Ajker Patrika

মাহি ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পুলিশের মামলা

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ মার্চ ২০২৩, ১৪: ১৭
মাহি ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পুলিশের মামলা

গাজীপুরের ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা রাকিব সরকারের গাড়ির শোরুমে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে শুক্রবার (১৭ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিযোগ করেন তাঁর স্ত্রী চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। তবে স্থানীয় ইসমাইল হোসেন নামে এক ব্যক্তি দাবি করেছেন—জোরপূর্বক দখল করে তাঁর ও মামুন সরকারের জমিতে ‘সনিরাজ কার প্যালেস’ নামে শোরুম গড়েছেন রাকিব সরকার। ওই জমিতে কাজ করতে গেলে রাকিব সরকারের লোকজনই হামলা চালায়। 

এরই মধ্যে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি ও তাঁর স্বামী রাকিব সরকারের বিরুদ্ধে দুটি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। শুক্রবার (১৭ মার্চ) রাতে গাজীপুরের বাসন থানায় মামলা দুটি দায়ের হয়। 

স্বামী রাকিব সরকারের সঙ্গে নায়িকা মাহিয়া মাহি। ছবি: মাহির ফেসবুক থেকে

কোটি টাকার জমি দখল ও জমিতে কাজ করতে গেলে বাধা প্রদান ও মারধরের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন স্থানীয় ইসমাইল হোসেন। এ মামলায় মাহি ও তাঁর স্বামী রাকিব সরকারসহ ২৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। অপর মামলাটি দায়ের করেছে পুলিশ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা ও বানোয়াট প্রচারণা চালিয়ে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি দায়ের হয়। এ মামলার বাদী বাসন থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) রোকন মিয়া। এ মামলায় মাহি ও তাঁর স্বামীকে আসামি করা হয়েছে। 

গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার দেলোয়ার হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি ও তাঁর স্বামী আমাদের নিয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ করেছেন। তাঁরা পুলিশকে বিতর্কিত করার মিশনে নেমেছেন। অথচ মাহি বা তাঁর স্বামী জমিজমা সংক্রান্ত কোনো বিষয় নিয়ে আমাদের কাছে আসেননি। তাঁরা নিজেদের অপরাধ ঢাকতে পুলিশের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে এ কাজ করেছেন।’ 

বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে মামলার বাদী ইসমাইল হোসেন অভিযোগ করেন, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উত্তর পাশে তাঁর ও মামুন সরকারের মালিকানাধীন সাড়ে ৩২ শতাংশ জমি রয়েছে। চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির স্বামী, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বর্তমানে গাজীপুর মহানগরীর বাসন মেট্রো থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রাকিব সরকার প্রায় ৫ বছর ধরে জোরপূর্বক দখল করে ‘সনিরাজ কার প্যালেস’ নামে একটি গাড়ির শোরুম স্থাপন করেছেন। শুক্রবার জমির মালিক মামুন সরকার জমিতে কাজ করতে গেলে রাকিব সরকার তাঁর নিজস্ব বাহিনীর লোকজন দিয়ে জোরপূর্বক নির্মাণ সামগ্রীসহ লাখ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। ইসমাইল হোসেনের একটি রড বাইন্ডিং মেশিন ভেঙে ফেলে। এ সময় তাঁর লোকজন এসে ইসমাইল হোসেন ও তাঁর লোকজনকে মারধর করে। এতে তিনিসহ আরও ৩ জন আহত হন। 

মাহির স্বামী রাকিব সরকারের গাড়ির শোরুমে হামলার অভিযোগ উঠেছে। ছবি: মাহির ফেসবুক থেকেসংবাদ সম্মেলনে তিনি রাকিব সরকারের বিরুদ্ধে জমি দখল, মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজীসহ নানা অপকর্মের ফিরিস্তি লিখিত আকারে তুলে ধরেন। রাকিব সরকারের বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ ও অস্ত্র মামলাসহ আরও অভিযোগ রয়েছে বলে দাবি করেন ইসমাইল হোসেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি সাংবাদিকদের জানান, গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার প্রয়াত পরিবহন শ্রমিক নেতা সামসুদ্দিন সরকারের ছেলে রাকিব সরকার। তাঁর বড় ভাই সুলতান সরকার গাজীপুর জেলা পরিবহন শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক, যিনি পরিবহন সেক্টরের বড় চাঁদাবাজ ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মূল হোতা হিসেবে পরিচিত। তাঁর আরেক ভাই গাজীপুর মহানগর শ্রমিক দলের আহ্বায়ক ও বিএনপি নেতা এবং স্থানীয় ১৫ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর। রাকিব সরকার তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় ও ভাইদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় গাজীপুর মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, গার্মেন্টস ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, মাদকের স্পট পরিচালনা, জমি দখল, পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি, ডিশ ও ইন্টারনেট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করে স্থানীয় জনগণের কাছে এক আতঙ্কের নাম হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে। বর্তমানে সে এসব অপকর্মে তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে ব্যবহার করছে। 

সাংবাদিক সম্মেলনে ইসমাইল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, রাকিব সরকার ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কের কাশেম টেক্সটাইল সংলগ্ন জনৈক বাবুলের প্রায় ১০০ শতাংশ জমি, বাসন থানার মোগড়খাল এলাকায় বিধবা রহিমার মালিকানাধীন ১০ শতাংশ জমি, সদর থানার শিমুলতলী রোডে ১০ শতাংশ জমি জোড় করে দখল করে নেয়। সে বাসন থানার তেলিপাড়া এলাকার সরকার ক্যাবল ভিশন নামক ডিশ ব্যবসার ম্যানেজার আমির হামজা হত্যার প্রধান আসামি। তাঁর বিরুদ্ধে ইনতুজা আক্তার রুপা নামে এক নারীকে জোর করে ধর্ষণ করলে জয়দেবপুর থানায় মামলা হয়। রাকিব সরকারের এসব অপকর্মের বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। উক্ত মন্ত্রীগণ লিখিতভাবে সুপারিশ করার পরও পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। 

ইসমাইল হোসেন অবিলম্বে রাকিব সরকারের অত্যাচার থেকে রক্ষা করার জন্য ও জোরপূর্বক দখল করা জায়গা ফিরে পেতে স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এর আগে সকালে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির ফেসবুক পেজ থেকে অভিযোগ করা হয়, তাঁর স্বামীর গাড়ির শোরুমে হামলা করা হয়েছে। গাজীপুর মহানগরীর ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের পূর্ব পাশে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে সনিরাজ কার প্যালেস নামে তাঁর স্বামীর একটি গাড়ির শোরুম রয়েছে। স্থানীয় ইসমাইল হোসেন ও মামুন সরকার তাঁর লোকজন নিয়ে শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে। হামলাকারীরা শোরুমের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন আসবাবপত্র, দরজা জানালার কাচ এবং টেবিল চেয়ার ভাঙচুর ও শোরুমের সাইনবোর্ড খুলে নেয়। দুর্বৃত্তরা অফিস কক্ষ তছনছ করে এবং টাকা পয়সা লুট করে নিয়ে যায়। লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। 

মাহিয়া মাহি ফেসবুক পোস্টে দাবি করেন, ‘গাজীপুরের পুলিশ কমিশনার মোল্লা নজরুল দেড় কোটি টাকার বিনিময়ে আমাদের গাড়ির শোরুম দখল করে দিচ্ছে ইসমাইল ওরফে লাদেনকে।’

ফেসবুকে মাহির এই স্ট্যাটাস দেওয়া ও লাইভ করার কারণেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছে পুলিশ। ছবি: ফেসবুকশোরুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে সনিরাজ কার প্যালেস গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন আসবাবপত্র, দরজা জানালার কাঁচ এবং টেবিল চেয়ার ভাঙচুর ও শোরুমের সাইনবোর্ড খুলে নেওয়া হয়। শোরুমের অফিসকক্ষ তছনছ করে এবং টাকা পয়সা লুট করে নেয়। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।’  
 
এ বিষয়ে জিএমপির বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সানোয়ার জাহান জানান, ৯৯৯ এ খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ ছুটে যায়। সেখানে গিয়ে হামলাকারীদের কাউকে পাওয়া যায়নি। রাকিব সরকারের ২০-২৫ জন লোককে দেখেছি। শোরুমের জায়গা নিয়ে মালিকানার দ্বন্দ্বে মারামারির ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। 

উল্লেখ্য, রাকিব সরকার ও মাহিয়া মাহি ওমরা পালনের জন্য বর্তমানে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। রাকিব সরকারের পারিবারিক সূত্র জানায়, আজ শনিবার সস্ত্রীক দেশে ফিরবেন তিনি। শনিবার বিকেলে রাকিব সরকার তাঁর ওই শোরুমে সাংবাদিক সম্মেলন আহ্বান করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভৈরবে গ্যাসের লিকেজ থেকে আগুন, ১০ শিশুসহ দগ্ধ ১৫

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি ও ভৈরব সংবাদদাতা
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে ১০ শিশুসহ ১৫ জন দগ্ধ হয়েছে। এর মধ্যে ১২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের লুন্দিয়া চরপাড়া বাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্বজন ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, দগ্ধদের উদ্ধার করে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ১২ জনকে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠান। বাকি তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দোকান মালিক, লুন্দিয়া টুকচানপুর গ্রামের বাসিন্দা জহির মিয়া পুরি ও রুটি ভাজি বিক্রি শেষে সকালে ১০টার দিকে প্রতিদিনের মতো দোকান বন্ধ করে বাড়ি যান। তিনি ভুলে গ্যাস সিলিন্ডারের রেগুলেটরের সুইচ বন্ধ করেননি। দীর্ঘ সময় ধরে দোকানের ভেতর গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। পরে এক পর্যায়ে গ্যাসের বিস্ফোরণে দোকানে আগুন ধরে যায়। এসময় দোকানের সামনে থাকা পথচারী এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দগ্ধ হন।

আহতরা হলেন—হারুন মিয়া (৪০), সোহাগ মিয়া (১০), ওয়াসিবুল (১০), সামিউল (৯), আল আমিন (৮), শুভ (৮), নিরব (১৫), রাহাত (১২), ফাহিম (১০), আমিন (১০), হেকিম মিয়া (৫৫), সেরাজুল (১০), ছিদ্দিক মিয়া (৫৮), মোর্শিদ মিয়া (৫০) ও নাছির মিয়া (৪০)।

চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে স্বজনেরা জানান, আহতদের মধ্যে হারুন মিয়ার শরীরের প্রায় ৮০ শতাংশ দগ্ধ হওয়ায় তাঁর অবস্থা সংকটজনক।

প্রত্যক্ষদর্শী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘হঠাৎ রাস্তার ওপর আগুন ছড়িয়ে পড়ে। চোখের সামনে কয়েকজন মানুষ আগুনে পুড়তে দেখি। পরে জানতে পারি গ্যাস সিলিন্ডার থেকেই আগুন ছড়িয়েছে।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কিশোর কুমার ধর বলেন, ১৫ জন অগ্নিদগ্ধ রোগী হাসপাতালে আসে। একজনের শরীরের ৮০ শতাংশ এবং অন্যদের ২০–৩০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। ১২ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা, আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি যুবকের

নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি 
দুলাল মিয়া। ছবি: সংগৃহীত
দুলাল মিয়া। ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার একটি গ্রামে তৃতীয় শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গ্রেপ্তার আসামির নাম দুলাল মিয়া (২৮)। তিনি ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করে গতকাল বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। বিচারক আশরাফুল আলম আসামির জবানবন্দি নথিভুক্ত করেন। পরে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়।

নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাকছুদ আহাম্মদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আসামির জবানবন্দির বরাতে ওসি মাকছুদ আহাম্মদ জানান, গত মঙ্গলবার রাতে দুলাল মিয়া আট বছরের ওই শিশুকে ঘর থেকে ডেকে নেন। এরপর তাকে বাড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এ সময় শিশুটি চিৎকার করলে শ্বাস রোধ করে তাকে হত্যা করেন দুলাল।

মাকছুদ আহাম্মদ জানান, এদিকে ওই রাতেই শিশুকে না পেয়ে তার পরিবার খোঁজাখুঁজি শুরু করে। সে সময় সন্ধান চেয়ে মাইকে প্রচারও করা হয়। তখন দুলাল মিয়াও শিশুটির বাবার সঙ্গে খোঁজাখুঁজিতে যোগ দেন। পরদিন গত বুধবার সকালে বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত একটি ঘর থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় দুলাল মিয়া ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিয়ে পুলিশ সদস্যদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন।

জবানবন্দির বরাতে ওসি মাকছুদ আহাম্মদ বলেন, ‘লাশ উদ্ধারের সময় দুলাল মিয়ার আচরণে আমাদের সন্দেহ হয়। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপার মো. আব্দুর রউফ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আল সরকারের সঙ্গে কথা হয়। পরে বুধবার রাতে শিশুটির বাবা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে ধর্ষণ ও হত্যা মামলা করেন। মামলার পরই দ্রুত তদন্ত শুরু করে ঘটনাস্থলসংলগ্ন বিভিন্ন আলামত পর্যালোচনা শেষে ওই রাতেই দুলাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শিশুটির লাশের ময়নাতদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মামলা ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি 
পাবনার চাটমোহরে অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনের একটি মামলাকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাবনার চাটমোহরে অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনের একটি মামলাকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাবনার চাটমোহর উপজেলায় অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনের একটি মামলাকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, মামলায় নির্দোষ ব্যক্তিদের ফাঁসানো হয়েছে। পুনঃতদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদ্‌ঘাটন ও অভিযুক্তদের খালাস দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

আজ শুক্রবার সকালে চাটমোহর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের পক্ষে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন মামলার ১ নম্বর বিবাদী, ছাইকোলা ইউনিয়নের কুবড়াগাড়ি গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী সুমাইয়া খাতুন।

জানা গেছে, গত ৪ জুলাই রাত আড়াইটার দিকে কুবড়াগাড়ি গ্রামের আব্দুর রহিম (৬৫) নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। ওই সময় দুর্বৃত্তরা তাঁকে ঘর থেকে বাইরে ডেকে শরীরে দাহ্য পদার্থ ঢেলে দেয়। এতে তিনি দগ্ধ হন। প্রথমে তাঁকে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। এ ঘটনায় আব্দুর রহিমের ভাই আব্দুল আজিজ বাদী হয়ে প্রতিবেশী সাতজনকে বিবাদী করে অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনে মামলা করেন। মামলার ছয়জন জামিন পেলেও ১ নম্বর বিবাদী শফিকুল ইসলাম এখনো কারাগারে।

সংবাদ সম্মেলনে সুমাইয়া খাতুন দাবি করেন, ঘটনার দিন ওই সময়ে তাঁর স্বামী চাটমোহরে ছিলেন না। তাঁরা দুজনই সেদিন চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ছিলেন, যেখানে তাঁরা ফুটপাতে বিরিয়ানি বিক্রি করেন। তা সত্ত্বেও তাঁর স্বামীকে মামলার ১ নম্বর বিবাদী করা হয়েছে। এ ছাড়া শফিকুলের পিতা শহিদ সরদারসহ আরও দুই ভাইকে মামলায় জড়ানো হয়েছে।

সুমাইয়ার ভাষ্য, ‘আমার স্বামী গ্রামে থাকেন না। আমরা তিন সন্তান নিয়ে হাটহাজারীতেই থাকি। প্রতিপক্ষ আমাদের ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলা করেছে। প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করা হয়নি। আমরা অন্যায়ের শিকার।’ তিনি অভিযোগ করেন, মামলার তদন্তে গাফিলতি থাকায় তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে হয়রানির শিকার। তিন সন্তানসহ মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে মামলাটি পুনঃতদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করা এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান পরিবারের সদস্যরা। সেখানে শফিকুল ইসলামের পিতা শহিদ সরদার, তাঁর মা ও অন্যান্য স্বজন উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গুলশানে ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ জব্দ, গ্রেপ্তার ১

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
র‍্যাবের হাতে জব্দ হওয়া ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ। ছবি: র‍্যাব
র‍্যাবের হাতে জব্দ হওয়া ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ। ছবি: র‍্যাব

রাজধানীর গুলশানে মদের চালানসহ এক মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ ও মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত একটি পিকআপ ভ্যান জব্দ করা হয়।

আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে।

গ্রেপ্তার রবিউল ইসলাম (২১) নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ভিটি গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে।

এ বিষয়ে র‍্যাব-১-এর কর্মকর্তা মো. রাকিব হাসান বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গুলশানে অভিযান চালিয়ে ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ, মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত পিকআপ ভ্যানসহ রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে গুলশান থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত