Ajker Patrika

মেহেরপুরে পেঁয়াজের খেতে ছত্রাকের আক্রমণ, ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা

মেহেরপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬: ১৬
মেহেরপুরে পেঁয়াজের খেতে ছত্রাকের আক্রমণ, ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা

ছত্রাকের আক্রমণে দিশেহারা মেহেরপুরের পেঁয়াজচাষিরা। ছড়িয়ে পড়ছে এক জমি থেকে আরেক জমিতে। বিভিন্ন ধরনের ছত্রাকনাশক ব্যবহার করেও মিলছে না প্রতিকার। এতে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। 

এটিকে কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন পারপাস ব্লাসজনিত রোগ। অন্তত পাঁচ দিন পর পর পেঁয়াজের জমিতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করার পরামর্শ তাঁদের। 

মেহেরপুর মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের ষাটোর্ধ্ব কৃষক মিয়ারুল শেখ। এবার চার বিঘা জমিতে ভারতীয় সুখসাগর পেঁয়াজের আবাদ করেছিলেন। এর আগে পেঁয়াজের জমিতে এমন রোগ কখনোই দেখেননি তিনি। একটি ডগা প্রথমে শুকিয়ে যাচ্ছে, পরে আক্রান্ত হচ্ছে পুরো গাছ। ফলে গুটি বাঁধছে না গাছ থেকে। কাঙ্ক্ষিত ফলন পাবেন না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। 

শুধু মিয়ারুল নয় মুজিবনগরের শিবপুর, ভবানিপুর, বিশ্বনাথপুর, আনন্দবাস, টেংরামারীসহ জেলার বিভিন্ন গ্রামে মাঠের পর মাঠের পেঁয়াজখেতগুলো আক্রান্ত হচ্ছে এই রোগে। গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি আর ঘন কুয়াশার পর থেকেই পেঁয়াজের খেতে এই ছত্রাকের আক্রমণ দেখা দেয়। 

এদিকে কৃষকদের অভিযোগ, বাজারের নামীদামি কোম্পানির ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করেও কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। এই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে সদর উপজেলার উজলপুর, তেরঘোরিয়া, বন্দর, ইছাখালী, হরিরামপুরের বিভিন্ন মাঠে। কৃষকেরা বলছেন, আগে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করে সহজেই সমাধান মিলত। এবারের অবস্থা ভিন্ন। 

ছত্রাক দমনে পেঁয়াজখেতে স্প্রে করছেন কৃষক। ছবি: আজকের পত্রিকাজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে জেলায় সুখসাগর ও তাহেরপুরি জাতের পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে, যা থেকে ৯৪ হাজার ৫০০ মেট্রিকটন পেঁয়াজ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে কৃষকেরা বলছেন, ছত্রাকের আক্রমণ ঠেকানো না গেলে বড় ধরনের ফলন বিপর্যয় দেখা দেবে। এতে কৃষি বিভাগের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পূরণ হবে না। 

মুজিবনগরের ভবানিপুর গ্রামের পেঁয়াজচাষি হাবিবুর রহমান বলেনর, ‘আমার সাড়ে ছয় বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ রয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ জমির পেঁয়ােজ ছত্রাকের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। প্রথমে অল্প থাকলেও দিনে দিনে পুরো জমিতে ছড়িয়ে পড়ছে।’ 

হাবিবুর রহমান আরও বলেন, ‘চার থেকে পাঁচ দিন পর পর বাজারের নামীদামি কোম্পানির ছত্রাকনাশক এবং সঙ্গে কীটনাশক মিশিয়ে জমিতে প্রয়োগ করেও সমাধান মেলেনি। এখন বাজারের চার থেকে পাঁচটি কোম্পানির ছত্রাক একসঙ্গে মিশিয়ে ককটেল বানিয়ে জমিতে স্প্রে করছি। তার পরও কাজ হচ্ছে না। এমন অবস্থা চলতে থাকলে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পরব আমরা।’ 

একই উপজেলার শিবপুর গ্রামের পেঁয়াজচাষি আমজাদ গাইন বলেন, ‘১২ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছি। অর্ধেকেরও বেশি জমিতে ছত্রাকের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। ওষুধ ছিটিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না। সার, কীটনাশক, সেচ, শ্রমিক খরচ বেড়েছে কয়েক গুণ। এবার ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক প্রয়োগ বেশি করতে হচ্ছে। বাড়ছে খরচ।’ 

 ‘আমরা সুখসাগর জাতের পেঁয়াজের আবাদ করে থাকি। এক বিঘা জমিতে ১৫০ থেকে ১৮০ মণ ফলন হয় এই জাতের পেঁয়াজ থেকে। এবার যা অবস্থা, বিঘাপ্রতি জমিতে ১০০ মণ ফলনও পাওয়া যাবে না। বিঘাপ্রতি জমিতে পেঁয়াজ আবাদে খরচ হয় ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। এবার সেই টাকা তুলতে পারব কি না, শঙ্কা রয়েছে।’ বলেন আমজাদ গাইন। 

একই গ্রামের চাষি রেজাউল হক বলেন, চলতি মৌসুমে ১১ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করা হয়েছে। পুরো জমিই আক্রান্ত হয়েছে এই রোগে। আর এক মাস পর পেঁয়াজ উঠতে শুরু করবে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে এখানকার উৎপাদিত পেঁয়াজ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যায়। 

চাষি রেজাউল হক বলেন, ‘ভরা মৌসুমে পেঁয়াজ আমদানির কারণে এমনিতেই মাঝে মাঝে লোকসানের মুখে পড়তে হয়। এবার আবার রোগের কারণে ফলনও কম হবে। দাম পড়ে গেলে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পরব আমরা।’ 

ছত্রাকের বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কাছে গবেষণার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার বলেন, কৃষকদের পাঁচ দিন পর পর পেঁয়াজের জমিতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আর ফসলের ওপরে থাকা কুয়াশা পানি শুকিয়ে যাওয়ার পরে স্প্রে করার জন্য বলা হচ্ছে। 

এই কৃষি কর্মকর্তা জানান, প্রতি বিঘা জমিতে পাঁচ কেজি করে পটাশ সার প্রয়োগ করার জন্যও কৃষকদের বলা হচ্ছে। কৃষকেরা যাতে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন না হন, সে জন্য উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের কৃষকদের পাশে থেকে পরামর্শ দিতে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

আপাতত লন্ডন নেওয়া হচ্ছে না খালেদা জিয়াকে

পাকিস্তান আর গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না—ইমরান খানকে নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় মুখপাত্র

এক দিনে বিএনপির ১০ লাখ ভোট কমে গেছে— বরিশালে হেনস্তার পরদিন ব্যারিস্টার ফুয়াদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাংনীতে আমনের বাম্পার ফলন, ধান-বিচালির ভালো দামে খুশি চাষিরা

রাকিবুল ইসলাম, গাংনী (মেহেরপুর) 
ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় এবার আমন ধানের বাম্পার ফলন ও সন্তোষজনক বাজারদর পাওয়ায় কৃষকদের মুখে ফুটেছে আনন্দের হাসি। আবাদ করতে গিয়ে শ্রমিকের মজুরি, সার, কীটনাশকসহ নানা খরচ বেড়ে গেলেও ভালো ফলন ও বাজারদর সেই চাপ অনেকটা কাটিয়ে দিয়েছে। ধানের পাশাপাশি বিচালির দামও এই মৌসুমে ব্যতিক্রমীভাবে বেশি—এক বিঘার বিচালি বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায়।

গাংনীর জোড়পুকুর, তেরাইল, বামন্দী, বালিয়াঘাট, হাড়াভাঙ্গা এলাকার মাঠ ঘুরে দেখা যায়, ধান কাটতে কৃষকদের পাশাপাশি ব্যস্ত সময় পার করছেন পরিবারের নারী সদস্যরাও। চাষিরা জানান, আমনের ফলন এবং দাম—দুই দিক থেকেই তাঁরা সন্তুষ্ট। যদিও কিছু এলাকায় কারেন্ট পোকার আক্রমণে ফলন কিছুটা কমেছে।

তেরাইল এলাকার কৃষক খবির উদ্দিন বলেন, ‘এ বছর বিঘাপ্রতি ১৮ থেকে ২০ মণ ধান পেয়েছি। কারেন্ট পোকার আক্রমণ থাকলেও কীটনাশক ব্যবহার করে তা নিয়ন্ত্রণ করেছি। অধিকাংশ জমির ফলন খুবই ভালো হয়েছে। ধানের দামে আমরা খুশি।’

অন্য কৃষক আলতাব হোসেন বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে এবারও ভালো ফলন পেয়েছি। বিঘায় ১৮-১৯ মণ হয়েছে। আমন চাষে বিঘাপ্রতি ১০-১২ হাজার টাকা খরচ হয়, কিন্তু ধান ঘরে তুলতে পারলে সেই খরচ আর মনে থাকে না। তা ছাড়া বিচালির এই যে দাম—এক বিঘায় ১০-১২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে, তাতে ভালোই লাভ হচ্ছে।’

ধান ব্যবসায়ী মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান বলেন, ‘বর্তমানে ধানের বাজারদর মণপ্রতি ১ হাজার ১০০ টাকা। দাম বাড়বে কি না এখনই বলা যাচ্ছে না।’

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। ফলন ও দাম দুটিতেই কৃষকেরা সন্তুষ্ট।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গাংনীর কৃষকেরা এই মৌসুমে ভালো ফলন পাচ্ছেন। যেসব জমিতে কারেন্ট পোকা আক্রমণ করেছে, সেখানে কিছু ফলন হ্রাস পেলেও তা বিচালির দামে পুষিয়ে যাচ্ছে। চাষিদের সঙ্গে আমরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

আপাতত লন্ডন নেওয়া হচ্ছে না খালেদা জিয়াকে

পাকিস্তান আর গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না—ইমরান খানকে নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় মুখপাত্র

এক দিনে বিএনপির ১০ লাখ ভোট কমে গেছে— বরিশালে হেনস্তার পরদিন ব্যারিস্টার ফুয়াদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তেঁতুলিয়ায় টানা চার দিন ১০ ডিগ্রির ঘরে পারদ, বাড়ছে শীতজনিত রোগী

পঞ্চগড় প্রতিনিধি 
কুয়াশায় ঢাকা চারপাশ। করতোয়া সেতু এলাকা থেকে আজ সকাল ৭টায় তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুয়াশায় ঢাকা চারপাশ। করতোয়া সেতু এলাকা থেকে আজ সকাল ৭টায় তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

টানা এক সপ্তাহ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে পঞ্চগড়ে। চার দিন ধরে তেঁতুলিয়ায় পারদ ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে ঘোরাঘুরি করায় জেলাজুড়ে শীতের তীব্রতা বেড়েই চলেছে। আজ মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ৯৯ শতাংশ।

আবহাওয়া অফিস জানায়, এক সপ্তাহের মধ্যে আজ মঙ্গলবার পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, গতকাল সোমবার ১০ দশমিক ৬, রোববার ১০ দশমিক ৫, শনিবার ১০ দশমিক ৫, শুক্রবার ১২, বৃহস্পতিবার ১২ দশমিক ৫, বুধবার ১২ দশমিক ২ এবং গত মঙ্গলবার ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দিনমজুর কামাল উদ্দিন বলেন, ‘দিনের বেলা রোদ উঠলে মনে হয় শীত তেমন নেই। কিন্তু রাত হলেই ঠান্ডা এমনভাবে নামতে থাকে যে কাজ শেষে বাড়ি ফিরতে হাত-পা জমে আসে। ভোররাতে বাতাসের ঝাপটা শরীরে লাগলে কাঁপুনি চেপে রাখা যায় না। সকালে সূর্য উঠলেই শরীর গরম হয়, সেলা (তখন) মনে হয় যেন বাঁচা গেল। তবে যত দিন যাচ্ছে, ঠান্ডা আরও বাড়ছে। কয়দিন আগতও এতটা শীত ছিল নাই, এখন তো মনে হচ্ছে সামনত আরও কঠিন শীত পড়িবে।’

জালাসি এলাকার দোকানি শফিকুল বলেন, ‘রাতপাতে অগোতা ঠান্ডাডাহ বাড়ি যায়। দোকান বন্ধ করে বাড়ি যাইতেও হাত-পা বরফ হইয়া যায়। ভোরবেলা ঘুম থাইক্যা উঠলেই দেখি কুয়াশায় রাস্তাঘাট দেখা যায় না, হাওয়া লাগলেই গা কাঁপে। তবে সূর্য মাথাই উঠলেই একটু বাঁচতি। এ বছরে বেশি শীত পড়িবে মনে হয়।’

এদিকে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। সর্দি-কাশি, জ্বর, অ্যালার্জি ও শ্বাসকষ্টে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, আজ তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ, যা শীতের অনুভূতি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

আপাতত লন্ডন নেওয়া হচ্ছে না খালেদা জিয়াকে

পাকিস্তান আর গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না—ইমরান খানকে নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় মুখপাত্র

এক দিনে বিএনপির ১০ লাখ ভোট কমে গেছে— বরিশালে হেনস্তার পরদিন ব্যারিস্টার ফুয়াদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে দ্বারে দ্বারে সাহেব আলী, বাঁচার আকুতি

কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি 
কিডনি রোগে আক্রান্ত সাহেব আলী ও তার স্ত্রী সন্তান। ছবি: আজকের পত্রিকা
কিডনি রোগে আক্রান্ত সাহেব আলী ও তার স্ত্রী সন্তান। ছবি: আজকের পত্রিকা

কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে জীবন-মরণ সংকটে পড়েছেন ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার গালিমপুর গ্রামের শ্রমজীবী সাহেব আলী (৩০)। গত ছয় মাসে চিকিৎসা খরচ জোগাতে সঞ্চয় ও সহায়তার সবটুকু শেষ হয়ে গেছে। এখন মানুষের দ্বারে দ্বারে সাহায্য চাইছেন সাহেব আলী-শাহনাজ দম্পতি। সমাজের আর দশজনের সামান্য সহায়তায় ফিরে পেতে পারেন জীবন। তবে এসবের কোনো কিছু না বুঝলেও তাঁদের শিশু দুটিও ঘুরছে মা-বাবার সঙ্গে।

পরিবারঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সবার বড় সাহেব আলীর বয়স ৩০ বছর হলেও রোগে আক্রান্ত হয়ে বৃদ্ধ মানুষের ছাপ পড়েছে তাঁর চোখেমুখে। আট বছর আগে তিনি বিয়ে করেন শাহনাজকে। সংসারজীবনে তিনি দুই সন্তানের জনক। মেয়ের বয়স ৫ ও ছেলের বয়স ৩। দিনমজুরির আয়ে কোনোমতে তাঁদের সংসার চলত। কিন্তু গত ছয় মাসের চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে টুকটাক যা সঞ্চয় ছিল, সব ফুরিয়ে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে তাঁর চিকিৎসা। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে দুই শিশুর ভবিষ্যৎ।

শিশু দুটির বয়স কম, তাই বুঝতে পারে না বাবার অসুস্থতার কথা। শুধু দেখে, বাবা আগে যেমন হাসিঠাট্টা করতেন, এখন তেমন করেন না। আগে যেমন খাবার বা নতুন জামাকাপড় নিয়ে আসতেন, তা-ও বন্ধ হয়ে গেছে অনেক দিন ধরে। তাই তাদের মন খারাপ থাকে।

সাহেব আলী বলেন, ‘ছয় মাস আগে আমার কিডনি রোগ ধরা পড়ে। যশোর, ঢাকার ন্যাশনাল হাসপাতাল ও পিজিতে চিকিৎসা নিয়েছি। এখন সপ্তাহে দুবার ডায়ালাইসিস করতে হয়, খরচ পড়ছে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। চিকিৎসা আর সংসারের ব্যয় মিলিয়ে আর পারছি না। আপনাদের একটু সহায়তা পেলে আবার বাঁচার স্বপ্ন দেখতে পারি।’

তাঁর বাবা ফয়েজ উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের আবাদযোগ্য জমি নেই। যা কিছু সঞ্চয় ছিল, সবটা ছেলের চিকিৎসায় ব্যয় হয়েছে। এখন মানুষের সহায়তা ছাড়া কোনো উপায় নেই।’

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা বশির আহম্মেদ বলেন, কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিসের জন্য সমাজসেবা অফিস থেকে এককালীন ৫০ হাজার টাকা সহায়তার ব্যবস্থা রয়েছে। ভুক্তভোগী আবেদন করলে যাচাই-বাছাই করে তা দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

আপাতত লন্ডন নেওয়া হচ্ছে না খালেদা জিয়াকে

পাকিস্তান আর গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না—ইমরান খানকে নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় মুখপাত্র

এক দিনে বিএনপির ১০ লাখ ভোট কমে গেছে— বরিশালে হেনস্তার পরদিন ব্যারিস্টার ফুয়াদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চিতলমারীতে সারের ডিলার নিয়োগে নীতিমালা ভঙ্গের অভিযোগ

বাগেরহাট ও চিতলমারী প্রতিনিধি
মেসার্স শেখ ব্রাদার্স ও মেসার্স হাজরা ট্রেডার্স। ছবি: আজকের পত্রিকা
মেসার্স শেখ ব্রাদার্স ও মেসার্স হাজরা ট্রেডার্স। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় সারের ডিলার নিয়োগ নীতিমালা-২০২৫ লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং দুজন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, সার বিতরণ ও ডিলার নিয়োগসংক্রান্ত সমন্বিত নীতিমালা উপেক্ষা করে চিতলমারী সদর ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের জন্য ‘মেসার্স হাজরা ট্রেডার্স’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে সুপারিশ করা হয়েছে।

ডিলার নিয়োগের জন্য উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভা করার কথা থাকলেও কোনো সভা অনুষ্ঠিত হয়নি। এসব অনিয়মের কথা তুলে ধরে ন্যায়বিচার পেতে চিতলমারী বাজারের বিএডিসি সার ডিলার মেসার্স শেখ ব্রাদার্সের মালিক মো. ফেরদাউস শেখ জেলা ও উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

ফেরদাউস শেখ বলেন, ‘নীতিমালা অনুযায়ী বড় গুদাম, ব্যবসার পরিধি এবং অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ডিলার নিয়োগের কথা। এসব ক্ষেত্রে আমি এগিয়ে থাকলেও সভা না করে হাজরা ট্রেডার্সকে সুপারিশ করা হয়েছে। বিগত সরকারের আমলেও জীবন হাজরার বিরুদ্ধে সার কেলেঙ্কারি ও দলীয় প্রভাব খাটানোর অভিযোগ ছিল। একজন বিতর্কিত ব্যবসায়ীকে পুনরায় সুপারিশ করায় জনমনে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।’ তিনি আরও জানান, এই সুপারিশ প্রক্রিয়ায় কৃষি কর্মকর্তা সিফাত আল মারুফসহ কয়েকজন কর্মকর্তা অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন বলে তাঁর সন্দেহ।

অভিযোগের বিষয়ে মেসার্স হাজরা ট্রেডার্সের মালিক জীবন হাজরা বলেন, ‘আমি কোনো সার কেলেঙ্কারিতে জড়িত ছিলাম না। নিয়ম মেনে ব্যবসা করে আসছি।’

চিতলমারী উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. তাওহিদুর রহমান বলেন, উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভা না করেই হাজরা ট্রেডার্সকে সুপারিশ করা হয়েছে। কমিটির অধিকাংশ সদস্য এ বিষয়ে জানেন না।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শংকর মজুমদার জানান, অফিসের লিখিত নির্দেশে তাঁরা উভয় প্রতিষ্ঠানের গুদাম পরিদর্শন করেন। সেখানে শেখ ব্রাদার্সের গুদাম ২৫ হাজার বর্গফুট এবং হাজরা ট্রেডার্সের গুদাম ১৫ হাজার বর্গফুট পাওয়া যায়। সে অনুযায়ী প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সিফাত আল মারুফ বলেন, ‘সার মনিটরিং কমিটির সভা ডাকলে কোরাম পূরণ হয় না। তাই মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় বিষয়টি উত্থাপন করা হয় এবং সেখানকার আলোচনার ভিত্তিতে হাজরা ট্রেডার্সকে সুপারিশ করা হয়েছে।’

চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, অভিযোগের পর জেলা প্রশাসনের একটি তদন্ত দল এসে তদন্ত করেছে। বিষয়টি নিয়ে আবারও বৈঠক করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

আপাতত লন্ডন নেওয়া হচ্ছে না খালেদা জিয়াকে

পাকিস্তান আর গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না—ইমরান খানকে নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় মুখপাত্র

এক দিনে বিএনপির ১০ লাখ ভোট কমে গেছে— বরিশালে হেনস্তার পরদিন ব্যারিস্টার ফুয়াদ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত