Ajker Patrika

২০ বছর বেতন পাননি, ঘুষের টাকা ফেরত পেতে শিক্ষিকার লাশ নিয়ে বিদ্যালয়ে স্বজনেরা

কাজীপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯: ১৮
২০ বছর বেতন পাননি, ঘুষের টাকা ফেরত পেতে শিক্ষিকার লাশ নিয়ে বিদ্যালয়ে স্বজনেরা

ঘুষের টাকা ফেরতের দাবিতে এক শিক্ষিকার মরদেহ নিয়ে বিদ্যালয়ে অবস্থান নেন স্বজনেরা! এ সময় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক গিয়ে উত্তেজিত জনতার সামনে আগামী তিন দিনের মধ্যে গৃহীত ওই ঘুষের টাকা ফেরত দেওয়ার অঙ্গীকার করেন। পরে স্বজনেরা লাশ নিয়ে বিদ্যালয় ত্যাগ করে দাফনের ব্যবস্থা করেন। 

আজ সোমবার এ ঘটনাটি ঘটেছে সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার গাড়াবেড় গ্রামে। টাকার শোকে গত ৩০ জানুয়ারি ওই শিক্ষিকা তাঁর বাবার বাড়িতে স্ট্রোক করেন বলে দাবি জানিয়েছেন স্বজনেরা। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ভোররাতে রাজধানীর একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

মৃত ওই শিক্ষিকার নাম রোকেয়া খাতুন। তিনি উপজেলার জিসিজি বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের মাধ্যমিক শাখার ইংরেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষিকা ছিলেন। ২০ বছর ধরে বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেও বেতন পাননি তিনি। বরং বেতন পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাসে দফায় দফায় টাকা নিয়েছেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও স্থানীয়রা বলছেন, রোকেয়া খাতুন বগুড়ার ধুনট উপজেলার ভূতবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। গাড়াবেড় গ্রামে তাঁর বাবার বাড়ি। বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে নিয়মিত পাঠদান করিয়েছেন তিনি। কিন্তু বেতন করে দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন সময় ঘুষ নিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদুল ইসলাম ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি কাজীপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান দ্বীন মোহাম্মদ বাবলু।

বিদ্যালয়ের অফিস সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৮ সালে জিসিজি বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হয়। পরে ২০০৪ সালের ৩ আগস্ট দৈনিক করতোয়া পত্রিকায় ইংরেজি শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। একই বছরের অক্টোবরের ২৩ তারিখে নিয়োগ পরীক্ষার পর ৬ নভেম্বর বিদ্যালয়টিতে ইংরেজি বিষয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন রোকেয়া খাতুন। এর পর থেকে অদ্যাবধি শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত থেকে নিয়মিত পাঠদান করাতেন তিনি।

সরেজমিন দেখা যায়, ঘুষের সেই টাকা ফেরতের দাবিতে আজ সকালে মরদেহ নিয়ে বিদ্যালয় চত্বরে অবস্থান নেন ওই শিক্ষিকার স্বজনেরা। চার লাখ টাকা ফেরত দেওয়ার অঙ্গীকার করলে মরদেহ নিয়ে বিদ্যালয় ত্যাগ করেন তাঁরা। টাকার শোকে গত ৩০ জানুয়ারি ওই শিক্ষিকা গাড়াবেড়ের বাবার বাড়িতে স্ট্রোক করেন। পরে আজ ভোররাতে রাজধানীর একটি হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেন। 

রোকেয়া খাতুনের স্বামী আব্দুল করিম বলেন, ‘আমি নিজেও বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক হিসেবে ঢুকেছিলাম। তখন বিদ্যালয়ের ঘর করার কথা বলে আমার স্ত্রী ও আমার কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা নেয় প্রধান শিক্ষক ফরিদুল। এরপর আমি সেখান থেকে সরে আসলেও আমার স্ত্রী থেকে যায়। বেতন করে দেওয়ার কথা বলে পরে দফায় দফায় চার লাখ টাকার মতো নেয় তারা। কিন্তু বেতন করে দেয়নি।’

আব্দুল করিম বলেন, ‘সর্বশেষ বেতন করে দেওয়ার কথা বলে ২০২২ সালে দুই লাখ টাকা চায়। সহকারী শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাকের উপস্থিতিতে দেড় লাখ টাকায় মীমাংসা হয়। পরে আমি দেড় লাখ টাকা দিয়ে সভাপতি বাবলু চেয়ারম্যানের পায়ে পড়ি, স্ত্রীর বেতন করে দেওয়ার জন্য। সেই টাকাও বিফলে যায়। সব মিলিয়ে আমার কাছ থেকে সাত-আট লাখ টাকার মতো  নিয়েছে তারা। টাকার শোকে আমার স্ত্রী স্ট্রোক করে মারাই গেল। আমি ওই টাকা ফেরত চাই। সাথে এই দীর্ঘদিন যে পরিশ্রম করেছে তার ক্ষতিপূরণ চাই।’

রোকেয়ার বড় ভাই খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমার বোনের বেতন করে দেওয়ার কথা বলে প্রধান শিক্ষক ফরিদুল ইসলাম ও সভাপতি, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান দ্বীন মোহাম্মদ বাবলু পর্যায়ক্রমে সাত থেকে আট লাখ টাকা নিয়েছে, কিন্তু বেতন করে দেয় নাই। টাকার শোকে আমার বোন স্ট্রোক করে মারা গেছে। আমরা এর ন্যায়বিচার চাই।’ 

রোকেয়ার ভাগনে হাশেম আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এমপিওভুক্তির আবেদনের কথা বলে খরচ বাবদ আমার কাছ থেকে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা নেয় বিদ্যালয়টির করণিক লোকমান হোসেন। এর বাইরেও সম্মানীর টাকা চান লোকমান হোসেন।’ 

করণিক লোকমান হোসেন টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘আমি ওই টাকা নিয়ে হেড স্যারকে দিয়েছি। হেড স্যারের বাইরে তো আর আমি কিছু করতে পারব না।’

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক ফরিদুল ইসলামও টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রোকেয়ার টাকা দিয়েই আমরা বিদ্যালয়ের ঘর ওঠাই। বেতন করে দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন সময় টাকাও নিয়েছি। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আমরা রোকেয়ার চার লাখ টাকা ফেরত দেব।’ 

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কাজীপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান দ্বীন মোহাম্মদ বাবলুও ঘুষের টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘বেতন করে দেওয়ার কথা বলে আমরা যে টাকা নিয়েছি তার চার লাখ টাকা রোকেয়ার স্বজনদের কাছে ফেরত দেব। ইউএনও স্যার এসে আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন।’ 

শিক্ষিকার মরদেহ নিয়ে বিদ্যালয়ে অবস্থান করেন স্বজনেরাএ বিষয়ে কাজীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহরাব হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শিক্ষিকার লাশ নিয়ে বিদ্যালয়ে অবস্থানের খবরে ঘটনাস্থলে যাই। প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয়ের সভাপতির সাথে কথা বলি। তাঁরাও টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁরা বলেছেন আগামী তিন দিনের মধ্যে চার লাখ টাকা ফেরত দেবেন।’

ইউএনও আরও বলেন, ‘মৃত ওই শিক্ষিকার নিয়োগের কোনো কাগজপত্রই দেখাতে পারেননি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। পরবর্তীতে কাগজপত্র দেখে আমরা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করব। তারাই যাবতীয় ব্যবস্থা নেবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঝিনাইগাতীতে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, বৃদ্ধ নিহত

শেরপুর প্রতিনিধি 
সংঘর্ষে দুটি মোটরসাইকেল ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
সংঘর্ষে দুটি মোটরসাইকেল ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে আবু বক্কর (৬০) নামের এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। এতে আরও তিনজন আহত হয়েছেন।

আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের রাংটিয়া এলাকার ঝিনাইগাতী-গজনী সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত আবু বক্কর রাংটিয়া এলাকার মৃত আবু তাহেরের ছেলে। দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি মোটরসাইকেলের চালক ছিলেন তিনি। আহত ব্যক্তিরা হচ্ছে সিফাত (২০), কবিতা খাতুন (১৫) ও সিনহা খাতুন (১০)। তারা মোটরসাইকেল দুটির আরোহী ছিল। আহত ব্যক্তিদের শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ সকাল ৯টার দিকে দুই দিক থেকে আসা দুটি মোটরসাইকেলের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দারা আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ঝিনাইগাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক আবু বক্করকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ছাড়া গুরুতর আহত তিনজনকে জেলা সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়। দুর্ঘটনার পরপরই অন্য মোটরসাইকেলের চালক সিজন (২১) ঘটনাস্থল থেকে পালিয়েছেন।

এ বিষয়ে ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হাসান জানান, খবর পেয়ে ঝিনাইগাতী থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। একই সঙ্গে এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কক্সবাজারে নদীর তীরে মিলল যুবকের মরদেহ

কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কক্সবাজারের রামু উপজেলায় বাঁকখালী নদীর তীর থেকে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (২১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের উমখালী এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত যুবকের নাম মিনহাজ উদ্দিন তুষার (৩৫)। তিনি কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা ছৈয়দ নুরের ছেলে।

রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয়দের বরাতে ওসি বলেন, সকালে স্থানীয় লোকজন নদীর তীরের সবজিখেতে কাজ করতে এলে মরদেহটি দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে। পুলিশ নিহতের পকেটে থাকা মোবাইল সিমের সূত্র ধরে যুবকের পরিচয় শনাক্ত করে।

নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। থানা-পুলিশ ও পিবিআইয়ের একটির টিম ইতিমধ্যে রহস্য উদ্‌ঘাটনে কাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মুকসুদপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে আগুন

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও খান্দারপাড় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাব্বির খানের বাড়িতে আগুন লেগেছে। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) মুকসুদপুর উপজেলার খান্দারপাড় ইউনিয়নের বেজড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তবে কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে বাড়িতে আগুন লাগিয়েছে নাকি শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

স্থানীয়রা বলছেন, কে বা কারা সাব্বির খানের বাড়িতে আগুন দেয়। এতে ঘরের আসবাবসহ বিভিন্ন মালামাল পুড়ে যায়। স্থানীয়রা আগুন দেখতে পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকে খবর দিলে একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

খান্দারপাড় ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান (প্যানেল চেয়ারম্যান) মো. ইমারত শেখ বলেন, তিনি সাব্বির খানের বাড়িতে আগুন লাগার খবর শুনেছেন। তবে আগুন লাগার সময় ও কারণ সম্পর্কে এলাকাবাসীর বক্তব্যে ভিন্নতা রয়েছে। প্রকৃত ঘটনা কী তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।

মুকসুদপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের লিডার ওয়াহিদুজ্জামান খান বলেন, খবর পেয়ে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। গিয়ে দেখা যায়, দোতলা ভবনের দ্বিতীয় তলার তিনটি কক্ষে আগুন জ্বলছে। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে এর আগেই সোফা, খাট, এসিসহ বিভিন্ন মালামাল পুড়ে গেছে। আগুন লাগার কারণ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

মুকসুদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ফায়ার সার্ভিসের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। শর্টসার্কিট নাকি অগ্নিসংযোগ—এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তদন্ত শেষে আগুন লাগার প্রকৃত কারণ জানা যাবে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাব্বির খান ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা এলাকায় নেই। মোবাইল ফোনে সাব্বির খানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

নাটোর (লালপুর) প্রতিনিধি
নিজ গ্রাম বোয়ালিয়াপাড়ায় আনা হয় শান্তিরক্ষী মাসুদ রানার লাশ
নিজ গ্রাম বোয়ালিয়াপাড়ায় আনা হয় শান্তিরক্ষী মাসুদ রানার লাশ

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট। রাত সাড়ে ১০টার পরে ফোন দেবে বলেছিল কিন্তু দেয়নি। নেটে পাইছি, কিন্তু ফোন ধরেনি। বলেছিল আধা ঘণ্টা রেস্ট নিয়া ডিউটিতে যাওয়ার আগে ফোন ব্যাক করবে। সেই আধা ঘণ্টা আর শেষ হচ্ছে না। ফোনে ওর রক্ত দেখছি। আমার মাসুদের হাত নাই। কেউ আমারে ফোন ধরায়ে দাও। আমি শুধু এক মিনিট কথা বলতে চাই। আমার মাসুদের হাত নাই...।’ এভাবেই আহাজারি করছিলেন সুদানে নিহত শান্তিরক্ষী করপোরাল মাসুদ রানার স্ত্রী আসমা উল হুসনা আঁখি (২৭)। স্বামীর শেষ কণ্ঠ শোনার আকুতি নিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন তিনি।

বাড়ির আরেক পাশে বিলাপ করছিলেন মাসুদের মা মোছা. মর্জিনা খাতুন। ‘ব্যাটা ব্যাটা’ বলে বারবার ছেলের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলছিলেন, ‘আমার খোঁজ কে নিবে ব্যাটা? চুলে কে তেল দিয়া দিবে? কত কষ্ট কইরা মানুষ হইছো ব্যাটা। আমারে স্বপ্ন দেখাইয়া চইলা গেলা’ বলেই হাউমাউ করে কাঁদছিলেন তিনি।

শোকে পাথর হয়েছেন দুই ভাই জনি ও রনি। আর প্রিয় বাবার সঙ্গে কথা বলার জন্য ছটফট করছে একমাত্র মেয়ে মাগফিরাতুল মাওয়া। স্ত্রী, মা ও স্বজনদের আহাজারিতে মাসুদের গ্রামের বাড়ির পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে।

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত শান্তিরক্ষী মাসুদ রানার গ্রামের বাড়ি নাটোরের লালপুর উপজেলার আড়বাব ইউনিয়নের বোয়ালিয়াপাড়ায়। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) বেলা ২টা ৪৭ মিনিটে মাসুদ রানার লাশ বহনকারী সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার উপজেলার করিমপুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করে। সেখান থেকে সেনাবাহিনীর লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে ৩টা ১২ মিনিটে বোয়ালিয়াপাড়া গ্রামের বাড়িতে লাশ আনা হয়। পরে বোয়ালিয়াপাড়া হাইস্কুল মাঠে ৩টা ৫৪ মিনিটে জানাজা শেষে যথাযথ সামরিক মর্যাদায় স্থানীয় কবরস্থানে লাশ দাফন সম্পন্ন করা হয়।

নাটোর স্টেডিয়ামের আর্মি সেনাক্যাম্পের কমান্ডার মেজর মো. নাজমুল আলম আবীর বলেন, সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে শহীদ পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।

লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জুলহাস হোসেন সৌরভ বলেন, ‘শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা ও সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি। আমরা শোকাহত এবং শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত