Ajker Patrika

হেলিকপ্টারে ঠাকুরগাঁওয়ের যে মুরগির খামার পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বেনজীর

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ জুন ২০২৪, ১৬: ৩৭
হেলিকপ্টারে ঠাকুরগাঁওয়ের যে মুরগির খামার পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বেনজীর

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দৌলতপুর গ্রামে তিন ফসলি জমিতে গড়ে উঠেছে ‘নর্থস এগ লিমিটেড’ নামে একটি পোলট্রি খামার। পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ পাঁচ বছর আগে এই খামার পরিদর্শনে গিয়েছিলেন।

স্থানীয়রা বলেন, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও স্বাস্থ্য খাতের বিতর্কিত ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম ওরফে মিঠু এই প্রতিষ্ঠানের মালিক। তবে এর সপক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো নথিপত্র পাওয়া যায়নি।

এই খামার সদর উপজেলার দৌলতপুর ও গৌরীপুর মৌজার কয়েক গ্রামের মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। খামারের বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। তীব্র দুর্গন্ধে ওই দুই মৌজার পাঁচ-সাত গ্রামের বাসিন্দা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।

এলাকাবাসী জানান, ২০০৯ সালে সদর উপজেলার দৌলতপুর গ্রামে প্রায় ৯০ বিঘা জমির ওপর নর্থস এগ লিমিটেড পোলট্রি খামার স্থাপন করা হয়। 

আজ শুক্রবার দৌলতপুর এলাকায় সরেজমিন গিয়ে খামারের ব্যবস্থাপক ডা. ফেরদৌস আলমের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, এই খামারে তিন লাখের বেশি মুরগি আছে। এসব মুরগির বিষ্ঠা বিক্রি করা হয় ব্যবসায়ী ও মৎস্য খামারিদের কাছে। 

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা দৌলতপুর গ্রামে ৯০ বিঘা জমির ওপর স্থাপিত পোলট্রি খামারখামারটির ভেতরে ঢুকে দেখা যায়, পেছনে বিষ্ঠা ফেলার ভাগাড়। এর দেয়াল ঘেঁষেই জনবসতি। গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সালাম বলেন, বিষ্ঠার দুর্গন্ধে টেকা দায়। রোদ উঠলে বাতাসে গন্ধ আরও বেশি ছড়িয়ে পড়ে। একই গ্রামের খাদেজা বেগমসহ কয়েকজন নারী অভিযোগ করে বলেন, ‘গন্ধে বমি আসে। তৃপ্তি নিয়ে খাওয়াদাওয়া করা যায় না! মশা-মাছির উপদ্রবের কারণে রাত-দিন মশারি টাঙিয়ে থাকতে হয়।’ শিউলি আক্তার বলেন, ‘গন্ধে ঘুমাতেও কষ্ট হয়।’ উপজেলা পরিষদের বলাকা উদ্যান নামে একটি বিনোদন পার্কের ব্যবস্থাপক হাসান আলী বলেন, ‘মুরগির বিষ্ঠার গন্ধ ও মশা-মাছি-পোকার উপদ্রবের কারণে পার্কে কেউ আসতে চায় না।’

একই চিত্র দেখা যায় গৌরীপুর, বৌরাণী, কুমিল্লাহাড়ীসহ কয়েকটি গ্রামে। দৌলতপুর গ্রামের দিনমজুর সিরাজুল বলেন, ‘গরিব মানুষের কথা কে শুনব! খামারের গন্ধের কথা বলতে গেলেই বিপদে পড়তে হয়। তার ওপর আবার “বেনজীরের খামার”!’ 

ঠাকুরগাঁও আড়াই শ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট তোজাম্মেল হক বলেন, ‘পোলট্রি বর্জ্যের কণা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে মানুষের শরীরে ঢুকে ফুসফুসের রোগের কারণ হতে পারে। এর থেকে শ্বাসকষ্ট এবং হার্টের ক্ষতি হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। এসব খামারসংলগ্ন এলাকার মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে থাকে।’ 

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা দৌলতপুর গ্রামে ৯০ বিঘা জমির ওপর স্থাপিত পোলট্রি খামারজগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আলাল বলেন, ‘দুর্গন্ধে দুর্ভোগে পড়েছে দৌলতপুর ও গৌরীপুর মৌজার কয়েক এলাকার মানুষ। আর লাভবান হচ্ছে ব্যবসায়ীরা। এসব ব্যক্তি অত্যন্ত প্রভাবশালী, এদের হাত অনেক লম্বা। তাই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। ভুক্তভোগীরা সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করে প্রতিকার পাননি। পরে প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠেন। আন্দোলনকারীদের দমন করতে ওই খামারে ছুটে আসেন বেনজীর আহমেদ।’

আলাউদ্দিন বলেন, ‘২০১৮ সালে আকাশপথে ঠাকুরগাঁওয়ে আসেন বেনজীর আহমেদ। তাঁকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি নেমেছিল সদর উপজেলার বড়খোচাবাড়ি এস কে দৌলতপুর বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে। পরে তিনি সড়কপথে খামারে যান এবং প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে দেখেন। তখন থেকে সবাই এই খামারের নাম বলেন “বেনজীর খামার”।’ 

তবে খামার ব্যবস্থাপক ডা. ফেরদৌস আলম দুর্গন্ধ ছড়ানোর কথা অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, গন্ধ যাতে খামারের বাইরে না যায়, সে ব্যবস্থা তাঁদের নেওয়া আছে। বিষ্ঠা থেকে সার উৎপাদন করা হচ্ছে।

এই খামারের মালিক সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ কি না জানতে চাইলে ফেরদৌস আলম বলেন, ‘আমি জানি না। তবে তিনি এই খামারে এসেছিলেন।’ 

ওই খামারের পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আছে কি না জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে জানতে হবে।’

বেনজীর আহমেদ সম্পকিত আরও খবর পড়ুন—

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নরসিংদীতে তিন চোখ ও দুই মুখের বাছুরের জন্ম, এলাকায় চাঞ্চল্য

নরসিংদী প্রতিনিধি
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীতে অদ্ভুত আকৃতির বাছুরের জন্ম হয়েছে। বাছুরটির রয়েছে দুটি মুখ, দুটি জিহ্বা, দুটি কান ও তিনটি চোখ। এর মধ্যে একটি চোখ বাছুরের কপালের মাঝখানে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

২৩ ডিসেম্বর রাতে শিবপুর উপজেলার চক্রধা ইউনিয়নের পুবেরগাঁও গ্রামে স্থানীয় ইউপি সদস্য কাশেম খানের খামারে বাছুরটির জন্ম।

খামারমালিক কাশেম খান বলেন, বাছুরটি জন্মের পর থেকেই অসুস্থ। স্বাভাবিকভাবে দুধ পান করতে না পারায় ফিডারের মাধ্যমে দুধ খাওয়াতে হচ্ছে।

তিনি জানান, তাঁর খামারের একটি গাভি বাছুরটির জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেন, এর আগেও গাভিটির বাছুর হয়েছে। কিন্তু এবারের মতো এমন অদ্ভুদ বাছুর আগে কখনো হয়নি।

ঘটনাটি জানাজানির পর থেকেই বাছুরটিকে একনজর দেখতে আশপাশের কৌতূহলী মানুষ খামারে আসছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল জলিল বলেন, ‘আমরা ছোটবেলা থেকে গরু-ছাগল দেখছি। কিন্তু তিন চোখ আর দুই মুখের বাছুর এই প্রথম দেখলাম। খবর পেয়ে দূর থেকে এসেছি।’

আরেক স্থানীয় নারী জরিনা বেগম বলেন, ‘বাছুরটা দেখতে অদ্ভুত লাগলেও মায়া হচ্ছে। বাছুরটির স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। অনেকেই দ্রুত প্রাণিসম্পদ বিভাগের চিকিৎসকের পরামর্শ ও চিকিৎসা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিচ্ছেন।’

এর আগে এ ধরনের বাছুর জন্মের বিষয়ে প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সাধারণত জেনেটিকস ডিফেক্টের কারণে গাভির এমন ত্রুটিপূর্ণ বাচ্চার জন্ম হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজীপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে নানি-নাতনিসহ নিহত ৩

গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের কালীগঞ্জে রেললাইন দিয়ে হাঁটার সময় ট্রেনে কাটা পড়ে নানি-নাতনিসহ তিন নারী নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে টঙ্গী-ভৈরব রেলপথের আড়িখোলা রেলস্টেশনসংলগ্ন টেকপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত নারীরা হলেন কালীগঞ্জ পৌরসভার দেওয়ালেরটেক গ্রামের মোবারক হোসেনের স্ত্রী সাদিয়া বেগম (২৪), একই এলাকার বাবু মিয়ার মেয়ে অনাদি আক্তার (১৩) এবং নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার মরজাল এলাকার বাসিন্দা কমলা বেগম (৫৫)। নিহত কমলা বেগম ও অনাদি আক্তার সম্পর্কে নানি-নাতনি এবং সাদিয়া বেগম তাঁদের প্রতিবেশী ছিলেন।

স্থানীয়রা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আড়িখোলা রেলব্রিজ এলাকায় রেললাইনের ওপর দিয়ে তিনজন হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নোয়াখালীগামী ‘উপকূল এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি চলে আসে। এ সময় তাঁরা রেলব্রিজের ওপর থাকায় সেখান থেকে দ্রুত সরে যাওয়ার সুযোগ পাননি। পরে ট্রেনটি তাঁদের ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই কমলা বেগম ও সাদিয়া বেগমের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় অনাদি আক্তারকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জিয়াউর রহমান জানান, অনাদি আক্তারকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওবায়দুল হক জানান, এটি রেলওয়ের আওতাধীন দুর্ঘটনা হওয়ায় রেলওয়ে পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।

রেলওয়ে নরসিংদী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) দিলীপ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল সম্পন্ন করেছি। নিহত নারীদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বিনা ময়নাতদন্তে লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আরাকান আর্মিদের জন্য নেওয়া হচ্ছিল ১৫০০ মশারি, আটক ৫

থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি  
মশারিসহ জব্দ করা মালপত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা
মশারিসহ জব্দ করা মালপত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা

বান্দরবানের থানচি উপজেলায় দুটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা তল্লাশি করে ১ হাজার ৫০০টি মশারি, ১২০টি নৌকার ইঞ্জিনের পাখা উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে তিন্দুমুখ বিজিবি চেকপোস্ট পার হওয়ার সময় নৌকাগুলো তল্লাশি করে এসব জিনিস জব্দ করে বিজিবি। এসব মশারি ও ইঞ্জিনের পাখা বান্দরবানের থানচির বড় মদক সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির জন্য নেওয়া হচ্ছিল বলে জানিয়েছে বিজিবি। এ ঘটনায় নৌকা দুটি থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার তাঁদের থানচি থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় আটক ব্যক্তিরা হলেন থোয়াই হ্লা চিং মারমা, উমং সাইং মারমা, হ্লাচিংথোয়াই মারমা, উক্যছাইন মারমা ও মো. ইউনুস।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে বিজিবি বলিপাড়া ৩৮ ব্যাটালিয়ানের সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেনের জানান, নিজস্ব গোয়েন্দা সূত্রে তাঁরা জেনেছেন, দীর্ঘদিন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ওষুধ, কাপড়, জুতা, মোজা, মশারি, নৌকা ইঞ্জিনের পাখা ও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ মিয়ানমারের আরাকান আর্মির কাছে সরবরাহ করছে একটি সিন্ডিকেট চক্র। পাচারকারীদের ধরতে সীমান্তের বিজিবি চৌকিগুলোতে বিজিবি সদস্যরা সতর্ক রয়েছেন।

জাকির হোসেন বলেন, গতকাল বুধবার তিন্দুমুখ বিজিবি চেকপোস্ট অতিক্রম করার সময় মালবাহী তিনটি ইঞ্জিন নৌকা দেখে বিজিবির সদস্যদের সন্দেহ হয়। এ সময় নৌকা থামাতে বললে একটি নৌকা দ্রুত চলে যায়। বাকি দুটি নৌকা তল্লাশি করে ১ হাজার ৫০০টি মশারি, ১২০টি ইঞ্জিন বোটসহ অন্যান্য পণ্য পাওয়া যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নলছিটি লঞ্চঘাট ওসমান হাদির নামে নামকরণ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
নলছিটি লঞ্চঘাট ।  ছবি: আজকের পত্রিকা
নলছিটি লঞ্চঘাট । ছবি: আজকের পত্রিকা

নলছিটি উপজেলার লঞ্চঘাট এখন থেকে শহীদ শরিফ ওসমান হাদির নামে পরিচিত হবে। জন্মস্থান ও শৈশবের স্মৃতিতে গাথা এই লঞ্চঘাট তাঁর নামের সঙ্গে চিরস্থায়ীভাবে যুক্ত হলো।

বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় (২৫ ডিসেম্বর) জানান, শহীদ ওসমান হাদির জন্মস্থান নলছিটি। শৈশব, বেড়ে ওঠা এবং জীবনসংগ্রামের সঙ্গে লঞ্চঘাট এলাকার নিবিড় সম্পর্ক থাকার কারণে এটি তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে। বর্তমানে টার্মিনালের সংস্কার ও রঙের কাজ চলমান রয়েছে।

আগামী শনিবার নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন ঘাটটি পরিদর্শন করবেন বলেও জানান তিনি।

নলছিটি লঞ্চঘাট শহীদ ওসমান হাদির জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঘাট থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে তার পৈতৃক বাড়ি। নদীর ধারে দাঁড়িয়ে মানুষের আসা-যাওয়া দেখা এবং লঞ্চের ভিড়ে সময় কাটানো—এই ঘাট ছিল তার বেড়ে ওঠার নীরব সাক্ষী।

ঘাট এলাকার ব্যবসায়ী রব হাওলাদার বলেন, ‘আমরা চাইছিলাম হাদির স্মরণে এমন কিছু হোক, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম মনে রাখবে। তার শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত লঞ্চঘাটের নাম তার নামে হওয়া নিঃসন্দেহে স্মরণীয় সিদ্ধান্ত।’

ব্যবসায়ী শাহাদত আলম ফকির যোগ করেন, ‘এই ঘাটে আমরা হাদিকে ছোটবেলা থেকে দেখেছি। সে এখানকারই ছেলে ছিল। আজ তার নামে ঘাটের নামকরণ হওয়ায় আমরা গর্বিত।’

ওসমান হাদির প্রতিবেশী বেলায়েত হোসেন নান্নু বলেন, ‘হাদি এই এলাকার সন্তান। এই ঘাট, এই নদী, এই মানুষ—সবকিছুতেই তার স্মৃতি ছড়িয়ে আছে। লঞ্চঘাটের নাম তার নামে হওয়া মানে, সে এখানেই চিরদিন বেঁচে থাকবে।’

উল্লেখ্য, ১২ ডিসেম্বর হত্যার উদ্দেশ্যে ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। তাঁকে প্রথমে ঢাকায় ভর্তি করা হয় এবং পরে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর মারা যান ওসমান হাদি। পরবর্তীকালে তাঁর মরদেহ দেশে আনা হয় এবং সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে (জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে) সমাহিত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত