Ajker Patrika

গাজীপুরে তৃতীয় দিনের মতো মহাসড়ক অবরোধ শ্রমিকদের, যানজট ছড়িয়েছে অলিগলিতে

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৪, ১২: ০৬
তৃতীয় দিনের মতো ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে টিঅ্যান্ডজেড গ্রুপের শ্রমিকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
তৃতীয় দিনের মতো ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে টিঅ্যান্ডজেড গ্রুপের শ্রমিকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বকেয়া বেতনের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে টিঅ্যান্ডজেড গ্রুপের শ্রমিকেরা। প্রায় ৫০ ঘণ্টা ধরে চলা এ অবরোধের কারণে মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে । এতে দুর্ভোগে পড়েছেন ঢাকা, ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াতকারীরা যাত্রীরা। পাশাপাশি ক্ষুব্ধ চালক, এলাকাবাসী ও সাধারণ মানুষ। পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন যাত্রীরা।

এদিকে শ্রমিকদের দাবি, বকেয়া পাওনা না পেলে তারা রাস্তা ছাড়বেন না। এ ছাড়া মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকায় অপর একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা অভ্যন্তরীণ একটি সড়ক অবরোধ করে রেখেছে।

গাজীপুর মহানগরীর মালেকের বাড়ি এলাকায় টিঅ্যান্ডজেড গ্রুপের শ্রমিকেরা গত শনিবার সকাল ৯টায় মহাসড়ক অবরোধ শুরু করে। আজ সোমবার সকাল দশটায় প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ অব্যাহত রেখেছে। আন্দোলনে শনিবার থেকে পর্যায়ক্রমে শ্রমিকেরা ভাগ করে অবস্থান করছে। দুই থেকে আড়াই শ শ্রমিক মহাসড়কে অবস্থান নিয়েছেন। ভিড় জমাচ্ছেন উৎসুক জনতাও।  এদিকে টিঅ্যান্ডজেড এর শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে আশপাশের ১৫-২০টি কারখানা সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে।

শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধে বিপদে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বাচ্চা কোলে নিয়ে ঢাকা থেকে ময়মনসিংহের দিকে যাচ্ছিলেন কলিম উদ্দিন। কোথায় যান জানতে চাইলে তিনি ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, সবকিছুর একটা সীমা থাকা দরকার। দেশের গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক আজ তিন দিন ধরে বন্ধ। অথচ কর্তৃপক্ষ নির্বিকার। এটা কোনোভাবেই মানা যায় না। মানুষ চলাচল করতে পারছে না। দূরপাল্লার গাড়ি চলছে না।

টানা শ্রমিক অবরোধের ফলে কার্যত অচল হয়ে গেছে গাজীপুর। মহাসড়কের যানজট রাতে বিভিন্ন বিকল্প পথে চলাচল শুরু করায় যানজট এখন অলিগলিতে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে মহাসড়কের যানজট আস্তে আস্তে কমতে শুরু করেছে। অবরোধের বিষয়টি জানার পর অধিকাংশ যাত্রী ও যানবাহন এ সড়ক এড়িয়ে চলছেন।

মহাসড়ক অবরোধ থাকায় পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন যাত্রীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মহাসড়ক অবরোধ থাকায় পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন যাত্রীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সোমবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, গাজীপুর মহানগরীর মালিকের বাড়ি এলাকায় কলম্বিয়া গার্মেন্টসের সামনে ২০০ মিটার ব্যবধানে দুটি ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল আটকে দেওয়া হয়েছে। মাঝখানে কয়েক শ শ্রমিক এবং কিছু যুবককে লাঠি হাতে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। তারা কেউ কোনো কথা বলতে চাইলে বেতন ছাড়া আর কোনো কথা বলার ব্যাপারে আপত্তি জানায়।

আন্দোলনকারী এক যুবক এগিয়ে এসে বলেন, ‘আমরা কষ্ট করেছি কাজ করেছি আমাদের টাকা দিচ্ছে না।  আমরা আমাদের পাওনা চাচ্ছি। আমাদের পাওনা দিয়ে দেন আমরা বাড়ি চলে যাব।’

এ সময় এখানে দায়িত্বরত শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম এবং গাজীপুর মহানগর পুলিশের ওপর পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) নাজির আহমেদকে কথা বলতেও বাধা দিতে দেখা যায় তাদের। শ্রমিকদের দাবি যা বলার মাইকে বলেন।

ময়মনসিংহ থেকে চাঁদপুরগামী হায়দার নামে এক ট্রাকচালক বলেন, দু’দিন ধরে সড়কে রয়েছি। কোথাও যেতে পারছি, নড়তেও পারছি না। অনেক ট্রাকে পচনশীল পণ্য রয়েছে। যাত্রীবাহী বাস থেকে যাত্রীরা নেমে গেছে দুদিন আগে। কিন্তু বাস আগের স্থানেই রয়েছে। খুব বিরক্ত হয়ে গেছি ভাই।

আন্দোলনরত শ্রমিকেরা বলেন, গত এপ্রিল মাস থেকে কারখানা বন্ধ ছিল। পরে কারখানা খুললেও দুই মাসের বেতন না দিয়ে কর্তৃপক্ষ টালবাহানা শুরু করে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বারবার বেতন পরিশোধের তারিখ দিলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করেনি। সর্বশেষ ৭ নভেম্বর আবার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করলে শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা এ বিষয়ে সমাধান করার আশ্বাস দিলে তাঁরা ফিরে যান। কিন্তু শ্রমিকেরা বেতন পাচ্ছেন না। তা ছাড়া কারখানা বেশ কিছুদিন ধরে বন্ধ আছে। এসব কারণে শনিবার সকাল থেকে আবারও মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। বারবার সময় দেওয়ার পরও বেতন পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় শ্রমিকেরা এখন আর কারও কথা আর বিশ্বাস করে না।

গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকার একটি কারখানার শ্রমিকেরাও বেতনের জন্য বিক্ষোভ করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকার একটি কারখানার শ্রমিকেরাও বেতনের জন্য বিক্ষোভ করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

শ্রমিক নেতা আরমান হোসাইন বলেন, আমরা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের ধৈর্য ধরতে বলেছি। তারা বলেছেন দুই মাস ধৈর্য ধরেছি ,আর না। আমাদের কথা হচ্ছে মহাসড়ক অবরোধ রাখায় যে ভোগান্তি হচ্ছে এটি দ্রুত সমাধান করা। আশুলিয়া আর গাজীপুর মিলে ৮-১০ টা কারখানায় মূলত ঝামেলা দেখছি। তাদের পাওনাও খুব বেশি না। প্রয়োজনে ওই সব মালিকদের কিছু সম্পদ বিক্রি করে হলেও পাওনা পরিশোধ করুক। আজ আমরা আবারও শ্রমিকদের সঙ্গে বসব।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) নাজির আহমেদ বলেন, শ্রমিকদের বোঝানো হয়েছে। কিন্তু কোনো কথাই শুনে না। তারা বেতন না নিয়ে মহাসড়ক ছাড়বে না। তাঁদের আজও বোঝানো হচ্ছে। যেহেতু দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে, এ জন্য আপাতত বিকল্প যে রাস্তা রয়েছে তা ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, শ্রমিকদের দাবি ন্যায্য। মালিকপক্ষ একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তারা রক্ষা করতে পারেনি। তাই শ্রমিকেরা গত দুটি রাত রাস্তায় বসে আছে।

তিনি আরও বলেন আমি যতদূর জানি মালিকপক্ষও টাকা সংগ্রহের চেষ্টা করছে।

এ সময় তিনি শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, যদি তোমরা পারো মানুষের কষ্টের কথা চিন্তা করে রাস্তা ছেড়ে দাও। এ সময় উপস্থিত শ্রমিকেরা বলেন, আমাদের টাকা না দিলে আমরা রাস্তা ছাড়ব না।

এদিকে, গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীতে এক মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে রেখেছে পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা।

সোমবার সকাল ৮ টা থেকে মহানগরীর কোনাবাড়ী থানাধীন স্বাধীন গার্মেন্টসের শ্রমিকেরা পল্লী বিদ্যুৎ দশতলা আঞ্চলিক সড়কটি অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।

পুলিশ জানায়, গত অক্টোবর মাসের বেতন এ মাসের ১০ তারিখে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ ১০ তারিখে বেতন দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে শ্রমিকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। গতকাল দুপুরে পর তারা কাজ বন্ধ করে দেয়। আজ সকাল ৮টায় এসে কাজে যোগ না দিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সড়ক অবরোধ করে রেখেছে পোশাক শ্রমিকেরা। কর্তৃপক্ষ বলছেন ১৪ নভেম্বরের আগে  বেতন দেওয়া সম্ভব হবে না। কিন্তু শ্রমিকেরা কেউ এ কথা শুনছেন না।

শ্রমিকেরা বলেন, প্রতি মাসের দশ তারিখে বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষ বেতনের সময় টালবাহানা শুরু করে। তারা বলেন, বেতন না দিলে আমরা কাজে যোগ দেব না।

এ বিষয়ে  জানতে স্বাধীন গার্মেন্টসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা রাজু আহমেদের মোবাইল ফোনে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

অন্যদিকে বাইমাইলে কাশেম ল্যাম্পস কারখানার শ্রমিকেরা হাজিরা বোনাস, টিফিন বিল, নাইট বিলসহ দশ দফা দাবি আদায়ে বিক্ষোভ করছে।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম জানান, বকেয়া বেতনের দাবিতে স্বাধীন গার্মেন্টসের শ্রমিকেরা রাস্তা অবরোধ করেছেন। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনা-৩ আসনে তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল, বৈধ ৯টি

খুলনা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

খুলনা-৩ (খালিশপুর-দৌলতপুর-খানজাহান আলী-আড়ংঘাটা) আসনে তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এই আসনে ১২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। যাচাই-বাছাই শেষে ৯ জনের মনোনয়ন বৈধ এবং ৩ জনের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করা হয়। আজ বুধবার দুপুরে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সাল কাদের এই তথ্য জানান।

ফয়সাল কাদের জানান, ঋণখেলাপিসহ বিভিন্ন কারণে যাঁদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে, তাঁরা হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রউফ মোল্যা, আবুল হাসান সিদ্দিক ও আরিফুর রহমান মিঠু। তবে তাঁরা চাইলে বিধি অনুযায়ী আপিল করতে পারবেন।

এই আসনে যাঁদের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে, তাঁরা হলেন ইসলামী আন্দোলনের মো. আউয়াল, বিএনপির রকিবুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর মাহফুজুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ খান লিটন ও মইন মোহাম্মদ মায়াজ, বাসদের জনার্দন দত্ত, খেলাফত মজলিসের এফ এম হারুন অর রশিদ, এনডিএমের শেখ আরমান হোসেন এবং জাতীয় পার্টির আব্দুল্লাহ আল মামুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজারে পর্যটকের ভিড়, থার্টি ফার্স্ট নাইটে ৭ দফা বিধিনিষেধ পুলিশের

মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ০৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

পুরোনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রতিবছর থার্টি ফার্স্ট নাইটে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে লাখো পর্যটকের সমাগম ঘটে। এ বছরও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমণপিপাসুরা কক্সবাজারে এসেছেন। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সারা দেশে শোকের আবহ বিরাজ করায় অনেকেই ভ্রমণ বাতিল করেছেন বলে জানিয়েছেন পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

এদিকে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামীকাল ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সমুদ্রসৈকতসহ উন্মুক্ত স্থানে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ও জনসমাগম না করতে ৭ দফা বিধিনিষেধ জারি করেছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার জেলা পুলিশের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব, অপপ্রচার ও উসকানিমূলক বক্তব্য ছড়ানো, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট, নাশকতা কিংবা সহিংস কর্মকাণ্ড থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে। এ ছাড়া উচ্চ শব্দে হর্ন বাজানো, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালানো নিষিদ্ধ থাকবে।

জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) অলক বিশ্বাস বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইটে কক্সবাজার শহর ও সমুদ্রসৈকতে আতশবাজি ও পটকা বিক্রি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে। একই সময়ে উন্মুক্ত স্থান ও রাস্তায় কোনো কনসার্ট কিংবা নাচগানের আয়োজন করা যাবে না। পাশাপাশি ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বার ও মদের দোকানে বেচাকেনা বন্ধ থাকবে।

অলক বিশ্বাস জানান, বিধিনিষেধ কার্যকরের পাশাপাশি শহরের প্রবেশমুখসহ গুরুত্বপূর্ণ ১০টি স্থানে তল্লাশিচৌকি বসিয়ে নজরদারি জোরদার করা হবে।

পর্যটকের উপস্থিতি

বছরের শেষ দিন ও নতুন বছরের শুরুতে কক্সবাজারে সাধারণত পর্যটকের ঢল নামে। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারাও সৈকতে ভিড় জমান। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে ৮-৯ বছর ধরে সৈকতে বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণের উন্মুক্ত কোনো আয়োজন হচ্ছে না। শহরের কয়েকটি মানসম্মত হোটেল ও রিসোর্টে সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠান হলেও এবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সেসব আয়োজনও বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হোটেলের মালিকেরা।

হোটেল ও রিসোর্টের মালিকেরা বলেন, ‘শোকাবহ পরিস্থিতির কারণে অনেক পর্যটক বুধবারের কক্ষ বুকিং বাতিল করেছেন। আবার যাঁরা মঙ্গল বা বুধবার কক্সবাজারে আসার পরিকল্পনা করেছিলেন, তাঁদের বড় অংশই সফর স্থগিত করেছেন।’

কক্সবাজার শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, গেস্টহাউস ও কটেজে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার পর্যটকের রাতযাপনের ব্যবস্থা রয়েছে। কক্সবাজার হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, সব মিলিয়ে প্রায় ৯০ শতাংশ কক্ষ বুকিং রয়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খানসামায় গ্রাম সমিতির অফিসের বারান্দা থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার

খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ১৭
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার ২ নম্বর ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের টংগুয়া চেয়ারম্যানপাড়া গ্রাম সমিতির অফিসের বারান্দা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গভীর রাতে গ্রাম সমিতির অফিসের বারান্দায় একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে ভ্যানযোগে খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাছেত সরদার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, লাশটির পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। মৃত্যুর কারণ ও পরিচয় উদ্‌ঘাটনে আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বগুড়ায় গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু, সিসিটিভির হার্ডডিস্ক নিয়ে আত্মগোপনে স্বামী

বগুড়া প্রতিনিধি
নিহত রিফাত জাহান রিংকি। ছবি: সংগৃহীত
নিহত রিফাত জাহান রিংকি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ায় রিফাত জাহান রিংকি (১৯) নামের এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১১টার দিকে সদর উপজেলার নুনগোলা দক্ষিণ পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। মৃত্যুর পরপরই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাড়ির সিসিটিভির হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় এই ঘটনায় সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে।

নিহত রিংকি শাজাহানপুর উপজেলার নন্দকুল উত্তর পাড়া গ্রামের রাশেদুল ইসলামের মেয়ে। পাঁচ বছর আগে নুনগোলা এলাকার নুরু মিয়ার ছেলে নুরুন্নবীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের চার বছর বয়সী একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে প্রতিবেশীরা রিংকিকে বাড়ির উঠানে স্বাভাবিকভাবে ব্যাডমিন্টন খেলতে দেখেন। যদিও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মাঝেমধ্যে পারিবারিক কলহের কথা শোনা যেত। রাতের দিকে হঠাৎ তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

নিহত রিংকির বোন আশা খাতুন জানান, বিকেলে রিংকির মোবাইল থেকে তাঁর ফোনে একটি মিসকল আসে। পরে একাধিকবার ফোন করলেও রিংকি ফোন ধরেননি। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাতে নুরুন্নবী ফোন করে জানায়, রিংকির ওপর জিনের আছর পড়েছে। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রিংকির নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। তখন তাঁর গলায় আঘাতের চিহ্ন লক্ষ করা যায়।

রিংকির মামি আয়না খাতুন বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে রিংকিকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পরপরই আলামত নষ্ট করতে বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পালিয়ে যায়। আমরা এর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত চাই।’

সরেজমিনে দেখা যায়, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত স্বামী নুরুন্নবী ও তাঁর পরিবারের কোনো সদস্য বাড়িতে নেই। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঘটনার পরপরই তাঁরা বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু রায়হান বলেন, ‘এর আগে তাঁদের মধ্যে কোনো ঝগড়াবিবাদের কথা আমার জানা ছিল না। হঠাৎ রাতে মৃত্যুর খবর পাই। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক।’

বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান বলেন, পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। প্রাথমিক সুরতহালে আত্মহত্যার কোনো সুস্পষ্ট আলামত পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত