ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য পানি আবশ্যক। কিন্তু দিনে মানুষের কতটুকু পানি প্রয়োজন? দিনে ৮ গ্লাস পানি পান করা প্রয়োজন বলে একটা কথা চালু আছে। এর কি কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে? আসলেই কি একজন মানুষের এই পরিমাণ পানি পান করতে হয়, নাকি ব্যক্তিভেদে তা ভিন্ন হয়?
প্ৰথমেই জেনে নেওয়া যাক, ৮ গ্লাস পানি পান করার ধারণার সূত্রপাত কীভাবে হলো। যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসে ২০১৫ সালের ২৪ আগস্ট প্রচারিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এই তথ্যের সম্ভাব্য উৎপত্তি ১৯৪৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিলের ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন বোর্ডের একটি পরামর্শ থেকে। সেখানে বলা হয়, একজন মানুষের দৈনিক আড়াই লিটার পানি পান করা প্রয়োজন। তবে পাঠকেরা এ পরামর্শ থেকে যে বার্তা নিতে ভুল করেছিলেন, তা হলো ‘পানির এই পরিমাণের বেশির ভাগই প্রস্তুত খাবারে থাকে’।
তবে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রতিবেদন বলছে, শুধু প্রস্তুত খাবারেই নয়, সকল খাবারে; বিশেষ করে সবজি ও ফলেও পানির জোগান থাকে। এ ছাড়া জুস, চা ও কফি; এমনকি বিয়ার থেকেও একজন মানুষের দৈনন্দিনের পানির চাহিদা পূরণ হয়।
এ ছাড়া স্বাস্থ্য ও পুষ্টিবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথ লাইনে ২০২১ সালের ১২ অক্টোবর প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দিনে ৮ গ্লাস পানি পানের ধারণার সমর্থনে পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই; বরং পানির চাহিদা ব্যক্তিভেদে পরিবর্তিত হয়। সাধারণত সুস্বাস্থ্যের অধিকারী মানুষের জন্য সরাসরি এত বেশি পানি পানের প্রয়োজনীয়তা নেই। তবে পর্যাপ্ত পানি না পানের ফলে কেউ কেউ স্বল্পমাত্রায় পানিশূন্যতায় ভুগতে পারেন এবং এ কারণে দেহের ওজন ১-২ শতাংশ কমে যেতে পারে। এ পর্যায়ে যে কেউ মাথাব্যথা, অবসাদের মতো বিভিন্ন সমস্যায় ভুগতে পারেন। তবে এ জন্য কাউকে মেপে মেপে ৮ গ্লাস পানিই পান করতে হবে, ব্যাপারটি এমন নয়।
বিখ্যাত গবেষণা জার্নাল সায়েন্সে ২০২২ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত গবেষণামতে, বেশির ভাগ সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে দিনে আট গ্লাস পানি পান করা অপ্রয়োজনীয়; বরং পরামর্শটি আংশিকভাবে বিভ্রান্তিকর। কারণ, এটি আমাদের খাবার, কফি এবং চা-এর মতো অন্যান্য পানীয় থেকে পাওয়া পানির পরিমাণকে বিবেচনা করে না।
গবেষণা অনুযায়ী, মানুষের দেহে পানির চাহিদা ব্যক্তিভেদে পরিবর্তিত হয় এবং বয়স, লিঙ্গ, আকার, শারীরিক কার্যকলাপের মাত্রা এবং পরিবেশের মতো বিষয়গুলোর ওপর নির্ভর করে।
ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনসূত্রে জানা যায়, দিনে আট গ্লাস পানি পানের তত্ত্বের পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। ৮৮৩ জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ওপর চালানো যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের একটি সমীক্ষার উল্লেখ করা হয় এই প্রতিবেদনে। সমীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, নিয়মিতভাবে প্রতিদিন ছয় গ্লাসের কম পানি পান করেন এমন ২২৭ জনের মধ্যে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ানি স্টেট ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক তামারা হিউ-বাটলার সিএনএনকে বলেন, শরীর থেকে কতটুকু পানি বের হচ্ছে, তার ওপর নির্ভর করে ব্যক্তিবিশেষের পানির চাহিদা। পানির প্রয়োজনীয়তা মূলত তিন বিষয়ের ওপর নির্ভর করে—
অন্যদিকে অতিরিক্ত পানি পান কখনো কখনো স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। কেউ অতিরিক্ত পানি পান করলে তার কিডনি অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশন করতে পারে না। ফলে শরীরের সোডিয়াম উপাদান দ্রবীভূত হয়ে যেতে পারে, যেটাকে হাইপোনেট্রেমিয়া বলা হয় এবং এটি জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
একজন মানুষের দৈনিক পানির চাহিদা কতটুকু?
মানুষ শ্বাস-প্রশ্বাস, ঘাম, মূত্রত্যাগসহ প্রতিনিয়ত নানাভাবে দেহ থেকে পানি নিষ্কাশন করে। আর তাই শরীরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে আমাদের পানিসমৃদ্ধ খাদ্য ও পানীয় পানের মাধ্যমে শরীরে পানির জোগান স্বাভাবিক রাখতে হয়।
মানুষের পানি গ্রহণের একটি পরিমাপ ঠিক করে দিয়েছে আমেরিকার ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড মেডিসিন। প্রতিষ্ঠানটির মতে, একজন পুরুষের দিনে সাড়ে ১৫ কাপ বা ৩ দশমিক ৭ লিটার ও একজন নারীর সাড়ে ১১ কাপ বা ২ দশমিক ৭ লিটার তরল প্রয়োজন। যা পানি, অন্যান্য পানীয় ও খাদ্য থেকে মানুষ পেয়ে থাকে। একজন মানুষের প্রতিদিনের পানির চাহিদার প্রায় ২০ শতাংশ তরল সাধারণত খাবার থেকে আসে এবং বাকিটা আসে বিভিন্ন পানীয় থেকে।
খাবার যেভাবে পানির চাহিদা পূরণ করে
আমরা প্রতিনিয়ত যেসব খাবার গ্রহণ করি, সেসব খাবারেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পানি থাকে। তবে আমরা খাবার থেকে কতটুকু পানি পাব, তা নির্ভর করে আমরা কত পানিসমৃদ্ধ খাবার খাচ্ছি তার ওপর। ফল ও শাকসবজি বিশেষ পানিসমৃদ্ধ। মাংস, মাছ ও ডিমের মতো খাবারেও তুলনামূলকভাবে ভালো পরিমাণে পানির সংস্থান থাকে। যেমন, ডিমে পানির পরিমাণ ৭৬ শতাংশ, তরমুজে ৯২ শতাংশ, কমলায় ৮৮ শতাংশ, শসায় ৯৫ শতাংশ, টমেটোতে ৯৪ শতাংশ, একটি মাঝারি টমেটোতে প্রায় অর্ধেক কাপ বা ১১৮ মিলিলিটার পানি পাওয়া যায়, শীতকালীন সবজি ফুলকপিতে পানির পরিমাণ ৯২ শতাংশ, এক কাপ বা ১০০ গ্রাম ফুলকপি ৫৯ মিলিলিটারের বেশি পানি সরবরাহ করে থাকে, বাঁধাকপিতে পরিমাণ ৯২ শতাংশ। এ ছাড়া শরীরে পুষ্টি বিপাকের সময়ও অল্প পরিমাণে ‘মেটাবলিক ওয়াটার’ নামে একধরনের পানি উৎপন্ন হয়।
সিদ্ধান্ত
উক্ত তথ্যসমূহ থেকে প্রমাণিত হয়, একজন মানুষকে সরাসরি দৈনিক ৮ গ্লাস পানি পান করতে হবে, এই ধারণার পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এটি দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত ভূল ধারণা। কারণ, মানুষের পানির যে চাহিদা, তা সরাসরি পানি পান ছাড়াও মানুষের অন্যান্য খাবার, পানীয় থেকেও পূরণ হয়ে যায়।

স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য পানি আবশ্যক। কিন্তু দিনে মানুষের কতটুকু পানি প্রয়োজন? দিনে ৮ গ্লাস পানি পান করা প্রয়োজন বলে একটা কথা চালু আছে। এর কি কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে? আসলেই কি একজন মানুষের এই পরিমাণ পানি পান করতে হয়, নাকি ব্যক্তিভেদে তা ভিন্ন হয়?
প্ৰথমেই জেনে নেওয়া যাক, ৮ গ্লাস পানি পান করার ধারণার সূত্রপাত কীভাবে হলো। যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসে ২০১৫ সালের ২৪ আগস্ট প্রচারিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এই তথ্যের সম্ভাব্য উৎপত্তি ১৯৪৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিলের ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন বোর্ডের একটি পরামর্শ থেকে। সেখানে বলা হয়, একজন মানুষের দৈনিক আড়াই লিটার পানি পান করা প্রয়োজন। তবে পাঠকেরা এ পরামর্শ থেকে যে বার্তা নিতে ভুল করেছিলেন, তা হলো ‘পানির এই পরিমাণের বেশির ভাগই প্রস্তুত খাবারে থাকে’।
তবে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রতিবেদন বলছে, শুধু প্রস্তুত খাবারেই নয়, সকল খাবারে; বিশেষ করে সবজি ও ফলেও পানির জোগান থাকে। এ ছাড়া জুস, চা ও কফি; এমনকি বিয়ার থেকেও একজন মানুষের দৈনন্দিনের পানির চাহিদা পূরণ হয়।
এ ছাড়া স্বাস্থ্য ও পুষ্টিবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথ লাইনে ২০২১ সালের ১২ অক্টোবর প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দিনে ৮ গ্লাস পানি পানের ধারণার সমর্থনে পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই; বরং পানির চাহিদা ব্যক্তিভেদে পরিবর্তিত হয়। সাধারণত সুস্বাস্থ্যের অধিকারী মানুষের জন্য সরাসরি এত বেশি পানি পানের প্রয়োজনীয়তা নেই। তবে পর্যাপ্ত পানি না পানের ফলে কেউ কেউ স্বল্পমাত্রায় পানিশূন্যতায় ভুগতে পারেন এবং এ কারণে দেহের ওজন ১-২ শতাংশ কমে যেতে পারে। এ পর্যায়ে যে কেউ মাথাব্যথা, অবসাদের মতো বিভিন্ন সমস্যায় ভুগতে পারেন। তবে এ জন্য কাউকে মেপে মেপে ৮ গ্লাস পানিই পান করতে হবে, ব্যাপারটি এমন নয়।
বিখ্যাত গবেষণা জার্নাল সায়েন্সে ২০২২ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত গবেষণামতে, বেশির ভাগ সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে দিনে আট গ্লাস পানি পান করা অপ্রয়োজনীয়; বরং পরামর্শটি আংশিকভাবে বিভ্রান্তিকর। কারণ, এটি আমাদের খাবার, কফি এবং চা-এর মতো অন্যান্য পানীয় থেকে পাওয়া পানির পরিমাণকে বিবেচনা করে না।
গবেষণা অনুযায়ী, মানুষের দেহে পানির চাহিদা ব্যক্তিভেদে পরিবর্তিত হয় এবং বয়স, লিঙ্গ, আকার, শারীরিক কার্যকলাপের মাত্রা এবং পরিবেশের মতো বিষয়গুলোর ওপর নির্ভর করে।
ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনসূত্রে জানা যায়, দিনে আট গ্লাস পানি পানের তত্ত্বের পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। ৮৮৩ জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ওপর চালানো যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের একটি সমীক্ষার উল্লেখ করা হয় এই প্রতিবেদনে। সমীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, নিয়মিতভাবে প্রতিদিন ছয় গ্লাসের কম পানি পান করেন এমন ২২৭ জনের মধ্যে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ানি স্টেট ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক তামারা হিউ-বাটলার সিএনএনকে বলেন, শরীর থেকে কতটুকু পানি বের হচ্ছে, তার ওপর নির্ভর করে ব্যক্তিবিশেষের পানির চাহিদা। পানির প্রয়োজনীয়তা মূলত তিন বিষয়ের ওপর নির্ভর করে—
অন্যদিকে অতিরিক্ত পানি পান কখনো কখনো স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। কেউ অতিরিক্ত পানি পান করলে তার কিডনি অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশন করতে পারে না। ফলে শরীরের সোডিয়াম উপাদান দ্রবীভূত হয়ে যেতে পারে, যেটাকে হাইপোনেট্রেমিয়া বলা হয় এবং এটি জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
একজন মানুষের দৈনিক পানির চাহিদা কতটুকু?
মানুষ শ্বাস-প্রশ্বাস, ঘাম, মূত্রত্যাগসহ প্রতিনিয়ত নানাভাবে দেহ থেকে পানি নিষ্কাশন করে। আর তাই শরীরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে আমাদের পানিসমৃদ্ধ খাদ্য ও পানীয় পানের মাধ্যমে শরীরে পানির জোগান স্বাভাবিক রাখতে হয়।
মানুষের পানি গ্রহণের একটি পরিমাপ ঠিক করে দিয়েছে আমেরিকার ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড মেডিসিন। প্রতিষ্ঠানটির মতে, একজন পুরুষের দিনে সাড়ে ১৫ কাপ বা ৩ দশমিক ৭ লিটার ও একজন নারীর সাড়ে ১১ কাপ বা ২ দশমিক ৭ লিটার তরল প্রয়োজন। যা পানি, অন্যান্য পানীয় ও খাদ্য থেকে মানুষ পেয়ে থাকে। একজন মানুষের প্রতিদিনের পানির চাহিদার প্রায় ২০ শতাংশ তরল সাধারণত খাবার থেকে আসে এবং বাকিটা আসে বিভিন্ন পানীয় থেকে।
খাবার যেভাবে পানির চাহিদা পূরণ করে
আমরা প্রতিনিয়ত যেসব খাবার গ্রহণ করি, সেসব খাবারেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পানি থাকে। তবে আমরা খাবার থেকে কতটুকু পানি পাব, তা নির্ভর করে আমরা কত পানিসমৃদ্ধ খাবার খাচ্ছি তার ওপর। ফল ও শাকসবজি বিশেষ পানিসমৃদ্ধ। মাংস, মাছ ও ডিমের মতো খাবারেও তুলনামূলকভাবে ভালো পরিমাণে পানির সংস্থান থাকে। যেমন, ডিমে পানির পরিমাণ ৭৬ শতাংশ, তরমুজে ৯২ শতাংশ, কমলায় ৮৮ শতাংশ, শসায় ৯৫ শতাংশ, টমেটোতে ৯৪ শতাংশ, একটি মাঝারি টমেটোতে প্রায় অর্ধেক কাপ বা ১১৮ মিলিলিটার পানি পাওয়া যায়, শীতকালীন সবজি ফুলকপিতে পানির পরিমাণ ৯২ শতাংশ, এক কাপ বা ১০০ গ্রাম ফুলকপি ৫৯ মিলিলিটারের বেশি পানি সরবরাহ করে থাকে, বাঁধাকপিতে পরিমাণ ৯২ শতাংশ। এ ছাড়া শরীরে পুষ্টি বিপাকের সময়ও অল্প পরিমাণে ‘মেটাবলিক ওয়াটার’ নামে একধরনের পানি উৎপন্ন হয়।
সিদ্ধান্ত
উক্ত তথ্যসমূহ থেকে প্রমাণিত হয়, একজন মানুষকে সরাসরি দৈনিক ৮ গ্লাস পানি পান করতে হবে, এই ধারণার পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এটি দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত ভূল ধারণা। কারণ, মানুষের পানির যে চাহিদা, তা সরাসরি পানি পান ছাড়াও মানুষের অন্যান্য খাবার, পানীয় থেকেও পূরণ হয়ে যায়।
ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য পানি আবশ্যক। কিন্তু দিনে মানুষের কতটুকু পানি প্রয়োজন? দিনে ৮ গ্লাস পানি পান করা প্রয়োজন বলে একটা কথা চালু আছে। এর কি কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে? আসলেই কি একজন মানুষের এই পরিমাণ পানি পান করতে হয়, নাকি ব্যক্তিভেদে তা ভিন্ন হয়?
প্ৰথমেই জেনে নেওয়া যাক, ৮ গ্লাস পানি পান করার ধারণার সূত্রপাত কীভাবে হলো। যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসে ২০১৫ সালের ২৪ আগস্ট প্রচারিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এই তথ্যের সম্ভাব্য উৎপত্তি ১৯৪৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিলের ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন বোর্ডের একটি পরামর্শ থেকে। সেখানে বলা হয়, একজন মানুষের দৈনিক আড়াই লিটার পানি পান করা প্রয়োজন। তবে পাঠকেরা এ পরামর্শ থেকে যে বার্তা নিতে ভুল করেছিলেন, তা হলো ‘পানির এই পরিমাণের বেশির ভাগই প্রস্তুত খাবারে থাকে’।
তবে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রতিবেদন বলছে, শুধু প্রস্তুত খাবারেই নয়, সকল খাবারে; বিশেষ করে সবজি ও ফলেও পানির জোগান থাকে। এ ছাড়া জুস, চা ও কফি; এমনকি বিয়ার থেকেও একজন মানুষের দৈনন্দিনের পানির চাহিদা পূরণ হয়।
এ ছাড়া স্বাস্থ্য ও পুষ্টিবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথ লাইনে ২০২১ সালের ১২ অক্টোবর প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দিনে ৮ গ্লাস পানি পানের ধারণার সমর্থনে পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই; বরং পানির চাহিদা ব্যক্তিভেদে পরিবর্তিত হয়। সাধারণত সুস্বাস্থ্যের অধিকারী মানুষের জন্য সরাসরি এত বেশি পানি পানের প্রয়োজনীয়তা নেই। তবে পর্যাপ্ত পানি না পানের ফলে কেউ কেউ স্বল্পমাত্রায় পানিশূন্যতায় ভুগতে পারেন এবং এ কারণে দেহের ওজন ১-২ শতাংশ কমে যেতে পারে। এ পর্যায়ে যে কেউ মাথাব্যথা, অবসাদের মতো বিভিন্ন সমস্যায় ভুগতে পারেন। তবে এ জন্য কাউকে মেপে মেপে ৮ গ্লাস পানিই পান করতে হবে, ব্যাপারটি এমন নয়।
বিখ্যাত গবেষণা জার্নাল সায়েন্সে ২০২২ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত গবেষণামতে, বেশির ভাগ সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে দিনে আট গ্লাস পানি পান করা অপ্রয়োজনীয়; বরং পরামর্শটি আংশিকভাবে বিভ্রান্তিকর। কারণ, এটি আমাদের খাবার, কফি এবং চা-এর মতো অন্যান্য পানীয় থেকে পাওয়া পানির পরিমাণকে বিবেচনা করে না।
গবেষণা অনুযায়ী, মানুষের দেহে পানির চাহিদা ব্যক্তিভেদে পরিবর্তিত হয় এবং বয়স, লিঙ্গ, আকার, শারীরিক কার্যকলাপের মাত্রা এবং পরিবেশের মতো বিষয়গুলোর ওপর নির্ভর করে।
ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনসূত্রে জানা যায়, দিনে আট গ্লাস পানি পানের তত্ত্বের পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। ৮৮৩ জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ওপর চালানো যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের একটি সমীক্ষার উল্লেখ করা হয় এই প্রতিবেদনে। সমীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, নিয়মিতভাবে প্রতিদিন ছয় গ্লাসের কম পানি পান করেন এমন ২২৭ জনের মধ্যে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ানি স্টেট ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক তামারা হিউ-বাটলার সিএনএনকে বলেন, শরীর থেকে কতটুকু পানি বের হচ্ছে, তার ওপর নির্ভর করে ব্যক্তিবিশেষের পানির চাহিদা। পানির প্রয়োজনীয়তা মূলত তিন বিষয়ের ওপর নির্ভর করে—
অন্যদিকে অতিরিক্ত পানি পান কখনো কখনো স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। কেউ অতিরিক্ত পানি পান করলে তার কিডনি অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশন করতে পারে না। ফলে শরীরের সোডিয়াম উপাদান দ্রবীভূত হয়ে যেতে পারে, যেটাকে হাইপোনেট্রেমিয়া বলা হয় এবং এটি জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
একজন মানুষের দৈনিক পানির চাহিদা কতটুকু?
মানুষ শ্বাস-প্রশ্বাস, ঘাম, মূত্রত্যাগসহ প্রতিনিয়ত নানাভাবে দেহ থেকে পানি নিষ্কাশন করে। আর তাই শরীরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে আমাদের পানিসমৃদ্ধ খাদ্য ও পানীয় পানের মাধ্যমে শরীরে পানির জোগান স্বাভাবিক রাখতে হয়।
মানুষের পানি গ্রহণের একটি পরিমাপ ঠিক করে দিয়েছে আমেরিকার ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড মেডিসিন। প্রতিষ্ঠানটির মতে, একজন পুরুষের দিনে সাড়ে ১৫ কাপ বা ৩ দশমিক ৭ লিটার ও একজন নারীর সাড়ে ১১ কাপ বা ২ দশমিক ৭ লিটার তরল প্রয়োজন। যা পানি, অন্যান্য পানীয় ও খাদ্য থেকে মানুষ পেয়ে থাকে। একজন মানুষের প্রতিদিনের পানির চাহিদার প্রায় ২০ শতাংশ তরল সাধারণত খাবার থেকে আসে এবং বাকিটা আসে বিভিন্ন পানীয় থেকে।
খাবার যেভাবে পানির চাহিদা পূরণ করে
আমরা প্রতিনিয়ত যেসব খাবার গ্রহণ করি, সেসব খাবারেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পানি থাকে। তবে আমরা খাবার থেকে কতটুকু পানি পাব, তা নির্ভর করে আমরা কত পানিসমৃদ্ধ খাবার খাচ্ছি তার ওপর। ফল ও শাকসবজি বিশেষ পানিসমৃদ্ধ। মাংস, মাছ ও ডিমের মতো খাবারেও তুলনামূলকভাবে ভালো পরিমাণে পানির সংস্থান থাকে। যেমন, ডিমে পানির পরিমাণ ৭৬ শতাংশ, তরমুজে ৯২ শতাংশ, কমলায় ৮৮ শতাংশ, শসায় ৯৫ শতাংশ, টমেটোতে ৯৪ শতাংশ, একটি মাঝারি টমেটোতে প্রায় অর্ধেক কাপ বা ১১৮ মিলিলিটার পানি পাওয়া যায়, শীতকালীন সবজি ফুলকপিতে পানির পরিমাণ ৯২ শতাংশ, এক কাপ বা ১০০ গ্রাম ফুলকপি ৫৯ মিলিলিটারের বেশি পানি সরবরাহ করে থাকে, বাঁধাকপিতে পরিমাণ ৯২ শতাংশ। এ ছাড়া শরীরে পুষ্টি বিপাকের সময়ও অল্প পরিমাণে ‘মেটাবলিক ওয়াটার’ নামে একধরনের পানি উৎপন্ন হয়।
সিদ্ধান্ত
উক্ত তথ্যসমূহ থেকে প্রমাণিত হয়, একজন মানুষকে সরাসরি দৈনিক ৮ গ্লাস পানি পান করতে হবে, এই ধারণার পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এটি দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত ভূল ধারণা। কারণ, মানুষের পানির যে চাহিদা, তা সরাসরি পানি পান ছাড়াও মানুষের অন্যান্য খাবার, পানীয় থেকেও পূরণ হয়ে যায়।

স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য পানি আবশ্যক। কিন্তু দিনে মানুষের কতটুকু পানি প্রয়োজন? দিনে ৮ গ্লাস পানি পান করা প্রয়োজন বলে একটা কথা চালু আছে। এর কি কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে? আসলেই কি একজন মানুষের এই পরিমাণ পানি পান করতে হয়, নাকি ব্যক্তিভেদে তা ভিন্ন হয়?
প্ৰথমেই জেনে নেওয়া যাক, ৮ গ্লাস পানি পান করার ধারণার সূত্রপাত কীভাবে হলো। যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসে ২০১৫ সালের ২৪ আগস্ট প্রচারিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এই তথ্যের সম্ভাব্য উৎপত্তি ১৯৪৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিলের ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন বোর্ডের একটি পরামর্শ থেকে। সেখানে বলা হয়, একজন মানুষের দৈনিক আড়াই লিটার পানি পান করা প্রয়োজন। তবে পাঠকেরা এ পরামর্শ থেকে যে বার্তা নিতে ভুল করেছিলেন, তা হলো ‘পানির এই পরিমাণের বেশির ভাগই প্রস্তুত খাবারে থাকে’।
তবে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রতিবেদন বলছে, শুধু প্রস্তুত খাবারেই নয়, সকল খাবারে; বিশেষ করে সবজি ও ফলেও পানির জোগান থাকে। এ ছাড়া জুস, চা ও কফি; এমনকি বিয়ার থেকেও একজন মানুষের দৈনন্দিনের পানির চাহিদা পূরণ হয়।
এ ছাড়া স্বাস্থ্য ও পুষ্টিবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথ লাইনে ২০২১ সালের ১২ অক্টোবর প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দিনে ৮ গ্লাস পানি পানের ধারণার সমর্থনে পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই; বরং পানির চাহিদা ব্যক্তিভেদে পরিবর্তিত হয়। সাধারণত সুস্বাস্থ্যের অধিকারী মানুষের জন্য সরাসরি এত বেশি পানি পানের প্রয়োজনীয়তা নেই। তবে পর্যাপ্ত পানি না পানের ফলে কেউ কেউ স্বল্পমাত্রায় পানিশূন্যতায় ভুগতে পারেন এবং এ কারণে দেহের ওজন ১-২ শতাংশ কমে যেতে পারে। এ পর্যায়ে যে কেউ মাথাব্যথা, অবসাদের মতো বিভিন্ন সমস্যায় ভুগতে পারেন। তবে এ জন্য কাউকে মেপে মেপে ৮ গ্লাস পানিই পান করতে হবে, ব্যাপারটি এমন নয়।
বিখ্যাত গবেষণা জার্নাল সায়েন্সে ২০২২ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত গবেষণামতে, বেশির ভাগ সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে দিনে আট গ্লাস পানি পান করা অপ্রয়োজনীয়; বরং পরামর্শটি আংশিকভাবে বিভ্রান্তিকর। কারণ, এটি আমাদের খাবার, কফি এবং চা-এর মতো অন্যান্য পানীয় থেকে পাওয়া পানির পরিমাণকে বিবেচনা করে না।
গবেষণা অনুযায়ী, মানুষের দেহে পানির চাহিদা ব্যক্তিভেদে পরিবর্তিত হয় এবং বয়স, লিঙ্গ, আকার, শারীরিক কার্যকলাপের মাত্রা এবং পরিবেশের মতো বিষয়গুলোর ওপর নির্ভর করে।
ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনসূত্রে জানা যায়, দিনে আট গ্লাস পানি পানের তত্ত্বের পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। ৮৮৩ জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ওপর চালানো যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের একটি সমীক্ষার উল্লেখ করা হয় এই প্রতিবেদনে। সমীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, নিয়মিতভাবে প্রতিদিন ছয় গ্লাসের কম পানি পান করেন এমন ২২৭ জনের মধ্যে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ানি স্টেট ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক তামারা হিউ-বাটলার সিএনএনকে বলেন, শরীর থেকে কতটুকু পানি বের হচ্ছে, তার ওপর নির্ভর করে ব্যক্তিবিশেষের পানির চাহিদা। পানির প্রয়োজনীয়তা মূলত তিন বিষয়ের ওপর নির্ভর করে—
অন্যদিকে অতিরিক্ত পানি পান কখনো কখনো স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। কেউ অতিরিক্ত পানি পান করলে তার কিডনি অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশন করতে পারে না। ফলে শরীরের সোডিয়াম উপাদান দ্রবীভূত হয়ে যেতে পারে, যেটাকে হাইপোনেট্রেমিয়া বলা হয় এবং এটি জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
একজন মানুষের দৈনিক পানির চাহিদা কতটুকু?
মানুষ শ্বাস-প্রশ্বাস, ঘাম, মূত্রত্যাগসহ প্রতিনিয়ত নানাভাবে দেহ থেকে পানি নিষ্কাশন করে। আর তাই শরীরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে আমাদের পানিসমৃদ্ধ খাদ্য ও পানীয় পানের মাধ্যমে শরীরে পানির জোগান স্বাভাবিক রাখতে হয়।
মানুষের পানি গ্রহণের একটি পরিমাপ ঠিক করে দিয়েছে আমেরিকার ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড মেডিসিন। প্রতিষ্ঠানটির মতে, একজন পুরুষের দিনে সাড়ে ১৫ কাপ বা ৩ দশমিক ৭ লিটার ও একজন নারীর সাড়ে ১১ কাপ বা ২ দশমিক ৭ লিটার তরল প্রয়োজন। যা পানি, অন্যান্য পানীয় ও খাদ্য থেকে মানুষ পেয়ে থাকে। একজন মানুষের প্রতিদিনের পানির চাহিদার প্রায় ২০ শতাংশ তরল সাধারণত খাবার থেকে আসে এবং বাকিটা আসে বিভিন্ন পানীয় থেকে।
খাবার যেভাবে পানির চাহিদা পূরণ করে
আমরা প্রতিনিয়ত যেসব খাবার গ্রহণ করি, সেসব খাবারেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পানি থাকে। তবে আমরা খাবার থেকে কতটুকু পানি পাব, তা নির্ভর করে আমরা কত পানিসমৃদ্ধ খাবার খাচ্ছি তার ওপর। ফল ও শাকসবজি বিশেষ পানিসমৃদ্ধ। মাংস, মাছ ও ডিমের মতো খাবারেও তুলনামূলকভাবে ভালো পরিমাণে পানির সংস্থান থাকে। যেমন, ডিমে পানির পরিমাণ ৭৬ শতাংশ, তরমুজে ৯২ শতাংশ, কমলায় ৮৮ শতাংশ, শসায় ৯৫ শতাংশ, টমেটোতে ৯৪ শতাংশ, একটি মাঝারি টমেটোতে প্রায় অর্ধেক কাপ বা ১১৮ মিলিলিটার পানি পাওয়া যায়, শীতকালীন সবজি ফুলকপিতে পানির পরিমাণ ৯২ শতাংশ, এক কাপ বা ১০০ গ্রাম ফুলকপি ৫৯ মিলিলিটারের বেশি পানি সরবরাহ করে থাকে, বাঁধাকপিতে পরিমাণ ৯২ শতাংশ। এ ছাড়া শরীরে পুষ্টি বিপাকের সময়ও অল্প পরিমাণে ‘মেটাবলিক ওয়াটার’ নামে একধরনের পানি উৎপন্ন হয়।
সিদ্ধান্ত
উক্ত তথ্যসমূহ থেকে প্রমাণিত হয়, একজন মানুষকে সরাসরি দৈনিক ৮ গ্লাস পানি পান করতে হবে, এই ধারণার পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এটি দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত ভূল ধারণা। কারণ, মানুষের পানির যে চাহিদা, তা সরাসরি পানি পান ছাড়াও মানুষের অন্যান্য খাবার, পানীয় থেকেও পূরণ হয়ে যায়।

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
০৩ নভেম্বর ২০২৫
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
০২ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
২৮ অক্টোবর ২০২৫
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫আজকের পত্রিকা ডেস্ক

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া ফটোকার্ড।
আজকের পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ধরনের কোনো খবর আজকের পত্রিকাতে কখনোই প্রকাশিত হয়নি। ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো ব্যবহার করা হলেও এর ভেতরের খবর ও শিরোনাম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
আজকের পত্রিকা সর্বদা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
বর্তমান সময়ে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড ও খবর নিয়ে পাঠকদের সচেতনতা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক খবর যাচাই করার জন্য অনুরোধ রইল।

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া ফটোকার্ড।
আজকের পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ধরনের কোনো খবর আজকের পত্রিকাতে কখনোই প্রকাশিত হয়নি। ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো ব্যবহার করা হলেও এর ভেতরের খবর ও শিরোনাম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
আজকের পত্রিকা সর্বদা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
বর্তমান সময়ে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড ও খবর নিয়ে পাঠকদের সচেতনতা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক খবর যাচাই করার জন্য অনুরোধ রইল।

সুস্বাস্থ্যের জন্য পানি আবশ্যক। কিন্তু দিনে মানুষের কতটুকু পানি প্রয়োজন? দিনে ৮ গ্লাস পানি পান প্রয়োজন বলে একটা কথা চালু আছে। এর কি কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে? আসলেই কি একজন মানুষের এই পরিমাণ পানি পান করতে হয়, নাকি ব্যক্তিভেদে তা ভিন্ন হয়?
১২ নভেম্বর ২০২৩
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
০২ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
২৮ অক্টোবর ২০২৫
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করছেন, একটি সিসিটিভি ফুটেজ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ এলাকার। ওই ব্যক্তি দেশীয় মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তিনি এতটা মাতাল ছিলেন যে বাঘকেও মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাঘ অবশ্য তাঁর হাতে মদ্যপানে রাজি হয়নি! পরে ওই বাঘটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। বাঘটি ওই ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করেনি।

ভিডিওটি দেখে অনেকেই বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন—কেউ বিশ্বাস করেছেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনা; কেউ আবার মনে করছেন, এটি নিছকই কৃত্রিম ভিডিও। কিন্তু সত্যিটা কী? দ্য কুইন্টের সাংবাদিক অভিষেক আনন্দ ও ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করেছে।
বুম ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর তারা সরাসরি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে। দ্য কুইন্ট ও বুমকে সেওনি জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—তাদের জানামতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি যাচাই করা হয়। তিনি বলেন, ভিডিওটির সঙ্গে পেঞ্চ এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, বনের বাঘের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের যোগাযোগ সম্ভব নয়, যদি না বাঘটিকে বন্দী করে দীর্ঘদিন ধরে পোষ মানানো হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বনের বাঘ কখনো এমন আচরণ করে না, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’
ভিডিওর সন্দেহজনক দিক বা ভিজ্যুয়াল অসংগতি
বুম ভিডিওটির একটি উচ্চমানের সংস্করণ সংগ্রহ করে তাতে কিছু অস্বাভাবিক দিক লক্ষ করে। দেখা যায়, ভিডিওটির পটভূমির দৃশ্যে কিছু অস্পষ্ট বস্তু নড়াচড়া করছে, যা বাস্তব ভিডিওর মতো স্বাভাবিক নয়।
বাঘের মাথায় হাত রাখা ব্যক্তির আঙুলগুলো বিকৃতভাবে বাঁকানো, যেন সফটওয়্যারে তৈরি কৃত্রিম ছায়া। এমনকি হাতে থাকা বোতলের মুখ কখনো দেখা যায়, আবার মিলিয়ে যায়—এই ভিজ্যুয়াল অসংগতিগুলো ইঙ্গিত দেয়, এটি ধারণকৃত কোনো ফুটেজ নয়। সব মিলিয়ে ভিডিওটির একাধিক ফ্রেমে গ্রাফিক বিকৃতি স্পষ্ট।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ
এরপর ভিডিওটি পরীক্ষা করা হয় ডিপফেক-ও-মিটার নামের একটি উন্নত টুলে। এটি তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর মিডিয়া ফরেনসিকস ল্যাব। এই টুল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ বিশ্লেষণ করে দেখায়, এতে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নির্মাণের চিহ্ন’ রয়েছে।

এরপর বুম তাদের অংশীদার ডিপফেক অ্যানালাইসিস ইউনিটের সাহায্য নেয়। তারা ভিডিওটি পরীক্ষা করে ‘Is It AI’ এবং ‘AI Or Not’—নামক দুটি আলাদা টুলে। উভয় টুলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯ শতাংশ।
এই ফলাফল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিডিওর মানুষের সঙ্গে প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া এবং আলো-ছায়ার ত্রুটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি আসল নয়, বরং জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি দৃশ্য।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বহু ব্যবহারকারী এটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রাজু পাতিল। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন দিনমজুর। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় বাঘটিকে আদর করছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছেন।
একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ টুলের ফলাফল এবং প্রশাসনিক যাচাই মিলিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—ভিডিওটি বাস্তব নয়, বরং এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম দৃশ্য। পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ভিডিওর কোনো অংশই পেঞ্চের নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করছেন, একটি সিসিটিভি ফুটেজ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ এলাকার। ওই ব্যক্তি দেশীয় মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তিনি এতটা মাতাল ছিলেন যে বাঘকেও মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাঘ অবশ্য তাঁর হাতে মদ্যপানে রাজি হয়নি! পরে ওই বাঘটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। বাঘটি ওই ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করেনি।

ভিডিওটি দেখে অনেকেই বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন—কেউ বিশ্বাস করেছেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনা; কেউ আবার মনে করছেন, এটি নিছকই কৃত্রিম ভিডিও। কিন্তু সত্যিটা কী? দ্য কুইন্টের সাংবাদিক অভিষেক আনন্দ ও ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করেছে।
বুম ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর তারা সরাসরি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে। দ্য কুইন্ট ও বুমকে সেওনি জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—তাদের জানামতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি যাচাই করা হয়। তিনি বলেন, ভিডিওটির সঙ্গে পেঞ্চ এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, বনের বাঘের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের যোগাযোগ সম্ভব নয়, যদি না বাঘটিকে বন্দী করে দীর্ঘদিন ধরে পোষ মানানো হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বনের বাঘ কখনো এমন আচরণ করে না, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’
ভিডিওর সন্দেহজনক দিক বা ভিজ্যুয়াল অসংগতি
বুম ভিডিওটির একটি উচ্চমানের সংস্করণ সংগ্রহ করে তাতে কিছু অস্বাভাবিক দিক লক্ষ করে। দেখা যায়, ভিডিওটির পটভূমির দৃশ্যে কিছু অস্পষ্ট বস্তু নড়াচড়া করছে, যা বাস্তব ভিডিওর মতো স্বাভাবিক নয়।
বাঘের মাথায় হাত রাখা ব্যক্তির আঙুলগুলো বিকৃতভাবে বাঁকানো, যেন সফটওয়্যারে তৈরি কৃত্রিম ছায়া। এমনকি হাতে থাকা বোতলের মুখ কখনো দেখা যায়, আবার মিলিয়ে যায়—এই ভিজ্যুয়াল অসংগতিগুলো ইঙ্গিত দেয়, এটি ধারণকৃত কোনো ফুটেজ নয়। সব মিলিয়ে ভিডিওটির একাধিক ফ্রেমে গ্রাফিক বিকৃতি স্পষ্ট।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ
এরপর ভিডিওটি পরীক্ষা করা হয় ডিপফেক-ও-মিটার নামের একটি উন্নত টুলে। এটি তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর মিডিয়া ফরেনসিকস ল্যাব। এই টুল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ বিশ্লেষণ করে দেখায়, এতে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নির্মাণের চিহ্ন’ রয়েছে।

এরপর বুম তাদের অংশীদার ডিপফেক অ্যানালাইসিস ইউনিটের সাহায্য নেয়। তারা ভিডিওটি পরীক্ষা করে ‘Is It AI’ এবং ‘AI Or Not’—নামক দুটি আলাদা টুলে। উভয় টুলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯ শতাংশ।
এই ফলাফল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিডিওর মানুষের সঙ্গে প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া এবং আলো-ছায়ার ত্রুটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি আসল নয়, বরং জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি দৃশ্য।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বহু ব্যবহারকারী এটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রাজু পাতিল। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন দিনমজুর। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় বাঘটিকে আদর করছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছেন।
একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ টুলের ফলাফল এবং প্রশাসনিক যাচাই মিলিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—ভিডিওটি বাস্তব নয়, বরং এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম দৃশ্য। পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ভিডিওর কোনো অংশই পেঞ্চের নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।’

সুস্বাস্থ্যের জন্য পানি আবশ্যক। কিন্তু দিনে মানুষের কতটুকু পানি প্রয়োজন? দিনে ৮ গ্লাস পানি পান প্রয়োজন বলে একটা কথা চালু আছে। এর কি কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে? আসলেই কি একজন মানুষের এই পরিমাণ পানি পান করতে হয়, নাকি ব্যক্তিভেদে তা ভিন্ন হয়?
১২ নভেম্বর ২০২৩
সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
০৩ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
২৮ অক্টোবর ২০২৫
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।
‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।
গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।
প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।
‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।
গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।
প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

সুস্বাস্থ্যের জন্য পানি আবশ্যক। কিন্তু দিনে মানুষের কতটুকু পানি প্রয়োজন? দিনে ৮ গ্লাস পানি পান প্রয়োজন বলে একটা কথা চালু আছে। এর কি কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে? আসলেই কি একজন মানুষের এই পরিমাণ পানি পান করতে হয়, নাকি ব্যক্তিভেদে তা ভিন্ন হয়?
১২ নভেম্বর ২০২৩
সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
০৩ নভেম্বর ২০২৫
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
০২ নভেম্বর ২০২৫
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।
ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে
ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই
ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত
ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।
সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল
এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
কথিত জেসিকা র্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।
ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে
ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই
ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত
ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।
সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল
এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
কথিত জেসিকা র্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

সুস্বাস্থ্যের জন্য পানি আবশ্যক। কিন্তু দিনে মানুষের কতটুকু পানি প্রয়োজন? দিনে ৮ গ্লাস পানি পান প্রয়োজন বলে একটা কথা চালু আছে। এর কি কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে? আসলেই কি একজন মানুষের এই পরিমাণ পানি পান করতে হয়, নাকি ব্যক্তিভেদে তা ভিন্ন হয়?
১২ নভেম্বর ২০২৩
সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
০৩ নভেম্বর ২০২৫
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
০২ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
২৮ অক্টোবর ২০২৫