Ajker Patrika

এখনো কাঁদেন রোকেয়া প্রাচী

কামরুল হাসান
আপডেট : ০৮ জুলাই ২০২৩, ০৯: ৫০
এখনো কাঁদেন রোকেয়া প্রাচী

ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) তখন ক্রাইম বিভাগ চারটি। পূর্ব বিভাগের ডিসি ছিলেন মোখলেসুর রহমান, যিনি পরে অতিরিক্ত আইজি হয়েছিলেন। একদিন রাত ৯টার দিকে তাঁর ফোন। বললেন, সর্বনাশ হয়ে গেছে। তাঁর কথায় হতাশার সুর। জানতে চাইলাম, কী এমন হয়েছে? তিনি বললেন, তাঁর টিমের সবচেয়ে ভালো সার্জেন্টকে একদল ছিনতাইকারী গাড়ি থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছে। ছেলেটির মাথা থেঁতলে গেছে। কথা বলতে পারছে না, অবস্থা খুবই খারাপ। বললাম, কী নাম? তিনি খুব মৃদু স্বরে বললেন, সার্জেন্ট আহাদ।

ইয়াসিন কবীর জয় তখন উদীয়মান ফটোসাংবাদিক। তিনিও খবর পেয়েছেন। বললেন, চলো, পিওতে (প্লেস অব অকারেন্স বা ঘটনাস্থল) যাই। ইস্কাটন থেকে মতিঝিলে বলাকা ভবনের সামনে ঘটনাস্থলে পৌঁছে শুনি, আহাদকে তখনকার রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। গেলাম সেখানে, শুনি পিজি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। জয় বললেন, তাঁর ছবি লাগবে। এখানে থেকে লাভ নেই। ছবির সন্ধানে জয় ছুটলেন ইস্কাটন গার্ডেনের প্রোপার্টি হাউজিংয়ে, আহাদের বাসায়।

রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালের লোকেরা কিছু বলতে পারছিলেন না। ঘটনা সম্পর্কে যাঁরা জানেন, তাঁরা সবাই আহাদকে নিয়ে তখনকার পিজি হাসপাতালে গেছেন। আবার ফিরে এলাম মতিঝিলে। দেখি রাস্তায় এক পাশে ট্রাফিক পুলিশের কয়েকজন কনস্টেবল জড়ো হয়ে কথা বলছেন। সঙ্গে দুজন সার্জেন্ট আছেন।

তাঁদের কাছে জানতে চাইলাম, কী হয়েছে। একজন সার্জেন্ট এক কনস্টেবলকে দেখিয়ে দিয়ে বললেন, ‘তাঁর কাছে শোনেন, সে উইটনেস (প্রত্যক্ষদর্শী)।’ ওটা ছিল ১৯৯৯ সালের ২৮ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার রাত। সে সময় রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ছিনতাইকারীদের তৎপরতা অসহনীয় হয়ে উঠেছিল। প্রায় দিনই ছিনতাইয়ের খবর পাওয়া যেত। ছিনতাইকারীদের হাতে খুন হওয়ার ঘটনাও ছিল। তখন নানা কায়দায় ছিনতাই হতো। একটি কায়দা ছিল—তিন চাকার টেম্পো নিয়ে ছিনতাই। ছিনতাইকারীরা নিজেদের টেম্পোতে যাত্রী সেজে ওত পেতে থাকত। এরপর যাত্রী উঠলে তাঁদের কোনো একটি ফাঁকা জায়গায় নিয়ে সবকিছু কেড়ে নিত। সেই যাত্রীবেশী ছিনতাইকারীদের ধরতে সেদিন তিনটি বিশেষ টিম নামিয়েছিল ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। একটি দলের প্রধান ছিলেন সার্জেন্ট আহাদ, অন্যটির দায়িত্বে ছিলেন পরিদর্শক সাহাব উদ্দিন ও সার্জেন্ট আনোয়ার। তৃতীয় দলটির দায়িত্বে ছিলেন সার্জেন্ট মেজবা।

সেই কনস্টেবল আমাকে বললেন, সার্জেন্ট আহাদ ছিলেন হোটেল পূর্বাণীর কাছে। আর সার্জেন্ট আনোয়ার ছিলেন একটু দূরে, বিমান অফিসের কাছে। বিমান অফিসের অন্য পাশে ছিলেন পরিদর্শক সাহাব উদ্দিন। আবার জনতা ব্যাংকের সামনে ছিলেন সার্জেন্ট মেজবা।

রাত সাড়ে ৮টার দিকে কয়েকজন যাত্রীবেশী ছিনতাইকারী একটি টেম্পো নিয়ে শিল্প ভবন থেকে পূর্বাণী ও বিমান অফিসের মাঝের রাস্তা দিয়ে শাপলা চত্বরে যাচ্ছিল। টেম্পোটি দেখেই তাঁদের সন্দেহ হয়। সার্জেন্ট আনোয়ার টেম্পোটিকে থামার সংকেত দেন। কিন্তু বিপদ বুঝে সেটা না থেমে বিমান অফিসের পশ্চিম পাশ দিয়ে জনতা ব্যাংক ভবনের দিকে যেতে থাকে। এরপর সার্জেন্ট আহাদ দৌড়ে সেই টেম্পোর পেছনে উঠে পড়েন। টেম্পো চলতে থাকে আর তিনি পেছনে ঝুলতে থাকেন। সার্জেন্ট মেজবা সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় লাঠি দিয়ে টেম্পোর গ্লাস ভেঙে ফেলেন। বৃহস্পতিবারের মতিঝিলে ফাঁকা রাস্তা পেয়ে বেপরোয়া গতিতে টেম্পোটি বাংলার বাণী অফিসের সামনের রাস্তায় এসে জিকজ্যাক করে চলতে থাকে। এতে পেছনে থাকা আহাদ প্রায় বেসামাল হয়ে পড়েন। এই সুযোগে এক ছিনতাইকারী তাঁকে ধাক্কা মেরে টেম্পো থেকে ফেলে দেয়। রাস্তায় পড়ে মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পান আহাদ। ছিনতাইকারীরা অবস্থা বুঝে টেম্পো ফেলে পালিয়ে যায়।পরে সেটি জনতা পুড়িয়ে দেয়।

পিজি হাসপাতালের চিকিৎসকেরাও আহাদের ব্যাপারে কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারছিলেন না। এরপর তাঁকে নেওয়া হয় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে। রাত ১১টার দিকে সেখানেই তিনি মারা যান। আহাদের মৃত্যুর পর ডিসি মোখলেসুর রহমান আমাকে বলেছিলেন, পূর্ব তিমুর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে যাওয়ার জন্য আহাদ মনোনীত হয়েছিলেন। সাত দিন পরই তাঁর ফ্লাইট। তখন তিনি ছুটিতেই ছিলেন। কিন্তু তার পরও কেন তিনি ডিউটিতে এলেন, তা তিনি বুঝতে পারছিলেন না।

আহাদের বন্ধু এক সার্জেন্ট আমাকে বলেছিলেন, আহাদ ছিলেন খুবই সাহসী। ছুটিতে থাকার পরও ছিনতাইকারী ধরার কথা শুনে তিনি ছুটে আসেন। সেই বন্ধু আফসোস করে বললেন, আসলে মৃত্যু তাঁকে টেনে এনেছিল।

আহাদ তখন অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচীকে বিয়ে করে ইস্কাটনে থাকতেন। তাঁদের একমাত্র মেয়ে লামিছা রিমঝিম তখন তিন বছরের। আহাদ যখন মারা যান, তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ৩৮ বছর। ১৯৮৫ সালে তিনি সার্জেন্ট পদে যোগ দিয়েছিলেন। আর জন্মেছিলেন ১৯৬৪ সালের ৪ নভেম্বর শেরপুরের নালিতাবাড়ীর আমবাগানে। তাঁর ভাই আসলাম ইকবালও পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন। আহাদ মারা যাওয়ার কয়েক বছর পর তিনিও কর্মস্থলে মারা যান।

আহাদের মৃত্যু পুলিশ বাহিনীকে বেশ নাড়া দিয়েছিল। কিছুদিন পর গুলিস্তানে একটি পুলিশ বক্স হলে নাম রাখা হয় ‘সার্জেন্ট আহাদ পুলিশ বক্স’। আউটার স্টেডিয়ামে গুলিস্তান হকার সমিতি একটি গাছ লাগিয়ে স্থাপন করে সার্জেন্ট আহাদ স্মৃতিফলক, নাট্যচক্র নামে একটি সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যতত্ত্ব বিভাগে চালু করে সার্জেন্ট আহাদ মেধাবৃত্তি। আর তাঁর জন্মভূমি নালিতাবাড়ীতে স্থাপন করা হয় সার্জেন্ট আহাদ স্মৃতি প্রাঙ্গণ।

সবকিছু ঠিকই ছিল, কোনো কিছুতেই কোনো তাল ভঙ্গ হয়নি। এর মধ্যে সরকার বদল হয়ে গেল। চারদলীয় জোট ক্ষমতায় এসেই সবকিছু উলটপালট করে দিল। আহাদ নিহত হওয়ার পর তাঁর স্ত্রী অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচীকে একটি চাকরি দেওয়া হয়েছিল শিল্পকলা একাডেমিতে। একদিন সেই চাকরি থেকে বাদ দিয়ে তাঁকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হলো। রোকেয়া প্রাচীর চাকরি হারানো নিয়ে একটি রিপোর্ট করেছিলাম জনকণ্ঠে। সেই রিপোর্টের পর প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। গতকাল রোকেয়া প্রাচী আমাকে বললেন, তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সেই খবর দেখে তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি আর চাকরির জন্য যাননি।

আহাদ খুনের মামলা করেছিলেন মতিঝিল থানার এসআই মেজবা উদ্দিন খান। আর তদন্ত করে অভিযোগপত্র দিয়েছিলেন সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল কাহার আকন্দ। তিনি ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দিয়েছিলেন। কিন্তু মহানগর দায়রা জজ হোসেন শহীদ আহমেদ মাত্র ৩ জনকে সাজা দিতে পেরেছিলেন। বাকি ১০ জনকে বেকসুর খালাস দিয়ে বলেছিলেন, আহাদের পুলিশ সহকর্মীরা সেদিন তাঁদের হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে গুলি না ছুড়ে আহাদকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছিলেন। শুধু তা-ই নয়, সেই পুলিশ সদস্যরা আদালতে এসে বলেছেন, গ্রেপ্তার করা আসামিদেরও তাঁরা চেনেন না। রায় দেওয়ার সময় আদালত আক্ষেপ করে বলেছিলেন, এই পুলিশ সদস্যরা বাহিনীতে থাকার যোগ্য নয়, তারা বাহিনীর কলঙ্ক।

২০০৩ সালের নভেম্বরে এই মামলার রায় হয়েছিল। রোকেয়া প্রাচী সেদিন জজ আদালতের বটতলায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। পাশে ছিল রিমঝিম। সে এখন অস্ট্রেলিয়ায় স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। রোকেয়া প্রাচী সেদিন আহাদের পছন্দ করা জামদানি পরে হাতে মেহেদি লাগিয়েছিলেন। আমি তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম, তিনি ফুঁপিয়ে কাঁদছিলেন, যেন পাহাড়সম বেদনা তাঁকে কুরে কুরে রিক্ত করেছিল। সেই কান্না হয়তো এখনো কাঁদেন রোকেয়া প্রাচী। কাল তিনি আমাকে বললেন, ‘আহাদ যে আমার জীবনের অংশ হয়ে আছে। তাকে ভুলি কী করে!’

আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আসিফের ফেসবুক পেজ রিমুভ করা হয়েছে, সংঘবদ্ধ রিপোর্টের অভিযোগ

আজকের রাশিফল: মানিব্যাগের দশা মরুভূমি, প্রেমের দুনিয়ায়ও দুর্ভিক্ষ

ছয় মাসের পরিচয়ে বিবাহিতাকে বিয়ের প্রস্তাব, প্রত্যাখ্যান করায় গুলি

অরুণাচলকে চীনের ‘মূল স্বার্থ’ বলছে পেন্টাগন, ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান বেইজিংয়ের

ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ায় মার্কিন বাহিনীর হামলা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডেভিল হান্ট-২: এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার ৮ হাজার ৫৯৭

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ডেভিল হান্ট-২: এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার ৮ হাজার ৫৯৭

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।

অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

বিষয়:

অপরাধ
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আসিফের ফেসবুক পেজ রিমুভ করা হয়েছে, সংঘবদ্ধ রিপোর্টের অভিযোগ

আজকের রাশিফল: মানিব্যাগের দশা মরুভূমি, প্রেমের দুনিয়ায়ও দুর্ভিক্ষ

ছয় মাসের পরিচয়ে বিবাহিতাকে বিয়ের প্রস্তাব, প্রত্যাখ্যান করায় গুলি

অরুণাচলকে চীনের ‘মূল স্বার্থ’ বলছে পেন্টাগন, ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান বেইজিংয়ের

ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ায় মার্কিন বাহিনীর হামলা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডেভিল হান্ট-২: এক দিনে আরও ৬৯৮ জন গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ডেভিল হান্ট-২: এক দিনে আরও ৬৯৮ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।

অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আসিফের ফেসবুক পেজ রিমুভ করা হয়েছে, সংঘবদ্ধ রিপোর্টের অভিযোগ

আজকের রাশিফল: মানিব্যাগের দশা মরুভূমি, প্রেমের দুনিয়ায়ও দুর্ভিক্ষ

ছয় মাসের পরিচয়ে বিবাহিতাকে বিয়ের প্রস্তাব, প্রত্যাখ্যান করায় গুলি

অরুণাচলকে চীনের ‘মূল স্বার্থ’ বলছে পেন্টাগন, ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান বেইজিংয়ের

ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ায় মার্কিন বাহিনীর হামলা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদিকে গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল ওরফে দাউদ কে, মাস্ক পরা ব্যক্তিটিই কি তিনি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ০৫
হাদি হত্যা মামলায় প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত
হাদি হত্যা মামলায় প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।

হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।

দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’

পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।

এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম।
গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম।

আলোচিত ফয়সাল করিম কে?

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।

২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।

ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।

২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।

২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।

অভ্যুত্থানের অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ফয়সালের দ্রুত জামিন নিয়ে প্রশ্ন সবার

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।

মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।

জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আসিফের ফেসবুক পেজ রিমুভ করা হয়েছে, সংঘবদ্ধ রিপোর্টের অভিযোগ

আজকের রাশিফল: মানিব্যাগের দশা মরুভূমি, প্রেমের দুনিয়ায়ও দুর্ভিক্ষ

ছয় মাসের পরিচয়ে বিবাহিতাকে বিয়ের প্রস্তাব, প্রত্যাখ্যান করায় গুলি

অরুণাচলকে চীনের ‘মূল স্বার্থ’ বলছে পেন্টাগন, ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান বেইজিংয়ের

ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ায় মার্কিন বাহিনীর হামলা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুনের পর মোবাইল, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট, ‘গৃহকর্মী আয়েশা’র পরিচয় মেলেনি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৫৭
ছবি: সিসিটিভির ফুটেজ থেকে নেওয়া
ছবি: সিসিটিভির ফুটেজ থেকে নেওয়া

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।

স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।

পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।

মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।

মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আসিফের ফেসবুক পেজ রিমুভ করা হয়েছে, সংঘবদ্ধ রিপোর্টের অভিযোগ

আজকের রাশিফল: মানিব্যাগের দশা মরুভূমি, প্রেমের দুনিয়ায়ও দুর্ভিক্ষ

ছয় মাসের পরিচয়ে বিবাহিতাকে বিয়ের প্রস্তাব, প্রত্যাখ্যান করায় গুলি

অরুণাচলকে চীনের ‘মূল স্বার্থ’ বলছে পেন্টাগন, ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান বেইজিংয়ের

ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ায় মার্কিন বাহিনীর হামলা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত