উন্মাদনা। তারা চাইছে সেই কেয়ারফ্রি স্টাইল। সামাজিক মাধ্যমেও বিভিন্ন সময় অনেকে মজা করে ভিডিও বানান এমন ছবি তোলার স্টাইলে। কিংবা বড় বড় ব্র্যান্ডের বিলবোর্ডে এমনকি ফ্যাশন ম্যাগাজিনগুলোতেও আমরা এমন এলোমেলো স্টাইলে দাঁড়ানো ছবি দেখি এখন। তার মানে, দেড়-দুই দশকের পুরোনো ফ্যাশন ও স্টাইল ফিরছে আবার প্রবলভাবেই?
আনুষঙ্গিক যখন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু

সেই সময় চশমা মানেই ছিল বিশাল কিছু। নীল, গোলাপি বা বেগুনি লেন্স। চোখের ওপর যেন একটা রঙিন পর্দা। প্যারিস হিল্টনের সেই চশমাগুলো ছিল রাজকীয়। পুরো পৃথিবীটাই যেন সেই চশমার রঙে সুন্দর দেখাত। এখন আবারও ফিরে এসেছে সেই স্টাইল। সেই সময় ঠোঁটে ছিল গ্লসের ছটা। এত উজ্জ্বল যে একটু হলেই যেন আয়নার কাজ চলে যাবে। মার্কিন সংগীতশিল্পী, গীতিকার, অভিনেত্রী, নৃত্যশিল্পী, ব্যবসায়ী জেনিফার লোপেজ বা জে লো সেই গ্লসি ঠোঁটকে আইকনিক করেছিলেন। এমনকি তৎকালীন কিছু ফ্যাশন ম্যাগাজিনে এগুলো বোনাস হিসেবেও দেওয়া হতো। ‘গ্ল্যামার’ ম্যাগাজিনে বলা হয়েছে, ২০২৫ এ জে লো এই আঠালো টিউবগুলো আবারও জনপ্রিয় করে সবার হ্যান্ডব্যাগে পৌঁছে দেওয়ার পেছনে ভূমিকা রেখেছেন।
সেই সময়ের বেশ কিছু মোটিফও আবার ফিরে এসেছে। যেমন প্রজাপতি। এটি ছিল মেয়েলি ঢঙের এক চমৎকার প্রকাশ। ২০০০ সালের দিকে ফ্যাশন ট্রেন্ডের একটি বড় অংশজুড়ে চুলে ছিল প্রজাপতি ক্লিপ। মারিয়া ক্যারির সেই মায়াবী ট্রেন্ড। চোকার থেকে শুরু করে টপ পর্যন্ত ছিল প্রজাপতির উড়ে বেড়ানো। আবারও চুলের কাঁকড়া ব্যান্ড থেকে শুরু করে ছোট ক্লিপ পর্যন্ত প্রজাপতির সেই ওড়াউড়ি চোখে পড়ছে মার্কেটে ঘুরলে।
আবারও মিলেছে আরাম আর সাহস

অসম্ভব ছোট এই পার্সগুলো শূন্য দশকের শুরুর দিকে আইকন হয়ে উঠেছিল। সেগুলো এখন আবারও আমরা দেখছি। এখনকার একটা স্মার্টফোন সেখানে ঢোকানো সম্ভব নয়। তারপরেও আউটফিটের সঙ্গে মিলিয়ে ছোট ব্যাগ নেওয়াই এখন ফ্যাশন হয়ে উঠেছে। অনেকে মনে করেন, এটা নতুন ফ্যাশন ধারা। তাদের জন্য বলে রাখি, এটাও ফ্যাশন জগতে নতুন কিছু নয়, শূন্য দশকের ফ্যাশন। তখন ব্যাগগুলোতে একটি ফ্লিপ ফোন এবং লিপ গ্লসের বেশি কিছু আঁটত না। ২০০২ সালের প্রায় প্রতিটি পাপারাজ্জি শটে এগুলো অমর হয়ে আছে। এগুলো ছিল চপল, মেয়েলি এবং ব্যবহারিক উপযোগিতার প্রতি তোয়াক্কাহীন। গত বছরেই কাজলসহ বেশ কিছু বলিউড অভিনেত্রী শাড়ির সঙ্গে মোটা বেল্ট পরে একটি ফ্যাশন ট্রেন্ড তৈরি করেছিলেন। বলে রাখি, এটাও নতুন কিছু নয়। সেই প্রথম দশকে কোমরে ঝোলানো থাকত বিশাল সব বেল্ট। কখনো জিনসের নিচে, কখনো পোশাকের ওপর। বেল্টগুলো যেন ছিল একেকটা রহস্য।
ডেনিম আর মেটালিকের জাদু

একটা সময় জিনস ছিল বিস্ময়। তখন লো-রাইজ বা লো-কাট জিনস ছিল সবার প্রিয়। মার্কিন গায়িকা ব্রিটনি স্পিয়ার্সের হাত ধরে এটি ঘরে ঘরে পৌঁছে যায়। এর পাশাপাশি ছিল বুট কাট আর ফ্লেয়ার্ড জিনস। ফ্যাশন জগৎ জুড়ে তখন ডেনিমের রাজত্ব। সেই ঢিলেঢালা জিনস আবারও তরুণ-তরুণীদের আলমারিতে জায়গা করে নিয়েছে। কিশোর-কিশোরী থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আজ আবারও সেই ডেনিম জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। জিনসের পাশাপাশি শীতে ডেনিমের জ্যাকেট—সবই তাদের পছন্দের তালিকায় প্রথম সারিতে চলে এসেছে।
সেই সময় মানুষ ভবিষ্যতের নেশায় বুঁদ ছিল। চারদিকে শুধু রুপালি আর মেটালিকের ছোঁয়া। সিলভার জ্যাকেট বা হলোগ্রাফিক স্কার্ট। এমনকি চুলের রংও হয়ে গিয়েছিল রুপালি। যেন সবাই মহাকাশ ভ্রমণের জন্য তৈরি। এটি ছিল এক রঙিন আশাবাদ। আর জেন-জিদের হাত ধরে বর্তমানে সারা বিশ্ব বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন দেখছে। তাদের চোখেও রঙিন স্বপ্ন, বদলের একটা বিশেষ রং। তাই তাদের ফ্যাশনে আবারও মেটালিকের ছোঁয়া উঠে এসেছে।
লোগোম্যানিয়া আর লাক্সারি
সে সময়, অর্থাৎ সেই শূন্য দশকে ফ্যাশন যেন ফিসফিস করত না, চিৎকার করত। ব্র্যান্ডের নাম গায়ে জড়িয়ে রাখাই ছিল দস্তুর। ডিওরের স্যাডেল ব্যাগ কিংবা ফেন্ডির লোগো। লোকে যেন আধা মাইল দূর থেকেও ব্র্যান্ড চিনতে পারে। সেটাই ছিল আসল উদ্দেশ্য। সেই প্রবণতা আবারও ফিরে এসেছে। দাম বেশি হলেও ব্র্যান্ডেই মানুষের আরাম পৌঁছে গেছে। বিষয়টা অনেকটা সমাজে মুখ দেখানোর মতো বাড়াবাড়ির পর্যায়েও চলে যায় অনেক সময়।
সেই সময় টিনএজ ফ্যাশনে ছিল লেয়ার্ড ট্যাংকের ছড়াছড়ি। একটার ওপর একটা রঙিন কামিজ বা টপ। সঙ্গে ছোট ছোট গ্রাফিক টি-শার্ট। তাতে গ্লিটার দিয়ে লেখা থাকত অদ্ভুত সব কথা। প্রতিটি পোশাক ছিল ব্যক্তিত্বের এক-একটা ছোট সংস্করণ; যা আজও জনপ্রিয়। অবশ্য সব সময় ফ্যাশন ছিল প্রতিবাদের ভাষা।
অনুভূতির এক অগোছালো স্ক্র্যাপবুক
শূন্য দশক কোনো নিয়ম মানেনি। এটি ছিল স্বতঃস্ফূর্ত এক ফ্যাশন ধারা। কোনো ক্ষমা না চাওয়া পপসংস্কৃতির ফসল। সে সময় ফ্যাশন কালজয়ী হতে চায়নি। বড় বড় সিলুয়েট আর বড় বড় অনুভূতির গল্প ছিল সেটি। সেই অদম্য উৎসাহের কারণেই আজ ২০২৫-এ এসেও আমরা বারবার সেই দিনগুলোর দিকে ফিরে তাকাই।
সূত্র: শোবিজ ডেইলি

পঞ্চদশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত ১ হাজার বছর সময়কে মধ্যযুগ ধরা হয়। সেটা ছিল সাংস্কৃতিক বিবর্তন ও ধর্মীয় ক্ষমতা চর্চার সুবর্ণ সময়। বিশ্বজুড়ে তখন জনসংখ্যা বেড়ে চলছে, গড়ে উঠছে নতুন নতুন শহর। ক্রমবর্ধমান এই জনসংখ্যাই সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে শাসক শ্রেণির জন্য উপকারী ক্ষমতার প্রতীক হয়ে ওঠে।
২৫ মে ২০২৪
সব ঠিক চলছিল। কিন্তু যেই অনুষ্ঠানের তারিখ পড়ে গেল, উঠল মুখে ব্রণ কিংবা লাল হয়ে উঠল র্যাশ! মেজাজ হয়ে উঠল তিরিক্ষি। কিন্তু অনুষ্ঠানে তো যেতে হবে। এমন অবস্থায় যে সব সময় পারলারেই যেতে হয়, তা নয়। ঘরে বসেও এর বিরুদ্ধ ব্যবস্থা নিতে পারেন। ত্বকের ধরন অনুযায়ী যত্ন নিলে নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানের দিন ত্বক...
২ ঘণ্টা আগে
নাইজেরিয়ার বড় শহর লাগোস সারা বছর ব্যস্ত থাকে। তবে বছরের শেষ দিকে এই বিশাল শহর যেন রূপ বদলে আরও বেশি সরগরম হয়ে ওঠে। এর কারণ ডেটি ডিসেম্বর। এটি শহরের বার্ষিক উৎসব। একে ঘিরে পুরো শহর সেজে ওঠে ঝলমলে আলোয়। রাত হয়ে ওঠে সংগীতময়, রাস্তাজুড়ে থাকে উৎসবমুখর মানুষের ঢল। সংগীত, খাদ্য, পানীয় ডিসেম্বরে সব যেন...
৪ ঘণ্টা আগে
আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে, কিন্তু পকেট তলানিতে। আজ আপনার সাহস দেখে পাড়ার কুকুরও কুর্নিশ করবে। ইন্টারভিউতে ডাক আসতে পারে; তবে যাওয়ার সময় পকেটে একটা চকলেট রাখবেন, যদি মাথা ঘুরে যায়! প্রেমে আজ ‘বিয়ে’ শব্দটা উচ্চারণ করবেন না, উল্টো দিক থেকে ব্লক খাওয়ার সম্ভাবনা ৯০ পারসেন্ট।
৭ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মেষ
আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে, কিন্তু পকেট তলানিতে। আজ আপনার সাহস দেখে পাড়ার কুকুরও কুর্নিশ করবে। ইন্টারভিউতে ডাক আসতে পারে; তবে যাওয়ার সময় পকেটে একটা চকলেট রাখবেন, যদি মাথা ঘুরে যায়! প্রেমে আজ ‘বিয়ে’ শব্দটা উচ্চারণ করবেন না, উল্টো দিক থেকে ব্লক খাওয়ার সম্ভাবনা ৯০ পারসেন্ট। টাকা লেনদেনে আজ বাঘের মতো সতর্ক থাকুন, না হলে বিড়ালের মতো কাঁদতে হবে।
বৃষ
পেশায় পালোয়ান, নেশায় ঘুমকাতুরে। আজ শেয়ার বাজার আপনার দিকে হাসবে। কিন্তু সাবধানে, হাসা মানেই যে লাভ তা নয়, উপহাসও হতে পারে! রাস্তায় ট্রাফিক সিগন্যাল ভাঙবেন না। আজ পুলিশ আপনাকে ‘স্পেশাল গেস্ট’ বানাতে খুব আগ্রহী। পুরোনো অসুখ নিয়ে সুসংবাদ পাবেন; হয়তো জানবেন ওটা আসলে অসুখই ছিল না, আলসেমি ছিল! দুপুরের পর কাজে গতি আসবে, তবে বিরিয়ানি খেলে সেই গতি আবার বিছানামুখী হবে।
মিথুন
সৃজনশীলতা ফেটে বেরোচ্ছে, কিন্তু কেউ পাত্তা দিচ্ছে না। আজ কাউকে ধার দেবেন না। ধার দেওয়া মানেই সেই বন্ধুকে চিরতরে হারিয়ে ফেলা। অফিসে আজ খুব মন দিয়ে কাজ করুন, বসের নজর আজ সিসিটিভির চেয়েও ধারালো। প্রেমে আজ কোনো আত্মীয়র কারণে অশান্তি হতে পারে। আত্মীয়দের থেকে দূরে থাকুন, শান্তিতে থাকুন। সৃজনশীল হোন, কিন্তু রান্নায় বেশি এক্সপেরিমেন্ট করতে যাবেন না।
কর্কট
আজ আপনি একটু বেশিই সেন্টিমেন্টাল। আজ চোখে জল আর নাকে সর্দি—দুটিই সমানতালে আসতে পারে। ব্যবসা শুরুর জন্য দিনটা ভালো, কিন্তু পার্টনার হিসেবে নিজের ছায়াকেও বিশ্বাস করবেন না। বিচক্ষণতা বজায় রাখুন, না হলে লোকজন আপনাকে ইমোশনাল ফুল বানিয়ে চলে যাবে। আজ ফেসবুকে দুঃখের পোস্ট দেবেন না। কেউ এসে সান্ত্বনা নয়, হা হা রিঅ্যাক্ট দিয়ে যাবে।
সিংহ
সকালে রাজা, সন্ধ্যায় ভিখারি (মানসিকভাবে)। সকালের দিকে সব জরুরি কাজ সেরে নিন। কারণ, সূর্য ডুবলে আপনার মেজাজও ডুববে। স্ত্রীর সঙ্গে তর্কে জেতার চেষ্টা করা মানে হলো আগ্নেয়গিরিতে ঝাঁপ দেওয়া। আজ আত্মবিশ্বাসের অভাবে কাজে একটু ব্যাঘাত ঘটতে পারে, তাই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দশবার বলুন, ‘আই অ্যাম দ্য বস!’ মায়ের শরীর ভালো থাকবে, তাই আজ একবেলা রান্না থেকে ছুটি পেতে পারেন।
কন্যা
নিখুঁত হতে গিয়ে জেরবার। বন্ধুদের সঙ্গে ট্যুর প্ল্যান ক্যানসেল হতে পারে। কারণ, সেই এক—আপনার খুঁতখুঁতে স্বভাব! পরীক্ষার ফল ভালো হবে, তবে তার আগে হার্টবিট কন্ট্রোল করুন। সম্পর্কের ক্ষেত্রে আজ একটু নমনীয় হোন, রোবটের মতো লজিক খুঁজলে একা থাকতে হবে। আজ পুরোনো কোনো বন্ধুর ফোন আসতে পারে, সম্ভবত সে টাকা ধার চাইবে।
তুলা
অর্থ আসছে, কিন্তু যাচ্ছে রকেটের গতিতে। আজ আপনার অর্থভাগ্য খুব ভালো, কিন্তু সমস্যা হলো খরচের হাতটা অক্টোপাসের মতো। স্ত্রী আপনার মনের কথা বুঝবে, কিন্তু আপনার ক্রেডিট কার্ডের বিলটা বুঝবে কি? সন্তানদের নিয়ে দুশ্চিন্তা ছাড়ুন, ওরা আপনার চেয়ে বেশি স্মার্ট। বিদেশের কারও সঙ্গে কথা হতে পারে, তবে সেটা স্ক্যাম কল কি না যাচাই করে নিন।
বৃশ্চিক
রহস্যময় হাসি আর পকেটভর্তি টাকা। ব্যবসায় আজ লক্ষ্মীলাভের যোগ আছে। বন্ধুদের আজ ডিনার খাওয়াতে হতে পারে, তাই পালানোর রাস্তা আগে থেকে ঠিক করে রাখুন। আধ্যাত্মিক চিন্তায় মনে শান্তি মিলবে, তবে সেটা যেন শুধু মশারির ভেতরেই সীমাবদ্ধ না থাকে। শেয়ার বাজারে আজ একটু ঝুঁকি নিতেই পারেন, তবে হারলে আমাকে দোষ দেবেন না!
ধনু
কঠোর পরিশ্রম, কিন্তু রেজাল্ট তথৈবচ। বকেয়া টাকা পাওয়ার যোগ আছে, তবে সেটা আদায় করতে গিয়ে গলা শুকিয়ে যাবে। প্রেমে আজ সত্যবাদী থাকুন, একটা মিথ্যা ধরা পড়লে কপালে শনির দশা নিশ্চিত। রূপচর্চার জন্য আজ বেশ কিছু টাকা গচ্চা যেতে পারে, কিন্তু তাতে মুখ কতটা চকচক করবে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। সন্ধ্যার পর হুট করে মন খারাপ হতে পারে; এক কাপ কড়া চা খান।
মকর
কাজের নেশায় বুঁদ, শরীর বলছে ‘আর না’। আজ আপনার পরিশ্রম দেখে পিঁপড়ারা লজ্জা পাবে। পরিবারে আপনার মতামতের দাম বাড়বে, তবে সেটা শুধু মেনু ঠিক করার ক্ষেত্রেই হতে পারে। তীর্থযাত্রার সুযোগ আসতে পারে, অন্তত পাড়ার মোড়ের মন্দির পর্যন্ত তো বটেই। বেশি ইমোশনাল হবেন না, বিশেষ করে অফিসের গ্রুপ চ্যাটে।
কুম্ভ
মনের ভেতর হাজার প্রশ্ন, উত্তর নেই একটাও। চাকরি বদলানোর চিন্তা আজ মাথায় ঘুরবে, কিন্তু ব্যাংক ব্যালেন্সের দিকে তাকালে সেই চিন্তা কর্পূরের মতো উবে যাবে। বন্ধুদের অবহেলা করবেন না, ওরাই বিপদের সময় চপ-মুড়ি নিয়ে হাজির হবে। ভোরে ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করুন, তাতে ভাগ্য না ফিরলেও শরীর ঠিক থাকবে। কোনো চুক্তিতে সই করার আগে অন্তত তিনবার বানানগুলো চেক করুন।
মীন
স্বপ্নের ঘোরে দিন কাটে, বাস্তবে শুধু ধাক্কা। পরিবারের কোনো বড় সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে আজ কনফিউজড হয়ে যাবেন। আজ আপনার মিষ্টি কথায় কাজ হাসিল হবে, এমনকি আজরাইলকেও বোধহয় কফি খাইয়ে ফেরত পাঠাতে পারবেন। ব্যবসায়িক কাজে বন্ধুদের পূর্ণ সহযোগিতা পাবেন। আজ আপনার মেধা চমকাবে, তবে সেটা যেন শুধু ফেসবুক কুইজেই শেষ না হয়ে যায়।

মেষ
আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে, কিন্তু পকেট তলানিতে। আজ আপনার সাহস দেখে পাড়ার কুকুরও কুর্নিশ করবে। ইন্টারভিউতে ডাক আসতে পারে; তবে যাওয়ার সময় পকেটে একটা চকলেট রাখবেন, যদি মাথা ঘুরে যায়! প্রেমে আজ ‘বিয়ে’ শব্দটা উচ্চারণ করবেন না, উল্টো দিক থেকে ব্লক খাওয়ার সম্ভাবনা ৯০ পারসেন্ট। টাকা লেনদেনে আজ বাঘের মতো সতর্ক থাকুন, না হলে বিড়ালের মতো কাঁদতে হবে।
বৃষ
পেশায় পালোয়ান, নেশায় ঘুমকাতুরে। আজ শেয়ার বাজার আপনার দিকে হাসবে। কিন্তু সাবধানে, হাসা মানেই যে লাভ তা নয়, উপহাসও হতে পারে! রাস্তায় ট্রাফিক সিগন্যাল ভাঙবেন না। আজ পুলিশ আপনাকে ‘স্পেশাল গেস্ট’ বানাতে খুব আগ্রহী। পুরোনো অসুখ নিয়ে সুসংবাদ পাবেন; হয়তো জানবেন ওটা আসলে অসুখই ছিল না, আলসেমি ছিল! দুপুরের পর কাজে গতি আসবে, তবে বিরিয়ানি খেলে সেই গতি আবার বিছানামুখী হবে।
মিথুন
সৃজনশীলতা ফেটে বেরোচ্ছে, কিন্তু কেউ পাত্তা দিচ্ছে না। আজ কাউকে ধার দেবেন না। ধার দেওয়া মানেই সেই বন্ধুকে চিরতরে হারিয়ে ফেলা। অফিসে আজ খুব মন দিয়ে কাজ করুন, বসের নজর আজ সিসিটিভির চেয়েও ধারালো। প্রেমে আজ কোনো আত্মীয়র কারণে অশান্তি হতে পারে। আত্মীয়দের থেকে দূরে থাকুন, শান্তিতে থাকুন। সৃজনশীল হোন, কিন্তু রান্নায় বেশি এক্সপেরিমেন্ট করতে যাবেন না।
কর্কট
আজ আপনি একটু বেশিই সেন্টিমেন্টাল। আজ চোখে জল আর নাকে সর্দি—দুটিই সমানতালে আসতে পারে। ব্যবসা শুরুর জন্য দিনটা ভালো, কিন্তু পার্টনার হিসেবে নিজের ছায়াকেও বিশ্বাস করবেন না। বিচক্ষণতা বজায় রাখুন, না হলে লোকজন আপনাকে ইমোশনাল ফুল বানিয়ে চলে যাবে। আজ ফেসবুকে দুঃখের পোস্ট দেবেন না। কেউ এসে সান্ত্বনা নয়, হা হা রিঅ্যাক্ট দিয়ে যাবে।
সিংহ
সকালে রাজা, সন্ধ্যায় ভিখারি (মানসিকভাবে)। সকালের দিকে সব জরুরি কাজ সেরে নিন। কারণ, সূর্য ডুবলে আপনার মেজাজও ডুববে। স্ত্রীর সঙ্গে তর্কে জেতার চেষ্টা করা মানে হলো আগ্নেয়গিরিতে ঝাঁপ দেওয়া। আজ আত্মবিশ্বাসের অভাবে কাজে একটু ব্যাঘাত ঘটতে পারে, তাই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দশবার বলুন, ‘আই অ্যাম দ্য বস!’ মায়ের শরীর ভালো থাকবে, তাই আজ একবেলা রান্না থেকে ছুটি পেতে পারেন।
কন্যা
নিখুঁত হতে গিয়ে জেরবার। বন্ধুদের সঙ্গে ট্যুর প্ল্যান ক্যানসেল হতে পারে। কারণ, সেই এক—আপনার খুঁতখুঁতে স্বভাব! পরীক্ষার ফল ভালো হবে, তবে তার আগে হার্টবিট কন্ট্রোল করুন। সম্পর্কের ক্ষেত্রে আজ একটু নমনীয় হোন, রোবটের মতো লজিক খুঁজলে একা থাকতে হবে। আজ পুরোনো কোনো বন্ধুর ফোন আসতে পারে, সম্ভবত সে টাকা ধার চাইবে।
তুলা
অর্থ আসছে, কিন্তু যাচ্ছে রকেটের গতিতে। আজ আপনার অর্থভাগ্য খুব ভালো, কিন্তু সমস্যা হলো খরচের হাতটা অক্টোপাসের মতো। স্ত্রী আপনার মনের কথা বুঝবে, কিন্তু আপনার ক্রেডিট কার্ডের বিলটা বুঝবে কি? সন্তানদের নিয়ে দুশ্চিন্তা ছাড়ুন, ওরা আপনার চেয়ে বেশি স্মার্ট। বিদেশের কারও সঙ্গে কথা হতে পারে, তবে সেটা স্ক্যাম কল কি না যাচাই করে নিন।
বৃশ্চিক
রহস্যময় হাসি আর পকেটভর্তি টাকা। ব্যবসায় আজ লক্ষ্মীলাভের যোগ আছে। বন্ধুদের আজ ডিনার খাওয়াতে হতে পারে, তাই পালানোর রাস্তা আগে থেকে ঠিক করে রাখুন। আধ্যাত্মিক চিন্তায় মনে শান্তি মিলবে, তবে সেটা যেন শুধু মশারির ভেতরেই সীমাবদ্ধ না থাকে। শেয়ার বাজারে আজ একটু ঝুঁকি নিতেই পারেন, তবে হারলে আমাকে দোষ দেবেন না!
ধনু
কঠোর পরিশ্রম, কিন্তু রেজাল্ট তথৈবচ। বকেয়া টাকা পাওয়ার যোগ আছে, তবে সেটা আদায় করতে গিয়ে গলা শুকিয়ে যাবে। প্রেমে আজ সত্যবাদী থাকুন, একটা মিথ্যা ধরা পড়লে কপালে শনির দশা নিশ্চিত। রূপচর্চার জন্য আজ বেশ কিছু টাকা গচ্চা যেতে পারে, কিন্তু তাতে মুখ কতটা চকচক করবে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। সন্ধ্যার পর হুট করে মন খারাপ হতে পারে; এক কাপ কড়া চা খান।
মকর
কাজের নেশায় বুঁদ, শরীর বলছে ‘আর না’। আজ আপনার পরিশ্রম দেখে পিঁপড়ারা লজ্জা পাবে। পরিবারে আপনার মতামতের দাম বাড়বে, তবে সেটা শুধু মেনু ঠিক করার ক্ষেত্রেই হতে পারে। তীর্থযাত্রার সুযোগ আসতে পারে, অন্তত পাড়ার মোড়ের মন্দির পর্যন্ত তো বটেই। বেশি ইমোশনাল হবেন না, বিশেষ করে অফিসের গ্রুপ চ্যাটে।
কুম্ভ
মনের ভেতর হাজার প্রশ্ন, উত্তর নেই একটাও। চাকরি বদলানোর চিন্তা আজ মাথায় ঘুরবে, কিন্তু ব্যাংক ব্যালেন্সের দিকে তাকালে সেই চিন্তা কর্পূরের মতো উবে যাবে। বন্ধুদের অবহেলা করবেন না, ওরাই বিপদের সময় চপ-মুড়ি নিয়ে হাজির হবে। ভোরে ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করুন, তাতে ভাগ্য না ফিরলেও শরীর ঠিক থাকবে। কোনো চুক্তিতে সই করার আগে অন্তত তিনবার বানানগুলো চেক করুন।
মীন
স্বপ্নের ঘোরে দিন কাটে, বাস্তবে শুধু ধাক্কা। পরিবারের কোনো বড় সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে আজ কনফিউজড হয়ে যাবেন। আজ আপনার মিষ্টি কথায় কাজ হাসিল হবে, এমনকি আজরাইলকেও বোধহয় কফি খাইয়ে ফেরত পাঠাতে পারবেন। ব্যবসায়িক কাজে বন্ধুদের পূর্ণ সহযোগিতা পাবেন। আজ আপনার মেধা চমকাবে, তবে সেটা যেন শুধু ফেসবুক কুইজেই শেষ না হয়ে যায়।

পঞ্চদশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত ১ হাজার বছর সময়কে মধ্যযুগ ধরা হয়। সেটা ছিল সাংস্কৃতিক বিবর্তন ও ধর্মীয় ক্ষমতা চর্চার সুবর্ণ সময়। বিশ্বজুড়ে তখন জনসংখ্যা বেড়ে চলছে, গড়ে উঠছে নতুন নতুন শহর। ক্রমবর্ধমান এই জনসংখ্যাই সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে শাসক শ্রেণির জন্য উপকারী ক্ষমতার প্রতীক হয়ে ওঠে।
২৫ মে ২০২৪
সব ঠিক চলছিল। কিন্তু যেই অনুষ্ঠানের তারিখ পড়ে গেল, উঠল মুখে ব্রণ কিংবা লাল হয়ে উঠল র্যাশ! মেজাজ হয়ে উঠল তিরিক্ষি। কিন্তু অনুষ্ঠানে তো যেতে হবে। এমন অবস্থায় যে সব সময় পারলারেই যেতে হয়, তা নয়। ঘরে বসেও এর বিরুদ্ধ ব্যবস্থা নিতে পারেন। ত্বকের ধরন অনুযায়ী যত্ন নিলে নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানের দিন ত্বক...
২ ঘণ্টা আগে
নাইজেরিয়ার বড় শহর লাগোস সারা বছর ব্যস্ত থাকে। তবে বছরের শেষ দিকে এই বিশাল শহর যেন রূপ বদলে আরও বেশি সরগরম হয়ে ওঠে। এর কারণ ডেটি ডিসেম্বর। এটি শহরের বার্ষিক উৎসব। একে ঘিরে পুরো শহর সেজে ওঠে ঝলমলে আলোয়। রাত হয়ে ওঠে সংগীতময়, রাস্তাজুড়ে থাকে উৎসবমুখর মানুষের ঢল। সংগীত, খাদ্য, পানীয় ডিসেম্বরে সব যেন...
৪ ঘণ্টা আগে
একুশ শতকের প্রথম দশক, অর্থাৎ ২০০০ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সময়টা ছিল এক অদ্ভুত ফ্যাশনের সময়। তখন আভিজাত্যের চেয়ে আস্ফালন ছিল বেশি! সূক্ষ্মতা তখন প্রায় মৃত। চারদিকে শুধু পাপারাজ্জির ক্যামেরার ফ্ল্যাশ। মাই স্পেসের জন্য আয়নায় তোলা অগোছালো ছবি। আর ছিল আত্মবিশ্বাসের জয়গান। বলা যেতেই পারে, ২০০০ সালের দিকে...
৬ ঘণ্টা আগে