Ajker Patrika

রাকসু নির্বাচন: প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরিতে আগ্রহ নেই শিক্ষার্থীদের

  • প্রচারণা শেষ আজ, বৃহস্পতিবার ভোট।
  • ভোটে নিরাপত্তায় থাকছে পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি।
 রিমন রহমান, রাজশাহীদীন ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৮: ১০
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে বৃহস্পতিবার। শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় শিক্ষার্থীদের হাতে মেহেদি দিয়ে এঁকে দেওয়া হচ্ছে প্রার্থীর ব্যালট নম্বর। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে বৃহস্পতিবার। শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় শিক্ষার্থীদের হাতে মেহেদি দিয়ে এঁকে দেওয়া হচ্ছে প্রার্থীর ব্যালট নম্বর। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্বামী-স্ত্রী দুজনই যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হন, তবে একসঙ্গে আবাসনের ব্যবস্থা; অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের মাসিক ভর্তুকি প্রদান; লাইব্রেরি, সেমিনার ও রিডিং রুম ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা, প্রথম বর্ষ থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর বৈধ সিট নিশ্চিত করা—এমন শত শত প্রতিশ্রুতি উঠে এল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে ইশতেহারে। তবে সাধারণ শিক্ষার্থী এমন প্রতিশ্রুতি নিয়ে খুব বেশি আগ্রহী নন।

রাকসুর সংশোধিত তফসিল অনুযায়ী ১৬ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৯টি ভবনে ১৭টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হবে। ভোট গ্রহণ শেষে কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে ফল ঘোষণা করা হবে। এর আগে বিভিন্ন প্যানেল থেকে দেওয়া হয়েছে ইশতেহার। এসেছে প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি।

রাকসু নির্বাচনে মোট প্যানেল ১১টি। ছাত্রদল, বামধারার গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ, সাবেক সমন্বয়ক তাসিন খানের নেতৃত্বে আসা স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সংসদ, ছাত্রশিবির-সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট, সাবেক দুই সমন্বয়ক মেহেদী সজিব ও সালাহউদ্দিন আম্মারের নেতৃত্বে আসা আধিপত্যবিরোধী ঐক্য ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলন-সমর্থিত প্যানেল সচেতন শিক্ষার্থী সমাজ এবং গণঅধিকার ও ছাত্র ফেডারেশন-সমর্থিত রাকসু ফর র‍্যাডিক্যাল চেঞ্জ আনুষ্ঠানিকভাবে ইশতেহার দিয়েছে। বাকিরা আনুষ্ঠানিক ইশতেহার ঘোষণা না করলেও নির্বাচনী প্রচারপত্রে নানা প্রতিশ্রুতি তুলে ধরছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজভিত্তিক ছাত্র সংসদের মেয়াদ সাধারণত এক বছর ধরা হয়। অর্থাৎ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত ছাত্র সংসদ এক বছরের জন্য দায়িত্ব পালন করে। এই সময়ের মধ্যে এত সব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন সম্ভব কি না, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলেই প্রশ্ন উঠেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, এগুলো শুনতে অনেকটা রূপকথার মতো। তাদের আকৃষ্ট করার জন্যই বিভিন্ন প্যানেল এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে অবাস্তব ও উচ্চাভিলাষী নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।

রাকসু নির্বাচনে ছাত্র-সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের ইশতেহারে বলা হয়েছে, অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের মাসিক ভর্তুকি প্রদান, লাইব্রেরি, ইন্টারনেট ও বিদ্যুৎ সেবা উন্নয়নসহ সেন্ট্রাল লাইব্রেরি ও হল লাইব্রেরিতে আসনসংখ্যা বৃদ্ধি, শীতাতপনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আধুনিকীকরণ করা হবে।

ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেল ‘১২ মাস, ২৪ সংস্কার’ শীর্ষক ইশতেহার দিয়েছে। তারা জয়ী হলে রাকসু নির্বাচনকে একাডেমিক ক্যালেন্ডারের অন্তর্ভুক্ত করে প্রতিবছর নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন বাস্তবায়ন করা, প্রথম বর্ষ থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর বৈধ সিট নিশ্চিত করা, আবাসন সংকটের অস্থায়ী সমাধান হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে অস্থায়ী হোস্টেল বা মাসিক আবাসন ভাতার ব্যবস্থা করা এবং স্থায়ী সমাধান হিসেবে হল নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

অন্যদিকে বামধারার গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ তাদের ইশতেহারে লাইব্রেরি, সেমিনার ও রিডিং রুম ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা, হলগুলোর ক্যানটিনের পাশাপাশি প্রশাসনিক তত্ত্বাবধানে ডাইনিং চালু রাখা, রাবি মেডিকেল সেন্টারকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স ও অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, এসব ইশতেহারের বেশির ভাগই এক বছরের মেয়াদে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। তবে এর মধ্যেও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, খাবারের মান উন্নয়ন, ক্যাম্পাসের রাস্তাঘাট সংস্কারের মতো কিছু প্রতিশ্রুতি রয়েছে, যা ইচ্ছা থাকলে এক বছরের মধ্যেই সম্ভব করা যায়।

জানতে চাইলে ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী নাফিউল ইসলাম জীবন বলেন, ‘আমরা যে ইশতেহার ঘোষণা করেছি, তা এক বছরে বাস্তবায়ন করা অনেকটাই সম্ভব। রেলস্টেশন সংস্কার, লাইব্রেরি আধুনিকায়নের বিষয়গুলোসহ অন্যান্য যে ইশতেহার আছে, তা কয়েক মাসেই করা সম্ভব হবে।’

ক্ষমতার কেন্দ্র উপাচার্য

রাকসুর প্রথম গঠনতন্ত্র হয়েছিল ১৯৬২ সালে। এর প্রধান কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে—শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করা, শিক্ষার্থীদের সমস্যা, মতামত ও দাবি প্রশাসনের কাছে তুলে ধরা। শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা, পাঠদান, পরীক্ষা, হলজীবন, স্বাস্থ্যসেবা, খাবার ও পরিবহন-সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে তদারকি করা। আর গঠনতন্ত্রের ৭(১)(ই) ধারায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে, সভাপতির (উপাচার্য) অনুমোদন ছাড়া নির্বাহী কমিটির কোনো সিদ্ধান্তই বৈধ বলে গণ্য হবে না। অর্থাৎ শিক্ষার্থীরা যাঁদের ভোটে নির্বাচিত করবেন, তাঁদের সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে শুধু উপাচার্যের অনুমোদনের পরই। এ প্রসঙ্গে রাকসুর সাবেক ভিপি রাগীব আহসান মুন্না বলেন, রাষ্ট্রকাঠামো পরিবর্তন না করে এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।

নিরাপত্তায় থাকবে তিন বাহিনী

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে দুই হাজারের বেশি পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি ছয় প্লাটুন বিজিবি ও ১২ প্লাটুন র‍্যাব মোতায়েন থাকবে। এ ছাড়া গোয়েন্দা সংস্থা, বিএনসিসি ও স্কাউট সদস্যরাও নিরাপত্তা কার্যক্রমে অংশ নেবেন।

গতকাল বেলা ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি), র‍্যাব ও বিজিবির প্রতিনিধিদের মধ্যে এক সমন্বয় সভা শেষে এসব তথ্য জানান আরএমপি কমিশনার আবু সুফিয়ান। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে কিছু বস্তি এলাকা রয়েছে, যেখানে মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের উপস্থিতি থাকতে পারে বলে আমরা মনে করছি। সেই এলাকাগুলোতেও তল্লাশি চালানো হবে। এ ছাড়া আবাসিক হলে যেন কোনো বহিরাগত অবস্থান না করে, সে বিষয়েও আমরা নজরদারি করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডিমলায় বুড়ি তিস্তা খনন নিয়ে সংঘর্ষ, আনসার ক্যাম্পে ভাঙচুর

ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি 
নীলফামারীর ডিমলায় বুড়ি তিস্তা জলাধার খনন প্রকল্পকে কেন্দ্র করে আনসার ক্যাম্পে ভাঙচুর চালায় এলাকাবাসী। ছবি: আজকের পত্রিকা
নীলফামারীর ডিমলায় বুড়ি তিস্তা জলাধার খনন প্রকল্পকে কেন্দ্র করে আনসার ক্যাম্পে ভাঙচুর চালায় এলাকাবাসী। ছবি: আজকের পত্রিকা

নীলফামারীর ডিমলায় বুড়ি তিস্তা জলাধার খনন প্রকল্পকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বিরোধ সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনে আনসার ক্যাম্পে ভাঙচুর চালিয়েছে।

ডিমলার কুটির ডাংগা ও জলঢাকার বড়পুল এলাকায় বুধবার বিকেলে পাউবো জলাধার খনন শুরু করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন উপস্থিত থাকলেও ক্ষুব্ধ জনতা আনসার ক্যাম্পে হামলা চালায়। সংঘর্ষে স্থানীয় সাংবাদিকসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কোনো ধরনের জমি অধিগ্রহণ বা ক্ষতিপূরণ ছাড়াই তিন ফসলি জমিতে খননকাজ শুরু করা হয়েছে। এতে হাজার হাজার পরিবার বাস্তুচ্যুত হওয়ার শঙ্কায় পড়েছে। পাশাপাশি বিস্তীর্ণ আবাদি জমি ধ্বংসের মুখে পড়েছে।

স্থানীয় এক কৃষক বলেন, ‘আমাদের জমি নেওয়ার কোনো নোটিশ দেওয়া হয়নি। হঠাৎ মেশিন এনে জমি খনন করছে। আমরা কোথায় যাব?’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান কথা বলতে রাজি হননি।

ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরানুজ্জামান বলেন, দেশে রাষ্ট্রীয় শোক চলমান থাকায় আগামী তিন দিনের জন্য খননকাজ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। তারপরও কেন কাজ শুরু হয়েছে, তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবে।’

সংঘর্ষের পর এলাকাজুড়ে চরম উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন করলেও ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত আলী সরকার ফোন ধরেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

রাবি প্রতিনিধি  
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক। ছবি: সংগৃহীত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালরের (রাবি) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের এক ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান।

নিহত ছাত্রীর নাম লামিসা নওরিন পুষ্পিতা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। বাড়ি ঝিনাইদহ জেলায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ বিকেলে আশপাশের রুমের ছাত্রীরা তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়ে রামেক হাসপাতালে পাঠালে কিছু সময় পর তাঁর মৃত্যু হয়।

প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমি বাইরে আছি। একটি আত্মহত্যার খবর পেয়েছি। মতিহার থানার ওসি আমাকে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।’

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মালেক বলেন, ‘আমরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আমরা তাঁর পরিবারকে জানিয়েছি। তাঁর অভিভাবক আসার পর আমরা এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জেলহাজতে অসুস্থ আ.লীগ নেতার শেবাচিম হাসপাতালে মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
শফিকুল আলম বাবুল খান । ছবি: সংগৃহীত
শফিকুল আলম বাবুল খান । ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালী কারাগারে থাকা বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল আলম বাবুল খান (৫৫)। তিনি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে তিনি মারা যান। ওই দিনই সন্ধ্যার পর তিনি পটুয়াখালী কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।

শফিকুল আলম বাবুল খান পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান। তিনি কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা থেকে বাবুল খানকে গ্রেপ্তার করে স্থানীয় থানা-পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর থেকে তিনি পটুয়াখালী জেলা কারাগারে বন্দী ছিলেন।

গতকাল সন্ধ্যার দিকে জেলহাজতে থাকা অবস্থায় হঠাৎ তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। বুকে তীব্র ব্যথা অনুভব করলে কারা কর্তৃপক্ষ দ্রুত তাঁকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠায়। চিকিৎসকেরা জানান, তিনি হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে হাসপাতালে নেওয়ার পরও তাঁকে বাঁচানো যায়নি।

কারা কর্তৃপক্ষের দাবি, অসুস্থতার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নির্ণয়ে আইনানুগ প্রক্রিয়া চলছে।

নিহত শফিকুল আলমের ছোট ভাই মিঠাগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বসির খান বলেন, মরহুমের প্রথম জানাজা আজ বাদ মাগরিব কলাপাড়া সরকারি মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় উপজেলার মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের তেগাছিয়া গ্রামে দ্বিতীয় জানাজা শেষে নিজ বাড়ির পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাদারীপুরে ঘরে ঢুকে যুবককে গলা কেটে হত্যা, আটক ১

মাদারীপুর প্রতিনিধি
মাদারীপুরে ঘরে ঢুকে যুবককে গলা কেটে হত্যা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাদারীপুরে ঘরে ঢুকে যুবককে গলা কেটে হত্যা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাদারীপুর সদরের কুনিয়ারহাট এলাকায় ঘরে ঢুকে জাহিদ শেখ (৪০) নামের এক যুবককে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। হত্যার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় একজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

আজ বুধবার উপজেলার কুনিয়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত জাহিদ একই এলাকার জবেদ শেখের ছেলে। তিনি পেশায় ইলেকট্রিকমিস্ত্রি। অপর দিকে আটক সজিব শেখ আব্দুল্লাহ রাজৈর উপজেলার বাজিতপুরের মাচ্চর গ্রামের বাসিন্দা।

পুলিশ, নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিকেলে নিজ ঘরে কাজ করছিলেন জাহিদ শেখ। এ সময় হঠাৎ সজিব শেখ নামের এক যুবক তাঁর ঘরে ঢুকে পড়েন। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই জাহিদকে গলা কেটে ও কুপিয়ে হত্যা করেন।

এ সময় পরিবারের লোকজন টের পেয়ে চিৎকার করলে স্থানীয় বাসিন্দারা সজিবকে ধাওয়া করে আটক করেন। পরে পুলিশ এসে তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

পুলিশ নিহত জাহিদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে পাঠিয়েছে। তবে হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে তাৎক্ষণিক কিছুই জানাতে পারেনি পুলিশ ও পরিবারের লোকজন।

মীর জামাল সরদার নামের নিহত জাহিদের এক স্বজন বলেন, ‘কী কারণে জাহিদকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে, তা আমরা জানি না। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।’

নিহত জাহিদের মামা মোয়াজ্জেম মাতুব্বর বলেন, ‘ঘরে কাজ করা অবস্থায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও গলা কেটে আমার ভাগনেকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার কারণ অনুসন্ধান ও জড়িতের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।’

এ বিষয়ে মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ফারিহা রফিক ভাবনা বলেন, ইলেকট্রিকমিস্ত্রিকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আটক সজিব শেখকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। হত্যার কারণ ও ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত