Ajker Patrika

পরীক্ষার উপকরণ সরঞ্জামে টান

আজাদুল আদনান, ঢাকা
পরীক্ষার উপকরণ সরঞ্জামে টান

একদিকে ডলার সংকটের কারণে আমদানির ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে জটিলতা। অন্যদিকে কিছু মেডিকেল ডিভাইস ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার উপকরণের উৎপাদন ও সরবরাহ কমে গেছে। এতে সংকটের মুখে পড়ছে দেশের স্বাস্থ্য খাত। সংকট বেশি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে। রোগ নির্ণয়ের রি-এজেন্ট বা রাসায়নিক উপাদানের সংকট দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে বেসরকারি পর্যায়ে কিছু পরীক্ষা বন্ধ হয়ে গেছে।

সরকারি হাসপাতালে রাসায়নিক উপাদানের অভাব না থাকলেও হৃদযন্ত্রের ভালভ ও অক্সিজেনেটরের মতো মেডিকেল সরঞ্জাম সরবরাহে সংকট দেখা দিয়েছে। এসব ডিভাইস সরবরাহ করে থাকে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।

রি-এজেন্ট ও মেডিকেল সরঞ্জাম সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষায় ব্যবহৃত প্রায় সব উপাদানই আমদানিনির্ভর। হৃদযন্ত্রের ভালভ ও অক্সিজেনেটর আমদানি করা হয় যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান থেকে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে উৎপাদন কমে গেছে। পাশাপাশি ডলার সংকটের কারণে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে আমদানির চাহিদার অর্ধেকের মতো রিএজেন্ট আসছে। এ অবস্থায় সরকারের হস্তক্ষেপ চায় তারা।

জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে (এনআইসিভিডি) হৃদযন্ত্রের চিকিৎসায় প্রতি মাসে শতাধিক ভালভ লাগে। অস্ত্রোপচারের সময় দরকার হয় অক্সিজেনেটরের। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ভালভের চেয়ে অক্সিজেনেটরের চাহিদা তিন গুণ। কিন্তু চার মাসের বেশি সময় ধরে ভালভ ও অক্সিজেনেটরের সরবরাহ প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। এ পরিস্থিতিতে ১৪ নভেম্বর সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জবাবে তারা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কাঁচামাল আমদানিতে সংকটের কথা জানিয়েছে।

এনআইসিভিডির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীর জামাল উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে এই সংকট তৈরি হয়েছে।সরবরাহকারীদের চাপ দিয়ে যাচ্ছি। লিখিতভাবে কারণ জানতে চেয়েছিলাম। তারা চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কাঁচামাল আমদানিতে সংকট রয়েছে। ফলে উৎপাদন কমে যাওয়ায় ডিভাইস আমদানি কমে গেছে।’

সরকারি হাসপাতালে ভালভ ও অক্সিজেনেটর সরবরাহকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম স্পন্দন, ভিশন মেডিটেক, ইউনিমেড এবং কার্ডিও হেল্প লিমিটেড।

ইউনিমেডের পরিচালক মো. জামাল উদ্দিন বলেন, ‘যুদ্ধের কারণে রিএজেন্ট ও ডিভাইস উৎপাদন কমে যাওয়ার পাশাপাশি আমদানিতে ডলার সংকট সবচেয়ে বড় প্রভাব ফেলছে। তাই, সরবরাহ কমে গেছে। কবে নাগাদ ঠিক হবে বলা যাচ্ছে না। এক মাস হয় এলসি খোলার চেষ্টা করছি, এখনো হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংক যে আশ্বাসের কথা বলছে, সেগুলো কেবল কথার কথা।’

ক্যানসারের পরীক্ষা বন্ধ হওয়ার শঙ্কা
ধানমন্ডিতে আনোয়ারা মেডিকেল সার্ভিসেসে ক্যানসারের ১০টি পরীক্ষা হয়। রিএজেন্টের অভাবে এক মাস ধরে কোলন ক্যানসার শনাক্তকরণের পরীক্ষা হচ্ছে না। সংকট দেখা দিয়েছে স্তন ক্যানসার পরীক্ষার উপকরণও। বর্তমানে পরীক্ষা হচ্ছে আট মাস আগের রিএজেন্ট দিয়ে। নতুন করে সরবরাহ আদেশ না নেওয়ায় বাকি পরীক্ষাগুলো বন্ধ হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

প্রতিষ্ঠানের চিফ কনসালট্যান্ট অধ্যাপক ডা. গোলাম মোস্তফা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রোগ নির্ণয়ে দেশে সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিএজেন্ট বাইরের দেশ থেকে আনতে হয়। আমাদের এখানে ১০টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়; কিন্তু বর্তমানে ৮টি হচ্ছে। এলসি খুলতে না পারায় সরবরাহকারীরা রিএজেন্ট দিতে পারছে না। আগে যেটা এক মাসে পাওয়া যেত, এখন সেটি ছয় মাসেও হচ্ছে না।’

সিটি হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) সাঈদ মৃধা বলেন, ডলার সংকটের কারণে এক্স-রে ফিল্মসহ সব ধরনের রিএজেন্টের দাম বেড়েছে। সরবরাহকারীরা বলছে, রিএজেন্ট পাওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে। দামও অন্তত ৩০ শতাংশ বেড়েছে।

ইমপালস হেলথ সার্ভিসেস অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মমিনুল হক বলেন, ‘ডলার সংকটের কারণে রিএজেন্ট ঠিকমতো মিলছে না। সরবরাহকারীরা বলছে, এলসি খুলতে সমস্যা হচ্ছে। ডায়ালাইসিস, এক্স-রের মতো অধিকাংশ বড় পরীক্ষার রিএজেন্ট বাইরে থেকে আনতে হয়। সেগুলোর কাঁচামাল বেলারুশ, রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে আসে। কিন্তু কাঁচামাল না থাকায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।’

ধানমন্ডিতে ল্যাবএইড ডায়াগনস্টিকসে টিউবসহ বেশ কিছু রিঅ্যাজেন্টের সংকট তৈরি হয়েছে। আগের কিছু রিএজেন্ট দিয়েই পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। সেখানকার কো-অর্ডিনেশন সেলের কর্মকর্তা মো. কিতাব উদ্দিন সরকার বলেন, ‘বর্তমানে যা মজুত আছে তা দিয়ে সর্বোচ্চ ১৫ দিন চলবে। সরবরাহকারীরা বলছে, এলসি খুলতে না পারলে রিএজেন্ট আনা সম্ভব হবে না। আমরা নিজেরাও চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু পাইনি। এভাবে চললে সামনে সংকটে পড়তে হবে।’

বড় প্রতিষ্ঠানও চিন্তায় 
পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার প্রয়োজনের তুলনায় অন্তত তিন মাসের রিএজেন্ট মজুত রাখে। এই মুহূর্তে সমস্যা না হলেও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের অবস্থা দেখে তারাও দুশ্চিন্তায় আছে। প্রতিষ্ঠানটির ধানমন্ডি শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক অচিন্ত কুমার নাগ বলেন, ‘কিছু প্রতিষ্ঠানের সমস্যা হচ্ছে। আমাদের এখনো সে ধরনের অবস্থায় পৌঁছেনি। কিন্তু চলমান সংকটাবস্থা নিয়ে আমরা খুবই চিন্তিত।‌‌’

রাজধানীর আরও ছয়টি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে খোঁজ নিতে গেলে, সবাই রিএজেন্ট সংকটের কথা জানায়। এসব প্রতিষ্ঠানে রিএজেন্ট সরবরাহ করে বায়োটেক, বায়োট্রেট, এসবি সলুশন, ফিউচার বিজনেস, ওভারসিস মার্কেটিং করপোরেশন (ওএমসি) প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান। এসব কোম্পানির কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, গত জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে ঋণপত্র খুলতে জটিলতা শুরু হয়, যা এখন মারাত্মক রূপ নিয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে বেসরকারি চিকিৎসায় বিপর্যয় দেখা দিতে পারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপ লাগছে 
এসবি সলুশনের কর্মকর্তারা বলছেন, কয়েক মাস আগেও ঋণপত্র খুলতে তিন-চার দিন লাগত, এখন সেটি দুই মাস ঘুরেও হচ্ছে না।প্রতিষ্ঠানটির সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘কয়েক মাস ধরে এলসি জটিলতায় পড়তে হচ্ছে। যে ব্যাংকের মাধ্যমে সব সময় আমদানি করি, তারাও ফিরিয়ে দিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপ ছাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। তাতেও দীর্ঘ সময় লাগছে।’

ওএমসির প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. জুয়েল বলেন, ‘ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে ইনকিউবেটরসহ অনেক রিএজেন্ট সরবরাহ করে থাকি আমরা। এলসি খুলতে সমস্যা হওয়ায় এসব রিএজেন্ট আটকে যাচ্ছে। একই সঙ্গে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে কাঁচামাল সংকটে উৎপাদন কমে যাওয়ায় সরবরাহ কমেছে। এতে দামও বেড়েই চলেছে।’

ডায়াগনস্টিক রিএজেন্ট অ্যান্ড ইকুইপমেন্ট ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যসচিব আমিনুল ইসলাম আবু বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরেই এলসি খোলা যাচ্ছে না। সরকারের পক্ষ থেকে সমস্যা নেই বলা হলেও অতি জরুরি রিএজেন্ট আনতে সমস্যা হচ্ছে। অর্ডার দিয়েও পাচ্ছে না বহু প্রতিষ্ঠান। যার ১ লাখ ডলার প্রয়োজন, তাকে দিচ্ছে ১৫ হাজার। ব্যাংকগুলোতে ডলার সংকট, সেটা সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে শুরু করে সবারই জানা। এই সমস্যা না কাটলে অচিরেই বহু পরীক্ষা-নিরীক্ষা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।’

সরকারি হাসপাতালে রিএজেন্টের সংকট আছে কি না, জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালক মোহম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকার বলেন, সরকারিতে এখনো তেমন পরিস্থিতি হয়নি। বেসরকারিতে সংকট থাকতে পারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আশ্বাস
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জি এম আবুল কালাম আজাদ আজকের পত্রিকাকে অবশ্য বলেন, ‘ব্যাংকগুলোতে এখন ডলারের কিছুটা সংকট রয়েছে। এ জন্য বিলাসবহুল পণ্য আমদানিতে আমরা নিরুৎসাহিত করছি। কিন্তু স্বাস্থ্য হচ্ছে জরুরি খাত। এ ব্যাপারে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এখানে এলসি জটিলতায় খুলতে না পারলে পুরো খাতেই নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাই প্রতিষ্ঠানগুলো যে ব্যাংকের সঙ্গে যুক্ত, সেখানেই চেষ্টা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হলে আমাদের জানালে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

বাসস, ঢাকা  
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।

আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।

এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।

পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্‌ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।

মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

  • এবার ভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।
  • গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলে পল্লিগুলোতে ব্যস্ততা।
মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে বুধবার রাতে। এর আগে দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন জেলেরা। অনেকে দেখে নেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না। কেউ আবার জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করেন। ছবিটি কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের খুরেরমুখ এলাকার। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে বুধবার রাতে। এর আগে দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন জেলেরা। অনেকে দেখে নেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না। কেউ আবার জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করেন। ছবিটি কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের খুরেরমুখ এলাকার। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।

মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।

বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’

জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’

নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’

সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’

পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।

কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।

একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।

কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।

[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

  • ক্রয়াদেশের চালান নিয়ে বাড়ছে দুশ্চিন্তা
  • সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা
  • আজ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডেকেছে জরুরি বৈঠক
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২০ মে ২০২৫, ০২: ৪৪
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।

ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।

গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।

বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।

জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’

বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।

এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।

স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।

আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।

এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।

গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।

সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?

১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।

ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত