মোনায়েম সরকার

নির্বাচনের আগে একটা ‘কী হয় কী হয়’ অবস্থা থাকলেও ৭ জানুয়ারি ঠিকঠাকমতোই ভোট হয়েছে। নতুন সরকার দেশ শাসনের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে। দেশের একটি অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি চেয়েছিল ভোট যাতে না হয়, সে রকম পরিস্থিতি তৈরি করতে। তারা সেটি পারেনি। আওয়ামী লীগ চেয়েছিল নির্ধারিত সময়ে ভোট সম্পন্ন করতে এবং টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে। আওয়ামী লীগ সেটা পেরেছে। বাংলাদেশকে বলা হয় আন্দোলন-সংগ্রামের দেশ। আওয়ামী লীগের ঝুলিতে আন্দোলনে সফল হওয়ার অনেক রেকর্ড আছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে। বিএনপি জনপ্রিয় দল সন্দেহ নেই, কিন্তু তার ঝুলিতে আন্দোলনে সফল হওয়ার কোনো রেকর্ড নেই।
ভোটের আগে যুক্তরাষ্ট্রসহ কতিপয় পশ্চিমা দেশের ঢাকার কূটনীতিকদের দৌড়ঝাঁপ, র্যাবের ওপরে নিষেধাজ্ঞা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে সবক এবং বিএনপির নানা হুমকি-ধমকিতে কারও কারও মনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল, সরকার সামাল দিতে পারবে তো? সরকার যে কিছুটা চাপে ছিল, সেটা অস্বীকার করা যাবে না। পশ্চিমাদের চাপ সামাল দিয়ে বাংলাদেশ ভোট করতে পারবে কি না, ভোট হলেও সরকার টিকে থাকতে পারবে কি না, ভোটের পর নতুন নিষেধাজ্ঞা আসবে কি না—এমন সব প্রশ্ন জনমনে ঘুরপাক খাচ্ছিল। কিন্তু সবকিছু পেছনে ফেলে বাংলাদেশে নির্ধারিত সময়ে যেমন ভোট হয়েছে, তেমনি সরকারও গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রীও হয়েছেন শেখ হাসিনা। এরপর আমরা কী দেখলাম? যে পশ্চিমারা কয়েক মাস ধরে নানা কথা বলে আসছিল, তারা নির্বাচনের পর নতুন সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে যেমন যোগ দিয়েছে, তেমনি সরকার গঠনের পর মন্ত্রীরা অফিস শুরু করলে সেখানে গিয়েও সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের কথাই বলেছে।
কূটনীতিকদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আমি নির্বাচিত হয়েছি, আমার স্বজনেরা, বন্ধুরা অভিনন্দন জানাবে, এটা তো স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা (আওয়ামী লীগ) কারও অভিনন্দনের জন্য চাতক পাখির মতো অপেক্ষায় বসে নেই। একটা নির্বাচিত সরকার এত দেউলিয়া অবস্থায় পড়েছে, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই।’
টানা চারবার নির্বাচিত হওয়ার পর বিদেশি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি কতটা জরুরি—এমন এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘স্বীকৃতি, অভিনন্দন, এটা গণতন্ত্রের রীতিনীতিতে পরিণত হয়েছে। এখন নতুন প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি হলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ও বন্ধুরাষ্ট্রগুলো অভিনন্দন জানায়। এটা ভারত ও ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর বেলায় যেমন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বেলায়ও তেমনি।’
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার যে ঘোষণা দিয়েছে, সে প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেছেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি দেওয়ার অধিকার তাদের আছে। যদি কর্মসূচির নামে ২৮ অক্টোবরের মতো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, গাড়ি পোড়ানো, মানুষ পুড়িয়ে মারা ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করে, তবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। আমরাও রাজনৈতিকভাবে তা মোকাবিলা করব।’
অন্যদিকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘দেশের জনগণকে উপেক্ষিত রেখে সরকার যেকোনো উপায়ে বিদেশি রাষ্ট্রের সমর্থন জোগাড় করতে ব্যস্ত। দেশে দেশে ধরনা দিয়ে কাকুতি-মিনতি করছে।’ ডামি ভোটের নকল সরকার হীনম্মন্যতায় ভুগছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘ধরনা দিয়ে অভিনন্দনবার্তা আনা দেশের জন্য সম্মানজনক নয়। লুটের টাকায় ক্রয়কৃত অভিনন্দনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার বৈধতা পাওয়ার চেষ্টা বড় হাস্যকর।’
বিএনপির এই নেতা বলেছেন, ‘বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ আওয়ামী লীগের এই একদলীয় পাতানো নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেয়নি, ভোটকেন্দ্রে না যাওয়াই তার প্রমাণ। আমরা আর মামুদের ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত দ্বিতীয় বাকশাল সরকারের বৈধতা পাওয়ার প্রশ্নই আসে না। জনগণ এই নির্বাচন, এই অবৈধ সংসদ কখনো মেনে নেবে না। জনগণ আন্দোলনের মাধ্যমে এই ডামি সরকারের পতন ঘটাবে।’
শেখ হাসিনার বৈধতা পাওয়ার চেষ্টাকে ‘হাস্যকর’ উল্লেখ করে রুহুল কবির রিজভী যেসব কথা বলেছেন, তা-ও কম হাস্যকর নয়। নির্বাচনের পর সরকার ধরনা দিয়ে অভিনন্দনবার্তা সংগ্রহ করছে বলে মন্তব্য করে তিনি তাঁর আন্তর্জাতিক রাজনীতি সম্পর্কে জ্ঞানের সীমাবদ্ধতাই প্রকাশ করেছেন। পৃথিবীর কোনো দেশই খামোখা অন্য দেশের প্রতি আগ্রহ বা কৌতূহল দেখায় না। সবাই সবার গরজে বা স্বার্থচিন্তা থেকেই পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান নেয়। বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান বা কর্মসূচির প্রতি যদি বিদেশিদের সমর্থন থাকত, তাহলে পরিস্থিতি অন্য রকম হলেও হতে পারত।
আমেরিকা সেই ১৯৪৫ সাল থেকেই বিশ্বজুড়ে মোড়লিগিরি করে বেড়াচ্ছে। কোনো দেশে অপছন্দের সরকার হলে তাকে ফেলে দেওয়া ছিল আমেরিকার স্টাইল। তারপর নয়া সরকারের কাছ থেকে আমেরিকা যা চায়, তাই আদায় করে নিতে তৎপর হতো। নানা বিরূপ অভিজ্ঞতার কারণে মার্কিন ঘোড়েল কর্মকর্তারা সম্ভবত তাদের কৌশলে কিছুটা পরিবর্তন এনেছে। এখন তারা সরকার বদলানোর চেয়ে সরকারকে চাপে রেখে সুবিধা আদায়ের জন্য বিরোধীদের সঙ্গে একধরনের কূটকৌশলের খেলা খেলে। সরকারকে চাপে রাখে, বিরোধীদের মদদ দেয়, কিন্তু বিরোধীরা নিজেদের মুরোদ বা সক্ষমতা দেখাতে না পারলে আমেরিকা সক্ষমের পক্ষেই দাঁড়ায়। বাংলাদেশের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনা সক্ষমতা দেখাতে পারায় আমেরিকা বিএনপির নাম লিখেছে বাকির খাতায়। তা ছাড়া এটাও লক্ষণীয়, ক্ষমতা পাওয়ার পর থেকে বাইডেন প্রশাসন যে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়েই নাক গলাতে গেছে, সেখানেই সাফল্যের দেখা না পেয়ে বরং নাকানিচুবানি খেয়েছে। রাশিয়াকে ঘায়েল করার মতলবে ইউক্রেনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে আমেরিকার এখন নাজেহাল অবস্থা। বাইডেন নিজের দেশে ট্রাম্পকে সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। নিজের ভোটে জেতা যেখানে সংশয়মুক্ত নয়, সেখানে তিনি বা তাঁর প্রশাসন বিএনপিকে কীভাবে ক্ষমতায় বসায়? বাংলাদেশে বাইডেন প্রশাসনের নতুন এক্সপেরিমেন্টের ফল বিএনপি ঘরে তুলতে পারেনি। এই কঠিন সত্যিটি বিএনপি বিশ্বাস করতে বা মানতে পারছে না। সত্যটা স্বীকার করলে দলের ভেতরে ব্যাপক হতাশা নেমে আসার আশঙ্কায় বিএনপির নেতারা ‘মানুষ ভোট দিতে যায়নি’ বা পশ্চিমারা নির্বাচন মেনে নেয়নি ইত্যাদি বলে সান্ত্বনা খুঁজছেন।
আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরানো বিএনপির পক্ষে সম্ভব নয়। এটা বহুবার প্রমাণিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ বা সরকারের সবলতার দিকগুলো জানার পরও বিএনপি কেন নির্বাচন বর্জনের রাজনীতি আঁকড়ে আছে, তা কোনো রাজনীতি বিশেষজ্ঞের কাছেই পরিষ্কার নয়।
বিএনপির হয়েছে মুখে মাটি ঢুকে যাওয়ার মতো অবস্থা! মাটি আমাদের খাদ্য না। তাই মুখে কোনো কারণে মাটি পড়লে থু থু করে ফেলা আর বারবার মুখ ধুয়ে পরিশুদ্ধ করার চেষ্টা করা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। বিএনপিকে এখন তা-ই করতে হবে। বিএনপির আন্দোলন-সংগ্রামের কৌশল দেশের মানুষের ওপর নির্ভর করার চেয়ে আমেরিকানির্ভর করে সাজিয়ে চরম ভুল করেছে। একপেশে পশ্চিমা অতিনির্ভরতা তাদের খেয়ে ফেলেছে, সব শ্রম-ঘাম পানিতে মিশেছে।
বিএনপি বুঝতেই চায়নি যে বাইডেন প্রশাসন শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চায়নি। চেয়েছে সুবিধা আদায় করে নিতে। আমেরিকার কিছু নিজস্ব স্বার্থ আছে, সেটাই তাদের প্রায়োরিটি বা প্রথম বিবেচনাই শুধু নয়; সেই স্বার্থই বাইডেনের কাছে তার সব তৎপরতার একমাত্র নির্ধারক উপাদান। গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বাইডেনের পররাষ্ট্রনীতির চালিকাশক্তি বা ড্রাইভিং ফোর্স নয়। বাংলাদেশের ব্যাপারে আমেরিকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে চীন-ঠেকানোর কাজে কার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ তা থেকেই। ভারতকে উপেক্ষা করে বিএনপির স্বার্থ রক্ষা আমেরিকার কাছে বড় হতে পারে না, হয়ওনি। ভূরাজনৈতিক ঘটনা বিএনপির পক্ষে রাখার সুযোগ মূলত দলটির ছিল না।
বিএনপি ও বিএনপির প্রতি অনুগত বিশিষ্টজনেরা আওয়ামী লীগ সম্পর্কে নেতিবাচক সব বিশেষণ ব্যবহার করে টক শো বা ইউটিউবে চ্যানেল খুলে আয়রোজগার বাড়াতে পারলেও রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিএনপির অনুকূলে নেওয়ার ক্ষমতা রাখেন না। বিএনপিকে ভাঙা যায়নি, সেটা ঠিক। কিন্তু এই অক্ষত বিএনপি সরকারের জন্য কোনো চ্যালেঞ্জ নয়। বিএনপি এখন ভোটের বিশুদ্ধতা নিয়ে চর্চা করবে আর আওয়ামী লীগ সরকার চালাবে।২০১৮ সালের নির্বাচনে যখন বিএনপিকে সাতটি আসন দেওয়া হয়; তারপর দেশে কী হয়েছিল? সেবার যেমন কিছু হয়নি, এবারও হবে না।
লেখক: রাজনীতিবিদ, লেখক ও চেয়ারম্যান বিএফডিআর

নির্বাচনের আগে একটা ‘কী হয় কী হয়’ অবস্থা থাকলেও ৭ জানুয়ারি ঠিকঠাকমতোই ভোট হয়েছে। নতুন সরকার দেশ শাসনের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে। দেশের একটি অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি চেয়েছিল ভোট যাতে না হয়, সে রকম পরিস্থিতি তৈরি করতে। তারা সেটি পারেনি। আওয়ামী লীগ চেয়েছিল নির্ধারিত সময়ে ভোট সম্পন্ন করতে এবং টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে। আওয়ামী লীগ সেটা পেরেছে। বাংলাদেশকে বলা হয় আন্দোলন-সংগ্রামের দেশ। আওয়ামী লীগের ঝুলিতে আন্দোলনে সফল হওয়ার অনেক রেকর্ড আছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে। বিএনপি জনপ্রিয় দল সন্দেহ নেই, কিন্তু তার ঝুলিতে আন্দোলনে সফল হওয়ার কোনো রেকর্ড নেই।
ভোটের আগে যুক্তরাষ্ট্রসহ কতিপয় পশ্চিমা দেশের ঢাকার কূটনীতিকদের দৌড়ঝাঁপ, র্যাবের ওপরে নিষেধাজ্ঞা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে সবক এবং বিএনপির নানা হুমকি-ধমকিতে কারও কারও মনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল, সরকার সামাল দিতে পারবে তো? সরকার যে কিছুটা চাপে ছিল, সেটা অস্বীকার করা যাবে না। পশ্চিমাদের চাপ সামাল দিয়ে বাংলাদেশ ভোট করতে পারবে কি না, ভোট হলেও সরকার টিকে থাকতে পারবে কি না, ভোটের পর নতুন নিষেধাজ্ঞা আসবে কি না—এমন সব প্রশ্ন জনমনে ঘুরপাক খাচ্ছিল। কিন্তু সবকিছু পেছনে ফেলে বাংলাদেশে নির্ধারিত সময়ে যেমন ভোট হয়েছে, তেমনি সরকারও গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রীও হয়েছেন শেখ হাসিনা। এরপর আমরা কী দেখলাম? যে পশ্চিমারা কয়েক মাস ধরে নানা কথা বলে আসছিল, তারা নির্বাচনের পর নতুন সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে যেমন যোগ দিয়েছে, তেমনি সরকার গঠনের পর মন্ত্রীরা অফিস শুরু করলে সেখানে গিয়েও সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের কথাই বলেছে।
কূটনীতিকদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আমি নির্বাচিত হয়েছি, আমার স্বজনেরা, বন্ধুরা অভিনন্দন জানাবে, এটা তো স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা (আওয়ামী লীগ) কারও অভিনন্দনের জন্য চাতক পাখির মতো অপেক্ষায় বসে নেই। একটা নির্বাচিত সরকার এত দেউলিয়া অবস্থায় পড়েছে, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই।’
টানা চারবার নির্বাচিত হওয়ার পর বিদেশি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি কতটা জরুরি—এমন এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘স্বীকৃতি, অভিনন্দন, এটা গণতন্ত্রের রীতিনীতিতে পরিণত হয়েছে। এখন নতুন প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি হলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ও বন্ধুরাষ্ট্রগুলো অভিনন্দন জানায়। এটা ভারত ও ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর বেলায় যেমন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বেলায়ও তেমনি।’
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার যে ঘোষণা দিয়েছে, সে প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেছেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি দেওয়ার অধিকার তাদের আছে। যদি কর্মসূচির নামে ২৮ অক্টোবরের মতো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, গাড়ি পোড়ানো, মানুষ পুড়িয়ে মারা ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করে, তবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। আমরাও রাজনৈতিকভাবে তা মোকাবিলা করব।’
অন্যদিকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘দেশের জনগণকে উপেক্ষিত রেখে সরকার যেকোনো উপায়ে বিদেশি রাষ্ট্রের সমর্থন জোগাড় করতে ব্যস্ত। দেশে দেশে ধরনা দিয়ে কাকুতি-মিনতি করছে।’ ডামি ভোটের নকল সরকার হীনম্মন্যতায় ভুগছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘ধরনা দিয়ে অভিনন্দনবার্তা আনা দেশের জন্য সম্মানজনক নয়। লুটের টাকায় ক্রয়কৃত অভিনন্দনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার বৈধতা পাওয়ার চেষ্টা বড় হাস্যকর।’
বিএনপির এই নেতা বলেছেন, ‘বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ আওয়ামী লীগের এই একদলীয় পাতানো নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেয়নি, ভোটকেন্দ্রে না যাওয়াই তার প্রমাণ। আমরা আর মামুদের ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত দ্বিতীয় বাকশাল সরকারের বৈধতা পাওয়ার প্রশ্নই আসে না। জনগণ এই নির্বাচন, এই অবৈধ সংসদ কখনো মেনে নেবে না। জনগণ আন্দোলনের মাধ্যমে এই ডামি সরকারের পতন ঘটাবে।’
শেখ হাসিনার বৈধতা পাওয়ার চেষ্টাকে ‘হাস্যকর’ উল্লেখ করে রুহুল কবির রিজভী যেসব কথা বলেছেন, তা-ও কম হাস্যকর নয়। নির্বাচনের পর সরকার ধরনা দিয়ে অভিনন্দনবার্তা সংগ্রহ করছে বলে মন্তব্য করে তিনি তাঁর আন্তর্জাতিক রাজনীতি সম্পর্কে জ্ঞানের সীমাবদ্ধতাই প্রকাশ করেছেন। পৃথিবীর কোনো দেশই খামোখা অন্য দেশের প্রতি আগ্রহ বা কৌতূহল দেখায় না। সবাই সবার গরজে বা স্বার্থচিন্তা থেকেই পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান নেয়। বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান বা কর্মসূচির প্রতি যদি বিদেশিদের সমর্থন থাকত, তাহলে পরিস্থিতি অন্য রকম হলেও হতে পারত।
আমেরিকা সেই ১৯৪৫ সাল থেকেই বিশ্বজুড়ে মোড়লিগিরি করে বেড়াচ্ছে। কোনো দেশে অপছন্দের সরকার হলে তাকে ফেলে দেওয়া ছিল আমেরিকার স্টাইল। তারপর নয়া সরকারের কাছ থেকে আমেরিকা যা চায়, তাই আদায় করে নিতে তৎপর হতো। নানা বিরূপ অভিজ্ঞতার কারণে মার্কিন ঘোড়েল কর্মকর্তারা সম্ভবত তাদের কৌশলে কিছুটা পরিবর্তন এনেছে। এখন তারা সরকার বদলানোর চেয়ে সরকারকে চাপে রেখে সুবিধা আদায়ের জন্য বিরোধীদের সঙ্গে একধরনের কূটকৌশলের খেলা খেলে। সরকারকে চাপে রাখে, বিরোধীদের মদদ দেয়, কিন্তু বিরোধীরা নিজেদের মুরোদ বা সক্ষমতা দেখাতে না পারলে আমেরিকা সক্ষমের পক্ষেই দাঁড়ায়। বাংলাদেশের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনা সক্ষমতা দেখাতে পারায় আমেরিকা বিএনপির নাম লিখেছে বাকির খাতায়। তা ছাড়া এটাও লক্ষণীয়, ক্ষমতা পাওয়ার পর থেকে বাইডেন প্রশাসন যে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়েই নাক গলাতে গেছে, সেখানেই সাফল্যের দেখা না পেয়ে বরং নাকানিচুবানি খেয়েছে। রাশিয়াকে ঘায়েল করার মতলবে ইউক্রেনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে আমেরিকার এখন নাজেহাল অবস্থা। বাইডেন নিজের দেশে ট্রাম্পকে সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। নিজের ভোটে জেতা যেখানে সংশয়মুক্ত নয়, সেখানে তিনি বা তাঁর প্রশাসন বিএনপিকে কীভাবে ক্ষমতায় বসায়? বাংলাদেশে বাইডেন প্রশাসনের নতুন এক্সপেরিমেন্টের ফল বিএনপি ঘরে তুলতে পারেনি। এই কঠিন সত্যিটি বিএনপি বিশ্বাস করতে বা মানতে পারছে না। সত্যটা স্বীকার করলে দলের ভেতরে ব্যাপক হতাশা নেমে আসার আশঙ্কায় বিএনপির নেতারা ‘মানুষ ভোট দিতে যায়নি’ বা পশ্চিমারা নির্বাচন মেনে নেয়নি ইত্যাদি বলে সান্ত্বনা খুঁজছেন।
আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরানো বিএনপির পক্ষে সম্ভব নয়। এটা বহুবার প্রমাণিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ বা সরকারের সবলতার দিকগুলো জানার পরও বিএনপি কেন নির্বাচন বর্জনের রাজনীতি আঁকড়ে আছে, তা কোনো রাজনীতি বিশেষজ্ঞের কাছেই পরিষ্কার নয়।
বিএনপির হয়েছে মুখে মাটি ঢুকে যাওয়ার মতো অবস্থা! মাটি আমাদের খাদ্য না। তাই মুখে কোনো কারণে মাটি পড়লে থু থু করে ফেলা আর বারবার মুখ ধুয়ে পরিশুদ্ধ করার চেষ্টা করা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। বিএনপিকে এখন তা-ই করতে হবে। বিএনপির আন্দোলন-সংগ্রামের কৌশল দেশের মানুষের ওপর নির্ভর করার চেয়ে আমেরিকানির্ভর করে সাজিয়ে চরম ভুল করেছে। একপেশে পশ্চিমা অতিনির্ভরতা তাদের খেয়ে ফেলেছে, সব শ্রম-ঘাম পানিতে মিশেছে।
বিএনপি বুঝতেই চায়নি যে বাইডেন প্রশাসন শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চায়নি। চেয়েছে সুবিধা আদায় করে নিতে। আমেরিকার কিছু নিজস্ব স্বার্থ আছে, সেটাই তাদের প্রায়োরিটি বা প্রথম বিবেচনাই শুধু নয়; সেই স্বার্থই বাইডেনের কাছে তার সব তৎপরতার একমাত্র নির্ধারক উপাদান। গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বাইডেনের পররাষ্ট্রনীতির চালিকাশক্তি বা ড্রাইভিং ফোর্স নয়। বাংলাদেশের ব্যাপারে আমেরিকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে চীন-ঠেকানোর কাজে কার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ তা থেকেই। ভারতকে উপেক্ষা করে বিএনপির স্বার্থ রক্ষা আমেরিকার কাছে বড় হতে পারে না, হয়ওনি। ভূরাজনৈতিক ঘটনা বিএনপির পক্ষে রাখার সুযোগ মূলত দলটির ছিল না।
বিএনপি ও বিএনপির প্রতি অনুগত বিশিষ্টজনেরা আওয়ামী লীগ সম্পর্কে নেতিবাচক সব বিশেষণ ব্যবহার করে টক শো বা ইউটিউবে চ্যানেল খুলে আয়রোজগার বাড়াতে পারলেও রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিএনপির অনুকূলে নেওয়ার ক্ষমতা রাখেন না। বিএনপিকে ভাঙা যায়নি, সেটা ঠিক। কিন্তু এই অক্ষত বিএনপি সরকারের জন্য কোনো চ্যালেঞ্জ নয়। বিএনপি এখন ভোটের বিশুদ্ধতা নিয়ে চর্চা করবে আর আওয়ামী লীগ সরকার চালাবে।২০১৮ সালের নির্বাচনে যখন বিএনপিকে সাতটি আসন দেওয়া হয়; তারপর দেশে কী হয়েছিল? সেবার যেমন কিছু হয়নি, এবারও হবে না।
লেখক: রাজনীতিবিদ, লেখক ও চেয়ারম্যান বিএফডিআর

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

নির্বাচনের আগে একটা ‘কী হয় কী হয়’ অবস্থা থাকলেও ৭ জানুয়ারি ঠিকঠাকমতোই ভোট হয়েছে। নতুন সরকার দেশ শাসনের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে। দেশের একটি অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি চেয়েছিল ভোট যাতে না হয়, সে রকম পরিস্থিতি তৈরি করতে। তারা সেটি পারেনি। আওয়ামী লীগ চেয়েছিল নির্ধারিত সময়ে ভোট সম্পন্ন করতে
২৬ জানুয়ারি ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

নির্বাচনের আগে একটা ‘কী হয় কী হয়’ অবস্থা থাকলেও ৭ জানুয়ারি ঠিকঠাকমতোই ভোট হয়েছে। নতুন সরকার দেশ শাসনের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে। দেশের একটি অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি চেয়েছিল ভোট যাতে না হয়, সে রকম পরিস্থিতি তৈরি করতে। তারা সেটি পারেনি। আওয়ামী লীগ চেয়েছিল নির্ধারিত সময়ে ভোট সম্পন্ন করতে
২৬ জানুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

নির্বাচনের আগে একটা ‘কী হয় কী হয়’ অবস্থা থাকলেও ৭ জানুয়ারি ঠিকঠাকমতোই ভোট হয়েছে। নতুন সরকার দেশ শাসনের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে। দেশের একটি অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি চেয়েছিল ভোট যাতে না হয়, সে রকম পরিস্থিতি তৈরি করতে। তারা সেটি পারেনি। আওয়ামী লীগ চেয়েছিল নির্ধারিত সময়ে ভোট সম্পন্ন করতে
২৬ জানুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

নির্বাচনের আগে একটা ‘কী হয় কী হয়’ অবস্থা থাকলেও ৭ জানুয়ারি ঠিকঠাকমতোই ভোট হয়েছে। নতুন সরকার দেশ শাসনের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে। দেশের একটি অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি চেয়েছিল ভোট যাতে না হয়, সে রকম পরিস্থিতি তৈরি করতে। তারা সেটি পারেনি। আওয়ামী লীগ চেয়েছিল নির্ধারিত সময়ে ভোট সম্পন্ন করতে
২৬ জানুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫