Ajker Patrika

আজকের তারাবি-১ : গরু জবাই নিয়ে বনি ইসরাইলের বাড়াবাড়ি

রায়হান রাশেদ
আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৫, ১৪: ১৯
আজকের তারাবি-১ : গরু জবাই নিয়ে বনি ইসরাইলের বাড়াবাড়ি

পবিত্র রমজান মাসে খতম তারাবি দেশের সব মসজিদে একই পদ্ধতি অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বাতলে দেওয়া পদ্ধতি অনুসরণ করলে ২৬ রমজানের মধ্যে খতম তারাবি শেষ হয়ে যাবে। 

সে হিসাবে প্রথম তারাবিতে পবিত্র কোরআনের প্রথম দেড় পারা তিলাওয়াত করা হয়। সুরা ফাতেহা ও সুরা বাকারার ১ থেকে ২০৩ নম্বর আয়াত পর্যন্ত। এই অংশে ইসলামের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিধানের কথা বিবৃত হয়েছে। রোজা, হজ, খুন, বনি ইসরাইলের বাড়াবাড়িসহ অনেক কথা এখানে আলোচিত হয়েছে। আমরা সংক্ষেপে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি কথা পেশ করছি। 

সরল পথের প্রার্থনা সুরা ফাতেহা
সুরা ফাতেহা—কোরআনের প্রথম সুরা। এটিই মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর নাজিলকৃত প্রথম পূর্ণাঙ্গ সুরা। রাসুল (সা.) মক্কায় অবস্থানকালীন একবার ও মদিনায় হিজরতের পর একবার; মোট দুই বার এই সুরা নাজিল হয়। সব ধরনের নামাজেই এ সুরা পাঠ করা আবশ্যক। হাদিসে এ সুরাকে ‘কোরআনে মা’ ও ‘কোরআনের সার’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। (তাফসিরে কুরতুবি) 

সুরা ফাতেহায় পরকালীন জীবনে মুক্তি ও সাফল্যের রাজপথের কথা বলা হয়েছে। এই সুরায় মূলত সরল পথের দিশা পেতে কীভাবে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে—তা শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে। যে পথে না চলার কারণে আগের জাতিসমূহ পথভ্রষ্ট হয়েছে, তা থেকে নিজেদের রেখে কীভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে জীবন পরিচালিত করার এক চিরন্তন প্রার্থনা সুরা ফাতেহা। 

কোরআনের সবচেয়ে বড় সুরা—বাকারা
সুরা বাকারা মদিনায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ২৮৬টি, কোরআন কারিমের দ্বিতীয় এবং সবচেয়ে বড় সুরা। বাকারা অর্থ গাভি। এ সুরায় একটি গাভির ঘটনা বর্ণিত হয়েছে, যে গাভিটি জবাই করার জন্য বনি ইসরাইলকে আদেশ করা হয়েছিল। সে দৃষ্টিকোণ থেকে এ সুরার নাম সুরা বাকারা। ইসলামের মৌলিক নীতি, বিশ্বাস ও শরিয়তের বিধিবিধানের যতটুকু বিস্তারিত বর্ণনা এই সুরায় করা হয়েছে, ততটুকু অন্য কোনো সুরায় করা হয়নি। 

শুরুতেই কোরআনের চ্যালেঞ্জ
সুরা বাকারার ২ নম্বর আয়াতে বিশ্ববাসীকে এই কথার বার্তা দেওয়া হচ্ছে, এই কোরআন আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে। এটা সন্দেহাতীতভাবে নির্ভুল ও আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে। তৎকালীন আরবি ভাষার পণ্ডিতেরা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি ভুলও বের করতে পারেনি। কেউ কখনো পারবেও না। কোরআন আল্লাহভীরুদের জন্য পথনির্দেশক। 

মুত্তাকির ৫ বৈশিষ্ট্য
মোত্তাকি অর্থ খোদাভীরু। যাঁরা আল্লাহর ভয়ে তাঁর আদেশ-নিষেধ যথাযথভাবে পালন করেন, তাঁরাই মোত্তাকি। ৩ ও ৪ নম্বর আয়াতে মুত্তাকিদের ৫টি বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যথা—

১. অদৃশ্যের বিষয়াবলি আল্লাহর কথার ভিত্তিতে বিশ্বাস করা। 
২. নামাজ কায়েম করা। 
৩. জাকাত দেওয়া এবং দান-সদকা করা। 
৪. হজরত মুহাম্মদ (সা.) এবং তার আগের নবীদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে বিশ্বাস করা। 
৫. পরকালকে বিশ্বাস করে। 

মুনাফেকের ৮ বৈশিষ্ট্য
৮-২০ নম্বর আয়াতে মুনাফেকের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্যের কথা আলোচনা করা হয়েছে। যথা—

১. মুখে ইমান ও বিশ্বাসের কথা বললেও মনে মনে অবিশ্বাস লালন করে। 
২. আল্লাহ ও মোমিনদের সঙ্গে প্রতারণা করে নিজেকে চালাক মনে করে। 
৩. অন্তরে কপটতা ও বক্রতা রয়েছে। 
৪. সমাজে অশান্তি সৃষ্টি করে, তবে নিজেকে শান্তিকামী দাবি করে। 
৫. নিষ্ঠার সঙ্গে ইসলাম গ্রহণ করতে করলে বলে—আমরা অত বোকা নই। 
৬. বিশ্বাসীদের বন্ধু দাবি করলেও অবিশ্বাসীদের সঙ্গে গোপন আঁতাত করে এবং ইমানদারদের নিয়ে উপহাস করে। 
৭. তারা হেদায়তের মর্ম বুঝতে পারে না। 
৮. তারা ঝোড়ো রাতের বিভ্রান্ত পথিকের মতো সরল পথের দিশা পায় না। 

বনি ইসরাইলের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ
 ৪০-১০৩ নম্বর আয়াতে বনি ইসরায়েলদের পরিপূর্ণ ইমান আনার নির্দেশনা, তাদের ওপর আল্লাহ কী কী অনুগ্রহ করেছেন, আল্লাহ বিশেষ নেয়ামত পেয়েও তারা কী কী নাফরমানি করেছে, তাদের গো-পূজায় লিপ্ত হওয়া, জান্নাতি খাবার মান্না ও সালওয়া খেতে অনাগ্রহ প্রকাশ, সম্পদের লোভে একজন আরেকজনকে হত্যা ইত্যাদি অপকর্মের কথা আলোচিত হয়েছে। যে ঘটনার কারণে সুরা বাকারাকে বাকারা নামকরণ করা হয়েছে, সেটিও এখানে আলোচনা করা হয়েছে। 

একটি খুন ও গাভি নিয়ে বনি ইসরাইলের বাড়াবাড়ি
বনি ইসরাইলের এক ব্যক্তি খুন হলে মুসা (আ.)-এর কাছে বিচার আসে। আল্লাহর নির্দেশে মুসা (আ.) তাদের একটি গাভি জবাই করে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনের আদেশ দেন। তবে তারা গাভির বৈশিষ্ট্য নিয়ে অহেতুক ও অসাড় প্রশ্ন করতে থাকে এবং আল্লাহ গাভির বৈশিষ্ট্য বলতে থাকেন। ফলে এত নিখুঁত বৈশিষ্ট্যের গাভি পাওয়া তাদের জন্য মুশকিল হয়ে গেল। 

এই ঘটনা সম্পর্কে তাফসির ইবনে কাসিরে বলা হয়েছে, ‘কোরবানি করার জন্য গাভি সম্পর্কে এত বিবরণ গ্রহণ করা সত্ত্বেও ইহুদিদের গাভি কোরবানি করার কোনো প্রকার ইচ্ছা ছিল না। কোরআনের এই অংশে ইহুদিদের তাদের আচরণের জন্য সমালোচনা করা হয়েছে।  কেননা তাদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল তাদের অহেতুক একগুঁয়েমি ও অবাধ্যতাকে বজায় রাখা এবং এ কারণেই তারা গাভি কোরবানি করতে বিরত থাকার প্রয়াস চালিয়েছিল।’

পরে অনেক খোঁজাখুঁজির পর একটি গাভি পাওয়া গেল। গাভিটি জবাই করে মাংসের একটি অংশ দিয়ে আল্লাহর নির্দেশ মতো খুন হওয়া মানুষটির দেহে স্পর্শ করলে মৃত মানুষটি জীবিত হয় এবং খুনির নাম বলে দেয়। দেখা গেল, যে মানুষটি বিচার নিয়ে গিয়েছিলেন, তিনিই ছিলেন প্রকৃত খুনি। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘স্মরণ করো, তোমরা যখন এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলে এবং একে অন্যের প্রতি দোষারোপ করছিলে, তোমরা যা গোপন করছিলে আল্লাহ তা প্রকাশ করে দিলেন।’ (সুরা বাকারা: ৭২) 

এ ছাড়া পৃথিবীর প্রথম মানুষ আদম (আ.)-এর সৃষ্টি, ফেরেশতাদের সেজদা, ইবলিসের সেজদায় অস্বীকৃতি ও অহংকার, পৃথিবীতে মানুষের আবির্ভাব, ইবরাহিম (আ.)-এর কোরবানি, কাবাঘর নির্মাণ, মহানবী (সা.)-এর যুগে কিবলা পরিবর্তনের কারণ ও যৌক্তিকতা, রমজানের রোজার বিধান, হত্যার অপরাধে হত্যা ও ক্ষমার বিধান, হজ পালনের বিধিবিধান ইত্যাদি গুরুত্ব পূর্ণ বিষয় আলোচিত হয়েছে। 

লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক ও সাংবাদিক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৯ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১৮ মিনিট
ফজর০৫: ১৯ মিনিট০৬: ৩৯ মিনিট
জোহর১২: ০২ মিনিট০৩: ৪৫ মিনিট
আসর০৩: ৪৬ মিনিট০৫: ২১ মিনিট
মাগরিব০৫: ২৩ মিনিট০৬: ৪১ মিনিট
এশা০৬: ৪২ মিনিট০৫: ১৮ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মক্কা-মদিনায় এক মাসে প্রায় ৭ কোটি মুসল্লির সমাগম

ইসলাম ডেস্ক 
পবিত্র কাবা। ছবি: সংগৃহীত
পবিত্র কাবা। ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনায় অবস্থিত পবিত্র দুই মসজিদে গত এক মাসে রেকর্ডসংখ্যক মুসল্লির আগমন ঘটেছে। দুই পবিত্র মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, সদ্যসমাপ্ত জমাদিউস সানি মাসে মোট ৬ কোটি ৮৭ লাখ ৪১ হাজার ৮৫৩ জন ওমরাহ পালনকারী ও মুসল্লি মক্কার মসজিদে হারাম ও মদিনার মসজিদে নববিতে উপস্থিত হয়েছেন। এই সংখ্যা আগের মাসের তুলনায় প্রায় ২১ লাখ বেশি।

কর্তৃপক্ষের তথ্যানুযায়ী, মসজিদে হারামে প্রায় ৩ কোটি মুসল্লি ইবাদত-বন্দেগি করেছেন। এর মধ্যে ৯৪ হাজার ৭০০ জন কাবা শরিফসংলগ্ন হাতিমে কাবায় নামাজ আদায়ের সুযোগ পেয়েছেন। আর মসজিদে নববিতে ইবাদত ও জিয়ারতের জন্য গিয়েছেন ২ কোটি ৩১ লাখ মানুষ। এ ছাড়া পবিত্র রিয়াজুল জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ পেয়েছেন ১৩ লাখ মুসল্লি এবং নবী করিম (সা.) এবং দুই খলিফার রওজা জিয়ারত করেছেন ২৩ লাখ মানুষ।

সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, শুধু জমাদিউস সানি মাসেই দেশি-বিদেশি মিলিয়ে ১ কোটি ১৯ লাখের বেশি মানুষ ওমরাহ পালন করেছেন। এর মধ্যে বিদেশ থেকে আগত ওমরাহ যাত্রীর সংখ্যা ছিল ১৭ লাখের বেশি। উন্নত ডিজিটাল সেবা, আধুনিক লজিস্টিক ব্যবস্থাপনা এবং ওয়ান স্টপ সার্ভিস সহজলভ্য হওয়ায় ওমরাহ পালনকারীর সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মুসল্লিদের এই ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি সৌদি আরবের ‘ভিশন ২০৩০’ বাস্তবায়নেরই একটি অংশ। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুসলমানদের জন্য হজ, ওমরাহ ও জিয়ারতপ্রক্রিয়াকে আরও নিরাপদ এবং সহজ করতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে সৌদি সরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের সতর্কবার্তা

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৬
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

পরকালীন জীবনে সফল হতে আল্লাহর হুকুম পালনের পাশাপাশি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাহ ও আদর্শ অনুসরণ করা অপরিহার্য। পরকাল এক ধ্রুব সত্য; প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করে এই জগতে প্রবেশ করতে হবে। কিয়ামতের কঠিন ময়দানে হাশর-নশর শেষে মানুষের চিরস্থায়ী ঠিকানা নির্ধারণ করা হবে। সেদিন কেউ কারও উপকারে আসবে না, এমনকি বাবা-মা বা সন্তান-সন্ততির কথাও কারও স্মরণে থাকবে না। প্রত্যেকেই ‘ইয়া নাফসি, ইয়া নাফসি’ (হায় আমার কী হবে) বলে আর্তনাদ করতে থাকবে।

পবিত্র কোরআনে সেই বিভীষিকাময় দিনের বর্ণনা দিয়ে ইরশাদ হয়েছে, ‘সেদিন মানুষ পালিয়ে যাবে তার ভাই, মা, বাবা, স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি থেকে। সেদিন তাদের প্রত্যেকেই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। সেদিন কিছু চেহারা হবে উজ্জ্বল, সহাস্য ও প্রফুল্ল। আর কিছু চেহারা হবে ধূলিমলিন ও অন্ধকারাচ্ছন্ন।’ (সুরা আবাসা: ৩৪-৪০)

রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর উম্মতকে জাহান্নাম থেকে বাঁচানোর জন্য বিভিন্ন সতর্কবাণী দিয়েছেন। সহিহ্ মুসলিমের এক হাদিসে পাঁচ শ্রেণির জাহান্নামির কথা উল্লেখ করা হয়েছে: ১. বিবেচনাহীন ব্যক্তি: এমন দুর্বল মানুষ যার ভালো-মন্দের পার্থক্য করার বুদ্ধি নেই এবং নিজের পরিবারের উন্নতির ফিকির না করে অন্যের তাঁবেদারি করে। ২. লোভী খিয়ানতকারী: যে অতি সামান্য বিষয়েও খিয়ানত বা বিশ্বাসভঙ্গ করে এবং যার লোভ সবার কাছে প্রকাশ্য। ৩. প্রতারক: যে ব্যক্তি পরিবার ও ধন-সম্পদের বিষয়ে মানুষের সঙ্গে সকাল-সন্ধ্যা প্রতারণা বা ধোঁকাবাজি করে। ৪. কৃপণ: যে আল্লাহর পথে ব্যয় না করে সম্পদ কুক্ষিগত করে রাখে। ৫. মিথ্যুক ও অশ্লীলভাষী: যারা সর্বদা মিথ্যা কথা বলে এবং অশ্লীল কথাবার্তা বা গালাগালিতে লিপ্ত থাকে।

পরকালের চিরস্থায়ী জীবনে মুক্তি পেতে হলে দুনিয়ার এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে লোভ, প্রতারণা ও পাপাচার ত্যাগ করে মহান আল্লাহর প্রতি অনুগত হওয়া এবং নবীজি (সা.)-এর দেখানো পথে চলা একান্ত জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৮ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১৮ মিনিট
ফজর০৫: ১৯ মিনিট০৬: ৩৯ মিনিট
জোহর১২: ০১ মিনিট০৩: ৪৪ মিনিট
আসর০৩: ৪৫ মিনিট০৫: ২০ মিনিট
মাগরিব০৫: ২২ মিনিট০৬: ৪১ মিনিট
এশা০৬: ৪২ মিনিট০৫: ১৮ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত