Ajker Patrika

মূল্যস্ফীতির ঘা: শহর ছাড়ছে মানুষ, গ্রামেও নাভিশ্বাস

খালিদ হাসান, শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২২, ১৫: ০২
মূল্যস্ফীতির ঘা: শহর ছাড়ছে মানুষ, গ্রামেও নাভিশ্বাস

শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের আপেল মাহমুদ। স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে ঢাকার বাইপাইল এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে একটি কারখানায় কাজ করতেন। সম্প্রতি তিনি গ্রামে ফিরেছেন। আপেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঢাকায় সবকিছুর দাম বেশি হওয়ায় সংসারের খরচ অনেক বেড়ে যায়। বাসা ভাড়ার পাশাপাশি পরিবহন ভাড়াও বেড়েছে কয়েক দফায়। নিত্যপণ্যের যে দাম, তাতে পোষাতে না পেরে বাধ্য হয়ে গ্রামে এসে মুদি দোকান দিয়েছি। এখানে পরিবার নিয়ে কোনো রকমে খেয়ে-পরে বেঁচে আছি।’

মোকামতলা ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর, কিচকের আঞ্জুয়ারা, পিরবের আব্দুল মমিন ও দেউলীর আব্দুল বারীর মতো আরও অনেকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় তৈরি পোশাক কারখানাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি যখন লাগামহীন, তাল মিলিয়ে যানবাহন ও বাসাভাড়াও বাড়ছে, তখন শহুরে জীবনকে বিদায় জানাতে হয়েছে তাদের। 

গ্রামে ফিরলেই কি আয়-ব্যয়ের হিসাব মেলে? তেলের দাম বাড়ায় মূল্যস্ফীতির আঘাত কি গ্রামে পড়েনি? তাহলে ঠরু মোল্লার মতো গ্রামীণ প্রান্তিক মানুষের গল্প শুনতে হবে। জানতে হবে, জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে কেমন হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, কোরবানির ঈদের পর থেকে আজ অবধি পরিবারকে মাছ-মাংস খাওয়াতে পারেননি।

বগুড়ার শিবগঞ্জের চলনাকাথী গ্রামের দিনমজুর এই ঠরু অন্যের জমিতে শ্রম দিয়ে দিনে ৩৫০ টাকা আয় করেন। ৩ কেজি চাল, তেল, কাঁচাবাজার বাবদ এবং চার সন্তান ও অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে ছয়জনের সংসারে দিনে তাঁর ব্যয় হয় ৪০০ টাকা। এই ঘাটতি তিনি মেটান মাঝে মাঝে ঋণ করে।

তাই গ্রামে ফিরেও জীবনযাত্রায় স্বস্তি নেই শিবগঞ্জ সদর ইউনিয়নের আলাদিপুর গ্রামের বাসিন্দা আমিনুল ইসলামের। স্নাতক পর্যন্ত পড়াশোনার পর ঢাকায় বেসরকারি সংস্থায় (এনজিও) চাকরি শুরু করেছিলেন। কিন্তু স্বল্প বেতনে আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের তাল মেলাতে গ্রামে ফিরতে হয়েছে তাঁকে।

আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘এখন সিএনজি অটোরিকশা চালিয়ে কোনো রকম বেঁচে আছি। দিনে ৭০০-৮০০ টাকা ভাড়া পাই, গ্যাস খরচ বাদ দিয়ে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা হাতে থাকে। এই টাকা দিয়ে দুই সন্তান ও স্ত্রীসহ চারজনের সংসার চালানো খুবই কষ্টকর।’

এদিকে গ্রামের শিক্ষিত প্রায় মধ্যবিত্ত লোকেরা একটু বেশিই সংকটে আছেন। অভাবে জর্জরিত হলেও তাঁরা লজ্জায় প্রকাশ করতে পারেন না। মোকামতলা বন্দর এলাকার এমনই একজন কনক দেব। তিনি শিক্ষকতা করেন একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। কেমন আছেন জানতে চাইলে কনক দেব বলেন, ‘দুই সন্তানের পড়াশোনা, নিজের চিকিৎসা, অসুস্থ বাবা-মাকে নিয়ে অতিকষ্টে জীবন চলছে আমার। পরিবারের খরচ মেটাতে একটি এনজিও থেকে ঋণ করেছি। কারও কাছে মুখ ফুটে অভাবের কথা বলতেও পারি না, সইতেও পারি না। দ্রব্যমূল্যের লাগাম না টানলে মধ্যবিত্তদের বাঁচা মুশকিল।’

অক্টোবর মাসের দ্রব্যমূল্যের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছে, মাছ-মাংস খাওয়া বাদ দিলে ঢাকা মহানগরে চারজনের এক পরিবারের শুধু খাবারের জন্য ব্যয় হয় গড়ে ৯ হাজার ৫৯ টাকা। আর মাছ-মাংস যুক্ত হলে তা ২২ হাজার ৪২১ টাকা হবে।

সরকারের হিসাবে মূল্যস্ফীতি বেড়ে আগস্টে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ এবং সেপ্টেম্বরে ৯ দশমিক ১ শতাংশ হয়েছে। এটা ৫ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণ। কিন্তু বাজারে অনেক পণ্যের মূল্য ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে বলে সিপিডির পর্যবেক্ষণ বলছে। সংস্থাটি বলছে, সরকারের গড় মূল্যস্ফীতির তথ্য বাজারের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরছে না। জরুরি ভিত্তিতে শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছে সিপিডি।

রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা টিসিবির হিসাবে, গত এক বছরে মোটা চালের দাম প্রায় ১১ শতাংশ বেড়ে প্রতি কেজি ৪৮ থেকে ৫৫ টাকায় উঠেছে। আটার দাম বেড়েছে ব্যাপক। ৬৮ শতাংশের বেশি বেড়ে প্রতি কেজি ৫৫ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। মসুর ডালের দাম বেড়েছে ১৮ শতাংশ পর্যন্ত। চিনির দাম বেড়েছে ১৭ শতাংশ। গরুর মাংসের দাম বেড়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ।

মূল্যস্ফীতির এমন চাপে শহরের পাশাপাশি দারিদ্র্যপ্রবণ এলাকার, বিশেষ করে ৯ জেলার দরিদ্র মানুষ এখন অনেক খারাপ সময় পার করছে বলে সিপিডির পর্যবেক্ষণ বলছে। জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব দেশের কৃষি খাতকেও আক্রান্ত করে। কৃষকের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদনে প্রভাব পড়ার পাশাপাশি তাদের জীবনযাত্রাকেও সংকুচিত করে ফেলেছে।

বুড়িগঞ্জ এলাকার কৃষক আব্দুল বাসেদ বলেন, ‘আমার চার বিঘা ফসলি জমি আছে। গেল দুই বছর যাবৎ সার আর কীটনাশকের দাম বাড়ায় উৎপাদন ব্যয়ও বেড়েছে। জমি থেকে উৎপাদিত ফসলের টাকা দিয়ে আবার নতুন ফসল লাগাতে হয়। আলু, ফুলকপি, কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন ফসল আবাদে কোনো কোনো সময় লোকসানও গুনতে হচ্ছে। জমি থেকে কোনো বাড়তি আয়েরও সুযোগ নেই আমার।’

এমন পরিস্থিতিতে পরিবারে একটু বাড়তি আয় জোগাতে গিয়ে শৈশবেই পড়ালেখা থেকে ঝড়ে পড়ছে অনেক শিশু। ভ্যান চালানোসহ বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত হচ্ছে তারা। গত বৃহস্পতিবার বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা টু জয়পুরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কে দেখা মেলে যাত্রীবাহী ভ্যানচালক আবু মুসার সঙ্গে। বয়স আনুমানিক ১২ বছর।

পড়ালেখা বাদ দিয়ে এই বয়সে ভ্যান চালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে সে বলে, ‘বাবা কাঠমিস্ত্রির কাজ করেন আর আমি ভ্যান চালাই। বড় বোনের বিয়ের পর সংসারে অভাব দেখা গেছে। আমার ছোট একটা ভাই আর মা আছে।’

ডব্লিউএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের ৬৮ শতাংশ মানুষ খাবার কিনতে হিমশিম খাচ্ছে। বেঁচে থাকার জন্য খাবার কিনতে সম্পদ বিক্রি ও ঋণ করছে ৬৪ শতাংশ মানুষ। এ ছাড়া খাবার কিনতে গিয়ে ১০ শতাংশ পরিবার তাদের গত ১২ মাসের সব সঞ্চয় ভেঙে ফেলেছে।

চড়া মূল্যের বাজারে প্রান্তিক পর্যায়ের নিম্নবিত্ত মানুষদের বাঁচাতে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় জরুরি ভিত্তিতে আর্থিক সহায়তা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. হাসানাত। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘বিধবা, বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ভাতার পরিমাণ বাড়াতে হবে। কৃষি উপকরণের ওপর ব্যাপক ভর্তুকি দিতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে আটক ব্যক্তিকে ছিনতাই, আহত ২

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়িতে আজ বুধবার হামলা চালিয়ে আটক এক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়িতে আজ বুধবার হামলা চালিয়ে আটক এক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে বেতনা নদীর খনন করা মাটি লুটের ঘটনায় আটক এক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তাঁর নাম কেসমত আলী। এ ঘটনায় পুলিশ ফাঁড়ির দুই সদস্য আহত হয়েছেন।

আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়িতে এই হামলার ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যায় আটজনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ২০-৩০ জনের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা হয়েছে।

আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন, ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক মাহাবুর রহমান ও কনস্টেবল মেহেদী হাসান।

ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) সোহরাব হোসেন বলেন, বেতনা নদীর খনন করা মাটি নেহালপুর ও পাশের এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে লুটপাট করে আসছিল একটি মহল। সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে সাতক্ষীরা শহরের এক ঠিকাদার নেহালপুর এলাকার বেতনা নদীর ওই মাটি কিনেছেন বলে পুলিশ জানতে পারে। বুধবার ভোরে পুলিশ মাটি কাটতে বাধা দেয়। এ সময় এসআই সোহরাবের ওপর চড়াও হন কেসমত ও তার সহযোগীরা।

একপর্যায়ে সকাল ১০টার দিকে তিনি ট্রলিভর্তি মাটিসহ কেসমতকে ধরে ফাঁড়িতে আটকে রাখেন। ফাঁড়িতে আটকে রেখে মারধর করা হয়েছে এমন খবর ছড়িয়ে কেসমতের ভাই রহমত, স্ত্রী শাহানারা ও ভাতিজা বাবুরালীসহ ৩০-৩৫ জন ফাঁড়িতে হামলা চালান। তারা কেসমতকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে সহকারী উপপরিদর্শক মাহাবুর রহমান ও সিপাহী মেহেদী হাসান বাধা দেন। হামলাকারীরা তাঁদের পিটিয়ে জখম করে কেসমতকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। আহত দুই পুলিশ সদস্যকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে কেসমত হোসেন স্বীকার করেন পুলিশের নিষেধ অমান্য করে তিনি সকালে বেতনার মাটি কাটছিলেন। কেসমত বলেন, আমাকে ধরে আনার পর আর কখনো মাটি কাটবেন না বলার পরও ফাঁড়ির কর্মকর্তা উপপরিদর্শক সোহরাব হোসেন আমাকে মারধর করেছেন।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার ঘটনায় কেসমতসহ আটজনের নামোল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ২০-৩০ জনের বিরুদ্ধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী লিয়াকত হোসেন মামলা করেছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত সাবেক এমপি সারোয়ারের জামিন নামঞ্জুর

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
শাহ্ শহীদ সারোয়ার। ছবি: সংগৃহীত
শাহ্ শহীদ সারোয়ার। ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা ও গুলিবর্ষণের মামলায় ময়মনসিংহ-২ (ফুলপুর-তারাকান্দা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) শাহ শহীদ সারোয়ারের (৬৫) অন্তবর্তীকালীন জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। একই সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ জামিন শুনানির জন‍্য আগামী ২৮ ডিসেম্বর তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে ময়মনসিংহ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এই আদেশ দেন।

দলীয় সূত্র জানা গেছে, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য শাহ শহীদ সারোয়ার ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের ডামি নির্বাচনে ঈগল প্রতীকে অংশ নিয়ে দল থেকে বহিষ্কৃত হন।

আদালতের পাবলিক প্রসিকিটর (পিপি) অ‍্যাডভোকেট আনোয়ারুল আজিজ টুটুল এতথ‍্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বিজ্ঞ আদালত আসামির অন্তবর্তীকালীন জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন‍্য ২৮ ডিসেম্বর তারিখ নির্ধারণ করেছে।

জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা ও গুলি বর্ষণের অভিযোগে মো. আমীর হোসেন নামের এক ব‍্যক্তি গত ১৫ এপ্রিল ময়মনসিংহের চিফ জুডিশিয়াল ম‍্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। এরপর চলতি বছরের ২৩ জুন আদালতের নির্দেশে ফুলপুর থানা পুলিশ মামলাটি এফআইআরভুক্ত করেন। এ ঘটনার পর থেকে মামলার আসামিরা পলাতক ছিলেন।

মামলার এজাহারে বাদী দাবি করেন- ঘটনার দিন ফুলপুর পৌর এলাকায় শাহ শহীদ সারোয়ারের নেতৃত্বে মামলার আসামিরা বিস্ফোরণ দ্রব‍্যাদি এবং আগ্নেয়াস্ত্রে সুসজ্জিত হয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করে। এতে আমি মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বগুড়ায় টোব্যাকোসহ ২ প্রতিষ্ঠানে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, টাকা ও অস্ত্র-গুলি লুট

বগুড়া প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ০৬
বগুড়ায় টোব্যাকোসহ ২ প্রতিষ্ঠানে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, টাকা ও অস্ত্র-গুলি লুট

বগুড়ায় ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোসহ দুটি প্রতিষ্ঠানে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাত দল প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের হাত-পা বেঁধে নিরাপত্তাকর্মীদের অস্ত্র-গুলি, টাকা ও কয়েকটি মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ পিছু ধাওয়া করে কয়েকটি গুলি ছুড়লেও ডাকাতেরা পাল্টা ইটপাটকেল ছুড়ে পিকআপ রেখে পালিয়ে যায়।

ডাকাতির ঘটনাটি ঘটে গতকাল মঙ্গলবার রাতে শহরতলির বারোপুর ফ্লাইওভারের পাশে এমআর ব্রাদার্স সিএনজি ফিলিং স্টেশন এবং একই মালিকের ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানির ডিসট্রিবিউশন কেন্দ্রে।

বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজুর রহমান ডাকাতির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

প্রতিষ্ঠানের মালিক মাহমুদুর রহমান শিপন ও ভুক্তভোগীরা জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ১০-১২ জনের মুখোশ পরা ডাকাত দল হলুদ রঙের একটি পিকআপ ভ্যান নিয়ে সিএনজি ফিলিং স্টেশনে ঢোকে। এ সময় কর্মচারীরা এগিয়ে গেলে ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাঁদের হাত-পা বেঁধে ফেলে।

এরপর ক্যাশ কাউন্টার থেকে ৪৩ হাজার ৩৮২ টাকা ৮টি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। ডাকাত দল ওই প্রতিষ্ঠানের পেছনে একই মালিকের ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানির ডিসট্রিবিউশন কেন্দ্রে ঢোকে।

তারা প্রথমেই প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাকর্মী রেজাউল করিমের ওপর চড়াও হয়ে তাঁর হাত-পা বেঁধে ফেলে এবং তাঁর কাছে থাকা ১০টি গুলিসহ শটগান ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। এরপর ভেতরে ঢুকে মালামাল তছনছ করে পিকআপ নিয়ে বনানীর দিকে পালিয়ে যায়।

পুলিশ জানায়, ভোররাত ৪টার দিকে টহল পুলিশ মহাসড়কে পিকআপটিকে সন্দেহ করে থামানোর সংকেত দিলে দ্রুতগতিতে সেটি চলে যায়। পরে বেতার বার্তায় সংবাদ পেয়ে পুলিশ বনানী, শাকপালাসহ বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসায়।

অপরদিকে সদর থানা-পুলিশের একটি দল পিকআপটিকে পিছু ধাওয়া করলে ডাকাত দল নাটোর রোডে যাওয়ার চেষ্টা করলে শাকপালা মোড় থেকে ঘুরিয়ে আবারও বারোপুরের দিকে যেতে থাকে। ইতিমধ্যে পুলিশের একাধিক টিম পিকআপটির পিছু ধাওয়া করলে ডাকাত দল পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে।

এ সময় পুলিশ ডাকাত দলকে লক্ষ্য করে চারটি রাবার বুলেট ছোড়ে। একপর্যায় ডাকাত দল গোকুল এলাকায় একটি ফিডার রোডে পিকআপটি রেখে অন্ধকারে গ্রামের রাস্তা দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ পরিত্যক্ত পিকআপটি জব্দ করে এবং ট্রাকে পড়ে থাকা চারটি গুলি উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে পুলিশ পরিদর্শক মাহফুজার রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ডাকাত দলের ফেলে যাওয়া পিকআপটির সূত্র ধরে জড়িতদের শনাক্ত করার কাজ চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনায় শ্রমিক শক্তির নেতাকে গুলি: যুবশক্তির সেই নেত্রী কারাগারে

খুলনা প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ৫৫
তনিমা তন্বী। ছবি: আজকের পত্রিকা
তনিমা তন্বী। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শ্রমিক সংগঠনের নেতা মোতালেব শিকদারকে (৪০) গুলি করে হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার তানিয়া তন্বীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ বুধবার আসামি তানিয়াকে খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-১-এর মো. আসাদুর জামানের আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গ্রেপ্তার তানিয়া তন্বী এনসিপির যুব সংগঠন জাতীয় যুবশক্তির খুলনা জেলার যুগ্ম সদস্যসচিব।

এদিকে গ্রেপ্তার তানিয়া দেড় মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে দাবি করেছেন। তাঁর শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের প্রিজন সেলে পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো রিপোর্ট পাওয়া যায়নি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিবির ওসি তৈয়মুর ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ’মামলার নথি এলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। গ্রেপ্তার হওয়া তানিয়া তন্বী অন্তঃসত্ত্বা কি না, বিষয়টি হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে।’

এর আগে সোমবার নগরীর সোনাডাঙ্গা আল আকসা মসজিদ সরণির ১০৯ নম্বর রোডের মুক্তা হাউসের নিচতলার একটি ফ্ল্যাটে মোতালেব শিকদারকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্ত্রীর করা মামলায় তন্বীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে সোনাডাঙ্গা মডেল থানা থেকে মামলাটি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়।

এ বিষয়ে কেএমপির উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার মোতালেব শিকদারের স্ত্রী ফাহিমা আক্তার বাদী হয়ে ছয়-সাতজন অজ্ঞাতনামা আসামির নামে মামলা করেছেন। এই মামলায় আটক তানিয়া তন্বীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া তানিয়া অন্তঃসত্ত্বা থাকার কথা বলেছেন এবং অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। সব রিপোর্ট পেলে বোঝা যাবে, তিনি অন্তঃসত্ত্বা কি না।

মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার দিন ওই ফ্ল্যাটে এবং আশপাশে মোতালেব শিকদার, তানিয়া তন্বী, তাঁর স্বামী তানভীর শেখসহ ১০ জন উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে একটি শীর্ষ সন্ত্রাসী সংগঠনের কয়েকজন সদস্যের উপস্থিত থাকার বিষয়ে তথ্য পাচ্ছি।

চাঁদাবাজি, মাদক (ইয়াবা) ভাগ-বাঁটোয়ারার বিষয়গুলো নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। মোতালেব শিকদার, তানিয়া তন্বী এবং তাঁর স্বামী তানভীর শেখ নিয়মিত মাদক সেবন করতেন। মোতালেব শিকদারের ব্যাপারেও আলাদা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’

গুলিবিদ্ধ মোতালেব শিকদার প্রসঙ্গে কেএমপির এই উপপুলিশ কমিশনার বলেন, ‘আহত মোতালেব শিকদারের কাছ থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। সোমবার আহত হওয়ার পর সে পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছে। কিন্তু এখন সে গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ভান করছে। সে পুলিশ দেখলেই বোবা হয়ে যাচ্ছে।

ইশারা ও অঙ্গভঙ্গি দিয়ে কথা বলছে। কোনো কথা জিজ্ঞেস করলে কলম দিয়ে আঁকাবাঁকা কী সব খাতায় লিখে দিচ্ছে, আমরা বুঝতে পারছি না। সে সুস্থ হওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর থেকে তন্বীর স্বামী তানভীর শেখ পলাতক রয়েছেন। তানভীরসহ অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাব কাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত