Ajker Patrika

কিশোরী কন্যাদের ওপর মায়েরা এত বিরক্ত কেন

আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৭: ২৬
কিশোরী কন্যাদের ওপর মায়েরা এত বিরক্ত কেন

কৈশোর মানেই বয়ঃসন্ধিকাল। এই বয়সে লিঙ্গনির্বিশেষে বাল্যকালের মধুর কণ্ঠস্বরে পরিবর্তন আসতে শুরু করে। পরিবর্তন আসে আচরণে। না শিশু, না প্রাপ্তবয়স্ক— কোনো দলেই আর জায়গা হয় না। আদরের শিশুর হঠাৎ এই পরিবর্তনে অভিভাবকেরাও সহজবোধ করেন না। আর হঠাৎ আদরে ভাটা পড়ে যাওয়া কিশোর-কিশোরী চারপাশের পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতেও হিমশিম খায়। রবীন্দ্রনাথ যথার্থই বলেছেন, ‘তেরো-চৌদ্দ বৎসরের ছেলের মতো পৃথিবীতে এমন বালাই আর নাই!’

কৈশোরের এই জটিল সন্ধিক্ষণ কখনো কখনো পারিবারিক সম্পর্কে বিরূপ প্রভাব ফেলে। সম্পর্কে দূরত্বের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি করে চোখে পড়ে মা-মেয়ের মধ্যে। এই সময়টাতে কিশোরীর প্রাইভেসি অর্থাৎ ব্যক্তিগত গোপনীয়তা-জ্ঞান টনটনে হয়।

সম্পর্কের ব্যবধান শুরু হয় কিশোরী মেয়ের হুট করেই দূরত্ব বজায় রেখে চলার প্রবণতার মাধ্যমে। কিশোর বয়সে পরিবারকে সময় দেওয়ার চেয়ে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে, একা নিজের ঘরে বা হাল আমলে স্মার্টফোনে সময় কাটাতেই বেশি পছন্দ করে কিশোরী। মায়েরা যতই শাসনের দণ্ড শক্ত করে ধরেন, মেয়েরা আরও বেশি দূরে সরে যায়। তারা আরও স্বাধীনতা চায়, স্বাতন্ত্র্য চায়। পান থেকে চুন খসলেই অভিমান করে। আচরণের এ বৈপরীত্য দুজনের সম্পর্ক রেষারেষিতে রূপ নেয়। 

কৈশোরের কয়েকটি বছর মা-মেয়ের মধ্যে শোনা যায় শত অভিযোগ অনুযোগের ফিরিস্তি। মায়েরা কিশোরী কন্যার ঘন ঘন মেজাজ পরিবর্তন, অযৌক্তিক আচরণ, অকারণে বিরক্তি প্রকাশ এবং কষ্ট দিয়ে কথা বলা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে থাকেন। কিশোরীরা মায়ের শাসনে বিরক্ত হয়। শুধু ভাবে, মা তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছেন, মা তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে চান না, দুজনের বোঝাপড়ার ঘাটতি, ওজর-আবদার শুনতে মায়ের অনিচ্ছা, কথা না শুনলেই চিৎকার-চেঁচামেচি করে বাড়ি মাথায় তোলেন—মায়ের বিরুদ্ধে এমন একগাদা অভিযোগ নিয়ে বসে থাকা তারা।

মায়ের প্রতি কিশোরীদের বিরূপ আচরণের কারণ
মায়েরা আশা করে বসে থাকেন, এ সময়টাতে মেয়ে তাঁর সঙ্গে আরও খোলাখুলি কথা বলবে, মাকে সময় দেবে। তাঁরা আশা করেন, মায়ের সঙ্গে এ সময়টাতে তাঁদের যেমন সম্পর্ক ছিল, মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মধুর হবে। কিন্তু বাস্তবে তা সাধারণত হয় না। কাঙ্ক্ষিত বাস্তবতার দেখা না পেয়ে মায়েরা হতাশ হন, মেয়েকে নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান। 

খেয়াল রাখতে হবে, কিশোরীর আচরণ ও মেজাজ যদিও হুট করেই উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়, তাহলে এটি শুধু হরমোনের প্রভাবের কারণে নয়; বরং বিপর্যস্ত মানসিক অবস্থা বা বিষণ্নতা, দুশ্চিন্তার মতো মানসিক স্বাস্থ্যজনিত কোনো সমস্যা। এ ক্ষেত্রে কোনো পেশাদার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। 

যেসব কারণে কিশোরীদের বিরূপ আচরণ দেখা দিতে পারে—

স্বাধীন হওয়ার ইচ্ছা
বয়ঃসন্ধিকাল হলো এমন একটা সময়, যখন মেয়েদের মধ্যে ‘ব্যক্তিত্ব’ বা ‘অহং’ সম্পর্কে ধারণা গড়ে ওঠে। তারা এ সময় বেশ কয়েকটি ব্যক্তিত্ব ও পরিচয় নিয়ে দ্বিধায় পড়ে যায়। নিজেকে বোঝার চেষ্টা করে যে কোন ব্যক্তিত্ব তাকে মানায়। ব্যক্তিত্বের এ ঘন ঘন পরিবর্তনকে অনেক মা-বাবা বেয়াড়া আচরণ বলে ধরে নেন। 

এ ধরনের আচরণের ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া না জানিয়ে বোঝার চেষ্টা করতে হবে যে, এটা তার নিজেকে প্রকাশেরই ধরন কি না। তাকে তার পোশাক, কাজকর্ম ও নিজেকে প্রকাশের স্বাধীনতা দিতে হবে।

বয়ঃসন্ধিকাল ও মস্তিষ্কের বিকাশ
কৈশোরের সময়টাতে অনেকেই নানা রকম হরমোন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়। মেয়েদের মধ্যে এর প্রভাব বেশি দেখা যায়। এ সময় তাদের মেজাজের ঘন ঘন পরিবর্তন দেখা যায়, তারা আবেগপ্রবণও হয় বেশি। এ কারণে তাদের মুহূর্তেই হাসতে দেখা যায়, আবার পরক্ষণেই কাঁদতে দেখা যায়। আবেগ-অনুভূতির এ পরিবর্তনের কারণে তারা অন্যের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে সহজে। 

তাই এ সময় তাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা না করে এই আবেগ-অনুভূতির সঙ্গে মানিয়ে চলা শেখাতে হবে। 

আধুনিক হয়ে ওঠার তাড়না
কৈশোরের সময়টাতে হাল ফ্যাশনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার একটা প্রবণতা থাকে। সব কিশোরীর মনেই একটি তাড়না থাকে, তাকে যেন অন্যদের চেয়ে আলাদা এবং অবশ্যই সেরা দেখা যায়। হাল ফ্যাশনের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাওয়াতে না পারলে সে হীনম্মন্যতায় ভুগতে থাকে। হীনম্মন্যতা ক্রমে বিষণ্নতায়, উদ্বিগ্নতায় ও আত্মহননের চিন্তায় পর্যবসিত হয়। 

এ প্রতিযোগিতা শুধু ফ্যাশনের ক্ষেত্রেই নয়, পড়ালেখায়, সামাজিক অবস্থানে, বন্ধুবান্ধবের কাছে গুরুত্ব পাওয়ার মতো নানা বিষয়ে। ফলে ঘরের বাইরে নানা দিক থেকেই মানসিক চাপ বোধ করে তারা। এ সময়টাতে ব্যর্থতার শঙ্কা তাকে আতঙ্কগ্রস্ত করে রাখে।

কিশোরীর মা-বাবা হিসেবে এ ধরনের চাপ সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে এবং তাদের এ সময়ের সঙ্গে মানিয়ে চলা শেখাতে হবে। মায়েরা এসব ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারেন। তাঁরা কিশোরীকে নিজের যত্ন নেওয়া, আত্মবিশ্বাস তৈরি ও নিজেকে মূল্যায়ন করার উপায় দেখিয়ে দিতে পারেন। 

আর কিছু না হলেও, কখনো শুধু মনোযোগ দিয়ে তার কথা শোনার মাধ্যমেও তাকে সহযোগিতা করা যায়। কিশোরীর দৃষ্টিভঙ্গি ও সমস্যা মায়েদের কাছে নগণ্য মনে হতে পারে। কিন্তু এ সময় তাদের আবেগ থাকে বেশি। তাই সমাধান না করতে পারলেও তার কথা শোনা এবং সহমর্মী হওয়া প্রয়োজন। 

অন্যদের সঙ্গে তাল মেলানোর প্রবণতা
বয়ঃসন্ধিকালে কিশোরীরা পরিবারের চেয়ে বন্ধুবান্ধবকে সময় দিতে বেশি পছন্দ করে। তাই বন্ধুদের সঙ্গে মানানসই পোশাক, জুতা, মোবাইল ফোন ইত্যাদি চাহিদা তৈরি হয় কিশোরীদের মধ্যে। এ তাল মিলিয়ে চলার প্রবণতার কারণে তারা ধীরে ধীরে মা-বাবার কাছ থেকে দূরে সরে যায়। কখনো কখনো চাহিদা পূরণ না হলে অবাধ্য হয়ে উঠতে পারে। অনেক কিশোরীই পরিবারের আর্থিক অবস্থাকে গ্রাহ্য করতে চায় না বা পরিস্থিতির গুরুত্ব অনেক সময় তারা অনুধাবন করতে পারে না। 

বন্ধুদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার প্রবণতা কিশোরীদের মধ্যে সাধারণ একটি বৈশিষ্ট্য। এতে ব্যর্থ হলে তাদের আচরণে অসহিষ্ণুতা দেখা দিতে পারে।

কিশোরীদের এসব আচরণ ব্যক্তিগতভাবে না নেওয়াটা জরুরি। একসময় তারা বাবা-মায়ের ভূমিকা সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠে। কিছু কিশোরীর এ অনুধাবন জলদি হয়, কারও ক্ষেত্রে দেরিতে। 

যোগাযোগ
কিশোরীদের যোগাযোগদক্ষতা কিশোরদের তুলনায় দ্রুত বিকশিত হয়। তবে অনেকে তা কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারে না। কিশোরীদের বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে দেখা যায়, তারা এককথায় এবং প্রায় একই ধরনের যেমন: হুম, জানি তো, যাহোক—ইত্যাদি উত্তর দেয়। এটি প্রায়ই মায়েদের কাছে বিরক্তির কারণ হয়। মেয়েদেরও মায়ের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ থাকে। এভাবে সম্পর্কের মধ্যে টানাপোড়েনের সৃষ্টি হয়। তর্ক, ঝগড়া ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। 

কিশোরীরা তাদের আবেগ, অনুভূতি, চাহিদা ব্যক্ত করতে তেমন পটু হয় না। তারা যোগাযোগকে অনেক সময় অন্যকে নিয়ন্ত্রণের উপায় হিসেবে ব্যবহার করতে চায়। এ কারণে তারা অপরপক্ষের আগ্রহ বুঝতে পারলে সম্পূর্ণ তথ্য দিতে চায় না।

এ ধরনের পরিস্থিতি সামাল দিতে হলে মায়েরা যা করতে পারেন তা হলো, বিষয়টি নিয়ে আর কথা না বাড়ানো। এটা মনে হওয়াটা স্বাভাবিক যে এই বয়সী মেয়েদের অনেক কিছু শেখার আছে, তার অনেক কিছু শুধরে দেওয়ার আছে। কিন্তু এটিও মাথায় রাখতে হবে যে এই সময়টাতে কিশোরীর জীবনে প্রতিটা দিন অনেক কিছু ঘটছে এবং বহু পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে সে যাচ্ছে। কখনো কখনো সমস্ত খ্যাপাটে স্বভাবের প্রশ্রয় চায়। তারা তাদের স্বভাবের বিপরীতে কোনো মন্তব্য শুনতে প্রস্তুত থাকে না। কেবল নিজের কথা বলতে চায়। 

তাই তাদের বলতে দেওয়া উচিত। যোগাযোগের ধরন যেমনই হোক, তা একেবারে বিচ্ছিন্ন করা উচিত নয়।

নিয়ম ও সীমা নির্ধারণ
কিশোরীরা ভাবে, তারা সব জানে। কিন্তু তারা অন্যের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে সচেতন থাকে না। এদিকে মায়েরা তাঁদের অভিজ্ঞতা থেকে সচেতন করতে চান এবং সব বিষয়েই আতঙ্কিত থাকেন। দুজনের এ বৈপরীত্য মতবিরোধে রূপ নিতে পারে। 

কিশোরীরা মনে করে, ঘরের নিয়মশৃঙ্খলা তাদের জীবন উপভোগ করা থেকে বঞ্চিত করছে। তবে এসব সীমা নির্ধারণ ও নিয়মশৃঙ্খলা কিশোরীদের আত্মনিয়ন্ত্রণ, দায়িত্ববোধ ও কর্মের পরিণতি জ্ঞান তৈরি করার জন্য আবশ্যক। এতে তাদের মধ্যে জবাবদিহি তৈরি হয়। 

তবে নিয়মশৃঙ্খলা প্রয়োগের ক্ষেত্রে বেশি কঠোরতা অবলম্বন করলে কিশোরীদের মধ্যে বিপ্লবী ভাব দেখা দিতে পারে। তাই সীমা নির্ধারণের ক্ষেত্রে নমনীয় হতে হবে। 

ব্যক্তিগত সমস্যা
কিশোর বয়সে মেয়েদের ‘ব্যক্তিগত জীবনের’ শুরু হয়, যা সম্পর্কে অনেক মা-ই সচেতন থাকেন না। বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্ক, বাইরে কোনো অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতা, অন্যদের সঙ্গে তাল মেলানোর প্রতিযোগিতা বা অন্য কোনো চাপ—অনেক কিছুই তার মানসিক অবস্থায় প্রভাব ফেলতে পারে। 

ঘরের বাইরেও যে তার একটি পৃথিবী গড়ে উঠছে, সে সম্পর্কে মায়েদের সহানুভূতিশীল হতে হবে। বাইরের পৃথিবীর নতুন নতুন পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য তার যে পরামর্শ প্রয়োজন, তা সবচেয়ে বেশি মায়ের কাছেই পাওয়া সম্ভব। কিশোরীদেরও অন্য সব প্রাপ্তবয়স্কের মতোই বাইরের চ্যালেঞ্জ, উৎকণ্ঠা, চাপ ইত্যাদি মোকাবিলা করতে হয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মানুষের জীবনযাপনের ধরনের সঙ্গে এতটাই জড়িয়ে গেছে যে এর উল্লেখ ছাড়া কোনো আলোচনাই সম্পূর্ণ হয় না। বেশির ভাগ মায়েরই দাবি, তাঁরা সন্তানের অনলাইন কার্যকলাপ জানেন। তবে গবেষণা বলছে, ৭০ শতাংশ কিশোরই তাদের অনলাইন ব্যক্তিত্বকে পরিবারের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখে। 

কিশোরীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নেতিবাচক প্রভাবের শিকার হয় বেশি। নানা ধরনের ট্রেন্ডের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে তারা খাবারে অনীহা, নিজের ক্ষতি ও নিজেকে নিখুঁত হিসেবে উপস্থাপন করার প্রবণতার ফাঁদে পড়ে।

এ ছাড়া কিশোরীদের মধ্যে মোবাইল ফোনের প্রতি তীব্র আসক্তি দেখা দেয়। এটি তাদের ঘুম, খাওয়া, মেজাজ ও সম্পর্কে বিরূপ প্রভাব ফেলে। 

কিশোরীদের সঙ্গে সম্পর্কে উন্নতি করতে চাইলে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে—এর দায়িত্বের গুরু ভাগ মায়েদেরই। নিজের অভিজ্ঞতা ও বর্তমান পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে। মনে রাখতে হবে, মেয়ের সব ভুলের দায় যেমন মায়েদের নয়, তেমন তাদের সব অর্জনের কৃতিত্বও মায়েদের নয়। 

সর্বোপরি যেকোনো পরিস্থিতিতে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হওয়া যাবে না। একে অপরের কথা, অভিযোগ, অনুযোগ শোনার জন্য মনকে সব সময়কে উদার রাখতে হবে। বাঁধন ছিঁড়ে মুক্ত হওয়ার প্রবণতা মেয়ের; আর মায়ের দায়িত্ব হলো, তার জন্য অপেক্ষা করা, তার ফিরে আসার পথ খোলা রাখা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৩৬
আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

মেষ

সঞ্চয় করার দক্ষতা নিয়ে আজ লোকে আপনার প্রশংসা করবে। তবে সাবধান! কিপটেমি আর সঞ্চয়ের মধ্যে একটা সূক্ষ্ম পার্থক্য আছে। বন্ধুদের ট্রিট দেওয়ার সময় হুট করে ‘মানিব্যাগ ভুলে রেখে এসেছি’ বা ‘আমার নেট কাজ করছে না’ বলার পুরোনো কৌশলটি আজ বন্ধুদের কাছে ধরা পড়ে যেতে পারে। পরিবারে শান্তি বজায় থাকবে, যদি আপনি রিমোটের দখল ছেড়ে দেন। মানিব্যাগে সব সময় কিছু খুচরা টাকা রাখুন, ইজ্জত বাঁচতে পারে।

বৃষ

স্ত্রী বা পরিবারের কারোর মধুর ব্যবহারে আজ আপনি মুগ্ধ হতে পারেন, তবে এর পেছনে কোনো দামি শাড়ি, গয়না বা অনলাইন শপিংয়ের আবদার লুকিয়ে আছে কি না, তা ‘শার্লক হোমস’ স্টাইলে যাচাই করে নিন। সঞ্চয়ের জন্য দিনটি ভালো, কিন্তু লটারি জেতার আশায় অফিসের কলিগের কাছে ধার চাইবেন না। আবেগের চেয়ে আজ পেটভরা খাবারকে বেশি গুরুত্ব দিন। মিষ্টি কথায় ভুলে যাওয়ার আগে ব্যাংকের ব্যালেন্স চেক করুন।

মিথুন

মনের কথা বাড়ির লোককে বলে ফেলার জন্য আজ দারুণ দিন। তবে অফিসের বসের নামে কোনো ‘গোপন ছড়া’ বা ‘নিকনেম’ আবার ভুল করে বাড়ির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পাঠিয়ে দেবেন না! পুরোনো অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে আবেগময় হয়ে পড়তে পারেন, সঙ্গে গামছা বা টিস্যু বক্স রাখুন। মেসেজ পাঠানোর আগে ‘রিসিভার’ কে, তা দুবার চেক করুন।

কর্কট

কারও কাছ থেকে আজ ধার নেবেন না, আর কাউকে দেবেনও না। কারণ, আজ যাকে টাকা দেবেন, তাকে খুঁজে পেতে ভবিষ্যতে আপনাকে ইন্টারপোল নিয়োগ করতে হতে পারে। সন্ধ্যার পর শরীর বেশ সতেজ থাকবে, চাইলে এক কাপ কড়া চা নিয়ে পাড়ার মোড়ে আড্ডা জমাতে পারেন। তবে পলিটিকস নিয়ে জ্ঞান দিতে যাবেন না। টাকা চাইলে ‘মানিব্যাগটা ধুতে দিয়েছি’ বলে এড়িয়ে যান।

সিংহ

বড় কোনো অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা আছে। তবে সেই টাকা হাতে আসার আগেই অনলাইনে আইফোন বা দামি গ্যাজেটের রিভিউ দেখা শুরু করবেন না। অতিরিক্ত রাগ আপনার কর্মক্ষেত্রে ক্ষতি করতে পারে। বসের ঝাড়ি খেয়েও আজ ‘মোনালিসা হাসি’ বজায় রাখার চেষ্টা করুন, এতে বস কনফিউজড হয়ে ঝাড়ি থামিয়ে দেবে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে হাসার প্র্যাকটিস করুন।

কন্যা

বাড়িতে যদি অবিবাহিত কেউ থাকে, তবে আজ তার বিয়ের আলোচনা তুঙ্গে উঠতে পারে। বিয়ের মেনুতে বিরিয়ানি থাকবে কি না, তা নিয়ে আজ থেকেই তর্ক শুরু হতে পারে। খাওয়ার অভ্যাসে বদল আনুন; রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফুচকা খাওয়ার আগে বিক্রেতার হাত ধোয়া কি না, তা একটু জুম করে দেখে নিন। প্রবীণদের কথা শুনুন, মাঝেমধ্যে তারা ইন্টারনেটের চেয়েও ভালো সমাধান দেন! ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলবেন, পেটের অবস্থা ভালো নয়।

তুলা

হয়তো ভালো মনেই কাউকে উপদেশ দেবেন, কিন্তু লোকে সেটাকে পার্সোনাল অ্যাটাক হিসেবে ধরে নেবে। আজ আপনার মিষ্টি কথা মানুষের কানে ‘নিমপাতার জুস’ মনে হতে পারে। অফিসে আপনার নামে কেউ কানকথা দিতে পারে, কিন্তু উল্টো তাদের মিষ্টি খাইয়ে কনফিউজ করে দিন। চুপ থাকাই আজ আপনার সেরা অস্ত্র।

বৃশ্চিক

পাড়ার দুই খালা বা চাচির ঝগড়ায় বিচার করতে যাবেন না। অন্যের ঝামেলা মেটাতে গিয়ে নিজেই ‘ভিলেন’ হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রল হতে পারেন। কর্মক্ষেত্রে যুক্তিসংগত কথা বলুন। আজ আপনার কোনো পুরোনো শখ (যেমন গিটার বাজানো বা বাথরুমে গান গাওয়া) আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। অন্যের ব্যাপারে বাঁ হাত ঢোকাবেন না।

ধনু

আজ আপনার মধ্যে আধুনিক চিন্তা কাজ করবে। অফিসের কাজে এআই ব্যবহার করে বসকে চমকে দিতে পারেন; তবে সাবধান, যেন ধরা না পড়েন! সৃজনশীল কাজে সাফল্য আসবে। ভ্রমণে যাওয়ার আগে ব্যাগে ছাতা নিতে ভুলবেন না। কারণ, আবহাওয়া অফিস রোদ বললেও আজ বৃষ্টির সঙ্গে আপনার মোলাকাত হতে পারে। ল্যাপটপ চার্জ দিয়ে রাখুন।

মকর

আপনার পকেটে আজ অদৃশ্য ফুটো হওয়ার সম্ভাবনা আছে। বিশেষ করে শপিং মলে গেলে ক্রেডিট কার্ডটি বাসায় ফেলে যান। বিরোধীরা আজ আপনার ছোট কোনো ব্যাকরণগত ভুলকেও বড় করে দেখাতে পারে। তাই কথা বলার আগে মুখে ‘কাল্পনিক ফিল্টার’ ব্যবহার করুন। ‘সুলভ মূল্যে’ লেখা বোর্ড দেখলে উল্টো দিকে হাঁটুন।

কুম্ভ

দিনটি আপনার জন্য বেশ শুভ। নতুন কারোর সঙ্গে দেখা হতে পারে যে আপনার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে (সেটা বিমা কোম্পানি বা এমএলএম মার্কেটিংয়ের লোকও হতে পারে, সাবধান!)। রাতে ভালো ঘুম হওয়ার সম্ভাবনা আছে, যদি না মশার দল আপনার কানে গান গাওয়ার কনসার্ট আয়োজন করে। নেটওয়ার্ক মার্কেটিংয়ের লোকদের থেকে দূরে থাকুন।

মীন

আজ সারা দিন অফিসের বা বাড়ির কাজে এতটাই ব্যস্ত থাকবেন যে নিজের আয়নায় মুখ দেখার সময় পাবেন না। তবে এই ব্যস্ততার শেষে একটা মিষ্টি ক্লান্তি আসবে। সন্তানের বায়না মেটাতে গিয়ে পকেটে টান পড়তে পারে। শরীরের প্রতি যত্ন নিন, লিফট থাকতে সিঁড়ি দিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে যাবেন না। দুপুরের খাবারটা ঠিক সময়ে খেয়ে নিন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শীতের সকাল শুরু হোক সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর স্যুপ দিয়ে

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৫৭
চীনের লানঝাউ বিফ নুডলস স‍্যুপ। ছবি: উইকিপিডিয়া
চীনের লানঝাউ বিফ নুডলস স‍্যুপ। ছবি: উইকিপিডিয়া

আমাদের দেশে ধীরে ধীরে স্যুপ খাওয়াটা জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মূলত চায়নিজ রেস্তোরাঁগুলোর কারণে। সুস্বাদু ও বিচিত্র নুডলস স্যুপ পাওয়া যায় এখন ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরের রেস্তোরাঁগুলোতে। ভাবার কোনো কারণ নেই, স্যুপ শুধু রেস্তোরাঁয় গিয়েই খেতে হবে। বাড়িতেও তৈরি করতে পারেন মজাদার বিভিন্ন স্যুপ। কিন্তু মনে রাখা চাই, মাংস দিয়ে কিছু স্যুপ রান্না করতে গেলে খানিক সময় লাগবে। তারপরই উপভোগ করা যাবে মজাদার স্যুপ।

আপনাদের জন্য দুটি স্যুপের রেসিপি রইল।

লানঝাউ বিফ নুডলস স্যুপ, চীন

চীনে নুডলস দিয়ে তৈরি খাবার ও চায়নিজ নুডলস স্যুপ রেসিপির কোনো ঘাটতি নেই। বলা হয়, এর বৈচিত্র্য চীনের ভূগোলের মতোই বিশাল এবং প্রতিটি অত্যন্ত সুস্বাদু। কিন্তু অসংখ্য নুডলস ডিশের, বিশেষ করে নুডলস স্যুপের মধ্যে যেটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, তা হলো লানঝাউ বিফ নুডলস স্যুপ।

সুস্বাদু, স্বচ্ছ ঝোল, পাতলা করে কাটা গরুর মাংস, নরম চায়নিজ মুলার ফালি, প্রচুর ধনেপাতা ও পেঁয়াজ কলি, গাঢ় লাল মরিচের তেল এবং হাতে তৈরি নুডলস দিয়ে রান্না করা হয় লানঝাউ বিফ নুডলস স্যুপ।

উপকরণ

৪ পাউন্ড গরুর মাংস, ১ কেজি গরুর হাঁটুর মাংস, অর্ধেক ভাজা মুরগি, ১০ কাপ পানি, ১ লিটার চিকেন স্টক, স্বাদ অনুযায়ী লবণ, ছোট চায়নিজ মুলার অর্ধেক, ১ পাউন্ড তাজা বা শুকনো সাদা নুডলস, গরম মরিচের তেল, পেঁয়াজ কলি, ধনেপাতা।

মসলা মিশ্রণের জন্য

৭টি তারকা মৌরি, ১২টি লবঙ্গ, ১টি দারুচিনি, ৫টি তেজপাতা, ৬টি বড় স্যান্ড জিঞ্জারের টুকরো, দেড় চা-চামচ মৌরি বীজ, ১ চা-চামচ জিরা বীজ, ২ চা-চামচ সিচুয়ান গোলমরিচ, দেড় চা-চামচ সাদা গোলমরিচ, ৫টি লিকোরিস মূলের টুকরো, ৩টি শুকনো কমলার খোসা, ১টি কালো এলাচি।

গরম মরিচের তেলের জন্য

এক কাপের ৪ ভাগের ৩ ভাগ তেল, ২টি তারকা মৌরি, ছোট দারুচিনির অর্ধেক, আধা চা-চামচ সিচুয়ান গোলমরিচ, ৩ টেবিল চামচ লাল মরিচ গুঁড়া, ১ চা-চামচ লবণ, সামান্য চিনি।

প্রস্তুত প্রণালি

মাংসের হাড়গুলো ধুয়ে নিন। ৪০০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় বেকিং শিটে ৪৫ মিনিট বেক করে নিন। একটি বড় পাত্রে পানি ফুটিয়ে তাতে গরুর হাঁটুর মাংস এবং মুরগির মাংস যোগ করুন। সবকিছু আবার ফুটতে দিন। একবার ফুটে উঠলে হাঁটুর মাংস এবং মুরগি বের করে নিয়ে পানি ফেলে দিন এবং পাত্রটি পরিষ্কার করে নিন।

এরপর গরুর হাঁটুর মাংস এবং মুরগি আবার পাত্রে দিন। সঙ্গে বেক করে নেওয়া হাড়। এর সঙ্গে আরও ১০ কাপ পানি এবং ৪ কাপ চিকেন স্টক যোগ করুন। মসলার সব উপকরণ একত্র করে একটি পাতলা কাপড়ে পুঁটলি করে শক্তভাবে বেঁধে মসলার মিশ্রণ তৈরি করুন। এটি পাত্রে রেখে দিন। এরপর পাত্রে পরিমাণমতো লবণ দিয়ে সবকিছু ফুটতে দিন।

একবার ফুটে উঠলে আঁচ কমিয়ে দিয়ে প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে সেদ্ধ হতে দিন। ২ ঘণ্টা পরে গরুর হাঁটুর মাংস বের করে সরিয়ে রাখুন। বাকি অংশে কাটা মুলা যোগ করে আরও ঘণ্টাখানেক সেদ্ধ হতে দিন। তারপর মসলার ব্যাগ, মুরগির হাড় বের করে ফেলে দিন। ঝোলে লবণের স্বাদ নিন এবং প্রয়োজন হলে মসলা সমন্বয় করুন। এতে স্যুপের বেজ তৈরি হয়ে যাবে।

উপকরণগুলো সেদ্ধ হওয়ার সময় মরিচের তেল তৈরি করে ফেলুন। একটি ছোট পাত্রে তেল, তারকা মৌরি, দারুচিনি এবং সিচুয়ান গোলমরিচ নিন। খুব কম আঁচে সবকিছু ধীরে ধীরে ১৫ মিনিট একসঙ্গে ভুনে নিন। একটি ছাঁকনি চামচ দিয়ে মসলাগুলো তেল থেকে আলাদা করে নিন। এরপর প্রায় ৫ মিনিট তেল ঠান্ডা করে তাতে মরিচগুঁড়া যোগ করে সেই হালকা গরম তেলে ধীরে ধীরে ভুনে নিন; যতক্ষণ না খুব সুগন্ধ ছড়ায়। লাল হয়ে গেলে তাতে লবণ ও চিনি মেশাতে হবে।

একবার ঝোল ও মরিচের তেল তৈরি হয়ে গেলে, আলাদা পাত্রে প্যাকেটের নির্দেশ অনুযায়ী নুডলস রান্না করুন। সেদ্ধ নুডলস ৬টি বাটিতে ভাগ করুন। ঠান্ডা হওয়া গরুর হাঁটুর মাংস পাতলা করে কেটে নুডলসের ওপর সাজান। এরপর তাতে একে একে ঝোল, মুলা, এক চামচ গরম মরিচের তেল এবং এক মুঠো করে কুচি করা পেঁয়াজ কলি এবং ধনেপাতা যোগ করে পরিবেশন করুন।

তুরস্কের ইয়াইলা চোর্বসি স‍্যুপ। ছবি: উইকিপিডিয়া
তুরস্কের ইয়াইলা চোর্বসি স‍্যুপ। ছবি: উইকিপিডিয়া

ইয়াইলা চোর্বাসি, তুরস্ক

তুরস্কের স্যুপের নাম ইয়াইলা চোর্বাসি। এর প্রধান উপকরণ সেদ্ধ চাল বা বার্লি। এর সঙ্গে যোগ করা হয় দই। বিশ্বাস করা হয়, এটি শীতকালে সর্দি প্রতিরোধ করে; কিছু তুর্কি হাসপাতালে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীদের দই স্যুপ পরিবেশন করা হয়।

শুকনো পুদিনা গুঁড়া দইয়ের হালকা টক স্বাদকে ভারসাম্যপূর্ণ করে তোলে। তাজা পাউরুটির সঙ্গে এটি পরিবেশন করুন।

উপকরণ

বাসমতী বা জেসমিনসহ যেকোনো ধরনের সাদা চাল, গ্রিক দই বা সাধারণ দই, স্যুপ ঘন করতে ডিম ও ময়দার সংমিশ্রণ, শুকনো পুদিনাপাতার গুঁড়া। 

প্রস্তুত প্রণালি

যে চাল ব্যবহার করবেন, স্বাভাবিকের চেয়ে তাতে বেশি পানি দিয়ে প্রথমে নরম করে ভাত রান্না করুন। পানি ও ভাত এই স্যুপের ভিত্তি। একটি বাটিতে দই, ডিম, ময়দা ও লবণ ভালো করে মিশিয়ে নিন। পানি কমে গেলে ভাতে আরও পানি যোগ করুন এবং ভালোভাবে নাড়ুন। হয়ে গেলে নামিয়ে নিন। এরপর সুবিধামতো পাত্র নিয়ে ধীরে ধীরে ভাত ও পানি দই ও ডিমের মিশ্রণে যোগ করুন এবং ভালোভাবে নাড়তে থাকুন। এরপর এই পুরো মিশ্রণ আবারও গরম পানিতে দিয়ে মাঝারি আঁচে প্রায় ১৫ মিনিট ধরে ফুটতে দিন। এ সময়েও মাঝে মাঝে নাড়তে থাকুন। চেখে দেখুন। লাগলে প্রয়োজনে আরও লবণ যোগ করুন।

একটি ছোট প্যানে মাখন গলিয়ে সুগন্ধ বের হওয়া পর্যন্ত শুকনো পুদিনা সেদ্ধ করে নিন। তারপর এটি স্যুপে যোগ করুন এবং ভালোভাবে নাড়ুন। তারপর নামিয়ে পরিবেশন করা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নেপালের মহাপরিকল্পনায় এভারেস্ট রক্ষা পাবে তো?

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ১৪
এভারেস্ট ধীরে ধীরে ‘বিশ্বের উচ্চতম ডাস্টবিনে’ পরিণত হচ্ছে, এই আন্তর্জাতিক সমালোচনা বন্ধ করতে নেপাল সরকার নিয়েছে দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ। ছবি: ফ্রিপিক
এভারেস্ট ধীরে ধীরে ‘বিশ্বের উচ্চতম ডাস্টবিনে’ পরিণত হচ্ছে, এই আন্তর্জাতিক সমালোচনা বন্ধ করতে নেপাল সরকার নিয়েছে দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ। ছবি: ফ্রিপিক

সাগরপৃষ্ঠ থেকে ৮ হাজার ৮৪৮ দশমিক ৮৬ মিটার উঁচু মাউন্ট এভারেস্ট শৃঙ্গটি মানুষের অদম্য সাহসের শেষ সীমানা হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এসব তকমা ও শ্বেতশুভ্র সৌন্দর্যের আড়ালে লুকিয়ে আছে এক করুণ চিত্র। ২০০০ সালে জাপানি পর্বতারোহী কেন নগুচি যখন এভারেস্টে প্রথম সংগঠিত পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করেন, তখন তিনি যা দেখেছিলেন, তা ছিল রীতিমতো মর্মান্তিক। নগুচি বলেছিলেন, ‘টিভিতে এভারেস্টের যে সুন্দর ছবি দেখতাম, ভেবেছিলাম পাহাড়টি তেমনই হবে। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখি চারদিকে শুধু আবর্জনা।’ সেই শুরু; নগুচি ২০০০ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে প্রায় ৯০ টন বর্জ্য সরিয়েছিলেন। কিন্তু আজ এখন সমস্যাটি আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

সম্প্রতি নেপাল সরকার প্রথমবারের মতো একটি ব্যাপক নীতিমালাসহ এভারেস্ট ক্লিনিং অ্যাকশন প্ল্যান (২০২৫-২০২৯) ঘোষণা করেছে। এভারেস্ট যে ধীরে ধীরে ‘বিশ্বের উচ্চতম ডাস্টবিনে’ পরিণত হচ্ছে, সেই আন্তর্জাতিক সমালোচনা বন্ধ করতেই এই দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ।

ক্রমবর্ধমান অভিযাত্রীর চাপে নাজুক হয়ে পড়েছে এভারেস্টের পরিবেশ। ছবি: ফ্রিপিক
ক্রমবর্ধমান অভিযাত্রীর চাপে নাজুক হয়ে পড়েছে এভারেস্টের পরিবেশ। ছবি: ফ্রিপিক

সংকটের নেপথ্যে: প্লাস্টিক ও জলবায়ু পরিবর্তন

দশকের পর দশক ধরে আরোহী, গাইড এবং শেরপাদের ফেলে আসা অক্সিজেন সিলিন্ডার, প্লাস্টিকের বোতল, নাইলনের দড়ি এবং মানুষের মলমূত্রে পাহাড়ের ঢালগুলো বিষিয়ে উঠেছে; বিশেষ করে প্লাস্টিক এখন মূর্তিমান আতঙ্ক; একটি প্লাস্টিক ব্যাগ প্রকৃতিতে মিশে যেতে প্রায় ৫০০ বছর সময় নেয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বরফ গলে বেরিয়ে আসছে পুরোনো আবর্জনা এবং দীর্ঘদিনের চাপা পড়া মৃতদেহ, যা নিচের জনপদগুলোর পানীয় জলের উৎসকে দূষিত করছে।

নতুন পরিকল্পনা: একনজরে সরকারের রোডম্যাপ

খুম্বু হিমবাহের ওপর অবস্থিত বর্তমান বেস ক্যাম্পটি তাপমাত্রা ও আবর্জনার চাপে অস্থিতিশীল হয়ে পড়ায় সেটি সরিয়ে নেওয়ার চিন্তা করছে নেপাল সরকার। ছবি: ফ্রিপিক
খুম্বু হিমবাহের ওপর অবস্থিত বর্তমান বেস ক্যাম্পটি তাপমাত্রা ও আবর্জনার চাপে অস্থিতিশীল হয়ে পড়ায় সেটি সরিয়ে নেওয়ার চিন্তা করছে নেপাল সরকার। ছবি: ফ্রিপিক

নেপাল সরকারের সংস্কৃতি, পর্যটন ও বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় ঘোষিত পাঁচ বছর মেয়াদি এই পরিকল্পনায় বেশ কিছু বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো,

বেস ক্যাম্প স্থানান্তর: খুম্বু হিমবাহের ওপর অবস্থিত বর্তমান বেস ক্যাম্পটি ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা ও আবর্জনার চাপে অস্থিতিশীল হয়ে পড়ছে। তাই এটি অন্য কোথাও সরিয়ে নেওয়া যায় কি না, তার সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে।

বর্জ্য ফেরাতে কড়া নজরদারি: আরোহীদের ব্যবহৃত প্রতিটি সরঞ্জাম, মই ও দড়ির তালিকা এন্ট্রি পয়েন্টে জমা দিতে হবে এবং নামার সময় তা মিলিয়ে দেখা হবে। প্রত্যেক আরোহী দলকে তাদের ব্যবহৃত সব সরঞ্জাম এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ পুরোনো আবর্জনা পাহাড় থেকে নামিয়ে আনতে হবে।

ক্যাম্প-২-এ বর্জ্য সংগ্রহ কেন্দ্র: সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬ হাজার ৭৫০ মিটার উঁচুতে ক্যাম্প-২-এ বর্জ্য সংগ্রহের জন্য একটি অস্থায়ী কেন্দ্র করা হবে। এটি চেকপয়েন্ট হিসেবে কাজ করবে, যাতে উচ্চতর ক্যাম্পগুলোতে কেউ আবর্জনা ফেলে আসতে না পারে।

মাউন্টেন রেঞ্জার ও ড্রোন: পাহাড়ের ওপর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা তদারক করতে প্রশিক্ষিত আরোহীদের নিয়ে একটি মাউন্টেইন রেঞ্জার দল গঠন করা হবে। এমনকি দুর্গম এলাকা থেকে আবর্জনা সংগ্রহে ড্রোনের ব্যবহারও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আর্থিক নীতিমালা ও রয়্যালটি: বর্তমানে আরোহীদের ৪ হাজার ডলারের যে ডিপোজিট দিতে হয়, সেটিকে একটি অফেরতযোগ্য ফিতে রূপান্তরের প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনায়, যা সরাসরি পাহাড়ের কল্যাণে ব্যয় হবে। এ ছাড়া ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এভারেস্টের রয়্যালটি ১১ হাজার ডলার থেকে বাড়িয়ে ১৫ হাজার ডলার করা হয়েছে।

আদালতের আদেশ ও সচেতনতা

এই মহাপরিকল্পনা মূলত গত বছর দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের একটি আদেশের ফল। আদালত সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল পাহাড়ের ধারণক্ষমতা মেপে আরোহীদের পারমিট সংখ্যা নির্ধারণ করতে। এ ছাড়া ২০২৪ সাল থেকে বেস ক্যাম্পের ওপর ‘পুপ ব্যাগ’ ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সরকার এখন পরিবেশ-সচেতনতাকে জাতীয় শিক্ষা কারিকুলামে অন্তর্ভুক্তির পরিকল্পনা করছে।

একটি বিশাল কর্মযজ্ঞের শুরু

২০২৪ সালের বসন্ত মৌসুমে এভারেস্ট থেকে প্রায় ৮৫ টন বর্জ্য এবং ২৮ টন মানুষের মলমূত্র সরানো হয়েছে। এই বিশাল কর্মযজ্ঞ শেষ করতে বড় অঙ্কের বাজেট প্রয়োজন, যা ১০০ কোটি রুপি ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এভারেস্টের চূড়ায় আরোহীদের দীর্ঘ সারি আর যত্রতত্র আবর্জনার স্তূপ এখন বিশ্ববাসীর নজরে। এই পাঁচ বছরের মহাপরিকল্পনা কি পারবে বিশ্বের ছাদকে আবার তার আদি অকৃত্রিম রূপ ফিরিয়ে দিতে? সেটি সময় বলবে, তবে নেপাল সরকারের এই কাঠামোগত উদ্যোগ হিমালয়প্রেমীদের মনে আশার আলো জাগাচ্ছে।

সূত্র: দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গম্বুজ তলে শব্দের মেলা, পাঁচ পাঠাগারের কাব্যিক অভিযাত্রা

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ১৭
তিয়ানজিন বিনহাই লাইব্রেরির বইয়ের তাকগুলো ঢেউয়ের মতো খেলে গেছে পুরো দেয়াল জুড়ে। ছবি: আজর ম্যাগাজিন
তিয়ানজিন বিনহাই লাইব্রেরির বইয়ের তাকগুলো ঢেউয়ের মতো খেলে গেছে পুরো দেয়াল জুড়ে। ছবি: আজর ম্যাগাজিন

বইয়ের পাতার মৃদু মর্মর আর শতাব্দীর প্রাচীন প্রতিধ্বনি। এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশে এই সুর যেন একই সুতোয় গাঁথা। মেলবোর্ন থেকে রিও, বিশ্বের এই পাঁচটি অনন্য গ্রন্থাগার একটি বিশেষ দর্শনকে ধারণ করে আছে। পড়া মানে কেবল তথ্যের আহরণ নয়, বরং একটি বিশেষ স্থাপত্যের আবহে নিজেকে সঁপে দেওয়া। মঠের নিস্তব্ধতা থেকে শুরু করে প্রজাতন্ত্রী উদ্যোগ কিংবা ভবিষ্যতের কোনো স্বপ্নদর্শী প্রকল্প। এই সবকটি স্থাপনা আজ বিশ্বের বুদ্ধিবৃত্তিক এবং নগর সভ্যতার মাইলফলক। তাদের মূল সার্থকতা এখানেই যে, তারা বইকে কেবল তাকে সাজিয়ে রাখেনি বরং বইকে রূপান্তরিত করেছে এক একটি জীবন্ত পরিসরে। বইপ্রেমীদের জন্য পৃথিবীর সেরা সেই পাঁচটি লাইব্রেরি যেন পাঠ-স্বর্গের গল্প বলে। এই পাঁচটি লাইব্রেরি কেবল পড়ার জায়গা নয় বরং প্রতিটি বইপ্রেমীর জন্য একবার হলেও ঘুরে আসার মতো তীর্থস্থান।

স্টেট লাইব্রেরি অফ ভিক্টোরিয়া (মেলবোর্ন)

অস্ট্রেলিয়ার সাংস্কৃতিক রাজধানীর হৃদপিণ্ডে অবস্থিত এই গ্রন্থাগারটি জ্ঞানের এক বিশাল বাতিঘর। ১৮৫৬ সাল থেকে সবার জন্য উন্মুক্ত এই প্রতিষ্ঠানটি সংস্কৃতির অবাধ অধিকারের এক মূর্ত প্রতীক। এর মূল আকর্ষণ হলো ১৯১৩ সালে নির্মিত ’ট্রোব রিডিং রুম’। এক বিশাল ৩৫ মিটারের অষ্টভুজাকার গম্বুজের নিচে দাঁড়িয়ে মনে হবে আপনি কোনো এক আধুনিক উপাসনালয়ে আছেন। সরু সিঁড়ি দিয়ে যুক্ত এর উঁচু গ্যালারিগুলো কক্ষটির গম্ভীরতাকে এক অনন্য উচ্চতা দান করেছে। এডওয়ার্ডিয়ান স্থাপত্যের এই শ্রেষ্ঠ নিদর্শনটি গত এক শতাব্দী ধরে জ্ঞান বিনিময়ের এক জীবন্ত সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

১৮৫৬ সাল থেকে সবার জন্য উন্মুক্ত অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের স্টেট লাইব্রেরি অফ ভিক্টোরিয়া। ছবি: উইকিপিডিয়া
১৮৫৬ সাল থেকে সবার জন্য উন্মুক্ত অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের স্টেট লাইব্রেরি অফ ভিক্টোরিয়া। ছবি: উইকিপিডিয়া

তিয়ানজিন বিনহাই লাইব্রেরি (তিয়ানজিন)

দৃষ্টিভ্রম নাকি কোনো মায়াবী জগত? ২০১৭ সালে চীনে নির্মিত এই লাইব্রেরিটি পড়ার ঘরের চিরাচরিত ধারণা পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। এখানে সবকিছুই শুভ্র। এর বইয়ের তাকগুলো ঢেউয়ের মতো খেলে গেছে পুরো দেয়াল জুড়ে, যা কখনও সিঁড়ি আবার কখনও বসার আসনে পরিণত হয়েছে। তাকিয়ে থাকলে মনে হবে তাকগুলো বুঝি মিশে গেছে ছাদের কোনো অলীক শিল্পকর্মে। স্থাপত্যের ঠিক মাঝখানে রয়েছে এক বিশাল স্বচ্ছ গোলক, যার নাম দেওয়া হয়েছে ’দ্য আই’ বা ’চক্ষু’। ৩৩ হাজার বর্গমিটারের এই রেট্রো-ফিউচারিস্টিক প্রাঙ্গণে ১০ লক্ষেরও বেশি বই রয়েছে। ডাচ সংস্থা MVRDV-এর তৈরি এই স্থাপত্যটি নির্মাণ করতে সময় লেগেছে মাত্র তিন বছর।

লাইব্রেরি অফ কংগ্রেস (ওয়াশিংটন)

আমেরিকার সবচেয়ে গম্ভীর এবং আভিজাত্যপূর্ণ স্থান হলো এর জেফারসন উইং। মার্বেল পাথরের কারুকাজ আর সোনালি রঙের ছটায় এখানে তৈরি হয়েছে এক রাজকীয় পরিবেশ। ঐতিহাসিক চরিত্রদের আবক্ষ মূর্তি আর মোজাইকের পথ ধরে যখন আপনি অষ্টভুজাকার রিডিং রুমে প্রবেশ করবেন, তখন চারপাশের বিশালাকার গম্বুজ আর নরম আলো আপনাকে এক অদ্ভুত ঘোরের মধ্যে ফেলে দেবে। ১৭ কোটি ৫০ লক্ষ নথি ও বইয়ের সংগ্রহ নিয়ে এটি বিশ্বের বৃহত্তম গ্রন্থাগার। বিরল পাণ্ডুলিপি থেকে শুরু করে কমিক বই কিংবা বিজ্ঞানের জটিল কাজ—সবই এখানে সাজানো আছে মাইলের পর মাইল বিস্তৃত তাকে। পাথরের গায়ে এখানে খোদাই করা আছে আমেরিকার উচ্চাভিলাষের গল্প।

মার্বেল পাথরের কারুকাজ আর সোনালি রঙের ছটায় এখানে তৈরি হয়েছে লাইব্রেরি অফ কংগ্রেস। ছবি: উইকিপিডিয়া
মার্বেল পাথরের কারুকাজ আর সোনালি রঙের ছটায় এখানে তৈরি হয়েছে লাইব্রেরি অফ কংগ্রেস। ছবি: উইকিপিডিয়া

অ্যাডমন্ট মনাস্ট্রি লাইব্রেরি (অ্যাডমন্ট)

অস্ট্রিয়ার স্টাইরিয়া অঞ্চলের পাহাড়ি জনপদে ১৭৭৬ সাল থেকে টিকে আছে এই বারোক স্থাপত্যের বিস্ময়। সাতটি বিশাল গম্বুজের নিচে শিল্পী বার্তোলোমিও আলতোমন্তের আঁকা ফ্রেস্কো বা দেয়ালচিত্রগুলো লাইব্রেরিটিকে এক স্বর্গীয় রূপ দিয়েছে। ৪৮টি জানালা দিয়ে আসা আলো যখন বাঁকানো তাকগুলোতে সাজানো লুথারের বাইবেলসহ প্রায় ৭০ হাজার বইয়ের ওপর পড়ে, তখন এক অপার্থিব পরিবেশ তৈরি হয়। শিল্পী জোসেফ স্টামেলের খোদাই করা মূর্তি আর সাদা-কালো মার্বেলের মেঝে জ্ঞান আর শিল্পের এক অদ্ভুত মেলবন্ধন ঘটিয়েছে এখানে।

বিবলিওটেকা ন্যাসিওনাল (রিও ডি জেনিরো)

এই গ্রন্থাগারের জন্ম হয়েছিল নির্বাসনের ইতিহাস থেকে। ১৮১০ সালে পর্তুগিজ রাজদরবার যখন লিসবন থেকে পালিয়ে রিওতে আশ্রয় নেয়, তখন তারা সাথে করে নিয়ে আসে বিশাল বইয়ের ভাণ্ডার। সেই সংগ্রহের ওপর ভিত্তি করেই গড়ে ওঠে নতুন বিশ্বের প্রথম বড় এই গ্রন্থাগার। বর্তমানে এখানে নথির সংখ্যা প্রায় ৯০ লক্ষ। ১৯১০ সালে রিও ব্রাঙ্কো অ্যাভিনিউতে নির্মিত হয় এর বিশাল নিওক্লাসিক্যাল ভবনটি। এর ভেতরে লোহার কারুকার্যময় ব্যালকনি, বিশালাকার থামের সারি আর সুউচ্চ অলিন্দগুলো আপনাকে মনে করিয়ে দেবে সেই রাজকীয় ঐতিহ্যের কথা।

সূত্র: ইএনভোলস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত