আট দফা দাবিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ট্রেন অবরোধের হুমকি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে সব আন্তনগর ট্রেন চালুসহ আট দফা দাবিতে মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে আজ বুধবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচিতে জেলার সর্বস্তরের জনগণ অংশ নেন। শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি পেশ করা হয়।

ঘণ্টাব্যাপী চলা এই মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সুজনের সভাপতি মো. আসলাম কবির, সম্পাদক মনোয়ার হোসেন জুয়েল, চেম্বারের সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. ইসাহাক আলী, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোখলেসুর রহমান, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সাংবাদিক ডাবলু কুমার ঘোষ, কলেজশিক্ষক, কর্মচারীকল্যাণ সমিতির সভাপতি বাবুল আখতার, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আব্দুর রহমান অনু, সমাজসেবী আব্দুল মজিদ প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ ও রহনপুর শুল্কস্টেশন থেকে সরকার বছরে প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা আয় করে থাকে। এই জেলার উৎপাদিত ধান ও চাল সারা দেশে সরবরাহ করা হয়। অথচ এখানে একটিমাত্র আন্তনগর ট্রেন বনলতা চালু আছে। এই ট্রেনে সিটসংখ্যা মাত্র ২১০টি। এই জেলায় প্রায় ১৮ লাখ অধিবাসী রয়েছে। সীমান্তবর্তী জেলা বিধায় দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ। এদিকে পদ্মা, সিল্কসিটি, ধূমকেতু, মধুমতিসহ সব ট্রেন রাজশাহী থেকে ঢাকা পর্যন্ত চলাচল করছে।

তাঁদের দাবি, যে ট্রেনগুলো রাজশাহী থেকে চলে, সেগুলো চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে চললে কারও কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না। এতে চাঁপাইবাসী অনেক উপকৃত হবে। জরুরি ভিত্তিতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানান তাঁরা। ১৩ মের মধ্যে দাবি না মানা হলে ১৪ মে বনলতা ট্রেন অবরোধেরও ঘোষণা দেন বক্তারা।

এ ছাড়া আরও সাতটি দাবি জানান তাঁরা। দাবিগুলো হলো: যমুনা নদীর রেলসেতুর নবনির্মিত ডাবল লাইন চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত স্থাপন, পুরোনো রেললাইন সংস্কার ও সিগন্যালব্যবস্থা আধুনিকীকরণসহ যাত্রীসেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন আধুনিকায়ন করা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, আমনুরা ও রহনপুর রেলওয়ের দখল করা জমিতে অবৈধভাবে নির্মিত স্থাপনা উচ্ছেদ ও দখলমুক্ত করা। রহনপুর রেলওয়ে স্টেশনকে পূর্ণাঙ্গ রেলবন্দর ঘোষণা করা। আমনুরা, নাচোল হয়ে রহনপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত সব আন্তনগর ট্রেনের সময় অনুযায়ী কানেক্টিং অথবা কমিউটার ট্রেন চালু করা। আমনুরা বাইপাস রেলওয়ে স্টেশনে সব আন্তনগর ট্রেনের ৫ মিনিটের যাত্রাবিরতি দেওয়া। আমনুরা রেলওয়ে জংশনকে আধুনিক জংশনে পরিণত করা। ঢাকা থেকে নাটোর, রাজশাহী হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার সোনামসজিদ স্থলবন্দর পর্যন্ত দুই ধারের প্রশস্থ সার্ভিস লেনসহ ছয় লেন আধুনিক মহাসড়ক নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন বক্তারা।

শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টার কাছে একটি স্মারকলিপি পেশ করা হয়।