Ajker Patrika

‘ছাগল চুরির কথা বলে ডেকে নিয়ে গলা কেটে হত্যা’

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ জুলাই ২০২৩, ২১: ০৪
‘ছাগল চুরির কথা বলে ডেকে নিয়ে গলা কেটে হত্যা’

ঝিনাইদহ সদরের আড়ুয়াকান্দি গ্রামে ছাগল চুরির কথা বলে ডেকে নিয়ে সাকিবকে (১৭) গলা কেটে হত্যা করেন মনির মোল্লা ওরফে আশরাফুল মোল্লা (১৯)। গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছে মনির এই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন বলে পুলিশ সুপার (এসপি) আশিকুর রহমান জানিয়েছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সাকিব হত্যা মামলার আসামি মনিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান।

নিহত সাকিব মাগুরার ফুলবাড়ী গ্রামের শামিমের ছেলে। তবে সে ঝিনাইদহ শহরের উদয়পুর গ্রামে নানা ওসমান লস্করের বাড়িতে থাকত। অন্যদিকে আসামি মনির মোল্লা যশোরের বাবলাতলা গ্রামের বাসিন্দা। তবে ঝিনাইদহ শহরের উদয়পুর গ্রামে একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করেন। 


এসপি বলেন, সদর উপজেলার আড়ুয়াকান্দি গ্রামের পাটখেতে এক ব্যক্তির মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। তবে তার পরিচয় পাওয়া যায় না। পরে রাতে সদর থানায় মামলা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে ঘটনা প্রচার পেলে গত বুধবার শাকিল আহমেদ নামের এক ব্যক্তি লাশ শনাক্ত করে তাঁর ভাগনে বলে জানান। শাকিল বলেন, ১ জুলাই সাকিবের সঙ্গে মনির মোল্লাকে ঘুরতে দেখা গেছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল বৃহস্পতিবার মনির মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেন।

আশিকুর রহমান বলেন, আসামির জবানবন্দির ভিত্তিতে জানা যায়, কয়েক মাস আগে উদয়পুর গ্রামে দুটি মোবাইল ফোন চুরি হয়। তারা দুজন মিলেই মোবাইল দুটি চুরি করলেও সাকিব গ্রামে বলে বেড়ায়, মনির মোবাইল চুরি করেছেন। ভয়ে মনির এলাকা থেকে কিছুদিন পালিয়ে থাকেন। কিছুদিন পর তিনি এলাকায় ফেরেন। সেই থেকে মনে মনে তিনি সাকিবকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

এসপি আরও বলেন, গত ১ জুলাই উদয়পুর গ্রামের তিন রাস্তার মোড়ে সাকিবকে আসতে বলেন তিনি। এ সময় দুজন মিলে ছাগল চুরির কথা বললে সাকিব তাতে রাজি হয়। রাতে তাকে বিসিকের মোড়ে থাকতে বলা হয়। দুপুরে আসামি বাড়ি থেকে একটি দা এনে বিসিক এলাকার একটি দোকানের নিচে লুকিয়ে রাখেন। গভীর রাতে সাকিব বিসিক মোড়ে আসে। আসামি বিসিক মোড় থেকে ব্যাগে করে দা, প্যাকেট বিস্কুট, পানি, সিগারেট এসব নিয়ে সাইকেলে করে তারা আড়ুয়াকান্দি গ্রামের একটি পাটখেতে যায়।

তিনি বলেন, নিরাপদে চুরির জন্য তারা রাত গভীর হওয়ার অপেক্ষা করে। এ সময় দুজন গাঁজা সেবন করে। সাকিব একপর্যায়ে ঘুমিয়ে পড়লে মনির তাকে গলা কেটে হত্যা করে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেন।

এসপি বলেন, আসামির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী হত্যায় ব্যবহৃত দা, গামছা ইত্যাদি উদ্ধার করা হয়। আসামি মনির ইতিমধ্যে আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানান পুলিশ সুপার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চার দিন পর দেখা মিলল সূর্যের, ঠাকুরগাঁওয়ে কিছুটা স্বস্তি

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁওয়ে আজ সকাল ৮টার দিকে পূর্ব আকাশে সূর্য ওঠার পর চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে উষ্ণতা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঠাকুরগাঁওয়ে আজ সকাল ৮টার দিকে পূর্ব আকাশে সূর্য ওঠার পর চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে উষ্ণতা। ছবি: আজকের পত্রিকা

টানা চার দিনের ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহের পর অবশেষে ঠাকুরগাঁওয়ে সূর্যের আলো দেখা গেছে। বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল ৮টার দিকে পূর্ব আকাশে সূর্য ওঠার পর চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে উষ্ণতা। এতে কৃষকসহ খেটে খাওয়া মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।

কয়েক দিন ধরে তীব্র শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বিশেষ করে সকালে কাজে বের হতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষ। সূর্যের দেখা পাওয়ায় শ্রমজীবী মানুষের কাজে নামা এখন কিছুটা সহজ হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মথুরাপুর এলাকার কৃষক আবদুল কাদের জানান, টানা কয়েক দিন সূর্য না থাকায় বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। আজ রোদ ওঠায় অনেকটা ভরসা পাচ্ছেন তাঁরা।

একই কথা জানান সদর উপজেলার আরেক কৃষক মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, শীত বেশি পড়লে বোরো ধানের বীজতলা পচে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। সূর্যের আলো পাওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কা অনেকটা কমে গেছে।

ঠাকুরগাঁও ইক্ষু গবেষণা কেন্দ্রের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, আগামী কয়েক দিনে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়তে পারে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাসিরুল আলম বলেন, টানা শৈত্যপ্রবাহে বোরো বীজতলা নিয়ে তাঁরা উদ্বিগ্ন ছিলেন। সূর্যের আলো ও তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ায় এখন ক্ষতির ঝুঁকি কমেছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকলে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাড়কাঁপানো শীতে কাঁপছে জীবননগর, এক দিনেই তাপমাত্রা কমল ৪ ডিগ্রি

জীবননগর (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি 
আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা জীবননগর। সূর্যের দেখা নেই। শীতের দাপট তীব্র। এক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা হঠাৎ কমে যাওয়ায় পুরো জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। কনকনে শীতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষ।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আর্দ্রতা ৯৬ শতাংশ। আর সকাল ৯টায় তাপমাত্রা আরও কমে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসে এবং আর্দ্রতা ছিল ৯৬ শতাংশ।

অন্যদিকে গতকাল মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ৯৪ শতাংশ। সকাল ৯টায়ও তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থেকে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়, তবে আর্দ্রতা কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৮৬ শতাংশে।

এই হিসাবে মাত্র এক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমেছে প্রায় ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা শীতের তীব্রতা বাড়িয়ে দিয়েছে। ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশার কারণে সড়কে যান চলাচলে ধীরগতি লক্ষ করা গেছে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ, ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো।

আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ভ্যানচালক রনি আহমেদ বলেন, ‘ভোরে রাস্তায় নামতেই গা জমে যায়। কাজ না করলে খাওন জোটে না, আবার এই শীতে শরীরও সয় না।’

দিনমজুর রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শীত বাড়লে কাজ কমে যায়। কাজ না থাকলে খাওন জোটে না। গরিব মানুষের শীতটা সবচেয়ে বেশি কষ্টের।’

জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শীতের কারণে হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। শীতে শিশুদের প্রতি বাড়তি যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, শীত আরও তীব্র হওয়ার আগেই ছিন্নমূল ও অসহায় মানুষের জন্য জরুরি ভিত্তিতে শীতবস্ত্র বিতরণ প্রয়োজন।

জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল আমীন বলেন, ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ পাওয়া কম্বল ইতিমধ্যে বিতরণ শুরু হয়েছে। ছিন্নমূল, গরিব ও অসহায় শীতার্ত মানুষের মধ্যে পর্যায়ক্রমে কম্বল দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতে ফুলের চারা উৎপাদনে ব্যস্ত নেছারাবাদের নদীতীরের গ্রামগুলো

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি 
নেছারাবাদ উপজেলার সন্ধ্যা নদীতীরবর্তী গ্রামগুলোতে গড়ে উঠেছে ছোট-বড় অনেক নার্সারি। ব্যস্ত সময় পার করছেন ফুলচাষিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নেছারাবাদ উপজেলার সন্ধ্যা নদীতীরবর্তী গ্রামগুলোতে গড়ে উঠেছে ছোট-বড় অনেক নার্সারি। ব্যস্ত সময় পার করছেন ফুলচাষিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নেছারাবাদ উপজেলার সন্ধ্যা নদীতীরবর্তী অলংকারকাঠি গ্রামে শীতের আগমন মানেই ভিন্ন এক কর্মচাঞ্চল্য। ভোরের ঘন কুয়াশার মধ্যেই নারী-পুরুষ সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়েন নার্সারির কাজে। কারও হাতে কাস্তে, কারও হাতে পানির পাইপ, কেউ আবার মাথায় তুলে নেন বড় ঝুড়ি। এভাবেই ফুলের চারা উৎপাদনের কর্মকাণ্ড জমে ওঠে অলংকারকাঠি, পানাউল্লাহপুর, আকলম, মাহমুদকাঠিসহ আশপাশের গ্রামগুলোতে।

উপজেলায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য ছোট-বড় নার্সারি। বিশেষ করে স্বরূপকাঠি-বরিশাল সড়কের অলংকারকাঠি এলাকায় সড়কের দুই পাশে সারি সারি নার্সারি চোখে পড়ে। শীত মৌসুমকে ঘিরে এসব নার্সারিতে শুরু হয়েছে ফুলের চারা উৎপাদনের ব্যাপক প্রস্তুতি। উপজেলা কৃষি অফিস ও উদ্যোক্তাদের প্রত্যাশা, চলতি মৌসুমে ফুলের চারা বিক্রিতে দেড় থেকে দুই কোটি টাকার ব্যবসা হতে পারে।

নার্সারিগুলোতে ইতিমধ্যে ফুটতে শুরু করেছে বাহারি ফুল। অল্প সময়ের মধ্যেই লাল, নীল, হলুদ, গোলাপি ও বেগুনি রঙের ফুলে মাঠ ঢেকে যাবে। দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন ফুলের গালিচা। এই চারা উৎপাদন শুধু সৌন্দর্যই ছড়াচ্ছে না, নীরবে সৃষ্টি করছে এক অর্থনৈতিক সম্ভাবনা। পাশাপাশি দরিদ্র নারী-পুরুষের জন্য তৈরি হচ্ছে টেকসই কর্মসংস্থান।

নেছারাবাদ উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে প্রায় ১ কোটি ফুলের চারা বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে, যার বাজারমূল্য ৩ কোটি টাকার বেশি। নার্সারির মালিকেরা জানান, গত বছরের তুলনায় এবার বেশি জমিতে চারা উৎপাদন করা হচ্ছে। যদিও সার ও কীটনাশকের দাম বাড়ায় উৎপাদন খরচ বেড়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, অলংকারকাঠি, কুনিয়ারী, মাহমুদকাঠি, সুলতানপুরসহ অন্তত ২০টি গ্রামে ফুলের চারা উৎপাদনের কাজ চলছে। গাঁদা, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, রজনীগন্ধা, গোলাপ, টিউলিপ, কসমস, বেলি, সূর্যমুখী, অর্কিড, সিলভিয়া, মর্নিং ফ্লাওয়ার, ক্যালেন্ডুলাসসহ শতাধিক প্রজাতির দেশি ও বিদেশি ফুলের চারা প্রস্তুত করা হচ্ছে।

নার্সারির মালিক মো. আদনান শেখ বলেন, নেছারাবাদে বর্তমানে ২ হাজারের বেশি নার্সারি রয়েছে। মালিক ও শ্রমিক মিলিয়ে প্রায় ২ লাখ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এই খাতে জড়িত। শীত মৌসুমে এই নার্সারিগুলো ফুলের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়। উৎপাদন খরচ বাড়লেও চলতি মৌসুম নিয়ে তিনি আশাবাদী।

নার্সারির নারী শ্রমিক ঝুমা আক্তার বলেন, আগে সংসারে অভাব ছিল। স্বামীর একার আয়ে কষ্ট করে চলতে হতো। এখন নার্সারিতে কাজ করে সংসারের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। ছেলে-মেয়েদের মুখে হাসি ফুটেছে। তিনি জানান, ফুলের চারার দাম ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। বনসাই ও বিদেশি জাতের চারার দাম সবচেয়ে বেশি।

দেখা গেছে, এসব নার্সারিতে শ্রমিকদের বড় অংশই নারী। পাশাপাশি পুরুষ শ্রমিকেরাও কাজ করছেন। নার্সারির কাজে তুলনামূলক কম মজুরির কারণে নারী শ্রমিক সহজলভ্য বলে জানান উদ্যোক্তারা। প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা মজুরি পেয়ে তাঁরা সংসারের খরচ সামাল দিচ্ছেন।

উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহফুজুর রহমান জানান, নেছারাবাদে প্রায় ৪০ হেক্টর জমিতে ফুলের চারা উৎপাদন করা হচ্ছে। চলতি মৌসুমে ব্যবসায়ীরা দেড় থেকে দুই কোটি টাকার বেচাকেনা করতে পারবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

ফুলের চারা উৎপাদনের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে নেছারাবাদের নদীতীরবর্তী গ্রামগুলো আগামী দিনে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফুল উৎপাদন কেন্দ্রে পরিণত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মহাসড়কে দোকান যানজটে ভোগান্তি

মো. আজিমুশ শানুল হক দস্তগীর চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম)
মহাসড়কে দোকান যানজটে ভোগান্তি

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চন্দনাইশের দোহাজারী অংশটি এখন শুধু যাতায়াতের পথ নয়, ক্রমেই মৃত্যুফাঁদে পরিণত হচ্ছে। দোহাজারী বাজার এলাকায় ৬ লেনের প্রশস্ত সড়ক নির্মাণ হলেও যান চলাচলে শৃঙ্খলা ফেরেনি। একদিকে সড়কের ডিভাইডার দখল করে গড়ে ওঠা ভাসমান দোকান ও কাঁচাবাজার, অন্যদিকে মূল সড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার অবাধ চলাচল—সব মিলিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামের এই ব্যস্ত এলাকায় বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, দোহাজারী পৌর সদরের প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকায় সড়কের বিভাজকে (ডিভাইডার) খুঁটি গেড়ে অস্থায়ী দোকান বসানো হয়েছে। কোথাও সবজি, কোথাও ফল, আবার কোথাও চায়ের দোকান। নিয়ম অনুযায়ী মহাসড়কের ওপর কোনো ধরনের স্থাপনা থাকার কথা না থাকলেও এখানে ডিভাইডারই যেন বাজারের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে।

৬ লেনের এই মহাসড়কে দূরপাল্লার যানবাহনের জন্য দ্রুতগতির লেন থাকলেও দোহাজারী অংশে তা কার্যত অকার্যকর। সড়কের দুই পাশে শত শত সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা এলোমেলোভাবে দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করাচ্ছে। নির্দিষ্ট পার্কিং ব্যবস্থা না থাকায় মূল লেনেই যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকছে। ফলে ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে আসা দ্রুতগতির বাস ও ট্রাককে দোহাজারী সদরে এসে হঠাৎ ব্রেক কষতে হচ্ছে। এতে পেছনে থাকা যানবাহন দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে পড়ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসন মাঝে মাঝে উচ্ছেদ অভিযান চালালেও তা স্থায়ী হয় না। সকালে উচ্ছেদ হলেও বিকেলেই আবার দোকান বসে। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র ও বাজার ইজারাদারেরা প্রতিদিন এসব ভাসমান দোকান থেকে চাঁদা আদায় করে। এতে সড়ক দখলমুক্ত করার উদ্যোগ বারবার ব্যর্থ হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা নুর উদ্দিন বলেন, ‘৬ লেনের সড়ক হওয়ায় যাতায়াত সহজ হবে বলে আশা করেছিলাম। কিন্তু এখন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সগুলো ২০-৩০ মিনিটের যানজটে আটকে চরম ভোগান্তিতে পড়ছে।’

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দোহাজারী পৌর প্রশাসক ঝন্টু বিকাশ চাকমা জানান, তিনি সদ্য কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন। দোহাজারীতে সড়ক দখল করে ভাসমান দোকান ও বাজার বসার বিষয়টি সম্প্রতি তাঁর নজরে এসেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে শিগগির অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানান তিনি।

দোহাজারী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সালাহউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও সিএনজির বিরুদ্ধে মামলা ও জরিমানা করা পুলিশের নিয়মিত কাজের অংশ। প্রতিদিনই মামলা হচ্ছে। তবে স্থানীয় তদবিরের কারণে অনেক সময় দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি হয় বলে তিনি দাবি করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত