Ajker Patrika

নাসিরনগরে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১০

নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২৩, ১৭: ৪৫
নাসিরনগরে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১০

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে উপজেলা বিএনপির দুপক্ষের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

আজ বৃহস্পতিবার উপজেলার নাসিরনগর সরকারি কলেজ মোড়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

গুরুতর আহতরা হলেন উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দিন, সদর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মো. রায়হান ও সদর ইউনিয়ন যুবদল সাধারণ সম্পাদক শাহ মোহাম্মদ ইসমাইল।

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের মধ্যে আধিপত্য ধরে রাখতে উপজেলা বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে মারমুখী অবস্থা বিরাজ করছে। এ নিয়ে এলাকায় আতঙ্ক ও সংশয় তৈরি হয়। এক সপ্তাহ ধরে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা একরামুজ্জামান সুখনের সমর্থক ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক সমর্থকদের মধ্যে বিভিন্ন সময় বাগ্‌বিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ আজ দুপুরে উপজেলা সদরে সরকারি কলেজ মোড়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

হাসপাতালে আহত বিএনপির নেতা-কর্মীগতকাল উপজেলায় বিএনপির সভাপতির অনুসারী স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব শাহ আলম পাঠানকে হুমকি দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা একরামুজ্জামান সুখনের অনুসারী স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক এনামুল হক সুমন, তাঁর সঙ্গে থাকা নিউটন ও সাদেক। হুমকির বিষয়টি জানার পর উভয় পক্ষের নেতা-কর্মীরা উপজেলা বিএনপির দলীয় অফিসে এসে অবস্থান নিলেও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

আজ উপজেলা সদরে দাতমণ্ডল গ্রাম থেকে এক সামাজিক অনুষ্ঠান শেষে ফেরার পথে কলেজ মোড় এলে উপজেলা বিএনপির সভাপতির পক্ষের লোকজন হামলা করে একরামুজ্জামানের সমর্থকদের ওপর। এ সময় ১০ জন নেতা-কর্মী আহত হন।

এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. এম এ হান্নান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের বিএনপির মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। ছাত্রদলের পূর্বশত্রুতার জেরে এ সংঘর্ষ হতে পারে বলে তার ধারণা করছি।’

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা একরামুজ্জামান সুখন ব্যবসায়িক কাজে ব্যস্ত থাকায় এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুল্লাহ সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, আজ দুপুরে নাসিরনগর কলেজ মোড়ে বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ মামলা করেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অবৈধ ৫ সার কারখানা বর্জ্যে বিপাকে স্থানীয়রা

  • জনবসতিপূর্ণ এলাকায় অনুমোদনহীন সার কারখানা।
  • দুর্গন্ধে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি­
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

জৈব কৃষি এবং পরিবেশবান্ধব সারের ক্রমবর্ধমান চাহিদার সুযোগ নিয়ে চুয়াডাঙ্গার আলুকদিয়া ইউনিয়নে গত কয়েক মাসে পাঁচটি ছোট-বড় ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো সার) ও অন্যান্য জৈবসারের কারখানা গড়ে উঠেছে। গ্রামীণ অর্থনীতিতে এই উদ্যোগ গতি আনলেও, কারখানার অব্যবস্থাপনা, প্রয়োজনীয় পরিবেশগত ছাড়পত্র এবং সার লাইসেন্স না থাকায় আশপাশের পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কারখানার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সঠিক না হওয়ায় বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বেড়েছে, যা স্থানীয়ভাবে বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তা ছাড়া কোটি কোটি টাকার ব্যবসা হওয়া সত্ত্বেও আয়কর বা মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) সরকারের কোষাগারে সঠিকভাবে জমা না দেওয়ায় রাষ্ট্র বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে বলেও জানান তাঁরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নে কৃষি খামার, মডার্ন অ্যাগ্রো ফার্ম, চুয়াডাঙ্গা অ্যাগ্রো কম্পোস্ট, চুয়াডাঙ্গা ভার্মি কম্পোস্ট ও মা অ্যাগ্রো নামের পাঁচটি অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠানে সার উৎপাদন করা হচ্ছে। জনবসতিপূর্ণ এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এসব কারখানায় খোলামেলা পরিবেশে বিপুল কাঁচা গোবর ও জৈব পদার্থ স্তূপ করে রাখা হয়েছে। ফলে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে চুয়াডাঙ্গা অ্যাগ্রো কম্পোস্ট ও চুয়াডাঙ্গা ভার্মি কম্পোস্টের স্বত্বাধিকারী এরফান বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি, আবেদন করেছি। তবে এখনো লাইসেন্স নেই।’ কৃষি খামার নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী আশরাফুল বলেন, ‘এত নিয়ম আইন জানি না। এখন সরকার বন্ধ করতে বললে বন্ধ করে দেব।’

সরেজমিনে দেখা যায়, অননুমোদিত কারখানাগুলো বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মানদণ্ড অনুসরণ করছে না। ভার্মি কম্পোস্ট তৈরির প্রধান উপাদান হলো গোবর এবং অন্যান্য জৈব বর্জ্য। সঠিকভাবে প্রক্রিয়াজাত না করলে এই কাঁচামাল এবং প্রক্রিয়াজাতকরণ-পরবর্তী অব্যবস্থাপিত বর্জ্য সরাসরি পরিবেশে মিশে যাচ্ছে। কারখানার অপরিশোধিত তরল বর্জ্য সরাসরি নিকটস্থ পুকুর, খাল বা কৃষিজমিতে ফেলার কারণে ভূপৃষ্ঠের জল এবং মাটির মারাত্মক দূষণ ঘটছে। এই বর্জ্যের কারণে জলজ প্রাণীরও ক্ষতি হচ্ছে। এ ছাড়া কাঁচা গোবর ও জৈব পদার্থ খোলা জায়গায় দীর্ঘ সময় স্তূপ করে রাখলে বা সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করলে তা পচনের সময় তীব্র দুর্গন্ধ ছড়ায়। ফলে বায়ুর গুণমান নষ্ট এবং আশপাশের মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে যাচ্ছে। দুর্গন্ধ ও পরিবেশদূষণের কারণে কারখানা পরিচালনাকারীদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রায়ই বিরোধ তৈরি হচ্ছে বলেও জানা গেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনিছুর রহমান বলেন, ‘অনুমোদনহীন কারখানা চালু রাখা যাবে না। আমরা বিষয়টির খোঁজ নিয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’

চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নরেশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘আলুকদিয়ায় কয়েকটি অবৈধ সার কারখানার বিষয়ে শুনেছি। আমরা দ্রুতই সেখানে অভিযান চালাব। ওই এলাকায় কেউ ছাড়পত্র নেননি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাজারের নামে ফুটপাত ভাড়া বিএনপি নেতার

গনেশ দাস, বগুড়া 
ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধভাবে বসানো হয়েছে দোকান। সম্প্রতি বগুড়ার তিনমাথা রেলগেট বাজার এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধভাবে বসানো হয়েছে দোকান। সম্প্রতি বগুড়ার তিনমাথা রেলগেট বাজার এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

বগুড়ায় বাজার ইজারার নামে মহাসড়কসংলগ্ন ফুটপাত ও ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ দোকান বসিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে বগুড়া শহর বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে। সেই নেতার নাম সায়েদুল ইসলাম সায়েদ। তিনি বগুড়া শহর বিএনপির ১৩ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি।

জানা গেছে, বগুড়া পৌরসভা থেকে তিনমাথা রেলগেট বাজার ইজারা নিয়েছেন সায়েদুল ইসলাম সায়েদ। কিন্তু বাজার ছাড়াও মহাসড়কসংলগ্ন ফুটপাত ও ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ দোকান বসিয়ে প্রতিদিন প্রতিটি দোকান থেকে ৩০ টাকা করে চাঁদা নেন তিনি।

জানতে চাইলে ফ্লাইওভারের নিচে বসানো দোকানদার রাসেল, জালাল ও ইদ্রিস জানান, ফুটপাত ও ফ্লাইওভারের নিচে অস্থায়ী দোকান বসানোর অনুমতি পেতে এবং ব্যবসা চালাতে প্রতিদিন ৩০ টাকা হারে চাঁদা দিতে হচ্ছে। ইজারাদারের নিয়োজিত লোকজন পৌরসভার রশিদ দিয়ে চাঁদা নিলেও সেখানে টাকার অঙ্ক লেখা থাকে না। কেউ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে দোকান সরিয়ে দেওয়ার হুমকি, এমনকি হয়রানির অভিযোগও রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা নিয়ম মেনে দোকান করতে চাই। কিন্তু প্রতিদিন নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা না দিলে ব্যবসা করতে দেওয়া হয় না।’

বগুড়া পৌরসভার বাজার পরিদর্শক আব্দুল হাই বলেন, শহরের মধ্যে কিছু অস্থায়ী বাজার রয়েছে, যা পৌরসভা থেকে পেরিফেরি করা হয়নি। যেখানে বাজার বসে, সেই স্থানকে বাজার হিসেবে ইজারা দেওয়া হয়েছে। তিনমাথা রেলগেট বাজার বাংলা ১৪২৩ সনের জন্য ৫ লাখ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে ইজারাদার ও বিএনপি নেতা সায়েদুল ইসলাম সায়েদ বলেন, ‘৫ লাখ টাকায় বাজার ইজারা নেওয়া হলেও পৌরসভা থেকে বাজারের অবস্থান চিহ্নিত করে দেওয়া হয়নি। আয়কর ভ্যাট এবং অন্যান্য খরচ দিয়ে আমার ৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ। বাজারের স্থান নির্ধারণ করা না থাকায় এবং বিনিয়োগ করা টাকা তুলতে ফুটপাত এবং ফ্লাইওভারের নিচে বসা দোকান থেকে ইজারার টাকা তুলতে হয়।’

চাঁদা আদায়ের রশিদ
চাঁদা আদায়ের রশিদ

এ বিষয়ে বগুড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল মনসুর বলেন, ‘ফুটপাত ও ফ্লাইওভারের নিচে দোকান বসানো আইনবিরোধী। সাসেক প্রকল্প থেকে এখনো মহাসড়ক আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। তারপরও এসব অবৈধ দোকান উচ্ছেদ ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

হাইওয়ে পুলিশ বগুড়া রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ শহিদ উল্লাহ বলেন, ‘মহাসড়কের পাশের ফুটপাত এবং ফ্লাইওভারের নিচে দোকান বাসানোর কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। হাইওয়ে পুলিশ এর আগেও এসব অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করেছে। শিগগির আবারও উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চুয়াডাঙ্গার দুই আসন: একটিতে লড়াইয়ের আভাস, অন্যটিতে এগিয়ে বিএনপি

  • নেতা-কর্মীদের নিয়ে প্রচারে সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
  • কর্মসংস্থানে জোর বিএনপির প্রার্থীদের।
  • কৃষি ও স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়নের অঙ্গীকার জামায়াতের।
মেহেরাব্বিন সানভী, চুয়াডাঙ্গা
মাহমুদ হাসান খান বাবু, মো. শরীফুজ্জামান শরীফ, রুহুল আমিন, তৌহিদ হোসেন, মাসুদ পারভেজ রাসেল, মোল্লা ফারুক এহসান, আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা ও শেখ সেলিম। ছবি: সংগৃহীত
মাহমুদ হাসান খান বাবু, মো. শরীফুজ্জামান শরীফ, রুহুল আমিন, তৌহিদ হোসেন, মাসুদ পারভেজ রাসেল, মোল্লা ফারুক এহসান, আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা ও শেখ সেলিম। ছবি: সংগৃহীত

একসময় চুয়াডাঙ্গার দুটি আসনেই ছিল বিএনপির আধিপত্য। আগামী নির্বাচনেও দৃশ্যত চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে এগিয়ে বিএনপি। তবে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে জামায়াতের শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে দলটিকে। সেখানে দুই দলের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন ভোটাররা। দুই আসনেই নেতা-কর্মীদের নিয়ে জোর প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।

চুয়াডাঙ্গা-১ আসনটি ১৯৯১ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বিএনপির দখলে ছিল। ২০০৮ সালের পর থেকে নিয়ন্ত্রণ ছিল আওয়ামী লীগের হাতে। এবার এখানে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী দলের জেলা সেক্রেটারি মো. শরীফুজ্জামান শরীফ। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ রাসেল। ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হতে পারেন জহুরুল ইসলাম। এনসিপি থেকে আলোচনায় আছেন দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব মোল্লা ফারুক এহসান। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) প্রার্থী হতে পারেন কেন্দ্রীয় সহসভাপতি তৌহিদ হোসেন। ২০ ডিসেম্বর জেলা নির্বাচন অফিস ঘোষিত চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী, এখানে মোট ভোটার ৫ লাখ ৭ হাজার ৪৮১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৫১ হাজার ৯৭১ জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ৫৫ হাজার ৫০৩ জন।

মো. শরীফুজ্জামান শরীফ বলেন, ‘নির্বাচিত হলে চুয়াডাঙ্গা শহরে বাইপাস সড়ক, আলমডাঙ্গায় বড় হাসপাতাল, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন করব। শিল্পকারখানা গড়ে তুলে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করব। বিএনপির ৩১ দফা রূপরেখা এই অঞ্চলের অবকাঠামো, ব্যবসা-বাণিজ্য, শ্রমজীবী ও মধ্যবিত্তদের জন্য একটি গ্যারান্টি হবে। ধানের শীষ বিজয়ী হলে আধুনিক ও জনবান্ধব মডেল শহর গড়ে তুলব।’

অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ রাসেল বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের পর মানুষ সন্ত্রাসমুক্ত স্বচ্ছ নির্বাচন চায়। কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা, জনগণের এই তিন প্রত্যাশায় ন্যায়ভিত্তিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে আমরা প্রস্তুত। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।’

চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে ১৯৯১ সালে জামায়াতের টিকিটে নির্বাচিত হন হাবিবুর রহমান। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে বিএনপি থেকে নির্বাচিত হন হাজী মো. মোজাম্মেল হক। ২০০৮ সাল থেকে আসনটি আওয়ামী লীগের দখলে ছিল। এবার এখানে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী দলের জেলা সভাপতি ও বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী জেলা আমির অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন। ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হতে পারেন জেলা সভাপতি হাসানুজ্জামান সজীব। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) থেকে আলোচনায় আছেন শেখ সেলিম। আসনটিতে মোট ভোটার ৪ লাখ ৮৬ হাজার ১৯৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৪৩ হাজার ৩১ জন। নারী ভোটার ২ লাখ ৪৩ হাজার ১৬৩ জন।

মাহমুদ হাসান খান বাবু ব্যবসায়ী নেতা হওয়ায় এলাকায় তাঁর যাতায়াত অপেক্ষাকৃত কম। তবে ভোটকে সামনে রেখে নেতা-কর্মীদের নিয়ে জোর প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। জামায়াতের রুহুল আমিন আগে থেকেই এলাকায় সক্রিয়। সাধারণ ভোটাররা বলছেন, এখানে বিএনপি ও জামায়াত দুই দলের মধ্যে শক্ত লড়াই হবে।

মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, ‘জেলার উন্নয়নে আমরা একটি পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় চাই। অবকাঠামোগত উন্নয়ন, রাস্তাঘাট, বিশেষ করে চুয়াডাঙ্গার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা, প্রতি উপজেলায় ৫০ শয্যার হাসপাতালগুলোকে ২০০ শয্যা করার বিষয়ে আমরা কাজ করব। বেকারত্ব দূরীকরণে দলীয় কর্মসূচির আলোকে কাজ করব।’

জামায়াতের রুহুল আমিন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমলে নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়িয়েছি। মানুষের জন্য কাজ করেছি। নির্বাচনের জন্য আমরা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড চাই। আমাদের প্রত্যাশা, এবার বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ব্যতিক্রমী নির্বাচন হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অফিস দখল নিয়ে জুলাই রেভেলসের দুজনকে জখম

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
জুলাই রেভেলস সংগঠনের সদস্যের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার মো. মাসুম ও মো. ফাহিম খান। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
জুলাই রেভেলস সংগঠনের সদস্যের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার মো. মাসুম ও মো. ফাহিম খান। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

রাজধানীর উত্তরায় ‘অফিস দখল’কে কেন্দ্র করে জুলাই রেভেলসের দুই সদস্যকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় মো. মাসুম ও ফাহিম খান নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দক্ষিণখান ফায়দাবাদ এলাকা থেকে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে শনিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর উত্তরা ৮ নম্বর সেক্টরের পাবলিক কলেজ-সংলগ্ন জুলাই রেভেলসের অফিসে সংগঠনটির প্রস্তাবিত সহসংগঠক ইউসুফ আলী রেদওয়ান ও সদস্য মো. ইয়াসিনকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শনিবার রাতেই ইউসুফ আলী রেদওয়ান বাদী হয়ে উত্তরা পূর্ব থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেন।

এ বিষয়ে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, জুলাই রেভেলসের সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় দক্ষিণখান থেকে মাসুম ও ফাহিম নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, মামলার সুষ্ঠু তদন্ত এবং এজাহারের অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জুলাই রেভেলসের সদস্যদের ওপর হামলার ‘মূল হোতা’ উত্তরা পূর্ব থানা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও শীর্ষ সন্ত্রাসী আলতাফ হোসেন ওরফে ঠোঁটকাটা আলতাফ। নেপথ্যে রয়েছে, জুলাই রেভেলস অফিসটি দখল। জানা গেছে, উত্তরা ৮ নম্বর সেক্টরের জুলাই রেভেলসের বর্তমান অফিসটি ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে উত্তরা পূর্ব থানা শ্রমিক লীগের অফিস ছিল। সেটি নিয়ন্ত্রণ করত সন্ত্রাসী আলতাফ ওরফে ঠোঁটকাটা আলতাফ। তিনি দক্ষিণখানের ফায়দাবাদ এলাকার বাসিন্দা। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগসহ অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে।

৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আলতাফ ও তাঁর নেতা-কর্মীরা পালিয়ে যান। এই সুযোগে শ্রমিক লীগের অফিসটি দখল করে ইউসুফ আলী রেদওয়ান ও তাঁর সংগঠনের লোকজন। পরে ওই অফিসে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি টাঙিয়ে জুলাই রেভেলস নামের একটি সংগঠন করা হয়।

জানা যায়, সম্প্রতি আলতাফ ওরফে ঠোঁটকাটা আলতাফ উত্তরা বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আঁতাত করে প্রকাশ্যে আসেন। সেই সঙ্গে শ্রমিক লীগের অফিসটি দখল করে গড়া জুলাই রেভেলসের অফিসটি খালি করে দিতে বলেন। কিন্তু রেদওয়ান ও তাঁর সংগঠনের লোকজন এতে নারাজ ছিল; যা নিয়ে আলতাফ ও রেদওয়ানের মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরে উত্তেজনা চলছিল। এর জের ধরেই আলতাফ ও তাঁর সহযোগীরা রেদওয়ানকে কুপিয়ে জখম করেন বলে অভিযোগ ওঠে।

উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোর্শেদ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্টের আগে এক কক্ষের অফিসটি ছিল শ্রমিক লীগের। শ্রমিক লীগের সেই অফিস দখল করে জুলাই রেভেলসের কার্যালয় করা হয়েছে। এদিকে শ্রমিক লীগের আলতাফ বিএনপির লোকজনের সঙ্গে মিল দিয়ে প্রকাশ্যে এসে ওই অফিস ফেরত চেয়েছিল। কিন্তু জুলাই রেভেলসের সদস্যরা সেটি না দেওয়ায় হামলার ঘটনা ঘটেছে।’

ওসি আরও জানান, আহত রেদওয়ান বাদী হয়ে আলতাফকে প্রধান আসামি করে ১১ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া মাসুম ও ফাহিমও এজাহারভুক্ত আসামি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত