Ajker Patrika

জোড় ইজতেমা ঠেকাতে মহাসড়ক অবরোধ, মাওলানা সাদপন্থীদের ওপর জুবায়েরপন্থীদের হামলায় আহত ২

 উত্তরা (ঢাকা) প্রতিনিধি 
হামলায় আহত একজন। ছবি: আজকের পত্রিকা
হামলায় আহত একজন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে দ্বিতীয় দফায় ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের পাঁচ দিনের জোড় ইজতেমা ঠেকাতে মাওলানা জুবায়ের অনুসারী মুসল্লিরা মহাসড়ক অবরোধ করে। এ সময় মাওলানা সাদপন্থীদের একটি মাইক্রোবাস ওই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় হামলা চালায় মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা।

হামলায় মাওলানা সাদপন্থী গ্রুপের জিম্মাদার মো. বশির শিকদার ও মো. আতাউর নামের দুজনসহ আহত হন। হামলাকালে মাইক্রোবাসটিতেও (ঢাকা মেট্রো চ-১২-৩৬৯৯) ভাঙচুর চালানো হয়।

টঙ্গীর স্টেশন রোডে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ১টা ২৫ মিনিটে এ হামলার ঘটনা ঘটে। পরে গুরুতর আহতদের উদ্ধার করে উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে তাঁরা সেখানেই চিকিৎসাধীন।

এর আগে মাওলানা সাদপন্থীর অনুসারীরা ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ করবেন, এমন খবরের পর বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকায় অবস্থান নেন। আধা ঘণ্টারও বেশি সময় মহাসড়ক অবরোধ থাকার পর পুলিশ গিয়ে তাদের সরিয়ে দেয়।

ঘটনাস্থলে থাকা গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা আজকের পত্রিকাকে জানান, গাজীপুর থেকে গাড়ি নিয়ে উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের বেলাল মসজিদে যাওয়ার পথে স্টেশন রোডে (উত্তরার কামারপাড়া রোডের মাথায়) মাওলানা সাদপন্থীর জিম্মাদার মো. বশির শিকদার ও তাঁর সঙ্গে থাকা তিন-চারজনের ওপর হামলা চালায় মাওলানা জুবায়ের পন্থীর ৫০-৬০ জন অনুসারী।

হামলায় তাদের বহনকারী ঢাকা মেট্রো চ-১২-৩৬৯৯ নম্বর মাইক্রোবাসটির সামনের, পেছনের ও দুই পাশের কাচ ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় বশির আহম্মেদসহ তাঁর সঙ্গে থাকা তিন-চারজন সহযোগীও আহত হন। বশির শিকদারের মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন।

হামলা প্রসঙ্গে মাওলানা সাদপন্থীদের গণমাধ্যম সমন্বয়ক মো. সায়েম বলেন, ‘জোড় ইজতেমা পালনের জন্য আমাদের চারজন প্রতিনিধি প্রথমে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীনের সঙ্গে দেখা করেন। পরে গাজীপুর মহানগর দক্ষিণের উপ-কমিশনার এনএম নাসিরুদ্দিনের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার পথে বিক্ষোভরত মাওলানা জুবায়ের পন্থীর লোকজন আমাদের সাথিদের ওপর হামলা চালায় এবং গাড়ি ভাঙচুর করে।’

অপরদিকে মাওলানা জুবায়ের পন্থীদের শীর্ষ পর্যায়ের মুরব্বি মাওলানা শাহরিয়ার মাহমুদ বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে মাওলানা সাদে অনুসারীরা উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। গতকাল বুধবার রাতে তারা আজ বৃহস্পতিবার ইজতেমা প্রবেশ করার ঘোষণা দেন। তারপর আমাদের অনুসারী সমর্থক ও মাদ্রাসার ছাত্ররা তাদের ঠেকাতে রাস্তায় বিক্ষোভ করে। ওই সময় মাওলানা সাদপন্থীদের একটি গাড়ি ইজতেমা মাঠের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের ঘুরে যেতে বলে। তারপর ওই গাড়িটি ছাত্রদের ওপর দিয়ে যেতে চাইলে তারা আত্মরক্ষার্থে বাধা দেয়।’

হামলা প্রসঙ্গে গাজীপুরের টঙ্গী জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার এনএম নাসিরুদ্দিন বলেন, ‘জোড় ইজতেমা পালনের জন্য সাদপন্থীদের সরকারিভাবে কোনো অনুমতি নেই। তাদের একটি প্রতিনিধি দল দেখা করতে এসেছিল। পরে তাদের আমি সরকারিভাবে অনুমতির জন্য অপেক্ষা করতে বলি।’

তিনি বলেন, ‘এদিকে সাদপন্থীরা ইজতেমা মাঠে প্রবেশ করছেন—এমন খবরে জুবায়েরপন্থীরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে সাদপন্থীদের গাড়িটি যাওয়ার সময় তাদের বিক্ষোভে পড়ে। তখন বিক্ষোভকারীরা গাড়িটিতে ভাঙচুর চালায়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’

পুলিশ প্রশাসন ও তাবলিগ জামায়াত সূত্রে জানা গেছে, টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে গত ২৯ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫ দিনের জোড় ইজতেমা পালন করেন মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা। পরে ২০ ডিসেম্বর থেকে ৫ দিনের জোড় ইজতেমা পালনের ঘোষণা দেন মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা। কিন্তু তাদের জোড় ইজতেমা করতে দেওয়ার বিপক্ষে অবস্থান নেন মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা। যা নিয়ে উভয় পক্ষের অনুসারীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

প্রসঙ্গত, তাবলিগ জামায়াতের মধ্যে বিরোধের জেরে ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভী ও শুরায়ী নেজাম বা বাংলাদেশের মাওলানা জুবায়ের অনুসারীতে বিভক্ত। যার কারণে এ বছরও দুটি পর্বে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম পর্বে ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জুবায়ের পন্থীরা ইজতেমা করবেন। পরে ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইজতেমা করবেন সাদ পন্থীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নরসিংদীতে তিন চোখ ও দুই মুখের বাছুরের জন্ম, এলাকায় চাঞ্চল্য

নরসিংদী প্রতিনিধি
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীতে অদ্ভুত আকৃতির বাছুরের জন্ম হয়েছে। বাছুরটির রয়েছে দুটি মুখ, দুটি জিহ্বা, দুটি কান ও তিনটি চোখ। এর মধ্যে একটি চোখ বাছুরের কপালের মাঝখানে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

২৩ ডিসেম্বর রাতে শিবপুর উপজেলার চক্রধা ইউনিয়নের পুবেরগাঁও গ্রামে স্থানীয় ইউপি সদস্য কাশেম খানের খামারে বাছুরটির জন্ম।

খামারমালিক কাশেম খান বলেন, বাছুরটি জন্মের পর থেকেই অসুস্থ। স্বাভাবিকভাবে দুধ পান করতে না পারায় ফিডারের মাধ্যমে দুধ খাওয়াতে হচ্ছে।

তিনি জানান, তাঁর খামারের একটি গাভি বাছুরটির জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেন, এর আগেও গাভিটির বাছুর হয়েছে। কিন্তু এবারের মতো এমন অদ্ভুদ বাছুর আগে কখনো হয়নি।

ঘটনাটি জানাজানির পর থেকেই বাছুরটিকে একনজর দেখতে আশপাশের কৌতূহলী মানুষ খামারে আসছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল জলিল বলেন, ‘আমরা ছোটবেলা থেকে গরু-ছাগল দেখছি। কিন্তু তিন চোখ আর দুই মুখের বাছুর এই প্রথম দেখলাম। খবর পেয়ে দূর থেকে এসেছি।’

আরেক স্থানীয় নারী জরিনা বেগম বলেন, ‘বাছুরটা দেখতে অদ্ভুত লাগলেও মায়া হচ্ছে। বাছুরটির স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। অনেকেই দ্রুত প্রাণিসম্পদ বিভাগের চিকিৎসকের পরামর্শ ও চিকিৎসা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিচ্ছেন।’

এর আগে এ ধরনের বাছুর জন্মের বিষয়ে প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সাধারণত জেনেটিকস ডিফেক্টের কারণে গাভির এমন ত্রুটিপূর্ণ বাচ্চার জন্ম হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজীপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে নানি-নাতনিসহ নিহত ৩

গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের কালীগঞ্জে রেললাইন দিয়ে হাঁটার সময় ট্রেনে কাটা পড়ে নানি-নাতনিসহ তিন নারী নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে টঙ্গী-ভৈরব রেলপথের আড়িখোলা রেলস্টেশনসংলগ্ন টেকপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত নারীরা হলেন কালীগঞ্জ পৌরসভার দেওয়ালেরটেক গ্রামের মোবারক হোসেনের স্ত্রী সাদিয়া বেগম (২৪), একই এলাকার বাবু মিয়ার মেয়ে অনাদি আক্তার (১৩) এবং নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার মরজাল এলাকার বাসিন্দা কমলা বেগম (৫৫)। নিহত কমলা বেগম ও অনাদি আক্তার সম্পর্কে নানি-নাতনি এবং সাদিয়া বেগম তাঁদের প্রতিবেশী ছিলেন।

স্থানীয়রা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আড়িখোলা রেলব্রিজ এলাকায় রেললাইনের ওপর দিয়ে তিনজন হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নোয়াখালীগামী ‘উপকূল এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি চলে আসে। এ সময় তাঁরা রেলব্রিজের ওপর থাকায় সেখান থেকে দ্রুত সরে যাওয়ার সুযোগ পাননি। পরে ট্রেনটি তাঁদের ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই কমলা বেগম ও সাদিয়া বেগমের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় অনাদি আক্তারকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জিয়াউর রহমান জানান, অনাদি আক্তারকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওবায়দুল হক জানান, এটি রেলওয়ের আওতাধীন দুর্ঘটনা হওয়ায় রেলওয়ে পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।

রেলওয়ে নরসিংদী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) দিলীপ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল সম্পন্ন করেছি। নিহত নারীদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বিনা ময়নাতদন্তে লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আরাকান আর্মিদের জন্য নেওয়া হচ্ছিল ১৫০০ মশারি, আটক ৫

থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি  
মশারিসহ জব্দ করা মালপত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা
মশারিসহ জব্দ করা মালপত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা

বান্দরবানের থানচি উপজেলায় দুটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা তল্লাশি করে ১ হাজার ৫০০টি মশারি, ১২০টি নৌকার ইঞ্জিনের পাখা উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে তিন্দুমুখ বিজিবি চেকপোস্ট পার হওয়ার সময় নৌকাগুলো তল্লাশি করে এসব জিনিস জব্দ করে বিজিবি। এসব মশারি ও ইঞ্জিনের পাখা বান্দরবানের থানচির বড় মদক সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির জন্য নেওয়া হচ্ছিল বলে জানিয়েছে বিজিবি। এ ঘটনায় নৌকা দুটি থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার তাঁদের থানচি থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় আটক ব্যক্তিরা হলেন থোয়াই হ্লা চিং মারমা, উমং সাইং মারমা, হ্লাচিংথোয়াই মারমা, উক্যছাইন মারমা ও মো. ইউনুস।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে বিজিবি বলিপাড়া ৩৮ ব্যাটালিয়ানের সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেনের জানান, নিজস্ব গোয়েন্দা সূত্রে তাঁরা জেনেছেন, দীর্ঘদিন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ওষুধ, কাপড়, জুতা, মোজা, মশারি, নৌকা ইঞ্জিনের পাখা ও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ মিয়ানমারের আরাকান আর্মির কাছে সরবরাহ করছে একটি সিন্ডিকেট চক্র। পাচারকারীদের ধরতে সীমান্তের বিজিবি চৌকিগুলোতে বিজিবি সদস্যরা সতর্ক রয়েছেন।

জাকির হোসেন বলেন, গতকাল বুধবার তিন্দুমুখ বিজিবি চেকপোস্ট অতিক্রম করার সময় মালবাহী তিনটি ইঞ্জিন নৌকা দেখে বিজিবির সদস্যদের সন্দেহ হয়। এ সময় নৌকা থামাতে বললে একটি নৌকা দ্রুত চলে যায়। বাকি দুটি নৌকা তল্লাশি করে ১ হাজার ৫০০টি মশারি, ১২০টি ইঞ্জিন বোটসহ অন্যান্য পণ্য পাওয়া যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নলছিটি লঞ্চঘাট ওসমান হাদির নামে নামকরণ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
নলছিটি লঞ্চঘাট ।  ছবি: আজকের পত্রিকা
নলছিটি লঞ্চঘাট । ছবি: আজকের পত্রিকা

নলছিটি উপজেলার লঞ্চঘাট এখন থেকে শহীদ শরিফ ওসমান হাদির নামে পরিচিত হবে। জন্মস্থান ও শৈশবের স্মৃতিতে গাথা এই লঞ্চঘাট তাঁর নামের সঙ্গে চিরস্থায়ীভাবে যুক্ত হলো।

বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় (২৫ ডিসেম্বর) জানান, শহীদ ওসমান হাদির জন্মস্থান নলছিটি। শৈশব, বেড়ে ওঠা এবং জীবনসংগ্রামের সঙ্গে লঞ্চঘাট এলাকার নিবিড় সম্পর্ক থাকার কারণে এটি তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে। বর্তমানে টার্মিনালের সংস্কার ও রঙের কাজ চলমান রয়েছে।

আগামী শনিবার নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন ঘাটটি পরিদর্শন করবেন বলেও জানান তিনি।

নলছিটি লঞ্চঘাট শহীদ ওসমান হাদির জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঘাট থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে তার পৈতৃক বাড়ি। নদীর ধারে দাঁড়িয়ে মানুষের আসা-যাওয়া দেখা এবং লঞ্চের ভিড়ে সময় কাটানো—এই ঘাট ছিল তার বেড়ে ওঠার নীরব সাক্ষী।

ঘাট এলাকার ব্যবসায়ী রব হাওলাদার বলেন, ‘আমরা চাইছিলাম হাদির স্মরণে এমন কিছু হোক, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম মনে রাখবে। তার শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত লঞ্চঘাটের নাম তার নামে হওয়া নিঃসন্দেহে স্মরণীয় সিদ্ধান্ত।’

ব্যবসায়ী শাহাদত আলম ফকির যোগ করেন, ‘এই ঘাটে আমরা হাদিকে ছোটবেলা থেকে দেখেছি। সে এখানকারই ছেলে ছিল। আজ তার নামে ঘাটের নামকরণ হওয়ায় আমরা গর্বিত।’

ওসমান হাদির প্রতিবেশী বেলায়েত হোসেন নান্নু বলেন, ‘হাদি এই এলাকার সন্তান। এই ঘাট, এই নদী, এই মানুষ—সবকিছুতেই তার স্মৃতি ছড়িয়ে আছে। লঞ্চঘাটের নাম তার নামে হওয়া মানে, সে এখানেই চিরদিন বেঁচে থাকবে।’

উল্লেখ্য, ১২ ডিসেম্বর হত্যার উদ্দেশ্যে ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। তাঁকে প্রথমে ঢাকায় ভর্তি করা হয় এবং পরে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর মারা যান ওসমান হাদি। পরবর্তীকালে তাঁর মরদেহ দেশে আনা হয় এবং সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে (জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে) সমাহিত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত