Ajker Patrika

বাবুল আক্তারসহ ৭ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দিল পিবিআই

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২০: ১১
বাবুল আক্তারসহ ৭ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দিল পিবিআই

চট্টগ্রামে চাঞ্চল্যকর মিতু হত্যা মামলার বাদী তাঁর স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারসহ সাতজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে মামলাটির তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। 

আজ মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম সিএমএম আদালতে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (প্রসিকিউশন) কামরুল হাসানের কার্যালয়ে গিয়ে অভিযোগপত্র হস্তান্তর করেন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক। এ সময় পিবিআই মহানগর পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা উপস্থিত ছিলেন। 

 ২০১৬ সালে ৫ জুন মিতু হত্যার ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় যে মামলা করেছিলেন সেই মামলায়ই তাঁকে আসামি করে এই অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। 

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (প্রসিকিউশন) কামরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এখনও কেস ডকেট পুরোপুরি দেখতে পারিনি। এটা অনেক বড় একটা কেস ডকেট। শুধু এটুকু বলতে পারি যে, বাবুল আক্তারসহ সাতজনকে আসামি করে অভিযোগপত্র আমাদের কাছে জমা হয়েছে। এখন আইন অনুযায়ী আমরা সেটা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠাব। সংশ্লিষ্ট আদালত এটা দেখবেন। আগামী ১০ অক্টোবর এ মামলার ধার্য দিন আছে।’

অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার পর নাইমা সুলতানা সাংবাদিকদের বলেন, ‘মিতু হত্যা মামলার তদন্ত সম্পন্ন করে আমরা অভিযোগপত্র জমা দিয়েছি। সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব বজায় রেখে এই মামলাটি তদন্ত করেছি। তদন্তে আমরা বাবুল আক্তারকে আসামি হিসেবে পেয়েছি। এই মামলায় বাবুল আক্তারকে এক নম্বর আসামি করা হয়েছে।’

নাইমা সুলতানা আরও বলেন, ‘২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আমরা মামলাটির তদন্তভার পেয়েছিলাম। আড়াই বছরের তদন্তে যাদের বিরুদ্ধে সব রকমের তথ্যপ্রমাণ আমরা পেয়েছি তাঁদের আসামি করা হয়েছে অভিযোগপত্রে।’

বাকি আসামিদের নাম জানতে চাইলে নাঈমা সুলতানা বলেন, ‘তদন্ত করে যাকে আসামি পেয়েছি, তাদেরই অভিযুক্ত করেছি। বিচার প্রক্রিয়ায় গেলে বিস্তারিত জানতে পারবেন। নো মোর কমেন্টস।’

এদিকে অভিযোগপত্রের বিষয়ে তদন্ত সংস্থা পিবিআই এখনই বিস্তারিত কিছু বলছে না। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চূড়ান্ত প্রতিবেদনে কিছু অংশে বলা হয়েছে, বাবুল আক্তারই মিতু খুনের পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা। তাঁর পরিকল্পনা ও নির্দেশে ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে মিতুকে খুন করা হয়। গায়ত্রী নামে এক নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ানোর জেরে এই খুনের ঘটনা ঘটেছে। 

বাবুল আক্তারের সোর্স কামরুল ইসলাম সিকদার মুসার বিরুদ্ধে মিতু হত্যায় সরাসরি জড়িত ও নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এই মামলায় বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে সাতজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে মামলায় গায়ত্রীকে আসামি করা হয়নি। অভিযোগপত্রে গায়ত্রীর খোঁজ না পাওয়া এবং মুসা ও কালুকে পলাতক দেখানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাবুল আক্তার কক্সবাজারে কর্মরত থাকা অবস্থায় বিদেশি এনজিও সংস্থার কর্মী গায়ত্রী অমর সিংয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত বাবুল আক্তার সুদানে থাকাকালে গায়ত্রীর পাঠানো ‘তালিবান’ ও ‘বেস্ট কিপ্ট সিক্রেট’ নামে এ দুটো বইয়ের খোঁজ পেয়েছিলেন মিতু। বইয়ের কয়েকটি পৃষ্ঠায় তারিখসহ গায়ত্রীর সঙ্গে প্রথম পরিচয় থেকে শুরু করে বিবাহবহির্ভূত বিভিন্ন সম্পর্কের নিয়ে নোট ছিল। যা বাবুল আক্তারের লেখা বলে পরে সিআইডি বিশেষজ্ঞ কর্তৃক প্রমাণিত হয়। 

বাবুলের সঙ্গে মিতুর দাম্পত্য কলহ শুরুর পর মিতুকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে বাবুলের বিরুদ্ধে। বাবুল আক্তার তাঁর স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ৩ লাখ টাকায় ‘খুনি’ ভাড়া করেন। নিজেকে আড়ালে রাখতে প্রচার করেন, জঙ্গিরাই মিতুকে খুন করেছে। হত্যাকাণ্ডের পর বাবুল আক্তার মুসাকে ফোনে গা ঢাকা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। 

তদন্ত প্রতিবেদনে মিতু খুনের সঙ্গে বাবুল আক্তারসহ নয়জন আসামির সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে ২০১৬ সালে জুলাই মাসে নুরুন্নবী ও রাশেদ পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাঁদের নাম অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বাকি আসামিরা হলেন— মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, এহতেশামুল হক প্রকাশ ভোলো, মো. মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম কালু ও শাহজাহান মিয়া। 

এ ছাড়া এই মামলায় পূর্বে অভিযুক্ত সাইদুল ইসলাম সিকদার সাক্কু, মো. শাহ জামান প্রকাশ রবিন (৩৩) ও গুইন্নাকে অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। 

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানার নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার কাছেই গুলি ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয় মাহমুদা খানম মিতুকে। স্ত্রীকে খুনের ঘটনায় পুলিশ সদর দপ্তরের তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি শুরুতে তদন্ত করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদসহ নানা নাটকীয়তার পর, ওই বছরের আগস্টে বাবুল আক্তারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। 

২০২০ সালের জানুয়ারিতে মামলাটির তদন্তভার পিবিআইয়ের হাতে আসে। ২০২১ সালে ১১ মে মামলার বাদী বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে এনে তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেয় পিবিআই চট্টগ্রাম কার্যালয়। পরদিন ১২ মে পিবিআই প্রধান সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, বাবুল নিজেই তাঁর স্ত্রী হত্যার সঙ্গে জড়িত। 

বাবুলের করা মামলাটিতে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলাটির তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা। একই দিন বাবুলের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন পাঁচলাইশ থানায় বাবুলকে প্রধান আসামি করে আটজনের নামে নতুন একটি হত্যা মামলা করেন। সেই মামলায় গ্রেপ্তারের পর বাবুল কারাগারে রয়েছেন। 

গত বছরের ৩ নভেম্বর বাবুলের করা মামলায় পিবিআইয়ের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালত গ্রহণ না করে মামলাটির অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। ওই মামলায় আজ মঙ্গলবার অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হলো। 

এর আগে বাবুলের শ্বশুরের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন গত ৬ মার্চ আদালত গ্রহণ করেন।

বাবুল আক্তার সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ: তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী রিমান্ডে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ধর্ম অবমাননার অভিযোগে করা মামলায় রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের ২০২৩–২৪ সেশনের এক শিক্ষার্থীকে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাত উল্লাহ তাঁকে রিমান্ডে নেওয়ার এ নির্দেশ দেন।

কারাগার থেকে ওই শিক্ষার্থীকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাঁকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। অন্যদিকে শিক্ষার্থীর পক্ষে রিমান্ড বাতিল করে জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী। শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন এবং দুদিনের পুলিশ রিমান্ডে দেওয়ার নির্দেশ দেন।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত পিপি মুহাম্মদ শামসুদ্দোহা সুমন রিমান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

গত ২৬ নভেম্বর তিতুমীর কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষার্থীকে ডেকে কলেজে নেন এবং বনানী থানা-পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।

ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ‘ফারিহা আক্তার’ নামের একটি ফেসবুক আইডি ‘শাহ মাহমুদ’ নামের আরেক ফেসবুক আইডির একটি পোস্টের নিচে মন্তব্য করে। ওই মন্তব্যে নবী মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে কটূক্তি করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। পরে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা জানতে পারেন, ফারিহা আক্তার নামের আইডিটি নকল এবং সেটি ব্যবহার করতেন ওই শিক্ষার্থী।

ওই মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরে শিক্ষার্থীরা তাঁকে ক্যাম্পাসে আটক করেন এবং ঘটনাটি কলেজ প্রশাসনকে অবহিত করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁকে অধ্যক্ষের কক্ষে নিয়ে আসে। সেখানে প্রশাসনের উপস্থিতিতে ওই শিক্ষার্থী নিজের কর্মকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন। তাঁকে আটকের পর বনানী থানায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মামলা হয়।

মামলায় বলা হয়েছে, ওই শিক্ষার্থী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যসহ মুসলিম নারীদের পোশাক ও আচরণ নিয়ে আপত্তিকর কথা লিখতেন ফেসবুকে। এগুলো শুধু ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে না, বরং নারীদের মর্যাদাকেও অপমান করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ব্রাকসু নির্বাচন কমিশনকে মেরুদণ্ডহীন আখ্যা দিল ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেল

বেরোবি প্রতিনিধি 
ব্রাকসু নির্বাচন কমিশনকে মেরুদণ্ডহীন আখ্যা দিল ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেল

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (ব্রাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ এবং মেরুদণ্ডহীন আখ্যা দিয়েছে ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেল ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী সংসদ। নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় একাধিক ভুলত্রুটি ও এক পক্ষের চাপে তড়িঘড়ি করে নির্বাচনের দিকে ধাবিত হচ্ছে—এমন অভিযোগ তুলে আজ সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের দক্ষিণ গেটে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী সংসদের নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বেরোবি শাখা ছাত্রদলের সহসভাপতি মো. মাইদুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, শিক্ষার্থীদের বহুল প্রত্যাশিত ব্রাকসুর গঠনতন্ত্র অনুমোদন হলেও শুরু থেকে প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের চরম অযোগ্যতা ও ব্যর্থতার কারণে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ আজ হাস্যকর বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের শীতকালীন ছুটির দাবির বিষয়টি পাশ কাটিয়ে একটি গোষ্ঠীকে সুবিধা দেওয়ার জন্য গঠনতন্ত্র ও ভোটার তালিকায় অসংখ্য ভুলত্রুটি নিয়ে তড়িঘড়ি করে একটি বিতর্কিত নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন। ব্যর্থতার দায় নিয়ে দুবার পদত্যাগ ও একবার নির্বাচনী কার্যক্রম স্থগিত করার পর তারা কথা দিয়েছিল—ভোটার তালিকায় বিদ্যমান ত্রুটিগুলো তারা সংশোধন করে পরবর্তী কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।

মাইদুল আরও বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, এই প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন বিতর্কিত। ত্রুটিগুলো নিয়েই তারা আবারও অধিকাংশ শিক্ষার্থীর শীতকালীন ছুটির বিষয়টিকে উপেক্ষা করে একটি পক্ষের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য একটি প্রহসনমূলক নির্বাচনের নাটক মঞ্চস্থ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমরা অনাস্থা প্রকাশ করছি, কারণ, এই কমিশনের সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেওয়ার সক্ষমতা নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খাঞ্জা বিল দখল নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৩০

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
হবিগঞ্জের লাখাইয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
হবিগঞ্জের লাখাইয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

হবিগঞ্জের লাখাইয়ে ধলেশ্বরীর খাঞ্জা বিল দখল নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সংঘর্ষ থামাতে ব্যর্থ হয়। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা বেলা ১টার দিকে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয়রা জানায়, ধলেশ্বরী খাঞ্জা বিলের দখল নিয়ে শিবপুর গ্রামের জনকল্যাণ সমবায় সমিতি ও সন্তোষপুর আনন্দময়ী মৎস্যজীবী সমিতির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। শিবপুরের হারিছ মিয়া জনকল্যাণ সমবায় সমিতির এবং স্বজন গ্রামের আনন্দময়ী মৎস্যজীবী সমিতির নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইউপি চেয়ারম্যান আরিফ আহমেদ রুপম। আজ উভয় পক্ষ বিলটি দখল নিয়ে ফের সংঘর্ষে জড়ায়। সংঘর্ষে দুপক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়। এই দুপক্ষের মধ্যে এর আগে তিনবার সংঘর্ষ হয়েছে।

লাখাই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কৃষ্ণচন্দ্র মিশ্র বলেন, ধলেশ্বরী খাঞ্জা বিল নিয়ে দুটি সমিতির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এর জেরে দুপুরে দুপক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়ায়। থানা-পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে সংঘর্ষ থামায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি বলেন, এর আগেও বিল নিয়ে দুপক্ষের লোকজন একাধিকবার সংঘর্ষে জড়িয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চোখ উপড়ানো নারীর পরিচয় শনাক্ত, ৮ ঘণ্টা পর কথিত প্রেমিক গ্রেপ্তার

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ২৪
গ্রেপ্তার সোহেল রানা। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার সোহেল রানা। ছবি: সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জ সদরের কাশিয়াহাটা নলিচাপাড়া এলাকার কলাবাগান থেকে উদ্ধার হওয়া চোখ উপড়ানো অজ্ঞাত নারীর পরিচয় শনাক্ত করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মো. সোহেল রানা (৩৫) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ সোমবার দুপুরে সদর থানা চত্বরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) নাজরান রউফ জানান, নিহত নারীর নাম মোছা. মরিয়ম বেগম (৪৮)। তিনি সদর উপজেলার খোকসাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা। গ্রেপ্তার হওয়া সোহেল রানা সদর উপজেলার গুনেরগাঁতী গ্রামের মো. আসাদুল্লাহর ছেলে।

পুলিশ সুপার জানান, মরিয়ম বেগম প্রবাসে থাকতেন। প্রায় দুই-তিন বছর ধরে তাঁর সঙ্গে সোহেলের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সোহেল তাঁকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। তবে মরিয়ম সময় নিতে চাইলে তাঁদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয় এবং তিনি অন্যত্র সম্পর্ক তৈরি করেন বলে পুলিশের ধারণা।

পুলিশ জানায়, ৫ ডিসেম্বর তাঁরা দুজন কাশিয়াহাটা এলাকায় দেখা করেন। সেখানে তাঁদের মধ্যে তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়ে সোহেল মরিয়মকে শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহ কলাবাগানের ড্রেনে ফেলে রেখে যান। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় প্রায় আট ঘণ্টার মধ্যে সোহেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই নারীর ছেলে মানিক হোসেন সদর থানায় মামলা করেন। সংবাদ সম্মেলনে সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আহসানুজ্জামানসহ পুলিশের অন্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গতকাল রোববার দুপুরে স্থানীয় লোকজন কাশিয়াহাটা এলাকার আবাদি জমির পাশের একটি কলাবাগানে মরদেহ দেখে পুলিশকে খবর দেন। পরে সদর থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত