Ajker Patrika

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রণক্ষেত্র, ৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী ও রাবি প্রতিনিধি 
আপডেট : ১২ মার্চ ২০২৩, ১৭: ১৬
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রণক্ষেত্র, ৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী ও সাধারণ ব্যবসায়ীদের মধ্যে শুরু হওয়া সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ন্ত্রণে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সাত প্লাটুন সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বিজিবি সদস্যরা বর্তমানে বিনোদপুর বাজারে অবস্থান করছেন। 

বিজিবির রাজশাহী-১ ব্যাটেলিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাব্বির আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও র‍্যাবের পাশাপাশি ৭ প্লাটুন বিজিবি সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁরা ক্যাম্পাসের বাইরে আছেন। পরিস্থিতি বুঝে তাঁরা নির্দেশনা অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবেন।

এদিকে সন্ধ্যায় শুরু হওয়া সংঘর্ষ রাত ১১টা পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তুমুল সংঘর্ষে এরই মধ্যে দুই পক্ষের দুই শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আহতদের বেশির ভাগই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। 

রাত ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতানুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের সামনে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছেন, এই সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বগুড়া থেকে মোহাম্মদ পরিবহনের একটি বাসে রাজশাহী আসছিলেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী। বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে গাড়িচালক শরিফুল ও তাঁর সহযোগী রিপনের সঙ্গে তাঁর কথা-কাটাকাটি হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিনোদপুর বাজারে বাস থেকে নামার সময় তাঁদের আবারও কথা-কাটাকাটি হয়। এ সময় বিনোদপুর বাজারের একজন ব্যবসায়ী বাসচালকের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন। তখন শিক্ষার্থীর সঙ্গে তাঁর হাতাহাতি হয়।

খবর পেয়ে সেখানে যান বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া। এ সময় ব্যবসায়ীরা তাঁর মোটরসাইকেলটি ভাঙচুর করেন। ধাওয়া দিয়ে তাঁকে ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এতেই ঘটনা বড় হয়ে যায়। সাধারণ শিক্ষার্থীরা আবাসিক হল থেকে বের হয়ে বিনোদপুর গেটের পাশে অবস্থান নেন। আর ব্যবসায়ীরা অবস্থান নেন রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে বিনোদপুর বাজারে। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে লক্ষ্য করে অন্ধকারে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। শতশত শিক্ষার্থীর ভিড়ের মধ্যে পড়া ইটে অনেক শিক্ষার্থী আহত হন। এপারে ব্যবসায়ীদের মধ্যেও আহত হন অন্তত ১০ জন। 

আহতদের মধ্যে ক্যাম্পাসে কর্মরত কয়েকজন সাংবাদিকও রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আহতদের সংখ্যা দুই শতাধিক দাবি করা হলেও রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য গেছেন ৩৮ জন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে খোঁজ নিয়ে এটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। 

রাবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষে বিনোদপুর রণক্ষেত্র

এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে সন্ধ্যার পরেই ঘটনাস্থলে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য যান। কিন্তু দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া তাঁরা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার কোনো চেষ্টা করেননি। রাত ৮টার দিকে বিনোদপুর গেটের পাশে থাকা পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিনোদপুর বাজারের বেশ কয়েকটি দোকানেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। মুহূর্তেই বিনোদপুর বাজারে সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক।

ওই সময় অন্ধকারের মধ্যে বিনোদপুর বাজার থেকে ক্যাম্পাসের দিকে মুহুর্মুহু ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে দেখা যায় ব্যবসায়ীদের। ক্যাম্পাসের ভেতর থেকে বিনোদপুর বাজারের দিকে অসংখ্য পেট্রোল বোমা উড়ে আসতে দেখা যায়। ক্যাম্পাসের আবাসিক হলগুলো থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদেরও লাঠিসোঁটা এবং অন্যান্য দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। 

এই পরিস্থিতিতে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কের বিনোদপুর বাজারের সামনে দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিনোদপুর বাজারে আসেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সিটি মেয়র এ এইচ এম খাইরুজ্জামান লিটন। তিনি দুই পক্ষকেই শান্ত হওয়ার আহ্বান জানান। কিন্তু পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। থেমে থেমে সংঘর্ষ চলছিল।

ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসার পর রাত ৯টা ৫ মিনিটে পুলিশ প্রথম অ্যাকশন শুরু করে। পুলিশ লাঠিপেটা ও ধাওয়া দিয়ে বিনোদপুর বাজার থেকে ব্যবসায়ীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। রাজশাহীর নগর পুলিশের কুইক রেসপন্স টিম ও র‍্যাবের সদস্যরা এই অভিযানে অংশ নেন। দাঙ্গা দমনের কাজে ব্যবহৃত পুলিশের একটি এপিসি গাড়ি দিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে দেখা যায়। এর পরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তবে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়ি এসে দোকানপাটের আগুন নিভিয়েছে। 

স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় বিনোদপুর গেটে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অবস্থানরাত সাড়ে ১০টায় পরিস্থিতি আরও উত্তাল হয়ে ওঠে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের বাইরে বের হয়ে মহাসড়কে চলে আসেন। তাঁরা আবারও দোকানপাটে আগুন দিতে শুরু করেন। এ সময় পুলিশ টিয়ার শেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এখন আবার ক্যাম্পাসের ভেতরে শিক্ষার্থী এবং বাইরে মহাসড়কের ওপরে পুলিশ অবস্থান করছে। বাজারে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছেন ব্যবসায়ীরাও। বিরাজ করছে তুমুল উত্তেজনা। 

সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের বাইরে এসে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দুর্বলতার কারণে ব্যবসায়ীরা শিক্ষার্থীদের রক্ত ঝরাতে সাহস পেয়েছে। এ ঘটনায় তাঁরা বিচার চান। 

ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে বিনোদপুর বাজার বণিক সমিতির উপদেষ্টা আবদুল আজিজ বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা প্রথমে ইমরান নামের এক ব্যবসায়ীর দোকানে ঢুকিয়ে বাসের চালক ও হেলপারকে মারধর করছিল। তাদের রক্ষা করার চেষ্টা করায় তারা ব্যবসায়ীদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছে। এ ঘটনায় ব্যবসায়ীদের কোনো দোষ নেই।’ 

ঘটনার ব্যাপারে রাতে পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ বক্তব্য দেননি। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম বলেন, ‘এ পর্যন্ত শিক্ষার্থী আহতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে গেছে।’ 

ঘটনার ৩ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন এসব ব্যাখ্যা করার সময় নয়, কাজ করার সময়। আমাদের কাজ করতে দিন।’

এ ঘটনায় আগামীকাল রোববার ও সোমবার সব ধরনের ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঘটনার প্রায় চার ঘণ্টা পর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার। এ সময় তিনি মাইকে এ ঘোষণা দেন। ঘোষণা দেওয়ার পর তোপের মুখে পড়েন তিনি। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস বন্ধের প্রতিবাদ জানান। 

উপাচার্য মাইকে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমাদের প্রতি অনুরোধ, হলে ফিরে যাও। তোমাদের জন্য প্রশাসন সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। রুমে যাও তোমরা। এ ঘটনায় প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে।’ 

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৫টি সাজাসহ ২৩টি ওয়ারেন্টে সাবেক যুবদল নেতা গ্রেপ্তার

লালমনিরহাট প্রতিনিধি 
হাতীবান্ধা উপজেলার সাবেক যুবদল নেতা গ্রেপ্তারকৃত এ এস এম শামসুজ্জামান সেলিম। ছবি: সংগৃহীত
হাতীবান্ধা উপজেলার সাবেক যুবদল নেতা গ্রেপ্তারকৃত এ এস এম শামসুজ্জামান সেলিম। ছবি: সংগৃহীত

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সাবেক যুবদল নেতা এ এস এম শামসুজ্জামান সেলিমকে পাঁচটি সাজাপ্রাপ্তসহ ২৩টি ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ সোমবার সকালে তাঁকে লালমনিরহাট আদালতে পাঠানো হয়। এর আগে রোববার মধ্যরাতে রংপুরের হাজিরহাট থানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার এ এস এম শামসুজ্জামান সেলিম হাতীবান্ধা উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান। তিনি উপজেলার সিংগীমারী ইউনিয়নের দক্ষিণ গড্ডিমারী গ্রামের মৃত শওকত হোসেনের ছেলে।

স্থানীয়রা ও পুলিশ জানায়, হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান যুবদল নেতা শামসুজ্জামান সেলিম বিভিন্নজনের কাছ থেকে চেক ও স্ট্যাম্পের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করেন। যা সময়মতো পরিশোধ না করায় তাঁর বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা একের পর এক মামলা দায়ের করেন। এভাবে ২৩টি মামলা দায়ের করা হয়। যার মধ্যে পাঁচটি মামলায় বিভিন্ন মেয়াদের সাজা প্রদান করেন আদালত। পলাতক থাকায় সাজাপ্রাপ্তসহ ২৩টি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করেন আদালত।

২৩টি ওয়ারেন্টের আসামি শামসুজ্জামান সেলিম দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হাতীবান্ধা থানা-পুলিশ রংপুরের হাজিরহাট থানা-পুলিশের সহায়তায় রোববার রাতে হাজিরহাট এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। আজ সকালে তাঁকে লালমনিরহাট আদালতে পাঠায় পুলিশ।

হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন মোহাম্মদ আমানউল্লাহ জানান, শামসুজ্জামান সেলিমকে পাঁচটি সাজাসহ মোট ২৩টি ওয়ারেন্ট মূলে রংপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজশাহী-৫ আসনে জামায়াতের প্রার্থী পরিবর্তন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
জামায়াতের নতুন প্রার্থী পুঠিয়া উপজেলার আমির মাওলানা মনজুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
জামায়াতের নতুন প্রার্থী পুঠিয়া উপজেলার আমির মাওলানা মনজুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে প্রার্থী পরিবর্তন করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির নতুন প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন জামায়াতের রাজশাহী জেলা শুরা সদস্য ও পুঠিয়া উপজেলার আমির মাওলানা মনজুর রহমান।

এর আগে এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল জেলার সহকারী সেক্রেটারি নুরুজ্জামান লিটনকে। প্রার্থী পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. গোলাম মর্তুজা।

তিনি জানান, সাংগঠনিক কারণে প্রার্থী পরিবর্তন করা হয়েছে। তিনি আশা করেন, পুঠিয়া-দুর্গাপুরের মানুষ দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে ভোট দিয়ে মাওলানা মনজুর রহমানকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করবেন।

আগের প্রার্থী নুরুজ্জামান লিটন বলেন, ‘সংগঠনের সিদ্ধান্তের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধাশীল থেকে আমি দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে কাজ করব।’ মাওলানা মনজুর রহমানকে সার্বিক সহযোগিতা করার কথাও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রিকশায় চড়ে ডিসি অফিসে মির্জা ফখরুল, জমা দিলেন মনোনয়নপত্র

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৫৭
জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ইশরাত ফারজানার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: আজকের পত্রিকা
জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ইশরাত ফারজানার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঠাকুরগাঁও-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে রিকশায় চড়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বেলা ১১টার দিকে ঠাকুরগাঁও শহরের তাঁতিপাড়া মহল্লার পৈতৃক বাসভবন থেকে বের হন মির্জা ফখরুল। প্রথমে তিনি জেলা বিএনপি কার্যালয়ে যান এবং সেখানে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে অংশ নেন। অনুষ্ঠান শেষে বেলা ১১টা ৩০ মিনিটের দিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর করিমকে সঙ্গে নিয়ে একটি রিকশায় চড়ে বসেন বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুলের রিকশা যখন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দিকে রওনা দেয়, তখন পেছনে হেঁটে অনুগমন করেন কয়েক শ দলীয় নেতা-কর্মী, সমর্থক ও সাধারণ পেশাজীবী। বেলা ১১টা ৪৭ মিনিটে তিনি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে পৌঁছান।

জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ইশরাত ফারজানা কার্যালয়ের প্রবেশমুখে দাঁড়িয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে অভ্যর্থনা জানান। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে ঠাকুরগাঁও-১ আসনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি। এ সময় তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমিন, সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জাফরউল্লাহসহ স্থানীয় জ্যেষ্ঠ নেতারা।

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন পরে বাংলাদেশের মানুষ ভোটাধিকার পেয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল থেকে ঠাকুরগাঁও-১ আসনে মনোনয়ন পাওয়ায় আমি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও আমাদের নেতা জনাব তারেক রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’

মির্জা ফখরুলের রিকশা যখন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দিকে রওনা দেয়, তখন পেছনে হেঁটে অনুগমন করেন কয়েক শ দলীয় নেতা-কর্মী। ছবি: আজকের পত্রিকা
মির্জা ফখরুলের রিকশা যখন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দিকে রওনা দেয়, তখন পেছনে হেঁটে অনুগমন করেন কয়েক শ দলীয় নেতা-কর্মী। ছবি: আজকের পত্রিকা

নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জনগণের ভালোবাসায় নির্বাচিত হলে ঠাকুরগাঁও অঞ্চলের সামাজিক পরিবেশ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের উন্নয়নে কাজ করব। বিশেষ করে মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি আমার অগ্রাধিকার থাকবে।’ এ সময় তিনি এলাকার মানুষের কাছে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে ভোট চেয়ে দোয়া কামনা করেন।

বিএনপি মহাসচিবের প্রস্থানের পর জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীরাও জেলার তিনটি আসনের জন্য তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপস্থিত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৩১
কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির প্রতিবাদে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল। ছবি: জাহিদুল ইসলাম
কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির প্রতিবাদে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল। ছবি: জাহিদুল ইসলাম

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন ব্যবসায়ীরা। মানবন্ধনে হামলা চালায় একদল দুর্বৃত্ত। পরে উভয়পক্ষে ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

আজ সোমবার বেলা ১২টার দিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজার সংলগ্ন কাঁচামালের আড়ত এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে ওই এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।

‎খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মানববন্ধন চলাকালে এই হামলার পর ব্যবসায়ীরাও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলাকারীদের তাড়া করেন। এ ঘটনায় দুর্বৃত্তদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা ‘চাঁদাবাজের আস্তানা ভেঙে দাও- গুঁড়িয়ে দাও’, ‘চাঁদাবাজের আস্থানা এই বাংলায় হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

‎ব্যবসায়ীরা জানান, চাঁদাবাজি বন্ধের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন চলছিল কিন্তু হঠাৎ করেই মানববন্ধনে হামলা করা হয়। স্থানীয় চাঁদাবাজ আব্দুর রহমানের বাহিনী তাঁদের ওপর হামলা করেছে বলে অভিযোগ তোলেন ব্যবসায়ীরা। এই হামলার তীব্র নিন্দা জানান তাঁরা।

‎তাঁরা জানান, হামলার সময় পাশেই পুলিশের সদস্য ছিল তবুও তারা এই হামলা চালায়। পরে ব্যবসায়ীরা ঐক্যবদ্ধভাবে এ হামলাকারীদের প্রতিহত করেন।

‎দুপুরে ঘটনার বিষয়ে তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ক্যশৈনু মারমা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকালে কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন করছিল। এসময় একটি গ্রুপ এসে তাদের বাধা দেয়। তখন তাদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত