Ajker Patrika

২০০ কোটি টাকা লুটপাটের আয়োজন: কালুরঘাট সেতু সংস্কার নিয়ে বিশেষজ্ঞরা

জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১১: ২২
২০০ কোটি টাকা লুটপাটের আয়োজন: কালুরঘাট সেতু সংস্কার নিয়ে বিশেষজ্ঞরা

চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতু নতুন করে নির্মাণের পরিকল্পনা থাকলেও অন্তর্বতীকালে কক্সবাজারের সঙ্গে ট্রেন চলাচলের জন্য পুরোনো জরাজীর্ণ সেতুটিকেই সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) দায়িত্ব দিয়েছে সরকার। এতে ২০০ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান।

মেয়াদোত্তীর্ণ সেতুর ওপর এই অর্থ ব্যয় পুরোটা অপচয় হবে বলে পুরকৌশলের এক অধ্যাপক যেমন শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, তেমনি এটিকে লুটপাটের আয়োজন বলে মনে করছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মাহমুদ ওমর ইমামের মতে, সংস্কার করে সেতুটি ট্রেন চলাচলের উপযোগী করা হলে এটি সর্বোচ্চ এক বছর চলবে এবং তা-ও হবে ঝুঁকিপূর্ণ।

আজকের পত্রিকাকে অধ্যাপক মাহমুদ ওমর ইমাম বলেন, সম্প্রতি তাঁর নেতৃত্বে কালুরঘাট সেতুর সংস্কার নিয়ে একটি সম্ভাব্যতা যাচাইমূলক গবেষণা করা হয়েছে। ওই গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, সংস্কার করেও এই সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চালানো যাবে না।  

অধ্যাপক ইমাম বলেন, ‘সংস্কারের নামে অন্তত ২০০ কোটি টাকা খরচ হবে। এটা অপচয় ছাড়া কিছুই নয়। আমি শতভাগ নিশ্চিত, সংস্কার করেও এই সেতু সর্বোচ্চ এক বছর সার্ভিস দেবে। তাহলে কাজের কাজ কি কিছু হবে?’

রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, সংস্কারের ব্যয়টি নির্ভর করছে বুয়েটের ডিজাইনের ওপর। এই খরচ বাড়তেও পারে, কমতেও পারে।

চট্টগ্রামের জরাজীর্ণ কালুরঘাট সেতু।রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা এস এম সলিমুল্লাহ বাহার বলেন, ২০১৯ সালে নতুন কালুরঘাট সেতু নির্মাণের জন্য আলাদা প্রস্তাবনা আসে। এখন নতুন কালুরঘাট সেতু হবে। যেহেতু এখনই নতুন সেতু সম্ভব নয়, সে জন্য পুরাতন সেতুকে ট্রেন চালানো উপযোগী করাই লক্ষ্য। এই সেতু সংস্কার করে তার ওপর রেললাইন নির্মাণের কাজ ২০২০ সালে শুরু হয়।

কালুরঘাট সেতুর ফোকাল পারসন ও রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী (সেতু) মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, বুয়েটের কাছে ২৫ এক্সেল লোডের ট্রেন চালানোর উপযোগী নকশা চাওয়া হয়েছে। তা পেতে আরও ৪ মাস লাগতে পারে। তখন নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ এবং তারপর পুরাতন সেতু সংস্কার করতে আরও এক বছর লাগতে পারে। 

চুয়েটের অধ্যাপক মাহমুদ ওমর ইমাম বলেন, ২০১০ সালে দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার ও রামু থেকে মিয়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত ১২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প নেওয়া হয়। সে সময় পুরাতন কালুরঘাট সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন যেতে পারবে কি না, সেটি মাথায় রাখেনি সংশ্লিষ্টরা। এমনকি ২০১৭ সালে ঠিকাদার নিয়োগ হওয়ার পরও কালুরঘাট সেতুর বিষয়টি তুলে ধরা হয়নি।

‘ওই প্রকল্প নেওয়ার শুরুতেই কালুরঘাট সেতু দিয়ে যে নতুন ট্রেন চালানো সম্ভব নয়, তা তুলে ধরে নতুন সেতু নির্মাণের পরামর্শ দিয়েছিলাম।’ 

অধ্যাপক ইমাম বলেন, ২০২৮ সালের শেষ দিকে অথবা ২০২৯ সালের প্রথম দিকে নতুন সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে। কিন্তু ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কক্সবাজারে ট্রেন চালাতে চায় রেলওয়ে। সে ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়াবে এই সেতু।

‘কারণ, এই সেতু দিয়ে বর্তমানে যেসব ট্রেন যায়, সেগুলো ১১ দশমিক ৯৬ টন এক্সেল লোডবিশিষ্ট অর্থাৎ ছোট লোকোমোটিভ বা হালকা ওজনের কোচ। কিন্তু কক্সবাজারে যেসব ট্রেন নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে, রেলওয়ের সেসব ট্রেনের ইঞ্জিন ১৫ এক্সেল লোডের।’

চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুসে জন্য ২০০১ সালে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা এই সেতুর ওপর দিয়ে ১৫ এক্সেল লোডের ট্রেন চালানো যায় কি না, তা যাচাই করতে বুয়েটের দ্বারস্থ হয় রেলওয়ে। ২০২১ সালে অক্টোবরে বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের পর্যবেক্ষক দল সেতু পরিদর্শন করে জানালিহাট অংশে আবৃত প্রাচীর এবং সুরক্ষাদেয়ালে ফাটল খুঁজে পায়। এ ছাড়া আরও বড় ধরনের ছয়টি ত্রুটি চিহ্নিত করে তারা।

বুয়েটের পর্যবেক্ষক দলের চিহ্নিত করা বড় ধরনের ত্রুটিগুলোর একটি হলো সেতুর ১ ও ১৫ নম্বর পিয়ার (একধরনের কাঠামো, যা মাটির নিচে বা পানির মধ্যে প্রসারিত থাকে) ইটের গাঁথুনিতে তৈরি। এতে জাহাজ চলাচলের সময় সংঘর্ষ হলে পিয়ারগুলো ভেঙে যেতে পারে। এ ছাড়া সেতুর গার্ডার, ডেক, অ্যাঙ্গেল, গ্যাসেট প্লেট, রিভেট ও অন্যান্য অংশ অনেক ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছে। তাই সেতুটির ভার বহনের ক্ষমতা দিন দিন কমছে বলে জানিয়েছে পর্যবেক্ষক দল।

সেতুর ওপরের অংশের অ্যাপ্রোচ (সেতুর সঙ্গে সংযোগ সড়কটি) লাইনচ্যুত হওয়ার লক্ষণ দেখতে পান পর্যবেক্ষকেরা। তখন বুয়েটের প্রতিবেদনে বলা হয়, সেতুতে গার্ডারের ভার বহনকারী ইস্পাতগুলো অনেকাংশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেতুর দুই পাশের কাঠের পাটাতন ও লোহার বেষ্টনী ঠিকঠাকমতো আছে কি না, তা পরীক্ষা করা দরকার। কারণ, এসব যন্ত্রাংশের কাঠামো বেহাল অবস্থায় আছে। তবে সেতুর ফাউন্ডেশনে কোনো ত্রুটি পায়নি পর্যবেক্ষক দল।

লুটপাট করতেই নাজুক এই সেতু সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে মনে করছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী।

আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘২০১০ সালে হাতে নেওয়া প্রকল্পটিতে কেন কালুরঘাট সেতুর বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি? তখন বিষয়টি প্রকল্পে আনলে বাড়তি এই ব্যয় হতো না। পাশাপাশি নতুন সেতুও হতো, ঠিক সময়ে কক্সবাজার লাইনে ট্রেনও চলত। এটি মূলত তাঁরা ইচ্ছে করেই করেন, নতুন কিছু মানেই লুটপাট।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কৃষকের ঘরে ১২ ফুট লম্বা গাঁজার গাছ, আটক

বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 
দিনাজপুরের বিরামপুরে গাঁজার গাছসহ আটক ব্যক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা
দিনাজপুরের বিরামপুরে গাঁজার গাছসহ আটক ব্যক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় ১২ ফুট উচ্চতার একটি গাঁজার গাছসহ এক কৃষককে আটক করেছে পুলিশ। পরে আজ শুক্রবার তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

বিরামপুর থানার জ্যেষ্ঠ উপপরিদর্শক (এসআই) সাজিদুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জোতবাণী ইউনিয়নের চাকুল গ্রামে অভিযান চালানো হয়। এ সময় মৃত দছির উদ্দিনের ছেলে আজিজার রহমানের (৪৫) বাড়ির একটি পরিত্যক্ত ঘর থেকে গাঁজার গাছটি জব্দ করা হয়।

পরে আজিজার রহমানকে আটক করা হয়। পুলিশ জানায়, গাছটির উচ্চতা প্রায় ১২ ফুট, ওজন ১০ কেজি এবং আনুমানিক মূল্য এক লাখ টাকা।

এ বিষয়ে বিরামপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউর রহমান জানান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে। আজ আসামিকে দিনাজপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিস্ফোরক মামলায় আওয়ামী ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জেলে

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি 
গ্রেপ্তার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নবীর উদ্দিন মোল্লা ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মনোয়ার হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নবীর উদ্দিন মোল্লা ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মনোয়ার হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাবনার চাটমোহরে আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে চাটমোহর থানার পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ও রাতে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আজ শুক্রবার দুপুরে বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নবীর উদ্দিন মোল্লা (৭০) এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও পৌর সদরের মধ্য শালিখা মহল্লার বাসিন্দা মনোয়ার হোসেন (৫৪)।

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল আলম গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল বেলা সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের বামনগ্রাম নিজ বাড়ি থেকে আওয়ামী লীগ নেতা নবীর উদ্দিন মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ছাড়া একই দিন রাতে মধ্য শালিখা মহল্লার নিজ বাড়ি থেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মনোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই দুজনের বিরুদ্ধে চাটমোহর থানায় বিস্ফোরক মামলা রয়েছে। আজ সকালে তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রামেকে মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথমবারের মতো মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথমবারের মতো মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রথমবারের মতো মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। অনেকের ক্ষেত্রে ভর্তি রাখার প্রয়োজন থাকলেও সেটি সম্ভব হতো না। কিছু কিছু রোগী রাখা হতো মেডিসিন বিভাগেই।

এবার প্রতিষ্ঠার ৬৭ বছর পর হাসপাতালটিতে পূর্ণাঙ্গ মনোরোগ ওয়ার্ড চালু হলো। এ ওয়ার্ডে ২৫টি শয্যা আছে। এর মধ্যে পুরুষদের জন্য ১০টি, নারীদের জন্য সাতটি, শিশু-কিশোরদের জন্য পাঁচটি এবং উচ্চ পর্যবেক্ষণের জন্য তিনটি শয্যা সংরক্ষিত। এ ছাড়া রোগীদের থেরাপি ও কাউন্সেলিং রুমসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার সৃষ্টি করা হয়েছে এ ওয়ার্ডে।

রামেক হাসপাতালের সদ্যবিদায়ী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদের উদ্যোগে হাসপাতালের পুরাতন আইসিইউ ভবনে এই ওয়ার্ড করা হয়েছে। গত বুধবার তিনি এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামসহ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী মার্চেই ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন (ডব্লিউএফএমই) থেকে একটি প্রতিনিধিদল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনে আসবে। তারা মনোরোগ বিভাগের ওয়ার্ড না পেলে কলেজের পয়েন্ট কমবে। এ ছাড়া মেডিকেল কলেজের অ্যাক্রেডিটেশনেও সমস্যা হতে পারে। তখন এ কলেজের শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে পড়াশোনা করতে যাওয়ার সুযোগ কমবে। এ ছাড়া এফসিপিএস এবং ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্যও এই ওয়ার্ডটি জরুরি ছিল।

তাই রাজশাহী মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে এই ওয়ার্ড চালু করার জন্য হাসপাতাল পরিচালকের কাছে অনুরোধ করা হয়। সবকিছু শুনে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ এই ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নেন। ওয়ার্ডে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও নার্স দেওয়া হয়েছে। ওয়ার্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোস্তফা আলী।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় এ হাসপাতালে যে ৬৭ বছরেও মানসিক রোগীদের জন্য ওয়ার্ড চালু হয়নি, এটিই অবাক করার বিষয়। প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চালু করেছি। এখন থেকে এ অঞ্চলের মানসিক রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি থেকেও চিকিৎসা নিতে পারবে।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহাম্মদ রামেক হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি। এরপর তিনি হাসপাতাল ও রোগীদের কল্যাণে নতুন অনেক উদ্যোগ নিয়ে বাস্তবায়ন করেছেন। হাসপাতালকে করে তুলেছেন রোগীবান্ধব। বাড়িয়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসাসেবার মান। বৃহস্পতিবার তিনি নতুন পরিচালক পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।

মানসিক রোগীদের জন্য নতুন ওয়ার্ড চালুর আগে গেল ২৩ অক্টোবর শুধু সাপে কাটা রোগীদের জন্য হাসপাতালে বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করেন শামীম আহাম্মদ। এরপর এখন পর্যন্ত হাসপাতালে একজন সাপে কাটা রোগীরও মৃত্যু হয়নি। আগে প্রায় প্রতিদিনই সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু হতো এ হাসপাতালে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মান্নাকে ৩৮ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ পরিশোধে ‘কলব্যাক নোটিশ’

শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ২০
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ফাইল ছবি
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ফাইল ছবি

আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার বিরুদ্ধে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা খেলাপি ঋণ পরিশোধে ‘কলব্যাক নোটিশ’ জারি করেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, বগুড়া শাখা। গত বুধবার ইসলামী ব্যাংক, বগুড়া শাখার প্রধান মো. তৌহিদ রেজার স্বাক্ষরে এ নোটিশ ইস্যু করা হয়।

নোটিশে বলা হয়েছে, ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না করা হলে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। ব্যাংকের নোটিশ অনুযায়ী, ২০১০ সালে ২২ কোটি টাকার বিনিয়োগ অনুমোদন করা হলেও মুনাফা, চার্জ ও জরিমানা পরিশোধ না করায় বর্তমানে মোট বকেয়া দাঁড়িয়েছে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। নোটিশে বলা হয়, আফাকু কোল্ড স্টোরেজ একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও মান্না ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণ পরিশোধ করেননি। বারবার নোটিশ দেওয়া হলেও টাকা পরিশোধের কোনো চেষ্টাও করেননি তিনি।

গত বুধবার ইসলামী ব্যাংক, বগুড়া শাখার প্রধান মো. তৌহিদ রেজার স্বাক্ষরে এই নোটিশ ইস্যু করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
গত বুধবার ইসলামী ব্যাংক, বগুড়া শাখার প্রধান মো. তৌহিদ রেজার স্বাক্ষরে এই নোটিশ ইস্যু করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়া শাখাপ্রধান তৌহিদ রেজা স্বাক্ষরিত নোটিশে আরও বলা হয়, ‘মঞ্জুরিপত্রের নিয়মানুযায়ী প্রতিটি ডিলে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে কিস্তির টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও আপনাকে/আপনাদেরকে মৌখিকভাবে, ব্যক্তিগতভাবে ও মোবাইল ফোনে বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও আপনি/আপনারা তা পরিশোধ করেননি। ইতিপূর্বে আপনাকে লিখিতভাবে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে, তবুও বিনিয়োগের দায় পরিশোধ করেননি। আপনার/আপনাদের লেনদেনের পরিস্থিতি দেখে আমাদের কাছে অনুমিত হচ্ছে যে, আপনার/আপনাদের সঙ্গে আমাদের আর ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অতএব, আগামী ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বিনিয়োগের সমুদয় দায় ৩৮৪.৭৬ মিলিয়ন টাকা পরিশোধ করে হিসাবসমূহ নিষ্পত্তি করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য থাকবে।’

এদিকে, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসন থেকে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। কিন্তু গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) তৃতীয় অধ্যায় (নির্বাচন) ১২(১)(ঠ) ধারা অনুসারে কোনো ঋণগ্রহীতা খেলাপি হলে তিনি নির্বাচনে অযোগ্য বিবেচিত হবেন।

এ বিষয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ আছে, এটা সঠিক। তবে চিঠির বিষয়ে এখনো কিছু জানি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত