Ajker Patrika

মোদির সঙ্গে রাহুলের ৮৮ মিনিটের বৈঠক, কী আলোচনা হলো

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দীর্ঘ ৮৮ মিনিট বৈঠক করেছেন রাহুল গান্ধী। ছবি: সংগৃহীত
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দীর্ঘ ৮৮ মিনিট বৈঠক করেছেন রাহুল গান্ধী। ছবি: সংগৃহীত

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধী এক বিরল বৈঠক করেছেন গতকাল বুধবার। ৮৮ মিনিটের এই বৈঠক ভারতীয় পার্লামেন্টের অলিন্দে জল্পনার পারদ চড়িয়ে দিয়েছে। বর্তমানে শীতকালীন অধিবেশন চলছে। প্রধান তথ্য কমিশনারের পদের প্রার্থী নিয়ে দুই নেতার বসার কথা জানা ছিল। তবে এত দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা হবে, এমনটা কেউ ভাবেননি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, নিয়ম মোতাবেক—তথ্য কমিশন, নির্বাচন কমিশন ও ভিজিল্যান্স বিভাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ পদগুলোতে নিয়োগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী মনোনীত একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিরোধী দলনেতা।

এবারের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত মন্ত্রী ছিলেন অমিত শাহ। সূত্রের খবর, রাহুল গান্ধী দুপুর ১টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছান এবং বৈঠক শুরু হয় ১টা ৭ মিনিটে। কিন্তু ঘড়ির কাঁটা যত গড়িয়েছে, ততই ভ্রু কুঁচকেছে এবং এমপিরা বৈঠকের অন্যান্য সম্ভাব্য আলোচ্যসূচি নিয়ে আলোচনা শুরু করেন।

৮৮ মিনিট পর রাহুল গান্ধী বেরিয়ে এলে জানা যায়, আলোচনা শুধু প্রধান তথ্য কমিশনারের নিয়োগ নিয়ে নয়, বরং আটজন তথ্য কমিশনার ও একজন ভিজিল্যান্স কমিশনারের নিয়োগ নিয়েও হয়েছিল। সূত্রের খবর, রাহুল সব কটি নিয়োগের প্রস্তাব নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন এবং লিখিতভাবে তাঁর অসন্তোষ পেশ করেছেন। তাঁর এই ভিন্নমত প্রকাশের মূল কারণ হলো—প্রতিনিধিত্ব নিয়ে উদ্বেগ এবং বাছাই-মানদণ্ড নিয়ে ভিন্নমত।

এ ধরনের বৈঠকে বিরোধী দলনেতার পক্ষ থেকে আপত্তি আসা স্বাভাবিক বলেই মনে করা হয়। সূত্রগুলো জানিয়েছে, এর আগে যখন মল্লিকার্জুন খাড়গে বা রাহুল গান্ধী বিরোধী প্রতিনিধি হিসেবে এই বৈঠকগুলোতে উপস্থিত থেকেছেন, তখন তাঁরা আপত্তি জানিয়েছিলেন।

বিরোধী দলনেতা যুক্তি দিয়ে জানিয়েছেন বলে জানা গেছে, ভারতের জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশ যে সব সম্প্রদায়ের, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি তদারকির দায়িত্বে থাকা এই পদগুলোর প্রস্তাবিত তালিকায় তারা ‘কার্যত অনুপস্থিত।’ কংগ্রেস সূত্রের খবর, রাহুল গান্ধী বৈঠকটিকে কাজে লাগিয়েছেন সেই শর্টলিস্টের বিরুদ্ধে তীব্র আপত্তি জানাতে, যেখানে দলিত, আদিবাসী, ওবিসি/ইবিসি ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকে আসা প্রার্থীদের ‘প্রায়-মোট অনুপস্থিতি’ রয়েছে।

সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, রাহুল গান্ধী আনুষ্ঠানিকভাবে এই পদগুলোর জন্য আবেদনকারী প্রার্থীদের জাতিগত তথ্য চেয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, আবেদনকারী গোষ্ঠীর ৭ শতাংশেরও কম মানুষ ‘বহুজন সম্প্রদায়’ থেকে এসেছেন। জানা গেছে, তিনি কমিটিকে বলেছেন, অংশগ্রহণের এই মাত্রা নাগরিকদের তথ্য পাওয়ার অধিকার সুরক্ষার দায়িত্বে থাকা সংস্থাগুলোর অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে গভীর প্রশ্ন তুলছে। কংগ্রেস সূত্র জানিয়েছে, জবাবদিহির কাঠামো গঠনকারী তদারকি সংস্থাগুলোতে প্রান্তিক গোষ্ঠীগুলোর প্রবেশকে সীমাবদ্ধ করা কাঠামোগত বাধাগুলো নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন।

যদিও সরকার আবেদনকারী বা মনোনীত প্রার্থীদের জাতিগত বিভাজন নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি, তবে কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, নির্বাচন প্রক্রিয়াটি একটি ‘উন্নত পর্যায়ে’ রয়েছে।

এদিকে, পার্লামেন্টের অলিন্দে ওই ৮৮ মিনিটের বৈঠকে কী হলো, তা নিয়ে জোর আলোচনা চলছে। বর্তমানে কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশন বা সিআইসি-তে প্রধান তথ্য কমিশনারসহ মোট ৮টি পদ শূন্য রয়েছে। এই কর্মকর্তারা আরটিআই আবেদনকারীদের দায়ের করা অভিযোগ ও আপিলগুলোর নিষ্পত্তি করেন এবং তথ্য প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেন।

গত সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত হীরালাল সামারিয়া ভারতের প্রধান তথ্য কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৩ সেপ্টেম্বর তাঁর অবসরের পর থেকে এই পদটি শূন্য। বর্তমানে কেবল দুজন তথ্য কমিশনার—আনন্দী রামালিঙ্গম ও বিনোদ কুমার তিওয়ারি—কাজ সামলাচ্ছেন। সিআইসি-এর ওয়েবসাইট অনুযায়ী, তাদের কাছে অমীমাংসিত মামলার সংখ্যা ৩০ হাজার ৮৩৮।

চূড়ান্ত নিয়োগ শিগগিরই ঘোষণা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তথ্য অধিকার আইনের ১২ (৩) ধারা অনুসারে, প্রধানমন্ত্রী হলেন নির্বাচন কমিটির সভাপতি। প্রধান তথ্য কমিশনার ও তথ্য কমিশনারদের বাছাই এবং নাম সুপারিশ করার জন্য এই কমিটিতে আরও থাকেন বিরোধী দলনেতা এবং প্রধানমন্ত্রী মনোনীত একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ধনীদের মার্কিন নাগরিকত্ব দেবে ‘ট্রাম্প গোল্ড কার্ড’, মূল্য ১০ লাখ ডলার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
কমপক্ষে ১০ লাখ ডলারের বিনিময়ে এই ভিসা পাবেন বিদেশি ধনীরা। ছবি: ট্রুথ সোশ্যাল
কমপক্ষে ১০ লাখ ডলারের বিনিময়ে এই ভিসা পাবেন বিদেশি ধনীরা। ছবি: ট্রুথ সোশ্যাল

অবশেষে ধনী বিদেশিদের জন্য ‘গোল্ড কার্ড’ ভিসা প্রোগ্রাম চালু করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কমপক্ষে ১০ লাখ ডলারের বিনিময়ে এই দ্রুতগতির ভিসা পাবেন বিদেশিরা।

গতকাল বুধবার ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান, এই কার্ডের মাধ্যমে ‘যোগ্য ও যাচাইকৃত’ মানুষের জন্য নাগরিকত্বের সরাসরি পথ তৈরি হবে। তিনি বলেন, ‘খুবই উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্ত! আমাদের মহান আমেরিকান কোম্পানিগুলো অবশেষে তাদের অমূল্য প্রতিভা ধরে রাখতে পারবে।’

চলতি বছরের শুরুতে ‘ট্রাম্প গোল্ড কার্ড’-এর ঘোষণা দেওয়া হয়। কর্মসূচির সরকারি ওয়েবসাইট অনুযায়ী, এই ভিসা তাদের দেওয়া হবে যারা প্রমাণ করতে পারবেন যে তারা দেশটির জন্য ‘উল্লেখযোগ্য উপকার’ বয়ে আনবেন।

একদিকে এইচ-১বি ভিসার ওপর আরও কঠোর নীতিমালা আরোপ করছে ট্রাম্প প্রশাসন, অন্যদিকে অনথিভুক্ত অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। এরইমধ্যে এই গোল্ড ভিসার ঘোষণা এলো।

প্রোগ্রামটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, গোল্ড কার্ডের মাধ্যমে ‘রেকর্ড সময়’ ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের সুযোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পাওয়া যাবে। তবে এর জন্য দিতে হবে ১০ লাখ ডলার দিতে হবে, যা ওই ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য যথেষ্ট উপকারী এর প্রমাণ হিসেবে গণ্য হবে।

ওয়েবসাইট আরও জানায়, এ ক্ষেত্রে কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান কর্মী স্পনসর করলে তাদের ২০ লাখ ডলার দিতে হবে সঙ্গে অতিরিক্ত ফিও।

শিগগিরই ৫০ লাখ ডলারের বিনিময়ে ‘প্লাটিনাম’ সংস্করণও আসছে বলে জানিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। যা বিশেষ কর ছাড়ের সুবিধা দেবে।

সাইটে আরও বলা হয়েছে, আবেদনকারীর পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে সরকারকে বাড়তি ফিও দিতে হতে পারে। আবেদন পর্যালোচনার আগে সবাইকে ১৫ হাজার ডলারের অফেরতযোগ্য প্রসেসিং ফি দিতে হবে।

গত ফেব্রুয়ারিতে ঘোষণার পর থেকেই সমালোচনার মুখে পড়েছে গোল্ড কার্ড কর্মসূচিটি। কিছু ডেমোক্রেটের অভিযোগ, এটি ধনী ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দেবে, যা অন্যদের প্রতি অন্যায্য।

তখন এই ভিসাকে গ্রিন কার্ডের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন ট্রাম্প। তবে ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেন, গোল্ড কার্ড বিশেষভাবে ‘উচ্চ-স্তরের’ পেশাজীবীদের লক্ষ্য করে তৈরি। আমরা বিচক্ষণ, উৎপাদনশীল মানুষ চাই।

ট্রাম্প বলেন, ‘যারা ৫০ লাখ ডলার দিতে পারে, তারা চাকরি সৃষ্টি করবে। এটি দারুণ বিক্রি হবে। এটি একপ্রকার সস্তা সুযোগ।’

ট্রাম্প প্রশাসন এখন অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠাতে ব্যাপক সম্পদ বিনিয়োগ করেছে। এছাড়া, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ১৯টি দেশের নাগরিকদের অভিবাসন আবেদন গ্রহণ সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে মার্কিন সরকার। এমনকি আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদন নিষ্পত্তিও স্থগিত করেছে।

পাশাপাশি সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনকালে অনুমোদিত হাজার হাজার আবেদন পুনর্বিবেচনা করার ঘোষণা দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মার্কিন সামরিক বাহিনীর ব্যয়ের জন্য রেকর্ড ৯০১ বিলিয়ন ডলারের বাজেট

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ১৫
মার্কিন সামরিক বাহিনীর ব্যয়ের জন্য ৯০১ বিলিয়ন ডলারের বাজেট করেছে কংগ্রেস। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন সামরিক বাহিনীর ব্যয়ের জন্য ৯০১ বিলিয়ন ডলারের বাজেট করেছে কংগ্রেস। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস এক বিস্তৃত প্রতিরক্ষানীতি বিল পাস করেছে। এই বিলে বার্ষিক সামরিক ব্যয়ের জন্য রেকর্ড ৯০১ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ অনুমোদন করা হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার মার্কিন কংগ্রেসে ন্যাশনাল ডিফেন্স অথরাইজেশন অ্যাক্ট (এনডিএএ) নামের এই বিলের পক্ষে ৩১২ জন ও বিপক্ষে ১১২ জন আইনপ্রণেতা ভোট দেন। বিলটি এখন বিবেচনার জন্য উচ্চকক্ষ সিনেটে পাঠানো হয়েছে এবং আশা করা হচ্ছে, আগামী সপ্তাহে সেটিও পাস হয়ে যাবে।

২০২৬ অর্থবছরের জন্য এই ৯০১ বিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা ব্যয়। চলতি বছরের মে মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যা অনুরোধ করেছিলেন, তারচেয়ে ৮ বিলিয়ন ডলার বেশি। গত রোববার উন্মোচিত ৩ হাজার ৮৬ পাতার সুবিশাল এই বিলে এনডিএএর গতানুগতিক বিধানগুলো অন্তর্ভুক্ত আছে। যেমন চীন ও রাশিয়ার মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে সামরিকভাবে প্রতিযোগিতা করার জন্য প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম অধিগ্রহণ-সংক্রান্ত ব্যবস্থা। এতে মার্কিন সেনাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের জন্যও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে প্রায় ৪ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি এবং সামরিক ঘাঁটির আবাসনের উন্নতি।

আইনপ্রণেতারা আরও কয়েকটি বিধান জোর করে বিলটিতে যুক্ত করেছেন, যা রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে ইউরোপের সুরক্ষায় ওয়াশিংটনের প্রতিশ্রুতিকে দৃঢ় করবে। এর মধ্যে রয়েছে রাশিয়াকে প্রতিহত করতে ইউক্রেনকে আগামী দুই বছর ধরে প্রতিবছর ৪০০ মিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা দেওয়া।

অন্য একটি ব্যবস্থার ফলে পেন্টাগনকে ন্যাটো মিত্রদের সঙ্গে পরামর্শ না করে ইউরোপে কমপক্ষে ৭৬ হাজার সেনা ও গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন রাখতে হবে। তবে এ বছরের বিলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অপছন্দের কয়েকটি কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে বৈচিত্র্য, সমতা ও অন্তর্ভুক্তি এবং জলবায়ু পরিবর্তন-সংক্রান্ত উদ্যোগগুলোতে প্রায় ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের তহবিল কেটে নেওয়া হয়েছে।

আইনপ্রণেতারা ছুটি কাটাতে যাওয়ার আগেই বিলটি সিনেটে পাস করানোর লক্ষ্য নিয়েছেন। হোয়াইট হাউসে পৌঁছালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাতে স্বাক্ষর করে আইনে পরিণত করবেন। এনডিএএ হলো এমন কয়েকটি প্রধান আইনের অন্যতম, যা সাধারণত দুই দলের ব্যাপক সমর্থন পায় এবং ১৯৬১ সালে এটি প্রণয়নের পর থেকে প্রতিবছরই কংগ্রেসে পাস হয়ে আসছে।

তবে এই বছর বিলটি পাসের প্রক্রিয়া স্বাভাবিকের চেয়ে বেশ কঠিন ছিল। কারণ, রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেস ও ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে মার্কিন সামরিক বাহিনীর ব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্রমবর্ধমান মতবিরোধের সৃষ্টি হয়েছিল। ভোটের আগে উভয় দলের সদস্যরাই তাঁদের সতীর্থ আইনপ্রণেতাদের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা আইনটিকে সমর্থন করার জন্য অনুরোধ জানান, যদিও তাঁদের বিলের কিছু কিছু বিষয়ে আপত্তি ছিল।

ওয়াশিংটন ডিসি থেকে আল–জাজিরার সংবাদদাতা মাইক হানা জানিয়েছেন, ‘কিছু উল্লেখযোগ্য ভিন্নমত’ থাকা সত্ত্বেও বিলটি ‘খুব সহজেই পাস হয়ে গিয়েছে’। এনিডিএএর মধ্যে প্রতিরক্ষা বিভাগের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপও লুকিয়ে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো—ক্যারিবীয় সাগর ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কথিত মাদক পাচারকারী জাহাজে মার্কিন সামরিক বাহিনীর চালানো প্রাণঘাতী হামলাগুলো নিয়ে আরও বেশি স্বচ্ছতার দাবি।

হানা বলেন, বিলটির ‘খুব লক্ষণীয়’ একটি অংশ হলো, মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথের ভ্রমণ তহবিলের ২৫ শতাংশ কেটে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। তিনি যদি ক্যারিবীয় সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন হামলার বিষয়ে আরও তথ্য প্রকাশ না করেন, তাহলে এই অর্থ কেটে নেওয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে আইনপ্রণেতাদের কাছে হামলার সম্পাদনাবিহীন ভিডিও এবং আক্রমণ চালানোর আদেশগুলো পর্যালোচনা করার সুযোগ দেওয়া।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসন সেপ্টেম্বরের গোড়ার দিকে প্রথম হামলা ঘোষণা করার পর থেকে ২২টি পরিচিত হামলায় কমপক্ষে ৮৬ জন মানুষ নিহত হয়েছেন। প্রেসিডেন্ট এই হামলাগুলোকে মাদকবিরোধী প্রয়োজনীয় প্রচেষ্টা হিসেবে তুলে ধরলেও আন্তর্জাতিক ও মার্কিন আইন উভয় অনুসারেই এগুলো অবৈধ বলে ব্যাপকভাবে বিবেচিত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যুক্তরাষ্ট্র থেকে এফ–১৬ যুদ্ধবিমানের উন্নত প্রযুক্তি কিনল পাকিস্তান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পাকিস্তান বিমান বাহিনীর এফ–১৬ যুদ্ধবিমান। ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তান বিমান বাহিনীর এফ–১৬ যুদ্ধবিমান। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ৬৮৬ মিলিয়ন ডলার বা ৬ কোটি ৮৬ লাখ ডলার মূল্যের উন্নত প্রযুক্তি ও সহায়তা প্যাকেজ কিনেছে পাকিস্তান। গত ৮ ডিসেম্বর মার্কিন প্রতিরক্ষা নিরাপত্তা সহযোগিতা সংস্থা (ডিএসসিএ) মার্কিন কংগ্রেসকে এক চিঠিতে বিষয়টি জানিয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, ডিএসসিএ পাকিস্তানের এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের জন্য ৬ কোটি ৮৬ লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের উন্নত প্রযুক্তি ও সাহায্যের অনুমোদন দিয়েছে।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই প্যাকেজে লিংক-১৬ ব্যবস্থা, সাংকেতিক সরঞ্জাম, বিমান চালন বিদ্যার আধুনিকীকরণ, প্রশিক্ষণ, এবং সামগ্রিক লজিস্টিক সাহায্য অন্তর্ভুক্ত আছে। চিঠিটিতে বিক্রির কারণ স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, এটি ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীতির সঙ্গে জাতীয় সুরক্ষার লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হবে। কারণ, এর মাধ্যমে পাকিস্তান চলমান সন্ত্রাস দমন প্রচেষ্টায় এবং ভবিষ্যতের যেকোনো জরুরি অপারেশনের জন্য মার্কিন ও সহযোগী বাহিনীর সঙ্গে আন্তঃপরিচালন ক্ষমতা বজায় রাখতে সক্ষম হবে।’

প্রস্তাবিত এই বিক্রির লক্ষ্য হলো পাকিস্তানের এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের বহরকে আধুনিক করে তোলা এবং সেগুলোর উড্ডয়ন সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করা। চিঠিতে বলা হয়েছে, এটি ‘পাকিস্তানের ব্লক-৫২ এবং মিড লাইফ আপগ্রেড এফ-১৬ বহরকে আধুনিক ও সংস্কার করে বর্তমান ও ভবিষ্যতের হুমকি মোকাবিলায় সক্ষমতা বজায় রাখবে।’

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এই আধুনিকীকরণ ‘যুদ্ধকালীন অপারেশন, মহড়া, এবং প্রশিক্ষণে পাকিস্তান বিমানবাহিনী ও মার্কিন বিমানবাহিনীর মধ্যে আরও নির্বিঘ্ন সমন্বয় ও আন্তঃপরিচালন ক্ষমতা দেবে। আর এই সংস্কারের ফলে বিমানগুলির আয়ু ২০৪০ সাল পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব হবে, এবং উড্ডয়ন সুরক্ষার গুরুতর উদ্বেগগুলিও দূর হবে।’

চিঠিতে পাকিস্তানের এই প্রযুক্তি গ্রহণের প্রস্তুতির ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, দেশটি ‘তাদের সামরিক বাহিনীকে টিকিয়ে রাখার অঙ্গীকার দেখিয়েছে এবং এসব সামগ্রী ও পরিষেবা তাদের সশস্ত্র বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করতে কোনো অসুবিধা হবে না।’ আঞ্চলিক উদ্বেগ নিরসন করে সংস্থাটি আরও দাবি করেছে, ‘এই সরঞ্জাম ও সাহায্যের প্রস্তাবিত বিক্রি অঞ্চলের মৌলিক সামরিক ভারসাম্যের কোনো পরিবর্তন করবে না।’

লকহিড মার্টিন কোম্পানি হবে এই বিক্রির প্রধান ঠিকাদার। মার্কিন প্রতিরক্ষা সংস্থাটি উল্লেখ করেছে, ‘এই প্রস্তাবিত বিক্রির বাস্তবায়নের জন্য পাকিস্তানে অতিরিক্ত মার্কিন সরকারি বা ঠিকাদার প্রতিনিধি নিয়োগের প্রয়োজন হবে না’ এবং ‘এই বিক্রির ফলে মার্কিন প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে না।’

এই ৬ কোটি ৮৬ লাখ ডলারের মধ্যে প্রধান প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের মূল্য ৩৭ লাখ ডলার এবং অন্যান্য সামগ্রীর মূল্য ৬ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। প্রধান প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে ৯২টি লিংক-১৬ ডেটা লিংক ব্যবস্থা এবং ছয়টি স্ট্যাটিক মার্ক-৮২ ৫০০ পাউন্ড সাধারণ উদ্দেশ্যের বোমার কাঠামো। তবে এই কাঠামোগুলোতে কোনো বিস্ফোরক থাকবে না, কেবল অস্ত্র সংহতিকরণ পরীক্ষার জন্য ব্যবহৃত হবে।

লিংক-১৬ হলো একটি উন্নত কমান্ড, নিয়ন্ত্রণ, যোগাযোগ ও নজরদারি ব্যবস্থা। এটি সুরক্ষিত, রিয়েল টাইম যোগাযোগ নেটওয়ার্ক যা সহযোগী বাহিনীর মধ্যে কৌশলগত তথ্য আদান-প্রদান করে এবং মার্কিন ও সহযোগী ন্যাটো বাহিনী এটি ব্যবহার করে। শত্রুপক্ষের আকাশ ও ভূমির ইলেকট্রনিক জ্যামিং থেকেও এই ব্যবস্থা সুরক্ষিত।

চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘এটি যুদ্ধরত সেনাকে নজরদারি, শনাক্তকরণ, বিমান নিয়ন্ত্রণ, অস্ত্র ব্যবহারের সমন্বয় এবং সমস্ত পরিষেবা ও সহযোগী বাহিনীর দিকনির্দেশনার মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রেক্ষাপট-সংক্রান্ত কাজগুলি সরবরাহ করে।’

চুক্তির বাকি সরঞ্জামগুলোর মধ্যে রয়েছে এএন/এপিকিউ–১০সি সিম্পল কী লোডার্স এবং এএন/এপিকিউএক্স–১২৬ অ্যাডভান্সড আইডেনটিফিকেশন ফ্রেন্ড অর ফো ব্যবস্থা, যা শত্রু ও সহযোগী বিমান শনাক্ত করতে ব্যবহৃত হয়। এতে অপারেশনাল ফ্লাইট প্রোগ্রাম ও বাধ্যতামূলক বিমান চালন বিদ্যার আধুনিকীকরণের জন্য হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের পরিবর্তন, সেই সঙ্গে কেওয়াই–৫৮ এম এবং কেআইভি–৭৮ ক্রিপ্টোগ্রাফিক অ্যাপ্লিক অন্তর্ভুক্ত। এগুলো ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি অনুমোদিত মডিউল যা সামরিক বিমান ও অন্যান্য কৌশলগত ব্যবস্থায় সুরক্ষিত যোগাযোগ ও শনাক্তকরণের জন্য ব্যবহার করা হয়।

সরঞ্জামগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে—অতিরিক্ত সুরক্ষিত যোগাযোগ, নিখুঁত নেভিগেশন ও সাংকেতিক ডিভাইস, জয়েন্ট মিশন প্ল্যানিং সিস্টেমস ও সমর্থন, কমন অ্যামিউনিশনস বিল্ট-ইন-টেস্ট রিপ্রোগ্রামিং ইকুইপমেন্ট এবং এডিইউ–৯৮১ ক্ষেপণাস্ত্র অ্যাডাপ্টার ইউনিট।

এ ছাড়া, অন্যান্য অস্ত্র সংহতকরণ, পরীক্ষা ও সাপোর্ট সরঞ্জাম, খুচরা ও মেরামত যন্ত্রাংশ, সফটওয়্যার সরবরাহ ও সমর্থন, প্রকাশনা ও প্রযুক্তিগত ডকুমেন্টেশন, ফুল মোশন সিমুলেটর, কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং প্রশিক্ষণ সরঞ্জাম এই প্যাকেজের আওতায় রয়েছে। এই প্যাকেজের মাধ্যমে পাকিস্তান মার্কিন সরকার ও ঠিকাদারের প্রকৌশল, প্রযুক্তিগত, এবং লজিস্টিক সহায়তা পরিষেবা, গবেষণা ও জরিপ, এবং লজিস্টিক ও প্রোগ্রাম সমর্থনের অন্যান্য সংশ্লিষ্ট উপাদানও পাবে।

২০২১ সালে সম্পর্কের টানাপোড়েনের মাঝে পাকিস্তান তাদের এফ-১৬ বহরের আধুনিকীকরণের জন্য অনুরোধ করেছিল, কিন্তু ওয়াশিংটন এর জবাব দিতে দেরি করে। ২০২৫-এর মে মাসের বিমান যুদ্ধে ভারতীর বহরের যথেষ্ট ক্ষতি ঘটিয়ে অন্যান্য প্ল্যাটফর্মের সক্ষমতা প্রমাণিত হওয়ায় দেশটি এখন এফ-১৬-এর ওপর কম নির্ভরশীল। এক কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, ‘পাকিস্তান এখনো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানাচ্ছে, কারণ এটি তাদের এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের মেয়াদ ২০৪০ সাল পর্যন্ত বাড়িয়ে দেবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইউক্রেনের হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে মরল প্রথম ব্রিটিশ সেনা, লন্ডনের স্বীকারোক্তি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ক্যাপ: ইউক্রেনের তৃতীয় স্বতন্ত্র আক্রমণ ব্রিগেডের সৈন্যদের উদ্যোগে আয়োজিত এক সামরিক প্রশিক্ষণে অংশ নিতে বেসামরিক মানুষ সামরিক পোশাক পরে কিয়েভ অঞ্চলে জমায়েত হন। ছবিটি চলতি বছরের ১২ জুলাই জুলাই তোলা। ছবি: এএফপি
ক্যাপ: ইউক্রেনের তৃতীয় স্বতন্ত্র আক্রমণ ব্রিগেডের সৈন্যদের উদ্যোগে আয়োজিত এক সামরিক প্রশিক্ষণে অংশ নিতে বেসামরিক মানুষ সামরিক পোশাক পরে কিয়েভ অঞ্চলে জমায়েত হন। ছবিটি চলতি বছরের ১২ জুলাই জুলাই তোলা। ছবি: এএফপি

ইউক্রেনে একটি নতুন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পরীক্ষা পর্যবেক্ষণ করার সময় যুক্তরাজ্যের সশস্ত্র বাহিনীর এক সদস্য মারা গেছেন। গত মঙ্গলবার ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই ঘোষণা দিয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইউক্রেনীয় বাহিনী যখন ফ্রন্টলাইন থেকে দূরে একটি নতুন প্রতিরক্ষা সক্ষমতার পরীক্ষা করছিল, তখন একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় তিনি আহত হন।’ এতে আরও বলা হয়েছে, ওই ব্যক্তির পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে এবং এই ঘটনার ফলে অন্য কোনো ব্রিটিশ হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেছেন, তিনি ‘আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, যিনি আজ দুঃখজনকভাবে জীবন হারিয়েছেন, তাঁর পরিবারের প্রতি গভীরতম সমবেদনা ও শোক জানাচ্ছেন।’ এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘তাঁদের সেবা এবং আত্মত্যাগ কখনও ভুলে যাওয়া হবে না।’

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জন হিলি বলেছেন, তিনি ‘ইউক্রেনে যুক্তরাজ্যের একজন সেনা সদস্যের মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত। প্রিয়জনকে হারানোর এই দুঃসময়ে আমার সমবেদনা তাদের পরিবার, বন্ধু এবং সহকর্মীদের সাথে রয়েছে।’

ওই ব্যক্তি কোন বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন বা তাঁর ভূমিকা কী ছিল তা জানা যায়নি। বিবিসি জানতে পেরেছে, ঘটনাটি শত্রুপক্ষের গোলাগুলির কারণে ঘটেনি বলেই মনে করা হচ্ছে। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য করবে না বলে জানিয়েছে।

ইউক্রেনে কতজন ব্রিটিশ সেবা সদস্য আছে তা ব্রিটিশ সরকার কখনও নিশ্চিত করেনি। তবে এর আগে স্বীকার করেছে যে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীকে সহায়তা করতে এবং কূটনৈতিক কর্মীদের নিরাপত্তা দিতে অল্প সংখ্যক সদস্য সেখানে রয়েছে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া আক্রমণ শুরু করার পর থেকে ইউক্রেনে যুক্তরাজ্যের কোনো সার্ভিস সদস্যের এটিই প্রথম মৃত্যু। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের প্রতিরক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান, তানমনজিৎ সিং ধেসি বলেন, ‘এই মর্মান্তিক ঘটনাটি আমাদের দেশের সেবায় নিয়োজিতদের মুখোমুখি হওয়া ঝুঁকির একটি স্পষ্ট স্মারক, এমনকি যখন তারা ফ্রন্টলাইন থেকে দূরে কাজ করেন। আমি তাদের পেশাদারিত্ব ও প্রতিশ্রুতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।’

ছায়া প্রতিরক্ষা সচিব জেমস কার্টলিডজ বলেন, ‘ইউক্রেনে যুক্তরাজ্যের সশস্ত্র বাহিনীর একজন সদস্যের মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর শুনে আমি গভীরভাবে দুঃখিত। এই কঠিন সময়ে তার পরিবার এবং বন্ধুদের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা।’

তিন বছরেরও বেশি আগে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া পূর্ণমাত্রায় আক্রমণ শুরু করার পর থেকে ইউক্রেনে লড়াই চলছে। যুদ্ধ শেষ করার জন্য আলোচনার প্রচেষ্টা সম্প্রতি গতি পেয়েছে, যার মধ্যে সোমবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ডাউনিং স্ট্রিট সফরও ছিল। সেখানে কিয়ার স্টারমার ’একটি ন্যায্য ও দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতি’ অর্জনে কিয়েভের প্রতি যুক্তরাজ্যের সমর্থনের অঙ্গীকার করেন।

এই বৈঠকটি ছিল জেলেনস্কির একটি প্রচেষ্টার অংশ, যাতে যুক্তরাষ্ট্র কিয়েভের পক্ষ থেকে বড় ছাড়সহ একটি শান্তি চুক্তিতে সমর্থন না দেয়। মিত্ররা আশঙ্কা করছে, এই ধরনের চুক্তি ইউক্রেনকে ভবিষ্যতে আক্রমণের ঝুঁকিতে ফেলে দেবে এবং ইউক্রেন বিকল্প প্রস্তাব হোয়াইট হাউসে পেশ করতে চলেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত