Ajker Patrika

মাইলস্টোনের মাহরীন চৌধুরীকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিতে না পারা আমাদের ব্যর্থতা: হাসনাত আবদুল্লাহ

চাঁদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ জুলাই ২০২৫, ১৭: ৪৫
বুধবার চাঁদপুর শহরের বাসস্ট্যান্ডে এনসিপির দেশব্যাপী ‘দেশ গড়তে জুলাই পথযাত্রা’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন হাসনাত আবদুল্লাহ। ছবি: আজকের পত্রিকা
বুধবার চাঁদপুর শহরের বাসস্ট্যান্ডে এনসিপির দেশব্যাপী ‘দেশ গড়তে জুলাই পথযাত্রা’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন হাসনাত আবদুল্লাহ। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক মাহরীন চৌধুরীকে যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিতে পারিনি। এটি আমাদের ব্যর্থতা। তিনি ২০ জন শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে নিজের জীবন দিয়েছেন। এ দেশে বাহিনী ছাড়া সিভিলিয়ানরা কখনো হিরো হতে পারেন না।

আজ বুধবার দুপুরে চাঁদপুর শহরের বাসস্ট্যান্ড এনসিপির দেশব্যাপী ‘দেশ গড়তে জুলাই পথযাত্রা’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

হাসনাত বলেন, ‘বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তির সবার দায়ভার অবশ্যই সংশ্লিষ্ট বাহিনীকে নিতে হবে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা এখনো আগের মতো। আমরা দেখেছি, ঘটনার পর ওই কলেজে শিক্ষার্থীদের বেধড়ক পেটানো হয়েছে। প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি।’

হাসনাত বলেন, ‘দিন শেষে আমাদের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে। আপনারা দেখেছেন, গতকাল ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ লাশের ওপর দিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করেছে। আওয়ামী লীগের অধ্যায় শেষ। আওয়ামী লীগ যদি আবারও ফেরার চেষ্টা করে, তাহলে এই শোক শক্তিতে পরিণত হয়ে তাদের ভবিষ্যতের সম্ভাবনাকেও বন্ধ করে দেওয়া হবে।’

ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ সম্পর্কে এনসিপির এ নেতা বলেন, ‘আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা একসঙ্গে একটি সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণ করব। যে বাংলাদেশে গুম ও খুন হবে না, চিকিৎসার নিশ্চয়তা থাকবে, সন্তানেরা স্কুলে গেলে বিল্ডিং ভেঙে পড়বে না। আকাশ থেকে বিমান স্কুলে ভেঙে পড়বে, এমন বাংলাদেশ চাই না।’

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এনসিপির চাঁদপুর জেলার প্রধান সমন্বয়ক মো. মাহবুব আলম। কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন।

এ সময় বক্তব্য দেন এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক মো. মাহবুব আলম, মো. মিরাজ মিয়া ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা এনসিপির আহ্বায়ক মাহবুব তালুকদার।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বক্তব্যে বলেন, ‘চাঁদপুরে আমার জন্ম এবং এখানকার মাটিতেই আমাকে মিশে যেতে হবে। আল্লাহ ছাড়া আমরা কাউকে ভয় পাই না। কেউ যদি ষড়যন্ত্র করে আমাদের বারবার হত্যা ও খুন করতে আসে, ততবার আমরা জেগে উঠে বলব—বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনার মতো স্বৈরাচার কায়েম হতে দেব না। চাঁদপুরে কোনো চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস ও বালুখেকোদের প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।’

নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘চাঁদপুরের অনেক গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার কারণে বহু মানুষ তাদের বসতবাড়ি হারিয়ে বিভিন্ন স্থানে ছিন্নমূল হয়ে বসবাস করছে। এসব মানুষের চোখের দিকে তাকিয়ে হলেও আল্লাহর ওয়াস্তে আপনারা চাঁদপুরকে রক্ষার জন্য বিভিন্ন ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকুন।’

এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বক্তব্যে বলেন, ‘৫ আগস্টের পর যত ঘটনা হয়েছে, এসব ঘটনায় যেসব তদন্ত কমিটি হয়েছে, এসব কমিটিকে প্রত্যেকটি ঘটনার পেছনে কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও পদ্ধতি দায়ী, সেগুলো খোঁজে বের করে তদন্ত সাপেক্ষে যেন তাদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসে। বাংলাদেশে এমন ধ্বংসের পরে আর কোনো চুরির খেলা দেখতে চাই না।’

এই এনসিপি নেতা বলেন, ‘আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক মতভেদ থাকতে পারে। আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসর আমাদের মধ্যে ঢুকে অরাজকতা তৈরি করবে সেই সুযোগ আমরা আর এই বাংলাদেশে দেব না। আমাদের রাজনৈতিক আদর্শ ও নাম ভিন্ন হতে পারে। আমরা বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন নামে রাজনৈতিক লড়াই করতে পারি। যদি আওয়ামী লীগের প্রশ্ন আসে, তাহলে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এইসব সন্ত্রাসীকে প্রতিহত করব।’

সংগঠনের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বক্তব্যে বলেন, ‘বিমান দুর্ঘটনার পরবর্তী ঘটনাগুলো কোনো স্বাভাবিক ঘটনা নয়। আমরা সবাই শোকাহত দিন পার করছি। জুলাই পদযাত্রা এই পর্যায়ে এসে শোক পদযাত্রায় পরিণত হয়েছে।’

তিনি চাঁদপুরবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের এই মাটিতে কয়জন ব্যক্তি শহীদ হয়েছেন। আপনারা এই শহীদ মায়েদের আর্তনাদ শুনেছেন। বাংলাদেশের উর্বর মাটি শহীদদের রক্তে রঞ্জিত। আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে, কত দিন পর্যন্ত এই শহীদদের রক্তের মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত হবে।’

সামান্তা বলেন, ‘আমরা দেখেছি, এই অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই আন্দোলনের দুই হাজার শহীদের দায়িত্ব নেয়নি। তাদের পরিবারের দায়িত্বও নেয়নি। একই সঙ্গে আমরা বিস্মিত হয়েছি, এই অন্তর্বর্তী সরকার মাইলস্টোন কলেজের নিহত ও আহত শিক্ষার্থীদের জন্য সাহায্য চাচ্ছে।’

পদযাত্রা অনুষ্ঠান শেষে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের রুহের মাগফিরাত ও আহত ব্যক্তিদের সুস্থতা কামনায় দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন এনসিপি চাঁদপুর জেলা কমিটির সদস্য মুফতি মাহমুদুল হাসান।

পদযাত্রার আগে এনসিপি নেতারা চাঁদপুর সার্কিট হাউস থেকে একটি শোক র‍্যালি নিয়ে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়ক হয়ে পদযাত্রাস্থলে এসে উপস্থিত হন। এর আগে চাঁদপুর সার্কিট হাউস সভাকক্ষে জুলাই আন্দোলনের শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

এদিকে চাঁদপুর শহরে অনুষ্ঠান শেষে এনসিপি নেতারা হাজীগঞ্জ উপজেলা সদরের চৌরাস্তা বিশ্বরোড এলাকায় শহীদ আজাদ সরকার চত্বর উদ্বোধন করেন। সর্বশেষ শাহরাস্তি উপজেলার দোয়াভাঙ্গা এলাকায় পথসভা করেন। সেখানে বক্তব্য দেন মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। অনুষ্ঠান শেষে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা কুমিল্লার উদ্দেশে সড়কপথে চাঁদপুর ত্যাগ করেন।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নরসিংদীতে তিন চোখ ও দুই মুখের বাছুরের জন্ম, এলাকায় চাঞ্চল্য

নরসিংদী প্রতিনিধি
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীতে অদ্ভুত আকৃতির বাছুরের জন্ম হয়েছে। বাছুরটির রয়েছে দুটি মুখ, দুটি জিহ্বা, দুটি কান ও তিনটি চোখ। এর মধ্যে একটি চোখ বাছুরের কপালের মাঝখানে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

২৩ ডিসেম্বর রাতে শিবপুর উপজেলার চক্রধা ইউনিয়নের পুবেরগাঁও গ্রামে স্থানীয় ইউপি সদস্য কাশেম খানের খামারে বাছুরটির জন্ম।

খামারমালিক কাশেম খান বলেন, বাছুরটি জন্মের পর থেকেই অসুস্থ। স্বাভাবিকভাবে দুধ পান করতে না পারায় ফিডারের মাধ্যমে দুধ খাওয়াতে হচ্ছে।

তিনি জানান, তাঁর খামারের একটি গাভি বাছুরটির জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেন, এর আগেও গাভিটির বাছুর হয়েছে। কিন্তু এবারের মতো এমন অদ্ভুদ বাছুর আগে কখনো হয়নি।

ঘটনাটি জানাজানির পর থেকেই বাছুরটিকে একনজর দেখতে আশপাশের কৌতূহলী মানুষ খামারে আসছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল জলিল বলেন, ‘আমরা ছোটবেলা থেকে গরু-ছাগল দেখছি। কিন্তু তিন চোখ আর দুই মুখের বাছুর এই প্রথম দেখলাম। খবর পেয়ে দূর থেকে এসেছি।’

আরেক স্থানীয় নারী জরিনা বেগম বলেন, ‘বাছুরটা দেখতে অদ্ভুত লাগলেও মায়া হচ্ছে। বাছুরটির স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। অনেকেই দ্রুত প্রাণিসম্পদ বিভাগের চিকিৎসকের পরামর্শ ও চিকিৎসা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিচ্ছেন।’

এর আগে এ ধরনের বাছুর জন্মের বিষয়ে প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সাধারণত জেনেটিকস ডিফেক্টের কারণে গাভির এমন ত্রুটিপূর্ণ বাচ্চার জন্ম হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজীপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে নানি-নাতনিসহ নিহত ৩

গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের কালীগঞ্জে রেললাইন দিয়ে হাঁটার সময় ট্রেনে কাটা পড়ে নানি-নাতনিসহ তিন নারী নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে টঙ্গী-ভৈরব রেলপথের আড়িখোলা রেলস্টেশনসংলগ্ন টেকপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত নারীরা হলেন কালীগঞ্জ পৌরসভার দেওয়ালেরটেক গ্রামের মোবারক হোসেনের স্ত্রী সাদিয়া বেগম (২৪), একই এলাকার বাবু মিয়ার মেয়ে অনাদি আক্তার (১৩) এবং নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার মরজাল এলাকার বাসিন্দা কমলা বেগম (৫৫)। নিহত কমলা বেগম ও অনাদি আক্তার সম্পর্কে নানি-নাতনি এবং সাদিয়া বেগম তাঁদের প্রতিবেশী ছিলেন।

স্থানীয়রা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আড়িখোলা রেলব্রিজ এলাকায় রেললাইনের ওপর দিয়ে তিনজন হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নোয়াখালীগামী ‘উপকূল এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি চলে আসে। এ সময় তাঁরা রেলব্রিজের ওপর থাকায় সেখান থেকে দ্রুত সরে যাওয়ার সুযোগ পাননি। পরে ট্রেনটি তাঁদের ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই কমলা বেগম ও সাদিয়া বেগমের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় অনাদি আক্তারকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জিয়াউর রহমান জানান, অনাদি আক্তারকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওবায়দুল হক জানান, এটি রেলওয়ের আওতাধীন দুর্ঘটনা হওয়ায় রেলওয়ে পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।

রেলওয়ে নরসিংদী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) দিলীপ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল সম্পন্ন করেছি। নিহত নারীদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বিনা ময়নাতদন্তে লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আরাকান আর্মিদের জন্য নেওয়া হচ্ছিল ১৫০০ মশারি, আটক ৫

থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি  
মশারিসহ জব্দ করা মালপত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা
মশারিসহ জব্দ করা মালপত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা

বান্দরবানের থানচি উপজেলায় দুটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা তল্লাশি করে ১ হাজার ৫০০টি মশারি, ১২০টি নৌকার ইঞ্জিনের পাখা উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে তিন্দুমুখ বিজিবি চেকপোস্ট পার হওয়ার সময় নৌকাগুলো তল্লাশি করে এসব জিনিস জব্দ করে বিজিবি। এসব মশারি ও ইঞ্জিনের পাখা বান্দরবানের থানচির বড় মদক সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির জন্য নেওয়া হচ্ছিল বলে জানিয়েছে বিজিবি। এ ঘটনায় নৌকা দুটি থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার তাঁদের থানচি থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় আটক ব্যক্তিরা হলেন থোয়াই হ্লা চিং মারমা, উমং সাইং মারমা, হ্লাচিংথোয়াই মারমা, উক্যছাইন মারমা ও মো. ইউনুস।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে বিজিবি বলিপাড়া ৩৮ ব্যাটালিয়ানের সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেনের জানান, নিজস্ব গোয়েন্দা সূত্রে তাঁরা জেনেছেন, দীর্ঘদিন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ওষুধ, কাপড়, জুতা, মোজা, মশারি, নৌকা ইঞ্জিনের পাখা ও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ মিয়ানমারের আরাকান আর্মির কাছে সরবরাহ করছে একটি সিন্ডিকেট চক্র। পাচারকারীদের ধরতে সীমান্তের বিজিবি চৌকিগুলোতে বিজিবি সদস্যরা সতর্ক রয়েছেন।

জাকির হোসেন বলেন, গতকাল বুধবার তিন্দুমুখ বিজিবি চেকপোস্ট অতিক্রম করার সময় মালবাহী তিনটি ইঞ্জিন নৌকা দেখে বিজিবির সদস্যদের সন্দেহ হয়। এ সময় নৌকা থামাতে বললে একটি নৌকা দ্রুত চলে যায়। বাকি দুটি নৌকা তল্লাশি করে ১ হাজার ৫০০টি মশারি, ১২০টি ইঞ্জিন বোটসহ অন্যান্য পণ্য পাওয়া যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নলছিটি লঞ্চঘাট ওসমান হাদির নামে নামকরণ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
নলছিটি লঞ্চঘাট ।  ছবি: আজকের পত্রিকা
নলছিটি লঞ্চঘাট । ছবি: আজকের পত্রিকা

নলছিটি উপজেলার লঞ্চঘাট এখন থেকে শহীদ শরিফ ওসমান হাদির নামে পরিচিত হবে। জন্মস্থান ও শৈশবের স্মৃতিতে গাথা এই লঞ্চঘাট তাঁর নামের সঙ্গে চিরস্থায়ীভাবে যুক্ত হলো।

বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় (২৫ ডিসেম্বর) জানান, শহীদ ওসমান হাদির জন্মস্থান নলছিটি। শৈশব, বেড়ে ওঠা এবং জীবনসংগ্রামের সঙ্গে লঞ্চঘাট এলাকার নিবিড় সম্পর্ক থাকার কারণে এটি তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে। বর্তমানে টার্মিনালের সংস্কার ও রঙের কাজ চলমান রয়েছে।

আগামী শনিবার নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন ঘাটটি পরিদর্শন করবেন বলেও জানান তিনি।

নলছিটি লঞ্চঘাট শহীদ ওসমান হাদির জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঘাট থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে তার পৈতৃক বাড়ি। নদীর ধারে দাঁড়িয়ে মানুষের আসা-যাওয়া দেখা এবং লঞ্চের ভিড়ে সময় কাটানো—এই ঘাট ছিল তার বেড়ে ওঠার নীরব সাক্ষী।

ঘাট এলাকার ব্যবসায়ী রব হাওলাদার বলেন, ‘আমরা চাইছিলাম হাদির স্মরণে এমন কিছু হোক, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম মনে রাখবে। তার শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত লঞ্চঘাটের নাম তার নামে হওয়া নিঃসন্দেহে স্মরণীয় সিদ্ধান্ত।’

ব্যবসায়ী শাহাদত আলম ফকির যোগ করেন, ‘এই ঘাটে আমরা হাদিকে ছোটবেলা থেকে দেখেছি। সে এখানকারই ছেলে ছিল। আজ তার নামে ঘাটের নামকরণ হওয়ায় আমরা গর্বিত।’

ওসমান হাদির প্রতিবেশী বেলায়েত হোসেন নান্নু বলেন, ‘হাদি এই এলাকার সন্তান। এই ঘাট, এই নদী, এই মানুষ—সবকিছুতেই তার স্মৃতি ছড়িয়ে আছে। লঞ্চঘাটের নাম তার নামে হওয়া মানে, সে এখানেই চিরদিন বেঁচে থাকবে।’

উল্লেখ্য, ১২ ডিসেম্বর হত্যার উদ্দেশ্যে ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। তাঁকে প্রথমে ঢাকায় ভর্তি করা হয় এবং পরে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর মারা যান ওসমান হাদি। পরবর্তীকালে তাঁর মরদেহ দেশে আনা হয় এবং সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে (জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে) সমাহিত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত