Ajker Patrika

যবিপ্রবির বাস চালককে মারধর, প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

যবিপ্রবির বাস চালককে মারধর, প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

রাস্তা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে শিক্ষার্থী উঠানোয় জেলা পরিবহন মালিক সমিতির লোকজনের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস চালকসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী। এই ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাঁদের সঙ্গে স্থানীয়রা যোগ দিলে রাস্তায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। এতে বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ। 

আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে যশোর-চুকনগর সড়কের মনিরামপুরের আটমাইল জামতলা নামক স্থানে এই ঘটনা ঘটে। 

খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এসময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে আটক করেছে। 

আটক দুই ব্যক্তি হলেন কেশবপুরের আলতাপোল এলাকার হাফিজুর রহমান ও মনিরামপুরের মুন্সি খানপুর এলাকার সাইদুল ইসলাম। তাঁরা দুইজন কাকন পরিবহন নামে একটি বাসের চালক ও হেলপার। 

মূলত রাস্তা থেকে শিক্ষার্থী তোলাকে কেন্দ্র করে কাকন পরিবহনের চালক বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসকে চলাচলে বাধাগ্রস্ত করে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিবাদে জড়ান বাস মালিক সমিতির লোকজন। এই ঘটনায় শিক্ষার্থীরা রাস্তায় বাস রেখে দুই থেকে তিনঘন্টা রাস্তা আটকে রাখে। 

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ডক্টর হাফিজ উদ্দিন শিক্ষার্থীদের বরাত দিয়ে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মনিরামপুর থেকে আমাদের একটি বাস নিয়মিত শিক্ষার্থী ও স্টাফদের আনা নেওয়া করে। আজ রোববার সকালে বাস মনিরামপুর থেকে ছেড়ে এসে জামতলা আটমাইল নামক স্থান থেকে আমাদের দুইজন শিক্ষার্থীকে বাসে তোলে। আমাদের বাসের পেছনে কাকন পরিবহন নামে একটি বাস আসছিল। তাঁরা মনে করেছে আমাদের বাস রাস্তা থেকে সাধারণ যাত্রী তুলেছে। তখন কাকন পরিবহন বাসের চালাক আমাদের বাসকে টপকে সামনে উঠতে যেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসের লুকিং গ্রাস ভেঙে গতিরোধ করে।’ 

প্রক্টর আরও বলেন, আমাদের চালক পিন্টু তাঁর আসন থেকে নেমে কাকন বাসের চালকের কাছে গতিরোধ ও গ্লাস ভাঙার কারণ জানতে চাইলে ওই বাসের চালক ও হেলপার আমাদের চালককে মারপিট করে। 

বাস চালকদের সঙ্গে যোগদেন স্থানীয় আব্দুল মমিন মেম্বার, তাঁর ছেলে আজম, বরাত ও হুমায়ুন নামে আরও চার ব্যক্তি। আমাদের শিক্ষার্থীরা বাস থেকে নেমে ঠেকাতে গেলে তাঁদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়ান পরিবহন শ্রমিকরা। এর প্রতিবাদে আমাদের শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে। 

প্রক্টর হাফিজ উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে আমি পরিবহন শ্রমিক নেতাদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে মনিরামপুরের ইউএনও এবং থানার ওসি আসেন। তাঁরা ঘটনাস্থল থেকে কাকন বাসের চালক ও হেলপারকে গ্রেপ্তার করেন। স্থানীয় প্রশাসন ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার ও ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিলে আমরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে চলে আসি। 

মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঘটনা ঘটার পরে থানা পুলিশ যেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় উৎসুক জনতাও বিক্ষোভ করলে সড়কে যানচলাচল কিছুটা ধীরগতি হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গিয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। 

ওসি আরও বলেন, এই ঘটনায় দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চায়ের দোকানে চলে একটি বাতি-ফ্যান, বিদ্যুৎ বিল এল সাড়ে ৫৫ হাজার টাকা

টঙ্গিবাড়ী (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি 
বিদ্যুৎ বিলের কাগজ হাতে লিটুখান বাজারের দুই দোকানদার। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিদ্যুৎ বিলের কাগজ হাতে লিটুখান বাজারের দুই দোকানদার। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাজারে ছোট একটি চায়ের দোকান চালান বাদশা ব্যাপারী। দোকানে কেবল একটি বাতি ও একটি ফ্যান চালানো হয়। সাধারণত তাঁর মাসিক বিল ২০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে আসে। কিন্তু চলতি মাসে তাঁর হাতে এসেছে ৫৫ হাজার ৫৫০ টাকার বিদ্যুৎ বিল। বিল হাতে পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।

মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার দিঘিরপাড় ইউনিয়নের লিটুখান বাজারের দোকানদার বাদশা ব্যাপারী। বিদ্যুৎ বিলের ব্যাপারে বাদশা বলেন, ‘এটা অসম্ভব। আমার দোকানে এত বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগই নেই। বিলের নম্বরে ফোন করলে শুধু অফিসে যেতে বলে।’

এমন ‘ভুতুড়ে’ বিদ্যুৎ বিল পেয়েছেন লিটুখান বাজারের আরেক দোকানদার শহীদ খান। বাজারে খাবারের দোকান রয়েছে তাঁর। দোকানে দুটি বাতি, একটি ফ্যান ও একটি ছোট ফ্রিজ ব্যবহার করা হয়। প্রতি মাসে যেখানে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা বিল দিতেন, সেখানে এবার বিল এসেছে ২৪ হাজার ২১৬ টাকা। শহীদ বলেন, ‘বিলটা দেখে দাঁড়াতেই পারছিলাম না। এমন বিল হলে দোকান চালানোই কঠিন হয়ে যাবে।’

বাজারের অন্য ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, কয়েক মাস ধরে এলাকায় এমন অস্বাভাবিক বিল আসছে। তাঁদের ধারণা, মিটার রিডিং অথবা বিলিং পদ্ধতিতে গুরুতর ত্রুটি রয়েছে। দ্রুত তদন্ত করে সঠিক হিসাব ঠিক করার পাশাপাশি দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

বিল প্রস্তুতকারী কর্মী সুমি রানী দাস বলেন, সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের অফিসে যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘তারা অফিসে এলে আমরা সরেজমিন যাচাই করে বিল পুনরায় বিবেচনা করব।’

টঙ্গিবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. আব্দুস ছালাম বলেন, ‘মিটার রিডিং বা বিলিং সিস্টেমে ত্রুটি থাকতে পারে। আমরা সরেজমিন যাচাই করে দ্রুত সমাধানের পদক্ষেপ নেব। ভোক্তাদের অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাসার বাথরুমে পড়ে ছিল নারী প্রভাষকের লাশ, মাথায় আঘাতের চিহ্ন

বগুড়া প্রতিনিধি
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার এক বাসা থেকে ফাবিয়া তাসনিম সিধি (২৯) নামের এক প্রভাষকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

মৃত ফাবিয়া বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক। বছর দেড়েক আগে তিনি কলেজটিতে যোগদান করেন।

এই তথ্য নিশ্চিত করে বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান জানান, ফাবিয়া অবিবাহিত। তিনি বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ডা. রাশেদুল হাসানের বাড়ির তিনতলায় ভাড়া বাসায় তাঁর মায়ের সঙ্গে থাকতেন। কয়েক দিন আগে তাঁর মা গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে যান। গতকাল দুপুরের পর থেকে মেয়েকে ফোনে না পাওয়ায় তাঁর মা রাত ১০টার দিকে বগুড়া আসেন। অনেক ডাকাডাকি করে দরজা না খোলায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে বাসার বাথরুমে ফাবিয়ার লাশ দেখতে পায়।

পুলিশ জানায়, মৃত ব্যক্তির নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল এবং মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন ছাড়াও জিবে দাঁত দিয়ে কামড় দেওয়া ছিল। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অটোরিকশাকে চাপা দিল বাস, প্রাণ গেল তিনজনের

ফরিদপুর প্রতিনিধি
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাসের চাপায় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় শিশুসহ আরও চারজন আহত হয়। আজ শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল মিয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন নারী ও একজন পুরুষ। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালান। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।  

হাইওয়ে থানার এসআই সোহেল মিয়া বলেন, অটোরিকশাটি ভাঙ্গা থেকে টেকেরহাটের উদ্দেশে যাচ্ছিল। কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা নিউ মডার্ন পরিবহনের একটি বাস অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এই ঘটনায় বাসটি আটক করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড। এ সময় একটি নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আটক কয়েকজন মাঝিমাল্লার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোস্ট গার্ড হাতিয়ার একটি দল এই অভিযান চালায়। জব্দ করা জাটকাগুলোর মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. আবুল কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড। অভিযানে মেঘনা নদীর জাগলার চর এলাকায় একটি কাঠের নৌকায় তল্লাশি করা হয়। ওই নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাঝিদের মুচলেকা নিয়ে নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ মাছগুলো মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এতিমখানা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত