Ajker Patrika

প্রবাসী ও মৃতদের ভোট দিয়ে আমাকে হারানো হয়েছে: মমতাজ

মঞ্জুর রহমান, মানিকগঞ্জ
আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২৪, ০১: ৫১
প্রবাসী ও মৃতদের ভোট দিয়ে আমাকে হারানো হয়েছে: মমতাজ

মানিকগঞ্জ–২ আসনে আওয়ামী লীগের পরাজিত প্রার্থী কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম কিছু কেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন। কালো টাকা বিলিয়ে ভোট কেনা হয়েছে, প্রবাসী ও মৃতদের নামে ভোট দিয়ে তাঁকে হারানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) বিকেলে সিঙ্গাইর উপজেলার পূর্ব ভাকুম এলাকায় নিজ বাড়িতে নির্বাচনী এলাকার (সিঙ্গাইর–হরিরামপুর) দলীয় কর্মীদের আয়োজিত সভায় এসব কথা বলেন মমতাজ বেগম।

তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচনের রাত থেকে বিজয়ী প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর সমর্থকেরা তাঁর বহু কর্মীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করেছে। নির্বাচনে কাজ করা কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে, নারীদের মারধর করাসহ নানা ভাবে হুমকি–ধামকি দিচ্ছে।

সভায় মমতাজ বেগম তাঁর মোবাইল ফোনে রাখা আহত এক কর্মীর ছবি উপস্থিত সাংবাদিকদের দেখিয়ে বলেন, ‘আমার ছাত্রলীগ, যুবলীগের ছেলেদের বাড়ি থেকে বের হলে বিজয়ী প্রার্থীর কর্মী–সমর্থকেরা তাদের ধাওয়া করছে।’

নির্বাচনে পরাজয় সম্পর্কে মমতাজ বেগম বলেন, ‘আমরা বলেছি, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। কিন্তু কালো টাকা দিয়ে তারা (প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী) তিনটি ইউনিয়নে (বলধারা, বায়রা ও পৌরসভার একাংশ) বসবাস করা বিএনপির ভোট কিনে নিয়েছে। ওইসব ইউনিয়নে যেসব ভোটার বিদেশ থাকে এবং মারা গেছে, তাদের ভোট তারা নিজেরা অস্বাভাবিক ভাবে দিয়ে দিয়েছে। এ কারণে আমি পাস করার পরেও তিনটি ইউনিয়নে অস্বাভাবিক ভোটের কাছে আমাকে পরাজয় বরণ করতে হয়েছে।’

নির্বাচনে অনিয়ম নিয়ে কমিশনে আপিল করবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মমতাজ বেগম বলেন, ‘আমরা আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছি।’

নির্বাচনের পর কতজন কর্মী আহত হয়েছে জানতে চাইলে মমতাজ বলেন, ‘সিঙ্গাইর উপজেলার সিঙ্গাইর পৌরসভায়, চান্দইর, জার্মিতা, জয়মণ্ডপ, তালেবপুর, জামশা ইউনিয়ন এবং হরিরামপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর, বয়রা, বলড়া ছাড়াও বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক কর্মী বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় আহত হয়েছে। এ সবকিছুর প্রমাণ আমাদের কাছে আছে।’

কর্মীদের ওপর হামলার বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে কি না, এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘হামলার পর আমি স্ব-স্ব থানার ওসি এবং এসপিকে জানিয়েছি। থানায় অভিযোগ পর্যন্ত দিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমার কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার বা আটক করা হয়নি, বা কোনো অ্যাকশন নেওয়া হয়নি। সর্বশেষ আজকে (মঙ্গলবার) আমি ডিএমপি কমিশনারকে বিষয়টি মৌখিক ভাবে জানিয়েছি।’

নৌকার পক্ষে সশরীরে মাঠে না থাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহীউদ্দিনের বিষয়ে প্রশ্ন করলে মমতাজ বেগম বলেন, ‘তার বিষয়টি আমাদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ অবগত আছেন। সেই ব্যাপারে ওনারাই ব্যবস্থা নিবেন।’

তিনি বলেন, ‘কেন তিনি (গোলাম মহীউদ্দিন) নৌকার পক্ষে নামেননি, তিনি তো মানিকগঞ্জ–১ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত জাতীয় পার্টির প্রার্থী জহিরুল আলম রুবেলের লাঙ্গলের পক্ষে নামছেন, লাঙ্গলের পক্ষে কাজ করেছেন অথচ একাধিকবার বলার পরেও তিনি আমার নৌকার পক্ষে একদিনের জন্য নামেননি, এটা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ অবগত আছেন। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবগত আছেন, তিনি ব্যবস্থা নিবেন।’

স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে গোলাম মহীউদ্দিন বিক্রি হয়েছেন বলে মনে করছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মমতাজ বেগম বলেন, ‘এটা আমার মনে করার কিছু নেই। এটা এখন সাধারণ জনগণের কাছে রটে গেছে। এটা এখন সবাই জানে। মোটা অঙ্কের কালো টাকা দিয়ে এ রকম বড় বড় রাঘববোয়াল বশ করে ফেলছে।’

পরাজিত প্রার্থীদের কর্মী–সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগের বিষয়ে মানিকগঞ্জ–২ আসনের বিজয়ী প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু সাংবাদিকদের সেলফোনে বলেন, ‘নির্বাচনের পর মমতাজ বেগমের কোনো কর্মীর ওপর আমরা কর্মীরা হামলা বা মারধর করেনি। উল্টো তার কর্মী–সমর্থকেরা আমার কর্মীদের ওপর নানা ভাবে অত্যাচার, নির্যাতন করছে।’ 

সিঙ্গাইর–হরিরামপুর এবং সদরের একাংশ নিয়ে মানিকগঞ্জ–২ আসন। এই আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৬৬ হাজার ৯৪৬ জন। এ আসনে দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু ৬ হাজার ১৭১ ভোটের ব্যবধানে মমতাজ বেগমকে পরাজিত করেছেন।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনা-৩ আসনে তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল, বৈধ ৯টি

খুলনা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

খুলনা-৩ (খালিশপুর-দৌলতপুর-খানজাহান আলী-আড়ংঘাটা) আসনে তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এই আসনে ১২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। যাচাই-বাছাই শেষে ৯ জনের মনোনয়ন বৈধ এবং ৩ জনের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করা হয়। আজ বুধবার দুপুরে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সাল কাদের এই তথ্য জানান।

ফয়সাল কাদের জানান, ঋণখেলাপিসহ বিভিন্ন কারণে যাঁদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে, তাঁরা হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রউফ মোল্যা, আবুল হাসান সিদ্দিক ও আরিফুর রহমান মিঠু। তবে তাঁরা চাইলে বিধি অনুযায়ী আপিল করতে পারবেন।

এই আসনে যাঁদের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে, তাঁরা হলেন ইসলামী আন্দোলনের মো. আউয়াল, বিএনপির রকিবুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর মাহফুজুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ খান লিটন ও মইন মোহাম্মদ মায়াজ, বাসদের জনার্দন দত্ত, খেলাফত মজলিসের এফ এম হারুন অর রশিদ, এনডিএমের শেখ আরমান হোসেন এবং জাতীয় পার্টির আব্দুল্লাহ আল মামুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজারে পর্যটকের ভিড়, থার্টি ফার্স্ট নাইটে ৭ দফা বিধিনিষেধ পুলিশের

মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ০৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

পুরোনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রতিবছর থার্টি ফার্স্ট নাইটে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে লাখো পর্যটকের সমাগম ঘটে। এ বছরও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমণপিপাসুরা কক্সবাজারে এসেছেন। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সারা দেশে শোকের আবহ বিরাজ করায় অনেকেই ভ্রমণ বাতিল করেছেন বলে জানিয়েছেন পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

এদিকে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামীকাল ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সমুদ্রসৈকতসহ উন্মুক্ত স্থানে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ও জনসমাগম না করতে ৭ দফা বিধিনিষেধ জারি করেছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার জেলা পুলিশের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব, অপপ্রচার ও উসকানিমূলক বক্তব্য ছড়ানো, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট, নাশকতা কিংবা সহিংস কর্মকাণ্ড থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে। এ ছাড়া উচ্চ শব্দে হর্ন বাজানো, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালানো নিষিদ্ধ থাকবে।

জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) অলক বিশ্বাস বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইটে কক্সবাজার শহর ও সমুদ্রসৈকতে আতশবাজি ও পটকা বিক্রি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে। একই সময়ে উন্মুক্ত স্থান ও রাস্তায় কোনো কনসার্ট কিংবা নাচগানের আয়োজন করা যাবে না। পাশাপাশি ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বার ও মদের দোকানে বেচাকেনা বন্ধ থাকবে।

অলক বিশ্বাস জানান, বিধিনিষেধ কার্যকরের পাশাপাশি শহরের প্রবেশমুখসহ গুরুত্বপূর্ণ ১০টি স্থানে তল্লাশিচৌকি বসিয়ে নজরদারি জোরদার করা হবে।

পর্যটকের উপস্থিতি

বছরের শেষ দিন ও নতুন বছরের শুরুতে কক্সবাজারে সাধারণত পর্যটকের ঢল নামে। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারাও সৈকতে ভিড় জমান। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে ৮-৯ বছর ধরে সৈকতে বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণের উন্মুক্ত কোনো আয়োজন হচ্ছে না। শহরের কয়েকটি মানসম্মত হোটেল ও রিসোর্টে সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠান হলেও এবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সেসব আয়োজনও বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হোটেলের মালিকেরা।

হোটেল ও রিসোর্টের মালিকেরা বলেন, ‘শোকাবহ পরিস্থিতির কারণে অনেক পর্যটক বুধবারের কক্ষ বুকিং বাতিল করেছেন। আবার যাঁরা মঙ্গল বা বুধবার কক্সবাজারে আসার পরিকল্পনা করেছিলেন, তাঁদের বড় অংশই সফর স্থগিত করেছেন।’

কক্সবাজার শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, গেস্টহাউস ও কটেজে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার পর্যটকের রাতযাপনের ব্যবস্থা রয়েছে। কক্সবাজার হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, সব মিলিয়ে প্রায় ৯০ শতাংশ কক্ষ বুকিং রয়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খানসামায় গ্রাম সমিতির অফিসের বারান্দা থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার

খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার ২ নম্বর ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের টংগুয়া চেয়ারম্যানপাড়া গ্রাম সমিতির অফিসের বারান্দা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গভীর রাতে গ্রাম সমিতির অফিসের বারান্দায় একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে ভ্যানযোগে খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাছেত সরদার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, লাশটির পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। মৃত্যুর কারণ ও পরিচয় উদ্‌ঘাটনে আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বগুড়ায় গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু, সিসিটিভির হার্ডডিস্ক নিয়ে আত্মগোপনে স্বামী

বগুড়া প্রতিনিধি
নিহত রিফাত জাহান রিংকি। ছবি: সংগৃহীত
নিহত রিফাত জাহান রিংকি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ায় রিফাত জাহান রিংকি (১৯) নামের এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১১টার দিকে সদর উপজেলার নুনগোলা দক্ষিণ পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। মৃত্যুর পরপরই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাড়ির সিসিটিভির হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় এই ঘটনায় সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে।

নিহত রিংকি শাজাহানপুর উপজেলার নন্দকুল উত্তর পাড়া গ্রামের রাশেদুল ইসলামের মেয়ে। পাঁচ বছর আগে নুনগোলা এলাকার নুরু মিয়ার ছেলে নুরুন্নবীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের চার বছর বয়সী একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে প্রতিবেশীরা রিংকিকে বাড়ির উঠানে স্বাভাবিকভাবে ব্যাডমিন্টন খেলতে দেখেন। যদিও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মাঝেমধ্যে পারিবারিক কলহের কথা শোনা যেত। রাতের দিকে হঠাৎ তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

নিহত রিংকির বোন আশা খাতুন জানান, বিকেলে রিংকির মোবাইল থেকে তাঁর ফোনে একটি মিসকল আসে। পরে একাধিকবার ফোন করলেও রিংকি ফোন ধরেননি। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাতে নুরুন্নবী ফোন করে জানায়, রিংকির ওপর জিনের আছর পড়েছে। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রিংকির নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। তখন তাঁর গলায় আঘাতের চিহ্ন লক্ষ করা যায়।

রিংকির মামি আয়না খাতুন বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে রিংকিকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পরপরই আলামত নষ্ট করতে বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পালিয়ে যায়। আমরা এর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত চাই।’

সরেজমিনে দেখা যায়, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত স্বামী নুরুন্নবী ও তাঁর পরিবারের কোনো সদস্য বাড়িতে নেই। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঘটনার পরপরই তাঁরা বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু রায়হান বলেন, ‘এর আগে তাঁদের মধ্যে কোনো ঝগড়াবিবাদের কথা আমার জানা ছিল না। হঠাৎ রাতে মৃত্যুর খবর পাই। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক।’

বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান বলেন, পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। প্রাথমিক সুরতহালে আত্মহত্যার কোনো সুস্পষ্ট আলামত পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত