মো. সাহাব উদ্দিন, ফেনী

নিজাম হাজারী। ফেনীর রাজনীতিতে এক যুগের বেশি সময়ের দাপুটে চরিত্র। রাজনৈতিক প্রভাব আর ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে হয়েছেন কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক। এসব সম্পদ করেছেন চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, বালুমহাল, জমি দখলসহ নানা উপায়ে। তবে রাজনৈতিক বিরোধী পক্ষ বলতে কাউকেই দাঁড়াতে দেননি; এমনকি নিজ দলের নেতাদেরও হত্যা করেছেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, একসময় ফেনীর ‘গডফাদার’খ্যাত জয়নাল হাজারীর হাত ধরে রাজনীতিতে এলেও চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছিরের মাধ্যমে উত্থান হয় নিজাম হাজারীর। ২০০১ সালে যৌথ বাহিনীর অভিযানের মুখে জয়নাল হাজারী সাম্রাজ্য ছেড়ে পালিয়ে যান। পরে ২০০৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এলে আওয়ামী রাজনীতির হাল ধরতে চট্টগ্রাম থেকে ফেনীতে আসেন নিজাম হাজারী। তৈরি করেন নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী। কোণঠাসা করে ফেনীতে ঢুকতে দেননি জয়নাল হাজারীকেও।
নিজাম হাজারী ২০১১ সালের ১৮ জানুয়ারির পৌরসভা নির্বাচনে কারচুপির মধ্য দিয়ে ফেনী পৌর মেয়র হন বলে অভিযোগ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের। আর দলের নেতা-কর্মীরা জানান, ২০১২ সালে জেলা রাজনীতির অঘোষিত অভিভাবক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রটোকল অফিসার আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমের হাত ধরে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়ে যান নিজাম। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রথম সংসদ সদস্য হন তিনি। পরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের হাত ধরে পরপর দুবার (২০১৮ ও ২০২৪) সংসদ সদস্য হন নিজাম।
হাজার কোটি টাকার সম্পদ
বিলাসবহুল বাগানবাড়ি, খামারবাড়ি ছাড়াও নিজাম হাজারীর অনেক জায়গাজমি ও বাড়ি রয়েছে মাস্টারপাড়ায়। স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যমতে,৬টি সাততলা এবং ১০টি একতলা বাড়ির পাশাপাশি ২০০ বিঘা জমি রয়েছে তাঁর। এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রামে তাঁর নামে-বেনামে মার্কেট ও ফ্ল্যাট রয়েছে বলে শোনা যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মাস্টারপাড়ার বাড়ি থেকে ৬০০ মিটার দক্ষিণে অন্যদের প্রায় ৩৫০ শতাংশ জায়গা দখল করে বিলাসবহুল বাগানবাড়ি গড়ে তোলেন নিজাম হাজারী। বাগানবাড়িতে ছিল হেলিপ্যাড, টেনিস কোর্ট, লেক, পুল, থিয়েটার, সুইমিংপুল। আঙিনায় সুসজ্জিত বাগানের গাছ ও ঘাস এবং বাসার আসবাব বিভিন্ন দেশ থেকে আনা হয় বলে প্রচার ছিল। এই বাগানবাড়ির বাজারমূল্য হিসাব করলে প্রায় হাজার কোটি টাকা।
বিলাসবহুল বাগানবাড়ির উত্তর পাশে ৭৮ শতাংশ জমিতে গড়ে তোলেন খামারবাড়ি। সেখানে একটি পুকুরের চারপাশে গরু, ছাগল, মহিষ ও মুরগির খামার। খামারবাড়িতে প্রবেশের দক্ষিণ পাশে একটি ঘরে লেখা রয়েছে ‘তালতলা বাগান বাড়ী’। তবে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর হাজার কোটি টাকার বিলাসবহুল সাম্রাজ্য পুড়িয়ে দেয় ছাত্র-জনতা।
‘১০ খলিফা’ ও ক্যাডার বাহিনী
নিজাম হাজারী মূলত ফেনীর ৬ উপজেলায় অপরাধের সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন বিশ্বস্ত ১০ সহযোগী ও নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী দিয়ে। স্থানীয়দের কাছে ওই ১০ সহযোগী নিজাম হাজারীর ‘১০ খলিফা’ নামে পরিচিত ছিল।
জেলার একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ওই খলিফাদের কারণে সব সময় দলে কোণঠাসা হয়ে থাকতেন তাঁরা। ওই ১০ সহযোগীকে দিয়ে বালুমহাল দখল, টেন্ডার-বাণিজ্য, সম্পত্তি দখল, অর্থ আত্মসাৎ, চাঁদাবাজির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেন নিজাম। এ ছাড়া বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের দমন-পীড়নের পাশাপাশি দলীয় নেতা-কর্মীদেরও নির্যাতন; এমনকি হত্যা করার অভিযোগ রয়েছে নিজামের বিরুদ্ধে।
দখল, টেন্ডারবাজি
একাধিক ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), স্বাস্থ্য, জনস্বাস্থ্য, গণপূর্ত, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতেন নিজাম হাজারীর খলিফারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার বলেন, নিজাম হাজারী কাজের বরাদ্দভেদে ৭ শতাংশ, ১০ শতাংশ ও ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ধরে অগ্রিম টাকা নিতেন খলিফাদের মাধ্যমে।
স্থানীয় ও ঠিকাদার সূত্রে জানা গেছে, নিজাম হাজারীর বিশ্বস্ত ‘ডান হাত’ হিসেবে পরিচিত ফেনী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল। তাঁর মাধ্যমে গত ১৫ বছর এলজিইডির সব কাজ নিয়ন্ত্রণ করতেন। এ ছাড়া জেলার কোন দপ্তরের কাজ কে করবে, সেটিও তিনি শুসেনের মাধ্যমে বণ্টন করতেন।
পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজীকে দিয়ে ফেনী পৌর এলাকার ১৮টি ওয়ার্ডের রাজনীতি ও কাউন্সিলরদের নিয়ন্ত্রণ করতেন নিজাম হাজারী। জমি দখল, উচ্ছেদ ও চাঁদাবাজির দায়িত্ব ছিল তাঁর চাচাতো ভাই হিসেবে পরিচিত জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফুর রহমান খোকন হাজারীর। সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের টেন্ডারের ভাগ, পরিবহন ও শহরের চাঁদার টাকা সংগ্রহ করতেন জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরীফ উল্যাহ ওরফে শরীফ হাজারী। আদায় করা টাকা প্রতিদিন শহরের ট্রাংক রোডের একটি ব্যাংকের শাখায় জমা করতেন শরিফ হাজারী। সড়ক ও জনপথ বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্বাস্থ্য বিভাগের টেন্ডার-বাণিজ্য, দরপত্র দাখিলসহ কাজের নির্দিষ্ট কমিশনের টাকা আদায় করতেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুল জলিল আদর। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও গণপূর্ত বিভাগের সব ঠিকাদারি কাজ ভাগ-বাঁটোয়ারা ও চাঁদা তুলতেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শম্ভু বৈষ্ণব। আর সীমান্তে চোরাচালানি পণ্য, অস্ত্র ও মাদক নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বৈধ-অবৈধ বালুমহাল দখলবাজির দায়িত্ব ছিল ছাগলনাইয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেজবাউল হায়দার চৌধুরী ওরফে সোহেল চৌধুরীর।
সোনাগাজী উপজেলায় চরাঞ্চলের জমি দখল করে অবৈধভাবে মাছ চাষ করে নিজাম হাজারীকে ভাগ দেওয়া এবং উপজেলার বিভিন্ন প্রকল্পের টেন্ডার-বাণিজ্যের টাকা পৌঁছে দিতেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম খোকন।
ফুলগাজী সীমান্তের চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করে চাঁদা নিজাম হাজারীর কাছে জমা দিতেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন মজুমদার ওরফে লাল হারুন। দাগনভূঞা উপজেলায় টেন্ডার-বাণিজ্য, হাটবাজারের চাঁদা তুলে হাজারীর কাছে পৌঁছে দিতেন জেলা যুবলীগের সভাপতি ও দাগনভূঞা উপজেলা চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন।
এ ছাড়া জেলা যুবলীগের সহসম্পাদক হুমায়ুন কবীর ভূইয়ার মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য বিভাগের সব টেন্ডার-বাণিজ্য নিজাম হাজারী নিয়ন্ত্রণ করতেন। ফাজিলপুরে বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ করতেন ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবুল হক রিপনের মাধ্যমে। জেলখানা থেকে সোনাগাজী উপজেলার বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ করতেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নুসরাত হত্যাকাণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত আসামি রুহুল আমিনের মাধ্যমে।
জেলার মাদক ও অবৈধ অস্ত্র ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করতেন জেলা যুবলীগের সহসভাপতি জিয়াউল আলম মিস্টার। জেলা পরিষদের সব কাজ নিয়ন্ত্রণ করতেন সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নুরুল আফসারের মাধ্যমে। বিলোনিয়া সীমান্তের চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করতেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সাজেল।
ফারুক হোসেন নামের এক ঠিকাদার জানান, সড়কের ২ কোটি ৭৮ লাখ টাকার একটি কাজের জন্য নিজাম হাজারীকে অগ্রিম ৪০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন তিনি। সরকার পতনের পর এখন তিনিও পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফেনী পৌরসভার ডাক্তার পাড়ার এক বাসিন্দা জানান, পৌরসভার মাধ্যমে চাঁদা নেওয়ার বুথ খুলেছিলেন নিজাম হাজারী।
শহরের রাজাজি দিঘির পাড়ে অবৈধভাবে প্রায় ৩০০ দোকান নির্মাণ করে প্রতিদিন লাখ টাকা চাঁদা তুলতেন পৌর যুবলীগ নেতা রুবেল হাজারী।
দলের নেতাদেরও খুন, নির্যাতন
নিজাম হাজারীর সিদ্ধান্তের বাইরে যাঁরা গেছেন, তাঁরাই হামলা, মামলাসহ নানা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। নিজের প্রভাব বিস্তারে বাধা হওয়ায় ২০১৪ সালের ২০ মে প্রকাশ্যে ফেনী শহরের একাডেমি রোডে ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হক একরামকে গুলি করে, কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।
একরামের স্বজনেরা জানান, হত্যার হুকুমদাতা হিসেবে নিজামের নাম উঠে এলেও অদৃশ্য শক্তির ইশারায় সেই মামলা থেকে তাঁর নাম বাদ দেওয়া হয়।
শুধু একরাম নন, ধর্মপুরের যুবলীগ নেতা রেজাউল করিম, বালিগাঁওয়ের জয়নাল মেম্বার, দাগনভূঞা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ফখরুল, ফেনী পৌর ছাত্রলীগ নেতা ইফতি, ফেনী পৌর এলাকায় শাহ জালাল নামের এক গরু ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যাসহ দলের ১৪ জনকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে নিজাম হাজারীর ক্যাডারদের বিরুদ্ধে।
নামকরণ
ফেনী সদর উপজেলার বালিগাঁও ইউনিয়নের ডোমরা ও সুন্দরপুর মৌজার প্রায় ২৫ একর জায়গা দখল করে নিজ নামে প্রস্তাবিত কারিগরি মহাবিদ্যালয়, স্ত্রী নুরজাহান বেগমের নামে মসজিদ ও প্রয়াত বাবা কমিশনার জয়নাল আবেদীন এবং মা দেল আফরোজ বেগমের নামে একটি নূরানী মাদরাসা কমপ্লেক্স স্থাপনের কাজ শুরু করেন নিজাম হাজারী।
এসব ভূমির মালিকদের অভিযোগ, ওই দখলে নেতৃত্ব দিয়েছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল, বালিগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সেলিম মুহুরি ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি জিয়া উদ্দিন বাবলু।
১০ মামলার আসামি
গত ৪ আগস্ট ফেনীর মহিপালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি চালায় নিজাম হাজারীর ক্যাডার বাহিনী। এতে ৭ জন নিহত হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌর আওয়ামী লীগের এক শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, ‘নিজাম হাজারীকে বারবার বলেছি, মহিপালে আন্দোলনরতরা কিছুক্ষণ পর চলে যাবে। হামলা করার দরকার নেই। কথা অগ্রাহ্য করে শুসেনকে দায়িত্ব দেন নিজাম হাজারী।’
ফেনীর পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, নিজাম হাজারীর বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৮টি হত্যা মামলাসহ ১০টি মামলা হয়েছে। তাঁকে ধরতে সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

নিজাম হাজারী। ফেনীর রাজনীতিতে এক যুগের বেশি সময়ের দাপুটে চরিত্র। রাজনৈতিক প্রভাব আর ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে হয়েছেন কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক। এসব সম্পদ করেছেন চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, বালুমহাল, জমি দখলসহ নানা উপায়ে। তবে রাজনৈতিক বিরোধী পক্ষ বলতে কাউকেই দাঁড়াতে দেননি; এমনকি নিজ দলের নেতাদেরও হত্যা করেছেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, একসময় ফেনীর ‘গডফাদার’খ্যাত জয়নাল হাজারীর হাত ধরে রাজনীতিতে এলেও চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছিরের মাধ্যমে উত্থান হয় নিজাম হাজারীর। ২০০১ সালে যৌথ বাহিনীর অভিযানের মুখে জয়নাল হাজারী সাম্রাজ্য ছেড়ে পালিয়ে যান। পরে ২০০৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এলে আওয়ামী রাজনীতির হাল ধরতে চট্টগ্রাম থেকে ফেনীতে আসেন নিজাম হাজারী। তৈরি করেন নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী। কোণঠাসা করে ফেনীতে ঢুকতে দেননি জয়নাল হাজারীকেও।
নিজাম হাজারী ২০১১ সালের ১৮ জানুয়ারির পৌরসভা নির্বাচনে কারচুপির মধ্য দিয়ে ফেনী পৌর মেয়র হন বলে অভিযোগ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের। আর দলের নেতা-কর্মীরা জানান, ২০১২ সালে জেলা রাজনীতির অঘোষিত অভিভাবক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রটোকল অফিসার আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমের হাত ধরে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়ে যান নিজাম। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রথম সংসদ সদস্য হন তিনি। পরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের হাত ধরে পরপর দুবার (২০১৮ ও ২০২৪) সংসদ সদস্য হন নিজাম।
হাজার কোটি টাকার সম্পদ
বিলাসবহুল বাগানবাড়ি, খামারবাড়ি ছাড়াও নিজাম হাজারীর অনেক জায়গাজমি ও বাড়ি রয়েছে মাস্টারপাড়ায়। স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যমতে,৬টি সাততলা এবং ১০টি একতলা বাড়ির পাশাপাশি ২০০ বিঘা জমি রয়েছে তাঁর। এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রামে তাঁর নামে-বেনামে মার্কেট ও ফ্ল্যাট রয়েছে বলে শোনা যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মাস্টারপাড়ার বাড়ি থেকে ৬০০ মিটার দক্ষিণে অন্যদের প্রায় ৩৫০ শতাংশ জায়গা দখল করে বিলাসবহুল বাগানবাড়ি গড়ে তোলেন নিজাম হাজারী। বাগানবাড়িতে ছিল হেলিপ্যাড, টেনিস কোর্ট, লেক, পুল, থিয়েটার, সুইমিংপুল। আঙিনায় সুসজ্জিত বাগানের গাছ ও ঘাস এবং বাসার আসবাব বিভিন্ন দেশ থেকে আনা হয় বলে প্রচার ছিল। এই বাগানবাড়ির বাজারমূল্য হিসাব করলে প্রায় হাজার কোটি টাকা।
বিলাসবহুল বাগানবাড়ির উত্তর পাশে ৭৮ শতাংশ জমিতে গড়ে তোলেন খামারবাড়ি। সেখানে একটি পুকুরের চারপাশে গরু, ছাগল, মহিষ ও মুরগির খামার। খামারবাড়িতে প্রবেশের দক্ষিণ পাশে একটি ঘরে লেখা রয়েছে ‘তালতলা বাগান বাড়ী’। তবে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর হাজার কোটি টাকার বিলাসবহুল সাম্রাজ্য পুড়িয়ে দেয় ছাত্র-জনতা।
‘১০ খলিফা’ ও ক্যাডার বাহিনী
নিজাম হাজারী মূলত ফেনীর ৬ উপজেলায় অপরাধের সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন বিশ্বস্ত ১০ সহযোগী ও নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী দিয়ে। স্থানীয়দের কাছে ওই ১০ সহযোগী নিজাম হাজারীর ‘১০ খলিফা’ নামে পরিচিত ছিল।
জেলার একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ওই খলিফাদের কারণে সব সময় দলে কোণঠাসা হয়ে থাকতেন তাঁরা। ওই ১০ সহযোগীকে দিয়ে বালুমহাল দখল, টেন্ডার-বাণিজ্য, সম্পত্তি দখল, অর্থ আত্মসাৎ, চাঁদাবাজির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেন নিজাম। এ ছাড়া বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের দমন-পীড়নের পাশাপাশি দলীয় নেতা-কর্মীদেরও নির্যাতন; এমনকি হত্যা করার অভিযোগ রয়েছে নিজামের বিরুদ্ধে।
দখল, টেন্ডারবাজি
একাধিক ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), স্বাস্থ্য, জনস্বাস্থ্য, গণপূর্ত, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতেন নিজাম হাজারীর খলিফারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার বলেন, নিজাম হাজারী কাজের বরাদ্দভেদে ৭ শতাংশ, ১০ শতাংশ ও ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ধরে অগ্রিম টাকা নিতেন খলিফাদের মাধ্যমে।
স্থানীয় ও ঠিকাদার সূত্রে জানা গেছে, নিজাম হাজারীর বিশ্বস্ত ‘ডান হাত’ হিসেবে পরিচিত ফেনী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল। তাঁর মাধ্যমে গত ১৫ বছর এলজিইডির সব কাজ নিয়ন্ত্রণ করতেন। এ ছাড়া জেলার কোন দপ্তরের কাজ কে করবে, সেটিও তিনি শুসেনের মাধ্যমে বণ্টন করতেন।
পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজীকে দিয়ে ফেনী পৌর এলাকার ১৮টি ওয়ার্ডের রাজনীতি ও কাউন্সিলরদের নিয়ন্ত্রণ করতেন নিজাম হাজারী। জমি দখল, উচ্ছেদ ও চাঁদাবাজির দায়িত্ব ছিল তাঁর চাচাতো ভাই হিসেবে পরিচিত জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফুর রহমান খোকন হাজারীর। সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের টেন্ডারের ভাগ, পরিবহন ও শহরের চাঁদার টাকা সংগ্রহ করতেন জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরীফ উল্যাহ ওরফে শরীফ হাজারী। আদায় করা টাকা প্রতিদিন শহরের ট্রাংক রোডের একটি ব্যাংকের শাখায় জমা করতেন শরিফ হাজারী। সড়ক ও জনপথ বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্বাস্থ্য বিভাগের টেন্ডার-বাণিজ্য, দরপত্র দাখিলসহ কাজের নির্দিষ্ট কমিশনের টাকা আদায় করতেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুল জলিল আদর। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও গণপূর্ত বিভাগের সব ঠিকাদারি কাজ ভাগ-বাঁটোয়ারা ও চাঁদা তুলতেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শম্ভু বৈষ্ণব। আর সীমান্তে চোরাচালানি পণ্য, অস্ত্র ও মাদক নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বৈধ-অবৈধ বালুমহাল দখলবাজির দায়িত্ব ছিল ছাগলনাইয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেজবাউল হায়দার চৌধুরী ওরফে সোহেল চৌধুরীর।
সোনাগাজী উপজেলায় চরাঞ্চলের জমি দখল করে অবৈধভাবে মাছ চাষ করে নিজাম হাজারীকে ভাগ দেওয়া এবং উপজেলার বিভিন্ন প্রকল্পের টেন্ডার-বাণিজ্যের টাকা পৌঁছে দিতেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম খোকন।
ফুলগাজী সীমান্তের চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করে চাঁদা নিজাম হাজারীর কাছে জমা দিতেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন মজুমদার ওরফে লাল হারুন। দাগনভূঞা উপজেলায় টেন্ডার-বাণিজ্য, হাটবাজারের চাঁদা তুলে হাজারীর কাছে পৌঁছে দিতেন জেলা যুবলীগের সভাপতি ও দাগনভূঞা উপজেলা চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন।
এ ছাড়া জেলা যুবলীগের সহসম্পাদক হুমায়ুন কবীর ভূইয়ার মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য বিভাগের সব টেন্ডার-বাণিজ্য নিজাম হাজারী নিয়ন্ত্রণ করতেন। ফাজিলপুরে বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ করতেন ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবুল হক রিপনের মাধ্যমে। জেলখানা থেকে সোনাগাজী উপজেলার বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ করতেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নুসরাত হত্যাকাণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত আসামি রুহুল আমিনের মাধ্যমে।
জেলার মাদক ও অবৈধ অস্ত্র ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করতেন জেলা যুবলীগের সহসভাপতি জিয়াউল আলম মিস্টার। জেলা পরিষদের সব কাজ নিয়ন্ত্রণ করতেন সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নুরুল আফসারের মাধ্যমে। বিলোনিয়া সীমান্তের চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করতেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সাজেল।
ফারুক হোসেন নামের এক ঠিকাদার জানান, সড়কের ২ কোটি ৭৮ লাখ টাকার একটি কাজের জন্য নিজাম হাজারীকে অগ্রিম ৪০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন তিনি। সরকার পতনের পর এখন তিনিও পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফেনী পৌরসভার ডাক্তার পাড়ার এক বাসিন্দা জানান, পৌরসভার মাধ্যমে চাঁদা নেওয়ার বুথ খুলেছিলেন নিজাম হাজারী।
শহরের রাজাজি দিঘির পাড়ে অবৈধভাবে প্রায় ৩০০ দোকান নির্মাণ করে প্রতিদিন লাখ টাকা চাঁদা তুলতেন পৌর যুবলীগ নেতা রুবেল হাজারী।
দলের নেতাদেরও খুন, নির্যাতন
নিজাম হাজারীর সিদ্ধান্তের বাইরে যাঁরা গেছেন, তাঁরাই হামলা, মামলাসহ নানা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। নিজের প্রভাব বিস্তারে বাধা হওয়ায় ২০১৪ সালের ২০ মে প্রকাশ্যে ফেনী শহরের একাডেমি রোডে ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হক একরামকে গুলি করে, কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।
একরামের স্বজনেরা জানান, হত্যার হুকুমদাতা হিসেবে নিজামের নাম উঠে এলেও অদৃশ্য শক্তির ইশারায় সেই মামলা থেকে তাঁর নাম বাদ দেওয়া হয়।
শুধু একরাম নন, ধর্মপুরের যুবলীগ নেতা রেজাউল করিম, বালিগাঁওয়ের জয়নাল মেম্বার, দাগনভূঞা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ফখরুল, ফেনী পৌর ছাত্রলীগ নেতা ইফতি, ফেনী পৌর এলাকায় শাহ জালাল নামের এক গরু ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যাসহ দলের ১৪ জনকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে নিজাম হাজারীর ক্যাডারদের বিরুদ্ধে।
নামকরণ
ফেনী সদর উপজেলার বালিগাঁও ইউনিয়নের ডোমরা ও সুন্দরপুর মৌজার প্রায় ২৫ একর জায়গা দখল করে নিজ নামে প্রস্তাবিত কারিগরি মহাবিদ্যালয়, স্ত্রী নুরজাহান বেগমের নামে মসজিদ ও প্রয়াত বাবা কমিশনার জয়নাল আবেদীন এবং মা দেল আফরোজ বেগমের নামে একটি নূরানী মাদরাসা কমপ্লেক্স স্থাপনের কাজ শুরু করেন নিজাম হাজারী।
এসব ভূমির মালিকদের অভিযোগ, ওই দখলে নেতৃত্ব দিয়েছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল, বালিগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সেলিম মুহুরি ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি জিয়া উদ্দিন বাবলু।
১০ মামলার আসামি
গত ৪ আগস্ট ফেনীর মহিপালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি চালায় নিজাম হাজারীর ক্যাডার বাহিনী। এতে ৭ জন নিহত হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌর আওয়ামী লীগের এক শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, ‘নিজাম হাজারীকে বারবার বলেছি, মহিপালে আন্দোলনরতরা কিছুক্ষণ পর চলে যাবে। হামলা করার দরকার নেই। কথা অগ্রাহ্য করে শুসেনকে দায়িত্ব দেন নিজাম হাজারী।’
ফেনীর পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, নিজাম হাজারীর বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৮টি হত্যা মামলাসহ ১০টি মামলা হয়েছে। তাঁকে ধরতে সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
মো. সাহাব উদ্দিন, ফেনী

নিজাম হাজারী। ফেনীর রাজনীতিতে এক যুগের বেশি সময়ের দাপুটে চরিত্র। রাজনৈতিক প্রভাব আর ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে হয়েছেন কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক। এসব সম্পদ করেছেন চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, বালুমহাল, জমি দখলসহ নানা উপায়ে। তবে রাজনৈতিক বিরোধী পক্ষ বলতে কাউকেই দাঁড়াতে দেননি; এমনকি নিজ দলের নেতাদেরও হত্যা করেছেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, একসময় ফেনীর ‘গডফাদার’খ্যাত জয়নাল হাজারীর হাত ধরে রাজনীতিতে এলেও চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছিরের মাধ্যমে উত্থান হয় নিজাম হাজারীর। ২০০১ সালে যৌথ বাহিনীর অভিযানের মুখে জয়নাল হাজারী সাম্রাজ্য ছেড়ে পালিয়ে যান। পরে ২০০৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এলে আওয়ামী রাজনীতির হাল ধরতে চট্টগ্রাম থেকে ফেনীতে আসেন নিজাম হাজারী। তৈরি করেন নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী। কোণঠাসা করে ফেনীতে ঢুকতে দেননি জয়নাল হাজারীকেও।
নিজাম হাজারী ২০১১ সালের ১৮ জানুয়ারির পৌরসভা নির্বাচনে কারচুপির মধ্য দিয়ে ফেনী পৌর মেয়র হন বলে অভিযোগ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের। আর দলের নেতা-কর্মীরা জানান, ২০১২ সালে জেলা রাজনীতির অঘোষিত অভিভাবক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রটোকল অফিসার আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমের হাত ধরে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়ে যান নিজাম। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রথম সংসদ সদস্য হন তিনি। পরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের হাত ধরে পরপর দুবার (২০১৮ ও ২০২৪) সংসদ সদস্য হন নিজাম।
হাজার কোটি টাকার সম্পদ
বিলাসবহুল বাগানবাড়ি, খামারবাড়ি ছাড়াও নিজাম হাজারীর অনেক জায়গাজমি ও বাড়ি রয়েছে মাস্টারপাড়ায়। স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যমতে,৬টি সাততলা এবং ১০টি একতলা বাড়ির পাশাপাশি ২০০ বিঘা জমি রয়েছে তাঁর। এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রামে তাঁর নামে-বেনামে মার্কেট ও ফ্ল্যাট রয়েছে বলে শোনা যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মাস্টারপাড়ার বাড়ি থেকে ৬০০ মিটার দক্ষিণে অন্যদের প্রায় ৩৫০ শতাংশ জায়গা দখল করে বিলাসবহুল বাগানবাড়ি গড়ে তোলেন নিজাম হাজারী। বাগানবাড়িতে ছিল হেলিপ্যাড, টেনিস কোর্ট, লেক, পুল, থিয়েটার, সুইমিংপুল। আঙিনায় সুসজ্জিত বাগানের গাছ ও ঘাস এবং বাসার আসবাব বিভিন্ন দেশ থেকে আনা হয় বলে প্রচার ছিল। এই বাগানবাড়ির বাজারমূল্য হিসাব করলে প্রায় হাজার কোটি টাকা।
বিলাসবহুল বাগানবাড়ির উত্তর পাশে ৭৮ শতাংশ জমিতে গড়ে তোলেন খামারবাড়ি। সেখানে একটি পুকুরের চারপাশে গরু, ছাগল, মহিষ ও মুরগির খামার। খামারবাড়িতে প্রবেশের দক্ষিণ পাশে একটি ঘরে লেখা রয়েছে ‘তালতলা বাগান বাড়ী’। তবে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর হাজার কোটি টাকার বিলাসবহুল সাম্রাজ্য পুড়িয়ে দেয় ছাত্র-জনতা।
‘১০ খলিফা’ ও ক্যাডার বাহিনী
নিজাম হাজারী মূলত ফেনীর ৬ উপজেলায় অপরাধের সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন বিশ্বস্ত ১০ সহযোগী ও নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী দিয়ে। স্থানীয়দের কাছে ওই ১০ সহযোগী নিজাম হাজারীর ‘১০ খলিফা’ নামে পরিচিত ছিল।
জেলার একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ওই খলিফাদের কারণে সব সময় দলে কোণঠাসা হয়ে থাকতেন তাঁরা। ওই ১০ সহযোগীকে দিয়ে বালুমহাল দখল, টেন্ডার-বাণিজ্য, সম্পত্তি দখল, অর্থ আত্মসাৎ, চাঁদাবাজির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেন নিজাম। এ ছাড়া বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের দমন-পীড়নের পাশাপাশি দলীয় নেতা-কর্মীদেরও নির্যাতন; এমনকি হত্যা করার অভিযোগ রয়েছে নিজামের বিরুদ্ধে।
দখল, টেন্ডারবাজি
একাধিক ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), স্বাস্থ্য, জনস্বাস্থ্য, গণপূর্ত, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতেন নিজাম হাজারীর খলিফারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার বলেন, নিজাম হাজারী কাজের বরাদ্দভেদে ৭ শতাংশ, ১০ শতাংশ ও ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ধরে অগ্রিম টাকা নিতেন খলিফাদের মাধ্যমে।
স্থানীয় ও ঠিকাদার সূত্রে জানা গেছে, নিজাম হাজারীর বিশ্বস্ত ‘ডান হাত’ হিসেবে পরিচিত ফেনী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল। তাঁর মাধ্যমে গত ১৫ বছর এলজিইডির সব কাজ নিয়ন্ত্রণ করতেন। এ ছাড়া জেলার কোন দপ্তরের কাজ কে করবে, সেটিও তিনি শুসেনের মাধ্যমে বণ্টন করতেন।
পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজীকে দিয়ে ফেনী পৌর এলাকার ১৮টি ওয়ার্ডের রাজনীতি ও কাউন্সিলরদের নিয়ন্ত্রণ করতেন নিজাম হাজারী। জমি দখল, উচ্ছেদ ও চাঁদাবাজির দায়িত্ব ছিল তাঁর চাচাতো ভাই হিসেবে পরিচিত জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফুর রহমান খোকন হাজারীর। সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের টেন্ডারের ভাগ, পরিবহন ও শহরের চাঁদার টাকা সংগ্রহ করতেন জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরীফ উল্যাহ ওরফে শরীফ হাজারী। আদায় করা টাকা প্রতিদিন শহরের ট্রাংক রোডের একটি ব্যাংকের শাখায় জমা করতেন শরিফ হাজারী। সড়ক ও জনপথ বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্বাস্থ্য বিভাগের টেন্ডার-বাণিজ্য, দরপত্র দাখিলসহ কাজের নির্দিষ্ট কমিশনের টাকা আদায় করতেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুল জলিল আদর। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও গণপূর্ত বিভাগের সব ঠিকাদারি কাজ ভাগ-বাঁটোয়ারা ও চাঁদা তুলতেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শম্ভু বৈষ্ণব। আর সীমান্তে চোরাচালানি পণ্য, অস্ত্র ও মাদক নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বৈধ-অবৈধ বালুমহাল দখলবাজির দায়িত্ব ছিল ছাগলনাইয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেজবাউল হায়দার চৌধুরী ওরফে সোহেল চৌধুরীর।
সোনাগাজী উপজেলায় চরাঞ্চলের জমি দখল করে অবৈধভাবে মাছ চাষ করে নিজাম হাজারীকে ভাগ দেওয়া এবং উপজেলার বিভিন্ন প্রকল্পের টেন্ডার-বাণিজ্যের টাকা পৌঁছে দিতেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম খোকন।
ফুলগাজী সীমান্তের চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করে চাঁদা নিজাম হাজারীর কাছে জমা দিতেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন মজুমদার ওরফে লাল হারুন। দাগনভূঞা উপজেলায় টেন্ডার-বাণিজ্য, হাটবাজারের চাঁদা তুলে হাজারীর কাছে পৌঁছে দিতেন জেলা যুবলীগের সভাপতি ও দাগনভূঞা উপজেলা চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন।
এ ছাড়া জেলা যুবলীগের সহসম্পাদক হুমায়ুন কবীর ভূইয়ার মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য বিভাগের সব টেন্ডার-বাণিজ্য নিজাম হাজারী নিয়ন্ত্রণ করতেন। ফাজিলপুরে বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ করতেন ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবুল হক রিপনের মাধ্যমে। জেলখানা থেকে সোনাগাজী উপজেলার বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ করতেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নুসরাত হত্যাকাণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত আসামি রুহুল আমিনের মাধ্যমে।
জেলার মাদক ও অবৈধ অস্ত্র ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করতেন জেলা যুবলীগের সহসভাপতি জিয়াউল আলম মিস্টার। জেলা পরিষদের সব কাজ নিয়ন্ত্রণ করতেন সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নুরুল আফসারের মাধ্যমে। বিলোনিয়া সীমান্তের চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করতেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সাজেল।
ফারুক হোসেন নামের এক ঠিকাদার জানান, সড়কের ২ কোটি ৭৮ লাখ টাকার একটি কাজের জন্য নিজাম হাজারীকে অগ্রিম ৪০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন তিনি। সরকার পতনের পর এখন তিনিও পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফেনী পৌরসভার ডাক্তার পাড়ার এক বাসিন্দা জানান, পৌরসভার মাধ্যমে চাঁদা নেওয়ার বুথ খুলেছিলেন নিজাম হাজারী।
শহরের রাজাজি দিঘির পাড়ে অবৈধভাবে প্রায় ৩০০ দোকান নির্মাণ করে প্রতিদিন লাখ টাকা চাঁদা তুলতেন পৌর যুবলীগ নেতা রুবেল হাজারী।
দলের নেতাদেরও খুন, নির্যাতন
নিজাম হাজারীর সিদ্ধান্তের বাইরে যাঁরা গেছেন, তাঁরাই হামলা, মামলাসহ নানা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। নিজের প্রভাব বিস্তারে বাধা হওয়ায় ২০১৪ সালের ২০ মে প্রকাশ্যে ফেনী শহরের একাডেমি রোডে ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হক একরামকে গুলি করে, কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।
একরামের স্বজনেরা জানান, হত্যার হুকুমদাতা হিসেবে নিজামের নাম উঠে এলেও অদৃশ্য শক্তির ইশারায় সেই মামলা থেকে তাঁর নাম বাদ দেওয়া হয়।
শুধু একরাম নন, ধর্মপুরের যুবলীগ নেতা রেজাউল করিম, বালিগাঁওয়ের জয়নাল মেম্বার, দাগনভূঞা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ফখরুল, ফেনী পৌর ছাত্রলীগ নেতা ইফতি, ফেনী পৌর এলাকায় শাহ জালাল নামের এক গরু ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যাসহ দলের ১৪ জনকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে নিজাম হাজারীর ক্যাডারদের বিরুদ্ধে।
নামকরণ
ফেনী সদর উপজেলার বালিগাঁও ইউনিয়নের ডোমরা ও সুন্দরপুর মৌজার প্রায় ২৫ একর জায়গা দখল করে নিজ নামে প্রস্তাবিত কারিগরি মহাবিদ্যালয়, স্ত্রী নুরজাহান বেগমের নামে মসজিদ ও প্রয়াত বাবা কমিশনার জয়নাল আবেদীন এবং মা দেল আফরোজ বেগমের নামে একটি নূরানী মাদরাসা কমপ্লেক্স স্থাপনের কাজ শুরু করেন নিজাম হাজারী।
এসব ভূমির মালিকদের অভিযোগ, ওই দখলে নেতৃত্ব দিয়েছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল, বালিগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সেলিম মুহুরি ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি জিয়া উদ্দিন বাবলু।
১০ মামলার আসামি
গত ৪ আগস্ট ফেনীর মহিপালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি চালায় নিজাম হাজারীর ক্যাডার বাহিনী। এতে ৭ জন নিহত হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌর আওয়ামী লীগের এক শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, ‘নিজাম হাজারীকে বারবার বলেছি, মহিপালে আন্দোলনরতরা কিছুক্ষণ পর চলে যাবে। হামলা করার দরকার নেই। কথা অগ্রাহ্য করে শুসেনকে দায়িত্ব দেন নিজাম হাজারী।’
ফেনীর পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, নিজাম হাজারীর বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৮টি হত্যা মামলাসহ ১০টি মামলা হয়েছে। তাঁকে ধরতে সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

নিজাম হাজারী। ফেনীর রাজনীতিতে এক যুগের বেশি সময়ের দাপুটে চরিত্র। রাজনৈতিক প্রভাব আর ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে হয়েছেন কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক। এসব সম্পদ করেছেন চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, বালুমহাল, জমি দখলসহ নানা উপায়ে। তবে রাজনৈতিক বিরোধী পক্ষ বলতে কাউকেই দাঁড়াতে দেননি; এমনকি নিজ দলের নেতাদেরও হত্যা করেছেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, একসময় ফেনীর ‘গডফাদার’খ্যাত জয়নাল হাজারীর হাত ধরে রাজনীতিতে এলেও চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছিরের মাধ্যমে উত্থান হয় নিজাম হাজারীর। ২০০১ সালে যৌথ বাহিনীর অভিযানের মুখে জয়নাল হাজারী সাম্রাজ্য ছেড়ে পালিয়ে যান। পরে ২০০৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এলে আওয়ামী রাজনীতির হাল ধরতে চট্টগ্রাম থেকে ফেনীতে আসেন নিজাম হাজারী। তৈরি করেন নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী। কোণঠাসা করে ফেনীতে ঢুকতে দেননি জয়নাল হাজারীকেও।
নিজাম হাজারী ২০১১ সালের ১৮ জানুয়ারির পৌরসভা নির্বাচনে কারচুপির মধ্য দিয়ে ফেনী পৌর মেয়র হন বলে অভিযোগ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের। আর দলের নেতা-কর্মীরা জানান, ২০১২ সালে জেলা রাজনীতির অঘোষিত অভিভাবক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রটোকল অফিসার আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমের হাত ধরে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়ে যান নিজাম। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রথম সংসদ সদস্য হন তিনি। পরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের হাত ধরে পরপর দুবার (২০১৮ ও ২০২৪) সংসদ সদস্য হন নিজাম।
হাজার কোটি টাকার সম্পদ
বিলাসবহুল বাগানবাড়ি, খামারবাড়ি ছাড়াও নিজাম হাজারীর অনেক জায়গাজমি ও বাড়ি রয়েছে মাস্টারপাড়ায়। স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যমতে,৬টি সাততলা এবং ১০টি একতলা বাড়ির পাশাপাশি ২০০ বিঘা জমি রয়েছে তাঁর। এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রামে তাঁর নামে-বেনামে মার্কেট ও ফ্ল্যাট রয়েছে বলে শোনা যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মাস্টারপাড়ার বাড়ি থেকে ৬০০ মিটার দক্ষিণে অন্যদের প্রায় ৩৫০ শতাংশ জায়গা দখল করে বিলাসবহুল বাগানবাড়ি গড়ে তোলেন নিজাম হাজারী। বাগানবাড়িতে ছিল হেলিপ্যাড, টেনিস কোর্ট, লেক, পুল, থিয়েটার, সুইমিংপুল। আঙিনায় সুসজ্জিত বাগানের গাছ ও ঘাস এবং বাসার আসবাব বিভিন্ন দেশ থেকে আনা হয় বলে প্রচার ছিল। এই বাগানবাড়ির বাজারমূল্য হিসাব করলে প্রায় হাজার কোটি টাকা।
বিলাসবহুল বাগানবাড়ির উত্তর পাশে ৭৮ শতাংশ জমিতে গড়ে তোলেন খামারবাড়ি। সেখানে একটি পুকুরের চারপাশে গরু, ছাগল, মহিষ ও মুরগির খামার। খামারবাড়িতে প্রবেশের দক্ষিণ পাশে একটি ঘরে লেখা রয়েছে ‘তালতলা বাগান বাড়ী’। তবে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর হাজার কোটি টাকার বিলাসবহুল সাম্রাজ্য পুড়িয়ে দেয় ছাত্র-জনতা।
‘১০ খলিফা’ ও ক্যাডার বাহিনী
নিজাম হাজারী মূলত ফেনীর ৬ উপজেলায় অপরাধের সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন বিশ্বস্ত ১০ সহযোগী ও নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী দিয়ে। স্থানীয়দের কাছে ওই ১০ সহযোগী নিজাম হাজারীর ‘১০ খলিফা’ নামে পরিচিত ছিল।
জেলার একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ওই খলিফাদের কারণে সব সময় দলে কোণঠাসা হয়ে থাকতেন তাঁরা। ওই ১০ সহযোগীকে দিয়ে বালুমহাল দখল, টেন্ডার-বাণিজ্য, সম্পত্তি দখল, অর্থ আত্মসাৎ, চাঁদাবাজির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেন নিজাম। এ ছাড়া বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের দমন-পীড়নের পাশাপাশি দলীয় নেতা-কর্মীদেরও নির্যাতন; এমনকি হত্যা করার অভিযোগ রয়েছে নিজামের বিরুদ্ধে।
দখল, টেন্ডারবাজি
একাধিক ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), স্বাস্থ্য, জনস্বাস্থ্য, গণপূর্ত, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতেন নিজাম হাজারীর খলিফারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার বলেন, নিজাম হাজারী কাজের বরাদ্দভেদে ৭ শতাংশ, ১০ শতাংশ ও ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ধরে অগ্রিম টাকা নিতেন খলিফাদের মাধ্যমে।
স্থানীয় ও ঠিকাদার সূত্রে জানা গেছে, নিজাম হাজারীর বিশ্বস্ত ‘ডান হাত’ হিসেবে পরিচিত ফেনী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল। তাঁর মাধ্যমে গত ১৫ বছর এলজিইডির সব কাজ নিয়ন্ত্রণ করতেন। এ ছাড়া জেলার কোন দপ্তরের কাজ কে করবে, সেটিও তিনি শুসেনের মাধ্যমে বণ্টন করতেন।
পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজীকে দিয়ে ফেনী পৌর এলাকার ১৮টি ওয়ার্ডের রাজনীতি ও কাউন্সিলরদের নিয়ন্ত্রণ করতেন নিজাম হাজারী। জমি দখল, উচ্ছেদ ও চাঁদাবাজির দায়িত্ব ছিল তাঁর চাচাতো ভাই হিসেবে পরিচিত জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফুর রহমান খোকন হাজারীর। সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের টেন্ডারের ভাগ, পরিবহন ও শহরের চাঁদার টাকা সংগ্রহ করতেন জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরীফ উল্যাহ ওরফে শরীফ হাজারী। আদায় করা টাকা প্রতিদিন শহরের ট্রাংক রোডের একটি ব্যাংকের শাখায় জমা করতেন শরিফ হাজারী। সড়ক ও জনপথ বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্বাস্থ্য বিভাগের টেন্ডার-বাণিজ্য, দরপত্র দাখিলসহ কাজের নির্দিষ্ট কমিশনের টাকা আদায় করতেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুল জলিল আদর। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও গণপূর্ত বিভাগের সব ঠিকাদারি কাজ ভাগ-বাঁটোয়ারা ও চাঁদা তুলতেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শম্ভু বৈষ্ণব। আর সীমান্তে চোরাচালানি পণ্য, অস্ত্র ও মাদক নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বৈধ-অবৈধ বালুমহাল দখলবাজির দায়িত্ব ছিল ছাগলনাইয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেজবাউল হায়দার চৌধুরী ওরফে সোহেল চৌধুরীর।
সোনাগাজী উপজেলায় চরাঞ্চলের জমি দখল করে অবৈধভাবে মাছ চাষ করে নিজাম হাজারীকে ভাগ দেওয়া এবং উপজেলার বিভিন্ন প্রকল্পের টেন্ডার-বাণিজ্যের টাকা পৌঁছে দিতেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম খোকন।
ফুলগাজী সীমান্তের চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করে চাঁদা নিজাম হাজারীর কাছে জমা দিতেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন মজুমদার ওরফে লাল হারুন। দাগনভূঞা উপজেলায় টেন্ডার-বাণিজ্য, হাটবাজারের চাঁদা তুলে হাজারীর কাছে পৌঁছে দিতেন জেলা যুবলীগের সভাপতি ও দাগনভূঞা উপজেলা চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন।
এ ছাড়া জেলা যুবলীগের সহসম্পাদক হুমায়ুন কবীর ভূইয়ার মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য বিভাগের সব টেন্ডার-বাণিজ্য নিজাম হাজারী নিয়ন্ত্রণ করতেন। ফাজিলপুরে বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ করতেন ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবুল হক রিপনের মাধ্যমে। জেলখানা থেকে সোনাগাজী উপজেলার বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ করতেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নুসরাত হত্যাকাণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত আসামি রুহুল আমিনের মাধ্যমে।
জেলার মাদক ও অবৈধ অস্ত্র ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করতেন জেলা যুবলীগের সহসভাপতি জিয়াউল আলম মিস্টার। জেলা পরিষদের সব কাজ নিয়ন্ত্রণ করতেন সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নুরুল আফসারের মাধ্যমে। বিলোনিয়া সীমান্তের চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করতেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সাজেল।
ফারুক হোসেন নামের এক ঠিকাদার জানান, সড়কের ২ কোটি ৭৮ লাখ টাকার একটি কাজের জন্য নিজাম হাজারীকে অগ্রিম ৪০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন তিনি। সরকার পতনের পর এখন তিনিও পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফেনী পৌরসভার ডাক্তার পাড়ার এক বাসিন্দা জানান, পৌরসভার মাধ্যমে চাঁদা নেওয়ার বুথ খুলেছিলেন নিজাম হাজারী।
শহরের রাজাজি দিঘির পাড়ে অবৈধভাবে প্রায় ৩০০ দোকান নির্মাণ করে প্রতিদিন লাখ টাকা চাঁদা তুলতেন পৌর যুবলীগ নেতা রুবেল হাজারী।
দলের নেতাদেরও খুন, নির্যাতন
নিজাম হাজারীর সিদ্ধান্তের বাইরে যাঁরা গেছেন, তাঁরাই হামলা, মামলাসহ নানা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। নিজের প্রভাব বিস্তারে বাধা হওয়ায় ২০১৪ সালের ২০ মে প্রকাশ্যে ফেনী শহরের একাডেমি রোডে ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হক একরামকে গুলি করে, কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।
একরামের স্বজনেরা জানান, হত্যার হুকুমদাতা হিসেবে নিজামের নাম উঠে এলেও অদৃশ্য শক্তির ইশারায় সেই মামলা থেকে তাঁর নাম বাদ দেওয়া হয়।
শুধু একরাম নন, ধর্মপুরের যুবলীগ নেতা রেজাউল করিম, বালিগাঁওয়ের জয়নাল মেম্বার, দাগনভূঞা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ফখরুল, ফেনী পৌর ছাত্রলীগ নেতা ইফতি, ফেনী পৌর এলাকায় শাহ জালাল নামের এক গরু ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যাসহ দলের ১৪ জনকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে নিজাম হাজারীর ক্যাডারদের বিরুদ্ধে।
নামকরণ
ফেনী সদর উপজেলার বালিগাঁও ইউনিয়নের ডোমরা ও সুন্দরপুর মৌজার প্রায় ২৫ একর জায়গা দখল করে নিজ নামে প্রস্তাবিত কারিগরি মহাবিদ্যালয়, স্ত্রী নুরজাহান বেগমের নামে মসজিদ ও প্রয়াত বাবা কমিশনার জয়নাল আবেদীন এবং মা দেল আফরোজ বেগমের নামে একটি নূরানী মাদরাসা কমপ্লেক্স স্থাপনের কাজ শুরু করেন নিজাম হাজারী।
এসব ভূমির মালিকদের অভিযোগ, ওই দখলে নেতৃত্ব দিয়েছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল, বালিগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সেলিম মুহুরি ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি জিয়া উদ্দিন বাবলু।
১০ মামলার আসামি
গত ৪ আগস্ট ফেনীর মহিপালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি চালায় নিজাম হাজারীর ক্যাডার বাহিনী। এতে ৭ জন নিহত হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌর আওয়ামী লীগের এক শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, ‘নিজাম হাজারীকে বারবার বলেছি, মহিপালে আন্দোলনরতরা কিছুক্ষণ পর চলে যাবে। হামলা করার দরকার নেই। কথা অগ্রাহ্য করে শুসেনকে দায়িত্ব দেন নিজাম হাজারী।’
ফেনীর পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, নিজাম হাজারীর বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৮টি হত্যা মামলাসহ ১০টি মামলা হয়েছে। তাঁকে ধরতে সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

নিহত ব্যক্তির বাবা দুলাল মিয়া বলেন, ‘ঠিকাদার রফিকের অধীনে মাদ্রাসা ভবনের নির্মাণকাজ করছিল আমার ছেলেসহ ছয়জন। কাজের সময় হঠাৎ বাঁশের মাচা ভেঙে পাঁচতলা ভবন থেকে নিচে পড়ে যায় রাসেল। সঙ্গে থাকা অন্য ব্যক্তিরা তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।’
১০ মিনিট আগে
লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জের বাঁধের পোল এলাকার একটি কবরস্থান থেকে পাঁচটি রাইফেল ও একটি এলজি উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার সকালে চন্দ্রগঞ্জ থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে এসব অস্ত্র উদ্ধার করে। তবে কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
৩৮ মিনিট আগে
যশোরে মধ্যরাতে তানভীর হত্যার ঘটনায় দুই যুবককে আটক করেছে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ। একই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত একটি চাকু। মধ্যরাতে আনসার ক্যাম্প এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদেরকে আটক করা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ও হাটহাজারী ইটভাটা সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. এমরান চৌধুরী (৩৮) নিহত হয়েছেন। শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের চারিয়া বুড়িপুকুরপাড় মসজিদ-সংলগ্ন হাটহাজারী-নাজিরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
৩ ঘণ্টা আগেশ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

গাজীপুরের শ্রীপুরে বহুতল ভবনে নির্মাণকাজ করার সময় পাঁচতলা থেকে পড়ে মো. রাসেল নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে গতকাল শনিবার বিকেলে পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বেড়াইদেরচালা গ্রামের জামিয়া আহমাদিয়া এতিমখানা মাদ্রাসায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত নির্মাণশ্রমিক মো. রাসেল মিয়া (২৫) কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার শালুয়াদী গ্রামের মো. দুলাল মিয়ার ছেলে। তিনি শ্রীপুর পৌরসভার মাওনা চৌরাস্তা এলাকার ২ নম্বর সিঅ্যান্ডবি এলাকায় ভাড়া থেকে নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
নিহত ব্যক্তির বাবা দুলাল মিয়া বলেন, ‘ঠিকাদার রফিকের অধীনে মাদ্রাসা ভবনের নির্মাণকাজ করছিল আমার ছেলেসহ ছয়জন। কাজের সময় হঠাৎ বাঁশের মাচা ভেঙে পাঁচতলা ভবন থেকে নিচে পড়ে যায় রাসেল। সঙ্গে থাকা অন্য ব্যক্তিরা তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।’
ঠিকাদার মো. রফিক বলেন, ‘বহুতল ভবনের নির্মাণকাজ আমার তত্ত্বাবধানে হচ্ছে। ছয়জন নির্মাণশ্রমিক কাজ করছিল। হঠাৎ একজন মাচা ভেঙে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হয়। হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি। পরে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।’
জামিয়া আহমাদিয়া এতিমখানা মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি হুসাইন আহমাদ বলেন, কাজ করার সময় একজন শ্রমিক নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। খবর শুনে ছাত্র-শিক্ষকেরা এগিয়ে যান। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রবিউল ইসলাম মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ইতিমধ্যে নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা থানায় এসেছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যোগাযোগ করা হয়েছে। সেখানে ময়নাতদন্তের জন্য বলা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।

গাজীপুরের শ্রীপুরে বহুতল ভবনে নির্মাণকাজ করার সময় পাঁচতলা থেকে পড়ে মো. রাসেল নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে গতকাল শনিবার বিকেলে পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বেড়াইদেরচালা গ্রামের জামিয়া আহমাদিয়া এতিমখানা মাদ্রাসায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত নির্মাণশ্রমিক মো. রাসেল মিয়া (২৫) কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার শালুয়াদী গ্রামের মো. দুলাল মিয়ার ছেলে। তিনি শ্রীপুর পৌরসভার মাওনা চৌরাস্তা এলাকার ২ নম্বর সিঅ্যান্ডবি এলাকায় ভাড়া থেকে নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
নিহত ব্যক্তির বাবা দুলাল মিয়া বলেন, ‘ঠিকাদার রফিকের অধীনে মাদ্রাসা ভবনের নির্মাণকাজ করছিল আমার ছেলেসহ ছয়জন। কাজের সময় হঠাৎ বাঁশের মাচা ভেঙে পাঁচতলা ভবন থেকে নিচে পড়ে যায় রাসেল। সঙ্গে থাকা অন্য ব্যক্তিরা তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।’
ঠিকাদার মো. রফিক বলেন, ‘বহুতল ভবনের নির্মাণকাজ আমার তত্ত্বাবধানে হচ্ছে। ছয়জন নির্মাণশ্রমিক কাজ করছিল। হঠাৎ একজন মাচা ভেঙে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হয়। হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি। পরে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।’
জামিয়া আহমাদিয়া এতিমখানা মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি হুসাইন আহমাদ বলেন, কাজ করার সময় একজন শ্রমিক নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। খবর শুনে ছাত্র-শিক্ষকেরা এগিয়ে যান। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রবিউল ইসলাম মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ইতিমধ্যে নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা থানায় এসেছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যোগাযোগ করা হয়েছে। সেখানে ময়নাতদন্তের জন্য বলা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।

নিজাম হাজারী। ফেনীর রাজনীতিতে এক যুগের বেশি সময়ের দাপুটে চরিত্র। রাজনৈতিক প্রভাব আর ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে হয়েছেন কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক। এসব সম্পদ করেছেন চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, বালুমহাল, জমি দখলসহ নানা উপায়ে। তবে রাজনৈতিক বিরোধী পক্ষ বলতে কাউকেই দাঁড়াতে দেননি; এমনকি নিজ দলের ন
১২ নভেম্বর ২০২৪
লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জের বাঁধের পোল এলাকার একটি কবরস্থান থেকে পাঁচটি রাইফেল ও একটি এলজি উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার সকালে চন্দ্রগঞ্জ থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে এসব অস্ত্র উদ্ধার করে। তবে কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
৩৮ মিনিট আগে
যশোরে মধ্যরাতে তানভীর হত্যার ঘটনায় দুই যুবককে আটক করেছে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ। একই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত একটি চাকু। মধ্যরাতে আনসার ক্যাম্প এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদেরকে আটক করা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ও হাটহাজারী ইটভাটা সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. এমরান চৌধুরী (৩৮) নিহত হয়েছেন। শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের চারিয়া বুড়িপুকুরপাড় মসজিদ-সংলগ্ন হাটহাজারী-নাজিরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
৩ ঘণ্টা আগেলক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জের বাঁধের পোল এলাকার একটি কবরস্থান থেকে পাঁচটি রাইফেল ও একটি এলজি উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার সকালে চন্দ্রগঞ্জ থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে এসব অস্ত্র উদ্ধার করে। তবে কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশের ধারণা, অস্ত্র ব্যবসায়ীরা এগুলো বিক্রির উদ্দেশ্যে চন্দ্রগঞ্জ-বেগমগঞ্জ সীমান্তসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছিল। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা অস্ত্র ফেলে পালিয়ে যায়।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের তথ্যমতে, এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র অস্ত্র কেনাবেচা করছিল। সম্প্রতি চন্দ্রগঞ্জ পশ্চিম বাজারে একটি অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পায় পুলিশ। সেখানে ডিবি পুলিশের অভিযানে একটি পিস্তল ও বিপুল পরিমাণ অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় এবারের অভিযান। তবে পুলিশ অভিযানে গেলে সন্ত্রাসীরা অস্ত্রগুলো কবরস্থানে রেখে পালিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে অস্ত্রগুলো জব্দ করা হয়।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ফয়েজুল আজীম নোমান বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি রাইফেল ও একটি এলজি উদ্ধার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। অস্ত্রগুলো একেবারে নতুন। এই ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’

লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জের বাঁধের পোল এলাকার একটি কবরস্থান থেকে পাঁচটি রাইফেল ও একটি এলজি উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার সকালে চন্দ্রগঞ্জ থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে এসব অস্ত্র উদ্ধার করে। তবে কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশের ধারণা, অস্ত্র ব্যবসায়ীরা এগুলো বিক্রির উদ্দেশ্যে চন্দ্রগঞ্জ-বেগমগঞ্জ সীমান্তসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছিল। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা অস্ত্র ফেলে পালিয়ে যায়।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের তথ্যমতে, এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র অস্ত্র কেনাবেচা করছিল। সম্প্রতি চন্দ্রগঞ্জ পশ্চিম বাজারে একটি অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পায় পুলিশ। সেখানে ডিবি পুলিশের অভিযানে একটি পিস্তল ও বিপুল পরিমাণ অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় এবারের অভিযান। তবে পুলিশ অভিযানে গেলে সন্ত্রাসীরা অস্ত্রগুলো কবরস্থানে রেখে পালিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে অস্ত্রগুলো জব্দ করা হয়।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ফয়েজুল আজীম নোমান বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি রাইফেল ও একটি এলজি উদ্ধার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। অস্ত্রগুলো একেবারে নতুন। এই ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’

নিজাম হাজারী। ফেনীর রাজনীতিতে এক যুগের বেশি সময়ের দাপুটে চরিত্র। রাজনৈতিক প্রভাব আর ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে হয়েছেন কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক। এসব সম্পদ করেছেন চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, বালুমহাল, জমি দখলসহ নানা উপায়ে। তবে রাজনৈতিক বিরোধী পক্ষ বলতে কাউকেই দাঁড়াতে দেননি; এমনকি নিজ দলের ন
১২ নভেম্বর ২০২৪
নিহত ব্যক্তির বাবা দুলাল মিয়া বলেন, ‘ঠিকাদার রফিকের অধীনে মাদ্রাসা ভবনের নির্মাণকাজ করছিল আমার ছেলেসহ ছয়জন। কাজের সময় হঠাৎ বাঁশের মাচা ভেঙে পাঁচতলা ভবন থেকে নিচে পড়ে যায় রাসেল। সঙ্গে থাকা অন্য ব্যক্তিরা তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।’
১০ মিনিট আগে
যশোরে মধ্যরাতে তানভীর হত্যার ঘটনায় দুই যুবককে আটক করেছে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ। একই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত একটি চাকু। মধ্যরাতে আনসার ক্যাম্প এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদেরকে আটক করা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ও হাটহাজারী ইটভাটা সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. এমরান চৌধুরী (৩৮) নিহত হয়েছেন। শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের চারিয়া বুড়িপুকুরপাড় মসজিদ-সংলগ্ন হাটহাজারী-নাজিরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
৩ ঘণ্টা আগেযশোর প্রতিনিধি

যশোরে মধ্যরাতে তানভীর হত্যার ঘটনায় দুই যুবককে আটক করেছে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ। একই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত একটি চাকু। মধ্যরাতে আনসার ক্যাম্প এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মাদক বেচাকেনা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে খুন হয়েছেন তানভীর। এর আগে শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে শহরের বেজপাড়া তালতলা এলাকায় রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তার পাশ থেকে উদ্ধার করা হয় তানভীরকে। পরে তাঁকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত তানভীর শংকরপুর হাজারিগেট এলাকার মিন্টুর ছেলে।
যশোর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী বাবুল হোসেন জানান, ‘ঘটনার পর রাতেই কোতোয়ালি থানা-পুলিশ ও ডিবি পুলিশের টিম অভিযানে নামে। তারা রক্তের ছাপ পর্যবেক্ষণ করে আনসার ক্যাম্প এলাকার সোনা মিয়াকে আটক করে। পরে তাঁর বাড়ির ছাদ থেকে একটি বার্মিজ চাকু উদ্ধার করে পুলিশ। আটক করা হয় একই এলাকার সাক্ষরকে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
এর আগে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে যশোর শহরের শংকরপুর বেলের মাঠ এলাকায় যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে পাঁচটি বোমা ও একটি চাকুসহ নাঈম ও সাজু নামের দুই যুবককে আটক করে। এ সময় তানভীর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়েছিলেন। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে সড়কের পাশে পড়ে থাকতে দেখে যশোর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে কোতোয়ালি মডেল থানা-পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে তাঁর পকেট তল্লাশি করে ৬১টি ইয়াবা উদ্ধার করে।

যশোরে মধ্যরাতে তানভীর হত্যার ঘটনায় দুই যুবককে আটক করেছে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ। একই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত একটি চাকু। মধ্যরাতে আনসার ক্যাম্প এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মাদক বেচাকেনা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে খুন হয়েছেন তানভীর। এর আগে শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে শহরের বেজপাড়া তালতলা এলাকায় রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তার পাশ থেকে উদ্ধার করা হয় তানভীরকে। পরে তাঁকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত তানভীর শংকরপুর হাজারিগেট এলাকার মিন্টুর ছেলে।
যশোর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী বাবুল হোসেন জানান, ‘ঘটনার পর রাতেই কোতোয়ালি থানা-পুলিশ ও ডিবি পুলিশের টিম অভিযানে নামে। তারা রক্তের ছাপ পর্যবেক্ষণ করে আনসার ক্যাম্প এলাকার সোনা মিয়াকে আটক করে। পরে তাঁর বাড়ির ছাদ থেকে একটি বার্মিজ চাকু উদ্ধার করে পুলিশ। আটক করা হয় একই এলাকার সাক্ষরকে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
এর আগে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে যশোর শহরের শংকরপুর বেলের মাঠ এলাকায় যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে পাঁচটি বোমা ও একটি চাকুসহ নাঈম ও সাজু নামের দুই যুবককে আটক করে। এ সময় তানভীর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়েছিলেন। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে সড়কের পাশে পড়ে থাকতে দেখে যশোর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে কোতোয়ালি মডেল থানা-পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে তাঁর পকেট তল্লাশি করে ৬১টি ইয়াবা উদ্ধার করে।

নিজাম হাজারী। ফেনীর রাজনীতিতে এক যুগের বেশি সময়ের দাপুটে চরিত্র। রাজনৈতিক প্রভাব আর ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে হয়েছেন কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক। এসব সম্পদ করেছেন চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, বালুমহাল, জমি দখলসহ নানা উপায়ে। তবে রাজনৈতিক বিরোধী পক্ষ বলতে কাউকেই দাঁড়াতে দেননি; এমনকি নিজ দলের ন
১২ নভেম্বর ২০২৪
নিহত ব্যক্তির বাবা দুলাল মিয়া বলেন, ‘ঠিকাদার রফিকের অধীনে মাদ্রাসা ভবনের নির্মাণকাজ করছিল আমার ছেলেসহ ছয়জন। কাজের সময় হঠাৎ বাঁশের মাচা ভেঙে পাঁচতলা ভবন থেকে নিচে পড়ে যায় রাসেল। সঙ্গে থাকা অন্য ব্যক্তিরা তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।’
১০ মিনিট আগে
লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জের বাঁধের পোল এলাকার একটি কবরস্থান থেকে পাঁচটি রাইফেল ও একটি এলজি উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার সকালে চন্দ্রগঞ্জ থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে এসব অস্ত্র উদ্ধার করে। তবে কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
৩৮ মিনিট আগে
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ও হাটহাজারী ইটভাটা সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. এমরান চৌধুরী (৩৮) নিহত হয়েছেন। শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের চারিয়া বুড়িপুকুরপাড় মসজিদ-সংলগ্ন হাটহাজারী-নাজিরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
৩ ঘণ্টা আগেহাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ও হাটহাজারী ইটভাটা সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. এমরান চৌধুরী (৩৮) নিহত হয়েছেন। শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের চারিয়া বুড়িপুকুরপাড় মসজিদ-সংলগ্ন হাটহাজারী-নাজিরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় আরিফ নামের আরও একজন গুরুতর আহত হন।
দুই সন্তানের বাবা এমরান চৌধুরী ওই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চারিয়া সিকদারপাড়া মোয়াজ্জেম বাড়ির মৃত বাদশা সারাংয়ের ছেলে।
স্থানীয় লোকজন জানায়, গভীর রাতে এমরান চৌধুরী ও তাঁর বাড়ির মুছার ছেলে আরিফ বুড়িপুকুরপাড় এলাকার একটি চায়ের দোকান থেকে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে পেছন দিক থেকে আসা বেপরোয়া গতির কাঠবোঝাই একটি চাঁদের গাড়ি তাঁদের মোটরসাইকেলে ধাক্কা দিলে দুজনই ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। মোটরসাইকেলটিও চাঁদের গাড়ির নিচে চাপা পড়ে।
আহত দুজনকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাটহাজারীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর চিকিৎসক এমরান চৌধুরীকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত আরিফকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী কামাল ও চারিয়া এলাকার আবদুল মতিন রুবেল জানান, আরিফ বর্তমানে চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ও হাটহাজারী ইটভাটা সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. এমরান চৌধুরী (৩৮) নিহত হয়েছেন। শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের চারিয়া বুড়িপুকুরপাড় মসজিদ-সংলগ্ন হাটহাজারী-নাজিরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় আরিফ নামের আরও একজন গুরুতর আহত হন।
দুই সন্তানের বাবা এমরান চৌধুরী ওই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চারিয়া সিকদারপাড়া মোয়াজ্জেম বাড়ির মৃত বাদশা সারাংয়ের ছেলে।
স্থানীয় লোকজন জানায়, গভীর রাতে এমরান চৌধুরী ও তাঁর বাড়ির মুছার ছেলে আরিফ বুড়িপুকুরপাড় এলাকার একটি চায়ের দোকান থেকে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে পেছন দিক থেকে আসা বেপরোয়া গতির কাঠবোঝাই একটি চাঁদের গাড়ি তাঁদের মোটরসাইকেলে ধাক্কা দিলে দুজনই ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। মোটরসাইকেলটিও চাঁদের গাড়ির নিচে চাপা পড়ে।
আহত দুজনকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাটহাজারীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর চিকিৎসক এমরান চৌধুরীকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত আরিফকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী কামাল ও চারিয়া এলাকার আবদুল মতিন রুবেল জানান, আরিফ বর্তমানে চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।

নিজাম হাজারী। ফেনীর রাজনীতিতে এক যুগের বেশি সময়ের দাপুটে চরিত্র। রাজনৈতিক প্রভাব আর ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে হয়েছেন কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক। এসব সম্পদ করেছেন চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, বালুমহাল, জমি দখলসহ নানা উপায়ে। তবে রাজনৈতিক বিরোধী পক্ষ বলতে কাউকেই দাঁড়াতে দেননি; এমনকি নিজ দলের ন
১২ নভেম্বর ২০২৪
নিহত ব্যক্তির বাবা দুলাল মিয়া বলেন, ‘ঠিকাদার রফিকের অধীনে মাদ্রাসা ভবনের নির্মাণকাজ করছিল আমার ছেলেসহ ছয়জন। কাজের সময় হঠাৎ বাঁশের মাচা ভেঙে পাঁচতলা ভবন থেকে নিচে পড়ে যায় রাসেল। সঙ্গে থাকা অন্য ব্যক্তিরা তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।’
১০ মিনিট আগে
লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জের বাঁধের পোল এলাকার একটি কবরস্থান থেকে পাঁচটি রাইফেল ও একটি এলজি উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার সকালে চন্দ্রগঞ্জ থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে এসব অস্ত্র উদ্ধার করে। তবে কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
৩৮ মিনিট আগে
যশোরে মধ্যরাতে তানভীর হত্যার ঘটনায় দুই যুবককে আটক করেছে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ। একই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত একটি চাকু। মধ্যরাতে আনসার ক্যাম্প এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদেরকে আটক করা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে