Ajker Patrika

ডেঙ্গু জীবনে একবারই হয়, এডিস মশা শুধু পায়ে কামড়ায়—এসব তথ্য ঠিক?

ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৯: ৩৩
ডেঙ্গু জীবনে একবারই হয়, এডিস মশা শুধু পায়ে কামড়ায়—এসব তথ্য ঠিক?

ডেঙ্গু বাংলাদেশের মানুষের কাছে আতঙ্কের অপর নাম। এডিস মশাবাহিত এই জ্বর গত দুই বছরে দেশে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১ হাজার ৬৫২ জনের মৃত্যুর সরকারি তথ্য আছে। অথচ চার বছর আগে ২০১৯ সালে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৭৯। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সংখ্যাও তিন গুণ বেড়ে ৩ লাখ ছাড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্কের কারণে ডেঙ্গু নিয়ে মানুষের মধ্যে নানা ধারণা ছড়িয়ে পড়েছে, যার অনেকগুলোই সঠিক নয়। ইন্টারনেট ও তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে সেই সব ধারণা ছড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও। 

এসব ধারণার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-
১. এডিস মশা শুধু সকালে কামড়ায়
২. ডেঙ্গু জীবনে একবার হয়
৩. এডিস মশা শুধু পায়ে কামড়ায়
৪. ডেঙ্গু মশা আমাদের হাঁটুর সমপরিমাণ পর্যন্ত উড়তে পারে এবং নারিকেল তেল ডেঙ্গুর প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে
৫. প্লাটিলেট কমে গেলে পেঁপের পাতার রস খেলে ডেঙ্গু রোগীর উপকার হয়

১. এডিস মশা শুধু সকালে কামড়ায়
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডেঙ্গু নিয়ে প্রশ্নোত্তরবিষয়ক এক নিবন্ধে জানা যায়, এডিস এজিপ্টি প্রজাতির স্ত্রী মশার কামড়ে ডেঙ্গু হয়। এই মশা ডিম পাড়ার জন্য পানিভর্তি পাত্রের খোঁজে ৪০০ মিটার পর্যন্ত উড়তে পারে এবং সাধারণত মানুষের বাসস্থানের কাছাকাছিই  থাকে। এডিস এজিপ্টি প্রজাতির মশা দিনের বেলা কামড়ায়। তাদের কামড়ানোর হার সবচেয়ে বেশি থাকে সকালে এবং সূর্যাস্তের আগে। শিশুর অধিকার রক্ষা ও কল্যাণে কাজ করা জাতিসংঘের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইউনিসেফ জানায়, এডিস মশা সাধারণত দিনে কামড়ায়। বিশেষ করে সূর্যোদয়ের পরে ২ ঘণ্টা ও সূর্যাস্তের পূর্বে ২ ঘণ্টা এডিস মশা কামড়ানোর সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সময়। 

সিঙ্গাপুরের সরকারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল এজেন্সি ডেঙ্গু মশার কামড়বিষয়ক এক প্রশ্নোত্তর পর্বে জানায়, এডিস মশা সাধারণত দিনের বেলায় কামড়ায় এবং দিনের আলোয় সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে; বিশেষ করে সূর্যোদয়ের পরপর এবং সূর্যাস্তের আগে। তবে এডিস মশা  রাতেও কামড়াতে পারে, যদি এটি কৃত্রিম আলোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। 

যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই রাজ্যের হাওয়াই স্টেট ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ দেশটির সরকারি স্বাস্থ্য সংস্থা সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের বরাত দিয়ে একই তথ্য জানায়। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, এডিস মশা সাধারণত দিনের বেলা কামড়ায়। বিশেষ করে  সূর্যোদয়ের দুই ঘণ্টা পর পর্যন্ত ও সূর্যাস্তের পূর্বে এই জাতের মশা বেশি সক্রিয় থাকে। তবে রাতেও আলোকোজ্জ্বল স্থানে এটি কামড়াতে পারে।  

অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, এডিস মশা কেবল সকাল বেলায়ই কামড়ায় না। এই জাতের মশা দিনের শুরুর ভাগ ও শেষভাগে বেশি সক্রিয় থাকে। আবার ক্ষেত্রবিশেষে রাতের বেলাও কামড়াতে পারে। 

২. ডেঙ্গু জীবনে একবার হয়
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন ডেঙ্গুবিষয়ক প্রচলিত ধারণাগুলো প্রসঙ্গে এক প্রতিবেদনে জানায়, এক ব্যক্তি জীবনে একাধিকবার ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হতে পারেন। ভাইরাসের চারটি সেরোটাইপ বা ধরনের কারণে ডেঙ্গু জ্বর হতে পারে। ফলে কোনো ব্যক্তি ডেঙ্গু আক্রান্ত ও পরে সুস্থ হলে তার মধ্যে কেবল ওই ধরনেরই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে। পরে অন্য ধরনের ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যায়। 

দেশটির সরকারি স্বাস্থ্য সংস্থা সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন ডেঙ্গু সম্পর্কিত এক নিবন্ধে জানায়, এক ব্যক্তি জীবনে অন্তত চারবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হতে পারে। 

নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বিজ্ঞানবিষয়ক জার্নাল সায়েন্স ডিরেক্টে প্রকাশিত ডেঙ্গু জ্বর সংক্রান্ত এক নিবন্ধ থেকে জানা যায়, ডেঙ্গু জ্বর চার ধরনের ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে। কেউ যখন এই চার ভাইরাসের কোনো একটিতে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে ওঠে, তখন তার মধ্যে ওই ভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা গড়ে ওঠে। তবে সে বাকি তিন ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। অর্থাৎ কোনো মানুষ তার জীবদ্দশায় অন্তত চারবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হতে পারে।  

৩. এডিস মশা হাঁটুর ওপর কামড়াতে পারে না, শুধু পায়ে কামড়ায়
যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই রাজ্যের হাওয়াই স্টেট ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ দেশটির সরকারি স্বাস্থ্য সংস্থা সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের বরাত দিয়ে জানায়, এডিস মশা কেবল পায়ে না, মানুষের কনুইতেও কামড়াতে পারে। এডিস মশার কামড় প্রতিরোধে ইউনিসেফ তাই ঢিলেঢালা পোশাক পরার পরামর্শ দেয়, যা হাত ও পা ঢেকে রাখে। 

ইন্টারন্যাশনাল ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউটের ক্লিনিক্যাল, অ্যাসেসমেন্ট, রেগুলেটরি, ইভালুয়েশনের উপ-মহাপরিচালক ড. আনহ ওয়ার্টেল এএফপি ফ্যাক্টচেককে বলেন, শুধু পায়ে বা হাঁটুর ওপরে কামড়াতে পারে না—এমন দাবি সঠিক নয়।  

ফিলিপাইন ম্যানিলার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট অব মলিকুলার বায়োলজি অ্যান্ড বায়োটেকনোলজির পরিচালক এবং পিটার্সবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোবাল হেলথের সহযোগী অধ্যাপক ড. অ্যাডসেল সালভানাও  এএফপি ফ্যাক্টচেককে বলেন, এডিস মশা সাধারণত নিচ দিয়ে ওড়ে এবং দিনে কামড়ায়। তবে এই মশা কোনো সমস্যা ছাড়াই হাঁটুর ওপর কামড়াতে পারে। 

তিনি বলেন, মশার উড়তে পারার উচ্চতা থেকে এই ভুল ধারণার সম্ভাব্য উৎপত্তি। একসময় মনে করা হতো, মশা ২ হাজার মিটারের বেশি ওপরে উড়তে পারে না। কিন্তু বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ার কারণে এখন তারও ওপরে মশার অস্তিত্ব পাওয়া যায়।

৪. নারিকেল তেল ডেঙ্গুর প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডেঙ্গুবিষয়ক এক প্রতিবেদনে জানায়, ডেঙ্গু জ্বরের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ভ্যাকসিন বা অ্যান্টিভাইরাল চিকিৎসা নেই। জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া হয়। ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে অ্যাসপিরিন এবং নন-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্রেমেটরি ড্রাগ (ব্যথা, জ্বর, প্রদাহ কমায় এমন ওষুধ) যেমন, আইবুপ্রোফেন এড়ানো উচিত। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ফিলিপাইনের ম্যালেরিয়া ও অন্যান্য ভাইরাসবাহিত এবং পরজীবী রোগের মেডিকেল অফিসার ডা. গাওরি লোকু গ্যালাপ্যাথি এএফপিকে বলেন, নারিকেল তেল অ্যান্টিবায়োটিক নয়। এটি ডেঙ্গু প্রতিরোধ বা নিরাময় করতে পারে এমন কোনো প্রমাণ নেই।

ড. অ্যাডসেল সালভানা বলেন, নারিকেল  তেল ডেঙ্গু প্রতিরোধ বা নিরাময় করতে পারে এমন কোনো নির্ভরযোগ্য বৈজ্ঞানিক তথ্য নেই। মশার কামড় থেকে ত্বকের সুরক্ষায় যেকোনো তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে সেগুলোর কোনো বিশ্বাসযোগ্য বা ব্যবহারিক প্রমাণ নেই। 

৫. পেঁপের পাতার রস খেলে ডেঙ্গু রোগীর উপকার হয়
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন ডেঙ্গু জ্বরে পেঁপের পাতার রস খাওয়ানো প্রসঙ্গে জানায়, অনেকেই বিশ্বাস করেন পেঁপে পাতার রস খেলে ডেঙ্গু জ্বর নিরাময় করা যায়। ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসায় পেঁপে পাতার রসের ঔষধি উপকারিতা মূলত সিঙ্গাপুরে প্রচলিত একটি ধারণা। কারণ কেউ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে, তার রক্তে প্লাটিলেটের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে কমে যায়। প্লাটিলেট রক্ত ​​জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। এভাবে প্লাটিলেট কমে যাওয়া ডেঙ্গু রোগীদের অভ্যন্তরীণ রক্তপাতের ঝুঁকি বেশি বাড়ায়। পেঁপে পাতার রস প্লাটিলেট কাউন্ট বাড়াতে সাহায্য করে। তবে পেঁপে পাতার রস ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসায় সাহায্য করে এমন কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। প্রকৃতপক্ষে ডেঙ্গু জ্বরের কোনো চিকিৎসা নেই। 

ডেঙ্গু প্রতিরোধে পেঁপে পাতার রস ভূমিকা রাখে, এই দাবির কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই বলে ২০১৯ সালে বিবিসিকে জানান ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, ডেঙ্গু নিরসনে পেঁপে পাতার রসের ভূমিকার পরীক্ষা পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় হয়েছে, কিন্তু পুরোপুরি প্রমাণিত হয়নি যে এটি ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে কার্যকর। 

সিদ্ধান্ত 
ওপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট হয়, ডেঙ্গু জ্বর ও প্রতিরোধ নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রচলিত যেসব ধারণা আছে, সেগুলো অবৈজ্ঞানিক। প্রকৃতপক্ষে ডেঙ্গু জ্বরের কোনো চিকিৎসা যেমন নেই, তেমনি মানুষ একাধিকবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হতে পারে। এডিস মশা মূলত মানুষের শরীরের অনাবৃত যেকোনো অংশে দিনের বেলায় কামড়াতে পারে। ক্ষেত্রবিশেষে এডিস মশা রাতের বেলায়ও কামড়াতে পারে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ২১
আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া ফটোকার্ড।

আজকের পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ধরনের কোনো খবর আজকের পত্রিকাতে কখনোই প্রকাশিত হয়নি। ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো ব্যবহার করা হলেও এর ভেতরের খবর ও শিরোনাম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

আজকের পত্রিকা সর্বদা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

বর্তমান সময়ে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড ও খবর নিয়ে পাঠকদের সচেতনতা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক খবর যাচাই করার জন্য অনুরোধ রইল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মধ্যরাতে মাঝরাস্তায় বাঘকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে মাতাল—ভাইরাল ভিডিওটি ফেক

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ৫৪
মধ্যরাতে মাঝরাস্তায় বাঘকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে মাতাল—ভাইরাল ভিডিওটি ফেক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করছেন, একটি সিসিটিভি ফুটেজ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ এলাকার। ওই ব্যক্তি দেশীয় মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তিনি এতটা মাতাল ছিলেন যে বাঘকেও মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাঘ অবশ্য তাঁর হাতে মদ্যপানে রাজি হয়নি! পরে ওই বাঘটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। বাঘটি ওই ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করেনি।

বাঘকে বোতল থেকে মদ খাওয়ার দাবি করা ভিডিওর ক্যাপশন, যেখান থেকেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ছবি: সংগৃহীত
বাঘকে বোতল থেকে মদ খাওয়ার দাবি করা ভিডিওর ক্যাপশন, যেখান থেকেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ছবি: সংগৃহীত

ভিডিওটি দেখে অনেকেই বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন—কেউ বিশ্বাস করেছেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনা; কেউ আবার মনে করছেন, এটি নিছকই কৃত্রিম ভিডিও। কিন্তু সত্যিটা কী? দ্য কুইন্টের সাংবাদিক অভিষেক আনন্দ ও ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করেছে।

বুম ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর তারা সরাসরি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে। দ্য কুইন্ট ও বুমকে সেওনি জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—তাদের জানামতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি যাচাই করা হয়। তিনি বলেন, ভিডিওটির সঙ্গে পেঞ্চ এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, বনের বাঘের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের যোগাযোগ সম্ভব নয়, যদি না বাঘটিকে বন্দী করে দীর্ঘদিন ধরে পোষ মানানো হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বনের বাঘ কখনো এমন আচরণ করে না, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’

ভিডিওর সন্দেহজনক দিক বা ভিজ্যুয়াল অসংগতি

বুম ভিডিওটির একটি উচ্চমানের সংস্করণ সংগ্রহ করে তাতে কিছু অস্বাভাবিক দিক লক্ষ করে। দেখা যায়, ভিডিওটির পটভূমির দৃশ্যে কিছু অস্পষ্ট বস্তু নড়াচড়া করছে, যা বাস্তব ভিডিওর মতো স্বাভাবিক নয়।

বাঘের মাথায় হাত রাখা ব্যক্তির আঙুলগুলো বিকৃতভাবে বাঁকানো, যেন সফটওয়্যারে তৈরি কৃত্রিম ছায়া। এমনকি হাতে থাকা বোতলের মুখ কখনো দেখা যায়, আবার মিলিয়ে যায়—এই ভিজ্যুয়াল অসংগতিগুলো ইঙ্গিত দেয়, এটি ধারণকৃত কোনো ফুটেজ নয়। সব মিলিয়ে ভিডিওটির একাধিক ফ্রেমে গ্রাফিক বিকৃতি স্পষ্ট।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ

এরপর ভিডিওটি পরীক্ষা করা হয় ডিপফেক-ও-মিটার নামের একটি উন্নত টুলে। এটি তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর মিডিয়া ফরেনসিকস ল্যাব। এই টুল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ বিশ্লেষণ করে দেখায়, এতে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নির্মাণের চিহ্ন’ রয়েছে।

এআই টুল দিয়ে ভিডিওটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি হওয়ার প্রমাণ পরীক্ষার ফলাফল। ছবি: সংগৃহীত
এআই টুল দিয়ে ভিডিওটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি হওয়ার প্রমাণ পরীক্ষার ফলাফল। ছবি: সংগৃহীত

এরপর বুম তাদের অংশীদার ডিপফেক অ্যানালাইসিস ইউনিটের সাহায্য নেয়। তারা ভিডিওটি পরীক্ষা করে ‘Is It AI’ এবং ‘AI Or Not’—নামক দুটি আলাদা টুলে। উভয় টুলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯ শতাংশ।

এই ফলাফল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিডিওর মানুষের সঙ্গে প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া এবং আলো-ছায়ার ত্রুটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি আসল নয়, বরং জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি দৃশ্য।

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বহু ব্যবহারকারী এটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রাজু পাতিল। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন দিনমজুর। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় বাঘটিকে আদর করছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছেন।

একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ টুলের ফলাফল এবং প্রশাসনিক যাচাই মিলিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—ভিডিওটি বাস্তব নয়, বরং এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম দৃশ্য। পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ভিডিওর কোনো অংশই পেঞ্চের নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাকিস্তানি জেনারেলকে ‘ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলযুক্ত বাংলাদেশের পতাকা উপহারে’র দাবি নিয়ে যা বলল সিএ ফ্যাক্ট চেক

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ০৩
ছবি : সিএ ফ্যাক্ট চেকিং
ছবি : সিএ ফ্যাক্ট চেকিং

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।

ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।

সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।

‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।

গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।

প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অরকার আক্রমণে তরুণী প্রশিক্ষকের মৃত্যু, ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে যা জানা গেল

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ৫৮
ভাইরাল ভিডিওটির দৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট
ভাইরাল ভিডিওটির দৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র‍্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।

ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।

ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে

ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।

ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই

ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র‍্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র‍্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।

অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

এক্স-এ ছড়িয়ে পড়া ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট
এক্স-এ ছড়িয়ে পড়া ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত

ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।

সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল

এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র‍্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।

কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়

বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।

কথিত জেসিকা র‍্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত