আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা

কালের গহ্বরে বিলীন হলো আরেকটি বছর। নতুন বছরের সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ভবিষ্যতের সমৃদ্ধি গড়ে উঠবে। নতুন বছরে আসতে পারে এমন চ্যালেঞ্জ এবং তা মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত—এ বিষয়ে কথা বলেছেন নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি জানুন আজকের পত্রিকায়, রোকন উদ্দীন ও আসাদুজ্জামান নূর-এর প্রতিবেদনে।

আছে ৬ চ্যালেঞ্জ থাকছে সুযোগও
ড. আব্দুর রাজ্জাক, চেয়ারম্যান, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড)
নতুন বছর বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালীকরণ এবং ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা হবে প্রধান অগ্রাধিকার। অনেক ব্যাংক বর্তমানে তারল্যসংকট, পরিচালন দুর্বলতা ও আস্থার সংকটে ভুগছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে দ্রুত ও দৃঢ় নীতিগত পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।
এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি ২০২৫ সালে বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে। চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য সংঘাত রপ্তানি খাতের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিবর্তনে এ সংকট আরও বাড়তে পারে, যা সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনাকে আরও জটিল করবে।
রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধি দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য জরুরি। আয় না বাড়ালে আর্থিক পরিসর সংকুচিত হয়ে উন্নয়ন কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য রাজস্বনীতি এমনভাবে প্রণয়ন করতে হবে, যা বৈষম্য হ্রাস ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে।
পরবর্তী জাতীয় বাজেট একটি বড় পরীক্ষা হবে। আর্থিক ব্যবস্থাপনায় বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে স্পষ্ট নীতি ও স্বচ্ছতা প্রয়োজন। শ্বেতপত্রে উঠে আসা সমস্যা মাথায় রেখে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার খাতে ব্যয়ের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।
পবিত্র রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি, যাতে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি সুরক্ষিত থাকে এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী বিশেষ সহায়তা পায়।
২০২৫ সাল অর্থনৈতিক সংস্কার ও জনগণের আস্থা পুনঃস্থাপনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ, যেখানে আর্থিক ব্যবস্থায় জবাবদিহি নিশ্চিত করা হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনগণ এ ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী নীতি ও বাজেট বাস্তবায়নে দায়িত্বশীলতা প্রত্যাশা করছে। সবশেষে ২০২৫ সালটি চ্যালেঞ্জের হলেও সঠিক পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়নের মাধ্যমে তা মোকাবিলা সম্ভব। সেখানে সরকারের দৃঢ় পদক্ষেপ ও জনমুখী নীতি অগ্রগতির পথ সুগম করবে।

উৎপাদন খরচ নিয়ন্ত্রণে আনার বিকল্প নেই
ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, কৃষি অর্থনীতিবিদ
কোভিড-১৯-পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বৈশ্বিক সরবরাহব্যবস্থা ভেঙে পড়ে, যা বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি সৃষ্টি করে। এর প্রভাবে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষি উপকরণ, কৃষিভিত্তিক শিল্পপণ্য, জ্বালানি তেল ও খাদ্যপণ্য। যদিও বেশির ভাগ দেশ মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ফিরেছে, বাংলাদেশে তা ক্রমেই বাড়ছে। আমদানিনির্ভরতা, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, এলসি খোলার বিলম্ব, আমদানি-রপ্তানি বিঘ্ন এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা কৃষিপণ্যের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও সরবরাহে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে, যা মুদ্রাস্ফীতিকে আরও উসকে দিয়েছে।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এবং পূর্ববর্তী সরকারের গ্রহণ করা নীতি, যেমন ক্রলিং পেগ, সুদহার পরিবর্তন, এসবের মাধ্যমে অর্থনীতিতে হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও তা কার্যকর হয়নি। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক বাজারে মুদ্রা সরবরাহের কারণে মুদ্রাস্ফীতি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাদেশের মুদ্রাস্ফীতির মূল কারণ হচ্ছে কস্ট-পুশ বা উৎপাদন খরচ বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি। এটি নিয়ন্ত্রণে উৎপাদন খরচ কমিয়ে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে উদ্ভাবনী নীতি এবং সহায়তার মাধ্যমে উৎপাদন খরচ কমানো সম্ভব। বিশেষ করে স্বল্পকালীন কৌশল হিসেবে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ সরবরাহ বাড়ানো এবং খাদ্যপণ্যের দাম মনিটরিং নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম মনিটরিং ও এন্ট্রি-হোর্ডিং রেগুলেশনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে, যাতে কেউ কোনোভাবে কৃত্রিম সরবরাহ সংকট তৈরি করে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি করতে না পারে। আমদানি শুল্ক কমানোর পাশাপাশি ঋণপত্র খোলাতে সহযোগিতা ও সময়মতো পণ্যের ডেলিভারি নিশ্চিত করতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে কৃষিপণ্যের উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বাজারব্যবস্থা উন্নয়নে অবকাঠামোতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং আমদানি নির্ভরতা কমে আসবে; যা আমাদের পণ্যের সরবরাহ এবং ডলারের রিজার্ভ বাড়াবে। উৎপাদন কার্যক্রম ও বাজারব্যবস্থা যাতে নিরবচ্ছিন্ন গতিতে চলতে পারে, সেই রকম আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে না পারলে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হয়ে যাবে।

বড় চাওয়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি
তাসকীন আহমেদ, সভাপতি, ডিসিসিআই
বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কয়েকটি বড় চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান, যেগুলো দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং স্থিতিশীলতার জন্য প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে। অস্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ব্যবসায়িক কার্যক্রমে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করছে, কলকারখানার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা উৎপাদন ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ব্যাংকিং খাতে উচ্চ সুদের হার, অর্থায়নের অভাব এবং জ্বালানির সরবরাহ সংকট ব্যবসায়ীদের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসনিক জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতাও ব্যবসায়িক পরিবেশে অসুবিধা সৃষ্টি করছে, ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে, ব্যবসার আয় কমছে এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে।
নতুন বছরে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য আমাদের প্রধান প্রত্যাশা হলো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করবে। একটি স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলার পরিবেশ বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে এবং নতুন বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করবে। একইভাবে ব্যবসায়িক খাতে যথাযথ অর্থায়ন নিশ্চিত করা জরুরি, বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রসারের জন্য। এই খাতে আর্থিক সহায়তা বাড়ানোর মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি সম্ভব হবে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যাশা হলো নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা। জ্বালানির অনিশ্চিত সরবরাহ উৎপাদন খাতে বড় সমস্যা তৈরি করছে, যা ব্যবসার গতিকে বাধাগ্রস্ত করছে। এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে জ্বালানির সুষ্ঠু ও নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি প্রশাসনিক জটিলতা দূর করা অত্যন্ত জরুরি। প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার সহজীকরণ ব্যবসায়ীদের খরচ কমাবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের এই প্রত্যাশা থাকবে যে তারা ব্যবসায়ীদের জন্য নীতিগত সহায়তা প্রদান করবে এবং নীতিমালা বাস্তবায়নে জটিলতা দূর করবে। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি, শিল্পে অর্থায়নের সুযোগ বৃদ্ধি এবং প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সহজ করার মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও গতিশীল হবে এবং দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হবে। এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও উন্নত হবে এবং অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে।

উদ্বেগ কাটাতে চাই ৩ সমস্যার সমাধান
মহিউদ্দিন রুবেল, সাবেক পরিচালক, বিজিএমইএ
২০২৪ সালে পোশাকশিল্প নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল, যার কারণে কাঙ্ক্ষিত রপ্তানি আয় অর্জন সম্ভব হয়নি। তবে ২০২৫ সালে আমরা বিশ্ব অর্থনীতি এবং পোশাকশিল্পের পুনরুদ্ধারের প্রতি গভীর আশাবাদী। এর জন্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, শিল্প সম্পর্কের উন্নয়ন এবং ব্যাংকিং খাতের সমস্যা সমাধান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পোশাক খাতের টেকসই বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপগুলো অত্যাবশ্যক। আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার এই বিষয়গুলো অগ্রাধিকার দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
২০২৪ সালে ৫০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হলেও জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত রপ্তানি আয় ছিল ৩৪.৭১ বিলিয়ন ডলার। ২০২৩ সালের তুলনায় ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি ও কারখানা বন্ধের মতো অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মজুরি ৫৬ শতাংশ বাড়ানো হলেও জাতীয় নির্বাচনের সময়ে এটি বাস্তবায়নে কিছু জটিলতা সৃষ্টি হয়।
শিল্পটি আরও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়, যখন সরকার ফেব্রুয়ারিতে রপ্তানি প্রণোদনা ৬০ শতাংশ কমিয়ে দেয়। এদিকে বৈশ্বিক সংঘাত ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ২০২৪ সালের শেষে আঙ্কটাড বৈশ্বিক পোশাক বাণিজ্যে ৫ শতাংশ হ্রাসের পূর্বাভাস দিয়েছে। মজুরি বৃদ্ধির পরেও পোশাকের ইউনিট মূল্য হ্রাস পেয়েছে।
গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পরিবহন খরচের বৃদ্ধি এবং উচ্চ ব্যাংক সুদের কারণে পোশাকশিল্পের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে, যা বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জুলাই মাসের আন্দোলনের ফলে কিছু অস্থিরতা তৈরি হলেও পরবর্তী সময়ে রপ্তানিতে সামান্য প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। অক্টোবর মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি কিছুটা পুনরুদ্ধার হয়েছে। তবে এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যেও পোশাক খাত টেকসই উন্নয়নের দিকে এগিয়েছে, যেমন লিড সনদপ্রাপ্ত কারখানার সংখ্যা বৃদ্ধি এবং অ্যাকটিভ ওয়্যারের মতো নতুন পণ্যের বৈচিত্র্য।

কালের গহ্বরে বিলীন হলো আরেকটি বছর। নতুন বছরের সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ভবিষ্যতের সমৃদ্ধি গড়ে উঠবে। নতুন বছরে আসতে পারে এমন চ্যালেঞ্জ এবং তা মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত—এ বিষয়ে কথা বলেছেন নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি জানুন আজকের পত্রিকায়, রোকন উদ্দীন ও আসাদুজ্জামান নূর-এর প্রতিবেদনে।

আছে ৬ চ্যালেঞ্জ থাকছে সুযোগও
ড. আব্দুর রাজ্জাক, চেয়ারম্যান, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড)
নতুন বছর বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালীকরণ এবং ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা হবে প্রধান অগ্রাধিকার। অনেক ব্যাংক বর্তমানে তারল্যসংকট, পরিচালন দুর্বলতা ও আস্থার সংকটে ভুগছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে দ্রুত ও দৃঢ় নীতিগত পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।
এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি ২০২৫ সালে বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে। চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য সংঘাত রপ্তানি খাতের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিবর্তনে এ সংকট আরও বাড়তে পারে, যা সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনাকে আরও জটিল করবে।
রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধি দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য জরুরি। আয় না বাড়ালে আর্থিক পরিসর সংকুচিত হয়ে উন্নয়ন কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য রাজস্বনীতি এমনভাবে প্রণয়ন করতে হবে, যা বৈষম্য হ্রাস ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে।
পরবর্তী জাতীয় বাজেট একটি বড় পরীক্ষা হবে। আর্থিক ব্যবস্থাপনায় বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে স্পষ্ট নীতি ও স্বচ্ছতা প্রয়োজন। শ্বেতপত্রে উঠে আসা সমস্যা মাথায় রেখে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার খাতে ব্যয়ের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।
পবিত্র রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি, যাতে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি সুরক্ষিত থাকে এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী বিশেষ সহায়তা পায়।
২০২৫ সাল অর্থনৈতিক সংস্কার ও জনগণের আস্থা পুনঃস্থাপনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ, যেখানে আর্থিক ব্যবস্থায় জবাবদিহি নিশ্চিত করা হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনগণ এ ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী নীতি ও বাজেট বাস্তবায়নে দায়িত্বশীলতা প্রত্যাশা করছে। সবশেষে ২০২৫ সালটি চ্যালেঞ্জের হলেও সঠিক পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়নের মাধ্যমে তা মোকাবিলা সম্ভব। সেখানে সরকারের দৃঢ় পদক্ষেপ ও জনমুখী নীতি অগ্রগতির পথ সুগম করবে।

উৎপাদন খরচ নিয়ন্ত্রণে আনার বিকল্প নেই
ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, কৃষি অর্থনীতিবিদ
কোভিড-১৯-পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বৈশ্বিক সরবরাহব্যবস্থা ভেঙে পড়ে, যা বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি সৃষ্টি করে। এর প্রভাবে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষি উপকরণ, কৃষিভিত্তিক শিল্পপণ্য, জ্বালানি তেল ও খাদ্যপণ্য। যদিও বেশির ভাগ দেশ মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ফিরেছে, বাংলাদেশে তা ক্রমেই বাড়ছে। আমদানিনির্ভরতা, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, এলসি খোলার বিলম্ব, আমদানি-রপ্তানি বিঘ্ন এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা কৃষিপণ্যের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও সরবরাহে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে, যা মুদ্রাস্ফীতিকে আরও উসকে দিয়েছে।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এবং পূর্ববর্তী সরকারের গ্রহণ করা নীতি, যেমন ক্রলিং পেগ, সুদহার পরিবর্তন, এসবের মাধ্যমে অর্থনীতিতে হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও তা কার্যকর হয়নি। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক বাজারে মুদ্রা সরবরাহের কারণে মুদ্রাস্ফীতি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাদেশের মুদ্রাস্ফীতির মূল কারণ হচ্ছে কস্ট-পুশ বা উৎপাদন খরচ বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি। এটি নিয়ন্ত্রণে উৎপাদন খরচ কমিয়ে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে উদ্ভাবনী নীতি এবং সহায়তার মাধ্যমে উৎপাদন খরচ কমানো সম্ভব। বিশেষ করে স্বল্পকালীন কৌশল হিসেবে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ সরবরাহ বাড়ানো এবং খাদ্যপণ্যের দাম মনিটরিং নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম মনিটরিং ও এন্ট্রি-হোর্ডিং রেগুলেশনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে, যাতে কেউ কোনোভাবে কৃত্রিম সরবরাহ সংকট তৈরি করে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি করতে না পারে। আমদানি শুল্ক কমানোর পাশাপাশি ঋণপত্র খোলাতে সহযোগিতা ও সময়মতো পণ্যের ডেলিভারি নিশ্চিত করতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে কৃষিপণ্যের উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বাজারব্যবস্থা উন্নয়নে অবকাঠামোতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং আমদানি নির্ভরতা কমে আসবে; যা আমাদের পণ্যের সরবরাহ এবং ডলারের রিজার্ভ বাড়াবে। উৎপাদন কার্যক্রম ও বাজারব্যবস্থা যাতে নিরবচ্ছিন্ন গতিতে চলতে পারে, সেই রকম আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে না পারলে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হয়ে যাবে।

বড় চাওয়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি
তাসকীন আহমেদ, সভাপতি, ডিসিসিআই
বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কয়েকটি বড় চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান, যেগুলো দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং স্থিতিশীলতার জন্য প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে। অস্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ব্যবসায়িক কার্যক্রমে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করছে, কলকারখানার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা উৎপাদন ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ব্যাংকিং খাতে উচ্চ সুদের হার, অর্থায়নের অভাব এবং জ্বালানির সরবরাহ সংকট ব্যবসায়ীদের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসনিক জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতাও ব্যবসায়িক পরিবেশে অসুবিধা সৃষ্টি করছে, ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে, ব্যবসার আয় কমছে এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে।
নতুন বছরে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য আমাদের প্রধান প্রত্যাশা হলো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করবে। একটি স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলার পরিবেশ বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে এবং নতুন বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করবে। একইভাবে ব্যবসায়িক খাতে যথাযথ অর্থায়ন নিশ্চিত করা জরুরি, বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রসারের জন্য। এই খাতে আর্থিক সহায়তা বাড়ানোর মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি সম্ভব হবে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যাশা হলো নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা। জ্বালানির অনিশ্চিত সরবরাহ উৎপাদন খাতে বড় সমস্যা তৈরি করছে, যা ব্যবসার গতিকে বাধাগ্রস্ত করছে। এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে জ্বালানির সুষ্ঠু ও নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি প্রশাসনিক জটিলতা দূর করা অত্যন্ত জরুরি। প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার সহজীকরণ ব্যবসায়ীদের খরচ কমাবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের এই প্রত্যাশা থাকবে যে তারা ব্যবসায়ীদের জন্য নীতিগত সহায়তা প্রদান করবে এবং নীতিমালা বাস্তবায়নে জটিলতা দূর করবে। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি, শিল্পে অর্থায়নের সুযোগ বৃদ্ধি এবং প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সহজ করার মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও গতিশীল হবে এবং দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হবে। এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও উন্নত হবে এবং অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে।

উদ্বেগ কাটাতে চাই ৩ সমস্যার সমাধান
মহিউদ্দিন রুবেল, সাবেক পরিচালক, বিজিএমইএ
২০২৪ সালে পোশাকশিল্প নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল, যার কারণে কাঙ্ক্ষিত রপ্তানি আয় অর্জন সম্ভব হয়নি। তবে ২০২৫ সালে আমরা বিশ্ব অর্থনীতি এবং পোশাকশিল্পের পুনরুদ্ধারের প্রতি গভীর আশাবাদী। এর জন্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, শিল্প সম্পর্কের উন্নয়ন এবং ব্যাংকিং খাতের সমস্যা সমাধান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পোশাক খাতের টেকসই বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপগুলো অত্যাবশ্যক। আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার এই বিষয়গুলো অগ্রাধিকার দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
২০২৪ সালে ৫০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হলেও জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত রপ্তানি আয় ছিল ৩৪.৭১ বিলিয়ন ডলার। ২০২৩ সালের তুলনায় ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি ও কারখানা বন্ধের মতো অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মজুরি ৫৬ শতাংশ বাড়ানো হলেও জাতীয় নির্বাচনের সময়ে এটি বাস্তবায়নে কিছু জটিলতা সৃষ্টি হয়।
শিল্পটি আরও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়, যখন সরকার ফেব্রুয়ারিতে রপ্তানি প্রণোদনা ৬০ শতাংশ কমিয়ে দেয়। এদিকে বৈশ্বিক সংঘাত ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ২০২৪ সালের শেষে আঙ্কটাড বৈশ্বিক পোশাক বাণিজ্যে ৫ শতাংশ হ্রাসের পূর্বাভাস দিয়েছে। মজুরি বৃদ্ধির পরেও পোশাকের ইউনিট মূল্য হ্রাস পেয়েছে।
গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পরিবহন খরচের বৃদ্ধি এবং উচ্চ ব্যাংক সুদের কারণে পোশাকশিল্পের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে, যা বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জুলাই মাসের আন্দোলনের ফলে কিছু অস্থিরতা তৈরি হলেও পরবর্তী সময়ে রপ্তানিতে সামান্য প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। অক্টোবর মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি কিছুটা পুনরুদ্ধার হয়েছে। তবে এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যেও পোশাক খাত টেকসই উন্নয়নের দিকে এগিয়েছে, যেমন লিড সনদপ্রাপ্ত কারখানার সংখ্যা বৃদ্ধি এবং অ্যাকটিভ ওয়্যারের মতো নতুন পণ্যের বৈচিত্র্য।
আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা

কালের গহ্বরে বিলীন হলো আরেকটি বছর। নতুন বছরের সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ভবিষ্যতের সমৃদ্ধি গড়ে উঠবে। নতুন বছরে আসতে পারে এমন চ্যালেঞ্জ এবং তা মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত—এ বিষয়ে কথা বলেছেন নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি জানুন আজকের পত্রিকায়, রোকন উদ্দীন ও আসাদুজ্জামান নূর-এর প্রতিবেদনে।

আছে ৬ চ্যালেঞ্জ থাকছে সুযোগও
ড. আব্দুর রাজ্জাক, চেয়ারম্যান, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড)
নতুন বছর বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালীকরণ এবং ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা হবে প্রধান অগ্রাধিকার। অনেক ব্যাংক বর্তমানে তারল্যসংকট, পরিচালন দুর্বলতা ও আস্থার সংকটে ভুগছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে দ্রুত ও দৃঢ় নীতিগত পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।
এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি ২০২৫ সালে বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে। চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য সংঘাত রপ্তানি খাতের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিবর্তনে এ সংকট আরও বাড়তে পারে, যা সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনাকে আরও জটিল করবে।
রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধি দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য জরুরি। আয় না বাড়ালে আর্থিক পরিসর সংকুচিত হয়ে উন্নয়ন কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য রাজস্বনীতি এমনভাবে প্রণয়ন করতে হবে, যা বৈষম্য হ্রাস ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে।
পরবর্তী জাতীয় বাজেট একটি বড় পরীক্ষা হবে। আর্থিক ব্যবস্থাপনায় বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে স্পষ্ট নীতি ও স্বচ্ছতা প্রয়োজন। শ্বেতপত্রে উঠে আসা সমস্যা মাথায় রেখে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার খাতে ব্যয়ের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।
পবিত্র রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি, যাতে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি সুরক্ষিত থাকে এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী বিশেষ সহায়তা পায়।
২০২৫ সাল অর্থনৈতিক সংস্কার ও জনগণের আস্থা পুনঃস্থাপনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ, যেখানে আর্থিক ব্যবস্থায় জবাবদিহি নিশ্চিত করা হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনগণ এ ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী নীতি ও বাজেট বাস্তবায়নে দায়িত্বশীলতা প্রত্যাশা করছে। সবশেষে ২০২৫ সালটি চ্যালেঞ্জের হলেও সঠিক পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়নের মাধ্যমে তা মোকাবিলা সম্ভব। সেখানে সরকারের দৃঢ় পদক্ষেপ ও জনমুখী নীতি অগ্রগতির পথ সুগম করবে।

উৎপাদন খরচ নিয়ন্ত্রণে আনার বিকল্প নেই
ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, কৃষি অর্থনীতিবিদ
কোভিড-১৯-পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বৈশ্বিক সরবরাহব্যবস্থা ভেঙে পড়ে, যা বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি সৃষ্টি করে। এর প্রভাবে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষি উপকরণ, কৃষিভিত্তিক শিল্পপণ্য, জ্বালানি তেল ও খাদ্যপণ্য। যদিও বেশির ভাগ দেশ মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ফিরেছে, বাংলাদেশে তা ক্রমেই বাড়ছে। আমদানিনির্ভরতা, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, এলসি খোলার বিলম্ব, আমদানি-রপ্তানি বিঘ্ন এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা কৃষিপণ্যের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও সরবরাহে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে, যা মুদ্রাস্ফীতিকে আরও উসকে দিয়েছে।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এবং পূর্ববর্তী সরকারের গ্রহণ করা নীতি, যেমন ক্রলিং পেগ, সুদহার পরিবর্তন, এসবের মাধ্যমে অর্থনীতিতে হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও তা কার্যকর হয়নি। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক বাজারে মুদ্রা সরবরাহের কারণে মুদ্রাস্ফীতি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাদেশের মুদ্রাস্ফীতির মূল কারণ হচ্ছে কস্ট-পুশ বা উৎপাদন খরচ বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি। এটি নিয়ন্ত্রণে উৎপাদন খরচ কমিয়ে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে উদ্ভাবনী নীতি এবং সহায়তার মাধ্যমে উৎপাদন খরচ কমানো সম্ভব। বিশেষ করে স্বল্পকালীন কৌশল হিসেবে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ সরবরাহ বাড়ানো এবং খাদ্যপণ্যের দাম মনিটরিং নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম মনিটরিং ও এন্ট্রি-হোর্ডিং রেগুলেশনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে, যাতে কেউ কোনোভাবে কৃত্রিম সরবরাহ সংকট তৈরি করে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি করতে না পারে। আমদানি শুল্ক কমানোর পাশাপাশি ঋণপত্র খোলাতে সহযোগিতা ও সময়মতো পণ্যের ডেলিভারি নিশ্চিত করতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে কৃষিপণ্যের উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বাজারব্যবস্থা উন্নয়নে অবকাঠামোতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং আমদানি নির্ভরতা কমে আসবে; যা আমাদের পণ্যের সরবরাহ এবং ডলারের রিজার্ভ বাড়াবে। উৎপাদন কার্যক্রম ও বাজারব্যবস্থা যাতে নিরবচ্ছিন্ন গতিতে চলতে পারে, সেই রকম আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে না পারলে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হয়ে যাবে।

বড় চাওয়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি
তাসকীন আহমেদ, সভাপতি, ডিসিসিআই
বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কয়েকটি বড় চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান, যেগুলো দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং স্থিতিশীলতার জন্য প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে। অস্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ব্যবসায়িক কার্যক্রমে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করছে, কলকারখানার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা উৎপাদন ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ব্যাংকিং খাতে উচ্চ সুদের হার, অর্থায়নের অভাব এবং জ্বালানির সরবরাহ সংকট ব্যবসায়ীদের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসনিক জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতাও ব্যবসায়িক পরিবেশে অসুবিধা সৃষ্টি করছে, ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে, ব্যবসার আয় কমছে এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে।
নতুন বছরে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য আমাদের প্রধান প্রত্যাশা হলো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করবে। একটি স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলার পরিবেশ বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে এবং নতুন বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করবে। একইভাবে ব্যবসায়িক খাতে যথাযথ অর্থায়ন নিশ্চিত করা জরুরি, বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রসারের জন্য। এই খাতে আর্থিক সহায়তা বাড়ানোর মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি সম্ভব হবে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যাশা হলো নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা। জ্বালানির অনিশ্চিত সরবরাহ উৎপাদন খাতে বড় সমস্যা তৈরি করছে, যা ব্যবসার গতিকে বাধাগ্রস্ত করছে। এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে জ্বালানির সুষ্ঠু ও নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি প্রশাসনিক জটিলতা দূর করা অত্যন্ত জরুরি। প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার সহজীকরণ ব্যবসায়ীদের খরচ কমাবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের এই প্রত্যাশা থাকবে যে তারা ব্যবসায়ীদের জন্য নীতিগত সহায়তা প্রদান করবে এবং নীতিমালা বাস্তবায়নে জটিলতা দূর করবে। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি, শিল্পে অর্থায়নের সুযোগ বৃদ্ধি এবং প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সহজ করার মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও গতিশীল হবে এবং দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হবে। এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও উন্নত হবে এবং অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে।

উদ্বেগ কাটাতে চাই ৩ সমস্যার সমাধান
মহিউদ্দিন রুবেল, সাবেক পরিচালক, বিজিএমইএ
২০২৪ সালে পোশাকশিল্প নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল, যার কারণে কাঙ্ক্ষিত রপ্তানি আয় অর্জন সম্ভব হয়নি। তবে ২০২৫ সালে আমরা বিশ্ব অর্থনীতি এবং পোশাকশিল্পের পুনরুদ্ধারের প্রতি গভীর আশাবাদী। এর জন্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, শিল্প সম্পর্কের উন্নয়ন এবং ব্যাংকিং খাতের সমস্যা সমাধান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পোশাক খাতের টেকসই বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপগুলো অত্যাবশ্যক। আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার এই বিষয়গুলো অগ্রাধিকার দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
২০২৪ সালে ৫০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হলেও জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত রপ্তানি আয় ছিল ৩৪.৭১ বিলিয়ন ডলার। ২০২৩ সালের তুলনায় ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি ও কারখানা বন্ধের মতো অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মজুরি ৫৬ শতাংশ বাড়ানো হলেও জাতীয় নির্বাচনের সময়ে এটি বাস্তবায়নে কিছু জটিলতা সৃষ্টি হয়।
শিল্পটি আরও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়, যখন সরকার ফেব্রুয়ারিতে রপ্তানি প্রণোদনা ৬০ শতাংশ কমিয়ে দেয়। এদিকে বৈশ্বিক সংঘাত ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ২০২৪ সালের শেষে আঙ্কটাড বৈশ্বিক পোশাক বাণিজ্যে ৫ শতাংশ হ্রাসের পূর্বাভাস দিয়েছে। মজুরি বৃদ্ধির পরেও পোশাকের ইউনিট মূল্য হ্রাস পেয়েছে।
গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পরিবহন খরচের বৃদ্ধি এবং উচ্চ ব্যাংক সুদের কারণে পোশাকশিল্পের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে, যা বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জুলাই মাসের আন্দোলনের ফলে কিছু অস্থিরতা তৈরি হলেও পরবর্তী সময়ে রপ্তানিতে সামান্য প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। অক্টোবর মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি কিছুটা পুনরুদ্ধার হয়েছে। তবে এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যেও পোশাক খাত টেকসই উন্নয়নের দিকে এগিয়েছে, যেমন লিড সনদপ্রাপ্ত কারখানার সংখ্যা বৃদ্ধি এবং অ্যাকটিভ ওয়্যারের মতো নতুন পণ্যের বৈচিত্র্য।

কালের গহ্বরে বিলীন হলো আরেকটি বছর। নতুন বছরের সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ভবিষ্যতের সমৃদ্ধি গড়ে উঠবে। নতুন বছরে আসতে পারে এমন চ্যালেঞ্জ এবং তা মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত—এ বিষয়ে কথা বলেছেন নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি জানুন আজকের পত্রিকায়, রোকন উদ্দীন ও আসাদুজ্জামান নূর-এর প্রতিবেদনে।

আছে ৬ চ্যালেঞ্জ থাকছে সুযোগও
ড. আব্দুর রাজ্জাক, চেয়ারম্যান, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড)
নতুন বছর বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালীকরণ এবং ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা হবে প্রধান অগ্রাধিকার। অনেক ব্যাংক বর্তমানে তারল্যসংকট, পরিচালন দুর্বলতা ও আস্থার সংকটে ভুগছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে দ্রুত ও দৃঢ় নীতিগত পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।
এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি ২০২৫ সালে বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে। চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য সংঘাত রপ্তানি খাতের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিবর্তনে এ সংকট আরও বাড়তে পারে, যা সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনাকে আরও জটিল করবে।
রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধি দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য জরুরি। আয় না বাড়ালে আর্থিক পরিসর সংকুচিত হয়ে উন্নয়ন কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য রাজস্বনীতি এমনভাবে প্রণয়ন করতে হবে, যা বৈষম্য হ্রাস ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে।
পরবর্তী জাতীয় বাজেট একটি বড় পরীক্ষা হবে। আর্থিক ব্যবস্থাপনায় বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে স্পষ্ট নীতি ও স্বচ্ছতা প্রয়োজন। শ্বেতপত্রে উঠে আসা সমস্যা মাথায় রেখে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার খাতে ব্যয়ের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।
পবিত্র রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি, যাতে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি সুরক্ষিত থাকে এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী বিশেষ সহায়তা পায়।
২০২৫ সাল অর্থনৈতিক সংস্কার ও জনগণের আস্থা পুনঃস্থাপনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ, যেখানে আর্থিক ব্যবস্থায় জবাবদিহি নিশ্চিত করা হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনগণ এ ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী নীতি ও বাজেট বাস্তবায়নে দায়িত্বশীলতা প্রত্যাশা করছে। সবশেষে ২০২৫ সালটি চ্যালেঞ্জের হলেও সঠিক পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়নের মাধ্যমে তা মোকাবিলা সম্ভব। সেখানে সরকারের দৃঢ় পদক্ষেপ ও জনমুখী নীতি অগ্রগতির পথ সুগম করবে।

উৎপাদন খরচ নিয়ন্ত্রণে আনার বিকল্প নেই
ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, কৃষি অর্থনীতিবিদ
কোভিড-১৯-পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বৈশ্বিক সরবরাহব্যবস্থা ভেঙে পড়ে, যা বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি সৃষ্টি করে। এর প্রভাবে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষি উপকরণ, কৃষিভিত্তিক শিল্পপণ্য, জ্বালানি তেল ও খাদ্যপণ্য। যদিও বেশির ভাগ দেশ মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ফিরেছে, বাংলাদেশে তা ক্রমেই বাড়ছে। আমদানিনির্ভরতা, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, এলসি খোলার বিলম্ব, আমদানি-রপ্তানি বিঘ্ন এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা কৃষিপণ্যের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও সরবরাহে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে, যা মুদ্রাস্ফীতিকে আরও উসকে দিয়েছে।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এবং পূর্ববর্তী সরকারের গ্রহণ করা নীতি, যেমন ক্রলিং পেগ, সুদহার পরিবর্তন, এসবের মাধ্যমে অর্থনীতিতে হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও তা কার্যকর হয়নি। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক বাজারে মুদ্রা সরবরাহের কারণে মুদ্রাস্ফীতি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাদেশের মুদ্রাস্ফীতির মূল কারণ হচ্ছে কস্ট-পুশ বা উৎপাদন খরচ বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি। এটি নিয়ন্ত্রণে উৎপাদন খরচ কমিয়ে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে উদ্ভাবনী নীতি এবং সহায়তার মাধ্যমে উৎপাদন খরচ কমানো সম্ভব। বিশেষ করে স্বল্পকালীন কৌশল হিসেবে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ সরবরাহ বাড়ানো এবং খাদ্যপণ্যের দাম মনিটরিং নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম মনিটরিং ও এন্ট্রি-হোর্ডিং রেগুলেশনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে, যাতে কেউ কোনোভাবে কৃত্রিম সরবরাহ সংকট তৈরি করে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি করতে না পারে। আমদানি শুল্ক কমানোর পাশাপাশি ঋণপত্র খোলাতে সহযোগিতা ও সময়মতো পণ্যের ডেলিভারি নিশ্চিত করতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে কৃষিপণ্যের উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বাজারব্যবস্থা উন্নয়নে অবকাঠামোতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং আমদানি নির্ভরতা কমে আসবে; যা আমাদের পণ্যের সরবরাহ এবং ডলারের রিজার্ভ বাড়াবে। উৎপাদন কার্যক্রম ও বাজারব্যবস্থা যাতে নিরবচ্ছিন্ন গতিতে চলতে পারে, সেই রকম আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে না পারলে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হয়ে যাবে।

বড় চাওয়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি
তাসকীন আহমেদ, সভাপতি, ডিসিসিআই
বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কয়েকটি বড় চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান, যেগুলো দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং স্থিতিশীলতার জন্য প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে। অস্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ব্যবসায়িক কার্যক্রমে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করছে, কলকারখানার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা উৎপাদন ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ব্যাংকিং খাতে উচ্চ সুদের হার, অর্থায়নের অভাব এবং জ্বালানির সরবরাহ সংকট ব্যবসায়ীদের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসনিক জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতাও ব্যবসায়িক পরিবেশে অসুবিধা সৃষ্টি করছে, ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে, ব্যবসার আয় কমছে এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে।
নতুন বছরে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য আমাদের প্রধান প্রত্যাশা হলো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করবে। একটি স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলার পরিবেশ বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে এবং নতুন বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করবে। একইভাবে ব্যবসায়িক খাতে যথাযথ অর্থায়ন নিশ্চিত করা জরুরি, বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রসারের জন্য। এই খাতে আর্থিক সহায়তা বাড়ানোর মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি সম্ভব হবে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যাশা হলো নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা। জ্বালানির অনিশ্চিত সরবরাহ উৎপাদন খাতে বড় সমস্যা তৈরি করছে, যা ব্যবসার গতিকে বাধাগ্রস্ত করছে। এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে জ্বালানির সুষ্ঠু ও নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি প্রশাসনিক জটিলতা দূর করা অত্যন্ত জরুরি। প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার সহজীকরণ ব্যবসায়ীদের খরচ কমাবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের এই প্রত্যাশা থাকবে যে তারা ব্যবসায়ীদের জন্য নীতিগত সহায়তা প্রদান করবে এবং নীতিমালা বাস্তবায়নে জটিলতা দূর করবে। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি, শিল্পে অর্থায়নের সুযোগ বৃদ্ধি এবং প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সহজ করার মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও গতিশীল হবে এবং দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হবে। এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও উন্নত হবে এবং অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে।

উদ্বেগ কাটাতে চাই ৩ সমস্যার সমাধান
মহিউদ্দিন রুবেল, সাবেক পরিচালক, বিজিএমইএ
২০২৪ সালে পোশাকশিল্প নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল, যার কারণে কাঙ্ক্ষিত রপ্তানি আয় অর্জন সম্ভব হয়নি। তবে ২০২৫ সালে আমরা বিশ্ব অর্থনীতি এবং পোশাকশিল্পের পুনরুদ্ধারের প্রতি গভীর আশাবাদী। এর জন্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, শিল্প সম্পর্কের উন্নয়ন এবং ব্যাংকিং খাতের সমস্যা সমাধান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পোশাক খাতের টেকসই বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপগুলো অত্যাবশ্যক। আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার এই বিষয়গুলো অগ্রাধিকার দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
২০২৪ সালে ৫০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হলেও জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত রপ্তানি আয় ছিল ৩৪.৭১ বিলিয়ন ডলার। ২০২৩ সালের তুলনায় ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি ও কারখানা বন্ধের মতো অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মজুরি ৫৬ শতাংশ বাড়ানো হলেও জাতীয় নির্বাচনের সময়ে এটি বাস্তবায়নে কিছু জটিলতা সৃষ্টি হয়।
শিল্পটি আরও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়, যখন সরকার ফেব্রুয়ারিতে রপ্তানি প্রণোদনা ৬০ শতাংশ কমিয়ে দেয়। এদিকে বৈশ্বিক সংঘাত ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ২০২৪ সালের শেষে আঙ্কটাড বৈশ্বিক পোশাক বাণিজ্যে ৫ শতাংশ হ্রাসের পূর্বাভাস দিয়েছে। মজুরি বৃদ্ধির পরেও পোশাকের ইউনিট মূল্য হ্রাস পেয়েছে।
গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পরিবহন খরচের বৃদ্ধি এবং উচ্চ ব্যাংক সুদের কারণে পোশাকশিল্পের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে, যা বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জুলাই মাসের আন্দোলনের ফলে কিছু অস্থিরতা তৈরি হলেও পরবর্তী সময়ে রপ্তানিতে সামান্য প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। অক্টোবর মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি কিছুটা পুনরুদ্ধার হয়েছে। তবে এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যেও পোশাক খাত টেকসই উন্নয়নের দিকে এগিয়েছে, যেমন লিড সনদপ্রাপ্ত কারখানার সংখ্যা বৃদ্ধি এবং অ্যাকটিভ ওয়্যারের মতো নতুন পণ্যের বৈচিত্র্য।

বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
১২ ঘণ্টা আগে
উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
১৬ ঘণ্টা আগে
রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার।
১৭ ঘণ্টা আগে
পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
১৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজ ছাড়া বাজারে সবজি, ডিম, মুরগি, আটা, চিনিসহ প্রায় অধিকাংশ পণ্যের দাম কমেছে। বিশেষ করে সবজির বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শান্তিনগর, মালিবাগ, রামপুরাসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা, এক সপ্তাহ আগে মানভেদে দাম ছিল ১১০-১২০ টাকা কেজি। নতুন পেঁয়াজের দাম অবশ্য তুলনামূলক কম। খুচরায় পাতাসহ নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি।
জানতে চাইলে রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এবার পেঁয়াজ আমদানি না করেই বাজারের চাহিদা মিটে গেছে। এখন আগের মৌসুমের পেঁয়াজের মজুত একেবারেই শেষের দিকে। এই সময় পুরোনো পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেশিই থাকে। তবে এটা বেশি দিন থাকবে না। বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি নেই। চাহিদা অনুসার পেঁয়াজ রয়েছে।’
বেড়েছে ভোজ্যতেলের দামও। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯৮ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮৯ টাকা। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৫-১৭৯ টাকা লিটার, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭১-১৭৪ টাকা লিটার।
বিক্রেতারা বলছেন, কোম্পানিগুলো গত এক সপ্তাহে ধীরে ধীরে বাজারে বাড়তি দামে তেল সরবরাহ করেছে। এখনো অনেক দোকানে আগের দামের তেল পাওয়া যায়। তবে বাজারের অধিকাংশ দোকানেই বাড়তি দামের তেল রয়েছে।
গত সপ্তাহ পর্যন্ত খুচরায় কাঁচা মরিচ বিক্রি হতো ১২০-১৫০ টাকা কেজি, তবে চলতি সপ্তাহে দাম কমে ৭০-১০০ টাকা কেজিতে নেমেছে। এ ছাড়া শীতের সবজি হলেও শিমের দাম হঠাৎ বেড়ে ১৫০ টাকার ওপরে উঠেছিল।
সেই শিম এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি। ফুলকপি, বাঁধাকপির দাম কমেছে প্রতিটিতে ১০ টাকা। দুই ধরনের কপিই পাওয়া যাচ্ছে ৩০ টাকায়। তবে ভালো মানের ফুলকপি ৫০ টাকা। গত সপ্তাহে একটি কপি কিনতে ৪০-৬০ টাকা লেগেছিল।
দাম কমেছে টমেটোরও। মান ও বাজারভেদে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৪০ টাকা।
দেশি গাজরের সরবরাহ ব্যাপক বেড়েছে বাজারে, এতে দামও কমেছে। প্রতি কেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১০০ টাকা। তবে আমদানির গাজর আগের মতোই ১২০-১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে বেগুন বিক্রি হয়েছিল ৮০-১০০ টাকা কেজি, যা চলতি সপ্তাহে কমে ৭০-৮০ টাকায় নেমেছে। বাজারে আলুর দাম আগের মতোই প্রতি কেজি ২৫ টাকা রয়েছে।
আমিষের সবচেয়ে বড় উৎস ডিমের দাম আরও কমেছে। ফার্মের মুরগির সাদা ও বাদামি ডিমের দাম কমে ১১০ থেকে ১২৫ টাকা ডজনে নেমেছে। গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৩০ টাকা।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তথ্য বলছে, গত বছর এই সময় ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছিল ১৪০-১৫০ টাকা ডজন। টিসিবি বলছে, গত বছরের তুলনায় ডিমের দাম ৩৫ শতাংশ কমেছে।
ডিমের সঙ্গে কমেছে ফার্মের মুরগির দামও। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম কমে ১৫০-১৭০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০-১৮০ টাকা কেজি।
সেগুনবাগিচা বাজারের ডিম বিক্রেতা নূর ই আলম বলেন, ‘ডিম ও মুরগির বাজার স্বাভাবিক আচরণ করছে না। হঠাৎ দামের এত পতন হচ্ছে কেন, তা বোঝা যাচ্ছে না। বর্তমানে ডিমের যে দাম, তা গত কয়েক বছরের তুলনায় সবচেয়ে কম।’
ডিম-মুরগির সঙ্গে কিছুটা কমেছে রুই-কাতলা মাছের দামও। বাজারে চাষের এই মাছগুলো বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩২০-৪৫০ টাকা কেজি।
মুদিপণ্যের মধ্যে চিনির দাম আগে থেকেই কমেছে। খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯০-১০০ টাকা কেজি। চলতি সপ্তাহে নতুন করে কমেছে আটা, মসুর ডাল, ছোলার দাম। খোলা আটার দাম ২-৩ টাকা কমে ৪৫-৪৮ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ৪৮-৫০ টাকা কেজি। কেজিপ্রতি বড় দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৯৫-১০৫ টাকা। ছোলার দামও কেজিপ্রতি ৫ টাকা কমে ৯৫-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের মামা-ভাগনে মুদিদোকানের বিক্রেতা হারুনুর রশিদ বলেন, রমজান উপলক্ষে পণ্যের আমদানি ব্যাপক বেড়েছে। তাই প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম কমছে। তবে ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজের বিষয়টি কিছুটা ভিন্ন।

বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজ ছাড়া বাজারে সবজি, ডিম, মুরগি, আটা, চিনিসহ প্রায় অধিকাংশ পণ্যের দাম কমেছে। বিশেষ করে সবজির বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শান্তিনগর, মালিবাগ, রামপুরাসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা, এক সপ্তাহ আগে মানভেদে দাম ছিল ১১০-১২০ টাকা কেজি। নতুন পেঁয়াজের দাম অবশ্য তুলনামূলক কম। খুচরায় পাতাসহ নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি।
জানতে চাইলে রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এবার পেঁয়াজ আমদানি না করেই বাজারের চাহিদা মিটে গেছে। এখন আগের মৌসুমের পেঁয়াজের মজুত একেবারেই শেষের দিকে। এই সময় পুরোনো পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেশিই থাকে। তবে এটা বেশি দিন থাকবে না। বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি নেই। চাহিদা অনুসার পেঁয়াজ রয়েছে।’
বেড়েছে ভোজ্যতেলের দামও। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯৮ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮৯ টাকা। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৫-১৭৯ টাকা লিটার, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭১-১৭৪ টাকা লিটার।
বিক্রেতারা বলছেন, কোম্পানিগুলো গত এক সপ্তাহে ধীরে ধীরে বাজারে বাড়তি দামে তেল সরবরাহ করেছে। এখনো অনেক দোকানে আগের দামের তেল পাওয়া যায়। তবে বাজারের অধিকাংশ দোকানেই বাড়তি দামের তেল রয়েছে।
গত সপ্তাহ পর্যন্ত খুচরায় কাঁচা মরিচ বিক্রি হতো ১২০-১৫০ টাকা কেজি, তবে চলতি সপ্তাহে দাম কমে ৭০-১০০ টাকা কেজিতে নেমেছে। এ ছাড়া শীতের সবজি হলেও শিমের দাম হঠাৎ বেড়ে ১৫০ টাকার ওপরে উঠেছিল।
সেই শিম এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি। ফুলকপি, বাঁধাকপির দাম কমেছে প্রতিটিতে ১০ টাকা। দুই ধরনের কপিই পাওয়া যাচ্ছে ৩০ টাকায়। তবে ভালো মানের ফুলকপি ৫০ টাকা। গত সপ্তাহে একটি কপি কিনতে ৪০-৬০ টাকা লেগেছিল।
দাম কমেছে টমেটোরও। মান ও বাজারভেদে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৪০ টাকা।
দেশি গাজরের সরবরাহ ব্যাপক বেড়েছে বাজারে, এতে দামও কমেছে। প্রতি কেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১০০ টাকা। তবে আমদানির গাজর আগের মতোই ১২০-১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে বেগুন বিক্রি হয়েছিল ৮০-১০০ টাকা কেজি, যা চলতি সপ্তাহে কমে ৭০-৮০ টাকায় নেমেছে। বাজারে আলুর দাম আগের মতোই প্রতি কেজি ২৫ টাকা রয়েছে।
আমিষের সবচেয়ে বড় উৎস ডিমের দাম আরও কমেছে। ফার্মের মুরগির সাদা ও বাদামি ডিমের দাম কমে ১১০ থেকে ১২৫ টাকা ডজনে নেমেছে। গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৩০ টাকা।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তথ্য বলছে, গত বছর এই সময় ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছিল ১৪০-১৫০ টাকা ডজন। টিসিবি বলছে, গত বছরের তুলনায় ডিমের দাম ৩৫ শতাংশ কমেছে।
ডিমের সঙ্গে কমেছে ফার্মের মুরগির দামও। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম কমে ১৫০-১৭০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০-১৮০ টাকা কেজি।
সেগুনবাগিচা বাজারের ডিম বিক্রেতা নূর ই আলম বলেন, ‘ডিম ও মুরগির বাজার স্বাভাবিক আচরণ করছে না। হঠাৎ দামের এত পতন হচ্ছে কেন, তা বোঝা যাচ্ছে না। বর্তমানে ডিমের যে দাম, তা গত কয়েক বছরের তুলনায় সবচেয়ে কম।’
ডিম-মুরগির সঙ্গে কিছুটা কমেছে রুই-কাতলা মাছের দামও। বাজারে চাষের এই মাছগুলো বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩২০-৪৫০ টাকা কেজি।
মুদিপণ্যের মধ্যে চিনির দাম আগে থেকেই কমেছে। খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯০-১০০ টাকা কেজি। চলতি সপ্তাহে নতুন করে কমেছে আটা, মসুর ডাল, ছোলার দাম। খোলা আটার দাম ২-৩ টাকা কমে ৪৫-৪৮ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ৪৮-৫০ টাকা কেজি। কেজিপ্রতি বড় দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৯৫-১০৫ টাকা। ছোলার দামও কেজিপ্রতি ৫ টাকা কমে ৯৫-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের মামা-ভাগনে মুদিদোকানের বিক্রেতা হারুনুর রশিদ বলেন, রমজান উপলক্ষে পণ্যের আমদানি ব্যাপক বেড়েছে। তাই প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম কমছে। তবে ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজের বিষয়টি কিছুটা ভিন্ন।

কালের গহ্বরে বিলীন হলো আরেকটি বছর। নতুন বছরের সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ভবিষ্যতের সমৃদ্ধি গড়ে উঠবে। নতুন বছরে আসতে পারে এমন চ্যালেঞ্জ এবং তা মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত—এ বিষয়ে কথা বলেছেন নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি জানুন আজকের পত্রিকা
০১ জানুয়ারি ২০২৫
উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
১৬ ঘণ্টা আগে
রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার।
১৭ ঘণ্টা আগে
পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
১৮ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুল হাসান।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. রবিউল হাসান এবং উপমহাব্যবস্থাপক ও আঞ্চলিক প্রধান (কুমিল্লা অঞ্চল) মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুল হাসান।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. রবিউল হাসান এবং উপমহাব্যবস্থাপক ও আঞ্চলিক প্রধান (কুমিল্লা অঞ্চল) মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

কালের গহ্বরে বিলীন হলো আরেকটি বছর। নতুন বছরের সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ভবিষ্যতের সমৃদ্ধি গড়ে উঠবে। নতুন বছরে আসতে পারে এমন চ্যালেঞ্জ এবং তা মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত—এ বিষয়ে কথা বলেছেন নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি জানুন আজকের পত্রিকা
০১ জানুয়ারি ২০২৫
বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
১২ ঘণ্টা আগে
রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার।
১৭ ঘণ্টা আগে
পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
১৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। অর্থাৎ মাসওয়ারি হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে রপ্তানি আয় কমেছে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ, টাকার অঙ্কে এই হ্রাসকৃত রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়ায় ২২ কোটি ৮১ লাখ ডলার।
এবারই প্রথম নয়, আগস্ট থেকে শুরু হওয়া নিম্নমুখী ধারা নভেম্বরে এসে চতুর্থ মাসে পা দিল। জুলাইয়ের শক্তিশালী সূচনার পর রপ্তানি খাত যে ধারাবাহিক গতি অর্জন করেছিল, সেই গতি আগস্টেই থমকে যায়। ওই মাসে আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি কমে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশে নেমে আসে। সেপ্টেম্বরেও পতন গভীর হয়—৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। অক্টোবরে সেই হার আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশে।
জুলাইয়ের ব্যতিক্রমী সাফল্যের পর পরবর্তী চার মাস যেন একটানা ঢালু পথ। সেই জুলাইয়ে রপ্তানি আয় ছিল ৪৭৭ কোটি ৫ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি প্রায় ২৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। কিন্তু এরপর প্রতি মাসেই কমতে কমতে নভেম্বরে এসে রপ্তানি আয়ের ব্যবধান স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
সার্বিক চিত্রটি বলছে, অর্থবছরের শুরুতে পাওয়া জোয়ারটি এখন চার মাসের টানা ভাটার মুখে দাঁড়িয়ে।
আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ইপিবির তথ্য পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর মিলিয়ে পাঁচ মাসে মোট রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ২০০২ কোটি ৮৫ লাখ ডলার; যা আগের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি ঘটেছে মাত্র দশমিক ৬২ শতাংশ। অর্থাৎ পাঁচ মাসের সার্বিক রপ্তানি আয়ের চিত্রও নামমাত্র।
নভেম্বরের সবচেয়ে বড় আঘাত লেগেছে পোশাক খাতে, যেটি দেশের রপ্তানির প্রধান ভরসা। ওই মাসে পোশাক রপ্তানি থেকে এসেছে ৩১৪ কোটি ৯ লাখ ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ কম। এ সময় নিটওয়্যার খাতে আয় নেমেছে ১৬১ কোটি ৮৪ লাখ ডলারে, আর ওভেনে এসেছে ১৫২ কোটি ২৪ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে নিটওয়্যার আয় ছিল ১৭৩ কোটি ৮২ লাখ ডলার এবং ওভেন ১৫৬ কোটি ৯২ লাখ ডলার।
পোশাকের বাইরে কৃষিপণ্যে রপ্তানি কমেছে ২৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্যে কমেছে ১৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এ ছাড়া রপ্তানি পতনের তালিকায় রয়েছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত সামগ্রী, হোম টেক্সটাইলস, ফার্মাসিউটিক্যালস, জাহাজ, চিংড়ি ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং। এর মানে হচ্ছে, প্রচলিত এসব খাতেও মন্থরতা স্পষ্ট।
তবে সব বাজারে একই চিত্র নয়। কিছু গন্তব্যে বিপরীত প্রবণতা দেখা গেছে, যা সামগ্রিক মন্দার মধ্যেও আশার সঞ্চার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বেড়েছে ৪ দশমিক ২০ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। উদীয়মান বাজারগুলোর মধ্যেও ইতিবাচক প্রবণতা স্পষ্ট—চীনে রপ্তানি বেড়েছে ২৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ, পোল্যান্ডে ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ, সৌদি আরবে ১১ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং স্পেনে ১০ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এ প্রবণতা সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যেন অনেকটাই ব্যতিক্রমী সাফল্য।
সব মিলিয়ে চিত্রটি দ্বিমুখী। একদিকে ঐতিহ্যগত প্রধান খাতগুলোতে পতন; অন্যদিকে কিছু নতুন বাজারে ইতিবাচক ইঙ্গিত। তবে বড় প্রশ্ন রয়ে যায়, এই বাজার বৃদ্ধি কি পোশাকসহ প্রধান খাতের ধারাবাহিক মন্দাকে সামাল দিতে পারবে?
বর্তমান বাস্তবতা বলছে, বৈচিত্র্য বাড়ানোর পথে অনেক দূর যেতে হবে। উৎপাদন প্রতিযোগিতা, মূল্যের চাপ, বৈদেশিক অর্ডার সংকোচন এবং বিশ্ববাজারের অনিশ্চয়তা, সব মিলিয়ে রপ্তানি খাতে সামনের পথ সহজ নয়।

রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। অর্থাৎ মাসওয়ারি হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে রপ্তানি আয় কমেছে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ, টাকার অঙ্কে এই হ্রাসকৃত রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়ায় ২২ কোটি ৮১ লাখ ডলার।
এবারই প্রথম নয়, আগস্ট থেকে শুরু হওয়া নিম্নমুখী ধারা নভেম্বরে এসে চতুর্থ মাসে পা দিল। জুলাইয়ের শক্তিশালী সূচনার পর রপ্তানি খাত যে ধারাবাহিক গতি অর্জন করেছিল, সেই গতি আগস্টেই থমকে যায়। ওই মাসে আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি কমে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশে নেমে আসে। সেপ্টেম্বরেও পতন গভীর হয়—৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। অক্টোবরে সেই হার আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশে।
জুলাইয়ের ব্যতিক্রমী সাফল্যের পর পরবর্তী চার মাস যেন একটানা ঢালু পথ। সেই জুলাইয়ে রপ্তানি আয় ছিল ৪৭৭ কোটি ৫ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি প্রায় ২৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। কিন্তু এরপর প্রতি মাসেই কমতে কমতে নভেম্বরে এসে রপ্তানি আয়ের ব্যবধান স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
সার্বিক চিত্রটি বলছে, অর্থবছরের শুরুতে পাওয়া জোয়ারটি এখন চার মাসের টানা ভাটার মুখে দাঁড়িয়ে।
আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ইপিবির তথ্য পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর মিলিয়ে পাঁচ মাসে মোট রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ২০০২ কোটি ৮৫ লাখ ডলার; যা আগের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি ঘটেছে মাত্র দশমিক ৬২ শতাংশ। অর্থাৎ পাঁচ মাসের সার্বিক রপ্তানি আয়ের চিত্রও নামমাত্র।
নভেম্বরের সবচেয়ে বড় আঘাত লেগেছে পোশাক খাতে, যেটি দেশের রপ্তানির প্রধান ভরসা। ওই মাসে পোশাক রপ্তানি থেকে এসেছে ৩১৪ কোটি ৯ লাখ ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ কম। এ সময় নিটওয়্যার খাতে আয় নেমেছে ১৬১ কোটি ৮৪ লাখ ডলারে, আর ওভেনে এসেছে ১৫২ কোটি ২৪ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে নিটওয়্যার আয় ছিল ১৭৩ কোটি ৮২ লাখ ডলার এবং ওভেন ১৫৬ কোটি ৯২ লাখ ডলার।
পোশাকের বাইরে কৃষিপণ্যে রপ্তানি কমেছে ২৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্যে কমেছে ১৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এ ছাড়া রপ্তানি পতনের তালিকায় রয়েছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত সামগ্রী, হোম টেক্সটাইলস, ফার্মাসিউটিক্যালস, জাহাজ, চিংড়ি ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং। এর মানে হচ্ছে, প্রচলিত এসব খাতেও মন্থরতা স্পষ্ট।
তবে সব বাজারে একই চিত্র নয়। কিছু গন্তব্যে বিপরীত প্রবণতা দেখা গেছে, যা সামগ্রিক মন্দার মধ্যেও আশার সঞ্চার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বেড়েছে ৪ দশমিক ২০ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। উদীয়মান বাজারগুলোর মধ্যেও ইতিবাচক প্রবণতা স্পষ্ট—চীনে রপ্তানি বেড়েছে ২৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ, পোল্যান্ডে ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ, সৌদি আরবে ১১ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং স্পেনে ১০ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এ প্রবণতা সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যেন অনেকটাই ব্যতিক্রমী সাফল্য।
সব মিলিয়ে চিত্রটি দ্বিমুখী। একদিকে ঐতিহ্যগত প্রধান খাতগুলোতে পতন; অন্যদিকে কিছু নতুন বাজারে ইতিবাচক ইঙ্গিত। তবে বড় প্রশ্ন রয়ে যায়, এই বাজার বৃদ্ধি কি পোশাকসহ প্রধান খাতের ধারাবাহিক মন্দাকে সামাল দিতে পারবে?
বর্তমান বাস্তবতা বলছে, বৈচিত্র্য বাড়ানোর পথে অনেক দূর যেতে হবে। উৎপাদন প্রতিযোগিতা, মূল্যের চাপ, বৈদেশিক অর্ডার সংকোচন এবং বিশ্ববাজারের অনিশ্চয়তা, সব মিলিয়ে রপ্তানি খাতে সামনের পথ সহজ নয়।

কালের গহ্বরে বিলীন হলো আরেকটি বছর। নতুন বছরের সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ভবিষ্যতের সমৃদ্ধি গড়ে উঠবে। নতুন বছরে আসতে পারে এমন চ্যালেঞ্জ এবং তা মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত—এ বিষয়ে কথা বলেছেন নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি জানুন আজকের পত্রিকা
০১ জানুয়ারি ২০২৫
বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
১২ ঘণ্টা আগে
উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
১৬ ঘণ্টা আগে
পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
১৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
এনবিআর জানায়, তামাক ও তামাকজাত পণ্যের অবৈধ উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধে সম্প্রতি কার্যক্রম আরও জোরদার করেছে এনবিআর। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সূত্রের ভিত্তিতে এনবিআরের ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের একটি দল ঈশ্বরদীতে অবস্থিত ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কারখানায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
গোয়েন্দা দলের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণ করলেও দীর্ঘদিন ধরে আনুষ্ঠানিক উৎপাদন কার্যক্রম প্রদর্শন না করে গোপনে সিগারেট উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে। অভিযানে ৬ লাখ ৩৪ হাজার ৫৯০ শলাকা জাল ব্যান্ডরোলযুক্ত সিগারেট জব্দ করা হয়, যার বাজারমূল্য ৩৮ লাখ টাকারও বেশি। এসব সিগারেটের বিপরীতে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ২৯ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।
এ ছাড়া ১০ লাখ ২৯ হাজারটি অব্যবহৃত জাল ব্যান্ডরোল বা স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়, যা ব্যবহার করা হলে অতিরিক্ত ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকারও বেশি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া সম্ভব ছিল। প্রতিষ্ঠানটি ৩ লাখ ২২ হাজার ৫০০টি বৈধ ব্যান্ডরোল সংগ্রহ করলেও তা ব্যবহার না করে জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে সিগারেট উৎপাদন ও বিক্রি করছিল।
এনবিআর জানিয়েছে, সব সিগারেট ও উপকরণ আইনানুগভাবে জব্দ করা হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনিপ্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। অভিযানে উদ্ধার করা দলিলাদির ভিত্তিতে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেটকে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন ও বিক্রি কার্যক্রমের ওপর কঠোর নজরদারির জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হবে।

পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।
এনবিআর জানায়, তামাক ও তামাকজাত পণ্যের অবৈধ উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধে সম্প্রতি কার্যক্রম আরও জোরদার করেছে এনবিআর। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সূত্রের ভিত্তিতে এনবিআরের ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের একটি দল ঈশ্বরদীতে অবস্থিত ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কারখানায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
গোয়েন্দা দলের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণ করলেও দীর্ঘদিন ধরে আনুষ্ঠানিক উৎপাদন কার্যক্রম প্রদর্শন না করে গোপনে সিগারেট উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে। অভিযানে ৬ লাখ ৩৪ হাজার ৫৯০ শলাকা জাল ব্যান্ডরোলযুক্ত সিগারেট জব্দ করা হয়, যার বাজারমূল্য ৩৮ লাখ টাকারও বেশি। এসব সিগারেটের বিপরীতে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ২৯ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।
এ ছাড়া ১০ লাখ ২৯ হাজারটি অব্যবহৃত জাল ব্যান্ডরোল বা স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়, যা ব্যবহার করা হলে অতিরিক্ত ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকারও বেশি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া সম্ভব ছিল। প্রতিষ্ঠানটি ৩ লাখ ২২ হাজার ৫০০টি বৈধ ব্যান্ডরোল সংগ্রহ করলেও তা ব্যবহার না করে জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে সিগারেট উৎপাদন ও বিক্রি করছিল।
এনবিআর জানিয়েছে, সব সিগারেট ও উপকরণ আইনানুগভাবে জব্দ করা হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনিপ্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। অভিযানে উদ্ধার করা দলিলাদির ভিত্তিতে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেটকে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন ও বিক্রি কার্যক্রমের ওপর কঠোর নজরদারির জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হবে।

কালের গহ্বরে বিলীন হলো আরেকটি বছর। নতুন বছরের সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ভবিষ্যতের সমৃদ্ধি গড়ে উঠবে। নতুন বছরে আসতে পারে এমন চ্যালেঞ্জ এবং তা মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত—এ বিষয়ে কথা বলেছেন নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি জানুন আজকের পত্রিকা
০১ জানুয়ারি ২০২৫
বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।
১২ ঘণ্টা আগে
উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।
১৬ ঘণ্টা আগে
রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার।
১৭ ঘণ্টা আগে