Ajker Patrika

আইনশৃঙ্খলার অবনতি আতঙ্কে জনসাধারণ

  • জননিরাপত্তায় পদক্ষেপ না নেওয়ায় ক্ষোভ
  • দুই মাসে ৭ বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি
  • বেড়েছে ছিনতাই অপহরণ ও চুরি
মিজানুর রহমান রিয়াদ, নোয়াখালী
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি ডাকাতি, সিঁধেল চুরি, ছিনতাই, অপহরণ, চুরি, আত্মহত্যা ও জায়গাজমি-সংক্রান্ত মারামারির ঘটনা ঘটেছে। অনাকাঙ্ক্ষিত এসব ঘটনার কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

বর্তমান বিরাজমান পরিস্থিতিতে মাঠে সরব প্রধান দুই রাজনৈতিক দলসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নির্লিপ্ততায় এবং জনস্বার্থে সঠিক পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ এবং ঘৃণারও উদ্রেক হয়েছে।

জানা গেছে, গত দুই মাসে উপজেলার সাতটি বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গত ২৭ জানুয়ারি রাতে উপজেলার চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে আমিন উল্যার নতুন বাড়ি, ক্যাপ্টেনের বাড়ি, বিএনপির নেতা জিয়াউল হক জিয়ার ভাই মমিনের বাড়ি, ইসমাইল মিস্ত্রির বাড়ি, ২৪ ফেব্রুয়ারি একই ইউনিয়নের একই ওয়ার্ডের জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ি, ২৭ ফেব্রুয়ারি একই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দুই ব্যবসায়ী লোকমান সওদাগর ও কালু সওদাগরের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।

এদিকে ২৫ জানুয়ারি একই রাতে ১০টি গরু চুরি ও ২ মার্চ হাজারীহাট বাজারের মনিরের দোকানে চুরি হয়। এ ছাড়া বসুরহাট পৌরসভাসহ উপজেলার সিরাজপুর, চরপার্বতী, চরহাজারী, চরকাঁকড়া, চরফকিরা, রামপুর, মুছাপুর, চরএলাহী ইউনিয়নে ঘরবাড়িতে মোবাইল, ব্যবহারকারী জিনিসপত্র, মসজিদের সোলার ব্যাটারি, নলকূপ চুরির ঘটনা অহরহ ঘটছে।

এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক অস্থিরতা ও পারিবারিক কলহের কারণে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে। গত দুই মাসে চারজনের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।

গত দুই মাসে বেশ কয়েকটি ইভ টিজিংয়ের ঘটনা ঘটে। লোকলজ্জার ভয়ে অনেকে আইনের আশ্রয় নিতে চায় না। ১ মার্চ উপজেলার মুছাপুরে মাদ্রাসার শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে শাহরুফ নামের এক যুবক গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৪ মার্চ চরপার্বতীর ৭ নম্বর ওয়ার্ডে প্রেমের বিয়ে মেনে না নেওয়ায় আত্মহননের পথ বেছে নেয় দশম শ্রেণিপড়ুয়া ইয়াসমিন আক্তার লিমা।

এদিকে গত দুই মাসে কয়েকটি হামলা, ভাঙচুর ও লুটে ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে গত ৬ জানুয়ারি অবৈধ বালুমহাল বন্ধের দাবিতে চরএলাহীতে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ-মানববন্ধনে হামলাকে কেন্দ্র করে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ ওঠে। ১৫ জানুয়ারি চরহাজারী ইউনিয়নে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের চেষ্টার প্রতিবাদ করায় আবদুর রহিম নামের এক যুবদল নেতাকে পিটিয়ে আহত করা হয়।

২০ জানুয়ারি মুছাপুরের বাগতারা বাজারে বিএনপির নেতার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাটের অভিযোগের ঘটনায় দুজন আহত হন। ২২ জানুয়ারি চাপরাশিহাট পূর্ব বাজার এলাকায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

২৫ জানুয়ারি চরএলাহী ইউনিয়নে কৃষক দলের সমাবেশে বিএনপি নেতার হামলায় ৫ জন আহত হন। একই দিন চরফকিরা ইউনিয়নে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় ১১ জন আটক, ২ ফেব্রুয়ারি পণ্ডিতের হাট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ এন ইয়াছিনের ওপর বিএনপির নেতা রেজাউলের হামলাসহ আরও কয়েকটি হামলা, ভাঙচুর ও লুটের ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী, গরু চোর, অস্ত্রসহ একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার ও মাদকসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রশাসন ও পুলিশের সম্মিলিত প্রয়াসে অচিরেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কাঙ্ক্ষিত উন্নতি হবে। এসব বিষয়ে এলাকাভিত্তিক সচেতন নাগরিকদের তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতার আহ্বান জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত