Ajker Patrika

সোনারগাঁ থেকে ‘চৌধুরী বংশ’ উচ্ছেদের হুমকি উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ মে ২০২৪, ১৬: ০৯
সোনারগাঁ থেকে ‘চৌধুরী বংশ’ উচ্ছেদের হুমকি উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর

নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক আবু জাফর চৌধুরী বিরুর বংশ সোনারগাঁ থেকে উচ্ছেদের হুমকি দিয়েছেন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী বাবুল ওমর। ভোটে বিজয়ী হলে দুই মাসের মধ্যে তাঁর বংশ উচ্ছেদ করতে না পারলে চেয়ারম্যান পদ ছেড়ে দেবেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

উপজেলার জামপুর ইউনিয়নে গত মঙ্গলবার রাতে একটি নির্বাচনী উঠান বৈঠকে এই বক্তব্য দেন বাবুল ওমর। নির্বাচনে বাবুল ওমরের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ায় আবু জাফর চৌধুরী বিরুর ওপর ক্ষুব্ধ হন তিনি। বাবুল ওমরের বক্তব্যের একটি ভিডিও গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। বাবুল ওমর সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং উপজেলা পরিষদের সদ্য সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান।

ভিডিও বক্তব্যে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী বাবুল ওমরকে বলতে শোনা যায়, ‘খেলা হবে বিরুর সঙ্গে আমার। খেলা হবে সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ বাহিনীর সঙ্গে আমার। আমি খেলব একা, আমার নাম বাবু। নারায়ণগঞ্জের সিপ্রোসিন ট্যাবলেট আমি। ২১ তারিখ খেলা হবে তার সাথে। সারা সোনারগাঁয়ে কী হবে জানি না। আমার পাঁচ বছর লাগব না, আমি হেরে ঠিক কইরা ফেলমু এক মাসে। এমনিতেই তো ঠিক কইরা ফেলসিলাম। আল্লাহ জানে বাঁচাইসে। লুঙ্গি রাইখা দিসিলাম।’

উঠান বৈঠকে ওমর বাবু বলেন, ‘আমি তো তার বাড়ির সামনেই বললাম। তার যদি বুকের পাটা থাকে, আমার বাড়ির সামনে মিছিল করতে বইলেন। আমি তো তোমার বাড়ির সামনেই উল্টাপাল্টা কথা বলছি। তুমি যদি তোমার মায়ের দুধ পান করে থাকো, তাইলে আমার বাড়ির সামনে মিটিং করে দেখাও, চ্যালেঞ্জ করে গেলাম। যদি আমি আবদুল্লাহ আল কায়সারের (সংসদ সদস্য) সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাই। তাইলে দুই মাসের মধ্যে চৌধুরী বংশ উচ্ছেদ না করি, আমি রিজাইন দেব ক্ষমতা থেকে।’

এদিকে উপজেলার শম্ভুপুরায় বাবুল ওমর বাবুর উপস্থিতিতে সাবেক মেম্বারের ছেলে রাসেলের বক্তব্য নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘এই এলাকায় আওয়ামী লীগের তরফ থেকে একজনই। সেটা হচ্ছে বাবুল ওমর, আনারস। আনারসের বাইরে যত মার্কা দেখেন, এগুলো নৌকারে ডুবাইতে আইছে। এ ছাড়া কোনো মার্কা নাই। দ্বিতীয় কোনো কথা চলব না। চর কিশোরগঞ্জে সম্পূর্ণ ভোট আনারস। তবে দুই-একটা আছে। ১০ জনের মধ্যে দুই-একটা দুষ্ট গরু থাকে। তাদের উদ্দেশে বইলা দেই, ঘরেই থাকেন। তারা যদি আনারসে ভোট দিতে চান, তাইলে কেন্দ্রে আইসেন। না দিতে চাইলে ঘরে থাইকেন। আপনাদের ভোটের দরকার নাই।’

উঠান বৈঠকে বক্তব্যরত বাবুল ওমরএ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী ও আওয়ামী লীগ নেতা মাহফুজুর রহমান কালাম। ওমর বাবু বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এবং এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী। তাঁকে সমর্থন দিয়েছেন সোনারগাঁর সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল কায়সার এবং একই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (জাতীয় পার্টি) লিয়াকত হোসেন খোকা।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মাহফুজুর রহমান কালাম (ঘোড়া প্রতীক) বলেন, ‘আমি আজ দেখেছি আমার নির্বাচনে সমর্থন দিয়ে কাজ করা বিরু ভাইকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেছে। একই সঙ্গে আনারস ছাড়া অন্য কোনো প্রতীকে ভোট না দিতে ভোটারদের যেই হুমকি-ধমকি দিয়েছে, এ বিষয়ে শুক্র-শনিবার নির্বাচন কমিশন বরাবর লিখিত অভিযোগ করব।’

তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান প্রার্থী বাবুল ওমর বাবুর মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। বক্তব্য চেয়ে এসএমএস পাঠানো হলেও তাঁর জবাব পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা সাকিব আল রাব্বি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এমন কোনো অভিযোগ পেলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জামায়াতকে ভোট দিলে শান্তিতে থাকতে দেব না: বিএনপি নেতার ভিডিও ভাইরাল

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউর রহমান সাগর
নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউর রহমান সাগর

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউর রহমান সাগর নির্বাচনী সভায় ভোটারদের হুমকি দিয়েছেন। গত শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে নড়িয়া উপজেলার বাংলাবাজার এলাকায় অনুষ্ঠিত এক নির্বাচনী সভায় তিনি এ হুমকি দেন। তাঁর হুমকির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

মতিউর রহমান সাগর বলেছেন, ‘এই হাউস থেকে আরও কঠোরভাবে হুঁশিয়ার করে দিই, আওয়ামী লীগের যে সমস্ত ভাইয়েরা এলাকায় আছেন, যারা বিগত দিনে আকাম-কুকাম করেছেন, বিভিন্ন অরাজকতা করেছেন, আপনাদের আমরা মাফ করে দেব, আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি করতে চাই না। আপনারা এলাকায় থাকবেন, আপনারা চিন্তা কইরা দেখেন আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় আসতেছে, এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে হইলেও, আপনাদের সুবিধা-অসুবিধার জন্য হইলেও, আপনারা বিএনপির পাশে থাকবেন। যদি আপনাদের দল কখনো পুনর্বাসন হয়, আপনাদের দল যদি আবার কখনো এ দেশে রাজনীতি করার সুযোগ পায়, তখন যদি আপনারা আমাদের ছেড়ে চলে যান, আমাদের আপত্তি থাকবে না। কিন্তু আপনারা আমাদের চোখের সামনে দিয়ে ওই জামায়াত-রাজাকারদের ভোট দেবেন, আর আপনারা বাড়িতে শান্তিতে থাকবেন, ওই শান্তিতে কিন্তু আমি থাকতে দেব না। আওয়ামী লীগকে বলি, আপনারা ভোট দিলে বিএনপিকে দেবেন, না দিলে ঘরে শুয়ে থাকবেন।’

মতিউর রহমান সাগর নিজের ফেসবুক আইডি থেকে তাঁর এ বক্তব্য সরাসরি প্রচার করেন।

প্রায় ১৩ মিনিটের লাইভ ভিডিওটি ভাইরাল হলে সমালোচনার মুখে তিনি তাঁর আইডি থেকে ভিডিওটি সরিয়ে ফেলেন। ততক্ষণে ভিডিওটি বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

এ ধরনের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে শরীয়তপুর-২ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হোসেন বকাউল বলেন, ‘নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউর রহমান সাগর জনসম্মুখে যে বক্তব্য দিয়েছে, তা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল। তার কাছ থেকে এমন বক্তব্য অনাকাঙ্ক্ষিত। আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, তারা যেন আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করে।’

এ বিষয়ে বিএনপি নেতা মতিউর রহমান সাগর গতকাল রোববার দুপুরে ফেসবুক লাইভে এসে বলেন, ‘হঠাৎ জরুরি ভিত্তিতে ফেসবুক লাইভে আসতে বাধ্য হয়েছি। একটি ভিডিও আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। কে বা কারা আমার একটি বক্তব্য এআইর মাধ্যমে কাটছাঁট করে ভাইরাল করেছে। ওই বক্তব্য আমার নয়। একটি দুষ্ট চক্র বিভ্রান্ত ছড়ানোর জন্য এআইর মাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আপনাদের বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।’

এ বিষয়ে শরীয়তপুর-২ আসনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আব্দুল কাইয়ুম খান বলেন, ‘ভিডিওটি আমাদের হাতে এসেছে। এটি স্পষ্টতই নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের পর্যায়ে পড়ে। তবে এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট ইলেকটোরাল কমিটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি দাদন মুন্সি বলেন, ‘এ ধরনের বক্তব্য আমরা সমর্থন করি না। এতে নির্বাচনী পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে ঘটনা সত্য হলে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

এবার শরীয়তপুর-২ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী শফিকুর রহমান কিরণ এবং জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী ডা. মাহমুদ হোসেন বকাউল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুবদল নেতার মামলায় আসামি মৃত ব্যক্তি, হাজতি ও প্রবাসী

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কেউ ইতিমধ্যে মারা গেছেন, কেউ রয়েছেন হাজতে, আবার কেউ আছেন প্রবাসে, তারপরও সবাইকে আসামি করা হয়েছে যুবদল নেতার করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের এক মামলায়। এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায়। মামলার বাদী দাবি করছেন, সিনিয়র নেতাদের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী তিনি বাদী হয়েছেন। তবে পৌর ও উপজেলা বিএনপি নেতারা বলছেন, এ বিষয়ে তাঁরা কিছুই জানেন না। তাঁদের দাবি, এ ধরনের মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।

চলতি বছরের ২৫ নভেম্বর হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান উপজেলার কলাদিয়া গ্রামের মো. শামসউদ্দিন। মৃত্যুর এক সপ্তাহ পর, ২ ডিসেম্বর রাতে পাকুন্দিয়া থানায় দায়ের হওয়া সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ওই মামলায় মৃত শামসউদ্দিনের নামও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাঁকে ৩৭ নম্বর আসামি করা হয়। শুধু তা-ই নয়, একই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য আবু হানিফ ৩১ জুলাই থেকে হাজতে থাকা অবস্থায়ও আসামি হয়েছেন। তিনি এই মামলার ২৯ নম্বর আসামি।

নুরুজ্জামান বাবু নামে এক ইউপি চেয়ারম্যান দুই মাস ধরে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন; বিদেশে থাকা অবস্থায় তাঁর নামও তোলা হয়েছে আসামির তালিকায়। তাঁকে করা হয়েছে ৪ নম্বর আসামি। এ ছাড়া ছাত্রদল-বিএনপি কর্মীদের নামও যুক্ত রয়েছে মামলায়।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪ নভেম্বর রাত ১টার দিকে পাকুন্দিয়া উপজেলার শ্রীরামদী এলাকায় কমিউনিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনের সড়কে গাছ কেটে ফেলে ও টায়ারে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে এবং তা মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছ সরিয়ে সড়কে যান চলাচলের উপযোগী করে।

এ ঘটনায় পাকুন্দিয়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক খুর্শিদ আলম বাদী হয়ে ২ ডিসেম্বর পাকুন্দিয়া থানায় ৩৯ জনের নামোল্লেখ করে ও ৫০-৬০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেন।

হাজতি আবু হানিফের স্ত্রী কল্পনা আক্তার বলেন, ‘১ নভেম্বর পুলিশ আমার স্বামীকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। তিনি তখন থেকেই হাজতে। হাজতে থাকা মানুষ কীভাবে রাস্তায় অবরোধ করবে? বাদীও বলেছেন, তিনি আমার স্বামীকে চেনেন না।’

আবু হানিফের মেয়ে মেহেরুন্নেছা বলেন, ‘আমরা চার বোন। বাবা হাজতে থাকায় মাসহ আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি।’

এদিকে মৃত শামসউদ্দিনের পরিবারও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তাঁর ভাই পাটুয়াভাঙ্গা ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ হাসান বলেন, ‘আমরা বংশগতভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। মারধর, বাড়িছাড়া, সবই সহ্য করেছি। এখন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আমার মৃত ভাইও আসামি! এই ধরনের মামলায় দলেরও বদনাম হয়।’

বিএনপি কর্মী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মৃত শামসউদ্দিনের পুরো পরিবার বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত।’

পাকুন্দিয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, ‘১৪ নভেম্বর রাতে সড়কে গাছ ফেলে অবরোধের ঘটনায় ২ ডিসেম্বর মামলা হয়েছে, কিন্তু আমাকে কেউ জানায়নি। বাদীও এই এলাকার না। মামলায় থাকা অনেকেই অন্য এলাকার। আমি মামলাটি প্রত্যাহারের দাবি জানাই।’

ছাত্রদল কর্মী রাকিবুল হাসান বলেন, ‘আমার বোন জামাইয়ের সঙ্গে পৌর বিএনপি নেতা লিমনের ঝামেলার জেরে আমাকে রাজনৈতিক মামলায় আসামি করা হয়েছে।’

মামলার বাদী ও পাকুন্দিয়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক খুর্শিদ আলম বলেন, ‘ওপরের সিনিয়র নেতারাই তালিকা দিয়েছেন, সব আমি জানি না। হাজতি হানিফ আমার আত্মীয়, তার স্ত্রী এসে কেঁদেছেন, আমি সান্ত্বনা দিয়েছি। বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতারা নাম পাঠিয়েছে। মৃত ব্যক্তির নাম যে দিয়েছেন, তিনি ভুল করেছেন। আমি দিইনি। ১ তারিখ সন্ধ্যায় এজাহার দিয়েছি, ২ তারিখে রুজু হয়েছে। উপজেলা মিলেই তালিকা করা হয়েছে। কোনো অসংগতি থাকলে বাদ দেওয়া হবে।’

পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আরিফুর রহমান বলেন, ‘আমি তখন ছিলাম না। এই বিষয়ে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে নির্দেশনা অনুযায়ী তদন্ত করব। তদন্তে যদি কেউ নির্দোষ থাকে তাহলে তা বিবেচনা করা হবে।’

কিশোরগঞ্জ মানবাধিকার আইনজীবী পরিষদের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট হামিদা বেগম বলেন, ‘মৃত ব্যক্তি, হাজতে থাকা ব্যক্তি বা প্রবাসী—এরা কীভাবে মামলার আসামি হন? এ ধরনের মামলায় সাধারণত উদ্দেশ্য থাকে বাণিজ্য আর হয়রানি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদিকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের পথে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৩০
শরিফ ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত
শরিফ ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত

উন্নত চিকিৎসার জন্য ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে যাত্রা করেছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। আজ সোমবার ১টা ৫৫ মিনিটে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।

এর আগে বেলা ১১টা ২২ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি।

ওসমান হাদির বড় দুই ভাই ওমর ফারুক ও আবু বকর সিদ্দিক তাঁর সঙ্গে যাচ্ছেন।

জানা যায়, বেলা সোয়া ১টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্সে করে ওসমান হাদিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দিকে নেওয়া হয়। বেলা দেড়টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সটি বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেট দিয়ে প্রবেশ করে।

গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর সন্ধ্যার দিকে হাদিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন।

এরপর গতকাল রোববার ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদির ওপর হামলাকারীরা সীমান্ত দিয়ে পালিয়েছে কি না—তা শতভাগ নিশ্চিত নয় বিজিবি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান । ছবি: আজকের পত্রিকা
বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান । ছবি: আজকের পত্রিকা

বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, ঢাকায় শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলি বর্ষণকারী ব্যক্তিরা ময়মনসিংহ সীমান্ত ব্যবহার করে ভারতে পালিয়েছে কি না—তা এখনো শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।

সোমবার ময়মনসিংহ নগরীর খাগডহর বিজিবি ক্যাম্পে তিনি আরও জানান, শুক্রবার ৯টার মধ্যে বিজিবি সদর দপ্তরের নির্দেশনায় সম্ভাব্য পাচারের রুটগুলো চিহ্নিত করে টহল এবং চেকপোস্ট বসানো হয় সীমান্তের অধিকাংশ স্থানে। পরদিন অর্থাৎ শনিবারে পুলিশ এবং বিজিবির সমন্বয়ে যৌথ অপারেশনের প্ল্যান করা হয়। ঢাকা থেকে আগত পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বিজিবি ময়মনসিংহ সেক্টর কমান্ডারের নিয়মিত যোগাযোগ এবং অপারেশন সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হয়।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আলোচনায় দুটি স্থানে একসঙ্গে অপারেশনের প্ল্যান করা হয়। সন্দেহভাজন হিসেবে শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে অবস্থানরত ফিলিপ স্নালকে আটকের পরিকল্পনা করা হয়। পুলিশের আরেকটি টিম হালুয়াঘাট এলাকায় অপারেশনের প্ল্যান করে। হালুয়াঘাটে অপারেশনের বিষয়ে বিজিবির সোর্স এবং অন্যান্য বিষয়ে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করেছে। অপর দিকে নালিতাবাড়ীর বারোমারি এলাকায় অপারেশন পরিচালিত হয় বিজিবির নেতৃত্বে এবং ঢাকা হতে আগত ও হালুয়াঘাট থানার পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ে। কিন্তু ফিলিপকে পাওয়া যায়নি। তবে তার স্ত্রী ডেলটা চিরান, শ্বশুর ইয়ারসন রংডি এবং মানব পাচারকারী লুইস লেংমিঞ্জাকে আটক করা হয়। তাদের বাড়ি থেকে একটি মোটরসাইকেলও উদ্ধার করা হয়।’

তাঁদের পরিবারের তিনজনসহ এ পর্যন্ত বিজিবি চারজনকে আটক করেছে। এঁদের মধ্যে সোমবার সকালে মানব পাচারকারী বেঞ্জামিন চিরামকে আটক করা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত