Ajker Patrika

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে নারীসহ দুজনকে মারধর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮: ০২
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে এক নারীকে লাঞ্ছিত করেছে উত্তেজিত জনতা। ছবি: মেহেদী হাসান
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে এক নারীকে লাঞ্ছিত করেছে উত্তেজিত জনতা। ছবি: মেহেদী হাসান

রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ির সামনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ায় নারীসহ দুজনকে মারধর করা হয়েছে। প্রথমে এক ব্যক্তি সেখানে জয় বাংলা স্লোগান দিলে উপস্থিত বেশ কয়েকজন তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন। পরে সেখান থেকে কয়েকজন ব্যক্তি তাঁকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রিকশায় তুলে নিয়ে যান। এই ঘটনার কিছুক্ষণ পরে এক নারীকেও একই কারণে মারধর করা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বেদম মারধরের শিকার ওই ব্যক্তিকে রক্ষা করতে সেখানে উপস্থিত তিনজন ব্যক্তি তাঁকে রিকশায় ওঠান। রিকশা ওপরেও ওঠানোর পর ওই ব্যক্তিকে মারধর করা হয়। প্রথমে কলাবাগানের দিকে নিয়ে যেতে চাইলে তাদের পেছনে দৌড়াতে থাকেন। পরে রিকশা ঘুরিয়ে ধানমন্ডি ২৭ এর দিকে রওনা হলে সেদিকেও কিছু মানুষকে রিকশার পেছনে দৌড়াতে দেখা যায়। মেট্রো শপিং সেন্টার পর্যন্ত ধাওয়া করে বিক্ষুব্ধ জনতা।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত অনেকেই বলছেন, ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তি জয় বাংলা স্লোগান দিয়েছিলেন, আবার কেউ বলছেন তিনি ভিডিও করার কারণে মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন। তখন আওয়ামী ফ্যাসিস্টের দালাল বলে মারধর শুরু হয়।

এর ঠিক পাঁচ মিনিট পরই ধানমন্ডি-৩২ এ আরেক নারী বেধড়ক মারধরের শিকার হন। ওই নারী বারবার আপা আপা বলছিলেন, আর ভাঙার দৃশ্যে আক্ষেপ করে বলছিলেন- ‘আপার বাড়ি ভাঙতেছে।’ এতে প্রথমে তোপের মুখে পড়তে হয় তাঁকে, পরে শুরু হয় গণপিটুনি। তাকে মারতে মারতে ধানমন্ডি-৩২ এর বাইরে মূল সড়কের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।

এ সময় ওই নারীকে ‘মাইরেন না, মাইরেন না ভাই’ বলে চিৎকার করেন কেউ কেউ। মেট্রো শপিং সেন্টারের সামনে জনরোষ থেকে বাঁচিয়ে একজন ফটোগ্রাফার তাঁকে রিকশায় উঠিয়ে নেন।

এ সময় ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো সদস্যকে দেখা যায়নি। মেট্রো শপিং সেন্টারের সামনে ১০-১২ জন পুলিশ সদস্যকে দেখা যায়।

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে এক নারীকে লাঞ্ছিত করেছে উত্তেজিত জনতা। ছবি: মেহেদী হাসান
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে এক নারীকে লাঞ্ছিত করেছে উত্তেজিত জনতা। ছবি: মেহেদী হাসান

পরে দুপুর ১২টার দিকে কয়েকজন যুবককে আওয়ামী লীগ বিরোধী স্লোগান দিতে দেখা যায়। তারা ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা-ঢাকা’, ‘ভারতের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’সহ শেখ হাসিনার বিচারের দাবি করে নানান স্লোগান দিতে থাকেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকালের দিকে আবারও শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটি ভাঙা হয়। সকাল ৯টা ৫০ মিনিটের পরে আবারও এক্সকাভেটর চালু করা হয় ভবনটি ভাঙতে। পরে সাড়ে ১০টার দিকে এক্সকাভেটর দিয়ে ভাঙা বন্ধ হয় এবং সেটি নিয়ে যাওয়া হয়। তবে এরপরও মানুষকে হাতুড়ি, শাবল দিয়ে ভাঙতে দেখা গেছে।

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ায় মারধরের শিকার মধ্যবয়সী এক ব্যক্তি। ছবি: মেহেদী হাসান
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ায় মারধরের শিকার মধ্যবয়সী এক ব্যক্তি। ছবি: মেহেদী হাসান

এই সময় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের আশপাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্যদের দেখা যায়নি।

সকাল ৯টার দিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ির সামনে সরেজমিনে দেখা গেছে, দলে দলে মানুষ গিয়ে সেখানে ভিড় করছেন। ওই সময় মানুষকে হাতুড়ি দিয়ে দেয়াল ভাঙার চেষ্টা করতে দেখা যায়। ভেতরে একটি ভবন থেকে মানুষকে বই নিয়ে যেতে দেখা যায়। কাউকে কাউকে কাটার দিয়ে রড, স্টিলের জিনিসপত্র কাটতে দেখা গেছে।

ভেতরের একটি ভবন থেকে মানুষকে বই নিয়ে যেতে দেখা যায়। বেশির ভাগ বই হলো বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীর বাংলাসহ বিভিন্ন ভাষার অনুবাদ। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারকে নিয়ে লেখা বিভিন্ন বইও রয়েছে।

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ায় মারধরের শিকার মধ্যবয়সী এক ব্যক্তি। ছবি: মেহেদী হাসান
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ায় মারধরের শিকার মধ্যবয়সী এক ব্যক্তি। ছবি: মেহেদী হাসান

এ আগে বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বাংলাদেশকে ‘ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি’ মুক্ত করার ঘোষণা দেওয়ার পর বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। গত রাত ১১টা ৬ মিনিটে বাড়িটি ভাঙা শুরু হয়।

এ সময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, ‘এই মাটিতে স্বৈরাচারের কোনো চিহ্ন থাকবে না। আগামী প্রজন্মের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে এসেছি, আমরা এটি নিশ্চিত করতে চাই আওয়ামী লীগের জন্য কোনো কিবলা অবশিষ্ট রাখব না।’

দেওয়ালের ইট খুলে হাতে নিয়ে যাচ্ছিলেন সৈয়দ রিফাত নামের এক ব্যক্তি। এ সময় তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের ধ্বংসস্তূপের প্রমাণ রেখে দেওয়ার জন্য এই ইট রাখলাম। এরপরও যদি আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের কেউ ফিরে আসার কথা বলে, এই ইট তার কপালে যাবে।’

৩২ নম্বরের আশপাশের কয়েকটি বাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়। রাত ১১টায় ৩২ নম্বরের বাড়িটি ভাঙার জন্য বুলডোজারের জন্য বাড়িটির সামনে অপেক্ষা করছিলেন ছাত্র-জনতা। এ সময় ৩২ নম্বরের পাশের রাস্তা দিয়ে একটি ক্রেন যাচ্ছিল। বুলডোজার ভেবে আটকানো হয় ক্রেনটি। পরে সেই ক্রেন নিয়ে আসা হয় বাড়িটির সামনে। এ সময় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তাঁরা। সেই ক্রেন দিয়েই বাড়িটি ভাঙার শুরু করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি ভারত: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

রংপুর প্রতিনিধি
রংপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেয়ার ব্যাপারে ভারত এখনও ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। রংপুর অঞ্চলে চার দিনের সফরে এসেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো চেয়েছি যে তাকে (শেখ হাসিনাকে) ফেরত পাঠানো হোক। যেহেতু উনি একজন কনভিক্টেড, যেহেতু সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা তাকে একটি শাস্তি দিয়েছে। কিন্তু আমরা ইতিবাচক কোনো সাড়া এখন পর্যন্ত পাইনি। এটা নিয়ে আমার মনে হয় স্পেকুলেট না করাই ভালো। দেখা যাক কী হয়। আমরা তো চেয়েছি খুব, এ ধরনের ঘটনায় তো ঝট করে একদিনে সাত দিনে কোনো পরিবর্তন ঘটে না। আমরা অপেক্ষা করব, দেখি, ভারতের পক্ষ থেকে কি আসছে রিঅ্যাকশন।’

তৌহিদ হোসেন বলেন, একটা রিঅ্যাকশন আমরা দেখেছি যেটা, সেটা হলো তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে, এরকম একটা কথা আসছে আমাদের। দেখুক তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরে কোনো তথ্য নেই বলে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, "তারেক সাহেব কখন আসবেন এই সম্বন্ধে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। উনার স্ত্রী সম্ভবত আসছেন বা পৌঁছে গেছেন হয়তো ইতিমধ্যে। আজকে সকালে পৌঁছার কথা ছিল। বেগম জিয়াকে আজকে নেওয়া হচ্ছে না, আমি ঢাকা থেকে আজকে সকালে জানলাম যে, আজকে নেওয়া হচ্ছে না। একটু টেকনিক্যাল প্রবলেম দেখা দিয়েছে ওই এয়ারক্রাফট নিয়ে। সেক্ষেত্রে হয়তো এক-আধ দিন দেরি হতে পারে। "

আরাকান আর্মি বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "আরাকান আর্মির সাথে আমাদের দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সম্ভব নয়। তারা একটা নন-স্টেট অ্যাক্টর। আমরা স্টেট হিসেবে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা যেমন মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ, থাইল্যান্ড বা ভারতের সাথে করতে পারি সেটা তাদের সাথে করতে পারি না। তবে আমাদের স্বার্থ যেহেতু আছে, আমাদের দেখতে হবে। এই ঘটনা যাতে কমে বা আদৌ না ঘটে, এটার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। "

এছাড়াও নীলফামারীতে প্রস্তাবিত চীনা হাসপাতালের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত শুরু করে যেতে চায় বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। একই সঙ্গে নির্বাচিত সরকার এলে এই কাজ সমাপ্ত করবে বলেও আশা তার। এ সময় পিছিয়ে পড়া রংপুরের প্রত্নতাত্ত্বিকসহ সবক্ষেত্রে নেয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সরকারের সদিচ্ছার কথা জানান তৌহিদ হোসেন।

এরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সপরিবারে রংপুর জমিদার বাড়ি তাজহাটে পরিদর্শনে যান। এছাড়াও বিকেলে রংপুর সার্কিট হাউসে চা-চক্রের কথা রয়েছে তৌহিদ হোসেনের। আগামীকাল রংপুরের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং রংপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জিলা স্কুল পরিদর্শন করার কথাও রয়েছে তার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড। এ সময় একটি নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আটক কয়েকজন মাঝিমাল্লার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোস্ট গার্ড হাতিয়ার একটি দল এই অভিযান চালায়। জব্দ করা জাটকাগুলোর মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. আবুল কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড। অভিযানে মেঘনা নদীর জাগলার চর এলাকায় একটি কাঠের নৌকায় তল্লাশি করা হয়। ওই নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাঝিদের মুচলেকা নিয়ে নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ মাছগুলো মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এতিমখানা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাঠে পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।

নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।

থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।

ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাসার দরজা ভেঙে চবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

চবি প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ওমর ফারুক সুমন নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকার একটি বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

ওমর ফারুক বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

স্থানীয় ও পরিবারের সদস্যরা জানান, সুমন খুলশীতে তাঁর মামার বাসায় থাকতেন। তাঁর বড় ভাইও সেখানে থাকেন। দুই দিন আগে সুমনের মামা পুরো পরিবার নিয়ে তুরস্কে বেড়াতে যান। বাসায় সুমন ও তাঁর বড় ভাই ছিলেন। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে ভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সুমন। ফোনে তাঁর বড় ভাই কখন বাসায় ফিরবেন জানতে চান সুমন। বড় ভাই জানান যে তাঁর আসতে একটু দেরি হবে। এর কিছুক্ষণ পর বড় ভাই সুমনকে ফোন করলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি। পরে বাড়ি থেকে সুমনের মা ফোন দিয়ে যোগাযোগ করতে না পেরে বিষয়টি বড় ভাইকে জানান। এতে উদ্বেগ দেখা দিলে বড় ভাই বিল্ডিংয়ের দারোয়ানকে দিয়ে বাসা চেক করান।

দারোয়ান কলিংবেল বাজিয়েও কোনো সাড়া না পেয়ে বড় ভাইকে জানালে তিনি দ্রুত বাসায় এসে সুমনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে চিরকুট মিলেছে। এতে লেখা রয়েছে, ‘আমি সুমন, ওমর ফারুক সুমন। আমার কোনো আশা-আকাঙ্ক্ষা নেই। আর আমার কারও প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। সবাই ভালো থাকবেন।’ এর আগে ১ ডিসেম্বর লেখা আরেকটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা ছিল—‘আশাই জীবন, আশাই মরণ, ব্যর্থতা হতাশা-অন্ধকারে নিয়ে যায়।’

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর জামান বলেন, ‘সুমন ও তাঁর বড় ভাই একসঙ্গে মামার বাসায় থাকতেন। মামা ও মামি বর্তমানে বিদেশে আছেন। বড় ভাই সন্ধ্যায় বাইরে যান। সে সময় সুমন বাসায় একা ছিলেন। বড় ভাই বাসায় ফিরে এসে বারবার ডাকলেও ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে কোনো সাড়া পাননি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলে সুমনের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মহত্যা মনে হলেও আমরা সব সম্ভাব্য কারণ খতিয়ে দেখছি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত