Ajker Patrika

কিশোরী কন্যাদের ওপর মায়েরা এত বিরক্ত কেন

আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৭: ২৬
কিশোরী কন্যাদের ওপর মায়েরা এত বিরক্ত কেন

কৈশোর মানেই বয়ঃসন্ধিকাল। এই বয়সে লিঙ্গনির্বিশেষে বাল্যকালের মধুর কণ্ঠস্বরে পরিবর্তন আসতে শুরু করে। পরিবর্তন আসে আচরণে। না শিশু, না প্রাপ্তবয়স্ক— কোনো দলেই আর জায়গা হয় না। আদরের শিশুর হঠাৎ এই পরিবর্তনে অভিভাবকেরাও সহজবোধ করেন না। আর হঠাৎ আদরে ভাটা পড়ে যাওয়া কিশোর-কিশোরী চারপাশের পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতেও হিমশিম খায়। রবীন্দ্রনাথ যথার্থই বলেছেন, ‘তেরো-চৌদ্দ বৎসরের ছেলের মতো পৃথিবীতে এমন বালাই আর নাই!’

কৈশোরের এই জটিল সন্ধিক্ষণ কখনো কখনো পারিবারিক সম্পর্কে বিরূপ প্রভাব ফেলে। সম্পর্কে দূরত্বের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি করে চোখে পড়ে মা-মেয়ের মধ্যে। এই সময়টাতে কিশোরীর প্রাইভেসি অর্থাৎ ব্যক্তিগত গোপনীয়তা-জ্ঞান টনটনে হয়।

সম্পর্কের ব্যবধান শুরু হয় কিশোরী মেয়ের হুট করেই দূরত্ব বজায় রেখে চলার প্রবণতার মাধ্যমে। কিশোর বয়সে পরিবারকে সময় দেওয়ার চেয়ে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে, একা নিজের ঘরে বা হাল আমলে স্মার্টফোনে সময় কাটাতেই বেশি পছন্দ করে কিশোরী। মায়েরা যতই শাসনের দণ্ড শক্ত করে ধরেন, মেয়েরা আরও বেশি দূরে সরে যায়। তারা আরও স্বাধীনতা চায়, স্বাতন্ত্র্য চায়। পান থেকে চুন খসলেই অভিমান করে। আচরণের এ বৈপরীত্য দুজনের সম্পর্ক রেষারেষিতে রূপ নেয়। 

কৈশোরের কয়েকটি বছর মা-মেয়ের মধ্যে শোনা যায় শত অভিযোগ অনুযোগের ফিরিস্তি। মায়েরা কিশোরী কন্যার ঘন ঘন মেজাজ পরিবর্তন, অযৌক্তিক আচরণ, অকারণে বিরক্তি প্রকাশ এবং কষ্ট দিয়ে কথা বলা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে থাকেন। কিশোরীরা মায়ের শাসনে বিরক্ত হয়। শুধু ভাবে, মা তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছেন, মা তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে চান না, দুজনের বোঝাপড়ার ঘাটতি, ওজর-আবদার শুনতে মায়ের অনিচ্ছা, কথা না শুনলেই চিৎকার-চেঁচামেচি করে বাড়ি মাথায় তোলেন—মায়ের বিরুদ্ধে এমন একগাদা অভিযোগ নিয়ে বসে থাকা তারা।

মায়ের প্রতি কিশোরীদের বিরূপ আচরণের কারণ
মায়েরা আশা করে বসে থাকেন, এ সময়টাতে মেয়ে তাঁর সঙ্গে আরও খোলাখুলি কথা বলবে, মাকে সময় দেবে। তাঁরা আশা করেন, মায়ের সঙ্গে এ সময়টাতে তাঁদের যেমন সম্পর্ক ছিল, মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মধুর হবে। কিন্তু বাস্তবে তা সাধারণত হয় না। কাঙ্ক্ষিত বাস্তবতার দেখা না পেয়ে মায়েরা হতাশ হন, মেয়েকে নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান। 

খেয়াল রাখতে হবে, কিশোরীর আচরণ ও মেজাজ যদিও হুট করেই উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়, তাহলে এটি শুধু হরমোনের প্রভাবের কারণে নয়; বরং বিপর্যস্ত মানসিক অবস্থা বা বিষণ্নতা, দুশ্চিন্তার মতো মানসিক স্বাস্থ্যজনিত কোনো সমস্যা। এ ক্ষেত্রে কোনো পেশাদার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। 

যেসব কারণে কিশোরীদের বিরূপ আচরণ দেখা দিতে পারে—

স্বাধীন হওয়ার ইচ্ছা
বয়ঃসন্ধিকাল হলো এমন একটা সময়, যখন মেয়েদের মধ্যে ‘ব্যক্তিত্ব’ বা ‘অহং’ সম্পর্কে ধারণা গড়ে ওঠে। তারা এ সময় বেশ কয়েকটি ব্যক্তিত্ব ও পরিচয় নিয়ে দ্বিধায় পড়ে যায়। নিজেকে বোঝার চেষ্টা করে যে কোন ব্যক্তিত্ব তাকে মানায়। ব্যক্তিত্বের এ ঘন ঘন পরিবর্তনকে অনেক মা-বাবা বেয়াড়া আচরণ বলে ধরে নেন। 

এ ধরনের আচরণের ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া না জানিয়ে বোঝার চেষ্টা করতে হবে যে, এটা তার নিজেকে প্রকাশেরই ধরন কি না। তাকে তার পোশাক, কাজকর্ম ও নিজেকে প্রকাশের স্বাধীনতা দিতে হবে।

বয়ঃসন্ধিকাল ও মস্তিষ্কের বিকাশ
কৈশোরের সময়টাতে অনেকেই নানা রকম হরমোন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়। মেয়েদের মধ্যে এর প্রভাব বেশি দেখা যায়। এ সময় তাদের মেজাজের ঘন ঘন পরিবর্তন দেখা যায়, তারা আবেগপ্রবণও হয় বেশি। এ কারণে তাদের মুহূর্তেই হাসতে দেখা যায়, আবার পরক্ষণেই কাঁদতে দেখা যায়। আবেগ-অনুভূতির এ পরিবর্তনের কারণে তারা অন্যের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে সহজে। 

তাই এ সময় তাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা না করে এই আবেগ-অনুভূতির সঙ্গে মানিয়ে চলা শেখাতে হবে। 

আধুনিক হয়ে ওঠার তাড়না
কৈশোরের সময়টাতে হাল ফ্যাশনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার একটা প্রবণতা থাকে। সব কিশোরীর মনেই একটি তাড়না থাকে, তাকে যেন অন্যদের চেয়ে আলাদা এবং অবশ্যই সেরা দেখা যায়। হাল ফ্যাশনের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাওয়াতে না পারলে সে হীনম্মন্যতায় ভুগতে থাকে। হীনম্মন্যতা ক্রমে বিষণ্নতায়, উদ্বিগ্নতায় ও আত্মহননের চিন্তায় পর্যবসিত হয়। 

এ প্রতিযোগিতা শুধু ফ্যাশনের ক্ষেত্রেই নয়, পড়ালেখায়, সামাজিক অবস্থানে, বন্ধুবান্ধবের কাছে গুরুত্ব পাওয়ার মতো নানা বিষয়ে। ফলে ঘরের বাইরে নানা দিক থেকেই মানসিক চাপ বোধ করে তারা। এ সময়টাতে ব্যর্থতার শঙ্কা তাকে আতঙ্কগ্রস্ত করে রাখে।

কিশোরীর মা-বাবা হিসেবে এ ধরনের চাপ সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে এবং তাদের এ সময়ের সঙ্গে মানিয়ে চলা শেখাতে হবে। মায়েরা এসব ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারেন। তাঁরা কিশোরীকে নিজের যত্ন নেওয়া, আত্মবিশ্বাস তৈরি ও নিজেকে মূল্যায়ন করার উপায় দেখিয়ে দিতে পারেন। 

আর কিছু না হলেও, কখনো শুধু মনোযোগ দিয়ে তার কথা শোনার মাধ্যমেও তাকে সহযোগিতা করা যায়। কিশোরীর দৃষ্টিভঙ্গি ও সমস্যা মায়েদের কাছে নগণ্য মনে হতে পারে। কিন্তু এ সময় তাদের আবেগ থাকে বেশি। তাই সমাধান না করতে পারলেও তার কথা শোনা এবং সহমর্মী হওয়া প্রয়োজন। 

অন্যদের সঙ্গে তাল মেলানোর প্রবণতা
বয়ঃসন্ধিকালে কিশোরীরা পরিবারের চেয়ে বন্ধুবান্ধবকে সময় দিতে বেশি পছন্দ করে। তাই বন্ধুদের সঙ্গে মানানসই পোশাক, জুতা, মোবাইল ফোন ইত্যাদি চাহিদা তৈরি হয় কিশোরীদের মধ্যে। এ তাল মিলিয়ে চলার প্রবণতার কারণে তারা ধীরে ধীরে মা-বাবার কাছ থেকে দূরে সরে যায়। কখনো কখনো চাহিদা পূরণ না হলে অবাধ্য হয়ে উঠতে পারে। অনেক কিশোরীই পরিবারের আর্থিক অবস্থাকে গ্রাহ্য করতে চায় না বা পরিস্থিতির গুরুত্ব অনেক সময় তারা অনুধাবন করতে পারে না। 

বন্ধুদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার প্রবণতা কিশোরীদের মধ্যে সাধারণ একটি বৈশিষ্ট্য। এতে ব্যর্থ হলে তাদের আচরণে অসহিষ্ণুতা দেখা দিতে পারে।

কিশোরীদের এসব আচরণ ব্যক্তিগতভাবে না নেওয়াটা জরুরি। একসময় তারা বাবা-মায়ের ভূমিকা সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠে। কিছু কিশোরীর এ অনুধাবন জলদি হয়, কারও ক্ষেত্রে দেরিতে। 

যোগাযোগ
কিশোরীদের যোগাযোগদক্ষতা কিশোরদের তুলনায় দ্রুত বিকশিত হয়। তবে অনেকে তা কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারে না। কিশোরীদের বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে দেখা যায়, তারা এককথায় এবং প্রায় একই ধরনের যেমন: হুম, জানি তো, যাহোক—ইত্যাদি উত্তর দেয়। এটি প্রায়ই মায়েদের কাছে বিরক্তির কারণ হয়। মেয়েদেরও মায়ের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ থাকে। এভাবে সম্পর্কের মধ্যে টানাপোড়েনের সৃষ্টি হয়। তর্ক, ঝগড়া ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। 

কিশোরীরা তাদের আবেগ, অনুভূতি, চাহিদা ব্যক্ত করতে তেমন পটু হয় না। তারা যোগাযোগকে অনেক সময় অন্যকে নিয়ন্ত্রণের উপায় হিসেবে ব্যবহার করতে চায়। এ কারণে তারা অপরপক্ষের আগ্রহ বুঝতে পারলে সম্পূর্ণ তথ্য দিতে চায় না।

এ ধরনের পরিস্থিতি সামাল দিতে হলে মায়েরা যা করতে পারেন তা হলো, বিষয়টি নিয়ে আর কথা না বাড়ানো। এটা মনে হওয়াটা স্বাভাবিক যে এই বয়সী মেয়েদের অনেক কিছু শেখার আছে, তার অনেক কিছু শুধরে দেওয়ার আছে। কিন্তু এটিও মাথায় রাখতে হবে যে এই সময়টাতে কিশোরীর জীবনে প্রতিটা দিন অনেক কিছু ঘটছে এবং বহু পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে সে যাচ্ছে। কখনো কখনো সমস্ত খ্যাপাটে স্বভাবের প্রশ্রয় চায়। তারা তাদের স্বভাবের বিপরীতে কোনো মন্তব্য শুনতে প্রস্তুত থাকে না। কেবল নিজের কথা বলতে চায়। 

তাই তাদের বলতে দেওয়া উচিত। যোগাযোগের ধরন যেমনই হোক, তা একেবারে বিচ্ছিন্ন করা উচিত নয়।

নিয়ম ও সীমা নির্ধারণ
কিশোরীরা ভাবে, তারা সব জানে। কিন্তু তারা অন্যের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে সচেতন থাকে না। এদিকে মায়েরা তাঁদের অভিজ্ঞতা থেকে সচেতন করতে চান এবং সব বিষয়েই আতঙ্কিত থাকেন। দুজনের এ বৈপরীত্য মতবিরোধে রূপ নিতে পারে। 

কিশোরীরা মনে করে, ঘরের নিয়মশৃঙ্খলা তাদের জীবন উপভোগ করা থেকে বঞ্চিত করছে। তবে এসব সীমা নির্ধারণ ও নিয়মশৃঙ্খলা কিশোরীদের আত্মনিয়ন্ত্রণ, দায়িত্ববোধ ও কর্মের পরিণতি জ্ঞান তৈরি করার জন্য আবশ্যক। এতে তাদের মধ্যে জবাবদিহি তৈরি হয়। 

তবে নিয়মশৃঙ্খলা প্রয়োগের ক্ষেত্রে বেশি কঠোরতা অবলম্বন করলে কিশোরীদের মধ্যে বিপ্লবী ভাব দেখা দিতে পারে। তাই সীমা নির্ধারণের ক্ষেত্রে নমনীয় হতে হবে। 

ব্যক্তিগত সমস্যা
কিশোর বয়সে মেয়েদের ‘ব্যক্তিগত জীবনের’ শুরু হয়, যা সম্পর্কে অনেক মা-ই সচেতন থাকেন না। বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্ক, বাইরে কোনো অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতা, অন্যদের সঙ্গে তাল মেলানোর প্রতিযোগিতা বা অন্য কোনো চাপ—অনেক কিছুই তার মানসিক অবস্থায় প্রভাব ফেলতে পারে। 

ঘরের বাইরেও যে তার একটি পৃথিবী গড়ে উঠছে, সে সম্পর্কে মায়েদের সহানুভূতিশীল হতে হবে। বাইরের পৃথিবীর নতুন নতুন পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য তার যে পরামর্শ প্রয়োজন, তা সবচেয়ে বেশি মায়ের কাছেই পাওয়া সম্ভব। কিশোরীদেরও অন্য সব প্রাপ্তবয়স্কের মতোই বাইরের চ্যালেঞ্জ, উৎকণ্ঠা, চাপ ইত্যাদি মোকাবিলা করতে হয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মানুষের জীবনযাপনের ধরনের সঙ্গে এতটাই জড়িয়ে গেছে যে এর উল্লেখ ছাড়া কোনো আলোচনাই সম্পূর্ণ হয় না। বেশির ভাগ মায়েরই দাবি, তাঁরা সন্তানের অনলাইন কার্যকলাপ জানেন। তবে গবেষণা বলছে, ৭০ শতাংশ কিশোরই তাদের অনলাইন ব্যক্তিত্বকে পরিবারের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখে। 

কিশোরীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নেতিবাচক প্রভাবের শিকার হয় বেশি। নানা ধরনের ট্রেন্ডের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে তারা খাবারে অনীহা, নিজের ক্ষতি ও নিজেকে নিখুঁত হিসেবে উপস্থাপন করার প্রবণতার ফাঁদে পড়ে।

এ ছাড়া কিশোরীদের মধ্যে মোবাইল ফোনের প্রতি তীব্র আসক্তি দেখা দেয়। এটি তাদের ঘুম, খাওয়া, মেজাজ ও সম্পর্কে বিরূপ প্রভাব ফেলে। 

কিশোরীদের সঙ্গে সম্পর্কে উন্নতি করতে চাইলে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে—এর দায়িত্বের গুরু ভাগ মায়েদেরই। নিজের অভিজ্ঞতা ও বর্তমান পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে। মনে রাখতে হবে, মেয়ের সব ভুলের দায় যেমন মায়েদের নয়, তেমন তাদের সব অর্জনের কৃতিত্বও মায়েদের নয়। 

সর্বোপরি যেকোনো পরিস্থিতিতে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হওয়া যাবে না। একে অপরের কথা, অভিযোগ, অনুযোগ শোনার জন্য মনকে সব সময়কে উদার রাখতে হবে। বাঁধন ছিঁড়ে মুক্ত হওয়ার প্রবণতা মেয়ের; আর মায়ের দায়িত্ব হলো, তার জন্য অপেক্ষা করা, তার ফিরে আসার পথ খোলা রাখা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রেস্তোরাঁ নয়, বাড়িতেই তৈরি করুন ক্রিস্পি চিকেন ফ্রাই

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
শীতের সকালে কিংবা সন্ধ্যার নাশতায় রেস্তোরাঁয় না গিয়ে কীভাবে বাড়িতেই তাদের মতো ক্রিস্পি চিকেন ফ্রাই তৈরি করা যায়। ছবি: ফ্রিপিক
শীতের সকালে কিংবা সন্ধ্যার নাশতায় রেস্তোরাঁয় না গিয়ে কীভাবে বাড়িতেই তাদের মতো ক্রিস্পি চিকেন ফ্রাই তৈরি করা যায়। ছবি: ফ্রিপিক

শীতকালে ভাজাপোড়া খেতে মন চায়। কেন এ ধরনের খাবারের প্রবণতা বাড়ে, তার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও আছে। সেসব থাক। আমরা বরং দেখে নিই, এই শীতের সকালে কিংবা সন্ধ্যার নাশতায় রেস্তোরাঁয় না গিয়ে কীভাবে বাড়িতেই তাদের মতো ক্রিস্পি চিকেন ফ্রাই তৈরি করা যায়।

চিকেন ফ্রাই এখন আমাদের দেশে বেশ জনপ্রিয় খাবার। শহরগুলোতে গলির মোড়ে মোড়ে চিকেন ফ্রাইয়ের দোকান হয়ে গেছে। অর্থাৎ হাত বাড়ালেই এখন সুস্বাদু আর ক্রিস্পি মুরগি ভাজা পাওয়া যায়। তবে কিছু কৌশল জানা থাকলে বাড়িতেই রেস্তোরাঁর মতো চিকেন ফ্রাই করে নিতে পারেন।

মনে রাখতে হবে, রেস্তোরাঁর মতো ক্রিস্পি চিকেন ফ্রাই বানাতে হলে মাংস ম্যারিনেট করা, ময়দা, কর্নফ্লাওয়ার, বিস্কুটের গুঁড়া বা কর্নফ্লেক্সের মিশ্রণ সঠিক কোটিং এবং ডুবো তেলে ভাজার কৌশল জানা গুরুত্বপূর্ণ। এতে আদা-রসুনবাটা, সয়া সস, গোলমরিচ এবং ডিম ও ময়দার মিশ্রণ ব্যবহার করে ম্যারিনেট ও কোটিং করলে ভেতরে জুসি আর বাইরে মুচমুচে চিকেন ফ্রাই তৈরি হয়।

উপকরণ

মুরগি ছোট টুকরো করে কাটা ৫০০ গ্রাম, ম্যারিনেটের জন্য আদা ও রসুনবাটা, লবণ, গোলমরিচের গুঁড়া, সয়া সস, অল্প মরিচ গুঁড়া, সামান্য ভিনেগার বা লেবুর রস, দই, কোটিংয়ের জন্য ময়দা, কর্নফ্লাওয়ার, বিস্কুটের গুঁড়া বা ব্রেডক্রাম্বস, ডিম, সামান্য বেকিং পাউডার এবং ভাজার জন্য তেল।

উপকরণের এই বিষয়গুলো মোটামুটি আমরা সবাই জানি। এবার এগুলো ঠিকভাবে মেরিনেট করে নিন। এখানে কিছু বিষয় খেয়াল করার আছে। এগুলোর মধ্যে আছে মাংস রেস্টে রাখা। প্রতিটি ধাপে মাংস কিছুক্ষণ করে রেস্টে রাখলে ফল ভালো হবে।

মেয়োনিজ বা কেচাপ ডিপিং সস দিয়ে সাজিয়ে চিকেন ফ্রাই পরিবেশন করুন। ছবি: ফ্রিপিক
মেয়োনিজ বা কেচাপ ডিপিং সস দিয়ে সাজিয়ে চিকেন ফ্রাই পরিবেশন করুন। ছবি: ফ্রিপিক

ম্যারিনেশন প্রণালি

মুরগির টুকরোগুলো আদা-রসুনবাটা, লবণ, গোলমরিচ, সয়া সস, মরিচ গুঁড়া, ভিনেগার বা লেবুর রস ও দই দিয়ে ভালো করে মেখে কমপক্ষে ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা রেখে দিন। সম্ভব হলে ফ্রিজে রাখুন। এখানে একটি বিষয় বলে রাখা ভালো। অনেকে মনে করেন, মাংস ভালো করে মেখে এক রাত ফ্রিজে বা ঠান্ডা জায়গায় রাখলে ভাজার পর ফল ভালো পাওয়া যায়। সেটা মেনেও চেষ্টা করে দেখতে পারেন। সে ক্ষেত্রে সন্ধ্যায় মেরিনেট করে রাতভর রেখে দিন।

টিপস

  • মুরগি ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে নিন।
  • একটি বাটিতে দুধ, ভিনেগার ও লবণ মিশিয়ে মুরগির মাংস ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এতে মাংস নরম হবে।

ব্যাটার তৈরি

ভাজার আগে ব্যাটার তৈরি করে নিন। এ জন্য একটি বাটিতে ডিম ফেটিয়ে নিন। আরেকটি বাটিতে ময়দা, কর্নফ্লাওয়ার এবং সামান্য লবণ ও গোলমরিচ মিশিয়ে রাখুন। চাইলে এতে অল্প বিস্কুটের গুঁড়া বা কর্নফ্লেক্স গুঁড়াও যোগ করতে পারেন। আরও ক্রিস্পি চাইলে চালের গুঁড়া যোগ করতে পারেন।

সেদ্ধ কিংবা সঁতে করা শীতের সবজির সঙ্গেও চিকেন ফ্রাই খাওয়া যেতে পারে। ছবি: ফ্রিপিক
সেদ্ধ কিংবা সঁতে করা শীতের সবজির সঙ্গেও চিকেন ফ্রাই খাওয়া যেতে পারে। ছবি: ফ্রিপিক

কোটিং

ম্যারিনেট করা মুরগির টুকরোগুলো প্রথমে ময়দার মিশ্রণে গড়িয়ে নিয়ে অতিরিক্ত ময়দা ঝেড়ে ফেলুন। এরপর ফেটানো ডিমে ডুবিয়ে নিন। সবশেষে বিস্কুটের গুঁড়া বা ব্রেডক্রাম্বসের মিশ্রণে ভালো করে কোট করুন।

টিপস

ভেজা মিশ্রণ: আলাদা বাটিতে শুকনা মিশ্রণের অর্ধেক নিয়ে বরফ ঠান্ডা পানি দিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন।

ডবল ডিপিং পদ্ধতি: প্রথমে মুরগি শুকনা মিশ্রণে, তারপর ভেজা পেস্টে, আবার শুকনা মিশ্রণে কোট করুন।

ভাজা

যেকোনো ধরনের ভাজার মতো চিকেন ফ্রাই করতে তাপমাত্রার পরিমাপটা বোঝা জরুরি। একটি কড়াইতে ডুবো তেল মাঝারি আঁচে তেল গরম করুন। তেলের তাপমাত্রা ৩৫০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ১৭৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে ভালো হয়।

তেল গরম হলে কোটিং করে রাখা মুরগির মাংসের টুকরোগুলো সাবধানে তেলে ছাড়ুন এবং সোনালি-বাদামি ও মুচমুচে হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। এখানে কয়েকটি টিপস জেনে নিন।

  • কড়াইতে একবারে বেশি টুকরো দেবেন না। তাতে চিকেন নরম হয়ে যেতে পারে।
  • ভাজার সময় কোটিং খসে পড়ছে কি না, খেয়াল করুন। কোটিং খসে পড়ছে মানে মুরগি শুকনো ছিল না এবং কোটিং সেট হওয়ার সময় দেননি।
  • বাইরে পুড়ে গেছে, কিন্তু ভেতরে কাঁচা থাকলে বুঝতে হবে, তাপমাত্রা বেশি হয়েছে। তাপ কমিয়ে মিডিয়াম তাপে ভাজুন।
  • ভাজা হয়ে গেলে তেল ঝরানোর জন্য একটি তারের র‍্যাকে তুলে রাখুন।

পরিবেশন

  • মেয়োনিজ বা কেচাপ ডিপিং সস
  • ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বা কোলস্ল
  • লেমন ওয়েজ
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পৌষের হাওয়া লেগে ফাটছে গোড়ালি? সমাধান আছে ঘরেই

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
সাধারণত যাঁদের বয়স ত্রিশ বা তার বেশি, তাঁরা গোড়ালি ফাটার সমস্যায় বেশি ভোগেন। ছবি: পেক্সেলস
সাধারণত যাঁদের বয়স ত্রিশ বা তার বেশি, তাঁরা গোড়ালি ফাটার সমস্যায় বেশি ভোগেন। ছবি: পেক্সেলস

শীতের দিনে ত্বকের সাধারণ সমস্যার একটি হলো ফাটা গোড়ালি। সাধারণত যাঁদের বয়স ত্রিশ বা তার বেশি, তাঁরা ত্বকের অতিরিক্ত মরা কোষ ও ফাটা গোড়ালির সমস্যায় বেশি ভোগেন। ফলে দেখা যায়, এক সপ্তাহ আগেই হয়তো পারলার থেকে পেডিকিউর করে এসেছেন, কিন্তু সপ্তাহ পার হতে না হতেই আবার পায়ের গোড়ালির ত্বক পুরু হয়ে শক্ত হয়ে গেছে, খানিকটা ফেটেও যেতে পারে। তাই সাবধান হতে হবে আগে থেকে। এই শীতে ফাটা গোড়ালির সমস্যা এড়াতে হলে নিয়মিত যত্নের বাইরে কোনো দাওয়াই নেই। ফাটা গোড়ালি সারানোর জন্য বিশেষ লোশন বা ক্রিমের খোঁজ না করে ভরসা রাখতে পারেন কিছু ঘরোয়া টোটকায়। এসব উপাদান নিয়মিত ব্যবহারে সুফল মিলবে।

ময়শ্চারাইজেশন আসল চিকিৎসা

গোড়ালি শুষ্ক হয়ে এলেই ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। ছবি: পেক্সেলস
গোড়ালি শুষ্ক হয়ে এলেই ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। ছবি: পেক্সেলস

ত্বক ও গোড়ালি ফাটার মূল কারণ শুষ্কতা। শীতের হাওয়া লেগে আমাদের ত্বক আর্দ্রতা হারায় দ্রুত। তাই ত্বকের হাইড্রেশনে জোর দিলে ফাটা গোড়ালি থেকে মুক্তি মিলবে সহজে। এর জন্য গোড়ালি শুষ্ক হয়ে এলেই ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। সম্ভব হলে কয়েক লেয়ারে ময়শ্চারাইজার মেখে তারপর সুতির মোজা পরুন। এই যেমন প্রথমে গ্লিসারিন, তারপর অলিভ অয়েল এবং সবশেষে পেট্রোলিয়াম জেলি মেখে ১০ মিনিট অপেক্ষার পর সুতি মোজা পরুন। তাতে পায়ের ত্বক কোমল থাকবে আর গোড়ালি ফাটাও রোধ করা যাবে। এই কাজে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ হিল বামে ভরসা রাখতে পারেন।

ফুট স্ক্রাব জরুরি

ফাটা গোড়ালির ত্বক অপেক্ষাকৃত বেশি শুষ্ক ও পুরু হয়। ফলে হাঁটার সময় বেশি চাপ পড়লে গোড়ালি আরও ফাটে। তাই নিয়মিত ফুট স্ক্রাব করতে হবে। তাহলে গোড়ালি ফাটার সমস্যা ধীরে ধীরে কমবে। ফুট স্ক্রাব করতে এক কাপ লবণ, এক কাপ চিনি, দুই টেবিল চামচ মধু, সামান্য নারকেল তেল একসঙ্গে মিশিয়ে পায়ে স্ক্রাব করুন। ম্যাসাজ শেষে ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে সাধারণ তাপমাত্রার পানিতে পা ধুয়ে নিতে হবে। এ ছাড়া আধা কাপ লবণ, এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল এবং ৪ থেকে ৫ ফোঁটা পিপারমিন্ট অয়েল একটি কাচের পাত্রে একসঙ্গে মিশিয়ে স্ক্রাব তৈরি করে রেখে দিন। এই স্ক্রাব সপ্তাহে দুদিন পায়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করে ১০ মিনিট রেখে দিতে হবে। এরপর কুসুম গরম পানিতে পা ধুয়ে ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।

২০ মিনিটের পুটবাথ

প্রতিদিন বাইরে থেকে ফিরে সরাসরি গোসলে না ঢুকে একটি বাটিতে হালকা গরম পানি নিয়ে তাতে হালকা কোনো বডি ওয়াশ ও অল্প পরিমাণ লবণ মিশিয়ে নিন। এই পানিতে কয়েক ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েলও যোগ করতে পারেন। এবার এতে ২০ মিনিট পা ডুবিয়ে রাখুন। এতে গোড়ালির ত্বক কিছুটা নরম হয়ে আসবে। তারপর ঝামা, লুফা বা ফুট স্ক্রাবার দিয়ে গোড়ালি ঘষে নিন। তারপর গোসল সেরে পায়ে ভারী ময়শ্চারাইজার লাগান। সবশেষে পায়ে মোজা পরতে ভুলবেন না যেন!

বিশেষ ভাবে ফোচানো পানিতে ২০ মিনিট পা ডুবিয়ে রাখুন। ছবি: পেক্সেলস
বিশেষ ভাবে ফোচানো পানিতে ২০ মিনিট পা ডুবিয়ে রাখুন। ছবি: পেক্সেলস

ক্ষতি সারাবে টি ট্রি অয়েল

অ্য়ান্টিমাইক্রোবিয়াল টি ট্রি অয়েল গোড়ালি ফাটা সারাতে খুব কার্যকর। তবে সরাসরি টি ট্রি অয়েল ত্বকে ব্যবহার করবেন না। এর সঙ্গে কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল মিশিয়ে তারপর ত্বকে ব্যবহার করুন। এ ক্ষেত্রে পরিমাণটা বোঝা জরুরি। একটি কাপের ৪ ভাগের ১ ভাগ অলিভ অয়েল নিন। তাতে ৬ থেকে ৭ ফোঁটা টি ট্রি অয়েল দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার হালকা গরম পানিতে পা ভিজিয়ে রাখার পর এই মিশ্রণ দিয়ে ভালো করে ফুট ম্যাসাজ করে ফেলুন। এই ঘরোয়া টোটকাতে ফাটা গোড়ালি ধীরে ধীরে ভালো হয়ে উঠবে।

প্রাকৃতিক সমাধান হতে পারে মধু

অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল গুণসমৃদ্ধ মধু যেকোনো ত্বকের ক্ষত ও ফেটে যাওয়া অংশ সারিয়ে তুলতে সাহায্য় করে; পাশাপাশি ত্বক আর্দ্র ও মসৃণ রাখতেও সহায়ক। তাই ফাটা গোড়ালি সারাতে বাড়তি কিছু করতে না চাইলে মধুর ওপর ভরসা রাখতে পারেন। সিনেমা দেখতে বসার আগে পায়ের গোড়ালিতে মধু মেখে তারপর টিভির সামনে পা এলিয়ে বসুন। ২ থেকে ৩ ঘণ্টায় খুব ভালো কাজ করবে এই মধু। নিয়মিত করলে ফাটা গোড়ালি সেরে উঠবে খুব দ্রুত।

সূত্র: বি বিউটিফুল, নেটমেডস ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শীতে সব ধরনের চুলের জন্য ৫টি সেরা প্রাকৃতিক কন্ডিশনার

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
চুলের সার্বিক সুস্থতার জন্য এই ঋতুতে কিছু ঘরোয়া ডিপ কন্ডিশনিং প্যাক তৈরি করে চুলে ব্যবহার করতে পারেন। এতে পুরো শীতে চুল থাকবে নরম, মসৃণ ও জেল্লাদার। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
চুলের সার্বিক সুস্থতার জন্য এই ঋতুতে কিছু ঘরোয়া ডিপ কন্ডিশনিং প্যাক তৈরি করে চুলে ব্যবহার করতে পারেন। এতে পুরো শীতে চুল থাকবে নরম, মসৃণ ও জেল্লাদার। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

শীতকাল আমাদের জন্য উদ্‌যাপনের ঋতু হলেও চুলের জন্য আতঙ্কের। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চুলে নির্জীব ভাব আসার পাশাপাশি আগা ফাটার সমস্যাও বাড়তে থাকে। তাই এই ঋতুতে চুলের ডিপ কন্ডিশনিং রীতিনীতি মেনে চলা অপরিহার্য। তবে রোজ শ্যাম্পু করার পর বোতলজাত যে কন্ডিশনার আমরা ব্যবহার করি; সেগুলোর ব্যবহার করলেই যে চুল কোমল, সুন্দর ও মসৃণ থাকবে, এ কথা ভাবাটা বোকামি। চুলের সার্বিক সুস্থতার জন্য এই ঋতুতে কিছু ঘরোয়া ডিপ কন্ডিশনিং প্যাক তৈরি করেও চুলে ব্যবহার করতে হবে। এতে পুরো শীতে চুল থাকবে নরম, মসৃণ ও জেল্লাদার। দেখে নিন, কী কী ঘরোয়ার উপকরণ দিয়ে চুলের জন্য ডিপ কন্ডিশনিং প্যাক তৈরি করবেন।

পাকা কলার প্যাক

কলা খুব ভালো ময়শ্চারাইজিং উপাদান। এটি শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যাওয়া চুল নিরাময়ে সহায়ক। কলা ভিটামিন বি৬, পটাশিয়াম, প্রোটিন এবং অন্যান্য পুষ্টিতে পরিপূর্ণ। ফলে এটি মাথার ত্বক ও চুলে গভীরভাবে পুষ্টি জোগায়। কেবল একটি পাকা কলা বেটে তার সঙ্গে মধু, ডিম ও সামান্য দুধ মিশিয়ে নিন। এরপর এই পেস্ট মাথার ত্বক এবং পুরো চুলে ভালোভাবে লাগিয়ে ৩০ মিনিটের জন্য রেখে দিন। তারপর ভালো কোনো শ্যাম্পু দিয়ে চুল সুন্দর করে ধুয়ে ফেলতে পারেন। এই প্যাক ব্যবহারে চুল খুব দ্রুত ঝলমলে হয়।

দইয়ের জাদুকরি প্যাক

দই মাথার ত্বক পরিষ্কার করে, চুল মসৃণ করে মাথার ত্বকে চুলকানি দূর করতে সহায়তা করে। ছবি: পেক্সেলস
দই মাথার ত্বক পরিষ্কার করে, চুল মসৃণ করে মাথার ত্বকে চুলকানি দূর করতে সহায়তা করে। ছবি: পেক্সেলস

প্রচুর প্রোটিন ও ল্যাকটিক অ্যাসিডে ভরা দই আমাদের চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি মাথার ত্বক পরিষ্কার করে, চুল মসৃণ করে মাথার ত্বকে চুলকানি দূর করতেও সহায়ক। টক দই, কলা, মধু ও জলপাই তেল দিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। এই প্যাক মাথার ত্বকে লাগিয়ে ৩০ মিনিটের জন্য রেখে দিন। সবশেষে ভালো মানের শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। চুলের স্বাস্থ্য ফেরাতে এটিকে বলা যেতে পারে জাদুকরি প্যাক। তবে যাঁদের ঠান্ডা লাগে, তাঁরা ৩০ মিনিটের পরিবর্তে ১০ মিনিট রেখে চুল ধুয়ে নিতে পারেন।

চুলের তরতাজা ভাব ফেরাবে অ্যালোভেরা

অ্যালোভেরা মাথার ত্বকের পিএইচ ভারসাম্য পুনরুদ্ধার এবং চুল বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করে। একটি পাত্রে ৪ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল লেবুর রসের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ আপনার চুলে লাগিয়ে ৫ থেকে ১০ মিনিটের জন্য রেখে দিন। এরপর শ্যাম্পু করে চুলে রেগুলার কন্ডিশনার মাখুন। নিজেই টের পাবেন চুলের তরতাজা ভাব। সপ্তাহে দুবার এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করুন।

অ্যালোভেরা জেল চুল বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করে। ছবি: পেক্সেলস
অ্যালোভেরা জেল চুল বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করে। ছবি: পেক্সেলস

তৈলাক্ত চুলের সেরা কন্ডিশনার আপেল সিডার ভিনেগার

আপেল সিডার ভিনেগার অ্যাসিটিক অ্যাসিডের একটি ভালো উৎস। এটি তৈলাক্ত মাথার ত্বক, খুশকি এবং কুঁকড়ে যাওয়া চুলের জন্য চমৎকার সমাধান। এটি মাথার ত্বকের পিএইচ ভারসাম্য পুনরুদ্ধার এবং ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এর জন্য চুল ভালোভাবে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন। এরপর ২ টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার এক মগ পানির সঙ্গে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ মাথার ত্বক ও চুলে ঢেলে দিন। ৫ মিনিট ধরে আপনার মাথার ত্বক ম্যাসাজ করুন। হালকা করে চুল আবার শ্যাম্পু করে এরপর কন্ডিশনার মাখুন। সবশেষে সুন্দর করে চুল ধুয়ে নিন।

সহজ সমাধান নারকেল তেল

আমরা সবাই নারকেল তেলের বিস্ময়কর গুণাবলির কথা শুনে বড় হয়েছি। এই তেল যে চুলের যত্নে জাদুকরি উপাদান—এ কথা একেবারে মিথ্য়া নয়। এটি চুলের গোড়া মজবুত করে চুল করে তোলে নরম ও মসৃণ। নারকেল তেল দিয়ে প্রাকৃতিক কন্ডিশনার তৈরি করতে, ১ টেবিল চামচ মধু এবং ১ টেবিল চামচ লেবুর রসের সঙ্গে প্রয়োজনীয় নারকেল তেল মিশিয়ে নিন। শ্যাম্পু করার সময় এটি লাগান। ২০ মিনিট রেখে দিন এবং তারপর হালকা গরম পানি ও শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৩৬
আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

মেষ

সঞ্চয় করার দক্ষতা নিয়ে আজ লোকে আপনার প্রশংসা করবে। তবে সাবধান! কিপটেমি আর সঞ্চয়ের মধ্যে একটা সূক্ষ্ম পার্থক্য আছে। বন্ধুদের ট্রিট দেওয়ার সময় হুট করে ‘মানিব্যাগ ভুলে রেখে এসেছি’ বা ‘আমার নেট কাজ করছে না’ বলার পুরোনো কৌশলটি আজ বন্ধুদের কাছে ধরা পড়ে যেতে পারে। পরিবারে শান্তি বজায় থাকবে, যদি আপনি রিমোটের দখল ছেড়ে দেন। মানিব্যাগে সব সময় কিছু খুচরা টাকা রাখুন, ইজ্জত বাঁচতে পারে।

বৃষ

স্ত্রী বা পরিবারের কারোর মধুর ব্যবহারে আজ আপনি মুগ্ধ হতে পারেন, তবে এর পেছনে কোনো দামি শাড়ি, গয়না বা অনলাইন শপিংয়ের আবদার লুকিয়ে আছে কি না, তা ‘শার্লক হোমস’ স্টাইলে যাচাই করে নিন। সঞ্চয়ের জন্য দিনটি ভালো, কিন্তু লটারি জেতার আশায় অফিসের কলিগের কাছে ধার চাইবেন না। আবেগের চেয়ে আজ পেটভরা খাবারকে বেশি গুরুত্ব দিন। মিষ্টি কথায় ভুলে যাওয়ার আগে ব্যাংকের ব্যালেন্স চেক করুন।

মিথুন

মনের কথা বাড়ির লোককে বলে ফেলার জন্য আজ দারুণ দিন। তবে অফিসের বসের নামে কোনো ‘গোপন ছড়া’ বা ‘নিকনেম’ আবার ভুল করে বাড়ির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পাঠিয়ে দেবেন না! পুরোনো অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে আবেগময় হয়ে পড়তে পারেন, সঙ্গে গামছা বা টিস্যু বক্স রাখুন। মেসেজ পাঠানোর আগে ‘রিসিভার’ কে, তা দুবার চেক করুন।

কর্কট

কারও কাছ থেকে আজ ধার নেবেন না, আর কাউকে দেবেনও না। কারণ, আজ যাকে টাকা দেবেন, তাকে খুঁজে পেতে ভবিষ্যতে আপনাকে ইন্টারপোল নিয়োগ করতে হতে পারে। সন্ধ্যার পর শরীর বেশ সতেজ থাকবে, চাইলে এক কাপ কড়া চা নিয়ে পাড়ার মোড়ে আড্ডা জমাতে পারেন। তবে পলিটিকস নিয়ে জ্ঞান দিতে যাবেন না। টাকা চাইলে ‘মানিব্যাগটা ধুতে দিয়েছি’ বলে এড়িয়ে যান।

সিংহ

বড় কোনো অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা আছে। তবে সেই টাকা হাতে আসার আগেই অনলাইনে আইফোন বা দামি গ্যাজেটের রিভিউ দেখা শুরু করবেন না। অতিরিক্ত রাগ আপনার কর্মক্ষেত্রে ক্ষতি করতে পারে। বসের ঝাড়ি খেয়েও আজ ‘মোনালিসা হাসি’ বজায় রাখার চেষ্টা করুন, এতে বস কনফিউজড হয়ে ঝাড়ি থামিয়ে দেবে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে হাসার প্র্যাকটিস করুন।

কন্যা

বাড়িতে যদি অবিবাহিত কেউ থাকে, তবে আজ তার বিয়ের আলোচনা তুঙ্গে উঠতে পারে। বিয়ের মেনুতে বিরিয়ানি থাকবে কি না, তা নিয়ে আজ থেকেই তর্ক শুরু হতে পারে। খাওয়ার অভ্যাসে বদল আনুন; রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফুচকা খাওয়ার আগে বিক্রেতার হাত ধোয়া কি না, তা একটু জুম করে দেখে নিন। প্রবীণদের কথা শুনুন, মাঝেমধ্যে তারা ইন্টারনেটের চেয়েও ভালো সমাধান দেন! ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলবেন, পেটের অবস্থা ভালো নয়।

তুলা

হয়তো ভালো মনেই কাউকে উপদেশ দেবেন, কিন্তু লোকে সেটাকে পার্সোনাল অ্যাটাক হিসেবে ধরে নেবে। আজ আপনার মিষ্টি কথা মানুষের কানে ‘নিমপাতার জুস’ মনে হতে পারে। অফিসে আপনার নামে কেউ কানকথা দিতে পারে, কিন্তু উল্টো তাদের মিষ্টি খাইয়ে কনফিউজ করে দিন। চুপ থাকাই আজ আপনার সেরা অস্ত্র।

বৃশ্চিক

পাড়ার দুই খালা বা চাচির ঝগড়ায় বিচার করতে যাবেন না। অন্যের ঝামেলা মেটাতে গিয়ে নিজেই ‘ভিলেন’ হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রল হতে পারেন। কর্মক্ষেত্রে যুক্তিসংগত কথা বলুন। আজ আপনার কোনো পুরোনো শখ (যেমন গিটার বাজানো বা বাথরুমে গান গাওয়া) আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। অন্যের ব্যাপারে বাঁ হাত ঢোকাবেন না।

ধনু

আজ আপনার মধ্যে আধুনিক চিন্তা কাজ করবে। অফিসের কাজে এআই ব্যবহার করে বসকে চমকে দিতে পারেন; তবে সাবধান, যেন ধরা না পড়েন! সৃজনশীল কাজে সাফল্য আসবে। ভ্রমণে যাওয়ার আগে ব্যাগে ছাতা নিতে ভুলবেন না। কারণ, আবহাওয়া অফিস রোদ বললেও আজ বৃষ্টির সঙ্গে আপনার মোলাকাত হতে পারে। ল্যাপটপ চার্জ দিয়ে রাখুন।

মকর

আপনার পকেটে আজ অদৃশ্য ফুটো হওয়ার সম্ভাবনা আছে। বিশেষ করে শপিং মলে গেলে ক্রেডিট কার্ডটি বাসায় ফেলে যান। বিরোধীরা আজ আপনার ছোট কোনো ব্যাকরণগত ভুলকেও বড় করে দেখাতে পারে। তাই কথা বলার আগে মুখে ‘কাল্পনিক ফিল্টার’ ব্যবহার করুন। ‘সুলভ মূল্যে’ লেখা বোর্ড দেখলে উল্টো দিকে হাঁটুন।

কুম্ভ

দিনটি আপনার জন্য বেশ শুভ। নতুন কারোর সঙ্গে দেখা হতে পারে যে আপনার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে (সেটা বিমা কোম্পানি বা এমএলএম মার্কেটিংয়ের লোকও হতে পারে, সাবধান!)। রাতে ভালো ঘুম হওয়ার সম্ভাবনা আছে, যদি না মশার দল আপনার কানে গান গাওয়ার কনসার্ট আয়োজন করে। নেটওয়ার্ক মার্কেটিংয়ের লোকদের থেকে দূরে থাকুন।

মীন

আজ সারা দিন অফিসের বা বাড়ির কাজে এতটাই ব্যস্ত থাকবেন যে নিজের আয়নায় মুখ দেখার সময় পাবেন না। তবে এই ব্যস্ততার শেষে একটা মিষ্টি ক্লান্তি আসবে। সন্তানের বায়না মেটাতে গিয়ে পকেটে টান পড়তে পারে। শরীরের প্রতি যত্ন নিন, লিফট থাকতে সিঁড়ি দিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে যাবেন না। দুপুরের খাবারটা ঠিক সময়ে খেয়ে নিন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত