Ajker Patrika

গাজীপুর-৪ আসন: তাজউদ্দীনের মেয়ে ও ভাগনের মধ্যে লড়াই 

কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৩: ৫০
গাজীপুর-৪ আসন: তাজউদ্দীনের মেয়ে ও ভাগনের মধ্যে লড়াই 

গাজীপুর-৪ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা সিমিন হোসেন রিমি। এবারও তিনি পেয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন সিমিনের ফুপাতো ভাই শিল্পপতি ও কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের উপদেষ্টা আলম আহমেদ। তবে, দলের মনোনয়ন না পেয়ে করছেন স্বতন্ত্র নির্বাচন। মানে মামাতো বোনের বিপক্ষে লড়বেন তিনি। 

উভয়ে এলাকায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে গণসংযোগ ও প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। আলোচনা ও জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমদ সোহেল তাজ এবার প্রার্থী হবেন না বলে আগেই জানিয়েছেন। 

তাজ পরিবারে মনোনয়ন নিয়ে প্রতিযোগিতা ১৯৯১ সাল থেকে। সে বছর আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদের সহধর্মিণী সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন। তাঁকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বিএনপির প্রয়াত নেতা ব্রিগে. জেনারেল আ স ম হান্নান শাহ। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জোহরা তাজউদ্দীনের পরিবর্তে মনোনয়ন লাভ করেন তাজউদ্দীন আহমদের ছোট ভাই প্রয়াত আফসার উদ্দীন আহমেদ খান। তিনি আ স ম হান্নান শাহকে হারিয়ে জয়লাভ করে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। 

২০০১ সালের নির্বাচনে আফসার উদ্দীন খানের সঙ্গে দলীয় মনোনয়ন লাভের জন্য রাজনীতির মাঠে একেবারেই নতুন মুখ আসেন তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে তানজিম আহমদ সোহেল তাজ। মনোনয়ন লাভের লড়াইয়ে চাচাকে হারিয়ে দেন সোহেল তাজ। সেই নির্বাচনে সোহেল তাজ আ স ম হান্নান শাহকেও হারিয়ে এমপি নির্বাচিত হন। পরে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন। সাড়ে তিন বছরের মাথায় সোহেল তাজ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য পদ ত্যাগ করেন। পরে ২০১২ সালে এখানে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উপনির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে সোহেল তাজের বড় বোন সিমিন হোসেন রিমিকে বেছে নেয় আওয়ামী লীগ। উপনির্বাচনে সিমিন হোসেন রিমি চাচা আফসার উদ্দীন আহমেদ খানকে হারিয়ে জয়লাভ করেন। পরে ২০১৪ সালের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে সিমিন হোসেন রিমি বিজয়ী হন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি প্রয়াত নেতা আ স ম হান্নান শাহর ছোট ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নানকে হারিয়ে সিমিন হোসেন রিমি আবার বিজয়ী হন। 

আসন্ন নির্বাচনে মামাতো-ফুপাতো ভাইবোন এখন এলাকায় ব্যাপকভাবে আলোচিত। তাঁরা উভয়ে নিজেদের এলাকার ও মানুষের উন্নয়নের জন্য যোগ্য এবং উপযুক্ত বলে মনে করেন। 

আলম আহমেদ বলেন, ‘আমি প্রায় এক যুগ ধরে কাপাসিয়ার প্রতিটি এলাকায়, গ্রামের আনাচে-কানাচে প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগে অংশ গ্রহণ করেছি। সব জাতীয় দিবসে এবং আওয়ামী লীগের সব দলীয় কর্মসূচি, জাতীয় শোক দিবস, জাতির পিতা ও বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী, শেখ রাসেল, শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী, বঙ্গবন্ধু ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসসহ সব দিবস কৃষক লীগের পক্ষে পালন করেছি। বিভিন্ন দিবসে আমি কাপাসিয়ায় হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে গণভোজ, আলোচনা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে থাকি। কাপাসিয়ার মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমাকে যোগ্য বলে মনে করে।’ 

সিমিন হোসেন বলেন, ‘আমি কাপাসিয়ার মানুষের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করেছি। বাংলাদেশে একমাত্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হিসেবে কাপাসিয়া স্বাস্থ্যসেবায় ব্যাপক সফলতা অর্জন করে। গত সাত বছর যাবৎ মাতৃমৃত্যু শূন্য রয়েছে। আমি কাপাসিয়ায় ডায়াবেটিক হাসপাতাল স্থাপন করেছি। কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, নার্সিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। অত্যন্ত পল্লি এলাকায় পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। করোনাকালে আমি মানুষের পাশে থেকেছি। করোনার কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স লকডাউন হয়ে গেলে বেসরকারি হাসপাতালে নারী ও শিশুদের বিনা মূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। এমনকি শতাধিক নারীর সিজারের অপারেশন বিনা খরচে করার ব্যবস্থা করেছি। কাপাসিয়ার শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। মানুষের সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষার প্রসারে বই পড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি, দলীয় নেতা-কর্মী এবং কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ আমার এসব কর্ম অবশ্যই মূল্যায়ন করবেন। আমি বিশ্বাস করি, মানুষের ভালোবাসা আমার বিজয়ের চাবিকাঠি।’ 

গাজীপুর-৪ কাপাসিয়া আসনে আটজন মনোনয়ন সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সিমিন হোসেন রিমি। আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত ও কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের উপদেষ্টা আলম আহমেদ। জাকের পার্টির জুয়েল কবির, স্বতন্ত্র প্রার্থী সামসুল হক, জাতীয় পার্টির সামসুদ্দিন খান, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মাসুদ চৌধুরী, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ফ্রন্টের সারোয়ার ই কায়নাত এবং বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির আব্দুর রউফ খান। 

এই আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ১০ হাজার ৭৪৭ জন। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮৭১ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৫৫ হাজার ৮৭৬ জন। মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১২২টি, বুথ ৬০৪টি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাঠে পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।

নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।

থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।

ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাসার দরজা ভেঙে চবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

চবি প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ওমর ফারুক সুমন নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকার একটি বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

ওমর ফারুক বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

স্থানীয় ও পরিবারের সদস্যরা জানান, সুমন খুলশীতে তাঁর মামার বাসায় থাকতেন। তাঁর বড় ভাইও সেখানে থাকেন। দুই দিন আগে সুমনের মামা পুরো পরিবার নিয়ে তুরস্কে বেড়াতে যান। বাসায় সুমন ও তাঁর বড় ভাই ছিলেন। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে ভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সুমন। ফোনে তাঁর বড় ভাই কখন বাসায় ফিরবেন জানতে চান সুমন। বড় ভাই জানান যে তাঁর আসতে একটু দেরি হবে। এর কিছুক্ষণ পর বড় ভাই সুমনকে ফোন করলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি। পরে বাড়ি থেকে সুমনের মা ফোন দিয়ে যোগাযোগ করতে না পেরে বিষয়টি বড় ভাইকে জানান। এতে উদ্বেগ দেখা দিলে বড় ভাই বিল্ডিংয়ের দারোয়ানকে দিয়ে বাসা চেক করান।

দারোয়ান কলিংবেল বাজিয়েও কোনো সাড়া না পেয়ে বড় ভাইকে জানালে তিনি দ্রুত বাসায় এসে সুমনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে চিরকুট মিলেছে। এতে লেখা রয়েছে, ‘আমি সুমন, ওমর ফারুক সুমন। আমার কোনো আশা-আকাঙ্ক্ষা নেই। আর আমার কারও প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। সবাই ভালো থাকবেন।’ এর আগে ১ ডিসেম্বর লেখা আরেকটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা ছিল—‘আশাই জীবন, আশাই মরণ, ব্যর্থতা হতাশা-অন্ধকারে নিয়ে যায়।’

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর জামান বলেন, ‘সুমন ও তাঁর বড় ভাই একসঙ্গে মামার বাসায় থাকতেন। মামা ও মামি বর্তমানে বিদেশে আছেন। বড় ভাই সন্ধ্যায় বাইরে যান। সে সময় সুমন বাসায় একা ছিলেন। বড় ভাই বাসায় ফিরে এসে বারবার ডাকলেও ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে কোনো সাড়া পাননি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলে সুমনের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মহত্যা মনে হলেও আমরা সব সম্ভাব্য কারণ খতিয়ে দেখছি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বদলি নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ শিক্ষক নেতার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ

সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার মতো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি আদায়ের নেতৃত্ব দেওয়া শতাধিক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা এবং বিভাগে। আরও অনেককে বদলি করা হতে পারে। এ নিয়ে কেউ বিচলিত হবেন না। প্রয়োজনে আইনি লড়াইয়ে যাব। তবে আন্দোলন থেকে সরে আসব না। আপনাদের পাশে রয়েছি। অবিলম্বে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। সে জন্য যদি জেলেও যেতে হয়, প্রস্তুত রয়েছি।’

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেমের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে বরিশাল সদরের চরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমনের বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই কৃষকের, বাজারে ধানের দাম কমায় হতাশা

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।

কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।

বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত