আজকের পত্রিকা ডেস্ক

জেন-জিদের তুমুল বিক্ষোভের মুখে মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় নেপালের সরকারের পতন হয়। একে ইতিহাসের অন্যতম বিজয় হিসেবেই দেখছে দেশটির জনগণ। তবে, এই বিজয়ের জন্য তাদের চুকাতে হয়েছে চরম মূল্য। আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক তনুজা পান্ডে বলেন, ‘আমরা গর্বিত। তবে, একই সঙ্গে প্রচণ্ড রাগ-দুঃখ-অনুশোচনাও কাজ করছে।’
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই আন্দোলনে দেশটিতে ৭২ জন নিহত হয়েছে। দেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে একে ভয়াবহতম সহিংসতা হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। ওই আন্দোলনে সরকারি ভবন, রাজনৈতিক নেতাদের বাড়িঘর, এমনকি ২০২৪ সালের জুলাইয়ে খোলা হিলটন হোটেলের মতো বিলাসবহুল স্থাপনাও পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া, দেশজুড়ে বিভিন্ন স্থানে দেদারসে চলে ভাঙচুর-লুটতরাজ। উত্তেজিত জনতার দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে এখনো মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন এক সাবেক প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী।
আন্তর্জাতিক সংকট সংস্থার জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা আশীষ প্রধান বলেন, এ বিক্ষোভ ছিল ‘দশকের পর দশক ধরে চলা দুর্নীতি আর রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহারের দায়ে রাজনৈতিক শ্রেণিকে সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান।’ তবে তিনি সতর্ক করেন, সরকারি সেবার ক্ষয়ক্ষতি ২০১৫ সালের ভূমিকম্পের মতো ভয়াবহ হতে পারে। ওই দুর্যোগে প্রায় ৯ হাজার মানুষের প্রাণ গিয়েছিল। ধ্বংসযজ্ঞ শুধু রাজধানী কাঠমান্ডুতেই সীমিত ছিল না, দেশজুড়ে অন্তত ৩০০ স্থানীয় সরকারি কার্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নেপালি সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্টের হিসেবে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৩ ট্রিলিয়ন নেপালি রুপি (২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার), যা দেশটির মোট জিডিপির প্রায় অর্ধেক। এমনকি কাঠমান্ডু পোস্টের অফিসও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়।
৮ সেপ্টেম্বরের সেই রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভের দুই দিন আগে ২৪ বছর বয়সী পরিবেশ কর্মী পান্ডে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চুরে পর্বত এলাকায় এক খনির দৃশ্য দেখিয়ে ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি লিখেন, ‘নেপালের সম্পদ জনগণের, রাজনীতিবিদদের প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির নয়।’ দুর্নীতি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহারের বিরুদ্ধে নামতে তরুণদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই আন্দোলন মূলত নেতৃত্বহীন ছিল। সরকার যখন দেশে ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধের ঘোষণা দেয়, তখন ক্ষোভ তীব্র হয়ে ওঠে। সরকারের যুক্তি ছিল, এসব প্ল্যাটফর্ম স্থানীয়ভাবে নিবন্ধন করেনি। এরই মধ্যে মাসের পর মাস ধরে ক্ষোভ জমে উঠছিল তথাকথিত ‘নেপো বেবি’দের বিরুদ্ধে। নেপো বেবি বলতে এখানে প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের সন্তানদের বোঝানো হচ্ছে। তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের বিলাসবহুল জীবন-যাপন ও সম্পদের প্রদর্শনী চালিয়ে যাচ্ছিল।
সবচেয়ে আলোচিত ছবিগুলোর একটি ছিল প্রাদেশিক মন্ত্রীর ছেলে সৌগত থাপার, যিনি লুই ভিতো, গুচি ও কার্টিয়ারের মতো বিলাসবহুল ব্র্যান্ডের বাক্স দিয়ে সাজানো এক ক্রিসমাস ট্রির পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ক্ষুব্ধ জনগণের ভাষ্য—দেশের জনগণ যেখানে মৌলিক চাহিদার জোগান নিশ্চিত করতে গিয়েই হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে রাজনীতিবিদদের সন্তানেরা এত বিলাসবহুল জীবন কীভাবে যাপন করছে। সমালোচনার জবাবে সৌগত বলেন, ‘এটি অন্যায্য ও ভুল ব্যাখ্যা’। তার দাবি, তার বাবা একজন সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে যা আয় করেছেন তার প্রতিটি পয়সাই তিনি জনগণের কাজেই ব্যয় করেছেন।
নেপালকে তরুণ গণতন্ত্র বলা হয়, কারণ দেশটি খুব বেশি দিন হয়নি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এসেছে। দীর্ঘ রাজতন্ত্র ও এক দশকব্যাপী মাওবাদী গৃহযুদ্ধের পর ২০০৮ সালে রাজা উৎখাত হয় এবং নেপাল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়। সেই যুদ্ধে ১৭ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান। কিন্তু প্রতিশ্রুত স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি আজও অধরা। গত ১৭ বছরে নেপাল ১৪টি সরকার দেখেছে। কোনো সরকারই পূর্ণ পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ করতে পারেননি। কমিউনিস্ট ও নেপালি কংগ্রেস দল পালাক্রমে ক্ষমতায় এসেছে। একই নেতা, যেমন কেপি শর্মা ওলি, একাধিকবার ক্ষমতায় ফিরে এসেছেন।
দেশটির মাথাপিছু জিডিপি এখনো দেড় হাজার ডলারের নিচে, যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। প্রায় ১৪ শতাংশ নেপালি বিদেশে কাজ করেন এবং প্রতি তিনটি পরিবারের একটিতে রেমিট্যান্স আসে। পান্ডে পূর্ব নেপালের এক মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এসেছেন। তাঁর বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি শিক্ষক। তিন বছর আগে তাঁর মস্তিষ্কে টিউমার ধরা পড়ে। চিকিৎসার খরচ জোগাতে গিয়ে পান্ডের পরিবারের প্রায় দেউলিয়া হওয়ার উপক্রম। পরিবারের হাল ধরতে তাঁর বড় বোনকে বিদেশে পাড়ি জমাতে হচ্ছে।
বিক্ষোভের আগে পান্ডে ও তাঁর সহযোদ্ধারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের জন্য নির্দেশিকা তৈরি করেছিলেন। তাতে সহিংসতা এড়িয়ে চলা ও অশান্তি সৃষ্টিকারীদের থেকে সাবধান থাকার আহ্বান জানানো হয়। ৮ সেপ্টেম্বর সকালে তিনি বন্ধুদের নিয়ে কাঠমান্ডুর কেন্দ্রীয় মৈতিঘর মণ্ডলায় পৌঁছান। তাঁর ধারণা ছিল হয়তো কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হবেন। কিন্তু জনতা ক্রমেই ফুলে উঠতে থাকে। আন্দোলনকারী আকৃতি ঘিমিরে (২৬) বলেন, ‘প্রথমে পরিবেশটা শান্তিপূর্ণ আর মিলনমেলার মতো ছিল। আমরা সবাই বসে পুরোনো নেপালি গান গাইছিলাম, স্লোগানগুলোও ছিল হাস্যরসাত্মক।’
কিন্তু দুপুর নাগাদ পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। জনতা নতুন বানেশ্বরে পার্লামেন্টের দিকে অগ্রসর হয়। পান্ডে ও ঘিমিরে দুজনেই দেখেন, মোটরসাইকেলযোগে কিছু মানুষ সেখানে আসছেন, যাদের বয়স গড়পড়তা জেন-জি আন্দোলনকারীদের চেয়ে বেশি। এরা উসকানিদাতা বলে সন্দেহ হয় তাদের। এরপর কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতি ঘোলাটে হতে শুরু করে। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কয়েকজন নিরাপত্তা ভেঙে সংসদ ভবনে ঢোকার চেষ্টা করে। তাদের থামাতে টিয়ার গ্যাস ও জল কামান ব্যবহার করে পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে যে, পুলিশ বিক্ষোভকারী এমনকি স্কুলশিক্ষার্থীদেরও লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
পরের দিন পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। বিক্ষোভকারীরা প্রতিশোধ নিতে সংসদ ভবন, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ও অন্য সরকারি স্থাপনায় আগুন ধরিয়ে দেয়। পান্ডে ও ঘিমিরে ঘরে বসে অনলাইনে ঘটনাপ্রবাহ দেখেন। ঘিমিরে বলেন, ‘অনেকেই স্বস্তি প্রকাশ করেছেন, কারণ অবশেষে রাজনীতিবিদরা তাঁদের কাজের ফল ভোগ করছিলেন।’ কিন্তু আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। পান্ডে বলেন, ‘আমি দেখেছি মানুষ মোটরসাইকেল থেকে পেট্রোল নিয়ে বোতলে ভরে সংসদে হামলা করছে।’
সুপ্রিম কোর্টে আগুন লাগতে দেখে আইনজীবী পান্ডে কেঁদে ফেলেন। তাঁর কাছে আদালত ছিল মন্দিরের মতো। তাঁর বন্ধুদের কেউ কেউ আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছিলেন, যদিও জানতেন সেটা বৃথা চেষ্টা। ঘিমিরে প্রশ্ন তোলেন, ‘সবাই বলছে, এগুলো পুড়িয়ে দিতে যারা এসেছিল, তাদের আলাদা উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু এরা আসলে কারা?’ ভিডিওতে দেখা যায়, হামলাকারীদের মুখ ঢাকা ছিল।
শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনী মোতায়েন হলে কিছুটা শান্তি ফেরে। পরিস্থিতি পুরোপুরি শান্ত করতে বেশ কয়েক দিন কারফিউ জারি রাখা হয়। সপ্তাহের শেষে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী করা হয়। আন্দোলনকারীরাই তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চেয়েছে। পান্ডে আশা করছেন, তিনি দেশকে দক্ষতার সঙ্গে নেতৃত্ব দেবেন, নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন করবেন এবং ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেবেন।
তবে দেশটির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা রয়ে গেছে বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ রুমেলা সেন বলছেন, ‘সেনাবাহিনীকে অভূতপূর্বভাবে স্থিতিশীলতার প্রতীক হিসেবে দেখা উদ্বেগজনক।’
আরও বিতর্কের জন্ম দেয় দুর্গা প্রসাইয়ের ভূমিকা। সেনাবাহিনীর আমন্ত্রণে তিনি আলোচনায় যোগ দেন। অথচ গত মার্চে সহিংস রাজতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের কারণে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে তিনি ভারতে পালালেও ফেরত আনা হয়। এ কারণে জেন-জি আন্দোলনকারীরা আলোচনা থেকে সরে দাঁড়ান।
তবুও দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী থাকতে চান পান্ডে। তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের প্রজন্মের রাজনৈতিক জাগরণ। আমরা আর নীরব থাকব না, অন্যায় মেনে নেব না। এটা কেবল হালকা প্রতিবাদ নয়, বরং এক সাহসী চ্যালেঞ্জ সেই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে, যারা দশকের পর দশক ধরে ক্ষমতা আঁকড়ে রেখেছে।’
আরও খবর পড়ুন:

জেন-জিদের তুমুল বিক্ষোভের মুখে মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় নেপালের সরকারের পতন হয়। একে ইতিহাসের অন্যতম বিজয় হিসেবেই দেখছে দেশটির জনগণ। তবে, এই বিজয়ের জন্য তাদের চুকাতে হয়েছে চরম মূল্য। আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক তনুজা পান্ডে বলেন, ‘আমরা গর্বিত। তবে, একই সঙ্গে প্রচণ্ড রাগ-দুঃখ-অনুশোচনাও কাজ করছে।’
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই আন্দোলনে দেশটিতে ৭২ জন নিহত হয়েছে। দেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে একে ভয়াবহতম সহিংসতা হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। ওই আন্দোলনে সরকারি ভবন, রাজনৈতিক নেতাদের বাড়িঘর, এমনকি ২০২৪ সালের জুলাইয়ে খোলা হিলটন হোটেলের মতো বিলাসবহুল স্থাপনাও পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া, দেশজুড়ে বিভিন্ন স্থানে দেদারসে চলে ভাঙচুর-লুটতরাজ। উত্তেজিত জনতার দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে এখনো মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন এক সাবেক প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী।
আন্তর্জাতিক সংকট সংস্থার জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা আশীষ প্রধান বলেন, এ বিক্ষোভ ছিল ‘দশকের পর দশক ধরে চলা দুর্নীতি আর রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহারের দায়ে রাজনৈতিক শ্রেণিকে সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান।’ তবে তিনি সতর্ক করেন, সরকারি সেবার ক্ষয়ক্ষতি ২০১৫ সালের ভূমিকম্পের মতো ভয়াবহ হতে পারে। ওই দুর্যোগে প্রায় ৯ হাজার মানুষের প্রাণ গিয়েছিল। ধ্বংসযজ্ঞ শুধু রাজধানী কাঠমান্ডুতেই সীমিত ছিল না, দেশজুড়ে অন্তত ৩০০ স্থানীয় সরকারি কার্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নেপালি সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্টের হিসেবে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৩ ট্রিলিয়ন নেপালি রুপি (২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার), যা দেশটির মোট জিডিপির প্রায় অর্ধেক। এমনকি কাঠমান্ডু পোস্টের অফিসও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়।
৮ সেপ্টেম্বরের সেই রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভের দুই দিন আগে ২৪ বছর বয়সী পরিবেশ কর্মী পান্ডে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চুরে পর্বত এলাকায় এক খনির দৃশ্য দেখিয়ে ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি লিখেন, ‘নেপালের সম্পদ জনগণের, রাজনীতিবিদদের প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির নয়।’ দুর্নীতি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহারের বিরুদ্ধে নামতে তরুণদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই আন্দোলন মূলত নেতৃত্বহীন ছিল। সরকার যখন দেশে ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধের ঘোষণা দেয়, তখন ক্ষোভ তীব্র হয়ে ওঠে। সরকারের যুক্তি ছিল, এসব প্ল্যাটফর্ম স্থানীয়ভাবে নিবন্ধন করেনি। এরই মধ্যে মাসের পর মাস ধরে ক্ষোভ জমে উঠছিল তথাকথিত ‘নেপো বেবি’দের বিরুদ্ধে। নেপো বেবি বলতে এখানে প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের সন্তানদের বোঝানো হচ্ছে। তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের বিলাসবহুল জীবন-যাপন ও সম্পদের প্রদর্শনী চালিয়ে যাচ্ছিল।
সবচেয়ে আলোচিত ছবিগুলোর একটি ছিল প্রাদেশিক মন্ত্রীর ছেলে সৌগত থাপার, যিনি লুই ভিতো, গুচি ও কার্টিয়ারের মতো বিলাসবহুল ব্র্যান্ডের বাক্স দিয়ে সাজানো এক ক্রিসমাস ট্রির পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ক্ষুব্ধ জনগণের ভাষ্য—দেশের জনগণ যেখানে মৌলিক চাহিদার জোগান নিশ্চিত করতে গিয়েই হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে রাজনীতিবিদদের সন্তানেরা এত বিলাসবহুল জীবন কীভাবে যাপন করছে। সমালোচনার জবাবে সৌগত বলেন, ‘এটি অন্যায্য ও ভুল ব্যাখ্যা’। তার দাবি, তার বাবা একজন সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে যা আয় করেছেন তার প্রতিটি পয়সাই তিনি জনগণের কাজেই ব্যয় করেছেন।
নেপালকে তরুণ গণতন্ত্র বলা হয়, কারণ দেশটি খুব বেশি দিন হয়নি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এসেছে। দীর্ঘ রাজতন্ত্র ও এক দশকব্যাপী মাওবাদী গৃহযুদ্ধের পর ২০০৮ সালে রাজা উৎখাত হয় এবং নেপাল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়। সেই যুদ্ধে ১৭ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান। কিন্তু প্রতিশ্রুত স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি আজও অধরা। গত ১৭ বছরে নেপাল ১৪টি সরকার দেখেছে। কোনো সরকারই পূর্ণ পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ করতে পারেননি। কমিউনিস্ট ও নেপালি কংগ্রেস দল পালাক্রমে ক্ষমতায় এসেছে। একই নেতা, যেমন কেপি শর্মা ওলি, একাধিকবার ক্ষমতায় ফিরে এসেছেন।
দেশটির মাথাপিছু জিডিপি এখনো দেড় হাজার ডলারের নিচে, যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। প্রায় ১৪ শতাংশ নেপালি বিদেশে কাজ করেন এবং প্রতি তিনটি পরিবারের একটিতে রেমিট্যান্স আসে। পান্ডে পূর্ব নেপালের এক মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এসেছেন। তাঁর বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি শিক্ষক। তিন বছর আগে তাঁর মস্তিষ্কে টিউমার ধরা পড়ে। চিকিৎসার খরচ জোগাতে গিয়ে পান্ডের পরিবারের প্রায় দেউলিয়া হওয়ার উপক্রম। পরিবারের হাল ধরতে তাঁর বড় বোনকে বিদেশে পাড়ি জমাতে হচ্ছে।
বিক্ষোভের আগে পান্ডে ও তাঁর সহযোদ্ধারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের জন্য নির্দেশিকা তৈরি করেছিলেন। তাতে সহিংসতা এড়িয়ে চলা ও অশান্তি সৃষ্টিকারীদের থেকে সাবধান থাকার আহ্বান জানানো হয়। ৮ সেপ্টেম্বর সকালে তিনি বন্ধুদের নিয়ে কাঠমান্ডুর কেন্দ্রীয় মৈতিঘর মণ্ডলায় পৌঁছান। তাঁর ধারণা ছিল হয়তো কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হবেন। কিন্তু জনতা ক্রমেই ফুলে উঠতে থাকে। আন্দোলনকারী আকৃতি ঘিমিরে (২৬) বলেন, ‘প্রথমে পরিবেশটা শান্তিপূর্ণ আর মিলনমেলার মতো ছিল। আমরা সবাই বসে পুরোনো নেপালি গান গাইছিলাম, স্লোগানগুলোও ছিল হাস্যরসাত্মক।’
কিন্তু দুপুর নাগাদ পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। জনতা নতুন বানেশ্বরে পার্লামেন্টের দিকে অগ্রসর হয়। পান্ডে ও ঘিমিরে দুজনেই দেখেন, মোটরসাইকেলযোগে কিছু মানুষ সেখানে আসছেন, যাদের বয়স গড়পড়তা জেন-জি আন্দোলনকারীদের চেয়ে বেশি। এরা উসকানিদাতা বলে সন্দেহ হয় তাদের। এরপর কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতি ঘোলাটে হতে শুরু করে। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কয়েকজন নিরাপত্তা ভেঙে সংসদ ভবনে ঢোকার চেষ্টা করে। তাদের থামাতে টিয়ার গ্যাস ও জল কামান ব্যবহার করে পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে যে, পুলিশ বিক্ষোভকারী এমনকি স্কুলশিক্ষার্থীদেরও লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
পরের দিন পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। বিক্ষোভকারীরা প্রতিশোধ নিতে সংসদ ভবন, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ও অন্য সরকারি স্থাপনায় আগুন ধরিয়ে দেয়। পান্ডে ও ঘিমিরে ঘরে বসে অনলাইনে ঘটনাপ্রবাহ দেখেন। ঘিমিরে বলেন, ‘অনেকেই স্বস্তি প্রকাশ করেছেন, কারণ অবশেষে রাজনীতিবিদরা তাঁদের কাজের ফল ভোগ করছিলেন।’ কিন্তু আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। পান্ডে বলেন, ‘আমি দেখেছি মানুষ মোটরসাইকেল থেকে পেট্রোল নিয়ে বোতলে ভরে সংসদে হামলা করছে।’
সুপ্রিম কোর্টে আগুন লাগতে দেখে আইনজীবী পান্ডে কেঁদে ফেলেন। তাঁর কাছে আদালত ছিল মন্দিরের মতো। তাঁর বন্ধুদের কেউ কেউ আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছিলেন, যদিও জানতেন সেটা বৃথা চেষ্টা। ঘিমিরে প্রশ্ন তোলেন, ‘সবাই বলছে, এগুলো পুড়িয়ে দিতে যারা এসেছিল, তাদের আলাদা উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু এরা আসলে কারা?’ ভিডিওতে দেখা যায়, হামলাকারীদের মুখ ঢাকা ছিল।
শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনী মোতায়েন হলে কিছুটা শান্তি ফেরে। পরিস্থিতি পুরোপুরি শান্ত করতে বেশ কয়েক দিন কারফিউ জারি রাখা হয়। সপ্তাহের শেষে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী করা হয়। আন্দোলনকারীরাই তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চেয়েছে। পান্ডে আশা করছেন, তিনি দেশকে দক্ষতার সঙ্গে নেতৃত্ব দেবেন, নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন করবেন এবং ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেবেন।
তবে দেশটির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা রয়ে গেছে বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ রুমেলা সেন বলছেন, ‘সেনাবাহিনীকে অভূতপূর্বভাবে স্থিতিশীলতার প্রতীক হিসেবে দেখা উদ্বেগজনক।’
আরও বিতর্কের জন্ম দেয় দুর্গা প্রসাইয়ের ভূমিকা। সেনাবাহিনীর আমন্ত্রণে তিনি আলোচনায় যোগ দেন। অথচ গত মার্চে সহিংস রাজতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের কারণে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে তিনি ভারতে পালালেও ফেরত আনা হয়। এ কারণে জেন-জি আন্দোলনকারীরা আলোচনা থেকে সরে দাঁড়ান।
তবুও দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী থাকতে চান পান্ডে। তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের প্রজন্মের রাজনৈতিক জাগরণ। আমরা আর নীরব থাকব না, অন্যায় মেনে নেব না। এটা কেবল হালকা প্রতিবাদ নয়, বরং এক সাহসী চ্যালেঞ্জ সেই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে, যারা দশকের পর দশক ধরে ক্ষমতা আঁকড়ে রেখেছে।’
আরও খবর পড়ুন:

পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
১৭ মিনিট আগে
আগামী বছরের অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা বয়কট করবে আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া। কারণ আয়োজকেরা ইসরায়েলকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দিয়েছে। দেশগুলোর অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেওয়া ঠিক হয়নি।
১ ঘণ্টা আগে
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
১ ঘণ্টা আগে
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বা স্টেট ডিপার্টমেন্ট ভেনেজুয়েলায় ভ্রমণ নিয়ে নতুন করে কঠোর সতর্কতা জারি করেছে। দেশটিতে থাকা সব মার্কিন নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দাদের অবিলম্বে দেশটি ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। নিরাপত্তা হুমকি দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
আসিম মুনির বলেন, ‘সবই তো ঠিক আছে, আপনাদের চোখের সামনেই তো সব। অবস্থার উন্নতি হচ্ছে, আর এখন থেকে পাকিস্তান আরও অনন্য উচ্চতায় পৌঁছাবে।’ তাঁর এই মন্তব্য এল ঠিক এমন এক সময়ে, যখন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ একটি নোট প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির কাছে পাঠিয়েছিলেন। তাতে সেনাপ্রধান মুনিরকে পাকিস্তানের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসেবে নিয়োগ করার সুপারিশ করা হয়। এরপরই প্রেসিডেন্ট এই অনুমোদন দেন।
সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড় ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন। খবর দ্য ডনের
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে পাঁচ বছরের জন্য সেনাপ্রধানের (সিওএএস) সঙ্গে সমান্তরালভাবে সিডিএফ হিসেবেও নিয়োগে অনুমোদন দিয়েছেন।’ এই বিবৃতি বহুদিনের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটাল। এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শাহবাজই প্রেসিডেন্টকে এই নতুন দ্বৈত দায়িত্বপ্রাপ্ত পদে ফিল্ড মার্শাল মুনিরকে নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে সেনাবাহিনীর প্রধান এবং চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসেবে নিয়োগের সারসংক্ষেপ প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন।’
এই নতুন ব্যবস্থা পাকিস্তানের সংবিধানের ২৭তম সংশোধনীতে ২৪৩ অনুচ্ছেদের পরিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। যার ফলে একটি অফিসের অধীনে সশস্ত্র বাহিনীর অপারেশনাল, প্রশাসনিক ও কৌশলগত ক্ষমতাকে একত্র করা হয়েছে। সংশোধিত ২৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট সেনাপ্রধানকে নিয়োগ করবেন, যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসেবেও কাজ করবেন।
এই সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭৬ সাল থেকে চালু থাকা তিন বাহিনীর সমন্বয় ব্যবস্থা—চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির (সিজেসিএসসি) অফিস বিলুপ্ত করা হয়। এর ফলে যৌথ কমান্ডের ইন্টিগ্রেশন সিডিএফের হাতে চলে এল।
সাংবিধানিক এই আমূল পরিবর্তনকে সামরিক বাহিনীর আইনি কাঠামোর মধ্যে আনার জন্য সরকার ২৭তম সংশোধনীর পরপরই ১৯৫২ সালের পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্টেও (পিএএ) সংশোধন আনে। পিএএর ৮এ অনুচ্ছেদের উপধারা (১) এখন জানাচ্ছে, ‘প্রথমবারের মতো সেনাবাহিনীর প্রধান যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হবেন [...], তাঁর মেয়াদ এই ধারার অধীনে ওই পদের বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে শুরু হবে।’
আরও বলা হয়েছে, এই প্রথম সিওএএসসহ-সিডিএফের বিজ্ঞপ্তি জারি হলে ‘বর্তমান সেনাপ্রধানের বিদ্যমান মেয়াদ ওই বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে বলে গণ্য হবে।’ ৮এ অনুচ্ছেদের উপধারা (৩) অনুযায়ী, সিওএএস যিনি একই সঙ্গে সিডিএফেরও দায়িত্বে থাকবেন, তাঁর ‘শর্তাবলি ও নিয়ম’ প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট স্থির করবেন।
ফিল্ড মার্শাল মুনির ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর ১৭তম সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ২০২৪ সালের নভেম্বরে সরকার পিএএ-তে পরিবর্তন আনে, যেখানে সিজেসিএসসির মেয়াদ তিন বছর অপরিবর্তিত রেখে বাকি তিন বাহিনীর প্রধানদের মেয়াদ তিন থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হয়। একই সংশোধনীতে সার্ভিস চিফদের পুনর্নিয়োগ বা তাঁদের মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়, যা আগে সর্বোচ্চ তিন বছর ছিল।

পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
আসিম মুনির বলেন, ‘সবই তো ঠিক আছে, আপনাদের চোখের সামনেই তো সব। অবস্থার উন্নতি হচ্ছে, আর এখন থেকে পাকিস্তান আরও অনন্য উচ্চতায় পৌঁছাবে।’ তাঁর এই মন্তব্য এল ঠিক এমন এক সময়ে, যখন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ একটি নোট প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির কাছে পাঠিয়েছিলেন। তাতে সেনাপ্রধান মুনিরকে পাকিস্তানের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসেবে নিয়োগ করার সুপারিশ করা হয়। এরপরই প্রেসিডেন্ট এই অনুমোদন দেন।
সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড় ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন। খবর দ্য ডনের
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে পাঁচ বছরের জন্য সেনাপ্রধানের (সিওএএস) সঙ্গে সমান্তরালভাবে সিডিএফ হিসেবেও নিয়োগে অনুমোদন দিয়েছেন।’ এই বিবৃতি বহুদিনের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটাল। এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শাহবাজই প্রেসিডেন্টকে এই নতুন দ্বৈত দায়িত্বপ্রাপ্ত পদে ফিল্ড মার্শাল মুনিরকে নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে সেনাবাহিনীর প্রধান এবং চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসেবে নিয়োগের সারসংক্ষেপ প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন।’
এই নতুন ব্যবস্থা পাকিস্তানের সংবিধানের ২৭তম সংশোধনীতে ২৪৩ অনুচ্ছেদের পরিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। যার ফলে একটি অফিসের অধীনে সশস্ত্র বাহিনীর অপারেশনাল, প্রশাসনিক ও কৌশলগত ক্ষমতাকে একত্র করা হয়েছে। সংশোধিত ২৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট সেনাপ্রধানকে নিয়োগ করবেন, যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসেবেও কাজ করবেন।
এই সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭৬ সাল থেকে চালু থাকা তিন বাহিনীর সমন্বয় ব্যবস্থা—চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির (সিজেসিএসসি) অফিস বিলুপ্ত করা হয়। এর ফলে যৌথ কমান্ডের ইন্টিগ্রেশন সিডিএফের হাতে চলে এল।
সাংবিধানিক এই আমূল পরিবর্তনকে সামরিক বাহিনীর আইনি কাঠামোর মধ্যে আনার জন্য সরকার ২৭তম সংশোধনীর পরপরই ১৯৫২ সালের পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্টেও (পিএএ) সংশোধন আনে। পিএএর ৮এ অনুচ্ছেদের উপধারা (১) এখন জানাচ্ছে, ‘প্রথমবারের মতো সেনাবাহিনীর প্রধান যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হবেন [...], তাঁর মেয়াদ এই ধারার অধীনে ওই পদের বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে শুরু হবে।’
আরও বলা হয়েছে, এই প্রথম সিওএএসসহ-সিডিএফের বিজ্ঞপ্তি জারি হলে ‘বর্তমান সেনাপ্রধানের বিদ্যমান মেয়াদ ওই বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে বলে গণ্য হবে।’ ৮এ অনুচ্ছেদের উপধারা (৩) অনুযায়ী, সিওএএস যিনি একই সঙ্গে সিডিএফেরও দায়িত্বে থাকবেন, তাঁর ‘শর্তাবলি ও নিয়ম’ প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট স্থির করবেন।
ফিল্ড মার্শাল মুনির ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর ১৭তম সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ২০২৪ সালের নভেম্বরে সরকার পিএএ-তে পরিবর্তন আনে, যেখানে সিজেসিএসসির মেয়াদ তিন বছর অপরিবর্তিত রেখে বাকি তিন বাহিনীর প্রধানদের মেয়াদ তিন থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হয়। একই সংশোধনীতে সার্ভিস চিফদের পুনর্নিয়োগ বা তাঁদের মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়, যা আগে সর্বোচ্চ তিন বছর ছিল।

ক্ষুব্ধ জনগণের প্রশ্ন—দেশের জনগণ যেখানে মৌলিক চাহিদার জোগান নিশ্চিত করতে গিয়েই হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে রাজনীতিবিদদের সন্তানেরা এত বিলাসবহুল জীবন কীভাবে যাপন করছে?
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আগামী বছরের অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা বয়কট করবে আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া। কারণ আয়োজকেরা ইসরায়েলকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দিয়েছে। দেশগুলোর অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেওয়া ঠিক হয়নি।
১ ঘণ্টা আগে
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
১ ঘণ্টা আগে
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বা স্টেট ডিপার্টমেন্ট ভেনেজুয়েলায় ভ্রমণ নিয়ে নতুন করে কঠোর সতর্কতা জারি করেছে। দেশটিতে থাকা সব মার্কিন নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দাদের অবিলম্বে দেশটি ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। নিরাপত্তা হুমকি দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আগামী বছরের অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা বয়কট করবে আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া। কারণ আয়োজকেরা ইসরায়েলকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দিয়েছে। দেশগুলোর অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেওয়া ঠিক হয়নি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, গাজায় যুদ্ধ এবং নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে এসব দেশ ইসরায়েলকে বাদ দেওয়ার দাবি করেছিল। জেনেভায় এক বৈঠকে গোপন ভোটের দাবি তোলে স্পেনের সম্প্রচার সংস্থা আরটিভিই। তারা জানায়, আয়োজনকারীরা সেই দাবি মানেনি। এতে উৎসবের প্রতি তাদের অবিশ্বাস আরও বেড়েছে।
আয়ারল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম আরটিই জানায়, গাজার ভয়াবহ প্রাণহানি এবং চলমান মানবিক সংকটের সময়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া তাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য। স্পেন ইউরোভিশনের ‘বিগ ফাইভ’ দেশের একটি। ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে স্পেনের শিল্পীরা সরাসরি ফাইনালে ওঠে। কারণ এসব দেশের সম্প্রচার সংস্থা ইবিইউকে সবচেয়ে বেশি অর্থ দেয়। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রায় ৫০টি সম্প্রচার সংস্থা—যার মধ্যে বিবিসিও আছে—ইউরোপিয়ান ব্রডকাস্টিং ইউনিয়নের (ইবিইউ) বৈঠকে যোগ দেয়। প্রতিবছর ১৫ কোটির বেশি দর্শক এই প্রতিযোগিতা দেখে, তাই ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হয়। ইসরায়েল তাদের অংশগ্রহণকারী ইউভাল রাফায়েলের পক্ষে ভোট বাড়াতে অন্যদের সাহায্য নিয়েছে, এমন অভিযোগের পর সরকার ও তৃতীয় পক্ষের প্রভাব ঠেকাতে নতুন নিয়মে সম্মতি চাইছিল ইবিইউ।
বিবিসি জানায়, এই নিয়ম মানার ভোটের সঙ্গে একটি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। সদস্যরা রাজি হলে ইসরায়েলকে নিয়ে আর কোনো ভোট হবে না। ইবিইউ জানায়, যারা নতুন নিয়ম মানতে সম্মত, তারা ইউরোভিশন ২০২৬-এ অংশ নিতে পারবে। ইউরোভিশন পরিচালক মার্টিন গ্রিন বলেন, সদস্যরা ইসরায়েলের অংশগ্রহণ নিয়ে খোলামেলা বিতর্কের সুযোগ পেয়েছে। ভোটে দেখা গেছে, অধিকাংশই চায় এই প্রতিযোগিতা রাজনৈতিক মঞ্চ না হোক, নিরপেক্ষতা বজায় থাকুক।
ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেরজগ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, এটি সংহতি, বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার প্রতীক। ইসরায়েল বিশ্বমঞ্চে প্রতিনিধিত্ব পাওয়ার যোগ্য। ইসরায়েলের সম্প্রচার সংস্থা কান–এর প্রধান গলান ইয়োখপাজ বলেন, ইসরায়েলকে সরাতে চাওয়া সংস্কৃতিগত বয়কট ছাড়া কিছু নয়। আজ বয়কট শুরু হলে কাল অন্যদেরও ক্ষতি হতে পারে। ইউরোভিশনের ৭০ তম বছরে কি এমন স্মৃতি আমরা চাই?
যুক্তরাজ্যে ইউরোভিশন দেখায় বিবিসি। তারা জানায়, ইবিইউর নিয়ম কার্যকরে তারা সম্মিলিত সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে। তবে এই সিদ্ধান্ত ইউরোভিশন সম্প্রদায়ের ভেতর বড় বিভাজন তৈরি করেছে। ডাচ সম্প্রচার সংস্থা অ্যাভরোট্রস জানায়, বর্তমান পরিস্থিতিতে অংশগ্রহণ তাদের মূল মূল্যবোধের সঙ্গে যায় না।
স্পেনের আরটিভিই জানায়, গত সেপ্টেম্বরেই তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল—ইসরায়েল থাকলে স্পেন ইউরোভিশন থেকে সরে দাঁড়াবে। এই কারণে ২০২৬ সালের ফাইনাল ও সেমিফাইনাল তারা সম্প্রচারও করবে না। স্লোভেনিয়ার আরটিভিও জানায়, তাদের অবস্থান অপরিবর্তিত। নিয়ম বদলালেও মত বদলায়নি। ন্যায়নীতি রক্ষা করা তাদের দায়িত্ব। বেলজিয়ামের সম্প্রচার সংস্থা বলেছে, তারা কয়েক দিনের মধ্যে অবস্থান জানাবে।
অন্যদিকে নরওয়ে, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক ও আইসল্যান্ডসহ নর্ডিক দেশগুলো নিয়ম সংশোধনকে সমর্থন করেছে। তবে আইসল্যান্ড এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। জার্মানি, যারা আগে বলেছিল ইসরায়েল বাদ গেলে তারাও সরে দাঁড়াবে, সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের সংস্থা এআরডি জানায়, তারা পরের বছর অংশ নিতে আগ্রহী এবং বৈচিত্র্য ও সংহতির উৎসব হিসেবে এটিকে দেখে। তবে যারা সরে দাঁড়িয়েছে, তাদের সিদ্ধান্তকে তারা সম্মান করে।

আগামী বছরের অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা বয়কট করবে আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া। কারণ আয়োজকেরা ইসরায়েলকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দিয়েছে। দেশগুলোর অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেওয়া ঠিক হয়নি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, গাজায় যুদ্ধ এবং নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে এসব দেশ ইসরায়েলকে বাদ দেওয়ার দাবি করেছিল। জেনেভায় এক বৈঠকে গোপন ভোটের দাবি তোলে স্পেনের সম্প্রচার সংস্থা আরটিভিই। তারা জানায়, আয়োজনকারীরা সেই দাবি মানেনি। এতে উৎসবের প্রতি তাদের অবিশ্বাস আরও বেড়েছে।
আয়ারল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম আরটিই জানায়, গাজার ভয়াবহ প্রাণহানি এবং চলমান মানবিক সংকটের সময়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া তাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য। স্পেন ইউরোভিশনের ‘বিগ ফাইভ’ দেশের একটি। ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে স্পেনের শিল্পীরা সরাসরি ফাইনালে ওঠে। কারণ এসব দেশের সম্প্রচার সংস্থা ইবিইউকে সবচেয়ে বেশি অর্থ দেয়। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রায় ৫০টি সম্প্রচার সংস্থা—যার মধ্যে বিবিসিও আছে—ইউরোপিয়ান ব্রডকাস্টিং ইউনিয়নের (ইবিইউ) বৈঠকে যোগ দেয়। প্রতিবছর ১৫ কোটির বেশি দর্শক এই প্রতিযোগিতা দেখে, তাই ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হয়। ইসরায়েল তাদের অংশগ্রহণকারী ইউভাল রাফায়েলের পক্ষে ভোট বাড়াতে অন্যদের সাহায্য নিয়েছে, এমন অভিযোগের পর সরকার ও তৃতীয় পক্ষের প্রভাব ঠেকাতে নতুন নিয়মে সম্মতি চাইছিল ইবিইউ।
বিবিসি জানায়, এই নিয়ম মানার ভোটের সঙ্গে একটি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। সদস্যরা রাজি হলে ইসরায়েলকে নিয়ে আর কোনো ভোট হবে না। ইবিইউ জানায়, যারা নতুন নিয়ম মানতে সম্মত, তারা ইউরোভিশন ২০২৬-এ অংশ নিতে পারবে। ইউরোভিশন পরিচালক মার্টিন গ্রিন বলেন, সদস্যরা ইসরায়েলের অংশগ্রহণ নিয়ে খোলামেলা বিতর্কের সুযোগ পেয়েছে। ভোটে দেখা গেছে, অধিকাংশই চায় এই প্রতিযোগিতা রাজনৈতিক মঞ্চ না হোক, নিরপেক্ষতা বজায় থাকুক।
ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেরজগ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, এটি সংহতি, বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার প্রতীক। ইসরায়েল বিশ্বমঞ্চে প্রতিনিধিত্ব পাওয়ার যোগ্য। ইসরায়েলের সম্প্রচার সংস্থা কান–এর প্রধান গলান ইয়োখপাজ বলেন, ইসরায়েলকে সরাতে চাওয়া সংস্কৃতিগত বয়কট ছাড়া কিছু নয়। আজ বয়কট শুরু হলে কাল অন্যদেরও ক্ষতি হতে পারে। ইউরোভিশনের ৭০ তম বছরে কি এমন স্মৃতি আমরা চাই?
যুক্তরাজ্যে ইউরোভিশন দেখায় বিবিসি। তারা জানায়, ইবিইউর নিয়ম কার্যকরে তারা সম্মিলিত সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে। তবে এই সিদ্ধান্ত ইউরোভিশন সম্প্রদায়ের ভেতর বড় বিভাজন তৈরি করেছে। ডাচ সম্প্রচার সংস্থা অ্যাভরোট্রস জানায়, বর্তমান পরিস্থিতিতে অংশগ্রহণ তাদের মূল মূল্যবোধের সঙ্গে যায় না।
স্পেনের আরটিভিই জানায়, গত সেপ্টেম্বরেই তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল—ইসরায়েল থাকলে স্পেন ইউরোভিশন থেকে সরে দাঁড়াবে। এই কারণে ২০২৬ সালের ফাইনাল ও সেমিফাইনাল তারা সম্প্রচারও করবে না। স্লোভেনিয়ার আরটিভিও জানায়, তাদের অবস্থান অপরিবর্তিত। নিয়ম বদলালেও মত বদলায়নি। ন্যায়নীতি রক্ষা করা তাদের দায়িত্ব। বেলজিয়ামের সম্প্রচার সংস্থা বলেছে, তারা কয়েক দিনের মধ্যে অবস্থান জানাবে।
অন্যদিকে নরওয়ে, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক ও আইসল্যান্ডসহ নর্ডিক দেশগুলো নিয়ম সংশোধনকে সমর্থন করেছে। তবে আইসল্যান্ড এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। জার্মানি, যারা আগে বলেছিল ইসরায়েল বাদ গেলে তারাও সরে দাঁড়াবে, সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের সংস্থা এআরডি জানায়, তারা পরের বছর অংশ নিতে আগ্রহী এবং বৈচিত্র্য ও সংহতির উৎসব হিসেবে এটিকে দেখে। তবে যারা সরে দাঁড়িয়েছে, তাদের সিদ্ধান্তকে তারা সম্মান করে।

ক্ষুব্ধ জনগণের প্রশ্ন—দেশের জনগণ যেখানে মৌলিক চাহিদার জোগান নিশ্চিত করতে গিয়েই হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে রাজনীতিবিদদের সন্তানেরা এত বিলাসবহুল জীবন কীভাবে যাপন করছে?
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
১৭ মিনিট আগে
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
১ ঘণ্টা আগে
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বা স্টেট ডিপার্টমেন্ট ভেনেজুয়েলায় ভ্রমণ নিয়ে নতুন করে কঠোর সতর্কতা জারি করেছে। দেশটিতে থাকা সব মার্কিন নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দাদের অবিলম্বে দেশটি ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। নিরাপত্তা হুমকি দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা। অন্য বিশ্বনেতাদের মতো তিনিও আনুষ্ঠানিক ভোজসভায় অংশ নেন, তবে তাঁর খাবার সবচেয়ে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত।
পুতিন হোটেল বা আয়োজক দেশের কর্মীদের তৈরি খাবার গ্রহণ করেন না। তাঁর খাবারের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা প্রোটোকল অনুসরণ করা হয়।
বিদেশ সফরে পুতিনের খাদ্য ব্যবস্থাপনা প্রায় সামরিক নির্ভুলতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রিত হয়। এই কঠোরতার মূল কারণ হলো নিরাপত্তা—বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্ভাব্য বিষক্রিয়া বা গুপ্তহত্যার চেষ্টা এড়াতে এই ব্যবস্থা অপরিহার্য। পুতিনের জন্য খাবার পরিবেশনের আগে যেসব প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়:
বিশেষ শেফ ও লজিস্টিকস: প্রশিক্ষিত রুশ শেফ, পুষ্টিবিদ এবং সহযোগী কর্মীরা তাঁর সঙ্গে ফ্লাইটে আসেন। তাঁরাই বিশেষভাবে নিয়ন্ত্রিত রান্নাঘরে পুতিনের খাবার তৈরি করেন।
মোবাইল পরীক্ষাগার: তিনি ভ্রমণের সময় একটি অত্যাধুনিক মোবাইল খাদ্য পরীক্ষাগারও সঙ্গে রাখেন। এই ল্যাব পরিবেশনের আগে প্রতিটি খাদ্য এবং পানীয়ের উপাদান দ্রুত পরীক্ষা করে সম্ভাব্য বিষ বা ক্ষতিকারক বস্তুর উপস্থিতি যাচাই করে।
নিয়ন্ত্রিত উপাদান: খাবারের উপাদান হয় সরাসরি রাশিয়া থেকে আনা হয়, নতুবা আয়োজক দেশে দীর্ঘ পরীক্ষার মাধ্যমে এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। শুধু অনুমোদিত এবং পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করা উপাদানই তাঁর রান্নাঘরে প্রবেশাধিকার পায়।
বিশেষ পরিবেশন: আনুষ্ঠানিক ভোজসভার ক্ষেত্রেও এই সতর্কতা বজায় থাকে। যদিও তিনি উপস্থিত থাকেন, কিন্তু সাধারণত তাঁর প্লেটে পরিবেশিত খাবারটি নিজস্ব শেফদের দ্বারা পৃথকভাবে প্রস্তুতকৃত হয়। খাদ্য পরিবেশনের আগে প্রশিক্ষিত পরীক্ষকদের দ্বারা চূড়ান্ত যাচাই করা হয়। এই প্রক্রিয়া মস্কো এবং বিদেশে উভয় ক্ষেত্রেই অনুসরণ করা হয়।
পুতিনের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস
খাবারের ব্যবস্থা নিয়ে এত কড়াকড়ি থাকলেও, পুতিনের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকা কিন্তু বেশ সাধারণ। তাঁর জীবনযাপনও সুশৃঙ্খল। তিনি জমকালো ভোজের পরিবর্তে পুষ্টিকর ও সহজলভ্য খাবার পছন্দ করেন।
সকালের নাশতা: তাঁর সকাল শুরু হয় উচ্চ-প্রোটিন এবং কম-চিনিযুক্ত খাবার দিয়ে। সাধারণত মধুসহ ভরোগ (Tvorog, রুশ কটেজ চিজ) অথবা পরিজ (স্টার্চ ও পানি বা দুধ সহযোগে তৈরি) প্রধান খাদ্য। এ ছাড়া তিনি তাজা ফলের রস এবং মাঝে মাঝে কাঁচা কোয়েলের ডিম বা অমলেট গ্রহণ করেন। তাঁর খাদ্যাভ্যাসে অতিরিক্ত মিষ্টি বা চর্বিযুক্ত খাবারের স্থান নেই।
দুপুরের ও রাতের খাবার: পুতিন লাল মাংসের চেয়ে মাছ বেশি পছন্দ করেন, বিশেষত গ্রিলড বা স্মোকড মাছের পদ। ভেড়ার মাংসও তাঁর প্রিয়। তবে অতিরিক্ত মসলাযুক্ত রান্না তিনি এড়িয়ে চলেন। তাঁর বেশির ভাগ খাবারেই টমেটো, শসা এবং অন্যান্য সাধারণ সবজির সালাদ বাধ্যতামূলক। এই সবজিগুলো ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের জোগান দেয়।
পানীয় ও ডেজার্ট: পুতিন মিষ্টি বেক করা সামগ্রী, কেক বা বাটারি পেস্ট্রি একদম পছন্দ করেন না। পানীয়ের ক্ষেত্রে তাজা জুস, সাধারণ ভেষজ পানীয় এবং কেফির (এক প্রকার ফার্মেন্টেড দুগ্ধজাত পানীয়) পান করেন। তবে তাঁর সুশৃঙ্খল রুটিনের মাঝেও একটি ছোট দুর্বলতা রয়েছে—তা হলো পেস্তা আইসক্রিম!
বিশেষজ্ঞরা বলেন, পুতিনের এই খাদ্যাভ্যাস তাঁর রাজনৈতিক ভাবমূর্তির সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ: সংযত, শৃঙ্খলাবদ্ধ এবং ঐতিহ্যমুখী। পুষ্টি, প্রোটিন এবং সহজলভ্যতা ওপর তাঁর এই জোর, তাঁর দীর্ঘ ও অনিয়মিত কর্মঘণ্টার জন্য প্রয়োজনীয় স্থিতিশীল ক্যালরির জোগান নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।

ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা। অন্য বিশ্বনেতাদের মতো তিনিও আনুষ্ঠানিক ভোজসভায় অংশ নেন, তবে তাঁর খাবার সবচেয়ে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত।
পুতিন হোটেল বা আয়োজক দেশের কর্মীদের তৈরি খাবার গ্রহণ করেন না। তাঁর খাবারের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা প্রোটোকল অনুসরণ করা হয়।
বিদেশ সফরে পুতিনের খাদ্য ব্যবস্থাপনা প্রায় সামরিক নির্ভুলতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রিত হয়। এই কঠোরতার মূল কারণ হলো নিরাপত্তা—বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্ভাব্য বিষক্রিয়া বা গুপ্তহত্যার চেষ্টা এড়াতে এই ব্যবস্থা অপরিহার্য। পুতিনের জন্য খাবার পরিবেশনের আগে যেসব প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়:
বিশেষ শেফ ও লজিস্টিকস: প্রশিক্ষিত রুশ শেফ, পুষ্টিবিদ এবং সহযোগী কর্মীরা তাঁর সঙ্গে ফ্লাইটে আসেন। তাঁরাই বিশেষভাবে নিয়ন্ত্রিত রান্নাঘরে পুতিনের খাবার তৈরি করেন।
মোবাইল পরীক্ষাগার: তিনি ভ্রমণের সময় একটি অত্যাধুনিক মোবাইল খাদ্য পরীক্ষাগারও সঙ্গে রাখেন। এই ল্যাব পরিবেশনের আগে প্রতিটি খাদ্য এবং পানীয়ের উপাদান দ্রুত পরীক্ষা করে সম্ভাব্য বিষ বা ক্ষতিকারক বস্তুর উপস্থিতি যাচাই করে।
নিয়ন্ত্রিত উপাদান: খাবারের উপাদান হয় সরাসরি রাশিয়া থেকে আনা হয়, নতুবা আয়োজক দেশে দীর্ঘ পরীক্ষার মাধ্যমে এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। শুধু অনুমোদিত এবং পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করা উপাদানই তাঁর রান্নাঘরে প্রবেশাধিকার পায়।
বিশেষ পরিবেশন: আনুষ্ঠানিক ভোজসভার ক্ষেত্রেও এই সতর্কতা বজায় থাকে। যদিও তিনি উপস্থিত থাকেন, কিন্তু সাধারণত তাঁর প্লেটে পরিবেশিত খাবারটি নিজস্ব শেফদের দ্বারা পৃথকভাবে প্রস্তুতকৃত হয়। খাদ্য পরিবেশনের আগে প্রশিক্ষিত পরীক্ষকদের দ্বারা চূড়ান্ত যাচাই করা হয়। এই প্রক্রিয়া মস্কো এবং বিদেশে উভয় ক্ষেত্রেই অনুসরণ করা হয়।
পুতিনের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস
খাবারের ব্যবস্থা নিয়ে এত কড়াকড়ি থাকলেও, পুতিনের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকা কিন্তু বেশ সাধারণ। তাঁর জীবনযাপনও সুশৃঙ্খল। তিনি জমকালো ভোজের পরিবর্তে পুষ্টিকর ও সহজলভ্য খাবার পছন্দ করেন।
সকালের নাশতা: তাঁর সকাল শুরু হয় উচ্চ-প্রোটিন এবং কম-চিনিযুক্ত খাবার দিয়ে। সাধারণত মধুসহ ভরোগ (Tvorog, রুশ কটেজ চিজ) অথবা পরিজ (স্টার্চ ও পানি বা দুধ সহযোগে তৈরি) প্রধান খাদ্য। এ ছাড়া তিনি তাজা ফলের রস এবং মাঝে মাঝে কাঁচা কোয়েলের ডিম বা অমলেট গ্রহণ করেন। তাঁর খাদ্যাভ্যাসে অতিরিক্ত মিষ্টি বা চর্বিযুক্ত খাবারের স্থান নেই।
দুপুরের ও রাতের খাবার: পুতিন লাল মাংসের চেয়ে মাছ বেশি পছন্দ করেন, বিশেষত গ্রিলড বা স্মোকড মাছের পদ। ভেড়ার মাংসও তাঁর প্রিয়। তবে অতিরিক্ত মসলাযুক্ত রান্না তিনি এড়িয়ে চলেন। তাঁর বেশির ভাগ খাবারেই টমেটো, শসা এবং অন্যান্য সাধারণ সবজির সালাদ বাধ্যতামূলক। এই সবজিগুলো ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের জোগান দেয়।
পানীয় ও ডেজার্ট: পুতিন মিষ্টি বেক করা সামগ্রী, কেক বা বাটারি পেস্ট্রি একদম পছন্দ করেন না। পানীয়ের ক্ষেত্রে তাজা জুস, সাধারণ ভেষজ পানীয় এবং কেফির (এক প্রকার ফার্মেন্টেড দুগ্ধজাত পানীয়) পান করেন। তবে তাঁর সুশৃঙ্খল রুটিনের মাঝেও একটি ছোট দুর্বলতা রয়েছে—তা হলো পেস্তা আইসক্রিম!
বিশেষজ্ঞরা বলেন, পুতিনের এই খাদ্যাভ্যাস তাঁর রাজনৈতিক ভাবমূর্তির সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ: সংযত, শৃঙ্খলাবদ্ধ এবং ঐতিহ্যমুখী। পুষ্টি, প্রোটিন এবং সহজলভ্যতা ওপর তাঁর এই জোর, তাঁর দীর্ঘ ও অনিয়মিত কর্মঘণ্টার জন্য প্রয়োজনীয় স্থিতিশীল ক্যালরির জোগান নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।

ক্ষুব্ধ জনগণের প্রশ্ন—দেশের জনগণ যেখানে মৌলিক চাহিদার জোগান নিশ্চিত করতে গিয়েই হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে রাজনীতিবিদদের সন্তানেরা এত বিলাসবহুল জীবন কীভাবে যাপন করছে?
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
১৭ মিনিট আগে
আগামী বছরের অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা বয়কট করবে আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া। কারণ আয়োজকেরা ইসরায়েলকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দিয়েছে। দেশগুলোর অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেওয়া ঠিক হয়নি।
১ ঘণ্টা আগে
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বা স্টেট ডিপার্টমেন্ট ভেনেজুয়েলায় ভ্রমণ নিয়ে নতুন করে কঠোর সতর্কতা জারি করেছে। দেশটিতে থাকা সব মার্কিন নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দাদের অবিলম্বে দেশটি ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। নিরাপত্তা হুমকি দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বা স্টেট ডিপার্টমেন্ট ভেনেজুয়েলায় ভ্রমণ নিয়ে নতুন করে কঠোর সতর্কতা জারি করেছে। দেশটিতে থাকা সব মার্কিন নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দাদের অবিলম্বে দেশটি ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। নিরাপত্তা হুমকি দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্টেট ডিপার্টমেন্ট এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এই নির্দেশনা দিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ভেনেজুয়েলায় ভুলভাবে আটক হওয়া, আটক অবস্থায় নির্যাতন, সন্ত্রাসবাদ, অপহরণ, স্থানীয় আইনের স্বেচ্ছাচারী প্রয়োগ, অপরাধ, নাগরিক অস্থিরতা এবং দুর্বল স্বাস্থ্যসেবার ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। তাই দেশটিতে ভ্রমণ এবং সেখানে অবস্থান না করতে মার্কিন নাগরিকদের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
ঘোষণায় আরও বলা হয়, ভেনেজুয়েলায় থাকা সব মার্কিন নাগরিক ও আইনগত স্থায়ী বাসিন্দাদের অবিলম্বে দেশ ছাড়তে জোরালো পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এই সতর্কবার্তা এল এমন এক সময়, যার কয়েক ঘণ্টা আগেই যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রাণঘাতী হামলায় অন্তত চারজন নিহত হয়েছে। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে একটি নৌকা লক্ষ্য করে মার্কিন বাহিনী হামলা চালায়। এতে চারজন নিহত হয়েছে বলে ইউএস সাউদার্ন কমান্ড এক বিবৃতিতে জানায়।
সামরিক কর্মকর্তাদের দাবি, আন্তর্জাতিক জলসীমায় চলাচলকারী এই নৌযানটি একটি ‘সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত সংগঠনের’ সঙ্গে যুক্ত। গোয়েন্দা তথ্যে জানা যায়, নৌকাটি পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরপথে অবৈধ মাদক পরিবহন করছিল। এক্সে দেওয়া পোস্টে সাউদার্ন কমান্ড জানায়, নৌকায় থাকা চার পুরুষ ‘মাদকসন্ত্রাসী’ নিহত হয়েছে। প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, বহু ইঞ্জিনবিশিষ্ট দ্রুতগতির নৌকাটি আচমকা একটি প্রবল বিস্ফোরণে আঘাত পেয়ে আগুনে ঘিরে যায়।
ঘটনাটি এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের বিস্তৃত মাদকবিরোধী সামরিক অভিযানের অংশ। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এই অভিযান নিয়ে সমালোচনা বেড়েছে। কারণ, এতে নিহতের সংখ্যা এখন ৮৫-এর বেশি ছাড়িয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাড়তে থাকা সামরিক উত্তেজনার জেরে একযোগে ছয়টি বড় আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনের অবতরণ ও উড্ডয়নের অনুমতি বাতিল করেছে ভেনেজুয়েলা। এর আগে মার্কিন সতর্কবার্তার পরিপ্রেক্ষিতে ভেনেজুয়েলার কারাকাসগামী ফ্লাইটগুলো স্থগিত করেছিল এই এয়ারলাইনগুলো। পরে ভেনেজুয়েলা তাদের ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়। সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় ২৭ নভেম্বর থেকে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছে।
নিষিদ্ধ হওয়া এয়ারলাইনগুলো হলো—আইবেরিয়া, টিএপি পর্তুগাল, গোল, লাতাম, অ্যাভিয়াঙ্কা এবং টার্কিশ এয়ারলাইনস। ভেনেজুয়েলার এই সিদ্ধান্তে হাজারো যাত্রী বিপাকে পড়েছেন। তবে কিছু ছোট ছোট এয়ারলাইন এখনো দেশটিতে যাতায়াত করছে।
সম্প্রতি ক্যারিবিয়ান সাগরে ভেনেজুয়েলার উপকূলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি ঘিরে এই উত্তেজনার সূত্রপাত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার উপকূলীয় এলাকায় ১৫ হাজার সেনা এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমানবাহী জাহাজ ইউএসএস জেরাল্ড ফোর্ড মোতায়েন করেছে। ওয়াশিংটন বলছে, এই অভিযান মাদকবিরোধী তৎপরতার অংশ। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাদকবিরোধী অভিযানে এত বড় সামরিক উপস্থিতি সাধারণত দেখা যায় না।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বা স্টেট ডিপার্টমেন্ট ভেনেজুয়েলায় ভ্রমণ নিয়ে নতুন করে কঠোর সতর্কতা জারি করেছে। দেশটিতে থাকা সব মার্কিন নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দাদের অবিলম্বে দেশটি ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। নিরাপত্তা হুমকি দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্টেট ডিপার্টমেন্ট এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এই নির্দেশনা দিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ভেনেজুয়েলায় ভুলভাবে আটক হওয়া, আটক অবস্থায় নির্যাতন, সন্ত্রাসবাদ, অপহরণ, স্থানীয় আইনের স্বেচ্ছাচারী প্রয়োগ, অপরাধ, নাগরিক অস্থিরতা এবং দুর্বল স্বাস্থ্যসেবার ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। তাই দেশটিতে ভ্রমণ এবং সেখানে অবস্থান না করতে মার্কিন নাগরিকদের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
ঘোষণায় আরও বলা হয়, ভেনেজুয়েলায় থাকা সব মার্কিন নাগরিক ও আইনগত স্থায়ী বাসিন্দাদের অবিলম্বে দেশ ছাড়তে জোরালো পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এই সতর্কবার্তা এল এমন এক সময়, যার কয়েক ঘণ্টা আগেই যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রাণঘাতী হামলায় অন্তত চারজন নিহত হয়েছে। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে একটি নৌকা লক্ষ্য করে মার্কিন বাহিনী হামলা চালায়। এতে চারজন নিহত হয়েছে বলে ইউএস সাউদার্ন কমান্ড এক বিবৃতিতে জানায়।
সামরিক কর্মকর্তাদের দাবি, আন্তর্জাতিক জলসীমায় চলাচলকারী এই নৌযানটি একটি ‘সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত সংগঠনের’ সঙ্গে যুক্ত। গোয়েন্দা তথ্যে জানা যায়, নৌকাটি পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরপথে অবৈধ মাদক পরিবহন করছিল। এক্সে দেওয়া পোস্টে সাউদার্ন কমান্ড জানায়, নৌকায় থাকা চার পুরুষ ‘মাদকসন্ত্রাসী’ নিহত হয়েছে। প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, বহু ইঞ্জিনবিশিষ্ট দ্রুতগতির নৌকাটি আচমকা একটি প্রবল বিস্ফোরণে আঘাত পেয়ে আগুনে ঘিরে যায়।
ঘটনাটি এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের বিস্তৃত মাদকবিরোধী সামরিক অভিযানের অংশ। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এই অভিযান নিয়ে সমালোচনা বেড়েছে। কারণ, এতে নিহতের সংখ্যা এখন ৮৫-এর বেশি ছাড়িয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাড়তে থাকা সামরিক উত্তেজনার জেরে একযোগে ছয়টি বড় আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনের অবতরণ ও উড্ডয়নের অনুমতি বাতিল করেছে ভেনেজুয়েলা। এর আগে মার্কিন সতর্কবার্তার পরিপ্রেক্ষিতে ভেনেজুয়েলার কারাকাসগামী ফ্লাইটগুলো স্থগিত করেছিল এই এয়ারলাইনগুলো। পরে ভেনেজুয়েলা তাদের ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়। সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় ২৭ নভেম্বর থেকে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছে।
নিষিদ্ধ হওয়া এয়ারলাইনগুলো হলো—আইবেরিয়া, টিএপি পর্তুগাল, গোল, লাতাম, অ্যাভিয়াঙ্কা এবং টার্কিশ এয়ারলাইনস। ভেনেজুয়েলার এই সিদ্ধান্তে হাজারো যাত্রী বিপাকে পড়েছেন। তবে কিছু ছোট ছোট এয়ারলাইন এখনো দেশটিতে যাতায়াত করছে।
সম্প্রতি ক্যারিবিয়ান সাগরে ভেনেজুয়েলার উপকূলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি ঘিরে এই উত্তেজনার সূত্রপাত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার উপকূলীয় এলাকায় ১৫ হাজার সেনা এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমানবাহী জাহাজ ইউএসএস জেরাল্ড ফোর্ড মোতায়েন করেছে। ওয়াশিংটন বলছে, এই অভিযান মাদকবিরোধী তৎপরতার অংশ। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাদকবিরোধী অভিযানে এত বড় সামরিক উপস্থিতি সাধারণত দেখা যায় না।

ক্ষুব্ধ জনগণের প্রশ্ন—দেশের জনগণ যেখানে মৌলিক চাহিদার জোগান নিশ্চিত করতে গিয়েই হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে রাজনীতিবিদদের সন্তানেরা এত বিলাসবহুল জীবন কীভাবে যাপন করছে?
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
১৭ মিনিট আগে
আগামী বছরের অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা বয়কট করবে আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া। কারণ আয়োজকেরা ইসরায়েলকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দিয়েছে। দেশগুলোর অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেওয়া ঠিক হয়নি।
১ ঘণ্টা আগে
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
১ ঘণ্টা আগে