Ajker Patrika

লক্ষ্মীপুরে বন্যায় ক্ষতি ১৫০০ কোটি টাকা, ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দী

আব্বাছ হোসেন, লক্ষ্মীপুর
আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫: ৪৭
লক্ষ্মীপুরে বন্যায় ক্ষতি ১৫০০ কোটি টাকা, ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দী

লক্ষ্মীপুরে বন্যায় ক্ষতি হয়েছে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে কৃষি ও মৎস্য খাতে ক্ষতি হয়েছে ৮৭০ কোটি টাকা। বিধ্বস্ত হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার কাঁচা ঘরবাড়ি। ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়েছে সদর উপজেলায়। জেলায় নিঃস্ব হয়েছেন প্রায় তিন লাখ কৃষক। বন্যার এক মাস পার হলেও ২০ ইউনিয়নের ৩ লাখ মানুষ এখনো পানিবন্দী। 

স্থানীয়রা জানান, গত ২০ বছরে দীর্ঘস্থায়ী বন্যা ও জলাবদ্ধতা দেখেনি লক্ষ্মীপুরের মানুষ। এক মাস পার হলেও অনেক এলাকা থেকে এখনো পানি সরেনি। রাস্তাঘাট বাড়িঘর হাঁটু পর্যন্ত পানি তলিয়ে রয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় জানায়, গত ১৭ আগস্ট থেকে শুরু হয় টানা বৃষ্টি ও বন্যা। এতে রামগতি ও কমলনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়। পানিবন্দী হন ৫ উপজেলাবাসী। ভেসে যায় ৫০ হাজার পুকুর ও ঘেরের ২৫০ কোটি টাকার মাছ। তলিয়ে যায় আমনের বীজতলা, আবাদসহ ৬০ হাজার হেক্টর জমির ফসল। ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা। 

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় আরও জানায়, পানির তোড়ে ২০০ ব্রিজ-কালভার্ট এবং কাঁচা–পাকা ২ হাজার ৭৫০ কিলোমিটার সড়কের ৩৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। অপর দিকে ৯ হাজার ৮৭০ কিলোমিটার বৈদ্যুতিক লাইন, ১০১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ৩০ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়, ১ লাখ ১৭ হাজার ৬৫৬টি গবাদিপশুসহ বিভিন্নভাবে জেলায় বন্যায় ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। জেলায় ৭ লাখ ৫০ হাজার মানুষ ক্ষতির শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে পুঁজিসহ সব হারিয়ে নিঃস্ব প্রায় তিন লাখ কৃষক। 

জেলার সদর উপজেলার চাঁদখালী গ্রামের খোকন হোসেন ও মোহাব্বত হোসেন জানান, এক মাস পার হলেও এখনো পানিবন্দী। অর্ধাহারে-অনাহারে খেয়ে–না খেয়ে দিন কাটছে। এরই মধ্যে পানিতে পচে গেছে ঘরের আসবাব। ঘরের ভিটেমাটি ধসে গেছে। কোথাও মাথা গোঁজার আশ্রয় নেই। বন্যার পানিতে সর্বস্ব হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। চরম দুর্ভোগের মধ্যে থাকতে হচ্ছে তাদের। কবে নাগাদ পানি কমবে সে আশায় দিন কাটছে তাদের। 

সদর উপজেলার বালাইশপুর এলাকার আদর্শ খামারের মালিক ফারুকুর রহমান বলেন, ‘চারটি পুকুর ও ঘেরের প্রায় ৫০ লাখ টাকার মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। গবাদিপশুর গোখাদ্য নষ্ট হয়েছে প্রায় ৫ লাখ টাকার। বন্যায় ক্ষতি ও ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। এই এলাকায় আমার মতো কয়েক হাজার খামারি নিঃস্ব হয়েছেন।’ 

৩০ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানান জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ইউনুছ মিয়া। তিনি বলেন, ‘এবারের বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সব মিলে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ক্ষতির শিকার প্রায় সাড়ে ৭ লাখ মানুষ। এর মধ্যে কৃষকই ৩ লাখ। এ ছাড়া জেলার ২০ ইউনিয়নের ৩ লাখ মানুষ এখনো পানিবন্দী। ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে অনেক সময় লাগবে মানুষের। কাজ করে যাচ্ছি।’ 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. মঞ্জুর হোসেন বলেন, ‘আমন আবাদসহ মোট শস্যখেত রয়েছে ৯০ হাজার ৫৭৪ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে বন্যায় ক্ষতি হয়েছে ৫৮ হাজার ৩০০ হেক্টর জমির ফসল। যার ক্ষয়ক্ষতি ৬৩৩ কোটি টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসন করার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।’ 

জেলা প্রশাসক রাজিব কুমার সরকার বলছেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে পুনর্বাসনের কাজ চলছে। পাশাপাশি খালগুলোর বাঁধ অপসারণ ও দুপারে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা বহুতল ভবন উচ্ছেদ করে পানি চলাচল স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কৃষি ও মৎস্য খাতে। সব মিলে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ইতিমধ্যে ১ হাজার ৬৯ টন চাল ও ৬৭ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।’ ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চায়ের দোকানে চলে একটি বাতি-ফ্যান, বিদ্যুৎ বিল এল সাড়ে ৫৫ হাজার টাকা

টঙ্গিবাড়ী (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি 
বিদ্যুৎ বিলের কাগজ হাতে লিটুখান বাজারের দুই দোকানদার। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিদ্যুৎ বিলের কাগজ হাতে লিটুখান বাজারের দুই দোকানদার। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাজারে ছোট একটি চায়ের দোকান চালান বাদশা ব্যাপারী। দোকানে কেবল একটি বাতি ও একটি ফ্যান চালানো হয়। সাধারণত তাঁর মাসিক বিল ২০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে আসে। কিন্তু চলতি মাসে তাঁর হাতে এসেছে ৫৫ হাজার ৫৫০ টাকার বিদ্যুৎ বিল। বিল হাতে পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।

মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার দিঘিরপাড় ইউনিয়নের লিটুখান বাজারের দোকানদার বাদশা ব্যাপারী। বিদ্যুৎ বিলের ব্যাপারে বাদশা বলেন, ‘এটা অসম্ভব। আমার দোকানে এত বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগই নেই। বিলের নম্বরে ফোন করলে শুধু অফিসে যেতে বলে।’

এমন ‘ভুতুড়ে’ বিদ্যুৎ বিল পেয়েছেন লিটুখান বাজারের আরেক দোকানদার শহীদ খান। বাজারে খাবারের দোকান রয়েছে তাঁর। দোকানে দুটি বাতি, একটি ফ্যান ও একটি ছোট ফ্রিজ ব্যবহার করা হয়। প্রতি মাসে যেখানে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা বিল দিতেন, সেখানে এবার বিল এসেছে ২৪ হাজার ২১৬ টাকা। শহীদ বলেন, ‘বিলটা দেখে দাঁড়াতেই পারছিলাম না। এমন বিল হলে দোকান চালানোই কঠিন হয়ে যাবে।’

বাজারের অন্য ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, কয়েক মাস ধরে এলাকায় এমন অস্বাভাবিক বিল আসছে। তাঁদের ধারণা, মিটার রিডিং অথবা বিলিং পদ্ধতিতে গুরুতর ত্রুটি রয়েছে। দ্রুত তদন্ত করে সঠিক হিসাব ঠিক করার পাশাপাশি দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

বিল প্রস্তুতকারী কর্মী সুমি রানী দাস বলেন, সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের অফিসে যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘তারা অফিসে এলে আমরা সরেজমিন যাচাই করে বিল পুনরায় বিবেচনা করব।’

টঙ্গিবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. আব্দুস ছালাম বলেন, ‘মিটার রিডিং বা বিলিং সিস্টেমে ত্রুটি থাকতে পারে। আমরা সরেজমিন যাচাই করে দ্রুত সমাধানের পদক্ষেপ নেব। ভোক্তাদের অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাসার বাথরুমে পড়ে ছিল নারী প্রভাষকের লাশ, মাথায় আঘাতের চিহ্ন

বগুড়া প্রতিনিধি
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার এক বাসা থেকে ফাবিয়া তাসনিম সিধি (২৯) নামের এক প্রভাষকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

মৃত ফাবিয়া বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক। বছর দেড়েক আগে তিনি কলেজটিতে যোগদান করেন।

এই তথ্য নিশ্চিত করে বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান জানান, ফাবিয়া অবিবাহিত। তিনি বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ডা. রাশেদুল হাসানের বাড়ির তিনতলায় ভাড়া বাসায় তাঁর মায়ের সঙ্গে থাকতেন। কয়েক দিন আগে তাঁর মা গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে যান। গতকাল দুপুরের পর থেকে মেয়েকে ফোনে না পাওয়ায় তাঁর মা রাত ১০টার দিকে বগুড়া আসেন। অনেক ডাকাডাকি করে দরজা না খোলায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে বাসার বাথরুমে ফাবিয়ার লাশ দেখতে পায়।

পুলিশ জানায়, মৃত ব্যক্তির নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল এবং মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন ছাড়াও জিবে দাঁত দিয়ে কামড় দেওয়া ছিল। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অটোরিকশাকে চাপা দিল বাস, প্রাণ গেল তিনজনের

ফরিদপুর প্রতিনিধি
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাসের চাপায় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় শিশুসহ আরও চারজন আহত হয়। আজ শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল মিয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন নারী ও একজন পুরুষ। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালান। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।  

হাইওয়ে থানার এসআই সোহেল মিয়া বলেন, অটোরিকশাটি ভাঙ্গা থেকে টেকেরহাটের উদ্দেশে যাচ্ছিল। কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা নিউ মডার্ন পরিবহনের একটি বাস অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এই ঘটনায় বাসটি আটক করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড। এ সময় একটি নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আটক কয়েকজন মাঝিমাল্লার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোস্ট গার্ড হাতিয়ার একটি দল এই অভিযান চালায়। জব্দ করা জাটকাগুলোর মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. আবুল কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড। অভিযানে মেঘনা নদীর জাগলার চর এলাকায় একটি কাঠের নৌকায় তল্লাশি করা হয়। ওই নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাঝিদের মুচলেকা নিয়ে নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ মাছগুলো মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এতিমখানা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত