নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

এক্সকাভেটরের চাপায় ঘরের টিনগুলো চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেছে। দুমড়েমুচড়ে গেছে ঘরের স্টিলের খাট, হাঁড়ি-পাতিলসহ অন্য জিনিসপত্র। বাড়ির মাটির দেয়ালগুলো মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বাবু ডাইংয়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোল সম্প্রদায়ের পাঁচজনের বাড়ি এভাবে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলেও তাঁরা ভিটা ছেড়ে যাননি। পাশেই বাঁশঝাড়ে অল্প কিছু জিনিসপত্র নিয়ে তাঁরা আশ্রয় নিয়েছেন। এখানেই থাকতে চান তাঁরা।
গত সোমবার দুপুরে সনাতন সরেন, সুজন সরেন, ভুটু কিসকু, ভারত টুডু ও শনিলাল টুডুর বাড়িতে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। খাস জায়গা ভেবে এই পরিবারগুলো ১৯৯৮ সাল থেকে এখানে বাস করে আসছিলেন। পরে শোনেন যে, জমিটি তিলক মাঝি, দিনু মাঝি ও ভাদু মাঝি নামের কয়েকজনের নামে রেকর্ড আছে। তাঁরা তাঁদের জাত ভাই। এখন এখানে নেই। তাঁদের হিন্দু সাজিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করে নেন মকবুল হোসেন নামের এক ব্যক্তি।
পরে মকবুলের ওয়ারিশ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদরের আলমগীর কবিরসহ কয়েকজন জমি পেতে আদালতে মামলা করেন। কোল সম্প্রদায়ের মানুষগুলো মামলা পরিচালনা করতে পারেননি। একতরফা রায়ে এই ৭৭ শতাংশ জায়গার রায় হয়েছে আলমগীরদের পক্ষে। গত সোমবার পুলিশ ও আদালতের প্রতিনিধি গিয়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে।
গোদাগাড়ীর মোহনপুর ইউনিয়নে অবস্থিত বাবু ডাইং গ্রামটি রাজশাহী শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর থেকে দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, তিনটি বাড়ি একেবারেই গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আর দুটি বাড়ির আংশিক ভাঙা হয়েছে। শনিলাল টুডুর বাড়ির অর্ধেক ভেঙে আঙিনায় কয়েকটি সীমানা পিলার পুঁতে দেওয়া হয়েছে। শনিলালের স্ত্রী চম্পলি মুর্মু বলেন, ‘একদিক থেকে বুলডোজার দিয়ে বাড়ি ভাঙছিল, আরেক দিক দিয়ে নিজেরা নিজেরাই মাপামাপি করে বাড়ির আঙিনায় সীমানা পিলার পুঁতে দিয়েছে। আমাদের কোনো কথাই শোনেনি।’
সনাতন টুডু বলেন, ‘পুলিশসহ কোর্টের লোকজন এসে বাড়ি ভাঙতে চাইলে আমি দরজার সামনে দাঁড়িয়ে যাই। তখন পুলিশ বলে যে, ‘‘আপনি আইনের কাজে বাধা দেবেন না’’। আমাকে সরিয়ে দিয়ে বুলডোজার চালিয়ে দেয়। জিনিসপত্র সরাতে আমরা ৩০ মিনিটও সময় পাইনি।’
ঘরহারা সুজন সরেন বলেন, ‘অল্প কিছু জিনিস বের করতে পেরেছি। সেগুলো এখানেই রেখেছি বাঁশতলায়। বাকিগুলো বুলডোজারের নিচে গেছে। গরু-ছাগলগুলো মানুষের বাড়িতে রেখেছি। দুই দিন আমরা বাঁশঝাড়ের মধ্যেই ছিলাম। গতকাল রাতে বৃষ্টি এলে পাশের বাড়ির বারান্দায় আশ্রয় নিই। আমরা এখানেই থাকতে চাই। আমাদের তো আর যাওয়ার কোনো জায়গা নাই।’

এ দিন পরিবারগুলোকে দেখতে যান বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) রাজশাহী ইউনিটের সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট সামিনা বেগম, সেন্টার ফর ক্যাপাসিটি বিল্ডিং অব ভলান্টারি অর্গানাইজেশনের (সিসিবিভিও) সমন্বয়কারী আরিফ ইথার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম সারওয়ার, রক্ষাগোলা সমন্বয় কমিটির সভাপতি সুধীর সরেন, বন্ধু আমরার সভাপতি মাহফুজুল ইসলাম লিটন, সিসিবিভিওর সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার নিরাবুল ইসলাম ও ব্লাস্টের প্যারালিগ্যাল আবু তালেব।
সিসিবিভিওর সমন্বয়কারী আরিফ ইথার বলেন, ‘আগে এ জমি কোল সম্প্রদায়েরই ছিল। তাদের হিন্দু দেখিয়ে জমির রেকর্ড করে নেওয়া হয়েছে বাঙালিদের নামে। কারণ, আদিবাসীদের জমি নিতে হলে জেলা প্রশাসকের অনুমোদন লাগে। হিন্দু হলে অনুমোদনের প্রয়োজন নেই। ভিন্নপথে জমির মালিকানা নিয়ে তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। এটা খুবই অমানবিক কাজ হয়েছে। আমরা অনুরোধ করব, যেন দ্রুতই তাদের পুনর্বাসন করা হয়।’
জানতে চাইলে কোল পরিবারগুলোর বিরুদ্ধে করা মামলার বাদী আলমগীর কবির বলেন, ‘এই জমি কিনেছিলেন আমার দাদা মকবুল হোসেন। তিনি কীভাবে এটা কিনেছিলেন, তা তো আমরা বলতে পারব না। তবে এটা রেকর্ডীয় সম্পত্তি। তারপরও আদিবাসীরা জমি ছাড়েনি। বাধ্য হয়ে আমরা আইনের আশ্রয় নিয়ে তাদের উচ্ছেদ করেছি। জমি এখন আমাদের দখলে।’
ব্লাস্টের রাজশাহী ইউনিটের সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট সামিনা বেগম জানান, এই জমির সমস্ত কাগজপত্র তাঁরা সংগ্রহ করবেন। তারপর ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে আইনি সহায়তা দেবেন। গতকাল গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল আহম্মেদ জানিয়েছিলেন, পরিবারগুলোর থাকার ব্যবস্থা করার জন্য তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দিয়েছেন। তবে আজ পর্যন্ত তাঁদের কোনো গতি হয়নি। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে ইউপি চেয়ারম্যান খাইরুল ইসলামকে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি।

এক্সকাভেটরের চাপায় ঘরের টিনগুলো চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেছে। দুমড়েমুচড়ে গেছে ঘরের স্টিলের খাট, হাঁড়ি-পাতিলসহ অন্য জিনিসপত্র। বাড়ির মাটির দেয়ালগুলো মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বাবু ডাইংয়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোল সম্প্রদায়ের পাঁচজনের বাড়ি এভাবে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলেও তাঁরা ভিটা ছেড়ে যাননি। পাশেই বাঁশঝাড়ে অল্প কিছু জিনিসপত্র নিয়ে তাঁরা আশ্রয় নিয়েছেন। এখানেই থাকতে চান তাঁরা।
গত সোমবার দুপুরে সনাতন সরেন, সুজন সরেন, ভুটু কিসকু, ভারত টুডু ও শনিলাল টুডুর বাড়িতে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। খাস জায়গা ভেবে এই পরিবারগুলো ১৯৯৮ সাল থেকে এখানে বাস করে আসছিলেন। পরে শোনেন যে, জমিটি তিলক মাঝি, দিনু মাঝি ও ভাদু মাঝি নামের কয়েকজনের নামে রেকর্ড আছে। তাঁরা তাঁদের জাত ভাই। এখন এখানে নেই। তাঁদের হিন্দু সাজিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করে নেন মকবুল হোসেন নামের এক ব্যক্তি।
পরে মকবুলের ওয়ারিশ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদরের আলমগীর কবিরসহ কয়েকজন জমি পেতে আদালতে মামলা করেন। কোল সম্প্রদায়ের মানুষগুলো মামলা পরিচালনা করতে পারেননি। একতরফা রায়ে এই ৭৭ শতাংশ জায়গার রায় হয়েছে আলমগীরদের পক্ষে। গত সোমবার পুলিশ ও আদালতের প্রতিনিধি গিয়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে।
গোদাগাড়ীর মোহনপুর ইউনিয়নে অবস্থিত বাবু ডাইং গ্রামটি রাজশাহী শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর থেকে দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, তিনটি বাড়ি একেবারেই গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আর দুটি বাড়ির আংশিক ভাঙা হয়েছে। শনিলাল টুডুর বাড়ির অর্ধেক ভেঙে আঙিনায় কয়েকটি সীমানা পিলার পুঁতে দেওয়া হয়েছে। শনিলালের স্ত্রী চম্পলি মুর্মু বলেন, ‘একদিক থেকে বুলডোজার দিয়ে বাড়ি ভাঙছিল, আরেক দিক দিয়ে নিজেরা নিজেরাই মাপামাপি করে বাড়ির আঙিনায় সীমানা পিলার পুঁতে দিয়েছে। আমাদের কোনো কথাই শোনেনি।’
সনাতন টুডু বলেন, ‘পুলিশসহ কোর্টের লোকজন এসে বাড়ি ভাঙতে চাইলে আমি দরজার সামনে দাঁড়িয়ে যাই। তখন পুলিশ বলে যে, ‘‘আপনি আইনের কাজে বাধা দেবেন না’’। আমাকে সরিয়ে দিয়ে বুলডোজার চালিয়ে দেয়। জিনিসপত্র সরাতে আমরা ৩০ মিনিটও সময় পাইনি।’
ঘরহারা সুজন সরেন বলেন, ‘অল্প কিছু জিনিস বের করতে পেরেছি। সেগুলো এখানেই রেখেছি বাঁশতলায়। বাকিগুলো বুলডোজারের নিচে গেছে। গরু-ছাগলগুলো মানুষের বাড়িতে রেখেছি। দুই দিন আমরা বাঁশঝাড়ের মধ্যেই ছিলাম। গতকাল রাতে বৃষ্টি এলে পাশের বাড়ির বারান্দায় আশ্রয় নিই। আমরা এখানেই থাকতে চাই। আমাদের তো আর যাওয়ার কোনো জায়গা নাই।’

এ দিন পরিবারগুলোকে দেখতে যান বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) রাজশাহী ইউনিটের সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট সামিনা বেগম, সেন্টার ফর ক্যাপাসিটি বিল্ডিং অব ভলান্টারি অর্গানাইজেশনের (সিসিবিভিও) সমন্বয়কারী আরিফ ইথার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম সারওয়ার, রক্ষাগোলা সমন্বয় কমিটির সভাপতি সুধীর সরেন, বন্ধু আমরার সভাপতি মাহফুজুল ইসলাম লিটন, সিসিবিভিওর সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার নিরাবুল ইসলাম ও ব্লাস্টের প্যারালিগ্যাল আবু তালেব।
সিসিবিভিওর সমন্বয়কারী আরিফ ইথার বলেন, ‘আগে এ জমি কোল সম্প্রদায়েরই ছিল। তাদের হিন্দু দেখিয়ে জমির রেকর্ড করে নেওয়া হয়েছে বাঙালিদের নামে। কারণ, আদিবাসীদের জমি নিতে হলে জেলা প্রশাসকের অনুমোদন লাগে। হিন্দু হলে অনুমোদনের প্রয়োজন নেই। ভিন্নপথে জমির মালিকানা নিয়ে তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। এটা খুবই অমানবিক কাজ হয়েছে। আমরা অনুরোধ করব, যেন দ্রুতই তাদের পুনর্বাসন করা হয়।’
জানতে চাইলে কোল পরিবারগুলোর বিরুদ্ধে করা মামলার বাদী আলমগীর কবির বলেন, ‘এই জমি কিনেছিলেন আমার দাদা মকবুল হোসেন। তিনি কীভাবে এটা কিনেছিলেন, তা তো আমরা বলতে পারব না। তবে এটা রেকর্ডীয় সম্পত্তি। তারপরও আদিবাসীরা জমি ছাড়েনি। বাধ্য হয়ে আমরা আইনের আশ্রয় নিয়ে তাদের উচ্ছেদ করেছি। জমি এখন আমাদের দখলে।’
ব্লাস্টের রাজশাহী ইউনিটের সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট সামিনা বেগম জানান, এই জমির সমস্ত কাগজপত্র তাঁরা সংগ্রহ করবেন। তারপর ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে আইনি সহায়তা দেবেন। গতকাল গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল আহম্মেদ জানিয়েছিলেন, পরিবারগুলোর থাকার ব্যবস্থা করার জন্য তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দিয়েছেন। তবে আজ পর্যন্ত তাঁদের কোনো গতি হয়নি। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে ইউপি চেয়ারম্যান খাইরুল ইসলামকে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি।

রাষ্ট্রীয় শোক এবং পুলিশের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রাজধানীতে আতশবাজি ফোটানো ও ফানুস উড়িয়ে খ্রিষ্টীয় নববর্ষ উদ্যাপন করেছে নগরবাসী। খ্রিষ্টীয় নববর্ষ ২০২৬-এর প্রথম প্রহরে নগরজুড়ে বাসাবাড়ির ছাদে ছাদে আতশবাজি ফোটানো ও ফানুস ওড়ানোর দৃশ্য দেখা যায়। এ সময় চারপাশে বিকট শব্দ শোনা যায়।
১৯ মিনিট আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের মোট সম্পদের পরিমাণ ৮৯ লাখ ৮২ হাজার ৮৪১ টাকা। তাঁর স্ত্রী মারিয়া আক্তারের সম্পদের পরিমাণ ২ লাখ ৬৬ হাজার ৮১৮ টাকা। তাঁদের কোনো স্বর্ণালংকার নেই।
১ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে এসে মারা যাওয়া মো. নিরব হোসেন (৫৬) দৈনিক জনকণ্ঠের সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা। তাঁর বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বড় ডালিমা গ্রামে। রাজধানীর বড় মগবাজারে তিনি পরিবারসহ বসবাস করতেন।
২ ঘণ্টা আগে
ভিডিওতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির (ঠিকাদার প্রতিনিধি) সঙ্গে কথা বলার আগে কাজের বিলের ফাইল স্বাক্ষর করার সময় ৪৫ হাজার টাকা নেওয়ার বিষয়টিও উঠে আসে। এ ছাড়া নতুন করে আরও পাঁচ হাজার টাকা না দেওয়ায় গড়িমসি করতে থাকেন ওই প্রকৌশলী। একপর্যায়ে তাঁকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিয়ে পকেটে রাখতে দেখা যায়।
৩ ঘণ্টা আগে